বিনিময় পর্ব ১১(শেষ)

#বিনিময়
পর্ব-১১(শেষ পর্ব)

“ভালোভাবেই জানো যে তোমার হাসবেন্ড সুবিধার না…তাও তাকে চোখে চোখে রাখনি কেন?”, খুব বিরক্তিকর ভঙ্গিতে হেসে হেসে বলল কথাগুলা সিয়াম।
লিসা খুব কষ্ট করে নিজের রাগ থামিয়ে রাখছে।
পারলে রুহান আর সিয়াম দুইটাকেই পিটাতো ধরে।
.
“এমন করে বলছো যেন ফাঁসলে আমি একাই ফাঁসবো। আমি ধরা খেলে তুমিও ধরা খাবে। আমি তো এক প্লেনের টিকিট কেটে বিদেশে আব্বু আম্মুর কাছে যেতে পারবো। তোমার এমন কোনো ব্যাকআপ প্ল্যান আছে কি?” ঠান্ডা গলায় কথাগুলা বলল লিসা।
মুহুর্তেই হাসিয়ে থামিয়ে ফেলল সিয়াম।
.
“কাল দেখা কর”, লিসা বলল, “গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে।”
“কিন্তু এখন দেখা করা কি ঠিক? রুহান না তোমার পিছনে লোক লাগিয়েছে?”
সিয়াম আপত্তি করলো।
“সেটা আমার উপরে ছেড়ে দাও”, লিসা ফোন রেখে দিলো।

