ভালোবাসি হয়নি বলা পর্ব ২২

#ভালোবাসি হয়নি বলা
#সাদিয়া নওরিন

পর্ব— ২২

বাস আপনগতিতে আকাবাকা পথ বেয়ে ছোটে চলছে.. রোদেলা বাইরের মনোরম পরিবেশ দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ল.. হাসনাত সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে আলতোকরে তার মাথাটা নিজের কাধের ওপর রাখলো.. তারপর আলতো করে তাকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিল.. জানালার পর্দাটা টেনে দিল যাতে রোদেলার ঘুম না ভাঙ্গে..
রোদেলার মিষ্টি চেহারাটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে সে.. যোগলব্রু, ছোট কিউট নাকটা যেন সকল সৌন্দর্যের কেন্দ্রবিন্দু.. রোদেলা ঘুমের ঘোরে হালকা বাকা হয়ে মুখটা হাসনাতের দিকে দিয়ে নিজেকে হাসনাতের গায়ের সাথে মিশিয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়লো..
হাসনাতের হার্ডবিট ক্রমে বাড়তে আরম্ভ করলো.. সামনে রোদেলার সদ্যপ্রস্ফূরিত পদ্মের মতো গোলাপী ঠোট.. আর তার পাশে সেই কালো তিলকা!!! হাসনাত ওফ.. করে বুকের বাপাশে হাত রাখলো.. হার্ডটা যেন বেরিয়ে আসবে এখুনি!! নিজের হরমোনগুলো সবএকসাথে চাঙ্গা দিয়ে ওঠছে তার!!! হাসনাত পরপর কয়েকবার ঢুক গিয়ে চোখ সরিয়ে অন্যদিকে তাকালো.. বেহায়া চোখগুলো বারবার রোদেলার দিকে চলে যাচ্ছে.. গলার ওপর থেকে ওড়না সরতেই লালের পাশে সাদা গলাটা দৃষ্যমান হতে লাগলো তার..
হাসনাতের অবস্হা খুবই শোচনীয়.. একটা মেয়ে এভাবে কিভাবে ঘুমায়!!! এতোটা নিশ্চিতে কিভাবে ঘুমায় হাসনাতের মাথায় আসে না.. এইজন্য আন্কেল একা কোথায় পাঠায় না তার এই বেকুব কুম্ভকর্ন মেয়েকে.. হাসনাত আস্তে আস্তে রোদেলার ওড়নাটা তার গায়ে পেচিয়ে দিল.. হাসনাতের হাতটা অসম্ভবভাবে কাঁপতে লাগলো..সে বড়বড় নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করলো.. তারপর মৃদু হেসে রোদেলার দিকে তাকালো.. ঘুৃমন্ত রোদেলা সত্যি অদ্ভূত সুন্দর…
অন্যদিকে তামান্নার চোখে কোন ঘুম নেয়.. অতিরিক্ত এক্সাইটেডমেন্ট তাকে ভর করেছে. আজ অনেকদিনপর তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা হবে ।। সে এখানেই জব করে.. ফেইসবুকে পরিচয় তাদের…আসলে অনেকে বলে ফেইসবুকে রিয়েললাভ হয় না কিন্তু এইটা পুরোপুরি সত্য নয়..আসলে রিয়েললাভটা মনের ওপর..নিজের পাটনারের ওপর… কে কতোটা লয়েল সেইটার ওপর নির্ভর করে.. তামান্নার সাথে এই দেড়বছরে ৪ বার দেখা হয়েছে তার বিএফ এর.. তবে তামান্না রোদেলাকে বলে নি তার এই রিলেশনের কথা.. কারন রোদেলা এইসব প্রছন্দ করে না তাই. তার ইচ্ছে আজকে দুইজনের সাথে দুইজনকে পরিচয় করিয়ে দিবে..

