বৃষ্টি ভেজা কাঠ গোলাপ পর্ব -০৫

#বৃষ্টি_ভেজা_কাঠ_গোলাপ
#পর্ব_৫
#লেখনীতে_সাবীহা_সুলতানা_মহিমা

বাড়ির সাদ ভাইয়ার বিয়ের জন্য এমনিতেই মরিচ বাকি, ঝালোট,পেন্ডেল করা ছিলো। বাট এর মাঝেও সাদের পশ্চিম পাশে একটা কাঠগোলাপ গাছ আছে, যেটাতে কলি ফুটেছে।
কিন্তু আমি যে এমন কিছু দেখবো ভাবতেই পারি নি। নিদ্র ভাই সুভ্র রং এর একটা টি শার্ট পড়ে আমার কাঠ গোলাপ গাছের নিচে বসে আছে। পিছন দিক থেকে দেখে অনেক সুন্দর লাগছে। আমি দেখেই ক্রাশ খাইছি।বাট ওনার দিকে এগিয়ে গিয়ে দেখি ওনি আমার গাছের একটা ফুলের কলি ছিরে তার ডাটি মুখে নিয়ে কামরাচ্ছে। খুব গভির ভাবে কিছু ভাবছেন তিনি।
আমার গাছের ফুল ওনার হাতে দেখে আমার মেজাজ সপ্তম আছমানে চরে গেছে।
আমি পেছন থেকে সামনে গিয়ে ঝাঁঝালো গলায় নিদ্র ভাইকে বললাম,
কি ব্যাপার নিদ্র ভাই আপনি আমার গাছের ফুল ছিরছেন কেন। কলি ফুটতেই পারেনি তার আগেই আপনার হাতের থাবা পড়ছে। আপনার সাহস দেখে আমি তো অবাক। আপনার সাহস হয় কেমনে আমার গাছে হাত দেয়ার।
আমার কথায় নিদ্র ভাইয়ের মাঝে কোনো ভাবান্তর হলো বলে আমার মনে হলো না।
এবার আমি তার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম, কি আমি যে কিছু বলেছি শুনতে পাননি নাকি। নাকি আমার আবার বলতে হবে। ফুল ছিরেছেন কেন।
এবার নিদ্র ভাই খুব ঠান্ডা চোখে আমার দিকে ফিরলেন। আর বললেন, তুই কি কিছু বলছিস।
এখন তো আমার রাগ আরো বেরে গেছে, ওনাকে ঝাকিয়ে বললাম, আপনি গাছের ফুল ছিরেছেন কেন, জানেন না এটা আমার কত প্রিয় গাছ।বাচ্চাদের কেউ ছুতে দেই না আর আপনি কিনা ফুল ছিরে বসে আছের। সাহস হয় কি করে।
তুই কি কি বলরি, আমার সাহস হয় কি করে, তুই আমার সাহসের দেখেছিস কি, আর কি বললি, এই গাছ তোর। আচ্ছা মানলাম, এই গাছ তোর বাট যার গাছ সে পুরাটাই যে আমার।
কি কি বললেন?
কই কি বলছি,আচ্ছা আসছি পড় থেকে দেখচি তুই কেমন রেগে কথা বলছিস। একটুতেই রেগে যাচ্ছিস, হুয়াট হেপেইন এনিথিং রং?
না কই কি হবে, আমি আপনার সাথে ভালো ভাবেই কথা বলতে চাই। কিন্তু আপনি ঘার তেরা লোক, আপনার জন্ম হয়েছে তো আমাকে রাগানোর জন্য।
বলেই আমি চলে আসতে নিলে পেছন থেকে নিদ্র ভাইয়ের হাসির শব্দ শুনতে পেলাম, তানি বলছেন, তুই ঠিকি বলেছিস, তোরে রাগানোই আমার কাজ। তাছারা আমার কোনো কাজ নাই, কারন তকে রাগলে সুন্দর লাগে।
আমি পিছনে না তাকিয়ে চলে আসলাম। রুমে ডুকে দেখি মিরাজ ভাইয়ার বোন আখি পুরু বিছানা জুরে শুয়ে আছে। আমি কই শোবো। ডিসগাস টিং মহিলা।এ নাকি বাহিরে থেকে পড়ে এসেছে।
মুখ ভেঙ্চি কেটে সিঙ্গেল বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।

