মেঘের আড়ালে পর্ব ৯+১০

#মেঘের আড়ালে 💞
#পর্ব__০৯
#লেখিকাঃফাতেমা জোহরা নাভিলা

১৯.
“সাদিয়া স্কুলে যাওয়ার পরই বাধে সমস্যা”।ইয়াদ অর খালামনি কে বলে ও সাদিয়াকে বিয়ে করতে চায় আজ এখনি।।। সবায় ইয়াদ এর কথা শুনে বড় সড় হার্ট ফেইল টাইপ বিষম খায়।।। ইয়াদ এই সব কি বলছে??? আদৌ কি বুঝে বলছে??? আর তার থেকে বড় কথা সাদিয়া সবে মাএরো দশম শ্রেনীতে পড়ে আর বয়স ও মাএরো ষোল।এখন বিয়ে কিভাবে সম্ভব,,,,,,,,ইয়াদ এর কথায় সেই দিন আমরা কেউই রাজি হয়নি আর রাজি হবো বা কেন,এভাবে কি মুখের কথায় কোন বিয়ে দেওয়া যায় । কিন্তু অর জিদের ভসে পরে এক প্রকার হেরে ইয়াদ আর সাদিয়ার বিয়ে ঠিক করা হয় তিনবছর পর সাদিয়ার এইচ এস সি পর হবে ওদের বিয়ে। ইয়াদ প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজি হয়ে যায় কারন সাদিয়া যে এখন খুব ছোট বিয়ের জন্য। বিয়ের বিষয় কথা সবায় জানলেও সাদিয়াকে এই ব্যাপারে কিছু জানাতে আপাততো পরীহ্মা শেষ হওয়া না পর্যন্ত নয়ন না করে।।।।।

.

.
আমার পঁচিশ বছর এর ছেলে যেই কিনা কোনো মেয়ের দিকে এর আগে ভালো করে ভুলে ও চোখ তুলে তাকাতো না, সেই কিনা হঠাৎ এইভাবে ষোল বছরের এক মেয়ের মায়ার মোহতে এমন ভাবে পরে যাবে, যাকে সেই প্রথম দেখাতেই বিয়ে করতে চায় ডাইরেক্ট ।।(মুচকি হেসে)।

.

.

সেইদিনের পর থেকে শুরু হয় ইয়াদ এর অদ্ভুত পাগলামো গুলো সাদিয়ার প্রতি ধীরে ধীরে। সাদিয়াকে ঘিরে তার সব চিন্তা ভাবনা ছিলো উম্মাদ এর মতো সাদিয়াকে ভালোবাস তো আমার ছেলে।

.

.
“উনি কাউকে এতো ভালোবাসে শুনেই বুকে বা পাশে কেমন জানি এক পিনপিন ব্যাথায় অনুভবে মোচড় দিয়ে উঠল,,,,,,,, কথা গুলো শুনতে কোথাও আমার খুব খারাপ লাগছে কেন।।।। আর চাপা অভিমানই বা হচ্ছে মনে উনার উপর ? কেন জানি না অই সাদিয়া মেয়ের উপর খুব রাগ উঠছে বিষাদহীন ও লাগছে শুনতে,,,,, কাপা কাপা আওয়াজে তার পর,,,,,, কি হয়েছিলো মামনি।

.

“এর পর না হয় আমি বলি নূর”,,,,,

.
হঠাৎ কথার আওয়াজ অনুসরণ করে পিছে প্রশ্ন বোধক চোখে তাকিয়ে দেখি জিজু দাঁড়িয়ে আছে।।।।। জিজু তুমি,,,,,,

.
হ্যা আমি মলিন ভাবে তাকিয়ে চোখ দুইটো পানিতে কিছুটা ছলছল করছে,,,,, মামনির সামনে এসে কাধে হাত দিয়ে,,,, আম্মু আমি বলছি অকে সব,,,,,,,, দীর্ঘ শ্বাস ত্যাগ করে,,,,,

.

