#মায়ায়_জড়ানো_সেই_তুমি
#পার্ট_৩৪
জাওয়াদ জামী
ফোন হাতে স্তব্ধ হয়ে বসে আছে তিয়াসা। চোখ দিয়ে টপটপ করে অশ্রুকনারা ঝরছে। ফোন স্ক্রল করতেই একের পর এক ম্যাসেজ সামনে আসছে।
” Please forgive me. ”
” I want to return to you again. ”
” I always fell for you. ” ম্যাসেজগুলো দেখেই আর কান্নায় ভেঙে পরে তিয়াসা। তবে কি এবার সাইফের জীবনে ওর প্রয়োজনিয়তা ফুরোল! এতক্ষণ শব্দহীন কাঁদলেও এবার একটু জোরেই কেঁদে উঠে। ইতোমধ্যে নতুন আরও কয়েকটা ম্যাসেজ এসেছে।
” You never remember me? ”
” You don’t’ remember the time we spent together? ”
” Please come back to my life. ”
এরকম আরও অসংখ্য ম্যাসেজে ভরা। তিয়াসা যতই পড়ছে ততই কান্নারা দলবেঁধে হাজির হচ্ছে ঝরে পরতে। কিন্তু একবারও লক্ষ্য করলনা সেসব ম্যাসেজের কোন রিপ্লাই সাইফ দেয়নি।
বেশ কিছুক্ষণ থেকেই সাইফ গুনগুন ধরনের শব্দ পাচ্ছিল। ওর ঘুম খুব গাঢ় নয়। একটু আওয়াজেই জেগে যায়। তাই তিয়াসার কান্না অল্পতেই ওর কানে পৌঁছে গেছে। হঠাৎ কাঁচা ঘুম ভাঙ্গায় সাইফের মাথা ভার হয়ে যায়। সেভাবেই চুপচাপ পরে থেকে চিন্তা করছে হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গলো কেন! কিন্তু পরক্ষণেই পাশে তিয়াসার কান্নার আওয়াজে সচকিত হয়। এর আগেও তিয়াসার কান্নার আওয়াজ শুনেছে সে। কান্নার সেই আওয়াজ আর আজকের আওয়াজ সম্পূর্ণ আলাদা। তারউপর বিছানায় ওর পাশে বসে কাঁদছে! বিষয়টি সাইফের কাছে অদ্ভুত লাগে। সে শোয়া অবস্থায়ই তিয়াসার দিকে পাশ ফিরে। দেখল তিয়াসা মাঝ বিছানায় বসে আছে আর হাতে ওর ফোন। চোখ দিয়ে টপটপ করে অশ্রু ঝরে ভিজিয়ে দিচ্ছে ওর নিজেরই কোল। এবার সাইফ কিছুটা আন্দাজ করে কি ঘটেছে। সে তড়িৎ বেগে শোয়া থেকে উঠে বসে। ছোঁ মেরে ফোন নেয় তিয়াসার কাছ থেকে। তিয়াসা তখনও ঠাঁয় বসে আছে। ওর দৃষ্টি নিচে নিবদ্ধ। যেন মনযোগ সহকারে কিছু দেখছে। সাইফ ফোনের দিকে একঝলক তাকিয়ে বুঝে নেয় তিয়াসা লিন্ডার দেয়া ম্যাসেজগুল দেখেছে। ওর বুকের ভিতর ধক করে উঠে। শরীর হালকা কাঁপছে।
অজানা ভয় কন্ঠরোধ করেছে।
” তি..তিয়াসা, এই তিয়াসা। ” ফ্যাসফ্যাসে গলায় ডাকে সাইফ। হাজার চেষ্টা করেও গলার আওয়াজ বাড়াতে পারছেনা। কিন্তু তিয়াসা নিশ্চুপ বসে আছে। সাইফের কথার উত্তর দেয়ার কোন প্রবনতাই ওর ভেতর দেখা যায়না। সাইফ ফোন একপাশে রেখে তিয়াসার হাতদুটো নিজের হাতের মাঝে নেয়। এই প্রথম স্বেচ্ছায় তিয়াসার হাত ধরেছে সে। কিন্তু এতে কোন অনুভূতিই তিয়াসার মাঝে দেখলনা। তিয়াসা কেঁদেই চলেছে।
” আমার দিকে তাকাও। আমার সাথে কথা বল । ” তবুও তিয়াসা নিরুত্তর থাকে। তিয়াসার এই মৌনতায় সাইফের ভিষণ কষ্ট হচ্ছে। হুট করেই একহাতে তিয়াসাকে জড়িয়ে ধরে আরেক হাত তিয়াসার থুতনিতে রেখে নিচের দিকে উঁচু করে। তবুও তিয়াসা একটিবারও সাইফের দিকে তাকায়না।
সাইফ এবার অসহায়বোধ করছে। বারবার একটা কথাই মনে হচ্ছে, দেরি হয়ে গেলনা তো!
