ভালোবাসার রং মিছিল পর্ব -২৮+২৯

#ভালোবাসার_রং_মিছিল💚
#লেখিকা_ইশা_আহমেদ
#পর্ব_২৮

ইরহামের কথা শুনে অর্ষা লজ্জা পায়।মুখ ফসকে প্রেমিক পুরুষ শব্দটা বেরিয়ে গিয়েছে।ইশশ এতো লজ্জা লাগছে।সবাই হয়তো তার ভালোবাসার মানুষের সামনে আসলে এমন লজ্জাবতী হয়ে যায়।মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হতে চায় না।

—“অর্ষা আমি যেনো ফারদার তোমায় অন্য কোনো ছেলের সাথে না দেখি।আমি সহ্য করতে পারবো না।আর ওই তিশাম ছেলেটার থেকে দূরে থাকবে”

—“হুম এই সব বাদ দিন তো।চলুন না একটু বৃষ্টিতে ভিজি।আমার অনেক বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করছে।”

—“উহু নাহ এখন বৃষ্টিতে ভেজার দরকার নেই জ্বর আসবে”

—“আমার বৃষ্টিতে ভিজলে কিছু হয় না ইরহাম চলুন না”

অর্ষার জেদের জন্য যেতে হয়।ছাদে আসতেই অর্ষা দৌড়ে বৃষ্টিতে ভিজতে চলে যায়।ইরহাম দাঁড়িয়ে দেখছে অর্ষাকে।অর্ষা লাফাচ্ছে ছোট বাচ্চার মতো।ভেজার ফলে থ্রি পিসটা শরীরের সাথে লেপ্টে আছে।ওড়না ঠিক নেই।অর্ষা ইরহামের কাছে এসে ওকে টেনে নিয়ে ভিজতে থাকে দুজন।ইরহাম মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে তার প্রেয়সীর কাজ।অনেক সময় ভেজার ফলে অর্ষা কাঁপছে।ঠোঁট দুটোও কাঁপছে যা ইরহামকে টানছে।

ইরহাম নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে অর্ষার একদম কাছে চলে আসে।অর্ষা হকচকিয়ে যায়।পরে যেতে নিলে ইরহাম আগলে নেয়।ইরহামের চুলগুলো লেপ্টে মুখের উপর পরেছে।চশমা নেই চোখে।দেখতে ভীষণ সুন্দর লাগছে ইরহামকে।ইরহাম নামক সুদর্শন পুরুষটি তার।
ইরহাম নেশালো কন্ঠে বলল,,,

—“আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি তোমার এমন রূপ দেখে।কবে তোমাকে সম্পূর্ণ ভাবে পাবো বউ”

—“কি বলছেন আপনি এগুলো।চুপ করুন”

—“চুপ কেনো করবো তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছি না আমি।নিশ্বাস নিতেও আমার তোমাকে লাগবে।প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে আমি উঠে আমি তোমার মুখটা দেখতে চাই বউ”

অর্ষা ইরহামকে ধাক্কা মেরে নিচে চলে আসে।ইরহাম হালকা হেসে নিজেও রুমে চলে আসে।রুমে এসে দেখে অর্ষা ওয়াশরুমে গোসল করতে ঢুকে গিয়েছে।নিজেও পাশের রুমের ওয়াশরুম থেকে গোসল করে আসে।রুমে আসতেই দেখে অর্ষা এখনো বের হয়নি।ওয়াশরুমের দরজায় টোকা দিয়ে বলে,,

—“কি হলো ম্যাডাম আপনি কি ওয়াশরুমেই থাকার চিন্তা করেছেন?”

অর্ষা অসহায় কন্ঠে বলে,,

—“আমি কি পরবো এখন ইরহাম।আমি তো জামাকাপড় আনিনি”

ইরহাম কিছুক্ষণ ভেবে নিজের একটা টিশার্ট আর প্যান্ট দেয় পরতে।অর্ষা পরে বের হয়।ইরহামের হাসি পেলেও হাসে না সে।হাসলেই যে তার অভিমানিনী বউ অভিমান করে গাল ফুলিয়ে বসে থাকবে।অর্ষা চুল মুছতে মুছতে আয়নার সামনে এসে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে নিজেই চিল্লিয়ে ওঠে।

—“আমায় এতো বিশ্রি দেখাচ্ছে কেনো?”