ভাই সাদিয়াকে খুব রেস্ট্রিকশনে রাখতো সেইদিন এর পড় থেকে, চোখের কড়া নজরে শাসনে রাখতো একটু উনিশ থেকে বিনিশ হলেই পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলতো আমার ভাই (মলিন হেসে)। সাদুকে কাউর সাথে সহজে মিশতে দিতো না ভুলে কোন ছেলের সাথে তো আরো আগেনা ।।। অপরিচিত কোনো ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলে কাউর কাছ থেকে এই তথ্য শুনলেই খুব রেগে যেতো (আমার ভাই যে খুব পুরতো সেই লেবেল এর অকে হেসে কেউর সাথে কথা বলতে দেখলেই)। আর বেচারি সাদিয়ার উপর রাগের সব টনেডোর ঝড় বয়ে যেতো।।। কোথাও ভুলে একা বের হতে ও দিতো না। কোন ছেলের বা অপরিচিত কাউর সামনে ও বেশিক্ষণ থাকতে দিতোনা আর ঘোমটাহীন ছাড়া গেলেতো কথা নেই ও রেগে যেতো খুব।।।।। দিন দিন অর ভালোবাসায় উম্মাদ হয়ে যাচ্ছিল আমার ভাই তাইতো অর সামান্য সমস্যা হলে চোখের পানি দেখলে ও সহ্য করতে পারতো না। তখন ভাই নিজেকে এক প্রকার দোষারোপ করতে শুরু করতো সব কিছুর জন্য পাগলের মতো করে। ভাইয়ের ভালোবাসায় পাগলামোটা আর বাচ্চামো টা বড্ড বেশী ছিলো, অভস্য এতে আমাদের দুই পরিবার কোনো সমস্যা ছিলো না আমরা অর এতো ভালোবাসা আর পাগলামো দেখে খুশি হতাম,আর বলতাম যে ও সাদিয়াকে অনেক ভালো রাখবে অর কোনো কষ্ট কখনো অনুভব হতে দিবে না ,,,, না আজ আর না ভবিষ্যৎ।।।।

.

মামুনিঃ জানিস মামনি আমার ছেলে এতোই পাগল ছিলো নারায়ণগঞ্জ থেকে খুলনা রোজ সকালে বাই রোডে করে যেতো সাদিয়াকে একবার এক নজর দূর থেকে দেখার জন্য । (আচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে)

২০.
ইরফানঃ সাদিয়া প্রথমে ভাইকে একদমই সহ্য করতে পারতোনা তার পাগলামো তে খুবই বিরক্তি হতো, অবশেষ ভাইয়ের ভালোবাসা দেখে পরে ধীরে ধীরে অয় ও আস্তে আস্তে মেনে নিতে শুরু করে ভাইয়াকে,,,,,, ভালোবেসে ফেলে। এর মাঝে আমাদের দুই পরিবার হাসি খুশিতে দেখতে দেখতে কখন যে তিনটি বছর কেটে যায়। এর মধ্যে ভাইয়ার সাদিয়ার প্রতি পাগলামো গুলো কিছুটা কমে আসে কিন্তু ভালোবাসা আগের থেকে অনেক গুন বেরে যায় । বলে না দূরে থাকলে ভালোবাসাকে ভালো করে উপলব্ধি করা যায়। দিন গুলো অদের খুব ভালো যাচ্ছিল একে উপরকে ঘিরে।।।।।।

.

.

” এখন সাদিয়া কোথায় জিজু কাপা কাপা গলায়,,,,,,,উনার সাথে কেনো নেই??? এতোই যদি একে উপকে ভালোবাসতো তারা,,,,,, ওদের কি বড় সড় কোন ঝগড়া হয়েছিলো??? আর উনার অব্যস্থা এমন কি করে হলো!!!!

.

.
“নেই।।।।ভ্যাবলেশহীন ভাবে।।।।

.

নেই মানে???? কোথায় উনি??

.

“যেখান থেকে ফেরা আদৌ সম্ভব না কখনো।।।।। কান্নামিশিতো কাপা কাপা আওয়াজে”।।।

.

মানে!!!!

.

