মন গহীনে পর্ব -০৪

#মন_গহীনে

#পর্বঃ৪

#দোলন_আফরোজ

কি বলছো চাচী! এটা কিছুতেই হতে পারে না। বলে পাশে থাকা সোফা টাই ধপ করে বসে পরে। কাব্যর হাত পা রীতিমত কাপছে।শাহানারা বেগম বুঝতে পেরে ছেলের পাশে বসে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন,যেখানেই থাকুক ও,আমরা খুঁজে বের করবো তাকে।তুই শান্ত হো বাবা।
ছেলে করুণ চোখে মায়ের পানে চেয়ে, মা কি বলছে চাচী এসব?
তানিয়া বেগম মুখে কাপড় গুজে কাঁদছেন।তারেক রহমান ও চোখের জল ফেলছেন।

কাব্য হঠাৎ ই চোখ মুখ শক্ত করে বলে,পুরো পৃথিবী এক করে দিয়ে আমি ওকে খুঁজে আনবো,বলেই দাঁড়িয়ে পরে।তানিয়া বেগম এর দিকে চেয়ে, কোনো ছবি আছে ওর??
তানিয়া বেগম উনার ফোন থেকে ছবি টা বের করে দেখান।ছবি দেখার পর কাব্যর পুরো পৃথিবী যেন এখানেই থমকে গেছে। হাত পা ক্রমশ ই অবশ হয়ে যাচ্ছে। চোখ দুটো বারংবার ঝাপসা হয়ে আসছে।এ আমি কি করলাম? আমার পুতুল বউ কে আমি নিজেই কলংকিত করতে চাইলাম? কথা গুলো মনে মনে বলে আর কোনো কথা না বলে সোজা বাসা থেকে বেরিয়ে যায় সে। কাব্য যখন বেরিয়ে যায় তখন বিকেল।

শাহানারা বেগম তারেক রহমান ও তানিয়া বেগম কে আশ্বাস দেন তার ছেলে যখন বলেছে তবে নিশ্চিন্ত থাকতে। ওর অনেক চেনা জানা আছে। আজকের মাঝেই হয়তো মেয়েকে পাওয়া যেতে পারে।

এদিকে কাব্য মিনিট দশেকের মাঝে সেই যায়গাটাই পৌঁছে যায়। দুজন লোক ওখানে গার্ড দিচ্ছিলো।
লক খোল, কুইক!!
কাব্যের এমন ভয়ংকর রক্ত বর্ণ চোখ মুখ দেখে ওরা ভয় পেয়ে যায়।
কোনো সমস্যা বস?
বিগড়ানো মেজাজ আরো বিগড়ে যায়। এক থাপ্পড় বসিয়ে, এতো কথা বলতে কে বলেছে,লক খোল।
লোকটা ভয়ে তারাতাড়ি করে তালাটা খুলে দেয়।

দৌঁড়ে ঘরে গিয়ে আরেক দফা ধাক্কা খায় কাব্য।তার কথা মতোই হাত মুখ বেঁধে রেখেছিলো ওরা। কোনো রকম দানা পানি দেয় নি। তাই বাথরুম করার প্রয়োজন ও পরেনি।
কাব্য চিৎকার করে বলে, তারাতাড়ি কিছু খাবার আন।
বলেই হাটু মুড়ে তার পুতুল বউ এর সামনে বসে পরে। খাবার পানি কিছুই না পেয়ে মেয়েটা এক রকম সেন্সলেস হয়েই পরে আছে মুখ থুবড়ে। এক হাতে মেয়েটার হাত টান দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। আরেক হাতে মুখের উপর পরে থাকা ছোট চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে গালে আলতু স্পর্শ করে কাঁপা কাঁপা গলায় ডাকে”” তিথী””!!

