ভালোবাসার_নীল_জোছনা পর্ব ৮
#আরিয়ান_অরণ্য
লজ্জা, বিস্ময় আর অপমানে কালো হয়ে গেল রাহুলের মুখ।
সেদিনের পর দিয়া আর কলেজে আসেনি। অভি রাহুলকে জানালো দিয়ার বাবার বদলির চাকরি, ফ্যামিলি নিয়ে অন্য শহরে চলে গেছেন তিনি। কিছুদিন খুব কষ্টে কাটল রাহুলের, ক্লাসে যেতো না, মিশতো না কারো সাথে। আস্তে আস্তে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলো। কিন্তু এরপর আর প্রেম করাতো দূরে থাক, কোনো মেয়ের সাথে কথাও বলতো না। দিয়ারও কোনো খোঁজ রাখেনি সে আর।
যথাসময়ে রাহুল ভালো রেজাল্ট নিয়ে পাশ করে বের হলো। এরপর তার বাবার কোম্পানিতে যোগ না দিয়ে নিজে থেকে কিছু করার ইচ্ছাতে এক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জবে ঢুকল। সেখান থেকেই বলা হলো, তাদের আমেরিকার অফিসে তাকে পাঠানো হবে সাতদিনের মধ্যে। এর মধ্যে রাহুলের বাবা মা ঠিক করলেন ছেলেকে একা আমেরিকা পাঠাবেন না, ছেলে সেখানে গিয়ে বিগড়ে যেতে পারে। ঠিক হলো ছেলেকে বিয়ে দিয়ে দিবেন সাতদিনের মধ্যে, এরপর ছেলে আর ছেলের বউকে একসঙ্গে পাঠাবেন বিদেশে। এখন কোনো অনুষ্ঠান করা হবে না, রাহুল একমাস পর দেশে ফিরলে তখন বড় করে অনুষ্ঠান করবেন। সমস্যা হলো এতো তাড়াতাড়ি উপযুক্ত পাত্রী কোথায় পাওয়া যাবে? তারও সমাধান করলেন রাহুলের বাবা। তার এক বন্ধুর মেয়েকে পছন্দ করে রেখেছেন, রাহুল মত দিলেই বিয়ে হবে।
রাহুল জানালো বাবা মার পছন্দই তার পছন্দ। সে মেয়েকে দেখা বা তার সাথে কথা বলতে চাইলো না বিয়ের আগে, দিয়ার ঘটনার পর তার মনে মেয়েদের প্রতি এক রকম বিতৃষ্ণা জন্মে উঠেছিল।
যথাসময়ে বিয়ে হয়ে গেল। খুব বড় কিছু হলো না, মেয়েদের বাড়িতে কি একটা সমস্যা ছিলো, তাই বিয়ে হলো রাত আটটার পর। বর কনে আলাদা ঘরে ছিলো, কেউ কাউকে দেখলো না। শুধু বর শুনলো কনের নাম আফসানা কবির, আর কনে শুনলো বরের নাম ইশতিয়াক আহমেদ।
এদিকে দিয়াও একদিন হুট করে শুনলো তার বিয়ে, বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে। সে তো বিয়ে করবেই না, পুরো ছেলে জাতটাকেই সে ঘিন্না করে। অনেক হৈ চৈ, কান্নাকাটি, রাগারাগির পর অবশেষে রাত আটটায় সে রেগে গিয়ে বিয়েতে মত দিলো, কিন্তু রাগের মাথায় এও বলল বরের চেহারাই সে দেখবে না, সংসার করাতো দূরে থাক। যাই হোক, বিয়ে হয়ে গেল। বর অন্যরুমে ছিলো বলে তার দেখা হলো না বরের সাথে। দিয়াকে এরপর জোর করে বাসর ঘরে পাঠানো হলো। এবং সেখানেই একটু পর ঢুকল রাহুল। রাহুলের ভালো নাম যে ইশতিয়াক আহমেদ জানতো না দিয়া, যেমন রাহুল জানতো না দিয়ার ভালো নাম আফসানা কবির। (চলবে)