মিশে_আছি_তোমাতে পর্ব ২৪+ ২৫+শেষ

#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#part_24
.
.
.
.
আবির রাত বারোটার দিকে বাড়িতে ফিরে….. তিশা আবিরের জন্য অপেক্ষা করতে করতে মেঝেতে বসে বিছানাতে মাথা হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে…. আবিরের গাড়ির শব্দ শুনে তিশা জেগে যায়….. আবির ঘরে ডুকেতেই তিশাকে সজাগ দেখে আবাকে হয়ে যায় আবির ভেবেছিলো তিশা হয়তো ঘুমিয়ে যাবে তার জন্যই বাড়িতে দেরি করে ফিরেছে…. তিশা আবিরের দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে‌ আছে…..

তিশা : কি হলো ভিতরে আসবেন না… নাকি ঘরের বাইরেই দাড়িয়ে থাকবেন….

আবির চুপচাপ ঘরের ভিতরে ডুকে…. তিশা আবিরের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে দু ভ্রু নাচিয়ে বলে….

তিশা : কি সমস্যা আপনার???

আবির : আ…. মার আ.. বার কি সমস্যা হবে….

তিশা : কিন্তু আপনাকে দেখে তো মনে হচ্ছে আপনি কোনো সমস্যাতে আছেন…. কি সমস্যা হয়েছে বলুন?? ( গম্ভীর হয়ে বলে)

আবির : তিশা প্লিজ আমাকে বিরক্ত করো না আমার ভালো লাগছে….

তিশার মেজাজটা বিগড়ে যায় আবিরের কথা শুনে….

তিশা : এই যে মিস্টার আবির রহমান যখন আপনি আমাকে বিরক্ত করতেন তখন তো আপনার খুব ভালো লাগতো তাই. না … এখন আপনার কেন ভালো লাগছে না আমার বিরক্ত……. আপনি আমাকে কি পেয়েছেন কোনো খেলনা যখন ইচ্ছে তুলে ঘরে সাজিয়ে রাখবেন আবার যখন ইচ্ছে হবে ডাস্টবিনে ফেলে দিবেন…. (তিশা আবিরের কলার চেপে ধরে) আপনাকে আজকে বলতেই হবে কি এমন হলো যে আপনি আমাকে আর ভালোই বাসেন না….

আবির : তিশা প্লিজ আমাকে ছাড়ো আমার ভালো লাগছে না….

তিশা : ভালো লাগছে না মানে আগে তো আপনার কাছে আসলে ঠিকেই ভালো লাগত তাহলে এখন কেন ভালো লাগে আমাকে কেন??? কেন আপনি আামকে কষ্ট দিচ্ছেন কেন??? যখন আপনাকে ভালোবাসতে শুরু করলাম তখনেই আপনি আমাকে এভাবে ইকনোর করা শুরু করলেন কেন????

আবির : তিশা প্লিজ আমাকে ছাড়ো….

তিশা : ঠিক আছে ছেড়ে দিছি….

তিশা আবিরের কলার ছেড়ে দেয়….. আবির অন্য দিকে মুখ ঘুড়িয়ে নেয় কারন আবির আর এসব নিতে পারছে না

তিশা : আপনি হয় আজকে আমাকে বলবেন কেন আপনি আামকে ইকনোর করছেন আর না হয় আমি নিজেকে শেষ করবো এখন আপনি বেছে নেন আপনি কি করবেন ….

আবির তিশার দিকে ফিরে তাকিয়ে দেখে তিশা গলাতে ছুড়ি ধরে আছে‌….. আবিরের তো প্রান যায় যায় অবস্থা তিশার এমন অবস্থা দেখে…..

আবির : তিশা এসব কি করছো তুমি ছুড়িটা ফেলে দাও না হলে গলাতে লেগে যাবে…..

তিশা : লেগে যাক তাতে আপনার কি আপনি তো আর আমাকে ভালো বাসুন না তাই আমি মরি বা বাচি তাতে আপনার কোনো যায় আসে না….

আবির : তিশা এমন পাগলানো করো না দেখো ছুড়িটা গলাতে লেগে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে…..

তিশা : হয়ে যাক সর্বনাশ তাতে আমার কোনো যায় আসে না….

আবির : তিশা এমন কারো না….

তিশা : তাহলে আপনি বলুন আমাকে কেন আপনি আমার সাথে এমন করছেন??? কেন আমাকে এভাবে আপনি ইকনোর করছেন কেন???

আবির : তিশা তোমার গলাতে লেগে গেছে দেখো রক্ত বের হচ্ছে….

তিশা : একদম কাছে আসবেন না আপনি আমার তাহলে কিন্তু আমি ছুড়ি চালিয়ে দিবো….

আবির : নাহ তুমি এটা করতে পারো না….

তিশা : ঠিক আছে করবো না তাহলে বলুন আামাকে…. আপনি কেন আমার সাথে এমন করছেন???

আবির : তিশা তুমি সহ্য করতে পারবেনা শুনলে….

তিশা : আমি সহ্য করতে পারবো কিন্তু আপনার ইকনোর আমি সহ্য করতে আর পারছি না…. প্লিজ আমাকে বলুন দয়া করে প্লিজ….

আবির : ঠিক আছে আমি বলছি কিন্তু তুমি বলার সাথে সাথে ছুড়িটা ফেলে দিবে….

তিশা : হুম ফেলে দিবো…

আবির যা বলে তা শুনে তিশার হাত থেকে ছুড়িটা পড়ে যায়…. তিশার হাত পা সব অবশ হয়ে আসছে নিজেকে আর শক্ত করে রাখতে পারছে না… তিশা ধপ করে বিছানাতে বসে পড়ে… আবির তিশার কাছে তাড়াতাড়ি গিয়ে রুমাল বের করে তিশার গলা চেপে ধরে ছুড়ির আঘাতে তিশার গলা থেকে রক্ত বের হচ্ছে….

আবির : তিশা তুমি কি পাগল হয়ে গেছো….

তিশা : আপনি আপনি কি বললেন এই মাএ….. আপনার ব্রেন ক্যান্সার হয়েছে মানে

আবির : তুমি যা শুনেছো তাই সত্যি….

