#প্রেম_তুফান
#পর্ব_২
#Writer_Sabiha_Sultana_Mohima
চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি। এখন কি আমার ওই ঘটনার জন্য মার খেকে হবে নাকি।এ কেমন ছেলের পাল্লায় পড়লাম রে বাবা। বাড়ি পযন্ত হাজির। হেমা রে আজতো তুই শেষ। সামান্য ধন্যবাদ শুনার জন্য মানুষ বাড়ি পযন্ত আসতে পারে।
কি রে হেমা ওমন চোখ বড় বড় করে কি দেখছিস। ফুপির কথায় আমার হুশ আসে।
আয় মা হিমেষের সাথে কথা বল। সেই কখন এসেছে ছেলে আমার অথচ তুই তোর বড় ভাইয়ের সাথে দেখাই করলি না। এ কেমন কথা।
এত সময় সোফায় বসে থাকা হিমেষ ভাই সবার সাথে কথা বলছি বলে আমাকে খেয়াল করে নি।
হিমেষ ভাই আমাকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আমি একটু মেকি হাসার চেষ্টা করে বললাম, আরে ফুপি বোলো না বিকেলে কলেজ থেকে আসার সময় কুকুরে ধরে ছিলো। তাই বিকেলে গোছল করে আর বের হইনি গো। আর তোমরা তো কেউ আমাকে বললেও না যে আজ হিমেষ ভাই আসবে। এরকম হুট করে বললে কি আর সব সময় আসা যায়, তুমিই বলো। বলতে বলতে আমি ফুপির পাশে গিয়ে বসে পড়লাম। ফুপি আমার কথা শুনে ব্যস্ত হয়ে বললেন, কোথায় লেগেছে আমার মেয়েটার। খুব ব্যাথা লেগেছে কি।
আরে না ফুপি তেমন কিছু না।
তখন ছোট কাকি এসে বললো, আর বলিস না আমরা কি আর জানতাম নাকি আজ হিমেষ বাবু বাড়ি আসবে।। সকালে ফোন করে বলে, আমি এসে গেছি। এবার আমার নজর গেলো হিমেষ ভাইয়ের দিকে। তিনি তখনো তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আর কি যেনো বির বির করছে।
আমি চেচিয়ে বললাম, ও ভাই জান কি কন জোরে কন কানে শুনি না।
হিমেষ ভাই আমার কথা বলার ধরন দেখে এবার হা করে তাকিয়ে আছে। সে এমন কিছু আমার থেকে আশা করেনি। আহা কি কি ছ্যেকা টাই না দিলাম। আমার কথা শুনে মেজো বড় কাকি মাথায় চাটি মেরে বলে, যা দুষ্টমি করিস কেন। তুই তোর একটা মাত্র বড় ভাইয়ের সাথে এভাবে কেউ কথা বলে নাকি।
ফুপি ফোরন কেটে বলে, কেনো বলবে না, বিদেশ থেইকা পড়ে আসছে দেখে কি আমার ছেলে বাঙালি রিতি নিতি সব ভুলে গেছে নাকি।
এবার আমি হিমেষ ভাইকে বললাম ভালো আছেন নি
গো ভাইজান। হিমেষ ভাই গলা ঝেরে বলেন, হ্যা ভালো আছি, তা তুই কেমন আছিস ভিতু রানি।
আমার চোখ আপনা আপনি বড় হয়ে গেছে। হিমেষ ভাই যে এই ভাবে আমাকে বলবে আমি কল্পনাও করি নি।
হিমেষ ভাইয়ে দিকে তাকিয়ে দেখি কেমন বাকা হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে। আমার কানের কাছে এসে বলে আমার সাথে লরতে এসো না মেয়ে। তুমি গাছের ডালে চললে আমি চলি তার পাতায়।
এবার ফুপি হিমেষ কে বলে কেনো রে তুই ওকে ভিতু বলছিস কেনো, ঠিক তখনি রুমে ডুকে আমার গুনধর ভাই হিমেল। এসেই বলে হিমেষ ভাই কি হয়েছে গো। এবার হিমেষ ভাই বলে বলবো নাকি যে তুই কুকুর দেখে ভয়ে দৌড় দিয়ে ছিস।
এবার আমার কলিজার পানি শুকিয়ে গেছে, কারন মা যদি জানতে পাড়ে আমি কুকুর দেখে দৌড়েছি, আর এখন হিমেল টাও আছে তাহলে আজ আর পচানো বাকি থাকবে না।
কি সুন্দরি বলবো নাকি?
