ভালোবাসার রাত পর্ব শেষ

#ভালোবাসার-রাত
#রোকসানা রাহমান
#অন্তিম_পর্ব
” ঘুমাবো মানে? আমরা বাসর করবোনা?””
তিল কথা শেষ করতেই রিদ ঠাস করে থাপ্পড় মেরে বসলো ওর গালে। তিলের মাথার চুল টেনে ধরে বললো,
“” এই মুখ দিয়ে আর একটা শব্দ বের হলে তোর মুখ আমি টেনে ছিড়ে ফেলবো।””
“” ছিলে ফেলুন! আমি তো চাই আপনাল হাতে মলতে। আল এখন তো আপনি আমাল স্বামী,আপনাল হাতে মলা মানে বেহেস্তে যাওয়া!””
রিদ তিলের দিকে তাকিয়ে রয়েছে৷ মনে হচ্ছে বাংলাদেশে সে যে তিলকে রেখে এসেছিলো তার সাথে এর কোনো মিল নেই। চেহারায় বাচ্চামীর কোনো ছোয়া নেই আর কথাই তো নাই ই। এক বছরে তিল এতো বেশি পাল্টে গেলো কি করে? এতো বেশি মেচিউরড লাগছে ওকে। হঠাৎ করে বড়দের মতো এতো গুছিয়ে কথা বলতে শিখলো কিভাবে? আমি তো এমন তিলকেই বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। যে আমাকে নয় আমি তাকে ভয় পাবো! যে আমার কথায় মাথা নিচু করে না থেকে আমার চোখে চোখ রেখে বলবে,আরেকটু বেশি ভালোবাসতে পারোনা? আমি তো তোমার ভালোবাসায় খুন হতে চাই।
“” কি হলো থেমে গেলেন কেন? ছিলবেননা? আমি হেল্প কলবো?””
রিদের ভাবনার সাথে সাথে তিলের চুলে আটকে থাকা হাতটাও ঢিলে হয়ে এসেছিলো। তিল হাতটা সরিয়ে নিজের ঠোটের উপর ছুয়িয়ে বললো,,
“” নিন,ছিলুন। আমিও দেখতে চাই আপনাল ঠোটছিলা বউ কেমন দেখতে হয়।””
তিলের ঠোটদুটো তিল নিজের হাত দিয়ে ছুয়ে ছুয়ে দেখছে। এই ঠোট সে কিভাবে ছিড়বে? যেখানে সে ভালোবাসার স্বপ্ন একে এসেছে এতো বছর।
“” নিন না আমাকে আপন কলে। আমাল তো কোনো অসুবিধে নেই তাহলে আপনাল কেন হচ্ছে??””
“” খুব তো বড়দের মতো কথা বলে যাচ্ছিস তাহলে বুঝতে পারছিস না,তোকে আপন করে নেওয়া মানে আমার অসুখ তোর মধ্যে প্রবেশ করানো?? ভালোবাসি তোকে আমি,আর নিজের ভালোবাসার মানুষকে মৃত্যুর দিকে ফেলতে পারিনা। এতোটাও স্বার্থপর না আমি যে নিজের চাহিদা পুরন করতে গিয়ে তোকে মৃত্যুর দুয়ারে ঠেলে দিবো।””
“” কিন্তু আমি তো চাই আপনাল সাথে মলতে। আপনাল মতো আমাল শলীলেও ভাইলাস প্রবেশ কলুক তবে সেটা HIV নয় আমাল লিদ ভাইয়াল ভাইয়াল ভাইলাস।””
“” তুই কি বলতে চাচ্ছিস?””
“” I need a baby.””
