প্রেম প্রিয়জন পর্ব অন্তিম

#প্রেম__প্রিয়জন🌸
#Writer_Sumaiya_Karim

~চতুর্দশ পর্ব~ [অন্তিম পর্ব]

পরের দিন সকালে সবাই ড্রয়িংরুমে একসাথে বসে টিভি দেখছিলো। শুধু পূর্ণ নেই। সে ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে তার রুমে। এই কয়দিন ঠিকমতো অফিসে ও যাওয়া হয় নি। অনেক গুলো কাজ বাকি। এদিকে পরির এইচএসসি পরীক্ষার আর মাত্র ২১ দিন বাকি। সব টেনশন একেবারে মাথার উপর চেপে বসেছে। এই টেনশনে সে ল্যাপটপ টা রেখে দেয়। উপরে দাঁড়িয়ে ভাবছে পরি কে ডাকবে কি ডাকবে না। মনে মনে বলছে,

–‘বউ…এই বউ…এইইইই পরি এদিকে তাকা! আরে একটু তাকা! ঐ মাইয়া তাকা বলছি!’

মনের কথা কি আর আদৌ কাক পক্ষী শুনে। পূর্ণ এবার হাত নাড়ে। পরির বদলে নিরা পেছন ফিরে। চোখ দিয়ে ইশারা করে বলে,

–‘কিইই?’

পূর্ণ ও ইশারায় বললো পরি কে ডেকে দিতে নিরা মুচকি হেসে পরি কে হালকা একটা ধাক্কা মারে আর ইশারায় উপরের দিকে তাকাতে বলে। পরি দেখলো উপরে পূর্ণ দাঁড়িয়ে আছে। তখন পূর্ণের মুখে বউ ডাক শুনে কেমন যেনো লাগছিলো তার। লজ্জায় লাল নীল সবুজ হয়ে যাওয়ার আগেই দৌড়ে পালিয়েছে। এখন সেই জন্য ডাকছে নাকি পূর্ণ! পরি চোখ ছোট ছোট করে তাকায়। পূর্ণ বললো,

–‘এদিকে আয়!’

পরি মাথা নাড়লো সে আসবে না। পূর্ণ খুব রিকোয়েস্ট করলো আসলো না সে। বললো পানি খাবে নিয়ে আসতে তাও আসলো না। পূর্ণ মনে মনে খুব রাগ হয়। একটু আসলে কি হতো? রোমান্স করার জন্য তো আর ডাকে নি তাই না?

পরি কিছুতেই পূর্ণের কাছে ধরা দিতে নারাজ। পুরোটা দিন গেলো রাতেও খাবার শেষ করে একসাথে সবাই। পূর্ণের উপর পরির বাবা মা যেনো ঋনী হয়ে গেলো। পরি এবার তার বাবা মার রুমে গিয়ে গল্প শুরু করে দেয়। নিরা আর পুষ্পা গভীর ঘুমে মগ্ন। এদিকে মা বাবা আর মেয়ে তিন জনের যেনো কথাই শেষ হয় না। পূর্ণের ও জেদ চেপে বসলো আজ পরির কে সে যে করেই হোক কথা টা বলবে। আর তখন না আসার শাস্তি পরি কে দিয়ে কিস করাবে। হুম এটাই উপযুক্ত শাস্তি। সে ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করতে থাকলো কখন পরি আসবে। একটা সময় পরি ঘুম পেয়েছে বলে বাবা মা কে গুড নাইট জানিয়ে ঘর থেকে বেরোয়। ঘুম ঘুম চোখে হাঁটতে নিলে পূর্ণ খপ করে পরির হাত ধরে ফেলে। পরি আচমকা ‘ভূত’ বলে চিল্লাতে যাবে পূর্ণ ওর মুখ চেপে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে। নিজের রুমে ঢুকিয়ে ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরি চোখ ডলে ডলে বললো,

–‘ওহ পূর্ণ ভাই আপনি? আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম!’

–‘ও আচ্ছা তাই নাকি?’

–‘হ্যাঁ আপনি দরজা বন্ধ করলেন কেন? আমার না খুব ঘুম পাচ্ছে সকালে কথা হবে ঘুমাবো এখন!’

পূর্ণ পরির হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় বেলকনিতে। দোলনায় বসিয়ে দেয় তাকে। ঘুম কাতর চোখে পরি আধো আধো দেখছে। বাহিরের পরিবেশ টা আজ খুব সুন্দর। নিরিবিলি আর স্নিগ্ধ বাতাস শরীরে ছুঁয়ে দিচ্ছে। পরি বললো,

–‘ওহহো আপনাকে বললাম না আমি ঘুমাবো!’