অস্পষ্ট স্বরে শুধু বলে পানি।
কাব্য চিৎকার করে ডেকে বলে পানি আন এক্ষুনি।
বলার সাথে সাথে পানি নিয়ে হাজির হয় একটা চেলা।
মুখের সামনে পানি ধরতেই ঢক ঢক করে কয়েক গ্লাস পানি পান করে ফেলে তিথী।তৃষ্ণায় বুকটা পুরো মরুভূমি হয়ে ছিলো।

এই পাঁচ দিনে মুখটা পুরো শুকিয়ে গেছে। ফর্সা গোলগাল মুখ খানা শুকিয়ে এক্টু খানি হয়ে গেছে। চোখের নিচে কালি পরেছে। চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে। এখনো জ্ঞান ফিরেনি।শরীর টা যেনো নিথর হয়ে আছে।
কাব্যর চোখ থেকে সমানে জল গড়িয়ে পরছে। যার জন্য এতো অপেক্ষা এতো কিছু তাকেই এভাবে কষ্ট দিয়েছে সে নিজেই। কোনো ভাবেই কি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে সে।

আমি পাগলের মতো হন্যে হয়ে তোমাকে খুঁজেছি,পেতে চেয়েছি।তাই মহাবিশ্ব তার সর্বশক্তি দিয়ে তোমাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তোমাকে যে এভাবে ফিরে পাবো তা কখনো কল্পনাও করিনি।বলেই বুকের ভিতর জড়িয়ে নিলো।
তখনই খাবার নিয়ে আসে একজন। কিছুই বুঝতে পারে না সে। যে মানুষ মেয়েদের থেকে ৫০ ফিট দূরে থাকে সেই কিনা আজ একটা মেয়েকে বুকে জড়িয়ে কাঁদছে!!
কিছুটা ভয়ে ভয়েই আমতা আমতা করে বলে বস খাবার।

চোখ মুছে মুখ তুলে তাকায় কাব্য। খাবার গুলো হাতে নেয়। একটা জুস এর প্যাকেট থেকে জুস বের করে গ্লাসে নিয়ে খাইয়ে দেয় তিথীকে। ঢক ঢক করে জুস টুকু ও শেষ করে নেয় সে। তারপর একটা স্যান্ডউইচ মুখের কাছে ধরতেই অজ্ঞান অবস্থাতেই নিমিষেই শেষ করে ফেলে তা। এভাবে আরো কিছু শুকনো খাবার খাওয়া পর একটু একটু করে জ্ঞান আসে তিথীর। কিন্তু শরীরে এখনো এক ফুটাও শক্তি নেই।

তার ও আরো অনেকক্ষণ পরে পিটপিট করে চোখ খুলে সে।কাব্য এখনো ওকে বুকে জড়িয়েই বসে আছে।
চোখ খুলেও তেমন কিছু ঠাউর করতে পারেনি সে।জায়গা টা অচেনা লাগছে। শুধু বুঝতে পারছে একটা শক্ত পুরুষালী হাত তাকে জড়িয়ে রেখেছে।চোখ তুলে তাকায় সে। একি!! সেই আংকেল টাই তো!! আংকেল টা তাকে এভাবে জড়িয়ে রেখেছে কেনো?
প্লিজ আংকেল, আমায় কিছু করবেন না। প্লিজ বাসায় যেতে দিন আমায়।

আংকেল ডাক শুনে কাব্য আবারো ভ্রু কুচকে তাকায়। কিছুক্ষণ এভাবে তাকিয়ে তারপর উচ্চ স্বরে হাসি দেয়। এই মেয়ে এই অবস্থাতেও তাকে আংকেল বলছে।

তিথী মানুষ টা ছোট হলেও বুঝতে পারে আজকের হাসি ও সেদিন এর হাসির মানে আলাদা। আজকের হাসি টা নির্মল,সুন্দর।
ভয়ে ভয়ে তিথী বলে, আমায় কিছু করবেন নাতো, মারবেন নাতো আংকেল।