তিশা : নাহ আমি বিশ্বাস করি না আপনি মিথ্যা কথা বলছেন যাতে আমি আপনার জীবন থেকে চলে গেলে মায়রাকে বিয়ে করতে পারেন…. ( আবিরের কলার ধরে জোরে বলে)

আবির : তিশা আস্তে কথা বলো তোমার গলাতে চাপ পড়লে রক্ত পড়া বন্ধ হবে না…..

তিশা : চাপ পড়ুক আপনি আগে বলুন আপনি যা বলেছেন সেটা মিথ্যে কথা….

আবির : না তিশা এটাই সত্যি আমি আর বাচবো না বাচলেও আর এক মাস তাই তোমাকে বলছি তিশা তুমি আমার জীবন থেকে চলে যাও গিয়ে নতুন জীবন শুরু করো….

তিশা : কি বললেন আপনি???

আবির : হে তিশা তুমি চলে যাও তাতে তোমারেই ভালো…

তিশা : আপনি আমার সাথে মজা নিচ্ছেন তাই না আপনি ভাবলেন কি করে আমি এখান থেকে চলে যাবো কিছুতেই না… আর রইল এই মরার ব্রেন ক্যান্সার আমি বিশ্বাস করি না….

আবির : তোামকে বিশ্বাস করতে হবে তিশা কারন এটাই সত্যি…

তিশা : ঠিক আছে তাহলে রির্পোট গুলো দেখান আমাকে….

আবির : রির্পোট তো এখন আমার কাছে নেই অফিসে আছে….

তিশা : আচ্ছা কোন ডক্টরের কাছে গিয়েছেন আপনি….

আবির : মায়রা নিয়ে গেছে ওর চেনা ডক্টরের কাছে…..

তিশা : ঠিক আছে তাহলে আমিও আপনাকে কালকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবো আমি আপনাকে আমার মতো করে চিকিৎসা করাবো….আপনি কিছুতেই আমাকে রেখে চলে যেতে পারেন না কারন আমাদের কাহিনী এখনও পূর্ন হয় নি…..

আবির : তিশা আমিও চাই না তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে আমি তোমার সাথে সারাটা জীবন কাটাতে চাই আমি মরতে চাই না তিশা মরতে চাই না……

আবির তিশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়…..

তিশা : সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে আমি সবকিছু ঠিক করে দিবো সবকিছু ( আমি জানি এটা ওই‌ মায়রা ডাইনিটার কাজ ওর জন্যই এসব হচ্ছে ওকে তো আমি কিছুতেই ছাড়বো না…..)

সারারাত আবির তিশাকে জড়িয়ে ধরে ছিলো…… সকালে তিশা আর আবির ফেমেলি ডক্টরের কাছে যায়….

আবির : তিশা আমার খুব ভয় করছে….

তিশা : আরে ভয় পাবেব না আমি জানি আপনার কিছু হয় নি……

আবির : এতটা জোর দিয়ে তুমি কি করে বলছো…..

তিশা : আমার বিশ্বাস আছে আমার ভালোবাসর উপরে তাই আপনার কিছুই হবে না……

আবিরকে সব টেস্ট করে…… এক ঘন্টা পর সব টেস্টের রির্পোট আসে….

আবির : ডক্টর আঙ্গেল আমার রির্পোটে কি আসছে???

ডাক্তার : আবির তুমি তো একেবারে সুস্থ তোমার কোনো ব্রেন কান্সার হয় নি…. আর এই রির্পোট গুলো মিথ্যা তুমি সর্ম্পূ সুস্থ…..

আবির : হোয়াট???? এই‌ রির্পোট গুলো সব ভুয়া….

ডাক্তার : হে আবির এগুলো সব মিথ্যে…..

তিশা : ডক্টর আঙ্গেল সত্যি বলছেন আপনি…..

ডাক্তার : কি যে বলো মা আমি ২৫বছর ধরে ডাক্তারগিরি করছে আর আমি ভুল করবো সেটা কি করে হয় মা…….

আবির : তারমানে ওই ডাক্টর নকল ছিলো….. ( মনে মনে)

ডাক্তার : কিন্তু আবির তোমাকে এসব রির্পোড় কেন ডক্তার দিলো……

আবির : আঙ্গেল আমি আপনাকে পরে সব খুলে বলবো এখন আমাকে যেতে হবে তিশা চলো…..

তিশা : কোথায় যাবো???

আবির : কথা না বলে তাড়াতাড়ি চলো……

আবির গাড়ি তাড়াতাড়ি ড্রাইভ করে যায় যে জায়গাতে মায়রা ওক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলো…… কিন্তু আবির ওখানে পৌছে গিয়ে দেখে কোনো ডাক্তার নে বরং এখানে একটা মুদির দোকান……. আবিরের বুঝতে আর বাকি রইলো না কে এসব করেছে…..

তিশা : কি হলো আমরা এখানে কেন এসেছি????

আবির : গাড়িতে উঠো…..

তিশা : হুম…….

আবির : তোমাকে আমি বাড়িতে পৌছে দিয়ে আমার একটু অফিসে যেতে হবে…..

তিশা : কিন্তু…..

আবির : তিশা তুমি বুঝতে পারছো আমাকে কত বড় একটা শক খেতে হয়েছে এই দু দিনে…. এর তো আমি শেষ দেখে ছাড়বো কে বা কেন আমার সাথে এমন করেছে….. তাই তুমি এখন বাড়িতে যাও আর আমি তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো আমার জানের কাছে……

আবির তিশার কপালে একটা কিস করে….. আবির তিশাকে বাড়িতে পৌছে দিয়ে অফিসে যায়……

আবির : মায়রা কেন এটা করলো আমার সাথে এতে ওরকি স্বার্থ লুকিয়ে আছে কি স্বার্থ আর ওই ভুয়া ডাক্তারের কোনো উদিসই পেলাম না…..

আবির মায়ারকে ফোন করে…..

আবির : হ্যালো মায়রা……

মায়রা : হে আবির বলো সবকিছু ঠিক আছে তো…..

আবির : হুম ঠিক আছে কিন্তু আবার ঠিকও নেই…..

মায়রা : মানে…..

