বর্ষণের সেই রাতে- ২ পর্ব ২৪

#বর্ষণের সেই রাতে- ২
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

২৪.

পেপারটার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অনিমা। ওর মস্তিষ্ক ওকে একটাই কথা বলছে যে আদ্রিয়ান ঠকিয়েছে ওকে, হ্যাঁ ঠকিয়েছে। এটাকেতো ঠকানোই বলে। কারণ আদ্রিয়ান আর স্মৃতির একটা ছবি বড় করে ছেপে দিয়েছে। ছবিটাতে স্মৃতি আর আদ্রিয়ান দুটো চেয়ারে পাশাপাশি বসে আছে। সেটা বড় কথা না বড় কথা হল স্মৃতি আদ্রিয়ানের একহাত নিজের দুইহাতে আকড়ে ধরে হাসছে। আদ্রিয়ানও হাসছে। দুজনের মুখ দেখে মনে হচ্ছে কোন একটা মজার বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বা ঘটেছে। কিন্তু অনিমার মাথায় সেসব আসছে না ওর মাথায় এটাই থাক্কা লেগেছে যে মেয়েটা আদ্রিয়ানের হাত জড়িয়ে আছে আর আদ্রিয়ানও বাধা দিচ্ছেনা বরং হাসছে। আর হেডলাইন আর বিস্তারিত যা লেখা আছে তার সারাংশ এটাই যে আদ্রিয়ান আর স্মৃতি একে ওপরকে ডেট করছে। কখন,কোথায়, কীভাবে ওদের এভাবে ক্যামেরা বন্দি করে সেটাকেই খুব সুন্দর করে ব্যখ্যা করে লিখেছে। একটা রেস্টুরেন্টে আছে ওরা। এটা কালকেরই ঘটনা। এসব পড়ে আর দেখে অনিমার চোখ দিয়ে আপনাআপনি জল পরছে। কিছু তো বোঝার আর বাকি নেই? কিন্তু ওর মন নিয়ে কেন এভাবে খেলল আদ্রিয়ান? ওর মন ভেঙ্গে কী পেল? সত্যিই মানুষের ধারণা মিথ্যা নয়। সিলেব্রেটিদের কাছে সম্পর্কের কোন মানেই নেই। ওর কাছে হয়তো এগুলো ছেলেখেলা কিন্তু ওপরপাশের মানুষটার কথা একবারও ভাবল না। কীকরে পারল এরকম করতে? অনিমাকে এভাবে কাঁদতে দেখে তীব্র ওর হাত থেকে পেপারটা নিল। অরুমিতা, তীব্র আর স্নেহা মিলে পেপারটা পড়ে বুঝতে পারছে অনিমা কেন কাঁদছে। অরুমিতা ওর কাধে হাত রেখে বলল,

” দেখ অনি। আজকাল সাংবাদিকরা তো তিলকে তাল করে কত কিছুই লেখে। সবকী সত্যি বল? ”

অনিমা চোখ মুছে বলল,

” এখনও এসব বলবি? লেখাগুলো না হয় তিলকে তাল করে লিখেছে। মেনে নিলাম। কিন্তু ছবিটা? ছবিটার কথা কী বলবি? এটাও মিথ্যে? আর তাছাড়াও ওনার একটা না হোক বা দশটা রিলেশন হোক তাকে আমার কী?”

তীব্র বলল,

” সত্যিই তোর কিছু না?”

” আজব! কিছু হতে যাবে কেন? আমি কী ওনার বউ লাগি নাকি গার্লফ্রেন্ড লাগি হ্যাঁ? ওনার কিছুতেই আমার কোন মাথাব্যথা নেই।”

অরুমিতা হেসে বলল,

” তাহলে কাঁদছিস কেন?”

