ভালোবাসা ভালোবাসা পর্ব ১

ভালোবাসা ভালোবাসা
পর্ব – ০১
লেখিকা > জান্নাতুল ইসলাম মাওয়া

সোফায় বসে আছে অয়ন।বাবা মায়ের জোড়াজুড়িতে বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে আসতে হলো।অয়ন বিয়েতে রাজি হচ্ছিলো না।বাবা মায়ের প্রতিদিনের জোড়াজুড়ি চিল্লাচিল্লি বন্ধ করার জন্য রাজি হওয়া।পর্দা আড়াল থেকে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে এগিয়ে আসছে অধরা।চায়ের কাপ অয়নের সামনে দিতেই অয়ন অধরার দিকে তাকায়। অধরা কে দেখে অয়ন চমকে উঠে।হাত কাঁপছে অয়নের চায়ের কাপ হাতে নিলো সাথে সাথে কাপও কাঁপছে।অধরা অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো কিছুক্ষণ। ছেলেটার কোনো সমস্যা আছে মনে হচ্ছে। মেয়েদের ভয় পায় মনে হচ্ছে।অধরা পাশের সোফায় বসলো।অয়নের কপাল বেয়ে ঘাম ঝরছে। এই শীতে অয়ন কে ঘামতে দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়।অধরার বাবা অয়নের দিকে তাকিয়ে বললো,অয়ন তুমি ঠিক আছো?

-আমি ঠিক আছি।

-তুমি এতো ঘামছো কেনো?

-আসলে আমার অনেক গরম লাগছে।

অয়ন ঘাম মুছে মুচকি হাসি দিয়ে অধরার দিকে তাকায়।অধরা বিরক্তিকর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ইচ্ছে করছে ছেলেটা কে মেরে বাসা থেকে বের করে দেই।দেখে মনে হচ্ছে বোকা। কি অদ্ভুত এই শীতে সবাই কাঁপে আর ওনি ঘামছে আজব মানুষ।

অয়নের বাবা পাশ থেকে বলে উঠলো। অয়ন অধরার সাথে আলাদা করে কিছু বলবে?

-বাবা আমার বলার মতো কিছু নেই।

-তোমার মেয়ে পছন্দ হয়েছে?

অয়ন মাথা নিচু করে লজ্জায় চুপ করে আছে।অধরা কে তার পছন্দ হয়েছে। অধরা কে সে আজকে প্রথম দেখে নি।অধরা তার চেনা একজন প্রিয় মানুষ।

অয়নের বাবা আবারও ও প্রশ্ন করলো।অয়ন এবার মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো।বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করলেন।

—-

বাসর ঘরে অধরা ঘোমটা টেনে বসে আছে।অসহ্য বিরক্ত লাগছে তার।পরিবারের চাপে বিয়েতে রাজি হতো হলো।অয়ন ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়।দরজা আটকানোর শব্দে অধরা চমকে উঠে।ঘোমটা সরিয়ে দরজার দিকে তাকায়।অয়ন মুচকি হাসি ঠোঁটের কোনে রেখে অধরার পাশে বসতে আসলেই অধরা চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো, আপনি এখানে বসবেন না?

অধরার আচরণে অয়ন স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।এমন ব্যবহার করার কারন ঠিক বুঝছে না অয়ন।অয়ন ঢোক গিলে বললো,আমি তাহলে কোথায় বসবো?

-তা আমি জানি না।তবে আপনি এই রুমে ঘুমাবেন না।

-মানে,আপনি কী পাগল?আমি তাহলে কোথায় ঘুমাবো?

-তা আমি জানি না।আপনি এই রুমে ঘুমাবেন না।অন্য রুমে ঘুমান গিয়ে।

-কিন্তু কেনো?

-কারণ আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবো না।

অধরার কথায় অয়ন নিশ্চুপ হয়ে যায়।পাশে থাকা চেয়ারে বসলো।কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে অধরা কে প্রশ্ন করলো,কেনো মেনে নিতে পারবেন না?

