#মেঘবিলাসী
#israt_jahan_arina
#part_2
পরিবার জিনিসটা কি তা জিসান এর ঠিক জানা নেই। বাবার ছায়াটা সে অনেক ছোট বেলাতেই হারিয়েছে।তার জীবনে মা ই সব।তার মা বাবা ভালোবেসে বিয়ে নামক পবিত্র সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছিল। বিয়েটা অবশ্য তারা পালিয়ে করেছিল। জিসানের বাবা ছিল অনাথ। তাই জিসানের নানা এ সম্পর্ককে কখনই মেনে নেয়নি। এর জন্যই জিসানের বাবা মারা যাওয়ার পর,কখনো জিসানের মা সেখানে ফিরে যায়নি। জিসান বড় হয়েছে অনেকটা অভাব এর মধ্যে। জিসানের মা তার ছেলেকে ভালো রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। জিসান সবেমাত্র এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করেছেন। রেজাল্টের অপেক্ষায় ছিল সে। জিসানের মা জানতেন ছেলে অনেক ভাল রেজাল্ট করবে। জিসানের ও তাই বিশ্বাস ছিল তবুও কিছুটা ভয় কাজ করত তার মধ্যে।
একদিন দুপুরে জিসান খাওয়া-দাওয়ার পর বাইরে বেরিয়ে ছিল। মূলত সে টিউশনির জন্যই বেরিয়েছিল। নিজের হাত খরচ চালানোর জন্য সে কয়টা বাচ্চাকে পরাতো। সন্ধ্যায় বাসায় এসে দেখে তার মা বিছানায় শুয়ে আছে। এই সময় কখনই তার মা ঘুমায় না। তাই জিসানের একটু সন্দেহ হল। সেটা আমাকে বেশ কয়েকবার ডাকলো। কিন্তু অপর পাশ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া গেল না। জিসান অনেকটাই ঘাবড়ে গিয়েছিল তখন। সে দ্রুত তার মাকে হসপিটালে নিয়ে যায়।
সে তখন বাইরে অপেক্ষা করছিল ডাক্তারের জন্য। ডাক্তার কে দেখে সে দ্রুত সেখানে এগিয়ে যায়।
“ডক্টর আমার মা এর কি অবস্থা এখন? ডক্টর কে তখন বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছিলো। জিসান যেন আরও অস্থির হয়ে উঠল। সে আবার ডক্টর কে জিজ্ঞেস করল “ডক্টর প্লিজ বলুন আমার মায়ের কি অবস্থা? ডক্টর একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললেন”আপনার মা স্ট্রোক করেছেন। তার অবস্থা এখন অনেকটা ক্রিটিক্যাল।জিসান এর মা হাসপাতালে প্রায় চার দিন ছিল। এর পর জিসান তার শেষ অবলম্বন টুকুও হারায়।তার পরের সময় টা জিসান এর জন্য অনেক কষ্টদায়ক ছিল।
জিসান আর তিন্নি একসাথে বসে আছে।তিন্নি তার কোনো কথার জবাব দিচ্ছে না। হটাৎ জিসান এর চোখ গেলো খাটে রাখা শপিং ব্যাগটার উপর।ব্যাগ টা দেখে জিসান একটা মুচকি হাসি দিল, আর বললো “এই টিশার্ট টা কি আমাকে দেবেন বলে কিনেছেন?” তিন্নির এবার সত্যি এই ব্যাগটা রাতুল ভাই এর উপর ছুড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে।বাসায় আসার সময় একটা শোরুম এ এই টিশার্টটা দেখে সে কিনে ফেললো।মূলত এইটা কিনার সময় রাতুল ভাই ছিল তার মাথায়।কিন্তু সে এইটা যে রতুল ভাইকে দেবেনা তা আগেই জানত।তবে তার মাথায় মোটেও জিসান ছিল না।তিন্নি জিসানকে কিছু না বলে ওয়াশ রুমে চলে গেল। এতে অবশ্য জিসান খুব একটা অবাক হলনা।
তিন্নি শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে ভাবছে , লোকটাকে এত ইগনোর করার পরও কেন সে বার বার আসে।এই 10 দিনে লোকটা আরো তিন দিন এসেছিল। কিন্তু তিন্নি তার সাথে দেখা ও করেনি। এর জন্যই হয়তো লোকটা আজ সোজা তার বেডরুমে চলে এসেছে। যাতে তিন্নি কিছুতেই রুমের দরজা লক করে বসে থাকতে না পারে। তার বুদ্ধির প্রশংসা করতে হয়। বুদ্ধি না থাকলে তো আর crime branch এ থাকতো না। যার মাথায় সারাক্ষণ চোর,ডাকাত আর খুনি ঘুরে তার কি সাধ্য হবে তিন্নির মন বুঝার?
বিয়ের আগে জিসানের সাথে তিন্নির শুধু একবার দেখা হয়েছিল। তিন্নির ফুফা জিসান এর সাথে এক ডিপার্টমেন্টে কাজ করে। সেই সুবাদে তিনি এই প্রস্তাব রাখে তিন্নির বাবার কাছে।তিন্নির ফুপা জিসানকে খুবই পছন্দ করে।আর তিন্নির বাবা বোন জামাইকে খুব শ্রদ্ধা করে।
তিন্নিকে প্রথম দেখে জিসান কিছু সময় হারিয়ে গিয়েছিল।হলদেটে সাদা অভার সাথে কাজল কালো সেই চোখএ আটকে গেল সে।সবচাইতে বেশি যা তার মন কেরেছিল টা হলো তার কোমর অব্দি বাদামি চুল।যাকে love at first sight বলে।