প্রেম তুফান পর্ব -০৫ ও শেষ

#প্রেম_তুফান
#পর্ব_৫এবং শেষ
#Writer_Sabiha_Sultana_Mohima

আমার কন্ঠ শুনে কেউ আসছে না। আমার ভিষন ভয় করছে। অন্ধকারে আমি একদম থাকতে পারি না। আমি আরো জোরে ডেকে উঠলাম, কেউ আছেন? প্লিজ হেল্প মি। আমার কন্ঠ ধ্বনি আমার কাছেই ফিরে আসলো। এভাবে কত সময় পড়ে ছিলাম খেয়াল নেই। হাাত সামনে আনার চেষ্টা করে বুঝতে পারলাম হাত বাধা। আমাকে একটা চেয়ারের সাথে শক্ত করে বেধে রাখা হয়েছে।
এবার মনে হচ্ছে কেউ এদিকে এগিয়ে আসছে। জানি না কি হবে আমার।
দীর্ঘ সময় অন্ধকারে থাকায় হঠাৎ করে দরজা খোলায় আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম। পরিচিত কন্ঠ কানে বাজতেই চোখ খুলে যাকে দেখলাম তাকে দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
তুমি!
হ্যা আমি।
আমাকে কেনো এখানে এনেছো?
কারন তুই আমার ভালবাসা কে কেরে নিয়েছিস।
আমি! রিতু আপু তুমি ঠিক আছো। কি বলছো এই সব আমি কেনো তোমার ভালোবাসা কেরে নিবো? বরং তোমাদের সুখের জন্যই তো আমি বাড়ি ছেরে হোষ্টেলে আছি। কই কেউ তো জানতেও চাইলো না।
তুই, তুই এক মাত্র যে আমার আর হিমেষের মাঝে বাধা তৈরি করেছিস।
তানা হলে তো কবেই আমি হিমেষ কে আর সমস্ত সম্পত্তি আমার নামে করে নিতে পারতাম। কিন্তু তুই মাঝখান থেকে এসে বাগড়া দিলি আমার সব কিছু কে। আর আমার নানাও তার একমাত্র নাতি কে সব কিছু লিখে দিলো। না এতেও আমার কোনো কষ্ট ছিলো না।ভেবেছিলাম হিমেষকে ভালোবাসার জালে ফাসিয়ে সব নিজের করে নিবো। সম্পত্তি আমার হবে, হিমেষের মতো হেনসাম ছেলে আমার স্বামি হবে। কিন্তু না। হিমেষ তো তোকে ভালোবাসে। সেই ছোট বেলা থেকে চাইতাম হিমেষ আমার হোক। তাই তো সব সময় পিছে পিছে ঘুরতাম।
যখন হিমেষ কে আমার মনের কথা বলতে গেলাম তখন হিমেষ আমাকে বলে কি ও আমাকে না বরং তোকে ভালোবাসে।
হিমেষ যদি আমার না হয় তাহলে হিমেষ কেউ কারো হতে দিবো না।
আমি তোকেই মে*রে ফেলবো। যাতে হিমেষ বুঝে ভালোবাসার কষ্ট কি। আর তুই ম*রে গেলে হিমেষ হবে শুধু আমার।
আমি অবাক হয়ে গেছি। হিমেষ ভাই আমাকে ভালোবাসে তাহলে সেই দিন যে রিতু কে বললো যে ওকে ভালোবাসে। এই সব কি বলছো তুমি।
হিমেষ ভাই তোমায় ভালোবাসে। বিশ্বাস করো হিমেষ ভাই শুধু তোমাকে ভালোবাসে। আমার কিশোরি মনে হয়তো তার জন্য ভালবাসা আছে, কিন্তু সেই দিন ছাদে যখন বলরো তোমাকে ভালোবাসে তখন আমি খুব কষ্ট পেছিলাম। আর তার পরেই তো আমি হোষ্টেলে চলে আসি।
সত্যি বলচি আমি।
নারে মেয়ে হিমেষ আমাকে কখনই ভালোবাসে নি ভালোতো বেসেছিলো তোকে। তোর জন্য আমার বড্ড মায়া হচ্ছে। কিন্তু কি বলতো তুই বেচে থাকলে তো আমি হিমেষকে পাবো না। তাই তোকেউ বেচে থাকতে দিবো না আমি। তবে হ্যা আমি তোর জন্য এই টুকু করতে পারি। তোকে বাচিয়ে রাখবো। কিন্তু এমন ভাবে বেচে থাকবি যেখানে নাকি তুই নিজের মৃত্যু কামনা করবি। বেচে থেকেউ সমাজে মাথা বের করতে পারবি না।