মামনিঃ সাদিয়ার এইচ এস সি পর,,,, ইয়াদ আর সাদিয়ার বিয়ের ডেইট ঠিক করা হয় প্রায় এক মাস পর ,,,,,, এনগেইজমেন্ট এর বেশ কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে বান্দরবন যাচ্ছিলো সাদিয়া নয়ন আর অর বাবা সাদিয়ার ফুঁপির বাসায় কিছুদিন এর জন্য ঘুরতে আর ওদের ইনভাইট করতে।অইখান থেকে আসার পথেই অদের কাপা কাপা আওয়াজে ওরা যেইই বা ববাসে টায় করে আসছিলো সেই বাস,,,,,,, স স সড় আড়ক দ দূরঘটনা হয় কান্না মিশিতো শুরে।।।।।।জা জা জানিস মামনি অকে দূরঘটনার স্থলে অ অনেএএক খুঁজেছি কিন্তি পাইনি আমরা। কিন্তু নয়ন আর সাদিয়ার বাবার নিথর দেহ পেয়েছি,,,,,,,ফুঁপিয়ে কান্না করে।যেখানে এক্সিডেন্টটা হয় অটা পুরোটা ছিলো পাহাড়ি এলাকা। অইখান থেকে পরলে আদৌ বাচাঁ সম্ভব না কাউর।।।।।।। আমার ছেলে পাগল ছিলো না পাগল হতে বাধ্য হয়েছে।।।।অনেক খুঁজেছে অকে পাইনি।।।।।।।। দিন এর পর দিন মাস এর পর মাস আমার ছেলে পাগল এর মতো নির্ঘুম হয়ে ওকে তন্য তন্য করে খুঁজে বেড়িয়েছ সেই যায়গায় কিন্তু পাইনি।।।।।। ইয়াদক তখন উম্মাদ এর মতো করতো সামলানো,,,,,, শান্ত করা খুব দ্বায় হয়ে যাচ্ছিল আমাদের কাছে দিন দিন।।

“তখন ইয়াদ এর মানসিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না দিন দিন অর পাগলামো গুলো বেরে যাচ্ছিল।শারিরিক অবস্থা দিন দিন আস্তে আস্তে ও খুব খারাপ যাচ্ছিল। তখন না পেরে বাধ্য হয়ে ছেলেকে হসপিটালে ভর্তি করাতে হয় আমাদের। ডাক্তার, নার্স যাকেই সামনে পেতো তাকেই চিল্লিয়ে বাচ্চাদের মতো বায়না করে কান্না করে বলতো সাদিয়াকে এনে দিতে।।।।।।।আচল দিয়ে চোখের পানি মুছে।।।।।।।। তোর আব্বু ইয়াদ এর এই করুন অব্যস্থা দেখে তখন আমাদের সাজেস্ট করে সাইকিয়াট্রেস্টের কাছে যেতে।।।।।। হসপিটাল এর ডাক্তার ও আমাদের তখন ঢাকা এক সাইকিয়াট্রেস্টের নীল এর কথা বলেন । কোন উপায় না পেয়ে ইয়াদকে সেইখানে নিয়ে যাই আমরা…….
জানিস মামনি আমার ছেলের শারীরিক অসুস্থতা যটতা না খারাপ ছিলো তার চেয়ে বেশি কষ্ট অর অসুখ মন মানসিকতায় ছিলো।। পরিস্থিতি সম্মুখীনে আমার চঞ্চল হাসি খুশি সর্বদা থাকা আমার ছেলে চুপ চাপ গম্ভির ঘর বন্দী হয়ে যায় দিন দিন ও হাসতে কথা বলতে যেমন ভুলেই গেছে আমাদের সাথে। কিন্তু হঠাৎ ইরফান এর বিয়ের দিন ও তিন বছর পর সেই দিন হেসেছিলো তোর কথায়।।।।।।।আমি জানি মামনি আমি তোর বাবা সেইদিন তোর সাথে ঠিক করিনি।।।।।আমার ছেলের দিকে তাকিয়ে অনেকটাই সার্থপর হয়ে গিয়েছিলাম তাইতো তোর আব্বু থেকে তোকে চেয়ে বসলাম,,,এই তিনটে বছর পর আমার ছেলে যদি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে থাকে তাহলে তোর জন্য হয়েছে।।।।। আগের মতো যদি কিছুটা আমাদের সাথে নরমাল হতে পেরেছে শুধু তোর কারনে।। হাত ধরে।।।।পারবিনা মামনি আমার ছেলেকে আগের মতো করে তুলতে বলনা মামনি।।।
#মেঘের আড়ালে 💞
#পর্ব__১০
#লেখিকাঃফাতেমা জোহরা নাভিলা