তুমি বনুর কানে কানে কি বলো হিমেষ ভাই। হিমেলের কথা শুনে জিমেষ ভাই থম থম খেয়ে গেলেন।
কি হলো ভাইয়া বলো না।
কি আর হবে আমাদের হেমা কুকুর দেখে ভয়ে দৌড় দিয়েছে। আর ত্রপরে রাস্তায় পড়ে গিয়েছে।
এই কথা শুনে মা বড় মা ছোট মা ফুপু সবাই আমার দি কে বড় বড় চোখ করে তাকালো, যেনো এক্ষনি খেয়ে ফেলবে।
হিমেল এবার হেসে বলে আরে ভাইয়া জানো তো না আপু তো তেলাপোকা দেখেও ভয় পায়। জানো সেই দিন কি হয়েছে। আপু গোছলে গেছে ঝরনা ছাড়ার সময় দেখে যে ট্যাপের উপড় তেলাপোকা, আপু তো মা থা ভরা শ্যাম্পু নিয়েই বাহিরে এসেছে চিৎকার করতে করতে। এই কথা শুনে হিমেষ ভাই আর হিমেলের সে কি হাসি। সেই হাসিতে যোগ দিলো আমার ছোট দুই কাকা। এত সময় তারা উপড় তলায় ছিলো।
আমি রেগে আমার রুমে এসে শুয়ে পড়লাম।হিমেল কে যদি এর শাস্তি না দিয়েছি তাহলে আমার নামও হেমা না। আসুক এর পড়ে দেখাবো মজা। ও দিকে ডইং রুমে হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে। আমার এসব ভালো লাগছে না তাই ঘুমানোর চেষ্টা করছি, এমন সময় দেখি তুলি এসে বলে কিরে হেমা আজ কলেজে কি হলো রে। কাল নাকি কলেজে কোন চিফ আসবে। সে আমাদের কলেজের ছাত্র ছিলো, নোটিশ দেখলাম। গ্রুপে সবাই বলা বলি করছে, দেখতো একটু,।
ওর কথায় আমার টনক নরলো, তাইতো আমি সেই কখন নেটে ছিলাম, আজ এখনো নেটে যাই নি, হায় হায়, সব শেষ হয়ে গেলোরে হেমা। যেই ভাবা সেই কাজ, নেটে ডুকতেই দেখি ফেন্ড গ্রুপে নটিভিকেশনের ঝর, কাল নাকি কোন চিপ গেষ্ট আসবে। সেই জন্য সকল স্টুডেন্ট দের সকাল নয়টায় উপস্তিত থাকতে হবে।
নটিফিকে শনের শব্দ এতো বেশি হচ্ছিলো যে পাশের রুম থেকে হিমেষ ভাই বলেই বসলেন কিরে ভিতু রানি, এতো কার সাথে কথা বলিস।
হিমেষ ভাইয়ের কন্ঠ শুনে তারাতারি ফোন সাইলেন্ট করে ফেললাম আর ফোন চালাচ্ছিলাম। ঠিক তখনি মনে হলো হিমেষ ভাই আমার পাশের রুমে। মনে জম আমার সামে বসে আছে। হায়রে কপাল। এটাও হওয়ার ছিলো আমার সাথে। যার থেকে আমি পালিয়ে বেরাচ্ছি সেই এখন আমার পাশের রুমের বাসিন্দা।
নিচ থেকে রাতের খাবারের ডাক পড়ায় আমার হুশ হয়। কিন্তু আমি যাবো কিভাবে হিমেষ ভাই আছে। আবার এখন না গেলে মা তেরে আসবে আমাকে মা*র তে।
বাড়ির বড় মেয়ে হলেও সবাই এক সাথে থাকায়, সবাই সমান আদর পাই।
যাই হোক আমাকে এখন যেতে হবে। খাবার টেবিলের কাছে গিয়ে দেখি ওমা সব চেয়ার ফিল আপ। আমার চেয়ারে হিমেষ ভাই বসে আছে। আর হিমেষ ভাইয়ের সামনে একটা চেয়ার ফাকা আছে।
এবার আমার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে কারন আমার চেয়ারে কেউ বসে না। আমাকে দেখে হিমেষ ভাই বলেই ফেলরো কি রে শুটকি, এমন চেহারা বানিয়ে দাড়িয়ে আছিস কেন। বসে যা আমার সামনের টায়। তুই তো খাবি না চিকন মানুষ। এত বড় চেয়ার দিয়ে কি হবে।
রেগে চেয়ার টেনে বসে পড়লাম। এসেছে পড় থেকে ঠেস দিয়ে কথা বলছে। অথচ তার সাথে আমার কোনো কালেও শত্রুতা ছিলো না। যতটুকু ক্রাশ খাইছিলাম সব বাদ। আগে যদি জানতাম যে সে আমার চাচা তো ভাই তাহলে ক্রাশ নামক বাশ টাও খাইতাম না।
আমার ফোন বাজতেছে, হৃদি ফোন এনে দিয়ে বলে হেমা আপু তোমার বান্ধবি ফোন করেছে।
ফোন কানে নিতেই মনি চিৎকার করে বলে কি শাক*চু*ন্নি ফোন ধরছ না কেনে খবর জানস কি হইছে।
আরে বাবা বলবি তো কি হইছ?
আমাদের গলিতে যে ছেলে গুলো বইসা থাকে না, ওদের কে যেনো মারছে, এখন ওরা সদরে ভর্তি রইছে।
মনি র কথা শুনে আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না কাজটা কার,, বিস্ফোরিত চোখে তাকালাম আমি হিমেষ ভাইয়ের দিকে। দেশে এসেই মারা*মারি শুরু করে দিয়েছে। আর এখন এমন ভাবে খাচ্ছে যেনো কত ভত্র ছেলে।
এর মাঝেই হিমেষ ভাইয়ে খাওয়া শেষ ফুপি এবার বললেন কি খেলি হিমেষ কিছুই তো খেলি না বাবা।
হিমেষ ভাই বলরেন, মা আমার খাওয়া শেষ। হিমার খাওয়া শেষ হলে এক কাপ কফি দিয়ে আমার রুমে পাঠিয়ে দিও। দেখি আমাদের ডংগি রানি কেমন কফি বানাতে পারে। এই কথা বলেই তিনি রুমে চলে গেলো।
আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছি, কে বললো যে আমি ভালো কফি বানাতে পারি ।
এসব ভেবে সময় নষ্ট না করেখেতে লাগলাম। খাওয়া শেষে ফুপি বলে, তারাতাড়ি যা হিমেষ কে কফি দিয়ে আয়। ফুপি আমার হাতে মগ ধরিয়ে দিয়ে বললেন।
আমার আর কি করার যাই দিয়ে আসি।
হিমেষ ভাইয়ের রুমের দরজা চাপানো ছিলো, রুমে ডুকে যে আমি এরকম
কিছু দেখতে পাবো কখনো ভাবিনি,,,,,
চলবে,,,,,