“শালিকা_যখন_বউ part_1+2

#শালিকা_যখন_বউ
#part_1+2
#written_by_Adnan_Sami_Raj

আজ আমার বিয়ে,, নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হচ্ছে,, কারন যার সাথে আমার বিয়ে হবে তার সাথে আমার প্রায় ১ বছর রিলেশন ছিলো,, আর আজ আমাদের ভালোবাসা পুর্নতা পেতে চলেছে।

ওহ আপানাদের তো আমার পরিচয় দেওয়া হয় নাই,, আমি আদনান সামি রাজ। মা-বাবার একমাত্র ছেলে, আর আজ আমারি বিয়ে (আমি কিন্তু এখনো পিচ্চি আছি শুধু গল্পে বিয়ে হবে),,বাকিঁ টুকু পরে জানতে পারবেন,,

আমার যার সাথে বিয়ে হবে তার নাম ইশা। আমরা একে অপর কে অনেক ভালোবাসি।

কিছুক্ষন পরে আমার বাবা আমার রুমে আসল,, আর বলল,,

আব্বঃ রাজ তুই এখনও রেডি হওয়া বাদ দিয়ে বসে আছিস কেন,, তারা তারি রেডি হয়েনে,, সবাই তো অপেক্ষা করছে তোর জন্য,

আমিঃ আব্বু তুমি যাও আমি দুই মিনিট এর মধ্যে আসছি,,

তারপর আব্বু চলে গেল আর আমি রেডি হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে গেলাম,, কিছক্ষন পর রেডি হয়ে নিচে নামলাম,, তখন আমার আম্মু আমার কাছে এসে বলল..

আম্মঃ বাহ আমার ছেলে কে তো অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে,,

আমিঃ Tnq ammu,,

আম্মুঃ হুম হয়েছে এখন যাও সবাই গাড়িতে অপেক্ষা করছে,,

আমিঃ হুম আম্মু এখন আসি,,

আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমি গাড়িতে গিয়ে বসলাম,,আর তখন আমার বন্ধুরা আমাকে নানান ভাবে জালতে লাগল,, কিছক্ষন পরে আমি আমার শশুর বাড়ি এসে পৌছালাম,, শশুর বাড়ির সবাই আমাকে অনেক আদরেই বরন করে নিলো,,

আমি ও আমার বন্ধুরা সবাই বসে আছি তখন আমার আব্বু আমার কাছে এসে বলল,,

আব্বুঃ রাজ একটু এই দিকে আয়,, তোর সাথে আমার কিছু কথা,,

আমিঃ জ্বি আব্বু বল?

আব্বুঃ ইশা অন্য ছেলের সাথে পালিয়েছে,,

এই কথা শোনার পর মনে হল যেন কেউ সজোরে আমার বুকে আঘাত করলো,, তাও আমি নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,,,,

আমিঃ কি বলছো এগুলা,, ইশা আমার সাথে এমন করতে পারে না,,,

আব্বুঃ আমারো প্রথমে তাই মনে হয়েছিলো, তার পর এটা দেখার পর (আমার দিকে একটা চিঠি এগিয়ে দিয়ে) বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম,,

আমি বাবার হাত থেকে চিঠিটা নিয়ে পড়তে শুরু করলাম সেখানে লেখাছিল,,

প্রিয় রাজ,,
পারলে আমায় ক্ষমা করে দিও,,তোমার সাথে রিলেশন চলা কালিন আমি আরেক জন কে ভালোবেসে ফেলি,,,আর সে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কম্পানি A&R কম্পানিতে ম্যানেজার, আর তুমি শুধু একজন সাধারন কর্মচারি,, তাই আমি অনেক ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমি তোমার সাথে না মেহেদির(যার সাথে পালিয়েছে) সাথে বিয়ে করব,, তাই আমাকে মাফ করে দিও,
ইতি,,ইশা

আমি ইশার চিঠিটা পরে হাসলাম আর ভাবতে থাকলাম যে মানুষ টাকার জন্য কত কিছুই না করতে পারে,,,,ঠিক তখন এশার বাবা এসে আমার বাবা কে বলল,,

ইশার বাবাঃ দেখুন আমার মেয়ে যা করেছে তার জন্য আমরা অনেক লজ্জিত,,তাই বলছিলাম যদি আমার ছোট মেয়ে নিশি কে আপনার ছেলের সাথে যদি বিয়ে দিতেন,,