–‘চুপ শাট আপ!’

ধমক খেয়ে পরি চোখ খুলে তাকায়। পূর্ণ দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

–‘কিস মি!’

পূর্ণের কথা শুনে পরি আচমকা লাফ মেরে উঠে দাঁড়ায়। চোখ বড় বড় করে বললো,

–‘কিহহহ….!’

–‘কান তো নিজের সাথেই আছে আর কথাটাও আমি অতোটা আস্তে বলিনি তাও শুনতে পাস নি?’

আমতা আমতা করে বললো,

–‘আ-স-লে আমার খুব ঘুম পেয়েছে কি শুনতে কি শুনছি কে জানে!’

পূর্ণ আবার তাকে টেনে নিজের সাথে লেপ্টে বসায়।

–‘তোর ঘুম পাচ্ছে বেশি?’

–‘হু!’

–‘বজ্জাত মেয়ে এখনি নিয়ে গিয়ে পানি ভর্তি বার্থ টপে ছুড়ে মারবো যদি আর একবার ও বলেছিস ঘুম পাচ্ছে!’

এবার হালকা পাতলা ভয় পেয়ে যায়। ঘুম ভুলে এবার বললো,

–‘এমন করছেন কেন? আমি কি কিছু করেছি?’

–‘তখন ডেকেছিলাম আসিস নি কেন?’

–‘আ-ম…

–‘চুপপপ কোনো কথা নয়। লিসেন আমি তোকে তখন ভালো একটা কথা বলার জন্য ডেকেছিলাম আর তুই আসিস নি তাই তার শাস্তি এখন তোকে ভোগ করতে হবে!’

পরি আমতা আমতা করে বললো,

–‘কি শা-স্তি!’

–‘কিস করবি এখানে!'[পূর্ণ ডেভিল স্মাইল দিয়ে নিজের ঠোঁটের দিকে ইশারা করে!]

পরি বুঝতে পেরে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়। রুমের দরজা ও বন্ধ কিভাবে সে দৌড়ে পালাবে তখনকার মতো করে? কেন যে তখন আসে নি ভেবে নিজেই নিজেকে শ’খানেক গালি দিলো মনে মনে। পূর্ণ তা লক্ষ্য করে।

–‘বিড়বিড় করা শেষ হয়েছে?’

–‘না মানে হ্যাঁ আসলে!’

–‘হুম আসলে?'[ভ্রুঁ কুঁচকে]

পরি যেনো এক্ষুনি কেঁদে দেবে আসলে পূর্ণ যে শাস্তির কথা বলেছে সে সেটা কখনোই পারবে না। পরি চোখ মুখ বন্ধ করে বললো,

–‘আমি পারবো না!’

এই ভয়ার্ত মুখ দেখে পূর্ণের হো হো করে হাসি পাচ্ছে কিন্তু সে তা বাধ্য হয়ে আটকে রেখেছে। সিরিয়াস মুহুর্ত হাসি দিয়ে ভন্ডুল করা যাবে না। এই সিরিয়াস মুহুর্তে হাসি টা খুব অসভ্য যখন তখন চলে আসে!

পূর্ণ কিছু একটা ভেবে পরির কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,

–‘আমি পারবো!’

পরি তৎক্ষণাৎ চোখ খুলে। পূর্ণের এই ভয়েস তার হৃদয়ে অলরেডি হাতুড়ি পেটা শুরু করেছে। ভয়ংকর চাহনি। পূর্ণের চোখে মুখে তেড়ি স্মাইল খেলা করছে। পূর্ণ আবারো বললো,

–‘তবে আমি যদি শুরু করি হিতে বিপরীত হতে পারে তখন কিন্তু আমি দায়ী থাকবো না আফটার অল বউ টা তো আমারি সো সমস্যা থাকার কথা ও না অবশ্য! তাও বললাম আর কি!’

পরি কি করবে ভাবছে। সত্যি ই যদি পূর্ণ উল্টা পাল্টা কিছু করে বসে। ভাব পরি ভাব! কি করবি এখন?

পূর্ণ সেই লেভেলের মুড নিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। ইচ্ছা তো করছে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে। তাকে বিপদে ফেলে কি না হাসছে? পরি অনেক ভেবে বললো,

–‘ঠিক আছে। কিন্তু?’

–‘কিন্তু কি?’