তখন ঠিকি হিমেষ আমাকে গ্রহন করে নিবে। কোনো কলঙ্কিনী কে তো আর হিমেষ নিজের জিবন সাথি করবে না।
এই কথা বলেই রিতু কাউকে এগিয়ে আসার জন্য ইশারা করে।
ওর ইশারা পেয়ে যারা এগিয়ে আসে তাদের কে দেখে হেমা আরো বেশি অবাক হয়। এরা এখানে কেনো।
নাউ তোমাতের মনের ঝাল মিটিয়ে নাউ। তবে দেখো সাবধানে, ও যেনো আবার ম*রে না যায়।।
রিতুর কথায় হেমা চমকে তাকায় ওদের দিকে। ওরা তো ওদের গলিতে বসে থাকা সেই ছেলে গুলো। ওরা কি করছে এখানে। আর রিতুই বা কি বলছে। কোনো কিছুই বোঝতে পারছে না।
ওদের কে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে হেমা যখন বুঝতে পারে তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। রিতুর প্রতি এক ঝাক ঘৃনা নিয়ে হেমা সেখানেই জ্ঞান হারায়।
*******★**********★********★*********★**********★***

চোখ মেলে নিজের চোখের সামনে হিমেষ ভাইয়ের মুখ দেখতে পেলাম। আমার মুখের উপর ঝুকে বসে আছে। আমি এখন কই?।

আমাকে চোখ মেলতে দেখে হিমেষ ভাই নিজেকে ছাড়িয়ে নিলেন আমার সামনে থেকে। এত সময় পড় নজরে আসলো হসপিটালের সাদা দেয়াল। উপড়ে ফ্যান চলছে অবিরাম ভাবে। আমার হাতে ক্যানোলা লাগানো। শুধু হিমেষ ভাই নয়, পরিবারে প্রত্যেক কেই নজরে পড়লো আমার।
জ্ঞান ফিরেছে দেখে বড় বাবা নার্স ডেকে আনলেন। একে একে সবাই বের হলেও হিমেষ ভ্ই বের হলেন না। নার্স যখন বললো ওনার চেন্জ করতে হবে বাহিরে যান, এক পলক আমার দিকে তাকিয়ে তিনি বের হয়ে গেলেন কিন্তু কথা বলরেন না।
নার্স আমাকে চেন্জ করানোর সময় বলরো আপনি অনেক ভাগ্যবতি।
এরকম স্বামি কয়জন পায় বলেন। হসপিটালে আপনাকে যখন নিয়ে আসলেন তখনি সে কি চিৎকার। এত সময় আপনার পাশে বসে ছিলো। আমরা যখন ক্যানোলা পড়াতে গেলাম তখন বলে আস্তে ও যেনো ব্যাথা না পায়।
এতো পাগলামি করতে আমি কখন কাউকে দেখিনি।
আমি চুপচাপ শুধু নার্সের কথা শুনলাম। এখন যদি বলি সে আমার ভাই হয় স্বামি নয় তাহলে হয়তো লজ্জা পেতে পারে।
এটা ভেবেও ভালো লাগলো যে হিমেষ ভাইয়ো আমাকে ভালো বাসে। কিন্তু আমি বুঝতেই পারি নি।।
আচ্ছা রিতু আপু এখন কোথায়। হঠাৎ করেই মনে পড়ে যাওয়ায় আমি কেমন যেনো হয়ে গেলাম, ওই ছেলে হুলো আমার সাথে কি করছে। আচ্ছা আমি কি রে*প হয়েছি। আমি রেপ হলেও কি হিমেষ ভাই আমাকে বিয়ে করবে। এসব ভাবতে ভাতেই আমার শ্বাস কেমন আটকে আসছিলো। সেই মূহুর্তে কেবল একটা পরিচিত কন্ঠ কানে আসছিলো, আর তা হলো হেমা তোর কিচ্ছু হবে না, এই হিমেষ সব ঠিক করে দিবে। প্লিজ চোখ খোল পাগলি।