কাব্য তিথীর মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, উহুম তবে এক শর্তে।
কি??
আংকেল বলবা না আর। আমায় কি দেখতে আংকেল এর মতো লাগে?
আমি তো আমার বড় সব ছেলেদের ই আংকেল বলি। আম্মু শিখিয়ে দিয়েছে।
গুড। তবে আমায় বলবানা।
আচ্ছা।।
আমাকে এখানে আটকে রেখেছেন কেনো? আমার আব্বু আম্মু চিন্তা করবে।
-বাড়ি যেতে চাও?
-হুম!
-তবে আরেকটা শর্ত আছে।
-কি?
-কাউকে বলতে পারবানা যে আমি তোমাকে এখানে আটকে রেখেছিলাম। তাহলে কিন্তু তোমার আপুর সাথেও এমন হবে।
– এবার এক ঝটকায় তিথী নিজেকে কাব্যর থেকে ছাড়িয়ে নেয়।
-থম মেরে যায় কাব্য। ( এই শর্ত দেয়া ছাড়া তো তার আর কোনো উপায় নেই। নয়লে যে সে সারাজীবন এর জন্য তার পুতুল বউ কে হারাবে।)
– আপুটির সাথে কিছু করবেন না। আমি কাউকে কিচ্ছু বলবো না। প্লিজ আমায় বাড়ি যেতে দিন।
-আচ্ছা নিয়ে যাবো। বলে কাব্য ফোন বের করে ড্রাইভার কে ফোন করে গাড়ি নিয়ে আসতে। সে বাইক নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু এই অবস্থায় তিথীকে বাইক দিয়ে নেয়া যাবে না।তাই গাড়ি আসার আগ পর্যন্ত ওরা অপেক্ষা করতে থাকে।

এদিকে তিথী অস্থির হয়ে আছে বাড়ি যাওয়ার জন্য।
ওর শরীরে একটু শক্তি আসার পর আর একবার ও টাচ করতে দেয়নি কাব্য কে।কাব্য তার পুতুল বউ কে শুধু দেখেই যাচ্ছে। নীল রঙের চোখ দুটো এই কদিনে মলিন হয়ে গেছে। কাব্যর ভিতর টা যেনো জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে।তার এতো আদরের, এতো ভালোবাসার পুতুল বউ কে সে কি করে পারলো কষ্ট দিতে। আর সব চেয়ে বড় কথা এখন তিথীর জীবন টা যে কঠিন হয়ে যাবে। আর তার ব্যবস্থা কাব্য নিজের হাতেই করেছে।এসব ভাবতে ভাবতেই আবারো চোখ গড়িয়ে জল পরতে থাকে।তিথীর আড়ালেই তা মুছে নেয়।

গাড়ি এসে গেছে। কাব্য তিথীকে ধরে উঠাতে গেলে বলে আমি পারবো।তাই আর ধরতে দেয় না ওকে।উঠতে গেলে পরে যেতে নেয়, তখন ই কাব্য কোলে তুলে নেয় তাকে।
কিছু বলতে যাবে তখন কাব্য রেগে বলে চুপচাপ থাকো বলছি। বাড়ি নিয়ে যাবো না কিন্তু। কাব্যর রাগী মুখ টা দেখে নিমিষেই চুপসে যায় সে। মনে মনে গুন্ডা একটা বলে আরো একশো এক টা গালি দেয়।

আর একটা গালি যদি গিয়েছো এক্ষুনি ফেলে দিবো কিন্তু। 😡
– এমা, এ মনে মনে বলা কথা জানলো কি করে? গনক নাকি??( মনে মনে)
-কিভাবে জানলাম সেই চিন্তা না করে বাড়ি গিয়ে কি বলবে সেই চিন্তা করো।
-🙄🙄 আর কোনো কথা বাড়ালো না তিথী।ঠোঁটে আংগুল চেপে একদম চুপ করে যায় সে। আর মনে মনে ভাবে একবার শুধু বাড়ি যাই তখন দেখবেন আংকেল এই তিথী কি জিনিস।

******************

রাত সারে ৯ তার দিকে ওরা তিথীর বাসায় পৌঁছায়। এতোদিন পর মেয়েকে দেখে তানিয়া বেগম মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দেন। তিথীর গায়ে তখনো তেমন শক্তি ছিলো না। কাব্য ধরে ধরে এনেছে।
বাবা মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলে, আমি ব্যার্থ বাবা রে মা। আমি আমার মেয়েদের খেয়াল রাখতে পারিনি ঠিক মতো। মেয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে এই দেখো আব্বু, কিচ্ছু হয়নি আমার, একদম ঠিক আছি আমি।( আসলে বাবার গ্লানিবোধ দূর করার জন্য)
মেয়ে ঠিক মতো দাঁড়াতে পারছে না দেখে তানিয়া বেগম মেয়েকে সোফার এক পাশে বসিয়ে জিজ্ঞেস করে, ওরা কারা ছিলো মা? কেনো তোকে ধরে নিয়ে গেছিলো।