–‘আপনি চোখ বন্ধ করতে হবে!’

–‘ওকে..!’

পূর্ণ চোখ বন্ধ করে ফেলে। পরি মনের জোড়ে নিজেকে শক্ত করে। তারপর পূর্ণের দিকে ঝুঁকে যায়। লজ্জায় মরে যাচ্ছে সে। ইচ্ছা করছে কোথায় লুকিয়ে পড়তে। কিন্তু এই মুহুর্তে এটা করা ছাড়া কিছু করার নেই! পূর্ণ রেসপন্স না পেয়ে বললো,

–‘চোখ খুলে ফেলবো নাকি?’

পরি তাড়াতাড়ি বললো,

–‘নো স্টপ….!’

পূর্ণ চোখ বন্ধ করা অবস্থায় এখনো। পরি পূর্ণের মুখের দিকে তাকায়। মারাত্মক কিউট ছেলেটা। এটা খেয়াল করতেই বুক ধুকপুক শুরু করেছে। ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। নিজের ঠোঁট জোড়া ক্রমশ কাঁপছে। চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে কাঁপা কাঁপা ঠোঁট জোড়া পূর্ণের ঠোঁটে আলতো করে ছুঁয়ে দিয়েই তড়িৎ গতিতে সরে যায়। পূর্ণ শক্ড!

–‘এটা কিস ছিলো?’

পূর্ণ চোখ খুলে ফেলে। দেখে পরি দেওয়ালের সাথে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। পূর্ণ উঠে দাঁড়ায়। ধীর পায়ে এগিয়ে আসে পরির দিকে। পরির সামনে এসে দাঁড়ায়। দুজনার মাঝে আর একটু দূরত্ব কেবল! পূর্ণ নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে পরির কাঁপা কাঁপা ঠোঁট জোড়া নিজের করে নেয়। পরি এখন তার বউ। কোনো রকম বাঁধা নেই দুজনার মধ্যে। যদি ও এখন ি পরি কে টাচ্ করার ইচ্ছা তার ছিলো না কিন্তু করে ফেললো পরির জন্য। দুজনার মাঝে প্রেম সৃষ্টি হয়েছিলো অনেক আগেই। অথচ কেউ কাউকে বলে নি। ভালোবাসতো দুজন ই অথচ কেউ প্রকাশ করে বলে নি ‘ভালোবাসি!’ এই অপ্রকাশিত ভালোবাসা যখন বিয়ে হয়ে দুজন কে এক করে দেয় তখন নিশ্চয়ই দুজনার মধ্যে আর কোনো বাঁধা থাকে না। পূর্ণ কি করছে যখন মাথায় আসলো। তখন নিজেকে দ্রুত পরির থেকে সরিয়ে নেয়। পরি ও আজকে কোনো রকম বাঁধা দেয় নি পূর্ণ কে। কেন দেয় নি নিজেও জানে না। দোলনায় বসে পড়ে সে। পূর্ণ অন্যদিকে ফিরে যায়। পরি কে সরি বলা উচিত। পূর্ণ ও পরির পাশে এসে বসে। নিজেকে স্থির করে সরি বলার জন্য মনঃস্থির করলো পূর্ণ। সঙ্গে সঙ্গেই পরির দিকে ফিরে বললো,

–‘পরি আ’ম স-স-রি!’

কথাটা শেষ করতেই পূর্ণ থ বনে গেলো। পরি তার কাঁধে ঝুঁকে পড়েছে। ঘুমিয়ে গেছে ও। পূর্ণ এবার এক গাল হাসলো। হেসে বললো,

–‘আমার ঘুম পাগলী টা!’

পরি কে আলতো করে বুকে জড়িয়ে নেয়। ঐ ভাবেই ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমায় দুজন। সকালে আগে ঘুম ভাঙ্গে পরির। রাতের ঘটনা মনে পড়ে যায়। লজ্জা লাল হয়ে যায় পরি। দ্রুতই সেখান থেকে প্রস্থান করে।

—————————

আজ ও সকাল হতেই লুকোচুরি শুরু করেছে পরি। শুক্রবার হওয়ায় কারো কলেজ নেই। ড্রয়িংরুমে বসে ছিলো সবাই। পূর্ণ ও বসা। কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছে না। চোখাচোখি হতেই চোখ সরিয়ে নেয় পরি। পূর্ণের বাবা মা কে আসতে দেখে সবাই ঐ দিনের মতো অবাক। পূর্ণের মেজাজ টা খারাপ হয়ে যায়। সে কিছু বলতে নিবে তার আগেই দুজন পরির বাবা মার পায়ের কাছে বসে পড়ে। উপস্থিত কান্ডে সবাই একেবারে হতভম্ব।