আবির : মানে তুমি কবে ফিরছো….. আসলে আমি এখানে সব কিছু সামলাতে পারছি না বুঝতেই তো পারছো আমার কি অবস্থা……

মায়রা : আমি কালকেই ফিরছি আবির তোমাকে আর টেনশন করতে হবে না…. আর আবির তুমি কি তিশাকে কিছু বলেছে

আবির : কি বলবো???

মায়রা : না মানে তোমার ওই ব্রেন কান্সারের কথা…..

আবির : না বলি এখনোও

মায়রা : তুমি বলো না এই‌ কথাটা আবির তিশাকে তুমি বরং তিশাকে ইকনোর তাহলেই ও তোমার জীবন থেকে সরে যাবে এমনিতে…..

আবির : হুম…. ঠিক আছে আমি এখন রাখছি

মায়রা : হুম বাই…..

আবির : তারমানে মায়রা ইচ্ছে করে এসব করেছে ওর কথা শুনে যতটুকু বুঝতে পেরেছি তিশাকে আমার জীবন থেকে সারানো ওর মেইন টার্গেট কিন্তু মায়রা তুমি যে ধরা পড়ে গেছো তোমার এই‌ প্লেন সফল হবে……
#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#part_24
.
.
.
.
আবির রাত বারোটার দিকে বাড়িতে ফিরে….. তিশা আবিরের জন্য অপেক্ষা করতে করতে মেঝেতে বসে বিছানাতে মাথা হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে…. আবিরের গাড়ির শব্দ শুনে তিশা জেগে যায়….. আবির ঘরে ডুকেতেই তিশাকে সজাগ দেখে আবাকে হয়ে যায় আবির ভেবেছিলো তিশা হয়তো ঘুমিয়ে যাবে তার জন্যই বাড়িতে দেরি করে ফিরেছে…. তিশা আবিরের দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে‌ আছে…..

তিশা : কি হলো ভিতরে আসবেন না… নাকি ঘরের বাইরেই দাড়িয়ে থাকবেন….

আবির চুপচাপ ঘরের ভিতরে ডুকে…. তিশা আবিরের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে দু ভ্রু নাচিয়ে বলে….

তিশা : কি সমস্যা আপনার???

আবির : আ…. মার আ.. বার কি সমস্যা হবে….

তিশা : কিন্তু আপনাকে দেখে তো মনে হচ্ছে আপনি কোনো সমস্যাতে আছেন…. কি সমস্যা হয়েছে বলুন?? ( গম্ভীর হয়ে বলে)

আবির : তিশা প্লিজ আমাকে বিরক্ত করো না আমার ভালো লাগছে….

তিশার মেজাজটা বিগড়ে যায় আবিরের কথা শুনে….

তিশা : এই যে মিস্টার আবির রহমান যখন আপনি আমাকে বিরক্ত করতেন তখন তো আপনার খুব ভালো লাগতো তাই. না … এখন আপনার কেন ভালো লাগছে না আমার বিরক্ত……. আপনি আমাকে কি পেয়েছেন কোনো খেলনা যখন ইচ্ছে তুলে ঘরে সাজিয়ে রাখবেন আবার যখন ইচ্ছে হবে ডাস্টবিনে ফেলে দিবেন…. (তিশা আবিরের কলার চেপে ধরে) আপনাকে আজকে বলতেই হবে কি এমন হলো যে আপনি আমাকে আর ভালোই বাসেন না….

আবির : তিশা প্লিজ আমাকে ছাড়ো আমার ভালো লাগছে না….

তিশা : ভালো লাগছে না মানে আগে তো আপনার কাছে আসলে ঠিকেই ভালো লাগত তাহলে এখন কেন ভালো লাগে আমাকে কেন??? কেন আপনি আামকে কষ্ট দিচ্ছেন কেন??? যখন আপনাকে ভালোবাসতে শুরু করলাম তখনেই আপনি আমাকে এভাবে ইকনোর করা শুরু করলেন কেন????

আবির : তিশা প্লিজ আমাকে ছাড়ো….

তিশা : ঠিক আছে ছেড়ে দিছি….

তিশা আবিরের কলার ছেড়ে দেয়….. আবির অন্য দিকে মুখ ঘুড়িয়ে নেয় কারন আবির আর এসব নিতে পারছে না

তিশা : আপনি হয় আজকে আমাকে বলবেন কেন আপনি আামকে ইকনোর করছেন আর না হয় আমি নিজেকে শেষ করবো এখন আপনি বেছে নেন আপনি কি করবেন ….

আবির তিশার দিকে ফিরে তাকিয়ে দেখে তিশা গলাতে ছুড়ি ধরে আছে‌….. আবিরের তো প্রান যায় যায় অবস্থা তিশার এমন অবস্থা দেখে…..

আবির : তিশা এসব কি করছো তুমি ছুড়িটা ফেলে দাও না হলে গলাতে লেগে যাবে…..

তিশা : লেগে যাক তাতে আপনার কি আপনি তো আর আমাকে ভালো বাসুন না তাই আমি মরি বা বাচি তাতে আপনার কোনো যায় আসে না….

আবির : তিশা এমন পাগলানো করো না দেখো ছুড়িটা গলাতে লেগে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে…..

তিশা : হয়ে যাক সর্বনাশ তাতে আমার কোনো যায় আসে না….

আবির : তিশা এমন কারো না….

তিশা : তাহলে আপনি বলুন আমাকে কেন আপনি আমার সাথে এমন করছেন??? কেন আমাকে এভাবে আপনি ইকনোর করছেন কেন???

আবির : তিশা তোমার গলাতে লেগে গেছে দেখো রক্ত বের হচ্ছে….

তিশা : একদম কাছে আসবেন না আপনি আমার তাহলে কিন্তু আমি ছুড়ি চালিয়ে দিবো….

আবির : নাহ তুমি এটা করতে পারো না….

তিশা : ঠিক আছে করবো না তাহলে বলুন আামাকে…. আপনি কেন আমার সাথে এমন করছেন???

আবির : তিশা তুমি সহ্য করতে পারবেনা শুনলে….

তিশা : আমি সহ্য করতে পারবো কিন্তু আপনার ইকনোর আমি সহ্য করতে আর পারছি না…. প্লিজ আমাকে বলুন দয়া করে প্লিজ….

আবির : ঠিক আছে আমি বলছি কিন্তু তুমি বলার সাথে সাথে ছুড়িটা ফেলে দিবে….

