প্রেম_প্রাঙ্গণ পর্ব ২০+২১

‘প্রেম প্রাঙ্গণ’🍂
|পর্ব-২০|
~সুনেহরা শামস
.
.
এহসান সাহেব আর প্রিয়ার মুখোমুখি বসে আছে প্রাঙ্গণ,প্রেম আর সাহিল।এহসান সাহেব এবং তার স্ত্রী উভয়ের হাতই বাধা।প্রেমের চোখ টলমলে হয়ে আছে,,কখনো এমন দিন আসবে যে নিজের হাতে নিজের মা-বাবাকে বেধে রাখতে হবে তা কখনো ভাবতেই পারেনি প্রেম।কিন্তু আজ এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছে সে।আপাতত বসে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তার।

প্রাঙ্গণ প্রেমের দিকে চোখ ঘুরিয়ে তাকায়।সেদিনের পর প্রায় ১৫দিন কেটে গেছে,,এই কদিনে প্রেমের প্রতি এক অদ্ভুত মায়া জন্মে গেছে তার,,এখন প্রেম হাসলে যেমন তার ভালোলাগে তেমনি কাদলেও বুক ভার হয়ে আসে।প্রেমের ব্যাথায় তার বুকে রক্তক্ষরণ হয়।অদ্ভুত! এসকল জিনিস আইজার বেলায়ও ঘটত।কেন জানিনা,,ধীরে ধীরে প্রাঙ্গণও দুর্বল হয়ে পড়ছে,,নিজের অনূভুতিগুলোকে আটকাতে পারছে না।না জানি এর শেষ পরিণতি কি হয়!

সাহিল চুপ করে একসাইডে বসে আছে,,মূলত বসে বসে সবার কান্ড-কাহিনী দেখছে।এহসান সাহেব সে কখন থেকেই মাছের মতো লাফিয়ে যাচ্ছেন,,ভাগ্যিস বাধা আছেন,নাহলে কখন আকাশে উড়ে যেতেন টেরই পাওয়া যেত না।প্রিয়া(প্রেমের মা) সেই কতক্ষন যাবত নাকিয়ে নাকিয়ে কেদেই যাচ্ছেন।প্রেম একটু কাদছে আবার একটু নাক টানছে।এদিকে প্রাঙ্গণ বসে বসে পা ঝুলাচ্ছে আর সবাইকে দেখছে।মোট কথা,,হযবরল পরিবেশ একটি!সুহাকে শম্পার দায়িত্বে রেখে সে এখানে এসেছে, সে যদি জানতে পারে যে সাহিল তাদের সাথে মিলে এভাবে তার প্রিয় আঙ্কেল-আন্টিকে বেধে রেখেছে তাহলে সাহিলের মাথার একটি চুলও অবশিষ্ট থাকবে না।

“তারপর ফাদার-ইন-লো কেমন আছেন?”

প্রাঙ্গণের প্রশ্নে এহসান উত্তেজিত হয়ে বলে উঠে,,

“খবরদার আমাকে বাবা বলে ডাকবে না তুমি,,আমার মেয়েকে জোর করে তুলে নিয়ে বিয়ে করে এখন আমাকে ফাদার-ইন-লো ডাকা হচ্ছে?”

“তো কি ডাকব আমি আপনাকে?নাম ধরে তো আর ডাকতে পারি না,তাই না?”

“আমাকে কোনোকিছু বলেই সম্বোধন করা লাগবে না তোমার,,আমি তো চাই না আর তোমার সাথে দেখা হোক।”

“সম্পর্কে মেয়ের জামাই হই আপনার,,আর বলছেন দেখা হবে না?”

“নাহ,হবে না।কারণ আজকেই আমি আমার মেয়েকে নিয়ে এখান থেকে চলে যাবো।তোমার মতো ছেলের কাছে আমার মেয়েকে আমি রাখব?ইম্পসিবল!না জানি এতদিন আমার মেয়েকে কত কষ্ট দিয়েছ।”

সাহিল মুখ চেপে হেসে উঠে,,প্রাঙ্গণও হালকা মুখ বাকিয়ে হেসে বলে উঠে,,

“নিজের এখানে বাধা অবস্থায় পড়ে আছেন আবার বলছেন মেয়েকে নিয়ে চলে যাবেন?নাইস জোক্স!যাই হোক,আর সময় নষ্ট করতে চাই না,আসল কথায় আসি”

প্রাঙ্গণ এবার সিরিয়াস মুডে আসে,,অযথা সময় নষ্ট করলে তারই ক্ষতি।প্রাঙ্গণ প্রিয়ার দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলে উঠে,,

“আচ্ছা মা,,প্রেম হয়েছিল কতসালে?”

