#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ১৩
,
,
,
,
,
সকালে ঘুম ভেংগে গেলো কলিং বেল এর আওয়াজে। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। হয়তো কালকে রাতে জ্বর এসেছিলো। আসার ই কথা জীবনে প্রথম এতো জোড়ে আঘাত পেয়েছি। গাল টা ফুলে ব্যাথায় টন টন করছিলো এখন ব্যাথা নেয় গালে হাত দিতেই ভিজা কিছু অনুভব করলাম হাত টা সামনে আনতেই দেখি মলম। আমার ভ্রু জোড়া কুচকে গেলো। এরই মাঝে পুনরায় বাসার কলিং বেল বেজে উঠলো এবার আমার সাথে সাথে অন্য কারোও ঘুম ভেংগে গেলো।আমি নিচে নামতে যেতেই পুরুষালি ঘুমন্ত গম্ভির আওয়াজ পেতেই থেমে গেলাম। মাথাটা পাশে ফিরেই দেখলাম আসফি ভাইয়া ফ্লোর থেকে উঠে বসছে।আমি অবাক হলাম।
;ভুলেও বিছানা থেকে নামবিনা আমি আসছি।
আসফি ভাইয়া চলে গেলেন আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম আমার বালিশের পাশেই একটা বাটিতে করে পানি আর কাপড় বিছানার পাশেই একটা বালতি আর পলিথিন বুঝতে বাকি রইলোনা খাড়ুশ টিচার টা সারা রাত আমার পাশে বসে আমাকে সেবা করেছে।
;কেন করেন আপনি এমন কাজ অ-প্রেমিক মহাশয় আপনি কি জানেন না আপনারর এই ছোট ছোট খেয়াল রাখা গুলো এই ছোট মন টাকে কতোটা ঘায়েল করে একবার পুনরায় ইচ্ছা করে মন টালে আবার জোড়া লাগিয়ে আপনার হাতে ধরিয়ে দিই । কিন্তু ভয় হয় যদি ভেংগে দেন ভয় হয় পুনরায় প্রেমালঘ্নে নিজেকে ভাসাতে।
/
এরই মাঝে কারো চিল্লানোর আওয়াজে আমি আৎকে উঠি তাড়াহুড়ো করে অর্না ঠিক করে বাহিরের দিকে এলাম। তাতেই মাথা আমার ঘুরে উঠলো হয়তো জ্বরের ঘোর কাটে নি হয়তো।আমি নিজেকে সামলে নিয়ে সামনের দিকে এগুতে নিলেই দেখলাম এলাকার কিছু মানুষ জোর হয়েছে দরজার সামনে আর তারাই চেচামেচি করছে।
;আসফি ভাইয়া কি হয়েছে এখানে
আমার আওয়াজ শুনেই সবাই আমারর দিকে তাকালেন। আসফি ভাইয়া আমাকে দেখে গম্ভির স্বরে চেচিয়ে উঠলে
;তোকে নিষেধ করলাম বাহিরে বেরুতে রুমে যা রেস্ট নে।
উনার কথা পূরণ হওয়ার আগেই কিছু মহিলা আসফি ভাইয়াকে পাশ কাটিয়ে ভিতরে ঢুকে পরলো আমি ভয় পেয়ে গেলাম আচমকা তাদের আমার সামনে দেখে বুঝলাম না কি চায় এরা কেনোই বা এরা এখানে এসেছেন। আমাকেই বা কেনো ধরে রেখেছেন।
;ছাড়েন ওকে সাহস হয় কি করে ওকে ছোয়ার। আমি কিছু বললাম কানে যাচ্ছেনা
আসফি ভাইয়ার চিল্লানোর আওয়াজে মহিলা গুলো খানিকটা ভরকে গেলেও পাত্তা দিলোনা কিন্তু ওদের মধ্যে কিছু পুরুষ চেচিয়ে উঠিলো