ইরহাম অর্ষাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষন করে দুষ্ট হাসি দিয়ে বলে,,,,

—“বিশ্রি কেনো লাগবে তোমায় বউ।তোমাকে তো সেই হট লাগছে মন চাচ্ছে এখনই খেয়ে ফেলি”

ইরহামের কথা শুনে অর্ষার চোখগুলো বড়বড় হয়ে যায়।হা করে তাকিয়ে থাকে ইরহামের দিকে।ইরহাম বুঝতে পেরে জোরে জোরে হাসতে থাকে।অর্ষা লজ্জা পায়।লোকটা তাকে শুধু লজ্জা দেয়।দুজন বসে গল্প করতে থাকে।

৬০.

ইরহাম সেই যে সন্ধ্যায় অর্ষাকে পৌঁছে দিয়ে গিয়েছে এরপর থেকে আর খোঁজ নেই তার।অর্ষা চিন্তায় পরে যায়।কি করবে ভেবে পায় না।ফোন হাতে নিয়ে ইরহামকে কল করে।প্রথমবার রিসিভ হয় না।দ্বিতীয় বার রিসিভ করে ইরহাম।অর্ষা অস্থির হয়ে বলে,,,

—“আপনি ঠিক আছেন তো ইরহাম”

ইরহাম ভাঙা গলায় বলে,,,

—“হু বউ আমি ঠিক আছি তুমি চিন্তা করো না”

—“আপনার গলা এমন শোনাচ্ছে কেনো ইরহাম।আপনার কি জ্বর এসেছে।”

ইরহাম হাসে।মেয়েটা গলা শুনেই বুঝে গিয়েছে।মিহি কন্ঠে জবাব দিলো,,,

—“তেমন কিছু না বউ ঘুমাও তুমি অনেক রাত হয়েছে”

অর্ষা বিচলিত হয়ে বলল,,,

—“আপনি ঔষধ খেয়েছেন ইরহাম।”

—“হুম খেয়েছি বউ রাখি এখন ঘুম এসেছে ঘুমাই হ্যা।ভালোবাসি বাই”

ইরহাম ফোন রেখে দেয়।অর্ষার চিন্তায় মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।ইরহামের বৃষ্টিতে ভেজার ফলেই জ্বর এসেছে।অর্ষা নিজেকে দোষারোপ করতে থাকে।সে যদি জোর না করতো তাহলে ইরহাম বৃষ্টিতে ভিজতো না আর না জ্বর হতো ইরহামের।অর্ষা কান্না পাচ্ছে ভীষণ।হয়তো ভালোবাসা এমন একজনের কিছু হলে অপর পাশের মানুষটাও স্থির থাকতে পারে না।

৬১.

রুশানকে নিয়ে সকাল সকাল অর্ষা ইরহামদের বাড়িতে চলে আসে।আসতে লজ্জা লাগলেও সে করবে কি।ইরহামকে না দেখলে শান্তি মিলছে না তার।রুশান তো তাকে এ বাড়িতে নিয়ে আসতে এক পায়ে খাড়া।গতকাল সারা রাত ঘুমাতে পারিনি অর্ষা ইরহামের চিন্তায়।চোখগুলো ফুলে আছে।চেহারার অবস্থাও বেসামাল।রুশান অবশ্য এগুলো নিয়ে আজ মজা করেনি।নাহলে নির্ঘাত অর্ষা তাকে খুন করে ফেলতো।

বাড়ির সামনে আসতেই অর্ষা ওড়না ভালোভাবে মাথায় টেনে নিলো।এরপর রুশানের সাথে ধীরে ধীরে বাড়ির সামনে আসলো।কলিংবেল দিতেই ইরহামদের বাড়িতে যেই ছোট মেয়েটা কাজ করে সে দরজা খুলে দেয়।অর্ষা আর রুশান ভেতরে ঢুকে।আয়রা এসে ওদের দেখে তো সেই খুশি।

—“কেমন আছো অর্ষা মামনি?”

—“আলহামদুলিল্লাহ ভালো মামনি আপনি?”