প্রিয়া প্রথমে মা শব্দটা প্রাঙ্গণের মুখ থেকে শুনে একটু ইতস্ততবোধ করে,,কিন্তু পরবর্তী প্রশ্নে থতমত খায়।এমন সময় এ আবার কেমন প্রশ্ন?এদিকে এহসান সাহেব মোচড়াতে মোচড়াতে বলে উঠে,,

“যা বলার,যা প্রশ্ন করার আমাকে করো।আমার স্ত্রিকে কেন?”

সাহিল বিরক্ত হয়ে বলে উঠে,,

“উফফ আপনি একটু চুপ থাকতে পারেন না নাকি?আসার পর ভাঙা রেকর্ডের মতো বেজেই চলেছেন”

“সাহিল!”

প্রেমের ধমকে সাহিল প্রেমের দিকে ঘুরে নিজের ঠোটে আঙুল দিয়ে বলে উঠে,,

“হুশশ,,আমাদের মাঝে তুমি কথা বলছো কেন?”

সাহিলের কথায় প্রেম নিজেই আহাম্মক হয়ে যায়।”যাহ বাবা”বলে নিজের মাথা চুলকে আবার চুপ হয়ে যায়।

“তোরা চুপ থাকবি?মা আপনি বলুন তো…”

প্রাঙ্গণের ধমকে প্রেম-সাহিল দুজনেই চুপ হয়ে নিজের জায়গায় বসে পড়ে।প্রিয়া এবার একটু নড়েচড়ে বসে,,

“প্রেম ২০০১ সালে জন্ম নেয়।”

“নরমাল নাকি সিজারিয়ান অপারেশনে?”

“প্রাঙ্গণ এসব কি প্রশ্ন করছেন আপনি আম্মুকে?”

প্রেম ফিসফিসিয়ে প্রাঙ্গণের কানের কাছে গিয়ে বলে উঠে,,প্রাঙ্গণ আবার বিরক্তিমাখা দৃষ্টিতে প্রেমের দিকে চেয়ে বলে উঠে,,

“উফফ প্রেম,,একটু আগে কি শিখিয়ে আনলাম তোমাকে?নিচে নামলে কিছু বলতে না করেছি না তোমায়?শুধুই শুনে যাও,,কিন্তু কিচ্ছু বলবে না”

প্রেম ঠোট উলটে কিছু একটা ভেবে আবার নিজের জায়গায় বসে পড়ে।প্রাঙ্গণ আবার প্রিয়ার দিকে চেয়ে একই প্রশ্ন করলে প্রিয়া ইতস্তত করে বলে উঠে,,

“প্রেম নরমাল অপারেশন এর মাধ্যমে হয়েছিল,,”

“আচ্ছা,,প্রেম হওয়ার আগে কি জানতেন ছেলে না মেয়ে হবে??”

“না,,আসলে এহসানই বলেছিল একেবারেই জানতে যখন বাচ্চা হবে”

এহসান সাহেব ঘেমে একাকার,,প্রশ্নের মোড় কোথায় ঘুরছে তা তিনি ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন।কিন্তু প্রাঙ্গণ এতকিছু কি করে জানলো,,আপাতত তার মস্তিষ্ক তা ধারণ করতে পারছে না।

“তারপর?”

প্রাঙ্গণের প্রশ্নে প্রিয়া একটু নড়েচড়ে বসে,,তারপর বলা শুরু করে,,

“তারপর আর কী?প্রেম হলো,,সে আস্তে আস্তে বড় হলো,,এখানে আর তেমন কিছু নেই জানার”

“আচ্ছা একটা কথা বলুন তাহলে,,প্রেমের পর আর কোনো সন্তান নেন নি কেন আপনারা?”,

প্রিয়ার গালগুলোতে লজ্জার আভা ছড়িয়ে পড়ে।যতই হোক প্রাঙ্গণ তার মেয়ের জামাই,,তার সামনে এভাবে এসব কথা অপকটে বলতে প্রিয়ার একটু লজ্জাই লাগছে।কিন্তু প্রাঙ্গণ এখানে নিয়ে আসার পর পরই বলে দিয়েছিল,,আজকে সে যা যা প্রশ্ন করবে তার জবাব দিতে,,প্রাঙ্গণক্র নেহাতই বিশ্বাস করতে মন চাইছিল তাইতো এসকল প্রশ্নের জবাব দিয়ে যাচ্ছে…

” কি হলো মা?”