;একে দোষ করেছিস তার উপরে বড় বড় কথা এটা সভ্য মানুষদের এলাকা এখানে মেয়ে নিয়ে এসে রেখে এভাবে ফষ্টিনষ্টি করার অনুমতি দিবোনা আমরা।
;আরে ভাইসাব ওই পোলারে কি বলছেন সব দোষ এই মেয়ের ই হবে শরীর দেখিয়ে ভোলায়েছে পোলারে।নাহলে এতো বছর ধরে ওই এখানে আছে কখনো কোন অভিযোগ আসেনি তার নামে। এই সব মেয়েদের আমার চিনা আছে ভালো মতো এরা শরীর দেখিয়ে ভুলিয়ে ফাসলিয়ে ছেলেদের এই ভাবেই ফাসায়।আল্লাহ জানে বাবা মা আদৌ শিক্ষা দিয়েছে কি না।
পারলাম না নিজেকে সামলাতে আসফি ভাইয়ার দিকে করুন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কেদে উঠলাম। মহূর্তে অস্থির হয়ে পড়লেন তিনি
;এই এই কাদিস না আরু। হুস কাদবি না চোখ মুছ এই সব ফালতু নিচু মন মানসিকতার মহিলার জন্য চোখের পানি ফেলার কোন মানেই হয়না।
উনার কথা শুনো মহিলা গুলোর চোখ দিয়ে আগুন ঝড়তে লাগলো।
;এদের কোন একটা হেনেস্তা করতেই হবে এদের যদি এভাবে ছেড়ে দি তাহলে চলবেনা তাহলে এদের দেখে বাকিরাও এইসব কাজ করতে দ্বিতীয়বার ভাববেনা
বুড়ো লোকটার কথায় সবাই সহমত করলেন আৎকে উঠলাম আমি৷ কল্পনাতেও ভাবিনি কখনো এটা। এইসব তো হওয়ার কথা ছিলোনা তাহলে কেনো হচ্ছে আমাদের সাথে এমন।আচ্ছা ভাইয়া কি আদৌ আমাকে বউ হিসেবে মেনে নিবে হয়তো জবাব হবে না। কিছু আবেগ মিশানো কথা আর যত্ন তো ভালোবাসা হয়ে যায়না। আর আমিই বা পারবো উনাকে ভালোবাসতে।আমি আসফি ভাইয়ার চেহারায় স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি বিরক্তির আভাস হয়তো উনি এইসবের জন্য মৌটেও প্রস্তুত নন না হবার ই কথা।
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেললাম চোখের পানি কোন মতেই বাধ মানছেনা। আর এদিকে আসফি ভাইয়াও যেনো পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
বড়আব্বুর বুকে গুটি শুটি মেরে চোখের পানি ফেলছি কানে খালি বেজে চলছে সকালে বলা মহিলা গুলোর তিক্ত উক্তি গুলো কানে বাজছে যা নিজের প্রতি ঘৃণা জন্মাচ্ছে।এখন বাজে দুপুর দেড় টা ঘন্টা খানেক আগেই এসেছেন উনি।
;হুস আম্মু কাদে না বড় বাবা এসে গেছেনা কান্না করে না একদম কি অবস্থা হয়ে গেছে মুখটার। দেখি চোখ মুছ
বড় আব্বু পরম যত্নে চোখ দুইটা মুছে দিলো আমার আমি এখনো ফুপাচ্ছি।
;বড় আব্বু আমি সত্যি বাজারু মেয়ে না আমি আমি আমার মায়ের মতো না বড় আব্বু আমি আমি
ফোপানোর জন্য কথা বলতে পারচ্ছিনা।কথা সব গলায় বেধে বেধে যাচ্ছে।
;এখানে কি করছিস তুই ভাই
আলিফের আওয়াজ শুনে পিছনে মুরে আসফি হাতে তার জ্বলন্ত সিগারেট