-কারণ আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি।

-তাহলে আমাকে কেনো বিয়ে করলেন?

-আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই নি।ভাইয়া জোর করে বিয়ে দিয়েছে।ভেবেছিলাম আপনার সাথে আলাদা করে কথা বলে সবটা বুঝিয়ে বলবো।কিন্তু ভাইয়া সেই সুযোগ দিলো না।

অয়ন চুপচাপ বসে রইলো।এই মূহুর্তে ঠিক কি করা উচিৎ অয়ন বুঝতে পারছে না।অন্য রুমে ঘুমানো সম্ভব না।বাসায় মেহমান বলতে খালা মনি কাল সকালেই চলে যাবে।বাবা,মাও নানান প্রশ্ন করবে তখন কি জবাব দিবো।অয়ন অধরার দিকে তাকায় দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,আপনি উপরে শুয়ে পড়েন।আমি ফ্লোরে শুয়ে পড়বো।

-আপনি কী পাগল?

-কেনো?

-এই শীতে কিভাবে আপনি ফ্লোরে ঘুমাবেন? আপনাদের বাসায় কি অন্য কোনো রুম নেই?

-অবশ্যই আছে।কিন্তু আমি পারবো না অন্য রুমে ঘুমাতে।একটা কথা বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে আমার ছিলো না।আমার আম্মু অসুস্থ বিয়েটা আম্মুর জন্য করতে হয়েছে।আম্মুর ইচ্ছে ছেলের বউ দেখে মরবে।কেউ যেনো বুঝতে না পারে আমাদের মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই।সবার সামনে আমরা দুজন দুজন কে অনেক ভালোবাসি এমন ভাব নিয়ে থাকবে।

-আমি পারবো না।

-আমি তোমার কাছে হাত জোড় করে বলছি।আমার আম্মু কে কোনো ভাবেই কষ্ট দিবে না।আমার আম্মু এই বিষয়টা জানলে কষ্ট পাবে অনেক।

-কিন্তু আপনি ফ্লোরে ঘুমাবেন?

-চিন্তা করবে না কিছু হবে না আমার।

অধরা উঠে দাঁড়ায় দরজা খুলে অয়নের আম্মুর রুমের দরজায় এসে দাঁড়ায়, আম্মু আসবো?

মিসেস সাহেয়া শুয়ে আছে। অধরার ডাকে চোখ খুলে তাকায়,ভেতরে এসে বস।অধরা ভেতরে এসে বসলো।

-আমার ছেলেকে তোমার কেমন লাগছে?

-ভালো।

-আমার ছেলে কিন্তু অনেক রাগী। অনেক রাত করে বাসায় ফিরে এখন বউ চলে এসেছে।এখন তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসবে।তোমার উপর সব দ্বায়িত্ব দিয়ে আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাবো।

অধরা হাসি দিয়ে বললো, শুধু ঘুমালে হবে না।

-কেনো?

-টাইম টু টাইম ঔষধ খেতে হবে,খাবার খেতে হবে।কথা না শুনলে বকা শুনবে কিন্তু। আমি যা বলবো তাই করতে হবে।যদি কথা না শুনো তাহলে শাস্তি আছে।এই শীতে জানালা কেনো খুলে রাখছো?

-শীতের বাতাস ভালো লাগে।

অধরা কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে জানালা বন্ধ করে দিলো।কম্বল টেনে দিয়ে চলে আসে। অয়ন দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিলো।অধরার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছুটা অবাক হয়ে যায় অয়ন।কিছুক্ষণ আগে অধরা এক কথা বলছিলো।কিন্তু এখন সে এসব কেনো করছে?কেনো মিথ্যে মায়াতে জড়াচ্ছে?অধরা রুমে গিয়ে বিছানা গুছিয়ে কম্বল নিচে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে পড়ে।অয়ন দরজা বন্ধ করে ফ্লোরে বিছানা করে কম্বল নিয়ে শুয়ে পড়ে।অধরা শুয়ে থেকেও মনে শান্তি পাচ্ছে না।নিজেকে অপরাধী অপরাধী মনে হচ্ছে। অধরা অয়নের দিকে তাকায়,এই শীতের মধ্যে লোকটা ফ্লোরে শুয়ে আছে।যদি অসুস্থ হয়ে যায় তাহলে তো আমার জন্য অসুস্থ হয়ে যাবে। তখন নিজেকে কিভাবে ক্ষমা করবো।এই যে শুনেন।

-জ্বি,বলেন?

