#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#লামিয়া_রহমাম_মেঘলা
#পর্ব_১৯(খুনসুটি-০২)
–শুধু কি চকলেট খেয়েই পেট ভরে গেছে ভাত খেতে হবে না।
রাইমা বই পড়ছিলো পেছনে নীলের কথা শুনে চুপচাপ উঠে তার হাত থেকে খাবারের প্লেট টা নিয়ে হাত ধুয়ে খেতে বসে যায়।
–বাহ খুব ভালো এভাবেই কথা শুনে চলবে তাইলে আর সমস্যা হবে না।
রাইমা মুখ ভেংচি দিয়ে খাবারে মনোযোগ দিলো।
খাবার শেষ করে ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত ১১ঃ০০ বাজে।
শীতে এটা অনেক রাত।
–ঘুম পায় (নীল)
–হুম।
–ওকে শুয়ে পরো।।
রাইমা গিয়ে শুয়ে পরে।
কিছু সময় পর নীল লাইট অফ করে রাইমার পাশে শুয়ে পরে।
–একটা কথা বলবে।
–কি?
–তুমি কি সত্যি আমাকে একটুও ভালোবাসো না।
–……(নিশ্চুপ)
নীল বুঝতে পারে তার প্রশ্নের উত্তর রাইমা দিবে না।
তাই নিজের হাতটা রাইমার পেট বরাবর দিয়ে ঘুমিয়ে যায়।
।
।
।
রাতে খাবার টেবিলে বসে সবাই খাবার খাচ্ছি।
প্রেয়ন খাচ্ছে আর আমার দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে।
আমি আমার মতো খেয়ে চলেছি।
খাবার শেষ করতে মা বললেন,
–পৃথুলা মা তুই গিয়ে শুয়ে পর আমি হাত ধুয়ে আসছি।
–আচ্ছা মা।
আড় চোখে প্রেয়ন কে দেখে চলে এলাম।
উপরে। ওনার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছিলো প্রচন্ড রেগে আছে।
আমার কি আমি তো হাসতে হাসতে খুন।
মায়ের রুমে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।
।
ওদিকে প্রেয়ন পৃথুলার রুমে,
–আমি তোকে বলেছি আজ তোর ঘুম হারাম করবো দেখিস তুই এটা করলি তো আমার সাথে দাঁড়া আজ তোর এক দিন কি আমার এক দিন।
কথা গুলো বলে বসে পরলো প্রেয়ন।
–পাগলি টা কেন বোঝে না ওকে না জড়িয়ে ঘুম হয় না।
সারা জীবন ওকে জড়িয়ে ঘুমোতে চাই।
ওর মিষ্টি ঘ্রাণ উপভোগ করতে চাই সব সময়।
ভালোবসা বুঝি এমন হয়।
।
।
–পৃথুলা।
–জি মা।
–সত্যি বল তো আমার ছেলের সাথে কিছু হইছে।
–মা তুমিও না। এদিকে এসো
–হুম বল।
–একটা গল্প শোনাও।
–না এখন না আমার ঘুম পাচ্ছে রে।
–ওহ ঘুমাও তাইলে।
মা লাইট অফ করে শুয়ে পরলেন।
আমিও চোখ বুজে নিলাম
।
।
রাত ১২ঃ০০।
চারিদিকে পিনপিন নিরবতা।
সবাই ঘুম।
প্রেয়ন চুপিচুপি এসে পৃথুলাকে পাজকোলে করে পা টিপে টিপে রুমে আসছে।
অন্ধকার সাথে পৃথুলা কোলে প্রেয়নের দম বন্ধ হবার উপক্রম।
নিজেকে নিজের বৌ চোর মনে হচ্ছে।
মানে নিজের বৌ কে নিজে চুরি করছে।
কোন মতে নিজের রুমে এসে খুব আলতো করে পৃথুলাকে শুইয়ে রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়।
–বাবা রে বাবা কি ঘুম ওকে নিয়ে পুরো পৃথিবী ঘুরলাম আর ওর কোন খোঁজ নাই।
যাক ভালোই হলো এবার তোকে কে বাঁচায় আমিও দেখছি।
আমার রুমও সাউন্ড প্রুফ।