আব্বঃ আমার ছেলে কে কি আপনার খেলনা মনে হয় যে যার তার সাথে ওর বিয়ে দিবো,,,

তখন আমি আমার বাবা কে বললাম যে আমি এই বিয়ে করতে রাজি,,তাই যত তারাতারি সম্ভব বিয়ের ব্যবস্থা করতে,,এর কিছু ক্ষন পরেই আমাদের বিয়ে হয়ে যাই,, আর আমার নতুন বউ নিয়ে বাসায় চলে আসি,,,,বাসায় আসার পর আমি সোজা ছাদে চলে যাই আর ভাবতে থাকি,,,

আমার জীবন টা কেমন করে হঠাৎ করে বদলে গেল,, কি হওয়ার ছিলো আর কি হল,,, না এরকম করে চলা যাবে না,,,

কিছুক্ষন পরে দেখি আমার বাবা আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে,, আর আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,

আব্বঃ দেখ রাজ যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে,,এখন আর কিছু করার নাই,, তাই বলছিলাম তুই এখন ঘরে যা,,

আমিঃ হুম আব্বু যাবো তার আগে তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে,,

আব্বঃ এতে অনুমতি নেওয়ার কি আছে,, যা বলতে চাস বল,,

আমিঃ আব্বু আমি সব কিছুর দায়িত্ব বুঝে নিতে চাই,,তুমি সব কিছুর ব্যবস্থা কর আমি দুইদিন পরে সব কিছু শুরু করবো,,

আব্বঃ ওহ এই কথা,, তুই কিছু চিন্তা করিস না আমি সব কিছুর ব্যবস্থা করছি,,এখন তুই রুমে যা বৌমা সেই অনেক ক্ষন ধরে অপেক্ষা করছে,,,,

তারপর আমি আমার রুমের দিকে এগুতে থাকি,,,আর রুমের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকি ডুকব কি ডুকব না, তারপর কিছু না ভেবে ডুকে পরি আর ডুকা মাত্র আমার শালিকা মানে আমার নতুন বউ আমায় সালাম করে তখন আমি তাকে বলি,,

আমিঃ দেখ নিশি তুমি তো যান আমাদের বিয়ে টা কিভাবে হয়েছে,, তাই আমি চাই আগে আমরা একে অপর কে ভালো ভাবে জানবো তারপর নতুন জীবন শুরু করবো,,,

উত্তরে নিশি শুধু মাথা নড়াল,,তাই বেশি কিছু না বলে, নিশি কে বিছানায় আর আমি সোফাই শুয়ে পড়ি,,আর হাড়িয়ে যাই ঘুমের রাজ্যে,,

সকালে একটা মিষ্টি কন্ঠে ঘুম ভাঙ্গে,, তখন আমি চোখ মেলে দেখি নিশি আমায় ডাকছে,,

আমি ওর দিকে তাকিয়ে নিজের চোখ সরাতে পারছিনা,, কারন নিশি মাত্র শাওয়ার নিয়ে বের হলো আর ভেজা চুলে নিশিনকে অসাধার লাগছে,,

তখন আবার নিশির কথায় বাস্থবে ফিরি,, তাই আমি নিশিকে জিঙ্গাসা করলাম,,

আমিঃ কি হয়েছে এত ডাকছো কেন,,

নিশিঃ নিচে সবাই নাস্তা করার জন্য ডাকছে আপনাকে আর আমাকে তাই,,

আমিঃ ওহ,,তুমি একটু ওয়েট করো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি,,,

তারপর আমি ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে যাই আর যখন বের হয় তখন নিশিকে দেখে ক্রাশ খাই কারন……..

চলবে……..

#শালিকা_যখন_বউ
#part_2
#written_by_Adnan_Sami_Raj


আমি বের হয়ে দেখি নিশি একটা নীল শাড়ি পরে আছে, তার সাথে হালকা সাজ।এমনিতেই আমার নীল কালার অনেক প্রিয়।
আমি ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম যে নিশি ভালো ভাবে শাড়ি পরতে পারে নাই কোনো রকম শুধু পেচিয়ে রেখেছে। এটা দেখে আমি জোরে হেসে দিলাম।আর তখন নিশি আমার কাছে এসে বলল।


নিশিঃ একি আপনি পাগলের মত হাসছেন কেন??