পূর্ণের বাবা মা আকুতি মিনতি করে নিজের অন্যায় কাজের ক্ষমা চায়। পূর্ণের ধমক খেয়ে উঠে দাঁড়ায়।

–‘আমাদের এই সব কান্নায় কোনো ফায়দা নাই। চলে যান এখান থেকে! আমরা যেভাবে আছি ওভাবেই থাকতে দিন আর নিজেরাও নিজেদের ধন সম্পত্তি নিয়ে ভালো থাকুন!’

নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে অনুশোচনায় ভুগে ক্ষমা চাইতে এসেছিলেন দুজন কিন্তু নিজে রা যা করেছেন ক্ষমা পাওয়ার ও যোগ্য না ভেবে খুবই নিরাশ হন। সত্যি ই তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। এও বুঝতে পেরেছেন সন্তান ছাড়া এই সহায় সম্পত্তি অর্থ যশ প্রতিপত্তি তে সুখ নেই। সব কিছু লবণ ছাড়া তরবারির মতো পানসে হয়ে যায়। এটা উনারা উপলব্ধি করতে পেরেছেন। হতাশ হয়ে চলে যেতে নিলে পরির মা আটকায় তাদের।

–‘ভাইয়া ভাবী দাঁড়ান!’

পূর্ণ বললো,

–‘চাচি কি করছেন আপনি?’

–‘পূর্ণ বাবা শান্ত হও। ক্ষমা চাইলে সৃষ্টি কর্তা ও ক্ষমা করে দেয় আমরা কেন নয়? উনারা যদি সত্যি ই নিজেদের ভুল বুঝতে পারে তাহলে আমাদের উচিত ক্ষমা করে দেওয়া!’

–‘কিন্তু!’

–‘কোন কিন্তু নয়।’

সামনেই পূর্ণের বাবা মা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। পরির বাবা মা উনাদের সামনে যায়। বাদ বাকি সবাই নিরব দর্শক।

–‘পরি কে আমাদের কাছে মৃত বানিয়ে সেই আপনারা ই তো দুঃখে কষ্টে হোক বড় করেছেন এটাই অনেক। যদি সত্যি ই পরি কে মেরে ফেলে দিতেন তাহলে তো আমরা আজ নিজেদের সন্তান কে ফিরে পেতাম না। আর আমাদের ও কিছু করার থাকতো না!’

–‘হ্যাঁ ও ঠিক বলেছে। সন্তান না হারিয়েও আমরা কষ্ট ভোগ করেছি সেই আমরা ই আপনাদের থেকে আপনাদের সন্তান কেও কেড়ে নিতে চাই না। আমরা চাই পুষ্পা পূর্ণ আপনাদের ই থাকুক! মা বাবার উপর কোনো রকম ঘৃণা জমুক চাই না। পূর্ণ পুষ্পা এদিকে আসো!’

দুজন ই এগিয়ে আসে। দুজন ই চুপচাপ।

–‘ভাইয়া ভাবী যা করেছে সব ভুলে যাও। আমরা পরি কে পেয়েছি এটাই অনেক। তোমরা রেগে থেকো না আর!’

পূর্ণের মা কান্না ই করে দেন। পূর্ণ আর পুষ্পা কে নিজেদের বাবা মার কাছে ফিরিয়ে দেয়। জেঠি এবার পরির কাছে গিয়ে বললো,

–‘আমি তোর উপর অন্যায় বেশি করেছি। মাফ করে দিস আমায়! টাকা সম্পত্তির মোহে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম তাই বুঝিনি কোন টা ঠিক কোনটা বেঠিক! তোর পায়ে পড়ি মা!’

পরির চোখে বড় বড় করে ফেললো। জেঠি সত্যি ই তার পায়ে পড়ছে ছিঃ ছিঃ। পরি তাড়াতাড়ি উনার হাত ধরে ফেলে বললো,

–‘এসব কি করছেন জেঠি! যা হয়েছে হয়েছে! আর মনে রাখতে চাই না!’