তিথী একবার কাব্যর দিকে তাকায়, কাব্য মাথা দিয়ে না করায় বলে আমি কাউকে দেখিনি আম্মু। আর কেনো নিয়েছিলো তাও জানি না।

তানিয়া বেগম মেয়েকে জিজ্ঞেস করে,ওরা তোকে কিছু করেনি তো??
-মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে, কি করবে? প্রশ্ন সূচক চাহনি দিয়ে।
– তানিয়া বেগম বুঝতে পারে এই প্রশ্ন টা করা তার বোকামি হয়েছে। কিন্তু কোনো কিডন্যাপার কিডন্যাপ করে নিয়ে গেলো, এই পাঁচ দিনে কোনো মুক্তিপণ দাবি করলো না। তাই তিনি জিজ্ঞেস করেন এই কথা।
কিন্তু উনার মেয়ে চঞ্চল হলেও যে এসব ব্যাপারে অজ্ঞ, মেয়েকে এই প্রশ্ন করা টা উনার ঠিক হয়নি বুঝতে পারেন উনি।একবার স্বামীর দিকে একবার কাব্যর দিকে তাকিয়ে উনি মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলেন কিছু না মা।
এতোক্ষণে তমা হাপাতে হাপাতে বোনের কাছে এসে বোন কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে, কোথায় চলে গেছিলি তুই? পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম আমরা সবাই।

তিথী টিটকিরি মেরে বলে আমি গেছিলাম তোর তো ভালোই হয়েছে, আমার জ্বালাতন থেকে রেহাই পেয়েছিস তুই।

গালে হালকা করে থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে, বলে একদম এসব বলবি না। মেরে ফেলবো একদম।

আচ্ছা পরে মারিস। এখন শাওয়ার নিবো তারপর ভাত খাবো। এই কদিন খেতে দেয় নি তো ওরা।কাব্যর দিকে তাকিয়ে।

কাব্যর বুকের ভিতর টা ধক করে উঠে। এই মুহূর্তে নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে।

তমা কাব্য কে দেখে থমকে যায়। মনে মনে বলে কাব্য ভাইয়া এখানে? তবু কিছু বলে না ভয় এ। একে তো ক্যাম্পাসের সবাই কাব্য কে দেখে ভয় পায় তার উপর তমার জন্যই কাব্যর জানে জিগার বন্ধু সো*সা*ই*ড করতে গেছিলো। তাই তমার ভয় টা একটু বেশি ই।তাই সে আর কিছু না বলে মাথা নিচু করে নেয়।

তানিয়া বেগম তমা কে বলে তিথীকে রুমে নিয়ে গিয়ে ফ্রেশ করিয়ে দিতে। উনি খাবার রেডি করছেন।

তার মাঝেই কাব্য চলে যেতে নিলে তানিয়া বেগম বলে তুই এখন কোথাও যাবি না কাব্য। সবাই এক সাথে ডিনার করবো তারপর যাবি।

তানিয়া বেগম এর কাব্য কে তুই বলে সম্মোধন করায় দুই বোন অবাকের শীর্ষে পৌঁছে যায়। তিথী ভাবে এই ভিলেন টার এমন সুন্দর উপন্যাসের নায়ক দের মতো নাম কি করে হয়। নামের সাথে তো কাজের একদমই মিল নেই।

ওদের অবার হওয়া দেখে তারেক রহমান দুই মেয়েকে বলে উনি তোমাদের সেলিম চাচার ছেলে। তোমাদের আম্মুর আর আমার একমাত্র ছেলে। তোমাদের দু বোনের একমাত্র ভাই।
দুই বোন আরো অবাক হয়।আগে তো আম্মু আব্বু এই ব্যাপারে কিছু বলেনি। শুধু সেলিম চাচার কথা বলেছে। তাও শুধু এই টুকুই যে একি এলাকায় বাড়ি।

কথাটা কাব্যর মোটেও পছন্দ হলো না। সাথে সাথেই বলে, চাচা ভুল বললেন। আমি শুধু তমার ভাই।তিথীর না।
কথাটা শুনে তারেক রহমান ও তানিয়া বেগম দুজনেই এক সাথে শুকনো গলায় বিষম খেলেন।