প্রেয়ন পৃথুলার ঘাড়ে নিজের ঠান্ডা হাত চেপে ধরে।
★★
ঘুমের মধ্যে মনে হচ্ছে কেউ আমার পেটে বরফ পানি ডালছে।
একে শীত তার উপর এই কাজ যে করছে ইচ্ছে হচ্ছে তার মাথা ফাটায়।
ঘুম ঘুম চোখ দুটো খুলে পেট থেকে বরফ সরিয়ে আবার ঘুম দিলাম।
–ও মা এ কি গন্ডার নাকি। দাঁড়া তোর ঘুম আমি বার করছি
কিছু সময় পর মনে হচ্ছে দম আঁটকে আসছে।
চোখ খুলে সামনে প্রেয়ন কে দেখে চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেল।
–উম।
কিছু বলতে পারছি না শুধু উম উম শব্দ করে চলছি।
প্রেয়ন আমাকে তাও ছাড়ে না দম আঁটকে আসছে আমার এবার।
বেশ কিছু সময় পর প্রেয়ন আমাকে ছেড়ে দিতে।
হাপাতে শুরু করি।
–আপনি এখানে কেন মা কই (রেগে)
–বলেছিলাম না আজ তোর ঘুম হারাম করে দিবো।
–মানে কি! আমি চেঁচাবো কিন্তু
–তুই আমার রুমে আমি তোকে নিয়ে এসেছি আর তুই জানিস আমার রুম সাউন্ড প্রুফ । (বাঁকা হেসে)
–আপনি এটা করতে পারলেন মা সকালে উঠে আমাকে না পেলে কি বলবে।
–কি বলবে? বলবে যে বরকে ছাড়া থাকতে পারে নি।
–প্রেয়ন(রেগে)
–পৃথু কি হইছে সোনা।
–উঠেন আমার উপর থেকে হাতি একটা গলে গেলাম।
–কি বললি আমি হাতি।
–তা নয়তো কি।
–তবে রে
–এই না আমার দম আটকে আসছে।
প্রেয়ন ২৪ পাটি দাঁত বের করে দিয়ে বললো,
–আজ রাতে তো তোর ঘুম নাই পৃথু। (দাঁত বের করে)
–মানে কি!
–মানে হলো,
প্রেয়ন আমার উপর থেকে উঠে এলেন,
–মানে খুব সোজা উঠ।
আমার হাত ধরে উঠালেন।
–চন্দ্র বিলাস করবো আমরা।
–এই আমাবস্যার দিনে চাঁদ কি আাকাশ ফেটে দেখা দিবে(রেগে)
–না আকাশ ঠিক ফেটে না তবে অন্য ভাবেও দেখা যায়।
–কি ভাবে।
–আয়।
আমি গায়ে চাদর জড়িয়ে ওনার সাথে আসলাম।
উনি আমাকে একটা রুমের সামনে এনে চোখ বেঁধে দিলেন।
–কি করছেন কি।
–চুপ কর।
আমার চোখ বেঁধে আমাকে নিয়ে হেঁটে কই যেন এলেন।
তার পর আমার চোখ খুলে দিলেন।
চোখ খুলতে আমি নিজেকে রুমের মধ্যে দেখলাম।
রুমটা দেখে আমি পুরো অবাক।
রাতের আকাশে যেমন তারা দেখা যায় ঠিক তেমন করেই এখানে ছোট ছোট বল আকৃতির লাইট দিয়ে তারা বানিয়ে ঝুলানো হইছে আর মাঝে একটা বড়ো চাঁদের আকারে দেওয়া পুরোই অবাক আমি।
–আল্লাহ অনেক সুন্দর এগুলা।
–হুম অনেক সুন্দর।
তুই এখান দাঁড়া।
আমাকে দাড় করিয়ে দিলেন,
–পোস দে ছবি তুলি।
আমি সুন্দর কিছু ছবি তুললাম ওনার সাথেও তুলা হলো।
তার পর আমাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে আমার সামনে উনি বসলেন।
–ভালো লাগছে?
–অনেক সুন্দর।
–সত্যি।
–হুম।
–পৃথু।
–বলুন।
–তোকে ১ মাস নয় সারা জীবনের জন্য পাশে চাই।
কথাটা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে রইলাম।
–কিরে কিছু বল।
–আমাকে কি কোন মতে আপনার খেলনা মনে হয় প্রেয়ন?