অনিমা চুপ করে রইল। তীব্র, স্নেহাও চুপ করে আছে। কী বলবে বুঝতে পারছেনা। অনিমা আবার কাঁদছে। কালকে এইজন্যই ওরসাথে শপিং এ আসেনি আদ্রিয়ান, রাতে খেয়েও এসছে। সেদিনের ব্যাপারটা না হয় কাজ ছিল তাই ওকে রেডি হতে বলে না নিয়েই চলে গেছিল স্মৃতির কাছে তাই বলে কালকেও?ওর চেয়ে এতো বেশি গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি আদ্রিয়ানের কাছে? হবেনা কেন? ওর সাথে তো আদ্রিয়ান টাইমপাস করতে চেয়েছিল কিন্তু স্মৃতি হয়তো তারচেয়ে বেশি কিছু। তবে আদ্রিয়াকে ক্ষমা করবেনা ও। ওর মন নিয়ে এভাবে খেলা আদ্রিয়ানের ঠিক হয়নি। কদিন আগেও ওর এসবে যায় আসতো না। কিন্তু আদ্রিয়ান বারবার ওর কাছে এসে, ওকে ওরকম কথা বলে, ইন্ডিরেক্টলি ভালোবাসার কথা বলে ওকেও ইচ্ছে করে দুর্বল করে দিয়েছে। আর এখন অন্য মেয়েকে নিয়ে প্রেমলীলা করছে। তাকে ক্ষমা করা যায়? অরুমিতা ওরা অনিমাকে শান্ত করার চেষ্টায় আছে। কিছুক্ষণ পর অনিমা আবার চোখ মুছে বলল,

” অরু, স্নেহা তোরা যেই ফ্লাটটাতে থাকিস। ওখানে তো দুজনেই থাকিস আমায় থাকতে দিবি?”

স্নেহা অবাক হয়ে বলল,

” কী?”

অনি ভাঙা গলাতে বলল,

” চিন্তা করিস না। আমি ভাড়া দিয়ে দেব। জাস্ট দুটো টিউশনি জোগার করে নেই তারপর।”

অরুমিতা রেগে বলল,

” চড় মারবো একটা। টাকার কথা আসছে কোথা থেকে? কিন্তু আদ্রিয়ান ভাইকে না বলে এভাবে চলে আসবি?”

” ওনাকে বলার কী আছে? তাছাড়াও ওনার ঘাড়ে বসে আর কতদিন খাবো?”

তীব্র বলল,

” দেখ অনি রাগের মাথায় ভুলভাল কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলিস না। মাথা ঠান্ডা কর, ঠান্ডা মাথায় একটু ভাব। তারপর দেখা যাবে।”

কিন্তু অনিমা শক্ত কন্ঠে বলল,

” আমি যা বলছি ঠান্ডা মাথাতেই বলছি। আর এখানে রাগের তো কিছু নেই! রাগ করতে যাবো কেন? শুধু বলছি ওনার ঘাড়ে বসে আর খাবোনা আমি। এখন যদি তোরা আমায় থাকতে দিতে না চাস তাহলে আমায় অন্যকিছু ভাবতে হবে।’

ওরা তিনজন অনেক বোঝানোর চেষ্টা করল কিন্তু অনিমা নাছোড়বান্দা। তাই বাধ্য হয়েই অরুমিতা আর স্নেহা ওকে নিয়ে গেল নিজেদের সাথে। আদ্রিয়ানের পাঠানো ড্রাইভারকেও না বলে চলে আসল ও। আর অরুমিতা,স্নেহাদের কড়া নির্দেশ দিয়ে দিল যাতে এই ব্যাপারে আদ্রিয়ানের সাথে কোন কথা না বলে, কিচ্ছু না বলে। আর হুমকিও দিল যদি বলে তো ও ওই ফ্লাট ছেড়ে চলে যাবে। আসলে অনিমা চায়না আদ্রিয়ান অনিমার দুর্বলতা জেনে যাক।