রুহান এতক্ষণ ঘুমের ভান করেছিল।
লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে যে লিসা বারান্দায় কার সাথে যেন কথা বলছে। কথা শুনতে পারলে ভাল হত।
.
রুহান প্রায়ই দেখে যে লিসা কার সাথে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলে রাতে। কিন্তু তার হাতে পাওয়া কল রেকর্ডে এ সময় কোনো ফোনকল দেখতে পায়নি সে।
নিশ্চয়ই লিসার কাছে এক্সট্রা ফোন আছে যার খবর রুহান জানেনা।
মনে মনে রেগে গেল সে।
তার জীবনটা মুশকিল করার জন্যই এই মেয়েটা এসেছে।
.
.
সিয়াম অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে লিসার জন্য। খুব বিরক্ত সে। যদি রুহান জানতে পারে লিসাকে সিয়াম সাহায্য করেছে তাহলে খুব বিপদে পড়বে সে।
.
নির্ধারিত সময়ের প্রায় একঘন্টা পরে লিসা আসে।
“এত লেট কেন?” সিয়াম জিজ্ঞাসা করলো।
“ওই লোকটা থেকে পিছু ছাড়াতে হয়েছে”,
সংক্ষেপে জবাব দিলো লিসা।
.
রুহানকে একগাদা ঘুমের ওষুধ দিয়ে গোটা রুম সার্চ করে নতুন ফোন পেয়েছে লিসা।
সেখান থেকে ওইলোকের কনট্যাক্ট নাম্বার নিয়ে রুহানের পালিত পুলিশকে দিয়ে এসেছিল লিসা। রুহানের বউ হওয়ায় সেও লিসাকে হেল্প করতে আপত্তি করেনি। ভাগ্য ভাল যে রুহান নিজের পার্সোনাল আর প্রফেশনাল লাইফ আলাদা রাখে। তাই ওই পুলিশ রুহান আর লিসার মধ্যকার সম্পর্কে কিছু জানেনা। ওই লোকের কি হয়েছে তা রুহানের কানে যাওয়ার আগেই লিসার কাজ হয়ে যাবে।
.
“কয়েকটা ডকুমেন্ট দিচ্ছি তোমাকে। বেনামী হয়ে একজন লোকের কাছে পাঠিয়ে দাও”,
লিসা বলল।
সিয়াম ডকুমেন্টগুলা দেখেই শিউরে উঠলো।
“অসম্ভব। আমি এ কাজ করতে পারবনা”,
সিয়াম বলল।
লিসা বলল, ” এছাড়া আর ভাল আইডিয়া নাই আমার মাথায়। নো রিস্ক নো গেইন।
আজকের মধ্যে ডকুমেন্ট পাঠিয়ে দিবে। দেরি করবেনা। পরশুদিন রুহান ডাক্তারের কাছে যাবে। এইই সুযোগ আমাদের। ”
সিয়ামের আপত্তির কোনো পাত্তাই দিলনা লিসা।
হাতের ডকুমেন্ট এর দিকে ভয় ভয় চোখে তাকিয়ে থাকলো।
এ মেয়ে রিস্ক নিতে এত পছন্দ করে কেন?!!
.
.
অপরিচিত ঘরে ধীরে ধীরে চোখ খুলল রুহান। নিজের হাত পা বাধা আছে দেখে মনের মধ্যে আতঙ্ক এসে ভর করলো। কে এনেছে এখানে তাকে? লিসা?
.
কতক্ষণ অজ্ঞান ছিল কে জানে! প্রথমে কিছুই মনে পড়ছিলনা তার। সে তো ডাক্তারের কাছে যাচ্ছিল। গাড়িতে উঠে লিসাকে অফিস থেকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার কথা। কিন্তু গাড়িতে উঠার পর আর কিছু মনে নাই তার।
.
“ঘুম ভাঙলো?”, অন্ধকার থেকে এক পুরুষকণ্ঠ বলে উঠলো।
রুহানের কাছে কেমনযেন পরিচিত লাগলো কণ্ঠটা।
হঠাৎ করে রুহানের মাথায় অতিরিক্ত উজ্জ্বল লাইট জ্বলে উঠলো। সহ্য করতে না পেরে চোখ বন্ধ করলো সে।
.
“আমার ছেলের বন্ধু হওয়ায় কোনোরকম বিনিময় ছাড়াই তোমার দুইনাম্বারি কাজে সাহায্য করেছিলাম তোমাকে। আর শেষপর্যন্ত তুমি এই কাজ করলে?!” লোকটি রুহানের সামনে এসে দাড়ালো।
.
“আংকেল?!!” রাহাতের বাবাকে দেখে রুহান যেরকম অবাক হল সেরকমই ভয় পেল।
আংকেল কি মনে করছে জামিলের সাথে সেও হাত মিলিয়ে রাহাতকে খুন করেছে?
তাহলে তাকে আর কেউ বাঁচাতে পারবেনা।
“এখানে কেন এনেছেন আমাকে?” কোনোমতে বলল রুহান। মাথা কাজ করছেনা তার।
.
রাহাতের বাবা ইশারা করলেন।
এক লোক একটা ফাইল নিয়ে এসে রুহানের সামনে ধরলো।
ফাইল দেখে রুহানের মুখ থেকে রক্ত সরে গেল।
কোন মানুষের সাথে কি কি দুইনাম্বারি করে সে তার রেকর্ড সে রাখে ভবিষ্যতে কোনো প্রয়োজনের জন্য।
রাহাতের বাবাকে নিয়ে সে যে রেকর্ড রেখেছিল তা উনি পেলেন কেমন করে?!! সেটা তো ল্যাপটপে এনক্রিপটেড করে রাখা ছিল!!

.
রুহান মরিয়া হয়ে বলল, “আংকেল। কেউ একজন আমাকে ফাঁসাচ্ছে। সত্যি বলছি আমি এ ডকুমেন্ট আমি পাঠাইনি। আপনাকে বিপদে ফেলার চিন্তা জীবনেও করতে পারবনা আমি।”
রাহাতের বাবা বললেন, “ডকুমেন্ট তুমি পাঠাওনি বুঝতেই পারছি। কে পাঠিয়েছে তা বের করার জন্য আমি আকাশ পাতাল এক করে দিবো। কিন্তু যে এই ডকুমেন্ট তৈরি করে আমাকে,আমার বিজনেস, রেপুটেশন কে হুমকির মুখে ফেলেছে তার কি শাস্তি হওয়া উচিত?”

