প্রেমের তীব্রতা -সকলপর্ব

তীব্রর সঙ্গে পুষ্পিতার দেখা হয়েছিলো ভার্সিটির প্রথম দিন। যখন পুষ্পিতা সিনিয়রদের র‍্যা*গিং*য়ের খ*প্পরে পরে বাচ্চাদের মত কেঁ*দে ফেলে। মেয়েলী কা*ন্নার শব্দে তীব্র তাকাল । ওমনি মন হারালো যেন। পুষ্পিতার চোখ ডলে ডলে নাকে কা*ন্না, আর রক্তজবার ন্যায় ফুলেফেঁপে ওঠা অধর দেখে হারিয়ে গেল নিজেও । সানগ্লাস ভেদ করে চেয়েই রইল তীব্র।
দলের বাকীরা তব্দা খেয়ে যায় পুষ্পিতার হঠাৎ কান্নায়। কী এমন বলেছিল মেয়েটাকে? একটু প্রপোজ করেই দেখাতে বলল,তাই জন্যে কেঁ*দেকে*টে এমন হেঁচকি তুলবে?
সকলে একে অন্যের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে বলল,
” এই মেয়ে তো ছিঁচকাঁদুনে। কিছুই বলিনি তাতে এই,বললে কী করবে? ”

অন্য একজন বলল,
” কাঁ*দলেই মাফ পাওয়া যাবে না। হাঁটুগেড়ে প্রপোজ না করলে আজ ওকে যেতে দিচ্ছিনা আমি।”
একেকজনের একেক রকম কথায় পুষ্পিতার কা*ন্না যেন থামে না। সে ভ*য়ে জুবুথুবু। ঠিক তক্ষুনি তীব্র শান্ত গলায় বলল,
” ক্লাসে যাও।”
পাশ থেকে ইকরাম উদ্বেগ নিয়ে বলতে গেল,
” তীব্র তুই….

তীব্র হাত উঁচিয়ে থামিয়ে দেয় ওকে। ফের পুষ্পিতাকে বলল,
” যাও।”
সুযোগ পেতেই ছুট লাগাল পুষ্পিতা। তীব্র একধ্যানে চেয়ে চেয়ে দেখল ওর কোমড়ে একে বেঁকে দুলতে থাকা লম্বা বিনুনিটাকে।

বন্ধুরা সবাই জড়ো হয়ে তীব্রর ওপর হা*মলে পরল। র‍্যা*গিংয়ে পি -এইচ -ডি করা তাদের বন্ধু, তাদের দলনেতা কেন মেয়েটাকে যেতে দিল? কী রহস্য এর পেছনে? কিন্তু তীব্রর মুখ থেকে একটা শব্দও নিঃসৃত হলো না। সে চুপচাপ বাইকে চিৎ হয়ে শুয়ে পরল। একটার ওপর আরেকটা পা তুলে গুনগুন করে গান ধরল,
” Pehli nazar mein kaisa jaadu kar liya…….

পরেরদিন ঝুম বৃষ্টি নেমেছে আকাশ বেয়ে। তীব্রর বাইকের তেল শেষ। বিরক্ত হয়ে রাস্তার এক কোনায় দাঁড়িয়ে রইল সে। বাইক ভিজছে সাথে নিজেও। পড়নের শার্ট ভিজে চুপচুপে হয়ে মিশে গেল গায়ের সঙ্গে। ঠিক তখনি মাথার ওপর ছাতা ধরল কেউ একজন। শরীরে বৃষ্টির ফোঁটার স্পর্শ না পেয়ে তাকাল তীব্র। একদম পাশে পুষ্পিতাকে দেখে চমকে গেল। পুষ্পিতা পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে ভর করে উচু হয়ে ছাতাটা ধরে আছে। লম্বা তীব্রর মাথা অবধি হাত নিতে ভারী ক*ষ্ট হচ্ছে তার। তীব্র দিক বিদিক ভুলে তাকিয়ে থাকল। মেয়েটা এখানে কেন, সে প্রশ্ন অবধি করল না। পুষ্পিতা চোখের ইশারায় বোঝাল, ছাতাটা ধরতে। তীব্র অবুঝ বালকের ন্যায় ছাতার লাঠি হাতে নিলো। সঙ্গে সঙ্গে পুষ্পিতা পাশে দাড় করানো রিক্সায় ব্যস্ত ভঙিতে উঠে বসল। এতক্ষনে রিক্সার দিকে খেয়াল পরল তীব্রর। পুষ্পিতা রিক্সায় বসে মুচকি হাসল খানিক। এতেই যেন তীব্রর ইহজগত উল্টেপাল্টে যায়। গতকাল মেয়ের কান্না দেখে এক অবস্থা আর আজ হাসি? রিক্সা সামনে থেকে চলতে শুরু করতেই হুশ ফিরল তীব্রর।
মাথার ওপর ধরে রাখা ছাতাতে চোখ বোলাল একবার। পরক্ষনে একপাশে ঠোঁট বাকিয়ে হাসল। মাথার চুলে লেপ্টে থাকা জল ঝাড়ল হাত দিয়ে। তারপর ঠোঁট কামড়ে চেয়ে রইল চলন্ত রিক্সাটার দিকে।
সেই ছাতাটা তীব্র আর ফেরত দিলোনা পুষ্পিতাকে। ইচ্ছে করেই নিজের কাছে রেখে দিলো।