কিন্তু সাইফ এবার অন্তত ভুল করবেনা।
” আমার পেত্নী বউটার কি খুব রাগ হয়েছে? রাগ করলে যে তাকে আরও ভ*য়ং*ক*র পেত্নী লাগে সে কি জানে? কাঁদলে তো একমদই পেত্নী রাজ্যের ছিঁচকাঁদুনে পেত্নীর মত লাগে। রাত-বিরেতে এমন ভ*য়ং*ক*র রুপ দেখলে কার না ভয় হয়! ”
তিয়াসা তবুও কেঁদেই চলেছে। এবার অবশ্য ঠোঁট কামড়ে আস্তে কাঁদার চেষ্টা করছে। তিয়াসার ঠোঁট কামড়ান দেখে সাইফের মনে ভ*য়ং*ক*র একটা ইচ্ছে উদয় হয়। মুচকি হেসে তিয়াসার মাথার পেছনের চুলে হাত গলিয়ে দিয় ওকে নিজের আরও কাছে এনে তিয়াসার অধরে নিজের অধর মিশিয়ে নেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় তিয়াসা থমকে যায়। ও সাইফের থেকে নিজেকে ছাড়াতে গেলেই লক্ষ্য করল ওর দুই হাত শক্ত করে ধরে রাখা সাইফের হাতের মুঠোয়। এদিকে সাইফের মধ্যে ওকে ছাড়ার কোন লক্ষণই নেই। একসময় সে হার মানে। এভাবে কতক্ষণ কেটে গেছে তা বলতে পারবেনা তিয়াসা। ওকে ধীরেসুস্থে ছেড়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে রাখে সাইফ।
” ভালোবাসি দুষ্টুমিষ্টি বউ। খুব ভালোবাসি তোমাকে। প্লিজ এভাবে আর কেঁদোনা। এবং নিজেদের সম্পর্কের মাঝে কোন তৃতীয়জনকে নিয়ে তো অবশ্যই নয়। জেনে রেখ তুমিই আমার বর্তমান, তুমিই আমার ভবিষ্যৎ। অতীতে কে ছিল সেটা মনে করে বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে নেই। ”
তিয়াসার আজ যেন কন্ঠে কোন কথাই আসছেনা৷ কে যেন চেপে ধরেছে ওর গলা৷
” মিষ্টি পাখিটা আজ আমার সাথে কথা না বলার পণ করেছে বুঝি! সে জানেনা তার মাঝে আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। তার দুষ্টুমিগুলো আমি ভিষণভাবে ফিল করি। তার একেক সময় একেক সম্ভাষণে আমি ভালোবাসা খুঁজে নিই। তুমি আমার ভাঙ্গা টেপরেকর্ডার তা কি জানো? আমি ভিষণভাবে এই টেপ রেকর্ডার এর মায়ায় পরেছি। ”
” এখন তো এমনভাবে কথা বলছে যেন সে একজন সাধুপুরুষ! অথচ কয়েকদিন আগেই বলেছে আমি নাকি তার ঘাড়ে চেপেছি। এতদিন বুঝতেই পারিনি আমি তার বোঝা হয়ে আছি এই বাড়িতে। ” কান্নার দমকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসছে তিয়াসার।
” চিন্তা করবেননা আর বেশিদিন এই বোঝার ভার আপনাকে বইতে হবেনা। আমি এতটাও অবিবেচক নই যে আপনার আর আপনার ভালোবাসার মাঝে কাঁটা হয়ে থাকব। ” আজ নিজেকে সামলাতেই পারছেনা তিয়াসা। থেকে থেকেই হুহু করে কাঁদছে।
