যদি দেখা না হতো পর্ব শেষ

#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_১৯ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu


শুভ্র দৌড়ে ওটিতে গেলো,,, গিয়ে দেখে তানিশা ব্যাথায় ছটফট করছে,,,তানিশার এমন অবস্থা দেখে শুভ্রের চোখ থেকে টপটপ করে পানি পরছে,,,

শুভ্রঃ তানিশা তোমার কিছু হবেনা দেখো,,

তানিশাঃ শুভ্র আমার বেবির আর তোমার নিজের খেয়াল রেখো

শুভ্রঃ কি বলছো তুমি এসব

তানিশাঃ তোমাকে লুকাতে হবে না,, ডাক্তার সবই বলেছে আমাকে,,,

এমন সময় ডাক্তার ওটিতে প্রবেশ করে তার সাথে নার্সরাসহ,,,

শুভ্রঃ দেখো তানিশা ডাক্তার তো চেষ্টা করবে,,আমি তোমাকে চায়,,, তুমি বেঁচে থাকলে আর ও বেবি হবে,,আর আমাদের এই বেবি তো আমাদের ভেতরেই থাকবে তাই না

তানিশাঃ প্লিজ আমার কথা বোঝার চেষ্টা কর,,তুমি যখন আমার থেকে দূরে চলে গেছিলে তখন কিন্তু ওই বেবির জন্য আমি বেঁচে ছিলাম নাহলে তুমি কখনোই আমাকে পেতে না শুভ্র।ও তো কোনো অন্যয় করেনি,,ওকে এই পৃথিবীর আলো দেখানোর দায়িত্ব এখন আমার হাতে,,, আর ওকে বড় করার দায়িত্ব তোমার

ডাক্তারঃ দেখো তানিশা আমার মনে হয় তোমাকে বেশি প্রয়োজন তোমার হাজবেন্ডের

তানিশাঃ আপনার তো সন্তান আছে,,,কতো কষ্ট করে আপনিও এই পৃথিবীতে এনেছেন,,দীর্ঘ দশ মাস পেটে রেখে মাতৃত্বের সুখ লাভ করেছেন।কিন্তু আমার ভাগ্য হয়তো এতোটা ভালো না যে নিজের বাচ্চার সাথে সারাজীবন থাকবো। আপনার সন্তানের কথা ভেবে আমার বেবিকে বাঁচান প্লিজ

ডাক্তারঃ মি. শুভ্র আপনি এখন কি করবেন,, প্লিজ তাড়াতাড়ি করুন……………..

শুভ্রঃ আমি এতো কিছু শুনতে চায়না তানিশা,,তুমি বলেছিলে তুমি আর আমি বুড়ো-বুড়ি হলে একসাথে চাঁদ দেখবো এর জন্য তোমাকে বাঁচতেই হবে(কান্না কন্ঠে)

এই বলে শুভ্র চলে গেলো তানিশা শুভ্রের যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকলো চোখ থেকে পানি পড়তে লাগছে,,

শুভ্র যাওয়ার পরপরই ওটি বন্ধ করে দেওয়া হলো,,শুরু করা হলো অপারেশন,,অপারেশনের মাঝে তানিশা বলছিলো,

তানিশাঃ ডাক্তার আমি সব অন্ধকার দেখছি,, শুভ্রকে আমার পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিবেন আমি হয়তো আর ক্ষমা চাওয়ার সময় পাবো না

ডাক্তারঃ তোমার কিছু হবে না

টানা এক ঘন্টা লাগলো অপারেশন করতে,,অপারেশন ছিলো খুব ক্রিটিক্যাল।হঠাৎ বাচ্চা কান্নার আওয়াজ শুরু হলো।নার্স একটা বাচ্চা হাতে নিয়ে শুভ্রের হাতে দিয়ে গেলো, ছেলে হয়ছে

শুভ্রঃ তাহলে তুমি আর আনার কথা শুনলে না তানিশা,,আমার স্বপ্ন পূরণ করলে না তাহলে।কেন নিজেকে শেষ করে দিলে,,তুমি বলেছিলে বেবিকে খেয়াল রাখতে হ্যাঁ রাখবো দেখো,,কিন্তু নিজের আর খেয়াল নেওয়া হবে না।এতো বড় শাস্তি পেলাম কেনো??(মনে মনে)








বিশ বছর পর,,,,

ছেলে বড় হয়ে গেছে এখন নাম তানভির আহম্মেদ শুভ। বিশ বছর পূর্ণ হয়ে গেলো, সকল ভালোবাসা পেয়ে বড় হচ্ছে ছেলেটি।আজ ছেলের বার্থডে ছিলো খুব বড় করে পালন হলো।এখন বাসাটা ফাঁকা,, সব আত্নীয়রা চলে গেছে।ছেলেও বেড়িয়েছে বন্ধুদের পার্টি দিতে।