;তুই এখানে কি করছিস
;আমাকেও দে আমিও খাই
;ছোট আছিস বড় হো তারপরে
;হো আমি ছোট হলাম কি করে তুমি যদি ২৬ বছরে বুড়ো হও আমিও ২৫ বছরের যুবোক
;আমি বুড়ো হলে তুই কি করে যুবোক হলি।
;আরে ভাই দে না
আসফি সিগারেট না দিয়ে সেটা নিচে ফেলে পা দিয়ে পিষে দেয় জ্বলন্ত আগুন টা।আলিফ এবার আসফির কাধে হাত রাখে
;তুই কি।এই বিয়ের জন্য রেগে আছিস। তুই কি অন্য কাউকে পছন্দ করতি।
;——–
;দেখ বুচি অনেক ভালো মেয়ে তুই দেখিস নি ওকে বড় হতে আমি দেখেছি।
;———-
;জীবন তোর সিধান্ত তোর কিন্তু একটা কথা বলবো খাটি হিরা আমার বুচি ওকে সামলে রাখিস।
আলিফ ভাইয়া যেতেই আসফি পুনরায় সিগারেট ধরালো হ্যা তাদের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে একপ্রকার জোড় করেই। বড় আব্বু আর আলিফ আসতে অনেক টাই দেরি করে দিয়েছিলো।
;কি করে বুঝায় তোকে আলিফ আমি ঠিক কোন সিশ্চুয়েশান এ আছি। আমি চাইতাম তাকে নিজের করে কিন্তু এই ভাবেনা আমি চেয়েছিলাম আমার শ্যামাঙ্গিনীকে আগে নিজের রঙ্গে রাঙ্গাতে তারপরে তাকে নিজের করতে কিন্তু সেটা হয়তো ছিলোনা ভাগ্যতে। আমি জানিনা ঠিক কি ভাবে নিবে শ্যামাঙ্গিনী এই বিষয় টা।
;তুই ও আমার সাথে যাবি মা ব্যাগ ঘুছিয়ে নে
আমি বড় আব্বুর কথা শুনে আৎকে উঠলাম তাহলে আমার স্বপ্ন কি অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে।
;আরু কোথাও যাবেনা বাবা সে এখানেই থাকবে
;কি বলছিস এই সব আসু তাহলে কি তুই এই বিয়ে মেনে নিচ্ছিস
;প্রশ্নই আসেনা বাবা। এটা কোন বিয়ে৷ ছিলোনা আগেও আমরা যেমন ছিলাম এখনো তেমন ই থাকবো।ব্যাস এটা জাস্ট একটা এক্সিডেন্ট ছিলো ব্যাস।
কি সহজে বলে দিলো আসফি ভাই এটা শুধুই একটা এক্সিডেন্ট ছিলো তিন কবুলের সম্পর্ক আদৌ এক্সিডেন্ট হতে পারে।আচ্ছা তাহলে কি আমার ধারণাই ঠিক ছিলো তিনি আমাকে ভালোবাসেন না সবই আমার মনের ভুল। ভালোবাসবেই বা কেন
বড় আব্বু রাতের বাসে যাবেই বলে ঠিক করলেন। আসফি ভাইয়াও বাধা দিলেন না।
;বড় আব্বু!
;হ্যা মা বল
আমি বড় আব্বুর হাত নিজের মাথায় রাখলাম বড় আব্বু চমকালেন।
;তুমি বাসায় কাউকে আজকের ঘটনা বলবেনা আব্বু বিশেষ করে বড় আম্মু কে তার যে অনেক স্বপ্ন তার পুত্র বধূ নিয়ে
;কি বলছিস এগুলো মাথা ঠিক আছে তোর
আমি শুধু মৃদুস্বরে হাসলাম।
রুমে যেতেই দেখলাম আসফি ভাইয়া বিছনাই বসে আছে মাথা নিচু করে আমি ভরকে গেলাম বুঝলাম না উনার এমন ব্যবহারের মানে।আমি মৃদু স্বরে উনার নাম ধরে ডেকে উঠলাম।উনি চোখ তুলে তাকাতেই আৎকে উঠলাম আমি………..