____________

আদ্রিয়ান ওর অফিসে বসে ডিরেক্টর এর সাথে কথা বলছিল। তখনই ওর ড্রাইভার ওকে ফোন করে বলল ভার্সিটির টাইম শেষ হয়ে গেছে অনেকক্ষণ হয়ে গেছে অনিমা বাড়ি ফেরার জন্যে বাড়িতে আসেনি। আদ্রিয়ানের মনে ভয় ঢুকে গেল। এমনিতেই অনেকে মেয়েটার প্রাণের পেছনে পরে আছে। কোন বিপদ হয়নিতো। ও অনিমাকে ফোন করল কিন্তু ফোন বন্ধ পেল। আদ্রিয়ান দ্রুত ওখান থেকে বেড়িয়ে গেল। বেড়োতে সার্ভেন্টকে ফোন করে জিজ্ঞেস করল অনিমা বাড়ি ফিরেছে কি-না। ওনারা না বলল। এরপর আদ্রিয়ান একে একে অরুমিতা, স্নেহা, তীব্রকে ফোন করল কিন্তু কেউ ধরল না। আসলে অনিমা ধরতে দিচ্ছেনা। আর তাছাড়াও আদ্রিয়ানকে ওরা মিথ্যে বলতে পারবেনা সেজন্যও ধরছে না। আদ্রিয়ান কলেজে গিয়ে পুরো কলেজ খুঁজেও অনিমাকে না পেয়ে এবার গাড়ি নিয়ে রাস্তায় খুঁজতে শুরু করল। পাগল পাগল হয়ে যাচ্ছে ও। অরুদের ফ্লাটের বা তীব্রর বাড়ির ঠিকানা ও জানেনা তাই খুঁজতে হবে। কিন্তু তারআগে রাস্তাগুলো দেখে নেওয়া ভালো।

দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। এদিকে অরুমিতা আর স্নিগ্ধার ফ্লাটে যাওয়ার পর থেকেই অনিমা মন খারাপ করে বসে একজায়গায় আছে। দুপুরেও কিছু খায়নি। কিছুক্ষণ পর অরুমিতা এসে বলল,

” অনি দেখ আদ্রিয়ান ভাই বারবার ফোন করছে। প্লিজ কথা বল নাহলে আমাদের বলতে দে। প্লিজ!”

এই নিয়ে মোট চারবার এসে একই কথা বলে গেছে কখনও অরুমিতা কখনও স্নেহা। তাই অনিমা এবার রেগ‍ে গেল। একটানে ফোনটা নিয়ে রিসিভ করে বলল,

” হ্যাঁ বলুন।”

অনিমার কন্ঠ মুহূর্তেই চিনে ফেলল আদ্রিয়ান। তাই রাগী গলায় বলল,

” এক থাপ্পড় মেরে বলুন বার করে দেব। বেয়াদব মেয়ে। জানো কীভাবে পাগলের মত খুঁজছি? আরুমিতার কাছে যাচ্ছো বলে যাবেনা? যা ইচ্ছা তাই করবে?”

অনিমা নিজেকে সামলে বলল,

” দেখুন আমি কী করব সেটা পুরোটাই আমার ব্যাপার। আর আমি আজ থেকে আমি এখানেই থাকবো। প্লিজ ফোন করে আর ডিসটার্ব করবন না।”

আদ্রিয়ান মুচকি হেসে বলল,

” ওহ, ম্যাডাম তাহলে রাগ করেছে আমার ওপর? রাগ করেছ বলে এভাবে চলে যেতে হবে? দাঁড়াও নিয়ে আসি তোমাকে তারপর রাগ করা বাড় করছি।”

আদ্রিয়ান মিষ্টি গলায় বলা এই কথাটা অনিমার কাটা ঘায়ে নুন দেওয়ার মতই মনে হল। তাই এবার একটু রেগে চেঁচিয়ে বলল,

” আপনার সাথে রাগ করব কেন আমি? হু আর ইউ? নিজেকে এতো গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই। আপনি অনেক করেছেন আমার জন্যে। আর কিছু করতে হবেনা। এবার আমায় আমার মত ছেড়ে দিন। রাখছি।”

বলে ফোন কেটে দিল। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে অনিমা। অরুমিতা আর স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে। অনিমা সেটা দেখে ধমকে বলল,

” হা করে তাকিয়ে আছিস কেন? যা এখান থেকে।”

