বাতাসা ❣️ পর্ব -০৬

বাতাসা❤️
#ঈশানুর_তাসমিয়া_মিরা

০৬.

— “আপনি বাতাসার মতো সাদা, জেন ভাইয়া। বাতাসা চিনেন তো? চিনি দিয়ে বানানো বাংলাদেশের একটি মজাদার মিষ্টি। দেখবেন বাতাসা আর আপনার শরীরের রঙ মিলালে একই হয়ে যাবে। সাদা সাদা!”

শুনে জেন হেসে দেয়। মেয়েটা রেগে গেলেও কেমন বোকা বোকা কথা বলে। যা দিব্যি আনন্দ দিচ্ছে জেনকে। ওদিকে জেনের হাসি দেখে মুখ আরো ফুলিয়ে রেখেছে দিশা। নিমিষেই কাঁদো কাঁদো গলায় বলে উঠে,
— “জেন ভাইয়া, আমাকে যেতে দিন। কেউ দেখলে খারাপ ভাববে।”
জেন ভ্রু নাঁচিয়ে বলে,
— “এ আধো অন্ধকার চিলেকোঠায় কে দেখবে আমাদের?”

দিশা আশাহত হলো। কান্না জড়িত কণ্ঠে আবারো বলল,

— “আপনি কেন বুঝতে চাইছেন না, আপনি যা চাচ্ছেন তা কখনই সম্ভব না।”
— “কেন সম্ভব না?”
— “কারণ আপনি খ্রিষ্টান আর আমি মুসলিম। আমাদের মধ্যে মিল কখনোই সম্ভব না।”

জেন মাছি তাড়ানোর মতো হাত নাড়ায়। বিরক্তিমাখা কণ্ঠে বলে,
— “এটা কোনো বড় ব্যাপার না দিশা। এখন অহরহ এক ধর্মের সাথে অন্য ধর্মের বিয়ে হচ্ছে।”

এমন কথায় মুহুর্তেই চোখ মুখ শক্ত হয়ে যায় দিশার। কঠিন কণ্ঠে বলে,

— “আপনি কি বলতে চাচ্ছেন, আপনার জন্য আমি আমার ধর্ম ছেড়ে দেবো?”
— “সেটা তো বলিনি আমি। তুমি তোমার ধর্ম পালন করবে আর আমি আমার।”

দিশা চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে। চেঁচিয়ে বলে উঠে,

— “এটা আপনার জন্য সম্ভব হলেও আমার জন্য না। এভাবে আপনার-আমার বিয়ে জায়েজ হবে না। কোনোভাবেই আমাদের কোনোকিছু সম্ভব না। তাই প্লীজ দূরে থাকুন আমার থেকে। আমি চাইনা আপনার সাথে কোনো সম্পর্কে জড়াতে।”

— “আর যদি আমি তোমার ধর্ম গ্রহণ করি তবে?”

আকস্মিক কথায় চমকে গেলো দিশা। অবাক হয়ে জেনের দিকে তাকাতেই জেন বলল,
— “আমি আমার ধর্ম ছেড়ে তোমার কাছে আসবো। তখন তো কোনো বাঁধা থাকবে না তাই না?”

দিশা শক্ত গলায় বলল,

— “থাকবে। আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না। আমার বাবা-মা আপনার সাথে আমাকে বিয়ে দিতে রাজী হবে না।”

রেগে গেল জেন। চোয়াল শক্ত হয়ে আসছে তার। আধো অন্ধকারে নিজের পাশে একটি চেয়ার দেখে সেখানে জোড়ে লাথি মারে জেন। সাথে সাথে কেঁপে উঠে দিশা। জেন চেঁচিয়ে বলে,

— “তুমি প্রচুর খারাপ দিশা। সত্যি বলতে তুমি আমাকে নিজের সাথে জড়াতেই চাও না। এজন্যই এত লেম এক্সকিউজেস দিচ্ছো। তবে জানো কি? আমি তোমাকে আমার থেকে আলাদা হতে দেবো না। যে করেই হোক নিজের কাছে রাখবো। সেটা আজ, এখন, এই মুহুর্তে থেকে। মাইন্ড ইট!”

দিশা আর এক মুহুর্ত দাঁড়ালো না সেখানে। কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল। এদিকে দিশা যেতেই হাত দিয়ে দেওয়ালে সজোড়ে আঘাত করে জেন। রাগে গা কাঁপছে তার। দিশাকে যে করেই হোক নিজের করে ছাড়বে সে। যে করেই হোক!

_________________
চলবে…
#’ঈশানুর তাসমিয়া মীরা
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here