চলবে!#প্রেমালঘ্ন
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৪
,
,
,
,
,
আমি ভাইয়ার এমন চোখ দেখে ভরকে গেলাম। ভাইয়া আমার দিকে তেরে এসে বাহু চেপে দেওয়ালের সাথে মিশিয়ে দিলো।মহূর্তের মধ্যে কি হয়ে গেলো বুঝলাম না্ আমি।
;ভা ভাইয়া
;চুপ একদম চুপ আর একটা শব্দ যদি বের হয়েছে এই মুখ থেকে আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবেনা বলে দিলাম
;আমার ব্যাথা লাগছে।
;লাগুক আমার ও লাগেছে ঠিক এইখান টাই(বুকের বাম পাশটাই ইশারা করে)বুঝেছিলি তুই নাহ বুঝিস নি কি করে বুঝবি তো চোখে সব কিছু পরলেও আদৌ কোন দিন আমি পরেছি নাহ পড়িনি।কষ্ট হচ্ছেনা খুব আজকে ভালোবাসার মানুষের জায়গায় অন্য কাউকে বিয়ে করে
ভাইয়ার এমন কথা শুনে আৎকে উঠলাম আমি। উনি কি করে জানলো আমি কাউকে ভালোবাসতাম এটা তো কারো জানার কথা না। তাহলে ভাইয়া কি করে জানলো।আমি কিছু বলবো তখনি কানে বারি খেলো কিছুক্ষন আগের বলা ভাইয়ার কথা গুলো “এটা কোন বিয়েনা এটা জাস্ট একটা এক্সিডেন্ট”
;হুম হচ্ছে কষ্ট ভালোবাসার মানুষের জায়গায় অন্য কাউকে বর হিসেবে মানতে কষ্ট হচ্ছে আর আমার কষ্ট হোক বা যায় হোক আপনার চোখে এটা আদৌ কোন বিয়ে এটা তো একটা এক্সিডেন্ট রাইট তাহলে আমি অন্যকাউকে ভালোবাসি বা যায় করি আপনার কি
আমার কথা গুলো চোখ বন্ধ করে শুনলেন আসফি ভাই। উনার নিশ্বাসের গতি বেরে চলেছে।কপালের রগ গুলো ফুলতে লেগেছে।কান দুইটা হালকা লাল রনগ ধারণ করেছে।উনার প্রতিটা গরম নিশ্বাস আছড়ে পড়ছে আমার চোখ মুখে।অজানা এক অনুভূতি নাড়া দিচ্ছে মস্তিষ্কে।
;আসফি ভা,,,,,,,
আমার কথা পূরন করার আগেই উনি যা করলেন সেটার জন্য মৌটেও প্রস্তুত ছিলাম না আমি। আকড়ে ধরলেন শক্ত করে উনার বুকে।সুরক্ষিত এক আবরণে এসে থমকে গেলাম আমি। মস্তিষ্ক মহূর্তে ফাকা হয়ে গেলো বড্ড ইচ্ছা করলো আকড়ে ধরতে উনাকে।কেন যেনো আজকে মন মস্তিষ্কের মাঝে যুদ্ধ হলোনা কোন বরং দুইজন আজকে এটাই চায়। আম ধীরে ধীরে হাত এনে রাখলাম উনার পিঠে সাথে সাথে আমাকে ছেড়ে দূরে দাঁড়িয়ে গেলেন তিনি পিছন ঘুরে। হতদম্ভ হয়ে গেলাম আমি। বুঝলাম না উনার এমন ব্যবহারের মানে
আমি কাপা কাপা পায়ে উনার৷ দিকে এগুতে নিলেই উনি দরজা খুলে বেরিয়ে গেলেন আমার দিকে একটাবার তাকালেন অব্দি না
————
খাবার সামনে নিয়ে বসে আছি ঘড়ির কাটা তখন রাত ১১ টার কাটা ছুই ছুই আসফি ভাইয়ার আসার নাম গন্ধ অব্দি নেয়।ফোন হাতে দিয়ে ডায়াল করলাম উনার নাম্বার নো রেসপন্স।
খোলা আকাশের নিচে বসে আছি। চারিদিকে পানির সমাহার শীতল বাতাসে মন ছুয়ে যাচ্ছে।পাশেই ফোনে সেট করা রিংটোন বেজে উঠলো সাথে দৃশমান হলো ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীর হাস্যজ্বল মুখ।অনেক সময় ধরে বিরক্তিকর ফোনের আওয়াজ কানে এলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেয় আসফির তার চোখ এখনো নিবন্ধন সে মুখটার উপরে।