-আপনি বিছানায় এসে ঘুমাতে পারেন।তবে মাঝে একটা বিরাট দূরত্ব থাকবে।

-সমস্যা হচ্ছে না আমার।আমি ঠিক আছি।আপনি ঘুমাতে পারেন।

-দেখুন আপনি অসুস্থ হলে আমার আপনাকে সেবা করতে হবে।আমি পারবো না আপনার সেবা করতে।

-আমার সেবা করতে হবে না আপনার। আমি নিজেকে সামলাতে পারবো।

কম্বলের নিচে একবার ঢুকলে বের হতে ইচ্ছে করে না।এই লোকটা নাম্বার ওয়ান সয়তান।অসুস্থ হয়ে আমাকে দিয়ে সেবা করাতে চাচ্ছে। তা তো আমি হতে দিচ্ছি না।অধরা নেমে কাঁপতে কাঁপতে অয়নের শরীর থেকে কম্বল সরিয়ে দিলো।অয়ন বিরক্তি নিয়ে বললো,সমস্যা কী আপনার?

-আমি বলেছি উপরে ঘুমাতে। তার মানে আপনি উপরে ঘুমাবেন।

-আপনার সমস্যা হচ্ছে কোথায় বুঝছি না।

-আমি আপনার সেবা করতে পারবো না?

-আপনাকে আমার সেবা করতে কে বলছে?আমি তো আপনাকে একবারও বলিনি আমার সেবা করতে। তাহলে বারবার এক কথা বলছেন কেনো?

-আপনি বলছেন না ঠিক আছে।কিন্তু আপনি সেই ব্যবস্থা করছেন। যাতে আপনি অসুস্থ হয়ে যান তারপর আমি আপনার সেবা করি।আপনি কি ভাবছেন আমি বোকা?

অধরার কথা শুনে অয়ন কপালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।মেয়েটা কে যতোটা শান্ত ভেবেছি ততোটা শান্ত না।কপাল কুঁচকে অয়ন তাকিয়ে বললো, আপনি সত্যি বোকা?

-আমি বোকা না আপনি বোকা।

অয়ন কথা বাড়ালো না।মেয়েটা কে যা বলে তার উল্টো মানে খুঁজে বের করে। তাই অয়ন চুপচাপ তার কথা মেনে নিচ্ছে।
-আচ্ছা আমি বোকা।আপনি যা বলবেন তাই হবে।

অধরা কম্বল বিছানায় তুলে নেয় দুজনের মাঝে একটা কোলবালিশ রাখলো।

-দেখুন এবার ঠিক আছে। আপনি এখন ঘুমাতে পারেন।তবে একটা কথা কোনো রকম চালাকি আমার সাথে করবেন না।যদি করেন তাহলে তার ফল ভালো হবে না।