আমিঃ কিহ্,, আমি পাগল।


নিশিঃ নয় তো কি। পাগল না হলে কেউ এমন করে হাসে।


আমিঃ তোমার শাড়ি পরা দেখলে যে কেউ পাগল হয়ে যাবে (বলে আবার হাসতে শুরু করলাম)


নিশিঃ দেখুন একদম হাসবেন না। আমি শাড়ি পরতে পারি না তাই বলে এভাবে হাসতে হবে (মন খারাপ করে)


আমিঃ ঠিক আছে আর হাসবো না। তার আগে তুমি আমার কাছে আসো তোমায় ভালো করে শাড়ি পরিয়ে দিই।


নিশিঃ আপনি শাড়ি পড়াতে পারেন (অবাক হয়ে)


আমিঃ হুম পাড়ি দাড়াও তোমাকে পড়িয়ে দিই।


তারপর আমি নিশি কে শাড়ি পড়িয়ে দিই আর নিশি আমার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে।শাড়ি পড়ানো শেষে আমি নিশির দিকে তাকিয়ে ওর প্রেমে পড়ে যাই।কারন শাড়িতে নিশিকে অপরূপ সুন্দর লাগলে।আর নিশি দেখতে ইশার থেকেও অনেক সুন্দর।আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছে এমন সময় নিশি আমাকে বলে।


নিশিঃ বাহ আপনি তো দেখছি অনেক ভালো শাড়ি পড়াতে পারেন। নিশ্চয় আপুকে পড়ানোর জন্য শিখেছেন (এটা বলেই নিশি নিজের জিহ্বায় কামর দেই কারন সে ভুল কথা বলে ফেলেছে)


আর ইশার কথা শুনে আমার মন আবার খারপ হয়ে যাই। তাই আমি নিশিকে বলি চল এখন নিচে যাওয়া যাক সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। তারপর আমি আর নিশি নিচে যাই। তখন সবাই আমাদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে কারন আমিও একটা নীল শেরওয়ানী পরেছি।


তারপর আমি আর নিশি খাওয়ার টেবিলে পাশাপাশি বসি।আর খাওয়ার একপর্যয়ে আমি আব্বু কে বলি।


আমিঃ আব্বু আমি ইয়ামিন এর সাথে সব কথা বলে নিয়েছি। আর কাল সকালে আমি আর নিশি কয়েক দিনের জন্য ঢাকাই যাবো।


আব্বুঃ হুম বুঝেছি আর আমিও সব কথা বলে রেখেছি। কালকে সকালে তোদের ঢাকার ফ্লাইট।


আমিঃ আমি যা যা বলেছিলাম সব কিছুর এরেজমেন্ট কি হয়ে গেছে আব্বু??


আব্বুঃ না সব হয় নাই তবে আজকের মধ্যেই সব ব্যাবস্থা হয়ে যাবে।


তারপর আরো কিছু কথা বলে আমি আর নিশি রুমে আসলাম।তখন নিশি আমায় জিঙ্গেসা করলো যে আমরা কেন ঢাকায় যাবো। তাই আমি তাকে বললাম যে এটা আমার তরফ থেকে নিশির জন্য সারপ্রাইজ। আর আমি নিশি কে ব্যাগ গুছিয়ে রাখতে বলি। নিশি আমার কথা মত নিজের ব্যাগ গুছিয়ে রাখে।


অন্য দিকে ইশা আর মেহেদিও বিয়ে করেছে। আর তারাদুজনই অনেক খুশি। আর তখন মেহেদির ফোনে একটা কল আসে।


মেহেদীঃ হ্যালো কে বলছেন??


অপরপাশেঃ……….


মেহেদীঃ ওহ স্যার আপনি। কিছু দরকার আছে নাকি।


অপরপাশেঃ………….


মেহেদীঃ ওকে স্যার আমি সব ব্যাবস্থা করে দিবো। এখন রাখি।

ইশাঃ কে ফোন করেছিলো??

মেহেদীঃ আমাদের নিউ CEO ফোন করেছিলো। আর বলল যে কাল তিনি ও তার ওয়াইফ আসবে ঢাকাই। তাই একটা গ্রান্ড পার্টি এরেজমেন্ট করা হয়ে আর সেখানে আমাকে আমার বউ কে নিয়ে উপস্থিত থাকতে হবে।

ইশাঃ ওও।

মেহেদীঃহুম,চল এখন ঘুমাতে যাই কাল আবর অনেক কাজ আছে।

তারপরের দিন মেহেদী আর ইশা পার্টিতে যাই।আর তার পৌছানোর কিছুক্ষন পরে হেলিকপ্টার এ করে মেহেদীর নিউ বস আসে। আর অফিসের সব স্টাফ তাকে স্বাগতম জানানোর জন্য যাই।আর যখনি নতুন বস ও তার ওয়াইফ হেলিকপ্টার থেকে নিচে নামে তখুনি ইশা প্রচন্ড রকমের একটা শক খাই।


কারন মেহেদীর কম্পানীর নতুন বস অন্য কেউ না। তার প্রক্তন প্রেমিক রাজ এই কম্পানীর বস আর তার ওয়াইফ হলো ইশার আপন বোন নিশি।


কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব রাজ তো ইশাকে বলেছিলো যে সে একজন সাধারন ঘরের ছেলে। কিন্তু সে এত বড় কম্পানীর মালিক হল কিভাবে……

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here