–পৃথু,
–থামুন অনেক তো বললেন এতো দিন আজ না হয় একটু আমিও বলি।
আমাদের সম্পর্ক টা শুরু হলো আপনার জোর জবরদস্তি থেকে।
তাও সর্ত ১ মাসের স্ত্রী থেকে আর তার পর প্রতিনিয়ত আমাকে কাছে টেনে আবার দুরে সারিয়ে দেওয়া।
প্রতিবার আমাকে নিজের ভাবনা বলতে চেয়েও মুখ ফিরিয়ে নেওয়া।
আমিও তে মানুষ রাগ অভিমান আমাও তে আছে সেটা কি আপনি একে বারে ভুলে গেছেন?
–কিছু ভুলি নি তোকে সময় হলে সব বলবো পৃথু
–হয়তো মরে গেলে।
আমার মুখে মৃত্যুর কথা শুনে প্রেয়ন এর রুপ নিমিষেই বদলে গেল।
আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।
আমিও আর বাঁধা দেয় নি।
এভাবেই ওনার বুকের মাঝে আমার রাত্রি ব্যায় হলো।
প্রেয়ন তার কথা রাখলো নির্ঘুম রাত কাটলো। #প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_২০
সাকলে সূর্য উদয় হলো
কোচিং সময় কিন্তু রাইমার মোটেও উঠতে ইচ্ছে হচ্ছে না ।
ইচ্ছে হচ্ছে এখনো ঘুমোই।
রাইমাকে ডুলতে দেখে নীল গিয়ে রাইমার পিছে দাঁড়ায়।
ঘুম ঘুম পিচ্চি চোখ দুটো আলতো করে খুলে গালের মধ্যে ব্রাশ রেখে রাইমা আদো শুরে বললো,
–কি হইছে।
–বাহ এতোই ঘুম আসছে যে আমি তোমার বাথরুমে চলে এসেছি তার খেয়াল ও নেই।
নীলের কথায় টিপ টিপ করে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে চোখ বড়ো বড়ো করে তাকিয়ে রইলো,
–এই তাই তো আপনি আমার বাধরুমে কি করেন মিয়া।
–কি করি বলো তো। (ভ্রু কুঁচকে)
এবার রাইমা বুঝতে পারে আসলে কি ঘটছে,
–এই বেরোন আমি দরজা লক করে ডুকেছিলাম আপনি এলেন কি করে (রেগে)
–ও মা এতো সময় পরে আমাকে দেখতে পেলে।
–নীল আপনি বেরোন আমি আসছি।
–৫ মিনিট সময় আছে।
কথাটা বলেই বেরিয়ে গেল।
–যাহ বাবা এ কেন গ্রহের প্রাণী রে বাবা।
আমার সাথে এগুলা হয় টা কি মাঝে মাঝে।
–আমি যা চাই তাই হয় এতে না ভেবে জলদি বেরোও।
বাইরে থেকে কথাটা বললো নীল।
–রাইমা তুই আসলে বোকা একটু আস্তে কথা বললে কি হয়।
রাইমা ফ্রেশ হয়ে কোচিং এ চলে যায়।
।
।
।
এদিকে,
সূর্যা উঠলো যখন ঠিক তখন প্রেয়ন আমাকে ছেড়ে দিলেন।
অতিরিক্ত জিদি ছেলে নিজের কথা রেখেই ছাড়লো।
–পৃথু আজ রাতের পর আসা করি তুই আর আমাকে চ্যালেঞ্জ করবি না।
–হুম (ঘুম ঘুম শুরে)
–যা নামাজ পড়।
–আজ না পড়লে হয় না। প্রচুর ঘুম পাচ্ছে।
–পৃথু তুই এই কথা বলছিস।
যতো জলদি নামাজ আদায় করবি তত জলদি তুমি বিছানায় যেতে পারবে।
–হু (ঘুমের ঘোরে)
ঘুম ঘুম হয়ে কোন মতে নামাজ পড়ে পৃথুলা সোজা গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে।
এক বারে দুই মিনিটে ঘুম।
–বাহ বাহ এমন ঘুম খোঁড় বৌ ই তো দরকার।
বাবা রে বাবা এ সত্যি পাগল।
আমি বৌ বিয়ে করেছি না ঘুম খোঁড়। (প্রেয়ন)
।
।
।
কোচিং থেকে বাসায় এসে রাইমা চুপি চুপি নীলের study রুমের দিকে উঁকি দিচ্ছে।
কিন্তু নীল নেই রোজ তো এখানেই থাকে।
–যাক আজ নেই আমি এখন এখানে গিয়ে আমার গোয়েন্দা গিরি চলাবো।
হিহি হি মি.চৌধুরী আমি এখন মিসেস.ডিটেক্টিভ চৌধুরী হবো।
রাইমা রুমের মধ্যে প্রবেশ করতে,
–তাহলে নিজেকে মিসেস.চৌধুরী মানলে তাহলে।
পেছন থেকে নীলের কন্ঠ পেয়ে থেমে গেল রাইমা।
–আপনি!