এভাবেই তিন দিন কেটে গেলো হসপিটালে। হসপিটাল থেকে বাড়ি ফিরে যখন মোটামোটি সুস্থ, ঠিক তেমনি একদিন মা এসে হুট করেই বললো, হেমা এই শাড়িটা পড়ে নে তো মা। তুলি ওকে একটু সাহায্য করতো। আমি প্রশ্ন করে বসলাম কেনো মা কি হয়েছে।
কিছুই হয়নি। শাড়ি পড়তে বলেছি পড়ে নে।
শাড়ির পেকেট খুলার পর দেখি তাতে একটা বেনারসি শাড়ি রয়েছে। আর কিছু সিমপল গহনা।
আমি তুলির দিকে তাকানোর পর ও হেসে বলে, কি ভাবি কেমন সারপ্রাইজ দিলাম তোমাকে। তুমি আজ থেকে আমার ভাবি হবে। আমি আর তোমার কাজিন থাকবো না। ননদ হয়ে জ্বালাবো।
আমি কিই বা বলবো, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছি। হিমেষ ভাইয়ের সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে। এক সময় এই বিয়ে নিয়ে কত স্প্ন দেখতাম। আর আজ সব কেমন বিষাক্ত লাগছে। এমনটা তো না হলেও পারতো।
মাগরিবের আজানের পড় পারিবারিক ভাবেই আমার আর হিমেষ ভাইয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেলো।
************************★*******************************
ফুলে সজ্জিত বাসর ঘরে বসে আছি। এক বুক ভয় কাজ করছে আমার মাঝে। এই একটা সপ্তাহ হিমেষ ভাই আমার সঙ্গে কোনো কথা বলে নি। আর না কখনো আমরা সামনা সামনি হয়েছি। জানিনা হিমেষ ভাই এসে কেমন করবে। সে কি আমায় মন থেকে বিয়ে করলো নাকি শুধু অনুগ্রহ করে বিয়ে করলো।
আমার ভাবনার মাঝে বিচ্ছেদ হলো খট করে দরজা লাগানোর শব্দে। দরজায় দাড়িয়ে হিমেষ ভাই ধিরে ধিরে এগিয়ে াসছেন আমার দিকে।
কাট থেকে নেমে যখনি সালাম করতে যাবো হিমেষ ভাই আমাকে কুলে বলরেন তোর জায়গা কি আমার পায়ে। যা শাড়ি বদলে আয়।আর সাথে অজু করে আসিস।
হিমেষ ভাইয়ের কথা মতো আমি অজুরে আসলাম। এসে দেখি তার পাশে আমার জন্য জায়নামাজ বিছিয়ে রেখেছে।
শোন নতুন জিবনের প্রথম রাত আল্লাহ শুকরিয়া আদায় করে কাটাই। আয় দুই রাকাত নামাজ পড়ি।
হিমেষ ভাইয়ের পাশে চুপচাপ নামাজে দাড়িয়ে গেলাম।
নামাজ শেষ করে হিমেষ ভাই বলরেন তোর মনে যে ভয় যে আমি তোকে মেনে নিবোনা এটা তোর ভুল ধারনা। তুই জ্ঞান হারানোর পড়ে আমি সেখানে উপস্থিতি হই। আর রিতু আর ওদের কে পুলিশের হাতে তুলে দেই। কিন্তু তুই ভয়ে জ্ঞান হারালি। হসপিটালআনার পর ডক্টর বলরো তুই ভয়ে এমন হয়েছিস।
াচ্চা তুই কেন বুঝলি না আমি তোকে ভালোবাসি তোর কি মায়া নেি রে।
আমি শব্দ করে কেদে দিয়ে হিমেষ বািকে জরিয়ে ধরলাম। হিমেষ ভাইয়ো এতোটাই শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো যেনো ছেড়ে দিলেই হারিয়ে যাবো।
ভালোবাসি হিমেষ ভাই। ভিষন ভালোবাসি
আমিও তোকে ভিষন ভালোবাসি।
দুজনে ডুব দিলাম ভালোবাসার এক নতুন জগতে।
সমাপ্ত
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here