রিদের শান্ত হয়ে আসা চোখদুটো আবার অশান্তের রুপ ধারন করলো।
“” তুই পাগল হয়ে গিয়েছিস তিল। আমারি ভুল হয়েছে তোর কথার জালে পড়ে তোকে বিয়ে করা উচিত হয়নি।””
রিদ মাথার চুল হাতড়াতে হাতড়াতে বিছানায় বসে পড়লো। এমন একটা ভাব যেন দিশাহারা হয়ে পড়েছে, খুব বড় অন্যায় করে ফেলেছে।
তিল রিদের দিকে তাকিয়ে মিস্টি করে হাসি দিয়ে রিদের পাশে বসে বললো,
“” আমাল আপনাল মতো একটা ছোট্ট লিদ চাই। যাকে নিয়ে আমি বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে পালবো।””
রিদ রেগে গিয়েও নিজেকে সামলে নিয়ে তিলের হাত চেপে ধরে আকুতি গলায় বললো,
“” তুই কি চাচ্ছিস, যে এখনো পৃথিবীর মুখ দেখেইনি সে এমন একটা কঠিন রোগ নিয়ে জন্ম নিক? আমার আর তোর মতো সেও কষ্ট পাক?””
“” ব্যতিক্রমও হতে পারে!””
“” মানে?””
“” আপনার সন্তান বলে যে তাকেও এই রোগে ভুগতে হবে এমন তো কোনো কথা নাই। হতেও তো পারে আল্লাহ কোনো মিরাক্কেল কলে দিলো। আপনাকে আমাল কাছ থেকে কেলে নিয়ে তাকে দিয়ে দিলো। আল আমিতো শুনেছি এখন উন্নত টেকনোলজীল সাহায্যে অনেক কিছুই কলা যায়। আমিও চেষ্টা কলবো। আমাল বিশ্বাস আল্লাহ আমাল থেকে মুখ ফিলিয়ে নিবেননা।””
“” তুই বললেই তো আমি বিশ্বাস করে নিবোনা। আমি এসব হতে পারের মধ্যে নেই। অনেক রাত হয়েছে,এখন ঘুমা। কাল সকালে তোর ফেরত যাওয়া নিয়ে অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হবে।””
তিলকে বিছানায় রেখেই রিদ নিচে শুয়ে পড়লো। তিলের ফুপানির শব্দ পাচ্ছে সে। তার ফুপানির শব্দে রিদের ভেতরটা চুরমার করে দিচ্ছে। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে,চোখের পাপড়ি ফেলতে ইচ্ছে করছেনা। পাপড়ি ফেলা মানেই চোখ বেয়ে পানি পড়া। কিন্তু তাকে যে এতো দুর্বল হলে চলবেনা। যে রাতের জন্য রিদ এতোটা বছর অপেক্ষা করেছিলো সে রাতটা আজ তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে,তবুও সে ডাকের সাড়া দিতে পারছেনা সে। এর থেকের কষ্ট আর কি হতে পারে? যাকে কাছে পাওয়ার লোভে অন্য কোনো মেয়ের দিকে সেভাবে তাকানোই হয়নি অথচ আজ তার চাওয়াকেও দুরে ঠেলে দিতে হচ্ছে। এ কেমন পরীক্ষায় ফেলেছে তাকে সৃষ্টিকর্তা?? কি দরকার ছিলো তিলকে এভাবে সামনে আনার? ভাগ্যের বিধান মেনে নিয়ে তো আমি দুরেই চলে এসেছিলাম তাহলে কেন এতো বেশি কষ্ট দিয়ে আমাকে পৃথিবী থেকে নিয়ে যাবে?? আমি কি অজান্তে খুব বেশি পাপ করেছিলাম? আর সেই পাপের শাস্তিই কি এখন পাচ্ছি???
রিদ না চাইতেও চোখের পানি অঝোরে ঝরে যাচ্ছে। রিদ হাতের তালু দিয়ে চোখ মুছে নিয়ে তিলের দিকে তাকালো। পাগলিটা এখনো কাঁদছে! তিলের কান্নার সাথে সাথে হালকা করে কেঁপেও উঠছে। রিদের ইচ্ছে হলো এখনি ওকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে নিতে। চোখের পানি মুছে দিয়ে বলতে,ভালোবাসি বউ,খুব ভালোবাসি তোমাকে!