২১.
ব্যালকনি দাঁড়িয়ে আছে নূর চোখ দুইটো তার বাহিরে কুয়াশা চাদরে মুড়ানো আকাশের বেদ সূযের এক চিলতে আলোর দিকে। প্রতিটি রাত এর পর এক নতুন দিন আসে আমাদের বাচাঁর জন্য এক নতুন সূচনা নিয়ে।।। আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে ব্যালকনি থেকে রুমে আসলো নূর কাল সারা রাত সে নিঘুমে কাটিয়েছে চোখ মুখে তার এক ক্লান্তি ছাপ।।। রুমে এসেই চোখ গেলো ইয়াদ দিকে।।।।।
.

.
ইয়াদ বেডে এখনো কম্বল মুড়ি দিয়ে বাচ্চাদের মতো শুয়ে আছে। আমি ধীরো পায়ে উনার পাশে এসে বসলাম।এতো দিনে উনার এতো কাছে এসে এভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা হয়ে উঠেনি। ফর্সা হাসি মাখা উজ্জ্বল চেহারা চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে চেহারাতে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট ফুটে উঠেছ , খোঁচা খোঁচা দাড়ি গুলো বেশ বড় হয়েছে ।।।। কতোটা রাত যে নিঘুমে কাটিয়েছে বুঝাই যাচ্ছে চোখের নিচের কালি গুলো দেখে।।। মাথা হাত বুলিয়ে,,,, কপালে পরোম আদরে গম্ভির উষ দিয়ে ইয়াদ হাত নিজের হাতের বাজে নিয়ে। ।।। আমি আপনার বাজে বউ না ইয়াদ,,,,, তাইতো আপনার রাগের আড়ালে এতো পাহাড়ের মতো জমিয়ে রাখা কষ্ট গুলো বুঝতে পারিনি।।।।(ফুঁপিয়ে কান্না করে)। টাক টেনে টেনে,,,,,,, আমি কথা দিচ্ছি ইয়াদ আপনাকে আমি আর এভাবে কষ্ট পেতে দিবো না।।।আমি আপনার জীবনে #মেঘের আড়ালে হয়ে সব আধার কাটিয়ে দিবো।।।।যেখানে না থাকবে হারানোর ভয় আর না থাকবে কোনো সংশয়।।। শুধু থাকবে অফুরান্ত ভালোবাসা।।।আমি জানি না আমি আপনাকে আদৌ কতো টুকু বুঝে উঠতে পেরেছি,,,, কিন্তু এইটুকু বলতে পারি যতটুকু বুঝলে একজনকে নিসার্থ ভাবে ভালোবাসা যায়। আমি জানি না আমার এই নতুন সুপ্ত অনুভুতিগুলো কে,,,কি আদৌ ভালোবাসার নাম দেওয়া যায় কিনা। কিন্তু আমি এটা বুঝে গেছি এই রাগি রাক্ষস বদ মেজাজি ইয়াদ সাইকোহীন নূর এর জীবন ব্যাথ।।।। আজ থেকে নতুন করে নতুন আফতারে আমাদের পথ চলা শুরু হবে সবকিছু নতুন ভাবে কি রেডিতো।। ম্রিস্টার সাইকো জামাই।।।।।।।।

.

.