” এই মেয়ে কে বলেছে তুমি বোঝা! আমিতো তোমার সাথে মজা করেছি। একবারও যদি শুনেছি তুমি আমার থেকে দূরে যাওয়ার চিন্তা করছ তবে তোমাকে মে*রে হাত-পা ভে*ঙে ঘরে বসিয়ে রাখব। ” সাইফের গলায় রাগের আভাস স্পষ্ট।
” যাতে বউয়ের অসুস্থতার বাহানা দেখিয়ে আরেকটা বিয়ে করতে পারেন। বলছিনা ইচ্ছে করেই বিয়েটা করবেন, করবেন তো বাধ্য হয়ে। আর আমাকে তো ভাঙ্গা টেপরেকর্ডারই মনে হবে। আমি তো আর লিন্ডার মত ফরোয়ার্ড নই। ” নাক টানছে তিয়াসা।
” আমি আর থাকবোনা এখানে। কালই চলে যাব। তখন আপনি আপনার প্রাক্তন বউকে নিয়ে সুখে সংসার করেন। ভাইয়ার সাথে আপনার সম্পর্ক নিয়ে চিন্তা করবেননা। আমি আপনাদের সম্পর্ক নষ্ট হতে দিবনা। ” হেঁচকি তুলে কাঁদছে তিয়াসা।
” ভেবেছিলাম অফিসের প্রজেক্ট শেষ হলেই তোমাকে আমার ভালোবাসার চাদরে মোড়াব। আদরে ভরিয়ে দিব আমার মিষ্টি পাখিটাকে। প্রতিটা দিন প্রতিটা রাত কাটবে ভালোবাসার সাগরে ডুব দিয়ে। কিন্তু এখন বোধহয় সেটা আর সম্ভব নয়। আমার মিষ্টি বউটাকে দেখছি এখনই ভালোবাসার সাগরে ভাসাতে হবে। ” তিয়াসার গলায় চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে সাইফ। কিন্তু তিয়াসা বর্তমানে সাইফের আদর অনুভবের অবস্থায় নেই। ও সাইফের হাত থেকে ছোটার জন্য ছটফট করছে। কিন্তু সাইফ ওকে ছুটতে দিলে তো।
” আমার মিষ্টি পাখি এত ছটফট করোনা তো। আমাকে একটু প্রানখুলে ভালোবাসতে দাও। ” সাইফের ঘোরলাগা গলা শুনে তিয়াসা জমে যায়।
” আপনি কি আমাকে ছাড়বেন? আমার ভিষণ বিরক্ত লাগছে। ”
” তার আগে প্রমিস করো আমার কিছু কথা শুনবে। ”
বাধ্য হয়ে রাজি হয় তিয়াসা।
” আমি মানছি বিয়েটা করেছিলাম ভাইয়ার সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার কথা ভেবে৷ যখন জানলাম তোমার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে তখন চুড়ান্ত অবাক হয়েছিলাম। তেমনই বিয়ের আগ পর্যন্ত তোমাকে নিয়ে কোন আবেগ কাজ করেনি। কিন্তু বিয়ের পর কদম তলী থেকে আসার সময় তুমি যখন কাঁদছিলে তখন আমার কেন যেন ভিষণ খারাপ লাগছিল। তোমার কান্না আমার বুকের ভিতর তোলপাড় করছিল। সেদিনই আমার ভেতরে কিছু একটা ঘটে গিয়েছিল। দিনের পর দিন তোমাকে চোখের সামনে দেখতে দেখতে কখন যে তোমাকে ভালোবেসেছি আমি নিজেই বুঝতে পারিনি। ধীরে ধীরে তুমি আমার আসক্তিতে পরিনত হয়েছ। এ এমন এক আসক্তি যাকে এক মুহূর্ত না দেখলে পাগল পাগল লাগে। যাকে ভাবলেই হাজারো প্রজাপতি মন বাগানে উড়ে বেড়ায় , ফুলেল বর্ষনে ম ম করে চারপাশ। এসব কবে হল, কিভাবে