তিশা : হুম ফেলে দিবো…

আবির যা বলে তা শুনে তিশার হাত থেকে ছুড়িটা পড়ে যায়…. তিশার হাত পা সব অবশ হয়ে আসছে নিজেকে আর শক্ত করে রাখতে পারছে না… তিশা ধপ করে বিছানাতে বসে পড়ে… আবির তিশার কাছে তাড়াতাড়ি গিয়ে রুমাল বের করে তিশার গলা চেপে ধরে ছুড়ির আঘাতে তিশার গলা থেকে রক্ত বের হচ্ছে….

আবির : তিশা তুমি কি পাগল হয়ে গেছো….

তিশা : আপনি আপনি কি বললেন এই মাএ….. আপনার ব্রেন ক্যান্সার হয়েছে মানে

আবির : তুমি যা শুনেছো তাই সত্যি….

তিশা : নাহ আমি বিশ্বাস করি না আপনি মিথ্যা কথা বলছেন যাতে আমি আপনার জীবন থেকে চলে গেলে মায়রাকে বিয়ে করতে পারেন…. ( আবিরের কলার ধরে জোরে বলে)

আবির : তিশা আস্তে কথা বলো তোমার গলাতে চাপ পড়লে রক্ত পড়া বন্ধ হবে না…..

তিশা : চাপ পড়ুক আপনি আগে বলুন আপনি যা বলেছেন সেটা মিথ্যে কথা….

আবির : না তিশা এটাই সত্যি আমি আর বাচবো না বাচলেও আর এক মাস তাই তোমাকে বলছি তিশা তুমি আমার জীবন থেকে চলে যাও গিয়ে নতুন জীবন শুরু করো….

তিশা : কি বললেন আপনি???

আবির : হে তিশা তুমি চলে যাও তাতে তোমারেই ভালো…

তিশা : আপনি আমার সাথে মজা নিচ্ছেন তাই না আপনি ভাবলেন কি করে আমি এখান থেকে চলে যাবো কিছুতেই না… আর রইল এই মরার ব্রেন ক্যান্সার আমি বিশ্বাস করি না….

আবির : তোামকে বিশ্বাস করতে হবে তিশা কারন এটাই সত্যি…

তিশা : ঠিক আছে তাহলে রির্পোট গুলো দেখান আমাকে….

আবির : রির্পোট তো এখন আমার কাছে নেই অফিসে আছে….

তিশা : আচ্ছা কোন ডক্টরের কাছে গিয়েছেন আপনি….

আবির : মায়রা নিয়ে গেছে ওর চেনা ডক্টরের কাছে…..

তিশা : ঠিক আছে তাহলে আমিও আপনাকে কালকে ডক্টরের কাছে নিয়ে যাবো আমি আপনাকে আমার মতো করে চিকিৎসা করাবো….আপনি কিছুতেই আমাকে রেখে চলে যেতে পারেন না কারন আমাদের কাহিনী এখনও পূর্ন হয় নি…..

আবির : তিশা আমিও চাই না তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে আমি তোমার সাথে সারাটা জীবন কাটাতে চাই আমি মরতে চাই না তিশা মরতে চাই না……

আবির তিশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়…..

তিশা : সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে আমি সবকিছু ঠিক করে দিবো সবকিছু ( আমি জানি এটা ওই‌ মায়রা ডাইনিটার কাজ ওর জন্যই এসব হচ্ছে ওকে তো আমি কিছুতেই ছাড়বো না…..)

সারারাত আবির তিশাকে জড়িয়ে ধরে ছিলো…… সকালে তিশা আর আবির ফেমেলি ডক্টরের কাছে যায়….

আবির : তিশা আমার খুব ভয় করছে….

তিশা : আরে ভয় পাবেব না আমি জানি আপনার কিছু হয় নি……

আবির : এতটা জোর দিয়ে তুমি কি করে বলছো…..

তিশা : আমার বিশ্বাস আছে আমার ভালোবাসর উপরে তাই আপনার কিছুই হবে না……

আবিরকে সব টেস্ট করে…… এক ঘন্টা পর সব টেস্টের রির্পোট আসে….

আবির : ডক্টর আঙ্গেল আমার রির্পোটে কি আসছে???

ডাক্তার : আবির তুমি তো একেবারে সুস্থ তোমার কোনো ব্রেন কান্সার হয় নি…. আর এই রির্পোট গুলো মিথ্যা তুমি সর্ম্পূ সুস্থ…..

আবির : হোয়াট???? এই‌ রির্পোট গুলো সব ভুয়া….

ডাক্তার : হে আবির এগুলো সব মিথ্যে…..

তিশা : ডক্টর আঙ্গেল সত্যি বলছেন আপনি…..

ডাক্তার : কি যে বলো মা আমি ২৫বছর ধরে ডাক্তারগিরি করছে আর আমি ভুল করবো সেটা কি করে হয় মা…….

আবির : তারমানে ওই ডাক্টর নকল ছিলো….. ( মনে মনে)

ডাক্তার : কিন্তু আবির তোমাকে এসব রির্পোড় কেন ডক্তার দিলো……

আবির : আঙ্গেল আমি আপনাকে পরে সব খুলে বলবো এখন আমাকে যেতে হবে তিশা চলো…..

তিশা : কোথায় যাবো???

আবির : কথা না বলে তাড়াতাড়ি চলো……

আবির গাড়ি তাড়াতাড়ি ড্রাইভ করে যায় যে জায়গাতে মায়রা ওক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলো…… কিন্তু আবির ওখানে পৌছে গিয়ে দেখে কোনো ডাক্তার নে বরং এখানে একটা মুদির দোকান……. আবিরের বুঝতে আর বাকি রইলো না কে এসব করেছে…..

তিশা : কি হলো আমরা এখানে কেন এসেছি????

আবির : গাড়িতে উঠো…..

তিশা : হুম…….

আবির : তোমাকে আমি বাড়িতে পৌছে দিয়ে আমার একটু অফিসে যেতে হবে…..

তিশা : কিন্তু…..