রিদ তিলের দিক থেকে মুখ সরিয়ে উল্টো হয়ে শুয়ে পড়তেই তিলের আগমন ঘটলো। পেছন থেকে জড়িয়ে নিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললো,
“” একটু ভালোবেসে দিননা প্লিজ! আমি আপনার সন্তানের মা হতে চাই। আপনার স্মৃতি আকড়ে ধরে বাঁচতে চাই।””
রিদ তিলের দিকে ঘুরতেই তিল চোখ বন্ধ করে বললো,
“” আমার একটা ছোট্ট রিদ লাগবে। দিবেনা রিদ????””
এই একটা দিনে তুই আমার সব ইচ্ছে পুরন করে দিলি তিল?? আজ নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে। রিদের ইচ্ছে হলো চিৎকার করে পুরো পৃথিবীকে শুনিয়ে বলতে,আমার তিল আমাকে রিদ বলে ডেকেছে,তুমি করে বলেছে,বউ সেজে দেখিয়েছে তার তো আর কোনো ইচ্ছে অপুর্ন নেই তাহলে এবার সে হাসি মুখে মরতে পারবে। শুধু আরেকটা ইচ্ছে জাগছে, তিলের ঠোটে হাসি ফুটানোর। রিদ উপরের দিকে মুখ করে মনে মনে বললো,তোমার উপর সব ছেড়ে দিলাম,আমার বিশ্বাস তুমি আমার তিলকে কোনো কষ্টের মুখে ফেলবেনা!
রিদ তিলের মুখের দিকে চেয়ে রইলো। তখনো তিল কেঁদেই যাচ্ছে। রিদ ঠোটে হাসি ফুটিয়ে তিলের ঠোটে নিজের ঠোট ডুবিয়ে দিলো। আজ তার সতেরো বছরের অপেক্ষার অবশান ঘটানোর রাত। তার ভালোবাসার রাত। তিলের পুরো শরীরে রিদ তার ভালোবাসার ছোয়া একে দিচ্ছে।
রিদ তিলের পেটে আলতো করে চুমু একে দিতেই তিল খিলখিলিয়ে হেসে উঠে বললো,
“” লিদ ভাইয়া,সুলসুলি লাগছে তো!””
রিদ কাথার নিচ থেকে মাথা বের করে বললো,
“”তোর এমন কঠিন সময়েও সুড়সুড়ি পায়?””
তিলের সাথে রিদও অট্টস্বরে হেসে উঠে।
#সাত বছর পর,
আয়নার সামনে দাড়িয়ে তিল মিটিমিটি হেসে যাচ্ছে। তার কানে এখনো রিদের সেই কথাটাই ভাসছে,,
“” এমন কঠিন সময়েও তোর সুড়সুড়ি পায়?””
লজ্জায় চোখমুখ লাল হয়ে আসলো। আয়নায় স্পষ্ট দেখতে পারছে তার ঠোট লাল হয়ে আসছে। সে রাতে তার রিদ ভাইয়া প্রমান করে দিয়েছিলো উনিও ঠোট লাল হওয়া চুমু খেতে পারেন।
“” তুমি এমন একা একা হাসছো কেন মামনি? আর রুম এমন অন্ধকার করে রাখছো কেন? ঔষুধ খেয়েছো?””
তিল আয়না থেকে চোখ সরিয়ে ঘুরে দাড়ালো। রিদ ভাইয়া তার চাওয়া পুরন করেছে তার কোলে ঠিকই একটা ছোট্ট রিদ হয়েছে।
“” খাওনি তো? আমি জানতাম তুমি ঔষধ খাওনি। এতো বড় হয়েছো অথচ ডিসিপলিন শিখলেনা। তোমাকে যে কে বড় করলো!””