রাঙ্গামাটি পৌঁছে রোদেলার ঘুৃম ভাঙ্গলো. সে আড়মোড় ভেঙ্গে এদিক ওদিক তাকিয়ে কোথায় আছে তা বোঝতে তার কিছুসময় লেগে গেল.. হঠাৎ তার নাকে খুব পরিচিত মিষ্টি একটা স্মেল আসতেই সে অবাক হয়ে হালকা মাথা তোলে ওপরে তাকালো!!! তাকিয়ে সে বিমোহিত হয়ে গেল.. হাসনাত চেয়ারের ওপরের পার্টে মাথা দিয়ে ঘুৃমোচ্ছে!!!.. রোদেলা আস্তে আস্তে হাসনাতের বুকের ওপর থেকে ওঠে বসলো..
হাসনাতকে মনভরে দেখছে সে!!!.. হাসনাতকে ছোয়ে দেওয়ার লোভটা সামলাতে পারলো না সে.. আলতো করে হাসনাতের গালে হাত বোলালো রোদেলা.. হাসনাত চোখ খিছে বন্ধকরে রয়লো.. রোদেলাকে চোখ খুলতে দেখে নিজের চোখটা জোরকরে বন্ধ করে রেখেছিল সে… কিন্তু রোদেলার স্পর্শে তার শিহরিত চেহারাটাকে সে নরমাল করতেই পারছে না.. শেষে হালকা নড়ে ওঠলো.. রোদেলা তাড়াতাড়ি নিজের হাত সরিয়ে নিল.. হাসনাত মুচকি হেসে দিল… তারপর আড়মোড় ভেঙ্গে উঠে বসলো.. রোদেলা তাড়াতাড়ি নিজের ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে নেমে পড়লো…

রোদেলা আর তামান্না সামনে সামনে হাটছে পিছনে হাসনাত.. হাসনাত বিমোহিত হয়ে রোদেলার হাটা দেখতে লাগলো.. হঠাৎ তারমাথায় দুষ্টু বুদ্ধি নাড়া দিয়ে ওঠলো.. রোদেলাকে জালানোর লোভটা হাসনাতকে খুব করে নাড়া দিচ্ছে.. সে জোরে হেটে রোদেলার কাছে গিয়ে মুচকি হেসে তামান্নাকে বলল– তামান্না তোমার ব্যাগে কি জান্টুভাম আছে??
তামান্না অবাক হয়ে — না তো. কেন?? কোথায় ব্যাথা পেলেন…
হাসনাত আড়চোখে রোদেলার দিকে তাকিয়ে বলল– নাহ আসলে বড় একটা আটার বস্তা আমার ওপর এতোক্ষন চেপে ছিল এতে কাধটা ছিড়ে গেছে..
রোদেলা কটমটিয়ে তাকিয়ে বলল– কি.. আমি আটার বস্তা..
হাসনাত— কেউ যদি কথা নিজের দিকে টেনে নিয়ে যায় অবলা হাসনাতের কি বা করার অাছে..
রোদেলা কোমড়ে হাত গুঁজে — আপনি অবলা… বেস্ট জোকস আই এভার হেয়ার…
হাসনাত মুচকি হেসে– বিলেতী ডগের মতো ইংরেজী ঝাড়ছো কেন মিষ্টি কুমড়া….
রোদেলা—– কি.. আমি কুমড়া?? মিষ্টি ফুলও তো বলতে পারতেন.. কিন্তু না তোমার মুখ থেকে ভালো কথা আশা করা আর আমাবস্যায় পুর্নিমার চাদ আশা করা সেইম.. আমি মাত্র ৬৪ কেজি..
হাসনাত দাতকেলিয়ে হেসে বলল– এইটা মাত্র?? ছোটকাট হাতির বাচ্ছার সমান তুই..
রোদেলা তেড়ে— তো আপনার ওয়েট কতো??
হাসনাত ভাব নিয়ে– অনলি ৭৪।।
রোদেলা আকাশকাপানো হাসি হেসে বলল– এইটা অনলি!! আপনার মেবি ১০০ লাগবে তাই না..
হাসনাত মুখ বাকিয়ে বলল– আমার হাইট কতো জানিস?? ৫ফিট ১১।। তোর মতো বাট্টু না আমি।। এইবলে সে হেসে সামনে হাটা ধরলো…
রোদেলা রাগে বিরবিরিয়ে বলল– আমি বাট্টু..!! আমি তো পার্ফেক্ট.. ৫ ফিট ৪’ আমি.. তারপর নিজের হাতটা মুটো করতে করতে বলল– আপনাকে আমি খেজুরগাছের সাথে বেধে ঝুলিয়ে দিব দেখিয়েন.. তারপর আরো লম্বা হয়ে যায়েন.. বুড়া জিরাফ….

সবাই একটা রিসোর্ট এ ওঠলো.. পাহাড়ের কাছে রিসোর্ট টা… নিচে সচ্ছ পানি দৃষ্যমান!!! বাতাস যেন কানেকানে গুনগুনিয়ে গান বলে যায়.. হাতদুটি মেলে চোখ বন্ধ করলে মিষ্টি বাতাসটা ছুয়ে দেয়,,, সাথে নিচের পানির কলকল শব্দ,,, পাখির কিচিমিচি গান!!! মন নাকি শান্ত হলে পঞ্চইন্দ্রিয় একসাথে সক্রিয় হয়ে যায়.. ঠিক তেমনি একটু নিজের পঞ্চইন্দ্রিয়ের ওপর নিয়ন্ত্রন আনলেই এইসব শব্দের সাথে সাথে মিষ্টি একটা স্মেল নাকে আসে!!! আর তা হলো পাহাড়িমাটির গন্ধ.. এতোটা নির্মল বাতাস আর স্মেল শহুরে জিবনে পাওয়া যেন শুধুই স্বপ্ন!!!