“চোখের উপরে কিছুক্ষণ পর পর বার বার পানি ছিটা আসাতে বিরক্তি নিয়ে চোখ খুলে ইয়াদ,,,,,,,,, ঘুমো ঘুমো জড়ানো চোখ জোড়া খুলে সেয় থ অবাক হয়ে যায় কিছুটা।।।।।।।। আচ্ছা বেশিহ্মন ঘুমানোর কারনে কি আদৌ ভুল দেখছে না তো,,, না এমন তো হওয়ার কথা না,,,,,,,চোখ ডলে আবার তাকায় এভার ও সেই একি দেখছে।।এভার সে শুয়া থেকে উঠে বসে আশেপাশে তাকিয়ে চোখ বুলিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে সে আসলেই কথায়।।।।নাহ সে তো তার রুমেই আছে তাহলে।।। খাট থেকে ধীরে পায়ে ব্যালকনি সামনে এসে দাঁড়ায় কপাল কুঁচকে ,,,,,, তার সামনে ঠিক এক রমণী কালো শাড়িতে উল্টো দিকে মুখ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাতে তার তোয়ালে যা দিয়ে আপাততো চুলগুল ঝাড়তে ব্যস্ত সে,,,,,, আর তার সাথে তালমিলিয়ে তার হাতের চুড়ি থেকে এক মিষ্টি টুংটাং ছন্ধ বাজছে,,,, সূয আলোতে সোনালি রঙ এর চুড়ি গুলো টুংটাং সাথে সং সেজে নৃত্য করছে চিকচিক করে হাত উঠা নামানোর সময় ,,,,,,,চোখ ফিরিয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সবে মাএরো সাতটা বিশ বাজে।।।এটা কি কোনো ঘোর লাগানো সপ্ন,,,,,,,,, সপ্ন হলেও ভালো,,,,, কেন জানি এই দৃশটা দেখতে অতো মন্দ ও লাগছেনা মুখে এক হাসি দিয়ে,,,সাথে মন কাড়া এই টুংটাং ছন্ধ শব্দ শুনতে ভালোই লাগছে।।।।বারান্দা থাই এর সাথে হেলাল দিয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাত বুকে বাজ করে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে ইয়াদ সেই রমণীর দিকে।।।এভার সে রমণী হাতের তোয়ালে ঝেড়ে টানটান নিখুঁত ভাবে বারান্দায় গ্রিলে শুকিয়ে দিলো।।। ইয়াদ তার কার্যকালাপ গুলো দেখছে,,,,কোমরে শাড়ি গুঁজানো ছিলো তা টেনে ঠিক করতে করতে এভার সে গুরে তাকালো।।।।।।।।।।।। ইয়াদ এর মুখ থেকে অফুরান্ত সুরে কপাল বাজ করে বের হলো ননননূরর।।।।।।। এটা আসলেই সপ্ন ছিলো??? নূর শাড়ি বা কেন পরবে এতো সকালে!!!!! অতো শাড়ি পরে না।। চোখ বন্ধ করে।।শ্বাস নিয়ে।।।। ভাবছে সে।।।।

.

.
ছি আমি আপনাকে কতোটা ভালো মনে করেছিলাম আপনি কতোটা খারাপ।।।।।একটা নিরহ অবলা মেয়েকে আপনি এভাবে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছিলেন এতক্ষণ ধরে।।।।। হায় হায় হায় এই মুখ আমি কাকে দেখাবো এখন। (মুখে হাত দিয়ে)

.

মানে!!!!!কি বলতে চাও তুমি?? (চোখ খুলে) বড় বড় করে তাকিয়ে বেকুব এর মতো করে।।।

.
আপনি আমার দিকে এভাবে ক্যাবলাকন্তর এর মতো পুয়া মাছের মুখ করে ইইইইয়য়য়া বড় হ্যা করে তাকিয়ে ছিলেন কেনো????সামনে এসে।।।। বলুন বলুন ভ্রু নাচিয়ে।।।।

.