কিছুদিন পর, পুষ্পিতা বইয়ের মধ্যে চিঠি পেল। সে এক মস্ত, বড়, গোটা হাতের লেখা চিঠি। পুরোটা পড়েই মেজাজ বি*গড়ালো তার। কাগজটাকে দু*মড়ে মু*চড়ে জানলা থেকে ছুড়ে ফেললো পুষ্পিতা। দূর্ভাগ্যবশত গিয়ে পরল তীব্রর মাথায়। বিষয়টা দেখতেই জ্বিভ কা*টল পুষ্পিতা। তীব্র তাকানো মাত্রই বসে পরল লুকানোর উদ্দেশ্যে। অথচ বিধিবাম,দেখে ফেলেছে তীব্র।
সাথে ইকরাম ছিল। সে আগ্রহ নিয়ে কাগজটা তুলল। ভাজ খুলে পড়তে পড়তে বুঝল প্রেমপত্র এটা। প্রথমে ভেবেছিল পুষ্পিতা লিখেছে তীব্রকে। এমন হলে মন্দ হতোনা। মেয়েটাকে বাগে পাওয়া যেত। বিষয়টা আরেকটু জমতো। কিন্তু চিঠির শেষে ছেলের নাম লেখা দেখে সব উত্তেজনা মাটি হয়ে গেল। বিস্বাদ নিয়ে ইকরাম কাগজটা ছি*ড়ে ফেলল। তীব্র ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল
” কী ছিল?”
ইকরাম নিরুৎসাহিত উত্তর দেয়,
” প্রেমপত্র। ”
তীব্র জানলার দিক তাকাল। পুষ্পিতাকে দেখা গেল না। তীব্র কিছু বলার আগেই ইকরাম জবাব দিলো,
” সেকেন্ড ইয়ারের বাচ্চু দিয়েছে মেয়েটাকে। হাতের লেখা এত খা*রাপ। এ নাকি আবার এল এল বি পড়ছে,হা হা।”
ইকরাম গা দুলিয়ে হাসলেও তীব্র কথা বললনা। চুপচাপ, নির্বিকার রইল।

ছুটির সময় বাচ্চু ছেলেটি পুষ্পিতার পিছু নিলো। চিঠির জবাব চায় সে। বিনিময়ে ক*টমট করে তাকাল পুষ্পিতা।
বাচ্চু হাল ছাড়ার পাত্র নয়। সে পাত্তা না পেয়ে পুষ্পিতার হাত ধরল খ*প করে। পুষ্পিতার অন্তরাত্মা শু*কিয়ে গেল নির্জন রাস্তায়। বাচ্চু কোনরুপ অসভ্যতা করার আগেই বুদ্ধি করে জো*রেশোরে কা*মড় বসালো ওর কব্জিতে। বাচ্চু ব্যাথায় হাত সরাতেই এক ছুটে পা*লিয়ে গেল পুষ্পিতা। টানা দুটোদিন ভার্সিটিই গেল না ভ*য়ে। বাচ্চু কী শোধ তুলবে না? নিশ্চয়ই তুলবে। তিন দিনের দিন এসাইনমেন্ট জমা দেয়ার জন্যে বাধ্য হয়ে হাজির হলো পুষ্পিতা। আ*তঙ্কে ভেতরটা থরথর করে কাঁ*পছে তখন। অথচ গিয়েই শুনল চমকে দেয়া খবর। কারা যেন দুদিন আগে বাচ্চুকে মে*রে আ*ধমরা করে দিয়েছে। ছেলেটা এখন হাসপাতালে ভর্তি। পুষ্পিতার অবাক লাগেনি। ছেলেটা অতিরিক্ত বে*য়াদব। নির্ঘাত কোথাও অসভ্যতামি করতে গিয়েই কে*লানি খেয়েছে। পুষ্পিতার ভ*য়ডর হুরহুর করে পালিয়ে গেল। বুক চওড়া করে ক্লাস করল সেদিন।

এরপর বাচ্চু ভার্সিটি এলেও পুষ্পিতার ছায়াও মা*রায়নি। পুষ্পিতা ভাবল তার কা*মড় খেয়ে শুধরে গেছে ছেলেটা। অথচ যদি জানত এর পেছনে আসল হোতা কে!