রোদেলা প্রকৃতিপ্রেমিক.. তাইতো সে এখন প্রকৃতির মধ্যে নিজেকে বিলিন করছে.. আর হাসনাত বারান্দা থেকে একধ্যান রোদেলাকে দেখছে.. মেয়েটা অদ্ভূত সুন্দর.. তারপর আনমনে বলল– শুকনা তো কাটি আর আখ ও হয়।। গুলুমুলু শুধু আমার রোদেলা হয়.. তারপর হেসে নিচে গিয়ে রোদেলার পাশে গিয়ে দাড়িয়ে বলল– চল ভাত খাবি…
রোদেলা অন্যদিকে তাকিয়ে বলল– খাবনা.. এমনিতেও আটার বস্তা আমি.. নিজের ভিতর থেকে আটা বেরকরে খেয়ে নিব কিছুটা…
হাসনাত রোদেলাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল– যখন গুলুমুলু দেখতে কোন কিউট চোখ ওয়ালা মেয়ে বজ্জাত হিটলারের সাথে রাগ করে না খেয়ে সেই ইতরের কলিজার বড় বড় দাগ কাটাই তখন সেই হিটলারের কি ইচ্ছে হয় জান??
রোদেলা চোখ বড় বড় করে বলল– কি??
হাসনাত নিচের পানির দিকে তাকিয়ে ডুবে যাওয়ার ভঙ্গি দেখিয়ে আবার ওপরের দিকে নির্দেশ করে.. রোদেলা চোখ বড় বড় করে উদ্বেগ নিয়ে মাথা ধুলাল.. আর হঠাৎ হাসনাত দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল– আরে আমি তো বলতেছি।। নিচের পানি খেয়ে রুমে বসে থাকতে ইচ্ছে হয়..
রোদেলা হাসনাতের পিঠে ধুমধাম কিল বসিয়ে রাগী লুক দিয়ে চলে গেল.. আর হাসনাত ঐখানে দাড়িয়ে হাসতে লাগলো.. এইহাসি যেন পরম আনন্দের আর তৃপ্তির…

হঠাৎ কেউ তার হাতে জোরে চিমটি কেটে দিল.. পাশে তাকিয়ে দেখলো তার শালা আর শালীগুলো খিলখিলিয়ে হাসছে.. সে মুখ গোমড়া করে বলল– ধর,, আমাকে ছিড়ে ছিঁড়ে একেকজন একেক পার্ট নিয়ে নে.. যে যেদিকে পারছে মারতেছে.. এইটা কেমন বিচার…
মুনিরা মুখ বাঁকিয়ে — রোদেলার পিটা খাওযে লজ্জা লাগে না.. লজ্জা কি সব বাসায় রাখি আসছো…
হাসনাত পরম ঝাঝের সাথে জবাব দিল– আমার বৌ আমাকে মারবে তোদের কি.. আমার বৌ আমারে মারবে, আমাকে আদর করবে,,, তোদের কি দরকার এইসব বলার…
ইফতি চোখ বড় করে বলল– হাসনাত ভাই,, এতোটা ক্রেজি হয়ে বসে আছেন ভাবি কি খবর টা জানেন?? পাবনা কি যাবেন? টিকেট কেটে দি??
হাসনাত লজ্জাভরা কন্ঠে — দুইটা কাটিস.. হানিমুন ওখানেই করবো.. সানিয়া আহাম্মকের মতো কিছুখন তাকিয়ে বলল– আপনি রুমে জান.পরে কথা হবে আপনার সাথে.. এইখানে ২ দিন আছেন.. দেখি কি কি করা যায়..
হাসনাত ব্রুনাচিয়ে — শুধু রোমান্স হবে।।।
এইবলে হাটা ধরলো.. তামান্না অবাক হয়ে বলল..ওনার মাথায় কি ঘুরে..
ইফতি — আরে কিছু না.. ওনার ওপর রোমান্টিক ওয়েদারের প্রভাব পড়ছে..য়েমন এখন আমাকে ধরছে.. এইবলে ইফ্ফাতকে চোখ টিপ দিয়ে দিল.. ইফ্ফাত মাথা দুপাশে দুলিয়ে বলল– তোমাদের দুই ভাইকে ওল্টা করে পিটানো দরকার.. তাহলে সব রোমান্স বেরিয়ে যাবে…
ইফতি মুখ বাঁকিয়ে — সব আনরোমান্টিক মেয়েগুলো আমাদের কপালে..
ইফ্ফাত কোমড়ে হাত গুঁজে — খুব আফসুস হচ্ছে নিশ্চয়ই.. বিয়ে আর একটা করগা.. আমার পিছে পিছে আসবা না আসলে পাহাড় থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিব.. এইবলে মুনিরার হাত ধরে ইফ্ফাত চলে গেল.. আর ইফতি সেইখানেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো.. এইজন্যই হয়তো কেন এক বিজ্ঞানী বলছিল “” বৌদের সত্য কথা বলতে নেয়…