অরুমিতা আর স্নেহা একপ্রকার পালিয়ে গেল। ওরা যেতেই অনিমা কেঁদে ফেলল। ও চায়নি আদ্রিয়ানের সাথে এভাবে কথা বলতে কিন্তু কেন করল আদ্রিয়ান ওর সাথে এরকম? যদি অন্যকারো সাথে সম্পর্ক ছিলোই তাহলে ওর সাথে এত ঘনিষ্ঠতা কেন বাড়ালো। কেনো এভাবে ওর মন এভাবে ভেঙ্গে দিল? কেন? কী পেল এরকম করে? শুধুই টাইমপাসের জন্যে? নাকি ওকে সস্তা ভেবেছিল আদ্রিয়ান? যার সাথে যা ইচ্ছা করা যায়।

তার প্রায় দুঘন্টা পর ফ্লাটের বেল বেজে উঠল। অরুমিতা গিয়ে দরজাটা খুলে দেখল আদ্রিয়ান দাঁড়িয়ে আছে। সাথে অভ্রও আছে। অনিমা সোফায় বসে ছিল আদ্রিয়ানকে দেখে দাঁড়িয়ে গেল। আদ্রিয়ান হনহনে পায়ে ভেতরে এসে অনিমার হাত ধরল এরপর টেনে ভেতরের রুমটাতে নিয়ে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়ে দরজার সাথে চেপে ধরল। তবে ওর চেহারায় তেমন রাগ নেই। ও অনিমার দিকে তাকিয়ে বলল,

” এতো রেগে আছো কেন হুম? কী করেছি কী আমি? না বলে এভাবে রেগে বম হয়ে থাকলে শোধরাবো কীকরে? বল কী করেছি?”

অনিমার এখন আদ্রিয়ানকে অসহ্য লাগছে একদম অসহ্য। অনিমা ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে বলল,

” কী সমস্যা কী আপনার? যখন তখন এভাবে টাচ করেন কেন? আপনাকে তো অনেক আগেও বলেছিলাম যে আমাকে এভাবে টাচ করবেন না।আমি আপনার প্রেমিকার মত অত্যাধুনিক নই। পরপুরুষের স্পর্শ খারাপ লাগে আমার। নাকি একটা নোংরা জায়গা থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে এসছিলেন বলে আমাকে সেইরকমই সস্তা মেয়ে ভাবছেন?”

” অনি!”

” ইটস অনিমা ফর ইউ।”

আদ্রিয়ান একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে অনিমার কথায়। হয়ত এটা আশা করেনি। তাতে অনিমার কী? ওও তো অনেককিছুই আশা করেনি কিন্তু আদ্রিয়ানতো সেসসবই করেছে। অনিমা আরেকটা শ্বাস ফেলে বলল,

” আর বলেছিলাম না যে নিজের এতোটাও ইম্পর্টেন্স দেওয়ার দরকার নেই। রেগে নেই আপনার ওপর আমি। ব্যস আপনার বাড়িতে থাকতে চাইনা আর।”

আদ্রিয়ান অনিমাকে ধরে আবারও নিজের কাজের কাছে এনে বলল,

” কেন? এতদিন তো দিব্যি ছিলে। আর এরকম করছ কেন ইয়ার? কী করেছি আমি? আচ্ছা, আমার কোন ব্যবহারে হার্ট হয়েছ? ওকে, আ’ম সরি। এবারতো চল?”

কিন্তু অনিমার চোখে ঐ ছবি আর আর্টিকেলই ভাসছে। আর কিছু ভাবতে পারছেনা। আদ্রিয়ান অনিমার হাত ধরে নিতে গেলে অনিমা ঝাড়ি দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,

” বাংলা বুঝতে পারছেন না? যেতে চাইনা আমি আপনার সাথে। আমি এখন থেকে এখানেই থাকব। আমার ওপর একদম জোর খাটাতে আসবেন না আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড নই। তাই নিজের অধিকারের সীমায় থাকুন। আর হ্যাঁ..”