–কেন সমস্যা নাকি।
–সব কথা লুকিয়ে লুকিয়ে শোনেন আপনি আমার।
–হ্যাঁ সমস্যা কি তুমি তো আমারি বৌ।
কথাটা বলতে বলতে নীল এগোতে থাকে।
–আপনি কই এগোচ্ছেন।
পেছতে পেছতে।
–কেন বৌ এর দিকে (এক দমি কাছে গিয়ে)
–ইয়ে মানে সমস্যা কি।
–সমস্যা কিছু না তুমি আমার বৌ কিন্তু আমি কখনো তোমার কাছে সেভাবে আসি নাই (কানের কছে কথাটা বললো)
নীলের কথা শুনে রাইমা স্টাচু হয়ে গেছে।
–হা হা এতো ভয় পাচ্ছো যে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
–ইয়ে মানে।
–কিয়ে মনে।
–দুরে সরুন।
–হুম সরছি তার আগে ছোট্ট একটা কাজ।
–আম,
।
।
।
দুপুর ১ঃ০০ পৃথুলা এখনো ঘুম।
প্রেয়ন কিছু সময় আগেই উঠেছে। উঠে নিচে আসতে প্রেয়নের মা বললো,
–পৃথুলা কল আমার সাথে ছিলো সকলে উঠে পেলাম না৷
আর এতো বেল হলো ও এখনো ঘুম কিছু হইছে নাকি প্রেয়ন।
–না সমস্যা না তোমার বৌ মায়ের কি হলো তাতো বলতে পারি না।
–আজব।
–খুবই আজব (মুচকি হাসি দিয়ে)
।
।
–পৃথুলা এখন উঠ আজান দিয়ে দিছে। (প্রেয়নের আম্মু)
–ধুরো রাতেও ঘুমোতে দিন নাই আর এখন মোটেও ডাকবেন না।
পৃথুলার কথা শুনে প্রেয়নের আম্মু মিচকি হেঁসে পেছনে ফিরতে,
–মা তুমি যা ভাবছো তা না।
–থাক হইছে আর বুঝাতে হবে না।
ওকে ডাকিস না একটুও বলে দিলাম।
ফাজিল ছেলে ডাকাতে নিয়ে এসেছে।
নায়লা রহমান রুম ত্যাগ করে।
–যাহ বাবা এটা কি হলো।
।
।
।
–মিয়া ভাই। (রাইমা)
–কে তোমার মিয়া ভাই। (নীল)
–বংশের বড়ো ছেলেদের মিয়া ভাই বলে। আপনি তো এক মাত্র ছেলে তাই মিয়া ভাই।
রাইমার কথা শুনে নীল কিছু সময় চুপ থাকলো।
নিশ্চুপ কিছু সময় দাঁড়িয়ে থেকে রুম ত্যাগ করলো।
–যাহ বাবা এনার আবার কি হলো।
।
।#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_২১(রহস্য সমাধান -০২)
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
,
–প্রেয়ন……………..(চিৎকার দিয়ে)
পৃথুলা তার এক হাতে প্রেয়ন কে ধাক্কা মেরে প্রেয়নের দিকে আসা গুলিটি নিজের বুকে নিয়ে নেয়।
–পৃথু।
প্রেয়ন পৃথুলা কে নিয়ে বসে পরে।
–আপু………( চিৎকার দিয়ে রাইমা)
।
।
।
।
(কিন্তু এখানে হোলটা কি তা জানতে হলে আমাদের অতিতে যেতে হবে)
অতিত,
–প্রেয়ন বাবা আমি তোর মা হয়ে আজ প্রথম তোর কাছে কিছু চাইবো দিবি?