আবির : তিশা তুমি বুঝতে পারছো আমাকে কত বড় একটা শক খেতে হয়েছে এই দু দিনে…. এর তো আমি শেষ দেখে ছাড়বো কে বা কেন আমার সাথে এমন করেছে….. তাই তুমি এখন বাড়িতে যাও আর আমি তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো আমার জানের কাছে……

আবির তিশার কপালে একটা কিস করে….. আবির তিশাকে বাড়িতে পৌছে দিয়ে অফিসে যায়……

আবির : মায়রা কেন এটা করলো আমার সাথে এতে ওরকি স্বার্থ লুকিয়ে আছে কি স্বার্থ আর ওই ভুয়া ডাক্তারের কোনো উদিসই পেলাম না…..

আবির মায়ারকে ফোন করে…..

আবির : হ্যালো মায়রা……

মায়রা : হে আবির বলো সবকিছু ঠিক আছে তো…..

আবির : হুম ঠিক আছে কিন্তু আবার ঠিকও নেই…..

মায়রা : মানে…..

আবির : মানে তুমি কবে ফিরছো….. আসলে আমি এখানে সব কিছু সামলাতে পারছি না বুঝতেই তো পারছো আমার কি অবস্থা……

মায়রা : আমি কালকেই ফিরছি আবির তোমাকে আর টেনশন করতে হবে না…. আর আবির তুমি কি তিশাকে কিছু বলেছে

আবির : কি বলবো???

মায়রা : না মানে তোমার ওই ব্রেন কান্সারের কথা…..

আবির : না বলি এখনোও

মায়রা : তুমি বলো না এই‌ কথাটা আবির তিশাকে তুমি বরং তিশাকে ইকনোর তাহলেই ও তোমার জীবন থেকে সরে যাবে এমনিতে…..

আবির : হুম…. ঠিক আছে আমি এখন রাখছি

মায়রা : হুম বাই…..

আবির : তারমানে মায়রা ইচ্ছে করে এসব করেছে ওর কথা শুনে যতটুকু বুঝতে পেরেছি তিশাকে আমার জীবন থেকে সারানো ওর মেইন টার্গেট কিন্তু মায়রা তুমি যে ধরা পড়ে গেছো তোমার এই‌ প্লেন সফল হবে……

#চলবে

গল্পটা যতই শেষ করার চেষ্টা করছি ততই গল্পটা বড় হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ইনশাআল্লাহ আগামী পর্বে শেষ করেই ছাড়বো…….ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন……
#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Last_Part
.
.
.
.
আমি আর তিশা ব্রেকফাস্ট টেবিলে‌ বসে নাস্তা করছে হঠাৎ করেই তিশা যা বলে‌ উঠে তাতে আবির ভিশুম খেয়ে পেলে …..

তিশা : আচ্ছা আমরা কয়টা বেবি নিবো??

আবির : তুমি কয়টা নিতে পারবে সেটা বলো….

তিশা : আপনি বলুন….

আবির : সাতটা নিবো….

তিশা : এটা একটু বেশি হয়ে যায় না আমার জন্য….

আবির : আগের কার দিনে প্রত্যেক ঘরে দশটা বারোটা করে বাচ্চা থাকতো বুঝলে আর এর তুলনায় সাতটা কিছুই না বুঝলে….

তিশা : ঠিক আছে তাহলে সাতটাই নিবো…. তিনটা ছেলে আর চারটা মেয়ে হুম…….

আবির : নাহ সাতটাই মেয়ে ছেলে দরকার নাই….

তিশা : কেন???

আবির : ছেলেরা বেশি চিল্লাচিল্লি করে বুঝলে মেয়েরা শান্ত থাকে….

তিশা : ওওও কিন্তু ছেলে মেয়ে হওয়া তো আর আমাদের উপর নির্ভর করে না যদি ছেলে হয়ে যায় তাহলে….

আবির : তাহলে আর কি তাদের লালন পালন করবো….

তিশা : হুমমমমম….. আচ্ছা আমাদের সাতটা বাচ্চার কি‌ কি নাম রাখবো????

আবির : ইনি মিনা টিনা রিনা ইরা জিরা মিরা এসব রাখবো….

তিশা : ছিহ এসব নাম একদম সুন্দর না….

আবির : কেন সুন্দেরই তো….

তিশা : না এগুলো রাখবো না…..

আবির : ঠিক আছে তাহলে তুমিই‌ নাম রাখো….

হঠাৎ করেই আবিরের ফোনটা বেজে উঠে আবির তাকিয়ে দেখে মায়রা ফোন করেছে….

তিশা : কে ফোন করেছে???

আবির : মায়রা…

তিশা : কি ওই ডায়নিটা ফোন করেছে দিন আমার কাছে ফোনটা দিন ওকে এমন দুলাই দিবো আজকে….

আবির : তিশা শান্তু হও আমি কথা বলছি আর কথা বলার সময় একটা কথাও বলবে না ঠিক আছে….

তিশা : হুম…

আবির : হুম মায়রা বলো…..

মায়রা : আবির কোথায় তুমি??? আমি তোমার বাড়িতে এসে তুমি বাড়িতে নেই…. কোথায় আছো তুমি???

আবির : আসলে মায়রা বাড়িতে ভালো লাগছিলো না তাই একটু বের হয়েছি…..

মায়রা : আবির তিশাকে বাড়িতে দেখতে পাচ্ছি না ওকে চলে গেছে এই বাড়ি ছেড়ে…..

আবির : এ নিয়ে তোমার সাথে মুখোমুখি কথা বলি…..

মায়রা : ঠিক আছে তাহলে তুমি তাড়াতাড়ি চলে আসো….

আবির : হুমমমম……

তিশা : কি বললো ওই ডায়নিটা???

আবির : তুমি তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নাও আমরা একটু পরেই বর হবো….

তিশা : ঠিক আছে…..

এই দিকে মায়রা তো মহা খুশি তিশাকে বাড়িতে দেখে না পেয়ে…..

মায়রা : ( অবশেষে আমার প্লেন সফল হলো হা হা হা)

কিছুক্ষন পরেই আবির বাড়িতে একা ডুকে মায়রা আবিরকে দেখে আবিরকে জড়িয়ে ধরে…..

আবির : মায়রা কি হচ্ছে এসব আমাকে ছাড়ো…. ( আবির রাগে মায়রা নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দেয়)

মায়রা : আবির তুমি এভাবে কথা বলছো কেন আমার সাথে???