খারাপ ও ভালো হয় আবার ভালো ও খারাপ। সব ই মানুষ একে অপরের বিবেকের উপর নির্ভর করে। যেমন পূর্ণের বাবা মা ও। পরির সাথে যা করেছেন তা নিয়ে কখনো গভীরে ভেবে দেখেন কিন্তু নিজেদের সাথে হতেই বুঝতে পেরেছেন কতটা অন্যায় করেছিলো তারা। যাই হোক সব ভুল ভ্রান্তি শেষে দুই পরিবার ই এক হয়। মিলেমিশে হাসি খুশি থাকা ই তো সবার কাম্য!

পরি আর পূর্ণের বিয়ে নিয়ে কথা উঠে। পরির এইচএসসি পরীক্ষার পর বিয়ে হবে! ধুমধাম করে অনুষ্ঠান করে এবার ছেলের বউ ঘরে তোলার ইচ্ছা পূর্ণের বাবা মা। আর ভবিষ্যতে অন্যায় কিছু করবেন না তারা। পরি বিয়ের কথা শুনে লজ্জা পায়। পূর্ণের দিকে তাকাতেই পূর্ণ চোখ টিপ মারে। পরি ভেঙ্গচি কাটে।

সন্ধ্যায় পূর্ণ পরি কে একা পায়। পরি ইশারায় বললো,

–‘কি?’

পূর্ণ তাকে ওখানেই থাকতে বলে কোথায় চলে যায়। পরি ভাবছে গেলো টা কোথায়? কিছুক্ষণ পর ফিরে আসে। হাঁকাচ্ছে সে। পরি কিছু বুঝতে পারলো না। হঠাৎ ই পূর্ণ হাটু গেড়ে পরির সামনে পড়ে পড়ে। হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,

–‘আমি যা বলবো তার উত্তর দিবি ওকে?’

–‘আচ্ছা!’

–‘তুই কি আমার তুমি হবি?’

–‘হু!’

–‘আমাকে খুব ভালোবাসতে পারবি?’

–‘হু!’

–‘ঝুম বৃষ্টি তে যখন তুই বৃষ্টি বিলাস করবি আমার সঙ্গে নিবি?’

–‘হু!’

–‘দুঃখ যখন চেপে বসবে সেই দুঃখের ভাগীদার আমায় করবি?’

–‘হুম হুম!’

–‘তোকে একটা কথা কখনো বলা হয় নি! পিচ্চি পরির প্রেমে তো অনেক আগেই ঘায়েল হয়ে গিয়েছি কিন্তু কখনো বলি নি! ভালোবাসি তোকে আমি!’

–‘আমিও!’

পরি চোখ বন্ধ করে এতোদিনের না বলা কথাটা বলে দেয়। পূর্ণ নিরার থেকে সব আগেই জেনে নিয়েছিলো তাও বললো,

–‘সত্যি?’

–‘হু!’

–‘বাহ কেউ কাউকে বলে নি এটা কে কি বলে!’

–‘প্রেম থেকে ডিরেক্টলি প্রিয়জন হয়ে যাওয়া বলে!’

–‘আর সংক্ষিপ্ত করে বলা যায় #প্রেম_প্রিয়জন!’

পরি কে একটানে নিজের বুকে নিয়ে এসে জাপটে ধরলো পূর্ণ। এমন ভাবেই ধরে রাখবে সারাটি জীবন। যাতে সে হারিয়ে যায়। হঠাৎ ই পূর্ণ পরি কে ছেড়ে দেয়। পরির প্রশ্নবোধক দৃষ্টি! পূর্ণ বললো,

–‘প্রেম পরে হবে! সামনে পরীক্ষা!’

পূর্ণের কথা শুনে পরি কোমড়ে হাত দিয়ে ভ্রুঁ কুঁচকে বললো,

–‘শেষে কিনা বিয়ে হতে না হতেই এই পরীক্ষা আমার সতীন হয়ে ভাগ বসালো? হায়রে ফাটা কপাল আমার! পরীক্ষা আর পরীক্ষা। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা! সতীন আমার পরীক্ষা!’

পরির কথা শুনে পূর্ণ হো হো করে হাসলো। পরি ও ভেঙ্গচি মারে। শেষে দুজন ই হাসে। এই হাসি অটুট থাকুক। যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকুক ভালোবাসা।

♡━━━━P━━━━ সমাপ্ত ━━━━P━━━♡

হ্যাপি এন্ডিং দিলাম। টাটা বাই বাই ঘুমিয়ে যান খাই দাই! থুক্কু থামেন তার আগে মন্তব্যে অবশ্যই জানাবেন গল্প টা কেমন হয়েছে! নয়তো সবার বিয়ে পরীক্ষার জন্য হবে না হুহ!😌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here