-আমি কোনো রকম চালাকি করবো না।আমার ঘুম আসছে প্লিজ ঘুমাতে দেও।

কম্বল টেনে দুজন ঘুমিয়ে গেলো।শীতের সকাল মানেই আলসে হয়ে শুয়ে থাকা।ইচ্ছে করে না উঠতে পাখির শত কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভেঙে গেলেও আলসে হয়ে শুয়ে থাকে।অধরা জানালার পর্দা সরাতেই শীতের রোদ এসে পড়লো অয়নের চোখে মুখে। যদিও রোদ অয়নের ভালো লাগছিলো আরাম লাগছে আরো বেশি।সূর্যের আলো চোখে পড়তেই অয়ন চোখ খুলে তাকায়।চোখ খুলে তাকিয়ে অধরা কে দেখে অয়ন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।চোখের পাতাও নড়ছে না।অধরা সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে,আপনি মুর্তি মনে হচ্ছে। এভাবে হা করে তাকিয়ে আছেন কেনো?অয়ন কিছু বললো না।অধরা বিরক্ত হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।অয়ন গালে হাত দিয়ে ভাবছে,একটা মেয়ে এতোটা সুন্দর কিভাবে হতে পারে?নীল শাড়িতে এতোটা সুন্দর লাগছে। আমি প্রেমে পড়েছি প্রিয়তমা।অয়ন উঠে টুথপেস্ট হাতে নিয়ে বারান্দায় আসলো।বারান্দায় ছিলো গোলাপ গাছ।অয়ন রোজ গাছে পানি দিতো।হাতে বোতল নিয়ে দেখলো গাছে পানি দেওয়া আছে।অয়ন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।দাঁত ব্রাশ করতে করতে ভাবছে,গাছে পানি দিলো কে?আম্মু,উঁহু আম্মু হবে না।কারণ কখনো আমার রুমে আসে না দরকার ছাড়া।আসলেও গাছে পানি দিতে যাবো কেনো?তাহলে আব্বু,না আব্বুও না।অয়ন ফ্রেস হয়ে খাবার টেবিলে যায়।অধরা হাসি মুখে সবাই কে খাবার দিচ্ছে।রুটিতে কামড় দিতে দিতে অধরার দিকে একবার তাকিয়ে নিলো অয়ন।আজকের রান্না কি ওনি করছেন?

মিসেস সাহেয়া খেতে বললেন।হ্যাঁ,তোর বউ রান্না করেছে।

-রান্না জিবনে করেছে বলে মনে হচ্ছে না।

-খাবার তো মজা হয়েছে।তাহলে এমন কথা বলছিস কেনো?

-মজা হয়েছে কোথায়?লবন বেশি রুটি পুড়িয়ে ফেলছে।এগুলো খাবার মানুষে খায়।

অধরা কোমরে হাত দিয়ে এগিয়ে এসে বললো,এগুলো মানুষে না খেলে আপনি খাবেন।

-কেনো?আমি কী মানুষ না?

-মনে হচ্ছে না।কারণ মানুষ হলে আমার চোখের সামনে থেকে আমার নামে মিথ্যে বলতে পারতেন না।

অয়ন কিছু বললো না।চুপচাপ খেয়ে উঠে সোজা রুমে চলে গেলো।বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে অয়ন।পেছন থেকে অধরা এসে বললো,আপনার চা।চা দিয়ে অধরা চলে যাচ্ছে। অয়ন বলে উঠলো,তোমার হাতের রান্না সত্যি অসাধারণ।

-তাহলে বললেন কেনো এসব কথা?

-তোমাকে রাগানোর জন্য।

-আমাকে রাগিয়ে আপনার কী লাভ?

-তুমি রাগলে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।

অয়নের কথায় অধরা হালকা কেঁপে উঠে। অধরা কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। অয়ন চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে মুচকি হাসছে।বাহ! চায়ের স্বাদ ভালো। ভালোই রান্না পারে দেখা যাচ্ছে। আজকে সকালই রোদ উঠে গেছে।অন্য দিন কুয়াশায় ঢাকা থাকে পুরো শহর।হঠাৎ ফোনের রিংটোন বাজলো অয়ন রুমে প্রবেশ করে। চায়ের কাপ টেবিলের উপর রেখে অধরার ফোন হাতে নিলো।অধরা দৌড়ে এসে দেখলো অয়নের হাতে ফোন।রেগে অয়ন কে বললো,আমার অনুমতি ছাড়া ফোনে কেনো হাত দিছেন?অয়ন বোকার মতো দাঁড়িয়ে আছে।কিছু বলার আগেই অধরা হাত থেকে ফোন নিয়ে বারান্দায় চলে যায়।ফোন রিসিভ করে বললো,

-হ্যালো?কেমন আছো?