—“আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি”

বিভিন্ন রকম কথা বলে আয়রা।অর্ষা উশখুশ করছে ইরহামের কাছে যাওয়ার জন্য।আয়রা বুঝতে পেরে ইশারা করে রুম দেখিয়ে দেয়।আয়রা মুচকি হাসেন।ইরহাম অর্ষা যে একে অপরকে ভীষন ভালোবাসে তা বুঝতে বাকি নেই আর।অর্ষা যে ইরহামের অসুস্থতার কথা শুনে ছুটে এসেছে বেশ বুঝতে পারছেন।ইলমাকে বলে রুশানের সাথে কথা বলতে।রুশান তো সেই লেভেলের খুশি।ইয়াদ রাজশাহীতে চলে গিয়েছে অনেক আগেই।অর্ষা ইরহামের রুমের সামনে আসে।

দরজা চাপানো ছিলো।শব্দ না করে প্রবেশ করে ইরহামের রুমে।ইরহাম তখনও ঘুমিয়ে আছে।অর্ষা এই প্রথম ইরহামের রুমে এসেছে।রুমটা খুব সুন্দর করে গোছানো।ইরহাম উদাম আগে শুয়ে আছে।বুক পর্যন্ত কাঁথা টেনে দেওয়া।ইরহামের শুকনো চোখ মুখ দেখে অর্ষার কান্না পায়।চোখ জ্বলছে।হুট করে হয়তো পামিগুলো বেরিয়ে আসবে।

ইরহামের পাশে বসে ওর হাতটা মুঠোয় নেয়।একরাতে চেয়ার হাল কি হয়েছে।অর্ষা কান্নাগুলো দলা পাকিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে।অর্ষা না পেরে কেঁদে ওঠে।ইরহামের শরীর এখনো অনেক গরম।ইরহামের ঘুম ভেঙে যায় ফোঁপানোর শব্দে।চোখ খুলে তার প্রেয়সীকে সামনে পায়।ইরহাম ভাবে ঘুমের ঘোরে হয়তো ভুল দেখছে।চশমা পাশ থেকে নিয়ে পরে দেখে অর্ষা আসলেই বসে আছে।

—“বউ কাঁদছো কেনো তুমি?”

অর্ষা চোখ মুছে নাক টেনে বলে,,,

—“খুশিতে কাঁদছি এতে সমস্যা আপনার?”

ইরহাম মুচকি হেসে বলে,,,

—“আমারই তো সমস্যা।আমার বউয়ের চোখের পানি যে আমি সহ্য করতে পারি না তা কি জানে সে”

—“জানে না সে জানতে চায় ও না।বদ লোক কোথাকার”

—“বউ কাঁদে না আমি ঠিক আছি তো এখন”

—“কালকে বলেননি কেনো বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর আসে আপনার।তাহলে তো আমি কখনই জোর করতাম না।আপনি বুঝেন না কেনো আমি আপনার কিছু হলে সহ্য করতে পারি না”

ইরহাম হেসে অর্ষাকে বুকে টেনে নিলো।অর্ষাও ভালো মেয়ের মতো ইরহামের বুকে মাথা রেখে ইরহামের হৃৎস্পন্দন শুনতে লাগলো।ইরহাম অর্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।অর্ষার ভীষণ ভালো লাগছে।সময়টাকে এখানেই থামিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।সে এই বুকে মাথা রেখে আজীবন পার করতে পারবে।

#চলবে#ভালোবাসার_রং_মিছিল💚
#লেখিকা_ইশা_আহমেদ
#পর্ব_২৯

৬২.
রুশান ইলমা ছাদে এসেছে।ইলমা রুশানের দেওয়া গিফটা যত্ন করে রেখে দিয়েছে।রুশান তাকে একটা নীল জামদানী শাড়ি দিয়েছে সাথে কানের ঝুমকো আর চুড়ি।ইলমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে জিনিসগুলো।রুশান ঠিক করেছে আজকেই সে নিজের মনের কথা জানাবে ইলমাকে।আবহাওয়া বেশি ভালো না।যখন তখন বৃষ্টি নামতে পারে।

—“ইলমা তোমাকে কিছু বলতে চাই আমি”

রুশান অনেক সাহস করে কথাটা বলল।ভীষণ ভয় করছে।যদিও ইলমা অনেক ছোট।কিন্তু বর্তমান যুগে এর আগেই মেয়েরা প্রেম করে বসে আছে।ইলমা মিষ্টি হেসে বলে,,,

—“হ্যাঁ বলুন রুশান ভাইয়া”

—“তুমি কি কালকে বিকালে আমার সাথে দেখা করতে পারবে ইলমা।”

—“কেনো ভাইয়া”

রুশান মাথা চুলকে হেসে বলে,,,

—“একটু প্রয়োজন আছে”

—“কি প্রয়োজন ভাইয়া”