এদিকে কেউ একজন নিদ্র আর নেহার সব কথা শুনে হাত মুষ্ঠি বদ্ধ করে বলে নিদ্র তোকে তো আমি নেহার পাশে যেতেও দিবো না। যেভাবেই হোক নেহাকে আমার করবোই। বলেই রহস্য ময় হাসি দিয়ে সাদের পাশ থেকে সরে যায়।
আর নিদ্র মনে মনে বলে কতদুর যাবে তুমি, আমি তো সবি জানি সুধু সময়ের অপেক্ষা। যথা সময়ে তোমার মুখোশ খুলে দেবো।
আবার নেহার পাগলামির কথা মনে করে হেসে দেয় আর বলে পাগলি একটা।
নিদ্র মুচকি হাসি দিয়ে সাদ থেকে নেমে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লো।
রিসিপশনে সবাই জমকালো সাজ সাজে সজ্জিত হয়েছে।
মেয়ের বাড়ি থেকে অনেকেই এসেছে। মিরাজও এসেছে, কিন্তু তার চোখ বারবার নেহাকে খুজছে।
খুজতে খুজতে এক সময় নেহাকে পেয়েও যায় সে, নেহাকে দেখেই এগিয়ে এসে বলে,
কেমন আছো নেহা?
জি ভালো, আপনি কেমন আছেন?।
এত সময় ভালো ছিলাম না। এখন ভালো আছি।
ওমা কেন, এত সময় আবার কি হয়েছিলো?
এক৷ জন কে খুজছিলাম তো, তাই।
তো তাকে পেয়েছেন? স্পেশাল কেউ নাকি।
হুম , অনেক বেশি স্পেশাল।
ওহ্ আচ্ছা, হঠাৎ নেহার নজর যায় নিদ্র আর আখির দিকে,
আখি নিদ্রর হাত জরিয়ে হাটছে।
এটা দেখে কেনো যেনো নেহার বুকের মাঝে মোচর দিয়ে ওঠে।
মিরাজ কে আর কিছু বলতে না দিয়ে তারাতারি করে ওখান থেকে সরে যায়।
সবাই অনেক আনন্দ করছে, কিন্তু নেহা কোনো ভাবেই আখির নিদ্রের হাত ধরা দৃশ্য ভুলতে পারছে না।
আনমনে হেটা যাচ্ছে নেহা, পাশের রুমে ইশা আর মুগ্ধর কন্ঠ শুনে থমকে দাড়ায় নেহা, শুনতে পায় মুগ্ধর প্রেম নিবেদন।
দেখো ইশা আমি তোমাকে ভিষন ভালোবাসি।যখন তুমি ক্লাস এইটে পড়ো মনে আছে বৈশাখি মেলায় আমরা সবাই এক সাথে হয়েছিলাম তখন তুমি আমার কাছে বায়না করেছিলে মেলায় যাওয়ার জন্য।
মেলায় নিয়ে যেতে চাইনি বলে আমার সাদা সার্ট ছিরে দিয়ে ছিলে,
আমি তোমার সেই রাগি চেহারার প্রেমে পড়েছিলাম। বলবো বলবো করে বলা হয়নি, কিন্তু আমার মনে হয় এখন তোমাকে আমার বলা উচিত তাই আজকে বলেই দিলাম।
মানছি আমি তোমার মামাতো ভাই, বেকার ছেলে কিন্তু কয়েক বছর পর আমি সব কিছু মেনেজ করে, সবাইকে মানিয়ে তোমায় বউ করে আনবো।
হবে কি তুমি আমার পথ চলার সঙ্গি।
ইশা দেখি লাজুক হেসে মুগ্ধ হাতে থাকা গোলাপ টা নিয়ে নিলো।
তাহলে আমি ভুল ছিলাম, আমি জানতাম ইশা নিদ্র কে পছন্দ করে।
বাট ওতো দেখি উল্টো ছক কষে বসে আছে।
হঠাৎ ফুপির কন্ঠ শুনতে পেলাম,ইরা, আর ইশাকে খুঁজছে হয়তো। আমাকে দেখার আগেই আমি কেটে পড়লাম। ওদের দুজনের বিষয়টা পড়ে দেখা যাবে।
বাগানে এসে বসে আছি, তখন দেখি আকি আপু নিদ্র ভাইকে টানতে টানতে বাগানে দিকেই নিয়ে আসছে। আমাদের বাগানের শিউলি গাছের নিচে এসে আখি আপু আমার গোলাপ গাছ থেকে একটা গোলাপ ছিরে নিদ্র ভাইয়ের সামনে হাটু মুরে বসে প্রপোজ করছে।
নিদ্র আই লাভ ইউ।
নিদ্র ভাই কি উত্তর করছে আমি সেটা না শুনেই আখি আপুর সামনে গিয়ে টেনে তাকে তুলে বললাম,
আপনি কাকে প্রপোজ করছেন সেটা আমার কাছে মেটার না। আপনি আমার গাছের গোলাপ ছিরলেন কেন। বাগানে ডোকার সময় চোখে পড়ে নি যে, বাগানের ফুল ছেরা নিষেধ। নাকি চোখ কপালে তুলে হাটেন।
নেহার কথা শুনে নিদ্র বুঝতে পারলো বড় কোনো ঝর হবে এখন, তাই আখিকে সরার জন্য বললো আখি ও বাচ্চা ওর কথায় কিছু মনে করো না। চলো আমরা এখান থেকে যাই।
ওয়েট নিদ্র, বলেই আখি শশব্দে নেহার গালে একটা থা*প্প*র দিয়ে দেয়। আর বলে কতটা স্টপিট মেয়ে তুমি। দেখছো এখানে আমি নিদ্র র সাথে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছি, আর তোমার গাছের একটা গোলাপ ছেরায় আহামরি কি হয়েছে শুনি।
আকির দেয়া আঘাতে নেহা ব্যাথা পেলেও এবার নেহা রেগে বলরো, গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবেন তো এখানে কেনো এসেছেন হ্যা পার্ক আছে রেষ্টুরেন্টে গিয়ে বলেন না।
নিদ্র ও রেগে গেছে, কারন নেহার গায়ে কেউ কখনো ভুলেও টোকা দেয়না সেখানে নেহার গালে আখি আগাত করেছে। বাট কিছু বলবে তার আগেই দেখে নেহা রেগে গাছের কাছে গিয়ে গোলাপ গাছ টা একটানে তুলে ফেলে দিয়েছে।
নেহার হাতে কাটা ডুকে রক্ত বের হচ্ছে সে দিকে ওর খেয়াল নেই। ওর তো কষ্ট হচ্ছে আখি কেন নিদ্র কে প্রপোজ করবে।
তাও আবার ওর গাছের গোলাপ থেকে। তবে কি আখিই নিদ্রর সেই ইস্পেশাল মানুষ। তবে ওর প্রতি এতো কেয়ার এতো কিসের অধিকার।

চলবে,,,,
ল্যাব করে বাসায় আসলাম,, তাই গতকাল লিখতে পারিনি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here