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সেবার বড় করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো ভার্সিটিতে। ছেলেরা পাঞ্জাবি, মেয়েরা শাড়ি পরলেও পুষ্পিতা হাজির হলো সাদামাটা সালোয়ার কামিজ পরে। তীব্র তখন দেয়ালের সাজসজ্জ্বায় ব্যস্ত। অথচ এতকিছুর মধ্যেও পুষ্পিতাকে লক্ষ্য করেছে ঠিক। ভীষন কৌতুহলে ভ্রু কোঁচকালো সে। মেয়েটা শাড়ি পরেনি কেন?

টিকতে না পেরে কাছের বন্ধু শিমুকে পাঠাল পুষ্পিতার কাছে। পুষ্পিতা তখন স্টেজের কোনায় দাঁড়িয়ে নাঁচ দেখছে। শিমু পাশে গিয়ে দাঁড়াল। মিষ্টি করে জানতে চাইল,
” শাড়ি পরোনি কেন পুষ্পিতা?”
পুষ্পিতা অল্প হেসে মাথা নিচু করল। তীব্র তখন এদিকেই তাকিয়ে। পুষ্পিতার উদাস হাসি দেখে নিজের মত ভেবে নিলো অনেককিছু। শিমুকে ইশারা করল চলে আসতে। কথা না বাড়িয়ে ফিরে এলো শিমু। শুধু মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকল পুষ্পিতা। তার ঘন্টাখানেক যেতে না যেতেই পুষ্পিতার কাছে ফের এলো শিমু। হাতে শপিংব্যাগ। ঠোঁটের কোনায় চওড়া হাসি নিয়ে বলল,
” এটা তোমার।”

এক ঝাঁক প্রশ্ন নিয়ে ব্যাগ খুলল পুষ্পিতা। ভেতরে লাল হাফসিল্কের শাড়িটা দেখে বিস্ময় নিয়ে তাকাল। শিমু তার কাঁধে হাত রেখে সুন্দর করে বলল,
” বড় বোন হিসেবে ছোট বোন কে একটা উপহার তো দিতেই পারি তাইনা?”

পুষ্পিতা নির্বাক হয়ে চেয়ে রইল শুধু। ছলছল চোখের সঙ্গে মুচকি হেসে ওপর নিচ মাথা নাড়ল। প্রশান্ত শ্বাস ফেলল তীব্র। কান্না হাসির মধ্যবর্তী পুষ্পিতাকে দেখে তার মনে হলো ‘ এত সুন্দর মানবী জগতে দুটি নেই’।

শিমু বগলদাবা করে পুষ্পিতাকে নিয়ে চলল কোথাও। পনের মিনিটের মাথায় খোলা চুলে, শাড়ি পরিহিতা পুষ্পিতাকে নিয়ে এসে দাঁড়াল তীব্রর সামনে। স্টেজে তখন তীব্রর নাম ঘোষণা হচ্ছে গানের জন্যে। তীব্র উঠতেই যাচ্ছিল। কিন্তু পুষ্পিতাকে দেখে থমকে গেল সে। ভুলে বসল সব। নির্নিমেষ চেয়ে থাকল। অক্ষিপল্লব অবধি পরল না তাতে। পুষ্পিতার জড়োসড়ো দৃষ্টি। তীব্র এভাবে চেয়ে থাকায় অস্বস্তিতে গাঁট সে। খুব দ্রুত নিজেকে সামলে স্টেজে উঠে গেল তীব্র। তারপর আর একবারও তাকালোনা। মন খুব করে চাইলেও না।
বরং মাইক্রোফোন হাতে তুলে গান ধরল,

” প্রান দিতে চাই,মন দিতে চাই।
সবটুকু ধ্যান সারাক্ষন দিতে চাই,তোমাকে……

এরপরের দিন গুলো দ্রুত কাটল খুব। দিন যায়, মাস যায়, আর তীব্রর ভালো লাগা ধীরে ধীরে প্রকট হয়। মেয়েটির শান্ত পদাচরন তার বুকে ঝড় তোলে। ভীরু চাউনী এলোমেলো করে দেয়৷ দিন যেতে যেতে অনুভূতিগুলো মাথা চাড়া দিলো খুব। তীব্রর বুঝতে বাকী রইলোনা “সে আসলে ভালোবাসে পুষ্পিতাকে”।

তীব্র লুকিয়ে লুকিয়ে পুষ্পিতাকে দেখে। পুষ্পিতার গেট দিয়ে ঢোকা থেকে শুরু করে রিক্সা করে বাড়ি ফেরা অবধি। লাইব্রেরিতে যখন পুষ্পিতা বই পড়তে বসে তীব্র পেছনের সিটে এসে বসে থাকে। বাহানা হিসেবে সামনে খুলে রাখে বই। মাঝেমধ্যে ভুল করে বই উল্টো হয়ে থাকে। ইকরাম এসে ঠিক করে দেয়। সাথে খোঁচা মেরে বলে যায়,
” প্রেমে পড়ে তুই শেষ। তোকে আর বাঁচানো যাবে না।”

