প্রেম তুফান পর্ব -০৪

#প্রেম_তুফান
#পর্ব৪
#Writer_Sabiha_Sultana_Mohima
ভালোবাসি ভিষন রকমের ভালোবাসি!
এর বেশি শোনার ক্ষমতা আমার ছিলো না। হিমেষ ভাইয়ের মুখে অন্য কাউকে ভালোবাসি শোনার মতো শক্তি আমার নেই।
সাদ থেকে একছুটে নিজের ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দিয়ে খাটের উপড় বসে পড়লাম। আমার কানে শুধু ভাসছে হিমেষ ভাইয়ের বলা ভালোবাসি কথাটা।কেনো সহ্য করতে পারছি না আমি। পরিবারের বড় ছেলে সে, তারপরেই আমি। ছোট বেলায় যখন মা বকতো তখন একমাত্র হিমেষ ভাই আমার কান্না থামাতে পারতো। আজকে আমার কান্না থামাবে। যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই হিমেষ ভাইয়ের প্রতি একটা ভিন্ন অনুভূতি কাজ করতো। পারিবারিক ভাই বোনের সম্পর্ক নষ্ট হবে ভেবে কখনো বলি নি ভালোবাসি।
ডুকরে কেদে যাচ্ছি। ওয়াশ রুমে গিয়ে ঝরনা ছেরে তার নিচে বসে চোখের জলের সাথে নিজের না পাওয়া স্বপ্ন গুলোকেউ আজ বিশর্জন দিচ্ছি। অনেক সময় ভেজার ফলে শরিরের চামরা সাদা হয়ে গেছে। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। এখন আমার ঘুম প্রয়োজন।
**************★***★****************★***★**★*********
নতুন আরো একটা দিনের আগমন ঘটেছে।বদলে যাবে অনেক কিছুই হয়তো নতুন কিছুর সূচনা।
হিমেষ ঘুম থেকে উঠেই প্রতিদিনকার মতো আজ সকালে সেন্টার টেবিলে কফির মগ দেখতে না পেয়ে মেজাজ চটে যায় তার। চিৎকার করে ডাকে হেমাকে।
হেমা এই হেমা আমার কফি কই। কিন্তু কোনো সারা পাওয়া যায় না বিপরীত দিক থেকে। পাবে বা কই থেকে হেমা তো কঠিন পন করেছে দেখবে না হিমেষের মুখ। মারাবেনা হিমেষের ছায়াটাও। কলেজ হোস্টেলে উঠবে বলে সব কিছু গোছানোও তো তার শেষ।
হিমেষের চিৎকারে কিচেন থেকে রিতু কফির মগ নিয়ে হিমেষের রুমের দিকে চলে যায়। তখন কেবল সবাই নাস্তার টেবিলে বসেছে। উপর থেকে কিছু ভাঙ্গার শব্দে সবাই চমকে উঠে। কি হলো। হিমেষের করা কথা শোনা যাচ্ছে।
কতবার বলেছি আমার রুমে তুই আসবি না। আমার কফি হেমা দিবে। তুই কেনো এসেছিস। হিমেষের ধমকে কেপে ওঠে রিতু।
মুখ ফুটে কিছু বলতে যাবে তখনি হিমেষের মা এসে বলে কি শুরু করছিস হিমেষ। সকালে হেমা না খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো আর এখন তুই রিতুর সাথে এমন করছিস কেনো। রিতু এসেছে মাত্র কয়েকটা দিনের জন্য অথচ তুই মেয়েটাকে শান্তিতে থাকতেই দিচ্ছিস না।
থাক মামি আমাকে নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না। আমি আজি চলে যাবো।
মা হেমা কই গেছে।
কি জানি কাউকে তো কিছু বলে যায় নি। কাল রাতে বলরো পরিক্ষার এই কয়েক দিন ও নাকি হোষ্টেলে থাকবে। বাড়িতে নাকি ওর পড়তে মন বসে না।
হিমেষের রাগ আরো বেরে গেলো ইস্টুপিট মেয়ে কাউকে কিছু না বলেই চলে গেছে।
হিমেষ কি আদোও জানে যে হেমা তার মুখ দেখবে না বলেই এ বাড়ি ছেরেছে।
এই তুলি আজ কলেজে ক্লাস আছে আমার যা রেডি হ আমি তোকে নিয়ে বের হবো।
আচ্ছা ভাইয়া।
হিমেল এসে হিমেষের কাছে নিচু স্বরে বলে ভাইয়া তোমার সাথে আমার কথা ছিলো।
হিমেষের ভ্রু কুচকে তাকায়। হিমেল আবার কি বলবে।
আচ্ছা ভাইয়া তুমি কি আপুকে কিছু বলেছো?
না তো। কেনো?