আবির : কি ভাবে কথা বলছি আমি তোমার সাথে…. তোমার সাথে যেভাবে কথা বলার দারকার আমি সে ভাবে এখনও কথা বলি নি তোমার সাথে বুঝলে….

মায়রা : মানে….

আবির : মানে তুমি কি ভেবেছিলে আমি কিছু জানতেই পারবো না তুমি কি কি করেছো সে বিষয়ে…. তুমি নিজেকে খুব চালাক মন করো তাই না…

মায়রা : আবির তুমি কি বলছো আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা..

আবির : কিছুল বুঝতে পারছো না তাই না ঠিক আছে আমি বুঝিয়ে দিছি….

আবিরের চিৎকার শুনে নিরব ঘর থেকে বেরিয়ে নিচে আসে…. তিশাও একটু পরে বাইরে থেকে বাড়ির ভিতরদ এসে ডুকে… মায়রা তিশাকে দেখে আবাক হয়ে যায়

তিশা : কি ডায়রিয়া আবাকে হচ্ছো আামকে দেখে…. আবাক হওয়ারেই কথা তুমি কি ভেবেছিলে আমি পমার স্বামীকে ছেড়ে চলে যাবো তা কি করে হয় বলো আমি তো আমার স্বামীকে ভালো বাসি….

মায়রা : তারমানে তুমি সব কিছু জেনে গেছো আবির….

আবির : হে আমি সব কিছু জেনে গেছি তুমি তোমার ভুয়া রির্পোট গুলো তোমার কাছে রাখো…..

আবির মায়রার মুখের উপর ভুয়া রির্পোট গুলো ছুড়ে মারে…. আর এই দিকে নিরবের সব কিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে নিরব মেঝে থেকে রির্পোট গুলো তুলে দেখ থাকে

আবির : তুমি এতটা নিচ আমি ভাবতেও পারি না মায়রা….

মায়রা আবিরের কাছে যায়….

মায়রা : আবির আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি তার জন্য আমি এমন করেছি যাতে তুমি তিশাকে তুমি তোমার জীবন থেকে সরিয়ে দিতে পারো…..

আবির : তুমি ভাবলে কি করে আমি যদি তিশাকে আমার জীবন থেকেও সরিয়েও দেই তাহলে তোমাকে টেনে নিবো কোনোদিনএ আমি কাজটা করতাম না কোনো দিনও না….

মায়রা : আবির প্লিজ আমার ফিলিংসটা বুঝার চেষ্টা করো….

আবির : প্লিজ মায়রা তুমি এখান থেকে চলে যাও তোমাকে বিপদে ফেলার আগেই তুমি আমার বন্ধু তাই তোমাকে আমি কিছু করতে পারছি না…. তোমার জায়গাতে যদি অন্য কেই থাকতো তাহলে থাকে যে আমি কি করতাম তা তুমি কল্পনাও করতে পারছো না …. আর একটা এর পর যদি কোনো দিন তুমি তিশাার ক্ষতি করার চেষ্টা করো তাহলে কিন্তু তুমি আমার আসল রুপটা দেখবে…..

আবির এই কথাটা বলে ঘরে চলে যায়…..

মায়রা : আবির আমার কথাটা শুনো…

তিশা : এই ডায়রিয়া তকে কি বলেছে শুনতে পাস নি তাড়াতাড়ি এই বাড়ি থেকে বের হ….

মায়রা : কাজটা তুমি ঠিক করলে না তিশা এর মাশুল তোমাকে দিতে হবে….

তিশা : আরে যা যা তর মতো ডায়রিয়া কি করতে পারে সেটা আমার খুব ভালো জানা আছে…..

মায়রা বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়…. নিরব আবিরের কাছে যায়

নিরব : ভাইয়া নিচে এতক্ষন কি হচ্ছিল এসব…. তোমার ব্রেন ক্যান্সার হয়ে ছিলো আর আমাকে বলো নি আর তাও আবার সেটা মিথ্যা

আবির : সরি নিরব আসলে আমি তকে এসব বলতে চাই যদি তুই আমাকে নিয়ে চিন্তা করিস তার জন্য আর এখন তো আমি জানতে পেরেছি যে আমার কিচ্ছু হয় নি……

নিরব : হুম কিন্তু মায়রা আপু যে এটা করতে পারে আমার এখনও‌ বিশ্বাস হচ্ছে না….

রাতে তিশা একটু তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেছে আবির অফিস থেকে ফিরে এসে দেখে তিশা গভীর ঘুম…… আবির ফ্রেস হয়ে গিয়ে তিশা পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ে…. আবিরের ঠান্ডা হাত তিশার খালি পেটে রাখতেই তিশা কেপে ওঠে….. তিশা বুঝতে পারে যে এটা আবির ছাড়া আর কেউ না…

আবির : জানননন ঘুমিয়ে পড়েছো আমি কিন্তু জানি তুমি জেগে গেছো তাই আর ঘুমের ভাব করো না….

তিশা : উফফফ যান তো আমাকে একটু ঘুমাতে দেন……

আবির : এত সহজে তো তোমাকে ছাড়ছি না আগে অনেক ঘুমিয়েছো এবার না হয় জেগে থাকো……

তিশার বুঝতে বাকি রইলো না আবির কি চায়….. আবির আজকেও আবার তিশাকে নিয়ে পাড়ি দেয় সুখের এক রাজ্যে….. এভাবে আবির আর তিশার দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসর দিন গুলো কাটতে থাকে…..

একদিন তিশা কলেজ থেকে বের হয়ে দেখে আবির রাস্তার ও পাশে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে…. তিশাকে আবির দেখা মাএই হাত নাড়ায় আবির তিশাকে ইশারা করে বলে তিশার কাছে আসার জন্য কিন্তু তিশা ইশারা করে না বলে আবিরকে যাতে ও রাস্তা পাড় হয়ে আবিরের কাছে যেতে পারে……আবির অন্য দিকে মুখ করে তাকাতেই একটা বিঘট আওয়াজ হয় আবির সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে তিশা রক্তাক্ত অবস্থা মাটিতে পড়ে আছে……তিশা রাস্তা কাছে যাওয়ার আগেই ওকে গাড়ি চাপা মারে আবির গাড়িটার দিকে তাকিয়ে বুঝতে কে তিশাকে গাড়ি চাপা দিয়েছে আবিরের সাথে যে গার্ডরা ছিলো তারা গাড়িটাকে ফলো করতে শুরু করে …… আবির দৌড়ে তিশার কাছে আসে তিশার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসে….. তিশা শেষবারের মতো আবিরের নাম নেয়…..