তুমি এতো সকালে আজ শাড়ি কেন পরেছো??? আর এমন সং সেজে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছো কেন??? ধমক দিয়ে।।।

.
প্রশ্ন বদলে উল্টো প্রশ্ন করা আরে বাহ হোয়াট এ টেকনিক ইয়াং ম্যান কাধে চাপোট দিয়ে।।।।।। শাড়ি পরেছি তো কি হয়েছে মহাভারত তো আর অশুদ্ধ হয়ে যাইনি আমার শাড়ি পরাতে।।।। আমার এই টুকু একটা ছোট মন (হাত দিয়ে দেখিয়ে) সেখানে শাড়ি পরতে চাইতেই পারে আর সং সাজা কই দেখলেন সিদ্দীকি সাহেব (ভ্রু-কুঁচকে) । দেখছেন আমার কপালটা কতো বড় দেড় ইঞ্চি এক ফুটো একে তো সাইকো জামাই কপালে এসে জুটলো ২য় সেকেন্ডনাল মাল পাইলাম শেষমেস আফসোস এর সুরে বিড়বিড় করে।।।। তার উপর কথায় কথায় বেটা আমার উপর হুদাই খালি চিল্লায় নিজেতো একটা বয়ড়া মনে করে আমিও বয়ড়া।।।।।। তার উপর এখন আবার দিন কানা রাত কানা রোগ এসে আমাদানি হইলো।।।।।।।।।। হায়রে দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে।। হোয়াট এ টেনে টুনে কপাল!!! কি হবে এখন আমার।।।

.
সার্ট আপ।।।।।। ধমক এর শুরে।।।।।

.

অয়য়য়য়য় আপনি এতো কিউট কেন।।।আগে তো খেয়ালই করিনি থাক এখন তো দেখলাম।। ৩২ বাতি দিয়ে।।। অলে আমার কিউটিরে টুনুমুনু জামাইরে রাগলে তোমায় আরো লাগে হেব্বিরে।। গাল টেনে।।।

.

ইয়াদ কিছু বলতে যাবে,,,, নূর এর এমন কথা শুনে বড় সড় সর্ক খেলো।।।।।বড় সড় হ্যা করে তুমি ঠিক আছো কপালে হাত দিয়ে।।ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো তোমাকে কোনো সমস্যা হয়েছে তোমার,,, বলো আমাকে নূর,কোথায় ব্যাথা পেয়েছো।।।(চিন্তিতো হয়ে)।

.

সমস্যা হলে তো নিয়ে যেতেই হবে চিন্তিতো হওয়ার ভঙিতে।।।সেইতো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন কিন্তু( লজ্জা পাওয়ার ভঙিতে।।।) এখন না পরে,,,,

.
মানে!!!! পরে নিয়ে যাবো কেনো??? এখনই নিয়ে যাব চল।।। এতো সকালে,,,,,

.
এইইই আপনি এতো রসকষহীনা কেন বলুন তো।। মনে একটু ও কি রসিক্তা অবশিষ্ট আর নাই।। সব কি অই চিরতায় শেষ করে দিসে আল্লা। এখন তো দেখছি নিজেকেই ধান ক্ষেত করে নিজেকেই কষ্ট করে আবার পাকা ধানে গিয়ে আমাকেই মই দিতে হবে।।। জীবনটাই দেখছি বেদনা সেখানে রেডিমেড কিছু আর পাইলাম না।।।।। কপালে হাত দিয়ে গোমরা মুখ করে।।।সরুন তো এমন খাম্বার মতো না দাঁড়িয়ে থেকে।।। কতো কাজ আছে আমার আপনার মতো আকাশ কুসুম ভাবার মতো টাইম নাই।।বলে ধাক্কা দিয়ে হন হন করে নিচে চলে গেলো।।।।।
.