ভয়ে রুহান এর মুখ থেকে আর কথা বের হচ্ছিল না, “আ…আংকেল… আমি আপনার ছেলের মত।”
“এইজন্যই মরার সময় কষ্ট কম দিবো তোমাকে,” রুহানকে আর কথা বলার সুযোগ দিলেননা তিনি। নিজের লোকগুলাকে ইশারা করলেন।

রুহানের মুখ থেকে আর্তচিৎকার বের হয়ে আসলো। এই লোকগুলার ক্রুয়েলটি কেমন তা জামিলদের ডেডবডি দেখেই বোঝা যায়। কেন রাহাত, জামিলদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করলো সে? কেন এই লোকের সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করতে গেল?
নিজের সব পাপকর্মগুলা একে একে চোখের সামনে ভেসে উঠলো তার। ইশ! যদি কেউ তাকে আরেকটা সুযোগ দিতো!!
.
রুহানের চিৎকার শুনে বসে থেকে মুচকি হাসলেন রাহাতের বাবা। এখানের তার আওয়াজ শোনার কেউ নাই। যত জোরে ইচ্ছা চিৎকার করুক। তার ভালোই লাগে এসব চিৎকার।
.
*
লিসা অনেকক্ষণ ধরে অফিসে বসে রুহানের জন্য অপেক্ষা করছে। মুখে কেমন অস্থির একটা ভাব।
.
এত দ্রুত রুহানকে মেরে ফেলার ইচ্ছা ছিলনা লিসার। তবে এছাড়া আর কোনো পথ নাই। রুহান নিজেই নিজের মৃত্যু ঢেকে রেখেছে।
কি দরকার ছিল লিসার পিছে লোক লাগানো? আর কয়েকদিন পার হলে রুহানও অ্যাটাক করতে শুরু করবে লিসাকে। তার আগেই তাকে থামাতে হবে।
লিসা যাই করুক সরাসরি যুদ্ধে রুহানের সাথে পারবেনা। এর আগেই হয় লিসাকে সরে যেতে হবে নাহলে রুহানকে সরাতে হবে
.

একঘন্টা লেট…দুইঘন্টা লেট…
ধীরে ধীরে লিসার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। কাজ হয়েছে মনে হচ্ছে।
.
.
.
***
সিয়াম অনেকক্ষণ ধরে লিসার জন্য অপেক্ষা করছে। মেয়েটা আবার লেট।
.
অবশেষে সাদা ড্রেস পড়ে ধীরে ধীরে একটা মেয়েকে আসতে দেখলো সিয়াম.
“আবার লেট!!!” বিরক্ত হয়ে বলল সিয়াম।
“নিজের হাসবেন্ড এর মিলাদ থেকে বের হয়ে আসা চাট্টিখানি ব্যাপার?” লিসা বিরক্ত হয়ে বলল।
.
বাসায় প্রচন্ড ভিড়। এত মানুষ লিসার একদম ভাল লাগেনা। দম বন্ধ হয়ে আসে তার.
লিসার চোখে ডার্ক সার্কেল দেখে সিয়াম বলল, “কাঁদছিলা নাকি রুহানের জন্য?”
.
অট্টহাসি হেসে উঠলো লিসা।
“আমি আমার চোখের পানি ফেলব ওর জন্য? কাল ঘরে এসে সবাই ভিড় করেছিল তাই ঘুম হয়েছিলনা।”
“লোকে দুর্নাম করবেনা?”, সিয়াম ব্যঙ্গ করে বলল।
“নাহ! লোকজন ভাবছে আমি অধিকশোকে পাথর হয়ে গেছি। কাল থেকে আমাকে কাঁদানোর জন্য ঘুরঘুর করছে। ঘুম হারাম করে দিয়েছিল। অবশেষে আজকে ফেন্ট হবার ভান করে ঘুমিয়ে এসেছি।”
আবার হাসলো লিসা।
.
ইচ্ছা থাকলে কাঁদতে পারতো লিসা। তবে মনে এত আনন্দ থাকলে কি আর কাঁদতে ভাল লাগে? অনেকদিন পর নিজেকে ফ্রি লাগছে তার।
.
লিসার চোখে রুহান কখনোই তার হাসবেন্ড হওয়ার যোগ্য না। রুহানের পারফেক্ট ম্যাচ হত একটা প্রস্টিটিউট। যে যেমন তার তেমনকেই বিয়ে করা উচিত। আজীবন আকাম করে শেষমেশ যেয়ে ভাল মেয়েকে বিয়ে করবে এটা তো উপর অন্যায়।