—“সেইটা এখন বলা যাবে না।কালকে বলবো।শোন পারলে আমার দেওয়া শাড়িটা পরে এসো।নদীর পাড়ে থাকবো আমি”

কথাটা বলেই রুশান দ্রুত পায়ে স্থান ত্যাগ করে।ইলমা হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।রুশান কি বলে গেলো সব তার মাথার উপর দিয়ে গিয়েছে।ইলমা এই কয়েকদিনে রুশানকে নিজের মনে জায়গা দিয়ে ফেলেছে।রুশান এমনিতেই সুদর্শন আরো ইলমার সাথে করা ভালো ব্যবহার সব মিলিয়ে রুশানকে ইলমার কাছে একজন অমায়িক মানুষ মনে হয়।

৬৩.

রুশান সকাল থেকে অস্থির হয়ে আছে।অর্ষা কয়েকবার জিজ্ঞেস করলেও রুশান কিছু বলেনি।ভয় হচ্ছে প্রচুর রুশানের।বলে তো দিলো আজকে আসতে ইলমাকে আদেও বলতে পারবে ভালোবাসার কথা।অর্ষা বিষয়টা কিছুটা আঁচ করতে পেরেছে।ও রুশানকে চেপে ধরে বলে,,,,

—“তুই কি ইলমা আজকে নিজের মনের কথা বলতে চাইছিস?”

রুশান চোখ বড়বড় করে তাকালো অর্ষার দিকে।অর্ষা যে বুঝে ফেলবে ভাবতে পারিনি রুশান।ভয়ে কাচুমাচু হয়ে অসহায় দৃষ্টিতে তাকায় রুশান অর্ষার দিকে।অর্ষা কিছুটা রেগে বলল,,,

—“আমি তোকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি রুশান উত্তর দে”

—“বিশ্বাস কর অর্ষা আমি ইলমাকে সত্যি অনেক ভালোবাসি।আমি অভিনয় করছি না।তুই তো জানিস আমি কেমন।কখনো কষ্ট পেতে দেবো নাহ ইলমাকে।”

অর্ষা রুশানের মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে বলে ওঠে,,,,

—“আমি জানি ভালোবাসিস তুই ইলমাকে কিন্তু ইরহাম জানলে যদি ভুল বুঝে আমাকে।এই ভয় হচ্ছে আমার”

রুশান কিছুক্ষণ ভেবে মলিন হেসে বলে,,,

—“ঠিকই বলেছিস ইরহাম ভাইয়া না মানলে।আরো ইলমা এখনো বেশ ছোট।আরেকটু বড় হলে বলবো তাকে নিজের মনের কথা।”

অর্ষা হাসে।যাক ভাইয়া বুঝলো তবে।অর্ষা চাইছে না রুশানকে ইরহামের কাছে খারাপ বানাতে।ইলমাও ছোট অনেক।এখন চাইছে না অর্ষা এই সব কিছু।সময় আসলে নিজেই ইলমাকে রুশানের হাতে তুলে দিবে।যা আসতে দেরি আছে।রুশানকে নিয়ে কোনো টেনশন নেই অর্ষার।রুশান যদি কাউকে ভালোবাসে তাহলে তাকে কিভাবে আজীবন আগলে রাখতে হয় জানে সে।

—“মন খারাপ হয়েছে তো?”

রুশান উদাস হয়ে বলে,,,

—“সত্যি বলতে হয়েছে কারণ ভালোবাসার মানুষকে পেতে হলে এখনো অনেক সময় অপেক্ষা করতে হবে।কিন্তু আমি চাই না আমার জন্য ইলমার ক্ষতি হোক।তার জন্য আমি অপেক্ষা করতেও রাজি”

—“এই তো আমার ভাই।বুঝেছিস বিষয়টা”

৬৪.