সানিয়া দুপাশে মাথা দুলিয়ে হাটা ধরলো. এইসব দেখলে প্রেম ভালোবাসার ওপর তার বিরক্তি চলে আসে… এইসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ সে কারো সাথে জোরে ধাক্কা খেল.. ছেলেটার দিকে তাকিয়ে সে থমকে গেল.. কেমন সহজসরল চেহারা!! খুব বেশি ফর্সা না হলেও শ্যামলার মধ্যে সুন্দর..কুব বেশি সুন্দর তার চোখ দুটো.. মনে হয় মায়ার সাগর!! ছেলে মাথা নুইয়ে বলল– সরি আপু..
সানিয়া মুখ বাঁকিয়ে বলল– কোন এ্যান্গেলে আপু লাগি আপনার?? নাম কি আপনার…
— ইশান…
সানিয়া মুচকি হেসে– কিউট নেইম.. এইবলে হেসে চলে গেল…ইশান সেদিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল.. মেয়েটা কেমন অদ্ভূত!!!

বিকেলে সবাই আশেপাশে দেখতে বের হলো.. একটা বৌদ্ধ মন্দির গেল তারা অনেকগুলো মূর্তি সাজানো সেখানে… মাঝখানে গোতম বোদ্ধের একটা মুর্তি যার চারপাশে নালা কাটা এর পাশেই কাচের ঘর.. মানুষ সেইখানে টাকা দিচ্ছে… আর কিছু বানরের মূর্তি বসানো.. নিচের লেখাগুলো শিক্ষনীয়.. মুখে হাত দেয়া বানরের নিচে লিখা”” মন্দ কিছু বলব না” কানে হাত দেওয়াটা”” মন্দকিছু শোনবো না”” চোখে হাত দেওয়াটা”” মন্দ কিছু দেখবো না””
তারপর তারা দেখলো বানরের বহর.. একটা অন্যটার পিছনে লাইন ধরেছে. মনে হচ্ছে প্যারেড করছে তারা. এর মধ্যে কিছু বানর আবার রোমান্সে বিজি.. হাসনাত সেদিকে তাকিয়ে দুষ্টু হেসে বলল– বানরের ভিতর ও রোমান্টিকতা আছে.. মানুষের ভিতর নেয়.. এইসব বলে যেই পিছনে ফিরবে পায়ের সাথে পা লেগে পড়ে গেল সে…
রোদেলা দৌড়ে হাসনাতের পাশে গিয়ে পরম উদ্ধেগের সাথে বলল– এতো হিরোপান্থির কি আছে.. এখন যে হাতটা ছিলে গেল সেদিকে কোন হোস আছে আপনার.. এমন কেয়ারলেস কেন আপনি..
হাসনাতের নিজের দিকে কোন মনযোগ নেই. সে তাকিয়ে আছে রোদেলার উদ্ধেগমাখা সেই চোখের দিকে যেখানে নিজের জন্য ভালোবাসার সমুদ্র দেখছে সে.. হাসনাতের নিজের অজান্তেই চোখে অশ্রু চলে এলো.. কিন্তু এই অশ্রু যেন সুখের.. নিজের ভালোবাসা পাওয়ার অশ্রু!!!
হঠাৎ কোথা থেকে মাহিয়া এসে হাসনাতকে টেনে তুলল আর ওর আরো কিছু বান্দবীদের কে ডেকে হাসনাতকে বয়ে নিয়ে গেল.. রোদেলা যেন স্তব্ধ হয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইলো সাথে রাগও হলো তার.. এইমেয়েটাকে যেকোন সময় বানরের ঝাকের মাঝখানে ছেড়ে দিয়ে আসবে সে.. পুরো শরীরে বাদাম ছিটিয়ে দিবে.তার. যাতে ওকে বাদাম ভেবে খেয়ে নেয় বানর রা….

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here