প্রাঙ্গণের প্রশ্নে প্রিয়া প্রেমের দিকে চেয়ে বলে উঠে,,

“প্রেমের পর আমার আর কোনো সন্তান হয়নি,,তবে জানো এই নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র আপসোস ছিল না,কারণ প্রেম আমাকে সেই একাকিত্বটা অনুভবই করতে দিত না!”

প্রাঙ্গণ সরু চোখে একবার এহসান সাহেবের দিকে তাকায়,,প্রাঙ্গণের চোখে চোখ পড়ায় তিনি এক শুকনো ঢোক গিলেন।প্রাঙ্গণ হালকা বাকা হেসে সামনে থাকা টেবিলে দিকে চেয়ে এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে…

“সব সত্যি আজকে আমি বলি মা?”

সবাই চোখ ঘুরিয়ে প্রাঙ্গণের দিকে তাকায়,,সে আর সময় নষ্ট না করে বলে উঠে,,,

“প্রেমের সাথে আপনি আরো এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন মা,,যা সম্পর্কে এহসান সাহেব সম্পুর্ন অবগত ছিলেন।হ্যা অবগত হয়েছিলেন যখন প্রেম হয়।তখনতো ফ্যামিলির কেউই ছিল না আপনাদের সাথে।কেবল আপনি আর এহসান সাহেব ছিলেন…তখন তো আপনাদের সংসারেও অনেক অভাব ছিল তাই না?মোটা অংকের টাকার অভাবে তিনি লো পড়েও একজন উকিল হতে পারেন নি।

যখন প্রেম আর আপনার আরেক কন্যা সন্তান হয়,,তখন সেই কন্যার নিমোনিয়া জনিত সমস্যা ছিল যার পেছনে অধিক টাকা ব্যয় হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল।এহসান সাহেব তখন চিন্তায় পড়ে যান,,কিভাবে কি করবেন তিনি??তখনই তিনি আর কিছু না ভেবে অনেক কঠিন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন,,হয়তো ভেবেছিলেন এক সন্তান না থাকলে কিছু হবে না।পরবর্তীতে তিনি একটা ভালো পজিশনে গেলে হয়তো তখন বাচ্চা নিবেন,,অতঃপর সুখে থাকা যাবে।এভাবে চলতো না,,তাই তিনি আপনাকে না জানিয়েই আপনার সেই কন্যা সন্তানকে দত্তক দিয়ে দেন মোটা অংকের টাকার বদৌলতে…যা দিয়েই তিনি এখন এই পজিশনে আছেন।

আচ্ছা প্রেম হওয়ার পর তো আপনাদের পরিবারে সচ্ছলতা এসেছিল তাই না?কারণটা ঠিক এটাই ছিল।কথায় বলে না?”প্রকৃতি কাউকে ছাড় দেয় না”।এহসান সাহেবের ক্ষেত্রেও ঠিক এটাই ঘটেছে।”

সবাই বিষ্ফরিত নয়নে প্রাঙ্গণের দিকে চেয়ে আছে,,প্রিয়ার চোখ টলমল করছে,,প্রেম ততক্ষনে একচোট কেদে ফেলেছে।তার বাবা এত নিম্নপর্যায়ে গিয়েছে শুধুমাত্র নিজে এই জায়গায় পৌছাবার জন্য?

“আমার মেয়ে কোথাও এখন প্রাঙন?”

প্রাঙ্গণ দীর্ঘস্বাস ছেড়ে বলে উঠে,,

“সে আর বেচে নেই মা,,দেড় বছর আগেই মারা গেছে…”

প্রিয়া সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলে,,জীবনে কোন পাপের ফল পেল সে?মা-বাবাকে কষ্ট দিলে বুঝি এমনই হয়।এহসান সাহেবের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল,,পরিবারের বিরুদ্ধে।তাইতো আজ এই দশা তার…

প্রিয়া চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়,,হাটা দেয় বাড়ির সদর দরজার দিকে।যাওয়ার আগে পিছনে না ঘুরেই বলে উঠেন….