তীব্র গায়ে মাখেনা ওসব। শেষ হলে হবে। সেতো চায়ই পুষ্পিতার প্রেমে আহুতি দিতে। শুধু মেয়েটা হ্যাঁ বললেই হয়।
তার পুষ্পিতাকে দেখতে ভালো লাগে। ফ্যানের বাতাসে পুষ্পিতার উড়ন্ত চুল গুনতে ভালো লাগে। এই মেয়েটার আগাগোড়া তার ভালোলাগা দিয়ে মোড়ানো।

পুষ্পিতা বরাবরের মত একা এক বেঞ্চে বসে আজ। তীব্র কেবল ঢুকেছে ভার্সিটিতে। পুষ্পিতাকে দেখেই আজ কথা বলার লোভ সামলাতে পারল না তীব্র। চটপট বাইক থেকে নেমে ঝটপট এগিয়ে গেল ওর দিকে। পুষ্পিতার উরুর ওপর মেলে রাখা বই। মনোযোগ দিয়ে পড়ছে সে। এই ক মাসে তীব্র যতবার মেয়েটিকে দেখেছে সব সময় বই পড়তে,লিখতে,কিংবা চুপচাপ এক কোনায় বসে থাকতে । বাকিদের মতো ওর কী আড্ডা, গল্প এসবে ইচ্ছে নেই?
তীব্রর সুদর্শন চেহারা, পুরুষ্বতে গলে কত মেয়েই না পটেছে। অথচ কে জানতো, সেই তীব্র সেসব তোয়াক্কা না করে মন হারাবে এই ছিঁচকাদুনে মেয়ের প্রতি? চোখের সামনে দুটো পা দেখে মাথা তুলল পুষ্পিতা। তীব্র তখন সম্মোহনী দৃষ্টিতে তাকেই দেখছিল। তীব্রকে দেখেই পুষ্পিতা গুটিয়ে গেল খানিক। বই বন্ধ করে তৎপর হয়ে উঠে দাঁড়াল। তীব্র ত্রস্ত নিজেকে সামলে ঠোঁট দিয়ে জ্বিভ ভেজাল। কথা এখন গুলিয়ে যাচ্ছে কেমন। খুব বেগ পুহিয়ে জ্বিভ ঠেলে প্রশ্ন করল,
” কেমন আছো? ”

পুষ্পিতা চোখ নিচে রেখেই এক পাশে ঘাড় হেলালো। নীরবে বোঝাল ” ভালো আছে সে।”
তীব্রর হাসি পেলো একটু। পরমুহূর্তে ভাবল, পুষ্পিতারও কী আমার মত কথা বের হচ্ছে না? ”

তীব্র পরের প্রশ্ন দ্রুত করল খুব।
” পড়াশুনা কেমন চলছে?”
এবারেও ঘাড় হেলায় মেয়েটা৷ তীব্র ঘাড় চুল্কে ঠোঁট কামড়ে দেখল পুষ্পিতার তিরতির করে নড়তে থাকা দীঘল কালো পাপড়ি। উচ্চতায় মেয়েটা তার বুক সমান কী না!

পুষ্পিতা নীচ থেকে চোখা চোখে তাকালো একবার। লম্বা ছেলেটার মুখ অবধি দৃষ্টি পৌছালো না তার। পরক্ষনে আবার চেয়ে থাকল নিচে। তীব্রর জড়োতা যে হৈহৈ করে বাড়ল পুষ্পিতার এমন গুটিশুটি ভাবমূর্তি দেখে। অনেক কিছু বলতে এসেও পারলনা। জিজ্ঞেস করল,
” এখানে কোনও সমস্যা হচ্ছে? ”
পুষ্পিতা দুদিকে মাথা নাড়ল। হচ্ছেনা।
তীব্র ধীরস্থির কন্ঠে বলল,
” হলে আমাকে জানাবে।”
এই নিয়ে তিন বার ঘাড় নাড়ল পুষ্পিতা। তীব্র মুচকি হেসে বলল,
” এত ঘনঘন মাথা নাড়লে খুলে পরতে পারে। সাবধান।
পুষ্পিতা তাকাল তখন। তীব্র বুকপকেট থেকে সানগ্লাস চোখে পরে বলল,
‘” নেক্সট টাইম ইউজ ইওওর ওয়ার্ডস,ওকে?”