সিয়াম অবাক হয়ে তার হাসি দেখছে। এর আগে তাকে এত খুশি দেখেনি সে। রুহানকে ঘৃণা করতো ঠিক আছে কিন্তু তাই বলে হাসবেন্ড এত মৃত্যুতে এত খুশি কেউ হয়?
“আমাকে ডেকেছ কেন?”, সিয়াম বলল।

লিসা তার হাতে একটা নাম ধরিয়ে দিলো, “ডিটেইলস প্লিজ.”
সিয়াম নামটা দেখে বলল, “এ কে? ডিটেইলস নিয়ে কি করবা?”
লিসা বলল, “অফিসে কাজ করেছি একসাথে। ক্যারেক্টার হ্যানত্যান ভালই লেগেছে আমার। তাও ছেলেদের ভরসা নাই কি না কি করে। তুমি কনফার্ম কর তো আসলে কেমন সে?”
.
” কেন?” কৌতুহল নিয়ে বলল লিসা।
“ওমা! আজীবন সিঙ্গেলই থাকবো নাকি?” অবাক হয়ে বলল লিসা।
সিয়াম এবার রেগে গেল, “লজ্জ্বাশরম আছে তোমার? কয়দিন হয়েছে রুহান মারা যাওয়ার। এখনই বিয়ের চিন্তা! অন্তত তিনমাস তো শোক পালন করতে পারো।”
.
লিসা হেসে বলল, “ওই রুহানের মত ছেলের জন্য আমি শোকপালন করবো? একটাই লাইফ আমার।
তাছাড়া বিয়ে তো এখন করছিনা। আপাতত আমি সৌদিতে যাচ্ছি। রুহানের বাবা যদি জানেন যে রাহতের বাবা রুহানের হত্যাকারী তাহলে অবশ্যই তিনি শোধ তুলতে যাবেন। তাদের ক্রসফায়ারে থাকতে রাজি না আমি।”
.
সিয়ামের রাগ তবুও কমছেনা। মুখ শক্ত করে বলল, “সেই ছেলে তোমাকে বিয়ে করবে কেন? আফটারঅল তুমি উইডো”.
লিসার হাসি থেমে গেল কথাটা শুনে।
“সেটা আমার ব্যাপার। তোমার চিন্তা করা লাগবেনা। ” মুখ শক্ত করে বলল সে।
এরপর আবার হেসে বলল, “তাকে ম্যানেজ করতে পারলে পারলাম। নাহলে তুমি তো আছোই। তোমাকে বিয়ে করে ফেলব”.
চোখ টিপ দিয়ে চলে গেল লিসা।.
.
লিসার কথা শুনে আহাম্মকের মত দাড়িয়ে থাকলো সিয়াম। এ কেমন থেট দিলো লিসা!! সে আত্মহত্যা করবে তাও লিসাকে বিয়ে করবেনা। রুহানের অবস্থা দেখেছে সে। সেও এরকম পরিণতি চায়না।
.
লিসা সিয়ামের দিকে না তাকিয়ে চলে যাচ্ছে। মনে তার অন্যরকম শান্তি।
.
.
১০বছর পর…
.
সামনে দাড়ানো মেয়েটার দিকে নার্ভাস হয়ে তাকিয়ে আছে সিয়াম।
১০বছরে অনেক চেঞ্জ হয়েছে লিসা।
আগের মত ডেঞ্জারাস লাগছেনা তাকে।
নিজের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করে আর মা হওয়ার পরে হয়তো তার মনে এখন আর আগের মত ভায়োলেন্স নাই।