“এই মানুষটা আমার কাছে আজকে থেকে মৃত,,চাইলে ওনার সাথে যা খুশি করতে পারো।কিন্তু আমার ১০০ হাত দূরেও যেন এই মানুষটার ছায়া দেখতে না পাই।”

প্রাঙ্গণ দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে,,মানুষ সন্তানের হাহাকারে কাঁদে,,আর এখানে নিজের স্বার্থে বাচ্চাকে অন্যের কাছে দিয়ে দেয়।আবার কেউ কেউ নিজেদের অর্থের খড়া ভরতে নিজ সন্তানকে ব্যবহার করে তাও আবার অসৎ কাজে,,উদাহারণ হিসেবে প্রাঙ্গণ নিজেই।একবার এহসান সাহেবের দিকে চেয়ে সাহিলকে চোখ দিয়ে ইশারা করে প্রেমের হাত ধরে নিজের রুমের দিকে রওনা দেয়…
‘প্রেম প্রাঙ্গণ’🍂
|পর্ব-২১|
~সুনেহরা শামস
.
.
প্রেমকে বেডে বসিয়ে এক গ্লাস পানি সামনে ধরে প্রাঙ্গণ,,প্রেম একবার ভেজা চোখে প্রাঙ্গণের দিকে চেয়ে ঢকঢক করে পানি খেয়ে নেয়।এখনো কান্নার রেশ কাটেনি প্রেমের,,একটু পর পর হেচকি তুলছে সে,,।প্রাঙ্গণ প্রেমের সামনে হাটুগেড়ে বসে প্রেমের দুহাত নিজের হাতের মুঠোয় নেয়,,প্রেম তা দেখে প্রাঙ্গণের দিকে তাকায়।প্রাঙ্গণ হালকা স্বরে বলে উঠে,,

“কষ্ট হচ্ছে ভীষণ,,তাই না?”

প্রেম এবার আর আটকে রাখতে পারেনা,,ঝরঝর করে কেদেঁ দেয়,,

“কেন করলো বাবা এমন?বাবাকে নিজের আদর্শ হিসেবে জেনে এসেছি সবসময়,,কিন্তু বাবা যে এমন কিছু একটা করবে তা কল্পনার বাইরে ছিল প্রাঙ্গণ।আর আইজা আমার…”

“সি ইজ ইউর সিস্টার প্রেম,,জানো প্রথম যখন তোমায় দেখেছি আমি তখনই বুঝেছিলাম এখানে কোনো একটা কিন্তু নিশ্চয়ই আছে।একজন মানুষ কিভাবে দেখতে হুবুহু আরেকজনের মতো হয়?এটাতো কোনো সিনেমা নয় তাই না?”

প্রেম নাক টানতে টানতে বলে উঠে,,

“আচ্ছা আপনি এসব জানলেন কিভাবে?”

“আমার বাবার কাছ থেকে,,”

প্রেম অতি আশ্চর্য!একদম অবাকের চরম শীর্ষে পৌছে যায়।এখানে প্রেমের বাবার সাথে প্রাঙ্গণের বাবার কি সম্পর্ক?

“আপনার বলা কথাটুকু আমি বুঝিনি প্রাঙ্গণ,,”

প্রাঙ্গণ দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে,,তারপর বলে উঠে,,

“জানি এই কথার মানে তুমি বুঝবে না,,,তোমার বাবা আর আমার বাবার আদেও এমন কোনো সম্পর্ক নেই যে তুমি জানতে পারবে।”

“তাহলে?”

প্রাঙ্গণ এবার বলা শুরু করে,,

“বাবা একজন গণমান্য মানুষ,,কিন্তু সমাজের মানুষের আড়ালে সে কি তা হয়তো আমিই জানি।নিজের পাওয়ারে তিনি অনেককেই অবৈধভাবে এই উকিল বানিয়েছেন,,কেন জানো?যাতে কখনো কোনো কেসে সে হেরে না যায়,সব যেন তার হাতের মুঠোয়ই থাকে।যাই হোক,,তোমার বাবা তখন আমার বাবার শরণাপন্ন হয়,,কারণ তার তখন উকিল হওয়ার কোনো উপায় ছিল না।একে একে দুই মিলিয়ে তোমার বাবা আর আমার বাবা একত্রিত হয়।তখন তোমার বাবা আমার বাবাকে নিজের সবকিছু অর্থাৎ পারিবারিক অবস্থা তুলে ধরলে আমার বাবাই……”

প্রাঙ্গণ হালকা একটা ঢোক গিলে বলে উঠে,,

“আমার বাবাই তোমার বাবাকে আইজার দত্তকের ব্যাপারে বলেছিলেন,,প্রথমে তোমার বাবা আপত্তি করলেও পরে নিজের একটা জায়গা বানানোর লোভে সে এই কাজ ঠিকই করে ফেলে।”

প্রেম নিস্তব্ধ!মনে হচ্ছে কি যেন একটা নেই তার!আসলেই তো নেই।ছোটবেলায় কতবার বাবা-মাকে বলেছিল যে তার একটা ভাই বা বোন দরকার কিন্তু তারা তার কথাই শুনেনি।অবশ্য বড় হওয়ার পর বুঝেছিল যে সমস্যার কারণে তার কোনো ভাই-বোন নেই।কিন্তু আগে যে একটা বোন ও তার ছিল তা কল্পনার বাইরে…

“আপনাত বাবার এই অবস্থা আপনিই করেছিলেন তাই না প্রাঙ্গণ?”