পুষ্পিতা কথা বলল না। কেমন অন্যরকম করে তাকিয়ে রইল। তীব্র আর দাঁড়ালনা। চলে গেল লম্বা কদমে।

সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার আগে আগে পুষ্পিতা গায়েব হলো হঠাৎ। প্রায় সপ্তাহখানেক ভার্সিটিতে তীব্র খুঁজে পেল না ওকে। এইটুকুতেই তার অবস্থা নাজেহাল। ধরে ধরে পুষ্পিতার ক্লাসমেট কতগুলো মেয়েকে জিজ্ঞেস করালো তার মেয়ে বন্ধুদের দিয়ে। কিন্তু ফলাফল এলো শূন্য। কেউই জানে না ওর খবর। পুষ্পিতা কারো সাথেই মেশেনা। এমনকি কথা অবধি বলেনা। আসে,ক্লাশ করে,ফিরে যায়। তীব্র হতাশ হয়। এদিকে ফর্ম তোলার সময় হয়েছে। মেয়েটা কী পরীক্ষাও দেবে না? ইয়ার লস যাবে? শেষে নিজ দায়িত্বে পুষ্পিতার হয়ে ফর্ম তুলল তীব্র। নিজেই ফিল- আপ করে, ফি দিয়ে জমা করল। তার ওপর তার বেহাল দশা। বন্ধুদের শত শত প্রশ্ন,শত খোঁচানোর উত্তর করল না। উদাস বসে রইল। মুখে না বললেও ওরা ঠিক বুঝেছে তীব্রর এই পরিনতি সেই পুষ্পিতা নামক মেয়েটির জন্যে। গত সাতটা দিন যাকে হন্যে হয়ে ভার্সিটিতে খুঁজেছে তীব্র।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওরাও। কীই বা করনীয় এখানে? মেয়েটির খোঁজ তারাও তো জানেনা।
ঠিক তার দুটোদিন পর ভার্সিটিতে পা রাখল পুষ্পিতা। ওকে দেখেই তীব্রর হাতের সিগারেট পরে গেল মাটিতে। রাগ হলো খুব। নাকের পাটা ফুলে উঠল। ইচ্ছে করল গিয়েই কষিয়ে এক চড় মেরে জিজ্ঞেস করবে
” কোথায় ছিলে এতদিন? জানো কী অবস্থা হয়েছিল আমার?
তীব্র এক পা বাড়িয়েও পিছিয়ে এলো। এখনও ওই অধিকার বোধ জন্মায়নি তার। পুষ্পিতা তার পুরোটা জুড়ে থাকলেও সে ওর কাছে নেহাতই ভার্সিটির সিনিয়র ভাই।
পুষ্পিতা ব্যস্ত পায়ে অফিস কক্ষে গেল। উদ্বিগ্ন মুখস্রী। গিয়ে জানল তার ফর্ম ইতোমধ্যেই জমা হয়েছে। পুষ্পিতা আকাশ থেকে পরল যেন। যিনি ফর্ম জমা নিলেন তিনি কিছুতেই তীব্রর নাম বললেন না। পুষ্পিতার সঙ্গে আসা বয়ষ্ক মতো লোকটা অনেক প্রশ্ন করেও জানতে পারলেন না। পুষ্পিতা ধীর পায়ে কক্ষ ত্যাগ করে বাইরে আসে। অন্যমনস্ক চেহারায় ভাবতে বসে শুভাকাঙ্ক্ষীর কথা।
তবে উত্তর মেলে না।

মাসব্যাপী পরীক্ষা শেষ দিকে। পরীক্ষার দিন গুলোয় তীব্রও ছিল সমান ব্যস্ত। যেহেতু এবারেই তাদের পাশ করে বের হওয়ার সময়। তাই চেয়েও পুষ্পিতাকে লক্ষ্য করতে পারেনি। তবে সিদ্ধান্ত নিলো অনেক হয়েছে, মনের কথা মনে চেপে রাখা। আর নয়। এবার শেষ পরীক্ষার দিন জানিয়েই ছাড়বে।

করলোও তাই। এক গুচ্ছ্ব লাল গোলাপ সমেত তীব্র এসে দাঁড়াল পুষ্পিতার সামনে। পুষ্পিতা সবে মাত্র পরীক্ষা দিয়ে ক্লাশ রুম থেকে বেরিয়েছে। একদম সম্মুখে তীব্রকে দেখে থমকে দাঁড়াল সে। সেই প্রথম দিনের মতো গুটিয়ে এলো। চোখ নামাল পায়ের পাতার ওপর। তীব্র ঠান্ডা কন্ঠে আবদার করল,
” একটু এদিকে আসবে?”