-চায়েছিলাম তোকে ভালোবেসে ধীরে ধীরে নিজের করে নিবো কিন্তু না এবার তুই নিজে আমাকে খুজবি আমাকে চায়বি। এবার হারে হারে টের পাবি আমার শূন্যতা। তুই নিজেও জানিস না রে শ্যামাঙ্গিনী ঠিক কতোটা কষ্ট আজকে তুই দিয়েছিস কি করে বলতে পারলি রে যে বড় আম্মু কে কিছু না জানাতে উউনার অনেক স্বপ্ন তার পুত্র বধূ নিয়ে। ভাবলি কি করে রে তুই বিহীন অন্যকারো নামের সাথে নিজের নাম জোড়া লাগাবো।আসফি আয়রা বিহীন কিছুই না।
মিনিট ২০ এক পরে সদর দরজা খুলে প্রবেশ করলেন আসফি ভাইয়া।চোখে মুখে ক্লান্তি আর হতাশা ছাপ স্পষ্ট। চোখ টা কেমন লাল হয়ে গেছে।আচ্ছা আসফি ভাইয়াকে কি কান্না করেছে কিন্তু কেনো।আমার ভাবনার মাঝে আসফি ভাইয়া বসে পড়লেন চেয়ার টেনে।আমার দিকে প্লেট এগিয়ে দিয়ে খেতে লাগলেন। আমিও কিছু না বলে খেয়ে নিলাম।
,
,
,
,
পার হয়ে গেলো মাস দুয়েক। এই মাস দুয়েক বদলেছে অনেক কিছু।আমার সাথে আসফি ভাইয়ার ব্যবহার আমার সাথে তার পথ চলা।আগেকার মতো আর শুনা হয় না তার মুখ থেকে সে আবেগমিশ্রিত বাক্য গুলো।আজকাল তার দেখাটা পাওয়াও মুশকিল।কলেজে যেয়ে ক্লাস টাইমে যেইটুকু টাইম দেখা হয় বাড়ি ফিরেন রাত করে। শুধু যে উনি বদলেছেন তা কিন্তু নই আজকাল আমিও বদলেছি। কেন জেনো আজকাল উনাকে দেখে মন ভরে না তাইতো মাঝরাতে লুকিয়ে যেয়ে দেখে আসি উনাকে।কিন্তু তবুও যেনো বেহায়য়া মন টা মানতে নারাজ। ওর যে আরও চায় ওর যেয়ে এই আসফি নামক ব্যাক্তিটির স্যানিধ্যে বড্ড বেশি ভালো লাগে কিন্তু সেটা কি বুঝবে এই মানব।
আজকাল ভার্সিটিতে নতুন এক গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে।আসফি স্যার আর মারিয়া নামক যুবতি দুইজন কে আজকাল একসাথে দেখা যাচ্ছে।।
আমার ভাবনার মাঝেই রাফিয়া আর মার্জান দুইজনে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।এরা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। একইসাথে এইচ এস সি দিয়েছি ভাগ্যক্রমে তাদের ও এই কলেজেই এডমিশান হয়ে গেছে।
;কি রে এখানে এই ভাবে দ্বাড়িয়ে আছিস কেন আর এই মারিয়া টাই বা কই ওই বলে সে কখন আসেছে ভার্সিটিতে দেখছি না যে
আমি মার্জান এর কথা শুনে আঙ্গুল তুলে ইশারা করলাম সামনে তাকানোর জন্য আমার ইশারা দেখে তারাও তাকালো। সামনেই গাছের কাছে দাঁড়িয়ে আছে মারিয়া আর আসফি ভাইয়া।ঠোঁটের কোনে তার দারুন এক মুচকি হাসি বড্ড মনকারা লাগছে। হঠাৎ করে অশ্রুকোণা ভর করলো চোখের কৌটায়
;ভালোবাসিস স্যার কে
রাফিয়ার কথা শুনে চমকালাম। চোখের পানি এড়াতে অন্য জায়গায় যাইতে নিলেই কল আসে। ফোন বের করে দেখি বড় আব্বু চোখে থাকলেও ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠে হাসি।
;হ্যা বড় আব্বু
;কোথায় তুই মা
;আমিতো ভার্সিটিতে।কেনো?