স্কুল থেকে হঠাৎ ফোন পায় যে তার ছেলেকে স্কুলে কে যেন ধরে মেরেছে।
অবাকই হয় সে। সেই সাথে রাগও হয় তার।
যদিও তার ছেলে খুব একটা সাধু না। এই ছোট বয়সেই স্কুলে অন্যান্য স্টুডেন্টদের জ্বালাতন করে। তাই বলে তাকে ধরে মারবে এভাবে? আজ পর্যন্ত তার মাও তার উপরে জোরে করে কথা বলেনি।
.
যে তার ছেলের গায়ে হাত তুলেছে তাকে স্কুল থেকে টিসি দেওয়ানোর উদ্দেশ্যে স্কুলে এসেছিল সে। কিন্তু এসে দেখে যে তার ছেলে এক মেয়ের হাতে মার খেয়েছে। লজ্জ্বায় তখন তার মাথা হেট হয়ে গেল।
যখন দেখে যে মেয়ের মা আর কেউ না… বরং লিসা…তখন আর তার মধ্যে অবাক ভাবটা থাকলননা।
.
এ মেয়ের কারণে রাহাত, জামিল আর তার বন্ধুদের পরিবার পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। রাহাতের বাবা অনেক পাওয়ারফুল। কিন্তু রুহানের বাবাকে আন্ডারএস্টিমেট করা তার ঠিক হয়নি। বলাই বাহুল্য যে ডকুমেন্ট রাহাতের বাবাকে দেওয়া হয়েছিল সেগুলা লিসা যাওয়ার আগে রুহানের বাবাকেও দিয়ে যায়। রুহানের বাবা এরপরে নিজে খোঁজ করে জানতে পারে যে তার ছেলেকে কে মেরেছে।
কয়েকমাসের মধ্যেই রাহাতের পরিবারের কোনো সদস্যকেই আর পাওয়া যায়না।
সে তুলনায় তার মেয়ে যদি মারামারি করে সেটা তো খুবই তুচ্ছ ঘটনা।
.
লিসার কথায় ভাবনায় ছেদ পড়লো তার, “তোমার ছেলে ক্লাসে অন্যদের ধরে মারে। টিফিনের টাকা কেড়ে নেয়। হোমওয়ার্ক করিয়ে নেয়। এসব ব্যাপার জানতে আগে থেকে? তোমার ছেলে আজকে
আমার মেয়ের চুলে চুইংগাম লাগাতে যাচ্ছিল”
সিয়াম মাথা নিচু করে বলল, “হ্যা শুনেছি…ছোট তো..বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে!”
লিসাকে চুপ থাকতে দেখে আবার বলল সে, ” তোমার মেয়েও কম না। সে আমার ছেলেকে মেরেছে, তারপর সবাইকে নিজের টাকায় চুইংগাম কিনে দিয়েছে। এরপর সবার চুইংগাম যেয়ে আমার ছেলের মাথায় লাগিয়েছে”.
.
লিসা এবার হেসে বলল, “আমার মেয়েকে আমি আমার মত হচ্ছে। তোমার ছেলেকে তুমি রুহানের মত হতে দিওনা “.
.
রুহানের কথা শুনে সিয়াম চুপ করে গেল।
পিছনে লিসার হাসবেন্ড ছেলেমেয়ে দুইটাকে বুঝাচ্ছে, “দেখ, কারো সাথে খারাপ আচরণ করবেনা। ইংরেজিতে প্রবাদ আছে ‘what goes around, comes around ‘ বুঝেছ? একে অন্যকে সরি বলো।”
.
হাসবেন্ড এর কথা শুনে লিসার মনের মধ্যে খচ করে উঠলো।
সে এসে লিসাকে বলল, “চলো মেয়েকে নিয়ে আইসক্রিম খেতে যাই আজকে”.
.
সিয়াম চুপচাপ দাড়িয়ে হ্যাপি কাপলটাকে দেখছে। কিভাবে লিসা একে বিয়েতে রাজি করেছে সে জানেনা। খালি ইনফরমেশনই বের করে দিয়েছিল সিয়াম। এরপর আর যোগাযোগ করেনি।
তবে ছেলেটা লিসার দিকে যেভাবে তাকাচ্ছে, তাতে মনে হয়না সে রুহানের মত তাকেও জোর করে বিয়ে করেছে।
.
গাড়িতে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো লিসা। হাসবেন্ড এর কথা তার কানে বাজছে খালি, “what goes around, comes around”.
.
(সমাপ্তি)
.
#ফারিহা_আহমেদ
(*** জীবনে ফার্স্ট সিরিয়াস গল্প লিখেছি। কেমন হয়েছে জানতে চাই কিন্তু জিজ্ঞাসা করতেও ভয় লাগে. :3)
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here