বলে অনিমা একটা প্যাকেট এনে আদ্রিয়ানের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,

” এটা আপনারি দেওয়া একটা ড্রেস। বাকিগুলো আপনার বাড়িতেই আছে। এটা আজ কলেজে পরে গেছিলাম তাই আমার কাছ ছিল। দিয়ে দিলাম আপনাকে।”

তারপর হাতের ঘড়ি, কানের দুলটা যেটা আদ্রিয়ান কিনে দিয়েছিল সব খুলে আদ্রিয়ানের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,

” আপনার ঋণ শোধ করতে পারবনা আমি। কিন্তু এগুলো ফিরিয়ে দিলাম। অনেক করেছেন আমার জন্যে। সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব আপনার কাছে। এবার আসুন।”

আদ্রিয়ান স্হির চোখে তাকিয়ে আছে অনিমার দিকে। যাচ্ছেনা। তাই অনিমা ঠেলে রুম থেকে বার করে দিয়ে দরজা আটকে কাঁদতে লাগল। আদ্রিয়ান অনেকবার নক করেছে কিন্তু অনিমা খোলেনি। কিছুক্ষণ পর আর কোন আওয়াজ পেলনা অনিমা। অরুমিতা বলল,

” আদ্রিয়ান ভাই চলে গেছে অনি। এবার খুলে দে।”

অনিমা দ্রুত উঠে খুলে বাইরে এসে দেখল সত্যিই চলে গেছে আর ওর ঔষধ আর প্রেসক্রিপশনের কপি রেখে গেছে। অনিমা আর পারলোনা অরুমিতাকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কিছুক্ষণ কাঁদল। অরুমিতা আর স্নেহা মিলে অনেক কষ্টে সামলেছে ওকে।

____________

পরেরদিন ভার্সিটিতেও অনিমা স্নেহার একটা ড্রেস পরে গেল। এখনও কিনতে যেতে পারেনি পোশাক। দুটো ক্লাস শেষেই হঠাৎ ডিন ডেকে পাঠালো অনিমাকে। অনিমা ডিনের রুমে যেতেই ডিন বলল,

” একজন এসছে তোমার সাথে দেখা করতে পাশের রুমে ওয়েট করছে, যাও।”

অনিমা অবাক হয়ে বলল,

” জি?”

” রিপিড করব?”

” না কিন্তু..”

” যাও।”

অনিমা বুঝলোনা কে এখন ডাকল ওকে। আর ডিনও যেতে বলল। পাশের রুমে দরজা দিয়ে অর্ধেক ঢুকতেই কেউ টেনে ভেতরে নিয়ে গেল। অনিমা ভয় পেয়ে গেলেও তাকিয়ে দেখে আদ্রিয়ান। চোখে মুখে ভয়ংকর রাগ আছে আদ্রিয়ানের। কিন্তু আজ কেন জানি অনিমা ভয় পেলোনা। কারণ আদ্রিয়ানের কাছে পাওয়া আঘাতটা ওর মনের গভীরে লেগেছে। আদ্রিয়ানকে দেখলেই যে ওর সেই নিউজের কথা মনে পরেও ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বলল,

” এসব কেমন অসভ্যতা মিস্টার জুহায়ের? ছাড়ুন আমাকে। দেখুন আপনি কিন্তু এভাবে..”

আদ্রিয়ান ধমকে বলল,

” চুপ! একদম চুপ! কী ভেবেছ বারবার মনে আঘাত করবে আর আমি মেনে নেব? যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াবে? মানুষ মনে হয়না আমাকে? জানোয়ার আমি? আমার কষ্ট হয়না? অনেক সহ্য করেছি আর না। ভালো কথায় শোনার মেয়ে তুমি নও। তোমাকে দিয়ে সবকিছু জোর খাটিয়েই করাতে হবে।”

বলে অনিমাকে টেনে নিয়ে যেতে ধরলে অনিমার কি হল নিজেই জানেনা সর্বশক্তি দিয়ে আদ্রিয়ানের গালে চড় মেরে দিল। কাজটা করে নিজেই হতভম্ব হয়ে গেল অনিমা। কী করল ও?

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here