পুষ্পিতা ঘাড় হেলায় আগের মতোই। তীব্র হাঁটা ধরলে পেছনে এগোয়। একটা সময় ভার্সিটির কোনায় এসে থামল তীব্র। দাঁড়াল পুষ্পিতাও। তীব্র চোখ বুজে শ্বাস নিয়ে ধাতস্থ করল নিজেকে। অনেকক্ষন রয়েসয়ে পেছনে লুকানো হাতটা সামনে আনলো। ডাকল,
” পুষ্পিতা!”
পুষ্পিতা তাকাল। চোখের সামনে তীব্রর বাড়িয়ে দেয়া হাতে, গোলাপ গুচ্ছ্ব দেখে অবাক হলো হয়ত। খুব দ্রুত দৃষ্টি আনল তীব্রর কালো আইরিশ দুটোর ওপর। তীব্র মুগ্ধ চোখে চেয়ে ভরাট কন্ঠে আওড়াল,
” আমি তোমাকে ভালোবাসি। সেই প্রথম দিন থেকে ভালোবাসি। ”

পুষ্পিতা কয়েক মুহুর্ত শান্ত নজরে চেয়ে রয়। পরপর দূর্বোধ্য ক্ষীন হাসে। বিলম্ব না করে ব্যাগ থেকে কাগজ কলম বের করে চটপটে হাতে কিছু লিখতে থাকে। তীব্রর প্রশ্ন জাগে মনে। বাড়িয়ে দেয়া গোলাপ গুটিয়ে এনে ভ্রু কুঁচকে বলে,
” কী লিখছো? ”
পুষ্পিতা ব্যস্ত হস্তে কিছু লিখে তীব্রর দিক এগিয়ে দিলো। তীব্র ওর দিকে চেয়ে থেকেই হাতে নিলো কাগজটা। ভেতরে লেখা,
” আমি জানি আপনি আমায় পছন্দ করেন। কিন্তু আপনার মতো ছেলের ভালোবাসা আমার জন্যে নয়। আমি কথা বলতে পারি না। ছোট বেলায় ভোকালকর্ডে সমস্যার দরুন সারাজীবনের মতো আমার কণ্ঠনালী স্তব্ধ।
এক কথায় আমি বোবা,প্রতিবন্ধীদের কাতারে। ”

তীব্র স্তম্ভিত হয়ে তাকাল। হাত থেকে কাগজ,ফুল দুটোই খসে পরল মাটিতে। পুষ্পিতা একটুও অবাক হয়নি। সে মৃদূ হাসল। আরেকটা কাগজ-এ কিছু লিখে তীব্রর দিক এগিয়ে ধরল। তীব্র হাতে নিলোনা। নির্জীব দৃষ্টি বোলাল শুধু। তাতে লেখা,

” এই বিশ বছরে আমি অনেক প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছি। তারা আপনার মতোই আমার সমস্যা না জেনে ভালোবেসেছে। আবার চলেও গিয়েছে সত্যিটা জানার পর। তবে আমি আপনার ভালোবাসা কে ছোট করছিনা। আপনার এখানে কোনও দোষ নেই। এখন সত্যিটা জানার পর আপনার সরে যাওয়াই সমিচীন।কারন,কেউই তার জীবনে একটি প্রতিবন্ধী মেয়েকে স্থান দেবেনা। ভালো থাকবেন।
আপনার শুভকামনা করছি। ”

তীব্র নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে৷ পুষ্পিতা চলে এলো। তীব্রকে পেছনে ফেলতেই চোখের কোটর ভরে উঠল তার। গড়িয়ে পরল গাল বেঁয়ে। ঠোঁট দুটো ভেঙে এলো প্রচন্ড কান্নায়। একটা মেয়ে আর যাই হোক, কোন ছেলে তাকে ভালবাসে ঠিক বুঝতে পারে। সেও পেরেছিল, যেদিন শাড়ি পরিহিতা তাকে দেখে তীব্র হা করে চেয়েছিল।
পুষ্পিতা ঢোক গিলল। এই জীবনে কত কিছুর সম্মুখীন হয়েছে সেসবের অন্ত নেই। কথা বলতে না পারা যে কত বড় অভিশাপ নিজেকে দিয়ে বোঝে সে৷ বাবা মায়ের ডিভোর্স হয়ে গেছিল,তখন তার বয়স দশ। মা তাকে ফেলেই চলে গেলেন। বাবা বিয়ে করলেন দু সপ্তাহর মধ্যে। সে পরে রইল সৎ মায়ের ঘরে। তার নিজের বাবা অবধি বিরক্ত হয়ে যায় তার ওপর। উদ্যোগ নিয়ে তার অপারেশন অবধি করাতে চায়নি। আর এখন হয়ত উপায়ও নেই। সারাটা জীবন এভাবেই কাটবে, মানুষের উপহাস শুনে। এইতো কিছুদিন আগে যখন জ্বরে পরল,আসতে পারল না ভার্সিটিতে। ডেট পার হয়ে যাচ্ছিল সেমিস্টার ফি জমা করার অথচ বাড়ি থেকে কেউ আসবে না সাফ সাফ জানিয়ে দেয়। শেষমেষ ওর কান্নাকাটি দেখে বাধ্য হয়ে এসেছিলেন বাবা।