আবির দৌড়ে এসে তিশা কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসে…….

আবির : তিশা তিশা চোখ খুলো প্লিজ তিশা শুধু চোখটা খুলে রাখো আমরা হাসপাতালে চলে এসেছি তোমার কিচ্ছু হবে আমি তোমার কিছু হতে দিবো তিশা প্লিজ চোখটা খুলো…… সোহেল তাড়াতাড়ি গাড়ি ড্রাইভ করো

তিশা জোরে একটা শ্বাস ফেলে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে আবিরের কোলে…..

আবির : তিশা তোমার কিচ্ছু হবে না সব ঠিক হয়ে যাবে ‌…..

তিশা একটা মুচকি হাসি দিয়ে আবিরের গালে হাত রাখে আবির তিশার হাতটা ধরে কিন্তু হঠাৎ করেই তিশার হাত নিচে পড়ে যায়…..আবির তিশাকে জড়িয়ে ধরে বলে……

আবির : তিশাশাশাশাশাশাা…….

আবির হাসপাতালের কড়িডোরে বসে আছে রক্ত মাখা শরীর নিয়ে এক এক করে সবাই হাসপাতালে আসে……নিরব আবিরের কাছে গিয়ে বসে

নিরব : ভাইয়া এসব কি করে হলো????

আবির কোনো কথা বলছে না শুধু তাকিয়া আছে আপারেশন থিয়াটারের লাল বাতিটার দিকে……. তিশার মা আর বোন মিলে নামাজ পড়া শুরু করে দেয় তিশার জন্যওওও….. আবিরও মসজিদে গিয়ে তিশার প্রান ভিক্ষা চায় মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে….

প্রায় পাচ ঘন্টা পর তিশার আপরাশেন শেষ হয়…..

আবির : ডক্টর আমার স্ত্রী….

ডাক্তার : সরি আমরা আসলে ওনাকে …..

ডাক্তার নিজের কথাটা বলে শেষ করার আগেই আবির ডাক্তারের কলার চেপে ধরে বলে……

আবির : সরি মানে কিসের সরি আমি তো সরি শুনতে চাই না ডক্টর আমার স্ত্রীকে আমি সুস্থ চাই ব্যাস শেষ কথা আর না হলে আমি শেয করে দিবো…..

নিরব গিয়ে আবিরকে আটকায়….

নিরব : ভাইয়া তুমি শান্ত হও…..

আবির : কি করে আমি শান্ত হবো তুই বল…. আমার ভালোবাস ওইখান ওই বিছানাতে শুয়ে আছে আর আমাকে শান্ত হতে বলছিস….

নিরব : ভাইয়াকে আগে ডক্টর কি বলে শুনি….. ডক্টর আপনি বলুন ভাবির কি হয়েছে…..

ডাক্তার : আসলে আমরা আামদের সবটা দিয়ে চেষ্টা করেছি কিন্তু ওনি কোমাতে চলে গেছে…..

নিরব : কোমাতে চলে গেছে মানে……

আবির : কত দিন পর ওর জ্ঞান ফিরবে…..

ডাক্তার : জানি এক মাসও লাগতে পারে আবার দুই তিন বছরও লাগতে পারে……

আবির : মায়রাকে আমি ছাড়বো না আজকে ওর জন্য আমার তিশার এই অবস্থা ওকে আমি জন্ত মাটিতে পুতবো…..

নিরব : ভাইয়া তুমি কি বলছো এসব মায়রা আপু কি এসব করেছে নাকি…..

আবির : হে ও এসব করেছে……

আবির ফোন বের করে গার্ডদেরকে ফোন করে……

আবির : ওকে ধরেছিস…..

__না আমরা ধরার আগেই পুলিশ ওকে ধরে ফেলেছে

আবির : কি পুলিশা ধরলো কি করে???

__আসলে ওই জায়গাতে পুলিশও ছিলো আর পুলিশ সবটা দেখেছে যে এটা ইচ্ছে করে এক্সিডেন্ডটা করেছে আর এখন এটাও জানে গেছে যে আপনার স্ত্রীকেই গাড়ি চাপা দেওয়া হয়েছিলো……

আবির : ঠিক আছে……

এক সপ্তাহ পর তিশাকে বাড়িতে নেওয়া হয় এই এক সপ্তাহের মাঝে আদালয় থেকে রায় বের হয় মায়রার যাবৎ জীবন কারাদন্ড হয় …. হাসপাতাল থেকে এনে তিশাকে আবিরের ঘরে রাখা হয়েছে তিশাকে খেয়াল রাখার জন্য চার জন নার্স রাখা হয়েছে…… এই এক সপ্তাহের মাঝে আবির নিজের প্রতি কোনো খেয়াল রাখে নি মুখে খোজা খোজা দাড়ি উঠে গেছে চোখের নিচে খালি দাগ পড়ে গেছে….. আবিরের জীবনটা পুরা বাদলে গেছে…… সারারাত তিশার হাত ধরে একা একা বকবক করতে থাকে আবির…….

এভাবেই কেটে যায় আড়াইটা বছর এই আড়াই বছরে সবার লাইফ চেইন্জ হয়ে গেছে….. নিরব আর নিসারও বিয়ে হয়ে যায় ছোট করে তিশার এই অবস্থার জন্যই ছোট করে বিয়েটা হয়…… আবির এখন চোখে চশমা পড়ে এই আড়াই বছের মনে হচ্ছে যেন আবির আরও সুন্দ হয়ে গেছে কিন্তু আবির নিজের প্রতি কোনো খেয়াল রাখে না তার পরও আবিরের বডিফিটনেস আগের মতোই রয়ে গেছে

একদিন নিসা তিশার হাত পা মুজে দিচ্ছে এমন সময় নিসা খেয়াল করে তিশার বা হাতের আঙুল নড়ে ওঠে…….. নিসা চিৎকার করে নার্সদের ডেকে আনে……. নিসা তাড়াতাড়ি করে আবিরকে ফোন করে আবির ফোনটা পিক করে…..