নূর জাওয়ার দিকে ইয়াদ কিছুক্ষণ অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে কি হলো এসব,,, ও কি এসব আবাল তাবল বললো সবই অর মাথার উপর দিয়ে গেলো মনে হচ্ছে।।। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে রুমে পা দিতেই ধপাস খেয়ে পরে গেলো।।।।।।।। এই মাইয়া জিন্দিগিতে আর ভালো হইলো না,,, চুল ঝাড়তে এসে বারান্দাকেই চুলের পানি দিয়ে ঝেড়ে গেছে।।।ফাজিল মাইয়া।।।।কমোড়ে হাত দিয়ে।।।

২২.
ড্রায়রিং রুমে সবায় বসে এক সাথে নাস্তা করছে কিন্তু ইয়াদ তাকিয়ে আছে নূর এর দিকে কমোড় ব্যাথায় ঠিক করে হাটতে ও পারচ্ছেনা আর বসতে তো আরো কষ্ট হচ্ছে,,,,কিছুক্ষণ পর পর ব্যাথায় রাগি লুকে তাকাচ্ছে । কিন্তু নূরের তো সেদিকে খেয়াল করার সময় নেই বললেই চলে।।।সেই পাকা গিন্নীদের মতো কমোড়ে আচল গুঁজে সবায়কে খাবার দিচ্ছে চুলগুলো আলোমেলো হয়ে আছে বিরক্তি নিয়ে কিছুক্ষণ পর পর কানের পিঠে গুঁজছে আর হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে কপালের ঘামের বিন্দু গুলো মুচছে।।। আচ্ছা শাড়ি পরলে কি সব মেয়েদের এমন
maturely এসে পরে,, তখন কি সবায়কে এমন বড় বড় লাগে হঠাৎ করেই।।।ইয়াদ আড়চোখে নূরকে কিছুক্ষণ পর পর দেখছে আর ভাবছে কথা গুলো ।।।

.

কিরে দাদুভাই খাচ্ছিস না কেন???বসে আছিস যে!!

.
আমার হয়ে গেছে দাদিমা।।।।আর খাবো না।।নূরের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে। কেউ যদি ভেবেই থাকে ঘরের কাজ দেখিয়ে পাকা গিন্নী সেজে আজ কোচিং এ যাবেনা আর আমি কিছু বলবো না তাহলে তার এটা নিহাত ভুল ধারনা।।।গম্ভীর হয়ে।।।।

.

.
আমি জানি আপনি যে আমার পরোম সৌভাগ্য করে পাওয়া আল্লাহ থেকে অনলি ওয়ান পিস ইবলিশ মার্কা জামাই তাই এসব আসাও মনে আর দেখা দেয় না আমার।। যাইহোক,,, ম্রিস্টার সাইকো আপনি এক মিনিট বসেন আমি দশ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আসছি।।মামনি আজ তুমি আমি আর আপি মিলে রাতে রান্না করবো ঠিক আছে।।।গালে চুমো দিয়ে।।।। আগে থেকেই বলে রাখলাম তখন কিন্তু কোনো ভাবে না করতে পারবে না আমাকে।।।

.
আচ্ছা ঠিক আছে।।।। পাগলি মেয়ে একটা।।।মুচকি হেসে।।।।।।

.

.

.
গাড়িতে বসে নূর মুঠো ফোনে ক্যান্ডি ক্রাস খেলছে আর ইয়াদ ড্রাইভ করছে আর আড়চোখে নূরের মতিগতি বুঝার চেষ্টা করছে আজ এতো শান্ত।।।।

.
আচ্ছা আমাকে দেখতে কি আজ সুন্দর লাগছে???ফোনের দিকে তাকিয়ে।

.
মানে!!!
.
উফফফফ,,,,, এতো মানে টানে করেন কেন কথায় কথায়? কপাল কুঁচকে।।। কথা কি বুঝেন না? না কথায় বেজাল আছে কোনটা? এতো নিরামিষ হলে আমি টেম্পুটা চালামু কেমনে মশায়।।।।

.
এখানে টেম্পু আসলো কোথা থেকে।।।। যে তুমি চালাবে??আর গাড়ি থাকতে তুমি টেম্পু চালাবা কেন??

.
হায়রে,,,,,বুঝলে বুঝ পাতা না বুঝলে কচুঁ পাতা বিড়বিড় করে।।

.
কিছু বললে!
.
নাহ,,,,,
চলবে,,,
[খবেন আসা করি।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here