প্রাঙ্গণ বাকা হেসে বলে উঠে,,

“হ্যা আমিই বাবাকে প্যারালাইজড করেছিলাম,,বাবা আমার আইজার দিকে কুনজর দিয়েছিল,,তাকে তার পরিবার থেকে আলাদা করেছিল,,আইজাকে অনাথ আশ্রমে বড় হতে হয়েছিল কেবল মাত্র আমার বাবার জন্য।তাকে আমি কিভাবে ছেড়ে দিতাম,,তাই ধীরে ধীরে খাবারের সাথে ঔষুধ মিশিয়ে মাত্র ১৬ দিনের মধ্যে তাকে পঙ্গু করে দিয়েছি।ভুল কিছু করেছি আমি?”

প্রেম দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ে।প্রাঙ্গণ নেহাতেই শাস্তি দিয়েছিল তার বাবাকে কিন্তু তাকে পঙ্গু করে দেওয়া??তাও আবার নিজের জন্মদাতা বাবাকে?এটাতো আর সঠিক নয়।এখন প্রাঙ্গণকে বলেও কোনো লাভ নেই,,সে অনেকটা শক্ত মনের হয়ে গেছে।তাই এখন এই নৈতিকতার পাঠ তাকে পড়িয়ে লাভ নেই…

“আচ্ছা প্রাঙ্গণ,,আপনার মা কোথায়?”

“তিনি এখন মানসিক হাসপাতালে!”

প্রেম অবাক হয়ে যায়!তিনি সেখানে কি করছেন?প্রাঙ্গণ হয়তো বুঝতে পারে প্রেমের মনের কথা,,

“তিনি সেদিন হসপিটালে গিয়ে অনেক উত্তেজিত হয়ে যান,,আর রেহনেওয়াজ সাহেবের উপর নাকি অ্যাটাকও করেন,,ডাক্তাররা নাকি তাই ই জানিয়েছেন।তার জন্য তারা পরামর্শ দেয় ওনাকে মানসিক হাসপাতালে রাখতে”

প্রেম এক গরম নিশ্বাস ত্যাগ করে।জীবনে যারা যারা যেসকল পাপ করবে তারা তা একদিন ফেরত পাবেই!নিঃসন্দেহে!

প্রেম জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়,,সূর্য অস্ত গিয়েছে,,একটু পর সন্ধ্যার নিস্তব্ধতা নেমে আসবে,,মানুষের কোলাহল বৃদ্ধি পাবে।কিন্তু প্রেমের মন উদাসীনই থেকে যাবে।এই কিছুদিনে এত সব কান্ড ঘটে গেছে তাতে করে প্রেমের মন ভীষণ খারাপ,,,না জানি কবে আবার একটা শুদ্ধ নিশ্বাস নিতে পারবে সে,,,

“আইসক্রিম খেতে যাবে আমার সাথে প্রেম??”

প্রেম পিছনে ঘুরে তাকায়,,প্রাঙ্গণ চোখ দিয়ে আশস্ত করে হালকা হাসে।প্রেমও মুচকি হাসি দেয়,,এতক্ষনের সকল উদাসীনতা যেন উড়ে গেল প্রেমের।আচ্ছা এরকম শুদ্ধ হাসি সবসময় দেখা হবে তো প্রেমের??

চলবে…

[ভুল-ত্রুটি আল্লাহর প্রদত্ত ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আজকের পর্ব সম্পর্কে একলাইনের একটি মন্তব্য ছেড়ে যাবেন।ধন্যবাদ।]
চলবে…

[পরীক্ষা+এসাইনমেন্ট এর চাপে গল্প দিতে দেরী হচ্ছে,,সবচেয়ে বড় রহস্যের উত্থাপন করে দিলাম,,এবার এই পর্ব সম্পর্কে একলাইনের মন্তব্য দিয়ে যাওয়া আপনাদের পাঠকদের দায়িত্ব!]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here