পুষ্পিতা থমকে দাঁড়াল হাঁটা থেকে। আলগোছে পেছন ফিরে চাইল। তীব্র নেই। বুকটা ভীষণ কষ্টে ভারী লাগল তার। কম্পিত হাত রাখলে বক্ষঃস্থলে। তীব্রর জন্যে তার কী দূর্বলতা আছে?
পুষ্পিতা নিজেই নিজেকে বোঝাল।
” নেই। তার মতো প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষের কারোর প্রতিই দূর্বলতা থাকা উচিত নয়।”

পুষ্পিতা দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেল ভার্সিটি ছেড়ে। সে রাতে ওর আর ঘুম হয়নি। তীব্রকে ভেবেই হয়নি। যখন ও জানল সে কথা বলতে পারেনা কী কষ্টই না পেয়েছিল। কেন যে ছেলেটা ভালোবাসল ওকে!

ভার্সিটি বন্ধ। সপ্তাহ খানেক পার হলো তারপর। হঠাৎ একদিন পুষ্পিতার সৎ মা হাতে শাড়ি সমেত ঘরে এলেন । কোনও কথা না বলেই পরাতে শুরু করলেন। পুষ্পিতা চুপচাপ রইল। প্রশ্ন করার উপায় থাকলেও করতোনা। মা শাড়ি পরিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে দিয়ে বললেন,
” তোমাকে দেখতে এসেছে। অনেক বড় ঘর,ভালো বংশ,এসো।”

পুষ্পিতার মাথায় বাঁজ পরে। এমন হুটহাট দেখতে আসে কারা? তাছাড়া এনারা যখন জানবেন ও কথা বলতে পারেনা তখন বিয়ে ভেঙে দেবেন। বাবা মা ও তো জানে এসব। তবে অহেতুক কেন সং সাজালো ওকে?

এক রাশ দুঃখ চেপে পুষ্পিতা মায়ের সঙ্গে বসার ঘরে এলো। সোফায় বসা মধ্যবয়সী নর-নারীকে একপলক দেখে দৃষ্টি নামালো। নারীটি রীতিমতো উঠে দাঁড়ালেন। পুষ্পিতার থুত্নী ধরে তুষ্ট কন্ঠে বললেন,
” মাশআল্লাহ! ভীষণ সুন্দর। ”
পুষ্পিতার বাবা গর্ব করে বললেন,
” নিজের মেয়ে বলে বলছিনা,আমার মেয়ে সর্ব গুনে গুনান্বিত। রান্নাবান্না,ঘরের কাজ সব পারে। পড়াশুনাতেও ভালো।”

নারীটি মধুর হেসে বললেন,
” এসব জেনে কী করব বলুন তো ভাইজান? আমার দরকার একটা মেয়ে,আর আমার ছেলের মুখের হাসি ওর আনন্দ। এই তিনটে হলেই হচ্ছে। ”

পুষ্পিতার বাবা বললেন,
” ওনাদের সালাম করো মা।”
পুষ্পিতা বিনাবাক্য ব্যায়ে সালাম করল দুজনকে। ভদ্রলোক পুষ্পিতার মাথায় হাত বুলিয়ে সুন্দর হাসি বিনিময় করলেন। পুষ্পিতাকে বসানো হলো ওনাদের মাঝখানে। এনারা দুজন ব্যাতীত আর কেউ আসেনি। পুষ্পিতা অবাক হলো খুব,যখন দেখল তাকে কোনও প্রশ্নই করছেনা। এমন কি নাম অবধি জানতে চাইছেনা। পাত্রের মা ব্যাগ থেকে আংটি বার করলেন। পরিয়ে দিলেন পুষ্পিতার সরু, ফর্সা অনামিকায়। পুষ্পিতা শুধু হা করে দেখল। তার মাথায় ঘুরছিল,
” তারা কী জানেনা,সে কথা বলতে পারেনা? জেনেশুনেও কেন?”

পুষ্পিতার মস্তিষ্কে এলোমেলো প্রশ্ন। বিয়ে পাঁকাপাঁকি হয়েছে। কী অদ্ভুত! ওর বিয়ে অথচ ছেলেকেই ও চেনেনা। দেখেওনি কখনও। পুষ্পিতা সে রাতে কাঁ*দল খুব। জীবনে ঘটে যাওয়া প্রহসন ভেবেই কাঁদল। এতই বোঝা হয়ে গেল বাবার ওপর ওর মতামত ছাড়াই বিয়ে দিচ্ছে? একবার জানতেও চাইলোনা ও কী চায়?
সারা রাত কেঁ*দেকেটে পুষ্পিতা ভোর দিকে ঘুমালো। উঠলোও বেলা করে। ঘড়িতে তখন বারোটা গড়িয়ে। পুষ্পিতা কেবল ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েছে ওমনি হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকল ওর ছোট ভাই রাফি। বাবার দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে। তেমনি উদ্বেগ নিয়ে বলল,
” দুলাভাইয়া এসেছে আপু। তৈরি হয়ে বের হতে বলেছেন তোমায়। তাড়াতাড়ি করো।”
রাফি ঝড়ের গতিতেই বেরিয়ে যায় আবার৷ পুরো ব্যাপারটা মাথার ওপর দিয়ে গেল পুষ্পিতার। দুলাভাইয়া মানে? যার সাথে ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে তিনি এসেছেন? কিন্তু কেন?