সাথে সাথে ই তিথী বলে আপনার মতো ভাই আমার দরকার ও নাই।আংকেল ই ঠিক আছে।
বলতেই কাব্য চোখ রাংগায়। আবারো চুপসে যায় তিথী।তারাতাড়ি উঠে চলে যায়।
তিথী তমা ফিরতে ফিরতে তানিয়া বেগম খাবার রেডি করতে থাকেন আর তারেক রহমান কাব্যর সাথে গল্প করতে থাকে মেয়েকে কোথায় পেয়েছে।

আমার লোক আছে চাচা। ওদেরকে বলতেই ওরা খবর পায়। কিন্তু ওখানে আর কাউকে পায় না। তাই আর কোনো তথ্য জানতে পারিনি।

ততক্ষণে ওরা ফিরে এসেছে। আর তানিয়া বেগম ও খাবার দিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। তিথীকে উনি নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছেন। এমনিতেও তিথী সব মায়ের হাতেই খায়।
তিথীকে খাওয়াচ্ছে আর কাব্য দেখছে। তাই উনি কাব্যর মুখেও খাবার তোলে দেন।আগেও এমনই করতো। যখন ই তমাকে খাইয়ে দিতেন তার আগে কাব্য কে খাওয়ানো লাগতো।

তিথীর এটা মোটেও পছন্দ হয়নি। তার আম্মু কেনো এই গুন্ডা আংকেল টাকে এতো আহ্লাদ করছে।
খাওয়া শেষে তিথী আর তমা চলে যায় ঘুমাতে। তিথীর শরীর এখনো অনেক ক্লান্ত। তাই আর বসে থাকতে পারেনি সে। তিথী আজ তমার সাথে ঘুমাবে। এমনিতে দুজন দুই রুমে ঘুমায়। নয়তো দুজনের ই পড়ার অসুবিধা হয়।

ওরা চলে যেতেই কাব্য ও উঠে যায়। তখন তানিয়া বেগম তারেক রহমান এর সামনেই কাব্য হাত ধরে বলে, আমি যা সন্দেহ করছি তাকি ঠিক।
কাব্য তারেক রহমান এর দিকে এক পলক চেয়ে তারপর তানিয়া বেগম কে বলে, তুমি কি সন্দেহ করছো তা আমি জানি না।কিন্তু তিথীকে আমি আমার পুতুল বউ ই জানি আর তাই সারাজীবন সত্যি হয়ে থাকবে।

তানিয়া বেগম কাব্যর হাত টা আলগোছে ছেড়ে দিয়ে একবার তারেক রহমান এর দিকে তাকায় । তারপর বলে আমার মেয়েটা বড্ড ছোট।

তোমার ছেলেটাও অবুঝ না চাচী। আমি এখনি আমার আবেগ তিথীর সামনে প্রকাশ করবো না।আগে ও এইচ এস সি পাস করুক, পরে ভাব্বো এসব। এতো বছর ধৈর্য ধরে থেকেছি আর কয়েক টা দিন পারবো না। হাসি মুখে। কাব্যের কথা শুনে তানিয়া বেগম আর তারেক রহমান দুজন এর মুখেই হাসি ফুটে।

তানিয়া বেগম বলে, না দেখে একটা মানুষ কি করে আরেক টা মানুষ কে এতোটা ভালোবাসতে পারে তোকে না দেখলে কেউ বুঝতো না।

আমার ছোট্ট মস্তিষ্ক টা তখন থেকেই এটাই মেনে এসেছে তিথীই আমার পুতুল বউ, আর তার জন্য ওকে আমার দেখার প্রয়োজন ছিলো না কোনো কালেই।আর তুমি একদম চিন্তা করো না। যতদিন না তিথী বড় হচ্ছে ততদিন এজ এ গার্ডিয়ান আমি সব সময় তিথীকে আগলে রাখবো আশা করি এতে তোমার আর চাচার কোনো অমত নেই।

উনারা দুজনেই মাথা নেড়ে সায় দিলেন।
তারপর আর কোনো কথা না বলে বেরিয়ে যায় কাব্য।

তারেক রহমান বলেন ছেলেটা এখোনো সেই এক গোয়েঁ স্বভাবের ই আছে।
তানিয়া বেগম বলেন আমরা তো সব ভুলেই গেছিলাম। সে যে এখনো সেই ছোট্ট তিথীকেই মনে গেথে বসে আছে কে জানতো।




চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here