;বাসায় আয় মা আমি তোকে নিতে এসেছি
;নিতে এসেছো মানে
;আরে পাগলী ভয় পাচ্ছিস কেনো খুশির খবর আছে তাই তোকে নিতে এসেছি।তাড়াতাড়ি আয় মা
;আচ্ছা বড় আব্বু
আমি একবার আসফি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ছুট লাগালাম ফ্রেন্ডদের বলে।
এরই মাঝে ভার্সিটির গেটে ধাক্কা খেলাম আরহাম এর সাথে।
;তোমার কি চোখ নেই সব সময় তৈরি থাক আমাকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য
;কি করবো এতো সুন্দর ছেলে দেখে চোখে সামলে থাকেনা
;আজকাল বড্ড বেশি কথা শিক্ষেছো পায়রা পাখি
;সবই আপনার দোয়া সিনিয়র মহাশয়
;পাগলী। তো দৌড়ানো হচ্ছিলো কেনো
;ও দে আপনার চক্করে ভুলে গেছিস বড় আব্বু আমাকে নিতে এসেছে
;নিতে এসেছে মানে
;হ্যা কিসের সুখবর আছে নাকি
;ওহ
;হুম আচ্ছা তাহলে আমি যায়
;আমি ড্রপ করে দি
;আরে নাহ আমি যেতে পারবো সিনিয়র মশাই(দৌড় দিয়ে)
;পাগলী একটা কি করে বুঝায় তোমার এই ছোট খাটো পাগলামী ঠিক কতোটা ভালো লাগে একদম তার মতো।তাইতো তোমাকে ঘৃণা করতে পারিনা। বাকী মেয়েদের মতো তোমাকে ভাবতে পারিনা পিচ্চি পাগলী বোনটা।
,
,
,
,
;আমার সাথে তো এইভাবে কথা বলিস না শ্যামাঙ্গিনী আজ ২ মাস পার হয়ে গেলো একটু চেষ্টাও করিস না আমার সাথে আগের মতো কথা বলার আমি মুখ ফিরিয়ে রেখেছি বলে তুই ও দুই পা।পিছিয়ে নিবি ভাবি নি কোন দিন আমি।
বাসে বসে আছি চোখ দুইটা বাহিরে কাউকে খুজতে ব্যস্ত এই আখিজোড়া কিন্তু মস্তিষ্ক জানে সে আসবে না কিন্তু মন সে বলছে সে আসবে কিন্তু নাহ কি করে আসবে সে তো ব্যস্ত এখন ক্লাসে বা মারিয়া নামক যুবতীর সাথে।
বাস ছেড়ে দিবে হুইশাল দেওয়া হয়ে গেছে।হতাশ নিশ্বাস ফেলে মুখটা ফিরাতেই অদ্ভুদ একটা টান বাধ্য করলো বাহিরে তাকাতে।চোখ সেদিকে ফিরাতেই হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসলো আমার।। আসলেই কি আমার চোখ সত্যি দেখছে নাকি সবটাই চোখের ভ্রম,,,,
চলবে!