–কি বলে তো দেখো।
— আমি চাই নীল রাইমা আমাদের সাথে থাকুক।
–আমিও চাই মা কিন্তু নীল কখনোই আমার কথা শুনবে না।
–শুনবে বাবা তুই পৃথুলাকে নিয়ে যা তোরা দু’জন ওকে বুঝাবি ঘরের ছেলে কে আর কতো বাইরে থাকতে দি বল তো।
–ঠিক আছে কিন্তু এটাই শেষ বার।
–হুম।
।
–পৃথু তুই রেডি।
–হুম।
–চল।
আমি আর প্রেয়ন রওনা দিলাম৷
ওদের বাসার সামনে এসে গাড়ি ভেতরে পার্ক করে আমরা বাসার ভেতরে গেলাম।
আমরা ভেতরে যেতেই রাইমাকে দেখলাম টেবিলে বসে পানি খাচ্ছে।
–পিচ্চি।
আমার কন্ঠ শুনে রাইমা পেছনে ফিরে আমাকে দেখে যখন দৌড় দিলো আমার কাছে আসার জন্য।
কিন্তু তখন আমার থেকে কিছু হাত দুরে নীল ওকে আটকে ধরলো।
–কি করছেন ছাড়ুন আমাকে আপুর কাছে যেতে দিন।
–না যাবে না চুপচাপ এখানে থাকো।
–মানে কি ছাড়ুন (হাত মুচড়ে)
–কেন এসেছেন ভাই আমার থেকে আমার রাইমাকে আলাদা করতে।
–না নীল কখনো না আমি এখানে তোমাদের নিতে এসেছি আমরা এক সাথে থাকবো নীল। (প্রেয়ন)
–মিথ্যা আপনারা এখানে এসেছেন আমার রাইমাকে নিতে আমার ছোট থেকে সব অধিকার সব আনন্দ সব শৈশব কেঁড়ে নিয়েও তোমার হয় নি ভাই এখন আমার রাইমাকেও নিতে আসছো।
আমি নীলর মুখে ভাই ডাক শুনে অবাক হয়ে প্রেয়ন কে প্রশ্ন করলাম
–প্রেয়ন ও তোমায় ভাই বলছে কেন?
–কারন নীল আমার ছোট ভাই।
–মানে!
–ছাড়ুন আমাকে যেতে দিন আপু (রাইমা)
আমি রাইমার কথা শুনে ওর দিকে এগোতে গেলে নীল পকেট থেকে বন্দুক বের করে।
–কি করছেন কি আপনি ছাড়ুন এটা ফেলুন বলছি (রাইমা)
–তুমি আমার সব কেঁড়ে নিয়েছো ভাই আজ তোমার বাঁচার অধিকার নেই।
–ভাই আমি তোর থেকে কিছু কাঁড়ি নি আমার কথা শুন একটা বার৷
–একটা বারও না।
আমাকে ক্ষমা করে দেও আমি আর তোমাকে দেখতে চাই না।
কথাটা বলতে হটাৎ নীল গুলি চালিয়ে দিলো।
,
এর পরে কি হলো তা সবাই জানেন।
বর্তমান,
–পৃথু তুই পৃথু চোখ খোল পৃথু।
–ছাড়ুন আমাকে ছাড়ুন
রাইমা নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় নীলের থেকে,
–আপু আপু ওঠ না আপু কি হইছে তোর।
ভাইয়া আপুকে হসপিটাল নিতে হবে।
ভাইয়া।
–হ্যাঁ হ্যাঁ নিতে হবে পৃথু কিছু হতে দিবো না তোকে আমি। (পাগলের মতো)
প্রেয়ন পৃথুকে পাজকোলে করে নিয়ে যাচ্ছে।
রাইমা যায় নি কারন তার জন্য আজ তার বোনের এই অবস্থা।
আস্তে আস্তে প্রেয়ন পৃথুলা যখন রাইমার দৃষ্টি থেকে দুরে সরে গেল,
–আপনি যা চাইছিলেন তাই হলো নীল।
–আমি গুলি করি নি।
–আর কতো মিথ্যা আমার জন্য এতো কিছু তাই না এই যে আমি আপনার কাছে আমি কথা দিচ্ছি আমি এই বাড়িতেই মরবো আমার জন্য আজ আমার আপুকে এতে বড়ো শাস্তি পেতে হলো ঠিক আছে রাইমা আজ থেকে নীলের কেনা সম্পত্তি হয়ে গেল।
সত্যি বলতে আমি নিচ মানুষ দেখেছি আপনার মতো নিচ দেখি নি।
কথাটা বলে রাইমা উপরে চলে এলো।
–এটা কি ভাবে সম্ভব আমি গুলি করি নি তাহলে করলো কে?