না মানে সকালে আপু যখন বের হয়ে গেলো না তখন দেখলাম আপুর চোখ কেমন ফোলা ফোলা।
কালতো মা বাবা কেউ কিছু বলে নি। তাহলে তুমি কি কিছু বলেছো যে আপু কেদেছে।
এবার হিমেষ চিন্তায় পড়ে যায়। হেমার আবার কি হলো। আবার এ কারনে তো বাসা ছারে নি। নাকি কোনো বয়ফেন্ড আছে ওর।
হিমেষ এবার একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে বলে, আহ্ বয়ফেন্ড তাই না সোনা।
যাষ্ট সি আমি তোর লাইফে আমাকে ছারা কাউকে আসতে দিবো না। তুই শুধু আমার। আমার জিবনে তুই যেমন তুফান হয়ে এসেছিস।
এবার আমিও তোর মনে সেভাবেই প্রেমের তুফান নিয়ে আসবো। এতো দিন অপেক্ষায় ছিলাম কবে তুই বড় হবি। কবে বুঝবি আমার মনের কথা কিন্তু না তুই তো আমাকে বুঝলি না। তার আগেই দুরে সরে গেলি। আমি আসছি তোর জিবনের সতেরো তম বসন্ত কে রাঙিয়ে দিতে।
***********★****★********★*****★**************★*****
কলেজে ডুকেই হিমেষের চোখ চলে যায় কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসে থাকা হেমার দিকে। কত সুন্দর হাসির মাঝে ডুকবে আছে। কিন্তু এই হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক অসহায় হেমাকে আবিষ্কার তরলো যেনো হিমেষ। হেমা হিমেষকে দেখার সাথে সাথেই উঠে চলে গেলো ক্লাসের দিকে।
তুলি বললো কি ব্যাপার আজকে হেমা কেনো হিমেষ ভাইকে দেখে এমন করছে। তবে কি আমরা যা ভেবে ছি তাই।
ভাবতে ভাবতে তুলিও হেমার পাসে বসে পড়ে আর বলে কিরে আজকে তুই এতো চুপ কেন। কি হইছে তোর।
না তো কিছু হয় নাই আমার।
তাহলে ভাইয়াকে দেখে ওমন সরে এলি কেন।
সব সময় সবার সাথে মিশতে নেই।
কি হইছে তোর।
এমন সময় বেল পরে যাওয়ার আর কিছু বলতে পারে না তুলি।
প্রথম ক্লাসেই আসে হিমেষ।
হিসেষ কে দেখে হেমার বুকের ভিতরে মোচর দিয়ে ওঠে। আহা মানুষটা যে তার না৷। সে তো অন্য কারো জন্য।
এদিকে মুক্তা আর তাদের দলের মেয়েদের কথা কানে আসে তুলি আর হেমার কানে।
দেখ ামাদের নিউ লেকচারাল কত হেনসাম।
কথা বলার স্টাইল দেখ। আমি তো পুরা ক্রাস খাইছি রে। এই স্যারকে পটাইতে হবে।
ওদের কথা শুনে হেমা তাচ্ছিল্য হাসে। এ ই মানুষটা অন্য কারো। তার জন্য তো নয়। মুক্তার জন্যও না। এক সময় যে মানুষটার জন্য বিচলিত হতো, আজ তার জন্য কি একটুও মায়া হচ্চে না হেমার।
হিমেষ খেয়াল করলো ক্লাসের সব মেয়ে তাকালেও হেমা তার দিকে একবারো তাকায় নি। পড়া ধরার সময়ও মাথা নিচু করে পড়া দিয়েছে। হিমেষের এই সব মোটেও ভালো লাগছে না।
ক্লাস শেষ হলে তুলিকে বলে হেমাকে নিয়ে তার রুমে দেখা করার জন্য। করন কলেজ ছুটি হলে হিমেষ আর হেমার দেখা হবেনা। হেমা হোষ্টেলে চলে যাবে।
তুলি কয়েকবার বলার পড়েও যখন হেমা যাবেনা বলে বসে রইলো তখন তুলি একাই হিমেষের রুমের কাছে চলে গেলো।
এদিকে হিমেষ কেনো হেমাকে ডেকেছে, তার জন্য মুক্তা বার বার হেমাকে বিরক্ত করতে লাগলো। হেমা রেগে পুকুর পাড়ে গিয়ে বসে পড়লো।
তুলি হিমেষের রুমে ডুকে সোজা বললো ভাইয়া তোমার আর হেমার মাঝে কি হয়েছে। ও তো আসলোই না। আরো আমাকে রাগ দেখিয়ে পুকুরের দিকে চলে গেলো। সত্যি করে বলো ওরে কি করছো। কাল বিকেলে ও সাদে গিয়েছিলো তখন দেখি ও কাদতে কাদতে রুমে আসলো। তখন তুমিও তো সাদে ছিলে।
ওহ্ শেট, এই কথা তুই আমাকে আগে বলবি না।
হিমেষ তুলিকে কিছু বলতে না দিয়েই ছুটে বের হয়ে যায়।
**********★***********★***********★*******************
হোষ্টেলে থাকার জন্য হেমা কিছু প্রয়োজনিয় জিনিষ কিনবে বলে বের হয়ে যায়। হোষ্টেলে ফিরার সময় হেমার মনে হয় কেউ হেমাকে ফলো করছে। কিন্তু সামনে পিছনে কাউকেই দেখতে পায় না। দ্রুত পা চালিয়ে হোষ্টেলে দিকে রওনা দেয় হেমা।
হোষ্টেলের প্রায় কাছকাছিরএমন সময় একটা মাইক্রোবাস এসে থামে হেমার সামনে। কিছু বোঝার আগেই কতগুলো কালো মুখোশ পড়া ছেলে নেমে মুখের মধ্যে রুমাল চেপে ধরে। অতিরিক্ত ভয়ে হেমা তখনি জ্ঞান হারায় সেখানে।
যখন হেমার জ্ঞান ফিরে পায় তখন নিজেকে একটা বদ্ধ ঘরে আবিষ্কার করে হেমা।
কেউ আছো প্লিজ হেল্প মি।আমার ভিষন ভয় করছে

চলবে,,,,,,,
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here