হল, কখন হল আমি কিছুই জানিনা। শুধু জানি আমি এই দুষ্টুমিষ্টি বউকে ভালোবাসি। হয়তো আমি আর সবার মত রোমান্টিক নই। মনের কথা গুছিয়ে বলতে পারিনা। তোমার ভাষায় আনরোমান্টিক ভূত। কিন্তু তোমাকে ভালোবাসি এটা চিরন্তন সত্য। লিন্ডার সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই। এবং ভবিষ্যতেও হবেনা। আমার অতীতে ছিল লিন্ডা নামক বেইমান। কিন্তু আমার বর্তমান, আমার ভবিষ্যৎ সব কিছুই তিয়াসা নামক মায়াবতীতে আটকে গেছে। যেখান থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবতেই পারিনা। এমনকি ভাবতে চাইওনা। প্লিজ, আমাকে একটাবার বিশ্বাস কর। ” সাইফের গলায় আকুতি তিয়াসার বুঝতে ভুল হয়না।
” বেশ কিছুদিন আগে বলেছিলে, তুমি কোন ভার্সিটিতে পড়, কোন সাবজেক্টে পড় কোথায় থাক আমি তার কিছুই জানিনা। সেদিন এসবের কিছুই জানতামনা ঠিক আছে কিন্তু তার কয়েকদিনের মধ্যেই সব জেনে নিয়েছিলাম। তোমার পছন্দের রং, পছন্দের খাবার, পছন্দের পোশাক তোমার সকল পছন্দ জেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ঐযে তোমার জামাই একটা আনরোমান্টিক ভূত তাই প্রকাশ করতে পারেনি। ” সাইফ একমনে বলেই চলছে।
কিন্তু তিয়াসা একটু চমকে যায়। সে তো চুপিচুপি তাকে আনরোমান্টিক ভূত বলত। কিন্তু সে এটা জানল কেমন করে! তবে কি সে শুনে নিয়েছে! সকল কষ্ট ভুলে তিয়াসার মাথায় টেনশন এসে ভর করে। দাঁত দিয়ে আঙুল কা*ট*তে থাকে। যদি সে সবকিছু শুনে নেয়! এইরে আমিযে প্রতিদিন ভোরে তার চোখমুখ ছুঁয়ে দিতাম, মাঝেমাঝে কপালে চুমু দিতাম এসবও কি জেনে গেছে !
” আপনাকে কে বলেছে আমি আপনাকে আনরোমান্টিক ভূত বলি? ” অনেক সাহস নিয়ে জিজ্ঞেস করে তিয়াসা।
” কে আর বলবে তুমি প্রতি ভোরে ঘুম থেকে উঠে ঘুমন্ত এই নিষ্পাপ বাচ্চার উপর যত অত্যাচার
করতে তার সাক্ষী স্বয়ং আমি। ” সাইফের ঠোঁটে দুষ্টুমির ছাপ।
এদিকে তিয়াসা লজ্জা পারলে বিছানার সাথে মিশে যায়। ওর এতক্ষণের দুঃখ, কষ্ট, রাগ সাইফের কথা শুনে হাওয়ায় মিশে গেছে। মনে মনে ভাবছে, লোকটা সব জানে! ছি কি লজ্জা কি লজ্জা। এভাবে ধরা খাবে তা কল্পনাতেও ছিলনা। ছিহ্ তিয়াসা তোর বুদ্ধি হবে কবে? এই লজ্জা তুই কোথায় রাখবি? এই লোকটা সারাজীবন তোকে এই কথা নিয়ে খোঁচাবে। তোর নাতি-নাতনীদের কাছে তোর এই চরম লজ্জাজনক ঘটনা নিয়ে গল্প করবে। তুই এত কিছু সহ্য করবি কেমন করে!
সাইফ বুঝতে পারছে তিয়াসা লজ্জা পাচ্ছে। এই মেয়েকে আরেকটু লজ্জা দিলে কেমন হয়?