তিল মুচকি হেঁসে তার ছেলে রাতের কাছে এসে নাক টিপে বললো,
“” তোমাল আব্বু,সোনা।””
রাত তিল কে বিছানায় বসিয়ে পানির গ্লাস আর ওষুধ এগিয়ে দিতে দিতে বললো,
“” উফ! তুমি আবার র কে ল বলছো?””
তিল ওষুধ মুখে পুড়ে খানিকটা মন খারাপের ভঙ্গিমায় বললো,
“” আমি বুঝি আবাল র না বলে ল বলেছি? সলি লাত বাবা।””
রাত কোমড়ে হাত বেধে রাগে ফুসতে ফুসতে বললো,
“” উফ! তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবেনা। এখন পর্যন্ত আমার নামটাও বলতে শিখলেনা।””
রাত রাগ দেখিয়ে চলে যেতে গিয়েও আবার ফেরত এসে বিছানায় উঠে বসলো। তিলের শরীরে কম্বলটা দিয়ে দিতেই তিল মুচকি হেসে উঠে।
“” তুমি না লাগ কলেছো?””
“” তো কি হয়েছে? রাগ করেছি বলে তো তোমাকে আদর দিতে ভুলে যাবোনা। তাইনা?””
রাত তার কথা শেষ করে তিলের কপালে চুমু খেতে গিয়েও থেমে গিয়ে গালে চুমু খেয়ে বললো,
“” গুড নাইট আম্মু!””
প্রথম প্রথম রাতের এমন কান্ডে তিল অবাক হলেও এখন আর অবাক হয়না। হয়তো এইটাও ওর আব্বুর থেকে পেয়েছে।
তিলও রাতের কপালে দুটো চুমু খেয়ে বললো,
“” গুড নাইট কলিজা।””
রাত চলে যেতেই তিল মোমবাতিটা জ্বালিয়ে কাগজ কলম নিয়ে ভাবনায় ডুব দেয়।
তুমি আমাকে তোমার কষ্টের মুহুর্তগুলো থেকে আমাকে বঞ্চিত করলেও আমি আমার সুখের মুহুর্ত থেকে তোমাকে বঞ্চিত করবোনা রিদ। আমি জানি আমার চিঠির প্রতিটা অক্ষরের মধ্যে তুমি আনন্দ পাও,ভালোবাসার ছোয়া পাও,তোমার কষ্টগুলোকে কিছুক্ষনের জন্য হলেও ভুলে থাকতে পারো। আর আমিতো তোমার সেই হাসি আমার কল্পনায় দেখতে পাই। তুমি নাই বা আমার চিঠির জবাব দিলে তাতে কি আমি আমার সুখের দিনগুলোর প্রত্যেকটা সেকেন্ডের কথা তোমাকে লিখে যাবো যতদিন আমি বেঁচে আছি আর আমার হাত লিখতে পারবে ততদিন তোমার তিল তোমাকে লিখবে। আমার এই চিঠির মধ্যে তুমি বেঁচে থাকবে। হয়তো তুমি আমার থেকে দুরে আছো তাতে কি? তোমার দেওয়া সেই রাতের ভালোবাসার পুর্নতা হিসেবে আমাদের সন্তানকে এনেছি আমি। আর পুর্নতাকে বাস্তবে রুপ হিসেবে ওর নামও রেখেছি রাত। তোমার আমার ভালোবাসার রাত!