ইরহাম সুস্থ হয়েছে সাতদিন হলো।এই কয়েকদিনে অর্ষার প্রতি তার ভালোবাসা কয়েক গুন বেড়েছে।ইরহাম মোট কথা অর্ষাকে ছাড়া থাকতে পারছে না।তাই তো বেহায়ার মতো অর্ষাকে এখনই বাড়ি নিয়ে আসার কথা বলতে এসেছে আয়রাকে।আয়রার রুমের সামনে এসে দরজায় নক করে ভেতরে ঢোকার অনুমতি নেয় ইরহাম।আয়রা ভেতরে আসতে বলে ইরহামকে।ইরহাম রুমে ঢুকে সোফা বসে পরে।

—“মামনি তোমাকে কিছু বলতে চাই আমি”

—“হ্যাঁ বাবা বল”

—“আমি অর্ষাকে এখনই নিজের কাছে নিয়ে আসতে চাই”

আয়রা মুচকি হাসেন ইরহামের আড়ালে।আয়রা জানতো খুব তাড়াতাড়িই ছেলে এমন কথা বলবে।রেডিও ছিলেন ইরহামের মুখ থেকে এই কথা শোনার জন্য।ছেলে যে বউকে পাগলের মতো ভালোবাসে তা বুঝতে বেগ পেতে হয়নি।আয়রা মুখটা গম্ভীর করে ফেলে।এরপর শক্ত চোখে ইরহামের দিকে তাকিয়ে বলেন,,,

—“কেনো তুমি না অর্ষাকে পছন্দ করো না তাহলে তাকে নিজের কাছে আনতে চাইছো কেনো।থাক সে দূরে যখন সময় আসবে নিয়ে আসবো।তুমি চাইলে ডিভোর্স ও দিতে পারো”

ইরহাম রেগে যায় শেষের কথা শুনে।আয়রা ছেলের রাগ ভালো ভাবেই বুঝতে পারে।ইরহামকে জ্বালাতেই মূলত ডিভোর্সের কথাটা বলা।ইরহাম জ্বলছেও বটে।ইরহাম নিজেকে শান্ত রেখে শান্ত সুরে বললল,,,,

—“আমি ভালোবাসি মামনি অর্ষাকে।ডিভোর্স তো দূরে থাক ওকে ছাড়া এক মুহুর্ত থাকতে পারছি না আমি”

আয়রা ছেলের কথা শুনে ফিক করে হেসে দেয়।ইশফাক সেদওন ঠিকই বলেছিলো।ইরহাম ভালোবাসবে অর্ষাকে পাগলের মতো।হলোও তাই।ছেলেটা পাগলের মতোই ভালোবাসে অর্ষাকে।আয়রা ছেলেকে খোঁচাতে বলে,,,

—“ইরহাম বাপ আমার আপনি যে অন্য একটা মেয়েকে ভালোবাসতেন তার কি হবে এখন”

ইরহাম বুঝে ফেলে মায়ের মজা।সে এবার ঠোঁট প্রশস্ত করে হেসে বলে,,,

—“আমি তার প্রেমেই পরেছিলাম মামনি,তাকে চিনতে ব্যর্থ হয়েছিলাম।তবে এখন জানি সে আমার।আল্লাহ অজান্তেই তাকে আমার করে দিয়েছে।”

৬৫.

সকাল সকাল চৌধুরী পরিবার হাজির আহমেদ বাড়িতে।ইরিনা বেগম ও মৌ রহমান তোড়জোড় করছে সব কিছুর।এক প্রকার হুট করেই আসা ইরহামদের এই বাড়িতে।আয়রা না পেরে সকাল সকালই চলে এসেছে সবাইকে নিয়ে।আসিফ আহমেদ আর আহিন আহমেদ কুশল বিনিময় করে কথা বলছে ইসরাক আর আয়রার সাথে।ইরহামের চোখ দুটো তার প্রেয়সীকে খুঁজে চলেছে।ইলমাও খুঁজে চলেছে রুশান নামক সুর্দশন পুরুষটাকে।

আরিশা রুহান নিচে এসে হাজির।কালকে সারা রাত প্রায়ই ইরহাম অর্ষার সাথে কথা বলেছে কিন্তু বলেনি আজকে তারা আসবে।অর্ষা জানেও না এ বিষয়ে।আয়রা ছেলের মনোভাব বুঝতে পেরে আরিশাকে দিয়ে ইরহামকে অর্ষার রুমে পাঠিয়ে দেয়।

ইরহাম রুমে ঢুকে দরজা চাপিয়ে দেয়।অর্ষার দিকে চোখ পরতেই অজান্তেই হাসি চলে আসে ইরহামের ঠোঁটের কোনে।মেয়েটা বাচ্চাদের মতো টেডি জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে।ইরহাম অর্ষার কাছে এসে ওর পাশে বসে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখতে থাকে।

—❝তুমি আমার বুকের বাম পাশের স্পন্দন!তীলে তীলে গড়ে উঠা মায়াবি বন্ধন।❞

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here