পুষ্পিতা তীব্র অনিহা নিয়ে তৈরি হলো। ভালো থ্রিপিস পরে চুল আচড়ে বের হলো ঘর থেকে। বসার ঘরে গিয়ে কাউকে পেলোনা। পুষ্পিতা রান্নাঘরে উঁকি দিলো। মা রান্না করছেন। বাবা অফিসে। যিনি এসেছেন তিনি কোথায়? রাফি তখনি হুটোপুটি করে সিড়ি বেয়ে নামছে। পুষ্পিতা হাত নেড়ে ইশারায় জানতে চাইল
” কোথায়?”
রাফি তাড়াহুড়ো কন্ঠে বলল,
” ভাইয়া তো ছাদে। যাও যাও অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে আছেন।”

পুষ্পিতা অনিচ্ছ্বা নিয়ে পা বাড়াল সেদিকে। লোকটা ছাদে কেন গিয়েছেন? এ কেমন মানুষ! প্রথম দিন এসে সরাসরি ছাদে?

পুষ্পিতা লোহার দরজা ঠেলে কদম ফেলল ছাদের উন্মুক্ত সিমেন্টের মেঝেয়। চোখ পরল সোজাসুজি থাকা পুরুষের দিকে। পিঠ ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে সে। পড়নে ফরমাল পোশাক। পকেটে গুঁজে দুহাত। পেছন থেকে পুষ্পিতার অবয়বটা পরিচিত ঠেকল। জিজ্ঞাসু চেহারায় পিলপিল পায়ে এগোলো সে।

ঠিক পুরুষটির পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো। কীভাবে ডাকবে বুঝে পেলোনা। কথাই তো বলতে পারে না।

তবে পুষ্পিতার কষ্ট করতে হলোনা। পুরুষটি নিজেই ঘুরে তাকাল। মুখ দেখেই চমকে ওঠে পুষ্পিতা। তীব্র! সেই পরিচিত মানুষটা।

পুষ্পিতার ঠোঁট যুগল আলাদা হয়ে যায় নিজ শক্তিতে । চোখ যেন ছড়িয়ে আসে কোটরের বাইরে। তীব্র ভ্রু উঁচিয়ে শুধায়,
” খুশি হওনি?”
পুষ্পিতা কথা বলতে পারেনা। পারলেও বলতে পারতোনা এখন। তার মস্তক ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। বিয়ের পাত্র টি কী তীব্র?

পুষ্পিতা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষন। এরপর হাত নেড়ে শুধায়,
” কেন বিয়ে করবেন? আপনাকে তো সব বললাম।”
তীব্র এগিয়ে এলো। বরফ, শীতল কন্ঠে বলল,
” আমি তোমাকে চাই পুষ্পিতা। মানে তোমার ভালো,খারাপ,পারা না পারা সবটা মিলিয়ে এই আস্ত তুমিটাকেই আমার প্রয়োজন।
আমি না হয় মুখে বললাম ভালোবাসি। তুমি না হয় লিখে জানাবে। আমি যখন বকবক করব,তুমি না হয় গালে হাত দিয়ে শুনবে। খুব কী ক্ষতি হবে পুষ্পিতা? আমার অধরদ্বয় তোমার হয়ে শব্দ ফোঁটালে খুব খারাপ লাগবে তোমার?

পুষ্পিতা বিষ্ময়াবিষ্ট হয়ে তাকিয়ে। কার্নিশ বেয়ে কখন যে জল গড়াল টের ও পায়নি। তার কপালে এত সুখ?
তীব্র একটু এগিয়ে এলো। দুহাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে চোখ মুছিয়ে দিলো ওর। কণ্ঠ খাদে নামিয়ে বলল,
” এরপর কোনও দুঃখ, কষ্টকে ছুঁতে দেবনা তোমায়। প্রতিটি মুহুর্ত সাক্ষী হবে এই তীব্রর তীব্রতর ভালোবাসার। সময়ে সময়ে সীমা ছাড়াবে আমার প্রেমের তীব্র-তা। কথা দিলাম। ”

#প্রেমের_তীব্র-তা!
লেখনীতে: নুসরাত সুলতানা সেঁজুতি
অনুগল্প।
সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here