জানো,রাত দেখতে যেমন তোমার মতো হয়েছে রাগও তোমার মতোই পেয়েছে। উঠতে বসতে আমাকে ধমকাবে। মাঝে মাঝে তো মনে হয় আমি ওর মা না ওই আমার বাবা। তবে তোমার মতো ওর সামনেও আমি র বলতে পারিনা। সত্যিই কি পারিনা নাকি ইচ্ছে করে বলিনা। বড্ড ভয় হয় ওকে রাত বলে ডাকতে যদি তোমার মতো ওকেও হারিয়ে ফেলি? সেদিনের সেই ভয়ংকর স্বপ্নের ব্যখ্যা আমি পেয়েছি। মনে আছে,ছোটবেলা একবার তুমি রেগে বলেছিলে,যেদিন তুই ‘র’ বলতে শিখে যাবি সেদিন তুই আমাকে হারিয়ে ফেলবি? আমার কেন জানি মনে হয় হসপিটালে প্রথম তোমার সামনে ‘র’ বলাতেই আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি। আর এই জন্যই হয় তো তুমি আমাকে স্বপ্নে এসে বলেছিলে আমি তোমাকে মেরে ফেলেছি। ব্যখ্যা কতটা সত্যতা আছে আমি জানিনা কিন্তু আমার দিক থেকে ১০০% সত্যি মনে হচ্ছে। তাই রাতের সামনেও ‘র’ বলতে সাহস পায়না। এখন তো ওই আমার বেঁচে থাকার সম্বল। ওর মধ্যেই আমি তোমাকে খুজে পাই। ৬ বছরের বাচ্চাও যে এতো ভালোবাসতে পারে আমি জানতামনা। হয়তো তোমার অপুর্নতাকে পুর্নতা করতেই ওর মধ্যে আল্লাহ একটু বেশি ভালোবাসা ঢেলে দিয়েছে।
“” তুমি রাত জেগে আবার লিখালিখা করছো? তুমি এতো দুষ্টু কেন,আম্মু? আমার কথা একটুও শুনোনা। আড়ি!””
তিল পাশ থেকে নিজের ফোনটা নিয়ে তাৎক্ষনিক রাতের একটা ছবি তুলে নিলো নিজের ফোনে। রিদকে তো দেখাতে হবে তার ছেলে কেমন অভিমান করতে পারে। চিঠির সাথে এই ছবিটা পাঠাতে হবে। সেও দেখুক তার অভিমানি ছেলের অভিমান।
“” তুমি আমার রাগ না ভাংগিয়ে ছবি তুলছো? যাও তোমার সাথে কথা নাই।””
রাত চলে যেতে নিলেই তিল উঠে এসে ওকে কোলে তুলে নিলো।
“” এইটুকুন বাবুল এতো লাগ?””
“” এইটুকুন বলছো কেন? তুমি জানো আমার বয়স কত?””
“” কত?””
“” ৬ বছর,৩ মাস,৪ দিন,১৮ ঘন্টা।””
“” বাহ! তাহলে তো তুমি অনেক বল হয়ে গেছো সোনা। তা এতো লাতে আমাল লুমে আসাল কালন কি জানতে পালি?””
“” তোমাল সাথে ঘুমুতে ইচ্ছে করছে।””
তিল ছেলেকে নিজের বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে নিজের শরীরে কম্বল টেনে দিয়ে রাতের দিকে তাকালো।
তোমার ছেলের কিছু হতে দেইনি আমি। ডক্টর বলেছে তেমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নাই তবুও আমি রেগুলার চেকআপ করাচ্ছি। তবে আমার এখন তোমার মতো কম্বল ছাড়া ঘুম আসেনা। রাতে খুব শীত লাগে। তোমার ছেলে তো মাঝে মাঝেই বলে, রাত হলেই তোমার শরীর এতো গরম হয়ে যায় কেন,আম্মু? আমি তখন মুচকি হেঁসে বলি,তোমার আব্বুকে মিস করি যে তাই।
আল্লাহ হয়তো আমাকে আর বেশিদিন তোমার থেকে দুরে রাখতে চাননা। তুমি কেমন আছো আমি জানিনা শুধু এটাই জানি খুব শীঘ্রই তোমার সাথে আমার দেখা হচ্ছে।
তিল আবেশে চোখটা বুঝে নিলো। তার এখন ঘুম পাচ্ছে। শান্তির ঘুম যে ঘুমে সে তার রিদ ভাইয়াকে নিয়ে হারিয়ে যায় আরেকটা ভালোবাসার রাতের আশায়।
“” আম্মু,উঠো,ও আম্মু উঠোনা।””
তিল গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হঠাৎ রাতের ডাকে ধরফরিয়ে উঠে বললো,
“”কি হয়েছে,লাত। কোনো খালাপ স্বপ্ন দেখেছিস?””