সন্ধ্যা থেকে রাতের আধার শুরু হয়ছে,,আজ খুব সুন্দর চাঁদ উঠেছে,, চাঁদ দেখার জন্য ছাদে চলে আসলাম,

ছাদে নানারকম ফুল গাছে ভরপুর,,অনেক ফুল ফুটেছে বেশ করে গোলাপ গুলো তানিশার অনেক পছন্দের। বার্ধক্য বয়সে রসিকতার ফুঁটে উঠেছে,,

শুভ্রঃ দেখ তানিশা সেই বার্ধক্য বয়স চলে এসেছে আমাদের,,চাঁদটা ও আজ তোমার মতোই সুন্দর লাগছে,,সেই প্রথম ভালোবাসা আর চুলগুলো সব পেকে গেলেও এখনো একটু ও কম হয়নি।ভালোবাসি তানিশা তোমাকে সেই আগের মতোই ( আকাশের দিকে তাকিয়ে)

তানিশাঃ আমার ভালোবাসায় কি কম হয়ছে নাকি?? সেই আগের মতোই তো আছে

শুভ্রঃ তোমাকে পেয়ে সত্যিই আমি ধন্য সেদিন যদি তুমি শুভ কে না বাঁচানোর উদ্যোগ নিতে তা হলে হয়তো হারিয়ে ফেলতাম ছেলেটাকে

তানিশাঃ হুম,,আর তোমার কথাও রাখতে পেরেছি এই জন্য আল্লাহ কে হাজার শুকরিয়া

শুভ্রঃ হুম

দুজনেই আধারের মাঝে আকাশে হাজার তারার ভীরে রুটির মতো বড় চাঁদ দেখতে ব্যস্ত।

হুম সেদিন শুভ্রকে ভুল প্রমাণিত করে তানিশা বেঁচে গেছিলো,,শুভ্র সেদিন যে কি খুশি হয়ছিলো সারা হাসপাতালে মধ্যে চিৎকার করেছিলো খুশিতে।

শুভ তানিশাকে খুব ভালোবাসে,,কারণ শুধু মাএ তার মায়ের জন্য আজ পৃথিবীর পৃথিবীর আলো দেখতে পেরেছে।

সেদিন কেবিনে তানিশা জীবিত দেখে জড়িয়ে কপালে চুমু একে দিছিলো,,তানিশাও শুভ্রের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো,,

তানিশাঃ আমার বেবি কোথায়

শুভ্র শুভকে তানিশার কোলে দেয়,, সারা মুখে চুমুতে ভরিয়ে দেয় শুভকে

ডাক্তারঃ তানিশাকে রেষ্ট করতে দিন এখন মি. শুভ্র, আর এমন বউকে মাথায় করে রাখা উচিত,, বিশেষ খেয়াল নিবেন তানিশা প্রতি

সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত তানিশা আর শুভকে আগলে রেখে শুভ্র।আর বেবি নেই নি তানিশাকে হারানোর ভয়তে।।।।।।।।

অন্যদিকে,,

আয়ুশি আর আদির একটা মেয়ে হয়ছে আর্দিতা।শুভ আর আর্দিতা এক বছরের ছোট বড় তার থেকে ছোট মমিতা মেহেন্তা আর আরিয়ানের মেয়ে।

শুভ্রের পাশের বাড়ি আদির তার সামনের বাড়িটা আরিয়ানের। যে কোন উৎসবে একসাথে থাকে তারা।

এই বিশ বছরে,, তানিশার বাবা মারা গেছে তাই তার মা তানিশার কাছেই থাকে।শুভ্রের মা কখনোই শুভ্রের কাছে আসেনি মেয়ে নিয়ে থেকেছে সবসময়।নাড়ির টান হয়তো শুভ্র আর শুভ্রের মায়ের মধ্যে কোন দিন ছিলো না।

আকাশ এখন সুখে সংসার করছে আয়ুশির সেদিনের কথা মতো।

ধৈর্য এমনি একটা জিনিস যেখানে সুখ এসে ধরা দেবেই আর যে আমাদের জীবনে আসবে সে যে কোন মুল্যে আসবে তাকে বাধা দেওয়া সম্ভব নয়,,,,,, ,,,,,










সমাপ্ত…..

(সকলকে ধন্যবাদ আমার পাশে থাকার জব্য।সবার কথা মতো গল্পটা Happy ending দিলাম।ভালো থাকবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here