রাইমা এটা বুঝবে না ওকে বুঝাবো বা কি করে। এগুলা হচ্ছে টা কি।
।
।
।
।
–টিক টক, টিক টক,
হা হাহা ঘড়ির কাটা টিক টক করে চলছে নয়লা। তোর দুই ছেলের মধ্যে আজ আমি এমন ফাটল ধরিয়েছি যা আগামি জীবনেরও শেষ হবে না।
আজ আমার আনন্দের দিন পৃথুলা মরবে।প্রেয়ন ভেঙে যাবে। আর নীল বুঝতেই পারবে না এতো দিন ওর মা সেজে যে ওকে উসকানি দিচ্ছিলো ভালোবাসছিলো সে ওর মাই না।
হা হা কি মজা না আমার তো খুব মজা হচ্ছে।
বলেছিলাম না নয়লা তোর সংসার আমি ভেঙে রেখে দিবো আমি ভেঙেই রেখে দিয়েছি। আর জোড়া লাগবে না।
লাগবে বা কি করে।
কেউতো এটা জানবেই না গুলিটা আমার লোক করেছে নীল না।
হা হা আমার খুব মজা হচ্ছে।
।
হাত পা বাঁধা পরনে সাদা শাড়ি চুল গুলো উসকো খুসকো হয়ে পরে থাকা নয়লার সামনে কথা গুলো বলছে আয়লা।
।
হ্যাঁ নয়লা, আয়লা দুই বোন জমজ বোন।
এই বোনদের মধ্যে নয়লা হলো নীল আর প্রেয়নের আসল মা।
কিন্তু আয়লা কেন এমন করছে তার উত্তর পরে পাবো।
–আমার ছেলে দুটোকে ছেড়ে দেও আমি মৃত্যুর আগে একটা বার ওদের দেখতে চাই।
–সে আশা কখনো পুরোন হবে না নয়লা তুই বরং এখানে বসে বসে মুড়ি খা।
হা হা হা।
।
।
।
হসপিটালে,
–মি.খান পেসেন্ট এর অবস্থা ভালো না আমরা নিজেদের চেষ্টা করছি কিন্তু আমরা সত্যি জনি না এটা কি হবে বা কেমন হবে আপনি আল্লাহকে ডাকুন।
।
এদিকে,
আয়লা বেরিয়ে সোজা নীলের কাছে আসে ওরা দেখা করে একটা আলাদা যায়গায় সেখানে,
–মা আমি আপুকে গুলি করি নি মা আমার সাথে এগুলা কি হচ্ছে (নীল)
–তুই ভাবিস না বাবা ছোট থেকে তোর বাবা আর প্রেয়নের জন্য তোকে আমার বুকে টেনে কখনো আদর দিতে পারি নি তোকে ছেলে হিসাবে কখনো মানতে পারি নি।
ওরা অনেক খারাপ।
হয়তো এটাও ওদের একটা চাল ছিলো পৃথুলাকে হয়তো প্রেয়নের কোন লোকে গুলি করেছে আর দোষ তোর দিয়েছে বাবা।
–কিন্তু মা ভাই ভাবিকে ভালোবাসে,
–হুহ ভালেবাসা তুই চুপ করতো তুই নিজের দিকে খেয়াল দে এসব ভাবিস না।
–তুমি বেস্ট মা তুমি না বললে জানতাম ই না যে ওরা আমার থেকে রাইমাকে আলাদা করতে চাইছে।
–আয় এদিকে আয়।
আয়লা নীলকে জড়িয়ে ধরে,
–(কি বোকারে নয়লা তোর ছেলে দুটো আমি যা বলি তাই শুনে বাদ্ধ ছেলে যাকে বলে মনে মনে)
চলবে,
(