“” নাতো,ভালো স্বপ্ন। তোমার ছেলের বউ আসছে। আমাদের এখনি যেতে হবে।””
“” ছেলের বউ?””
“” হুম। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও। এখনি বের হতে হবে নাহলে সন্ধ্যা আমার উপর খুব রাগ করবে।””
“” সন্ধ্যাটা আবাল কে?””
রাত বিছানা ছেড়ে নিজের জামাটা পাল্টাতে পাল্টাতে বিরক্ত নিয়ে বললো,
“” উফ! তুমি দেখি কিছু জানোনা,মামনি! সন্ধ্যা হলো আমার বউয়ের নাম।””
“” তোর বউ? কই পেলি?””
“” স্বপ্নে। মাত্রই তো স্বপ্নে এসে বললো,আমি যদি এখন না যায় তাহলে নাকি ও ওর তিলে আমাকে চুমু খেতে দিবেনা।””
তিল অবাক হয়ে বললো,
“” তিল?””
“” হুম,তোমার মতো ওর ঠোটের কোনেও তো তিল আছে,কিন্তু তোমারটা ডানপাশে আর ওর টা বা পাশে।””
রাত নতুন জামা পড়ে তিলকে বিছানা থেকে নামাতে নামাতে বললো,
“” তাড়াতাড়ি করো। ও তো রেগে যাবে।””
“” কিন্তু আমরা যাবোটা কোথায়?””
“” রিমা ফুপির বাসায়।””
তিল কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওর ফোনটা বেজে উঠে। স্ক্রিনে রিমার নাম্বার ভেসে উঠেছে। তিল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে সিকান্দার সাহেব হাসিহাসি মুখে বললো,
“” তিল আপামনি,আমাদের ঘরে রাজকন্যা চলে এসেছে। রিমা আর বাবু দুজনেই সুস্থ। আপনারা সকালেই চলে…..””
সিকান্দারের বাকি কথা তিলের মাথায় ঢুকছেনা। নিজের ছেলে রাতের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলো
#সমাপ্তি
বিঃদ্রঃ [ আমি হয়তো চাইলে আপনাদের ইচ্ছেতে রিদকে সুস্থ করে দিতে পারতাম কিন্তু এতে আপনারা ক্ষনিকের জন্য খুশি হলেও পরে এটা নিয়েই মজা করতেন। তবে আপনাদের ইচ্ছের অক্ষুন্নও করিনি কিন্তু,রিদকে মারিওনি আবার বাচিয়েও রাখিনি😜😜 সে আছে তার মতো করে ইউকে তে চিকিৎসাধীন☺☺ হয়তো তিলের পাঠানো চিঠি পরছে। বাকিটা আপনারা আপনাদের কল্পনা দিয়ে সাজিয়ে নিন❤❤ আর হ্যা,রিদ পাগলীদের বলছি,রিদের মতো তোমাদের আপনজনদের যাতে না হারাও সেজন্য ব্লাড দেওয়া এবং নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। গল্পের ভুল ত্রুটি ক্ষার চোখে দেখবেন। এন্ডিংটা কেমন ছিলো জানাবেন প্লিজ। আপনাদের ভালোবাসা মাখানো কমেন্ট পড়ার অপেক্ষায় রইলাম,খারাপ ভালো দুটোই বলবেন। যাতে আমার নেক্সট গল্পে কাজে লাগাতে পারি। এতো ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার জন্যা তোমাদের সবাইকে এতোগুলো ❤❤❤❤]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here