-ভালো, তুমি?

-কি করছো?

-তোমার কথা ভাবছি।

-সত্যি?

-হ্যাঁ।

-আচ্ছা এখন রাখছি। আমার কাজ আছে।

-আচ্ছা বাই।

-বাই।

অধরা রুমে আসতেই অয়ন জিজ্ঞেস করলো,কে কল করেছে?

অধরা বাঁকা হেসে বললো,আপনি জেনে কি করবেন?আমি কার সাথে বলবো না বলবো সেইটা আপনাকে বলতে যাবো কেনো?

-তা ঠিক আমাকে বলার কোনো প্রয়োজন নেই।কিন্তু তুমি এইটা মাথায় রেখো তুমি এই বাড়ির বউ।এই মান, সম্মান যেনো নষ্ট না হয় সেইদিকে নজর তোমাকেই রাখতে হবে।তুমি এখন বিবাহিত তোমার সংসার আছে।

-কিসের বিয়ে?আমি এই বিয়ে মানি না।আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মানি না।আমার কোনো সংসার নেই।আমি এই বাড়ির মান,সম্মান কথা কেনো চিন্তা করবো?আপনি আমার জিবনটা নষ্ট করেছেন।

-আমি কিভাবে নষ্ট করলাম?

-আপনার জন্য আমার ভালোবাসার মানুষ কে কষ্ট দিয়েছি।

অয়ন কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে গেলো।এই অসহ্য যন্ত্রণা কি তার পাওনা ছিলো।বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে না থাকা সত্বেও বিয়ে করেছে।সংসার জিবন যে এতোটা ভয়ংকর জানা ছিলো না।অয়ন দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকায়, দশটার ঘরে কাটা ঘুরছে।টেবিলের উপর থেকে মোবাইল হাতে নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে অয়ন।পেছন থেকে অধরা প্রশ্ন ছুড়ে মারলো,কোথায় যাচ্ছেন?

-আপনার না জানলেও হবে।

-আপনি শীতের কিছু নিচ্ছেন না। আমি এনে দিবো?

-দরকার নেই।

-শুনেন?

-বলুন?

-বাহিরে অনেক ঠান্ডা পড়ছে।বাতাস অনেক কাজ না থাকলে বাসায় থাকেন।

-আপনি আমাকে নিয়ে কেনো ভাবছেন?আমাকে নিয়ে আপনার ভাবতে হবে না।

-শুনেন?

অয়ন জোরে নিশ্বাস নিলো।এবার ঘুরে তাকিয়ে বললো,সমস্যা কী?

-সমস্যা একটাই আপনি এখন বাহিরে যাবেন না।

-বাসায় থেকে কী করবো?আপনার কথা কেনো শুনবো?

কাজল কালো চোখগুলো দিয়ে গভীর দৃষ্টিতে তাকালো অধরা।অধরার এই দৃষ্টি অয়নের হৃদয়ে কম্পন সৃষ্টি হয়।অয়ন সাথে চোখ ফিরিয়ে নেয়।কেনো এই অনূভুতি গুলো আমার।অধরা অয়নের সামনে গিয়ে শান্ত কন্ঠে আস্তে করে বললো,

-যদি কথা না শুনেন আম্মুর কাছে মিথ্যে বলে বকা শুনাবো।

-মিথ্যে কেনো বলবেন।বললে সত্যি কথা বলবেন।

-কারণ আপনি কথা শুনছেন না।

-আপনার যা ইচ্ছে করেন।আমি গেলাম।

অয়ন চলে যেতে চাইলে। অধরা হাত চেপে ধরে। অয়ন ভ্রু কুঁচকে অধরার দিকে তাকায়।হাত ধরলেন কেনো?

-আপনি যাবেন না তাই।

চলবে,,,
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here