নিসা : ভাইয়া তিশা……

আবির : তিশা তিশার কি হয়েছে ও ঠিক আছে তো…..

নিসা : হে ভাইয়া ও ঠিক আছে কিন্তু আপনি তাড়াতাড়ি বাসায় আসুন…..

আবির অফিস থেকে তাড়াতড়ি করে বের হয়ে যত স্প্রীডে গাড়ি ড্রাইভ করা যায় তত স্প্রীডে আবির গাড়ি ড্রাইভ করে বাড়িতে আসে….. আবির ঘরে ডুকে দেখে চারিপাশে মানুষ দাড়িয়ে আছে চারিপাশে এত মানুষ দেখে আবিরের কলিজা শুকিয়ে গেছে…… আবির বিছানার দিকে তাকিয়ে আবাক হয়ে যায় তিশাকে দেখে তিশা বিছানাতে হেলান দিয়ে বসে আছে….. তিশা আবিরের দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিয়ে…… নিসা আবিরকে দেখে সবাইকে ঘর থেকে চলে যেতে বলে……আবির তিশার কাছে এসে তিশার হাতটা ধরে কান্না শুরু করে দেয়…..

তিশা : প্লিজ এভাবে কান্না করবেন না আমি তো ঠিক আছি…..

আবির নিজেকে আর সামলে রাখতে পারে নি তিশাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়…….

আবির : তুমি জানো এই আড়াইটা বছর আমি কিভাবে কাটিয়েছি…….

তিশা : এর মাঝে আড়াই বছর পাড় হয়ে গেলো আমি তো বুঝতেই পারি নি…..

আবির : তুমি বুঝবে কি করে তুমি তো চোখ বন্ধ করে ছিলে……

তিশা : সরি আর এমন করবো না এখন থেকে সবসময় আপনার পাশে পাশে থাকবো….. আচ্ছা এবার তো কান্নাটা থামান পুরুষ মানুষের এত কান্না করতে নেই বুঝলেন……

আবির : হুম বুঝেছি……

তিশা : আচ্ছা আমাদের বেবি নেওয়ার প্লেনটার কি হলো…….

আবির : তুমি সবে সুস্থ হয়ে আমার কাছে ফিরেছো এসব পরে চিন্তা করলেও চলবে…..

তিশা : হুম….

অন্য দিকে নিসাকে পিছন থেকথ জড়িয়ে ধরে আছে নিরব…..

নিসা : কি করছেন??? কেউ এসে যাবে তো

নিরব : কেউ আসবে না দরজা লক করা….. আচ্ছা বলো তো এখন ভাইয়া আর ভাবি কি করছে

নিসা : কি করছে???

নিরব : প্রেম করছে তাই আমদেরকেও তো করার দরকার….

নিসা : কচু প্রেম করছে আপু সবে সুস্থ হয়েছে বুঝলে তার মধ্যেই এত প্রেম শুরু করবে না……

নিরব : কিন্তু আমার বউ তো সুস্থ তাই না তাহলে তো একটু প্রেম করাই যায়…..

নিসা : এই না না একদম না……

নিরব নিসার ঠোটের নিজের ঠোট দুটো মিলিয়ে দেয়……

রাতে তিশা আর আবির এক চাদরের নিচে বসে আছে চাদের দিকে মুখ করে……

তিশা : আচ্ছা আপনার খুব কষ্ট হয়েছে না আমাকে ছাড়া থাকতে……

আবির : কই না তো ( মজা করে বলে)

তিশা : কিহ বললেন তারমানে আপনার আমাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হয় নি ( রেগে)

আবির : আরে আরে আমার জান এত রাগ করো না খুব কষ্ট হয়েছে তোমাকে ছাড়া থাকতে…….

তিশা : সত্যি……

আবির : হুম

তিশা আবিরের কপাল গালে কিস করে আবিরের দিকে মুচকি করে একটা হাসি দিয়ে আবিরের ঠোটে তিশা নিজের ঠোট বিলিয়ে দেয় তিশা সরে আসতে চাইলে আবির আরও কাছে টেনে নেয় কিছুক্ষন পরেই আবির তিশাকে ছেড়ে দিয়ে বলে……

আবির : আজকের জন্য এতটুক থাক তুমি এখনও সুস্থ হয় নি ভালো করে আড়াই বছর যখন অপেক্ষা করেছি তখন আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে পারবো……. চলো ঘরে বাইরে ঠান্ডা তোমার ঠান্ডা লেগে যাবে

আবির তিশাকে কোলে তুলে‌ এনে বিছানাতে শুয়ে দেয় তিশা আবিরের বুকে মাথা রাখে……

তিশা : আজকে শান্তিতে ঘুমাতে পারবো আমার বুকে মাথা রেখে……

আবির তিশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তিশার কপালে কিস করে……

এভাবে তিশা আর আবিরের আগামী দিন গুলো কাটতে থাকে তিশা আর আবিরের মাঝে একজন নতুন ছোট সদস্য আছে যাকে নিয়ে আবির আর তিশা সারাদিন মেতে থাকে‌……. সাথে নিসার শরীরের ছোট এক প্রান বেড়ে উঠছে বলতে গেলে রহমান ভিলাতে সুখের বন্য ভয়ে বেড়াছে

________❤সামাপ্ত❤_______

অবশেষে শেষ করলাম গল্পটা অনেক বার বলেছি গল্পটা শেষ করে দিবো কিন্তু শেষ করতে পারি নাই কিন্তু আজকে শেষ হলো……আর শেষ পর্বটা কেমন হয়েছে প্লিজ বলবেন….. সবাইকে অনেক ধন্যবাদ এই এক মাস আমার পাশে থাকার জন্য আমাকে আর আমার গল্পকে সার্পোট করার জন্য…… সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর আমার সালাম নিবেন…… আবার কবে গল্প নিয়ে আসতে পারবো তা জানি না তবে চেষ্টা করবো তাড়াতাড়ি নতুন গল্প নিয়ে আসার জন্য ততদিন আমাকে কিন্তু সবাই‌ মনে রাখবেনখোদা হাফেজ ❤❤❤❤❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here