” ভোরে যখন কেউ একজন আমার কপাল, গাল, ঠোঁট ছুঁয়ে দিত, আলাদা একটা ফিল আসত। আমারও ইচ্ছে করত তাকে ধরে উল্টাপাল্টা কিছু করতে। অনেক কষ্টে নিজেকে ধরে রাখতাম। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে ভুল করেছি। তাহলে এতদিনে এ্যাটলিষ্ট বাবা হওয়ার সময় এগিয়ে আসত। আমার বউ বড়সড় পেট, আর গুলুমুলু শরীর নিয়ে আমার সামনে ঘুরত। ”
তিয়াসা লজ্জায় অন্যদিকে মুখ ঘুরায়। এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনা সাইফ। একটানে তিয়াসাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়।
” মিষ্টি বউ, তুমি আর কষ্ট পেওনা, আর কেঁদোনা। তোমার কান্না আমার বুকের পাঁজর ভে*ঙে খানখান করে দিচ্ছে। ”
” আপনি আমাকে ছেড়ে যাবেননা তো? তাহলে আমি ম*রে*ই যাব। আর ঐ বদ মহিলার সাথে যোগাযোগ রাখবেননা বলে দিলাম। রাখবেন তো আমার কথা? ”
” আমি কানাডা থেকে আসার পর তার সাথে কোন যোগাযোগ করিনি। সোস্যাল সাইটে সে আমাকে কিভাবে পেয়েছে তা আমার জানা নেই। আর কোনদিন তার সাথে যোগাযোগ করার কথা ভাবতেই পারিনা। তার নামেই এখন আমার ঘৃণা জন্মেছে। কিন্তু তুমি ম*রে যাওয়ার কথা বললে কেন? তুমি নিজের জন্য নয় আমার জন্য বাঁচবে। আমার নামে তোমার প্রতিটা সকাল প্রতিটা সন্ধ্যা রচিত হবে। ঠিক যেমন তোমার নামে আমার দিবসরজনী খচিত হয়েছে। ”
” আপনি সেই মহিলার সাথে কখনো যোগাযোগ করবেননা বলুন তিন সত্যি। ” তিয়াসা আবারও কাঁদছে।
” তিন সত্যি নয় হাজারবার সত্যি। ” সাইফের শক্ত বাঁধনে তিয়াসা আটকে গেছে। চাইলেও এ বাঁধন খোলার ক্ষমতা ওর নেই।
” তিয়াসা। ”
” হুম। ”
” তুমি কি আজ এই রাতে আমার হবে? সম্পূর্ণভাবে আমার? যতটা আমার হলে কোন হারানোর ভয় থাকবেনা। যতটা আমার হলে দুজনে মিশে একাকার হওয়া যায়। আজ রাতের জন্য তুমি প্রস্তুত? ”
তিয়াসা কি বলবে ভাষা খুঁজে পায়না। ওর শরীর কাঁপছে। চোখ লজ্জায় বুজে আসছে। বুক শুকিয়ে খাঁখাঁ করছে। কিন্তু এ খরা পানিতে মিটবার নয়। ঠোঁটদুটো তিরতির করে কাঁপছে কোন অজানা কারনে। অথচ সাইফের এই আকুতি হেলা করার ক্ষমতা নেই ওর। কিন্তু মুখে উত্তর দেয়ার জন্য কোন ভাষাই যেন সৃষ্টি হয়নি। কম্পমান শরীর নিয়ে মাথা রাখে সাইফের বুকে। সাইফও বুঝে যায় তার মায়াবতী তার ডাকে সারা দিয়েছে।
দুটি পিপাসিত তনু আজ একে অপরের তৃষ্ণা মেটাতে ব্যস্ত হয়ে যায়। কামনার উত্তাল তরঙ্গ আছড়ে পরছে শরীরের প্রতিটি খাঁজে। সাইফ মত্ত হয়েছে তার মায়াবতীর মাঝে। মায়াবতীও আজ সর্বস্ব দিয়ে তার স্বপ্নপুরুষকে বেঁধে নিয়েছে।
চলবে….