শুধু তুই পর্ব ১

ফারহা তোর লজ্জা করে না , আমার সাথে বিয়ে করার কথা শুনে ঢেং ঢেং করে রাজি হয়ে গেলি। বিয়েও করে ফেললি, তবে শোন আর যাই করিস স্ত্রীর অধিকার আশা করিস না।

তোকে কোনদিন মেনে নেবনা এটুকু জেনে রাখ। কাল সকাল থেকে নতুন এক দিন গুনবি তুই।

( ফারহা এরকম প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। এমন কথা শুনতে হবে তাকে। নেহায়েৎ খালার কথা ফেলতে পারে নি। তাই এই নেকা ইত্তেহাদ কে বিয়ে করতে হয়েছে। )

ও হ্যালো আমি এখানে ঢেং ঢেং করে রাজি হয়নি। আমাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার তো সন্দেহ হচ্ছে আদৌ আপনি পুরুষ তো।

কি বললি তুই আমাকে তোর সাহস তো কম নয়। যা থাকব না এখানে, বলে ব্যালকনি তে চলে গেল । সিগারেটের ধোঁয়ায় নিজের কষ্টগুলো উড়িয়ে দিতে চলছে। তবুও কি কষ্ট দুর হবে। এসব মনের ভেতর অস্থিরতা কাজ করছে।

ফারহা একে সিগারেটের ধোঁয়া সহ্য করতে পারে না। তার উপর ইত্তেহাদ একের পর এক সিগারেট ধরিয়ে যাচ্ছে। এবার ফারহা তা সহ্য না করতে পেরে। সিগারেট গুলো কেড়ে নিল, চোখ রাঙিয়ে বলল এখন থেকে আর সিগারেট খাওয়া চলবে না।

চুপ একটাও কথা হবে না। আমি খাব তাতে তোর কি। পিচ্চি আছিস পিচ্চির মত থাক।

ও হ্যালো, আমি এবার ইন্টার পরীক্ষা দেব। আর পিচ্চি পিচ্চি করবেন না। দুদিন পর আপনার পিচ্চির মা হব। বলে জিহ্বা কামড় দিয়ে চলে গেল ভিতরে।

ইত্তেহাদ অবাক হয়ে গেল, এই মেয়ে বলে কি। মা যে কেন এই মেয়ের সাথে বিয়ে দিল জীবনটা তেজপাতা করে দেবে।

ফারহা ভাবছে আর লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। কি থেকে কি বলে ফেলল ও। ইত্তেহাদ ঘরে ঢুকে দেখল ফারহা লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।

তুই আজ থেকে সোফায় ঘুমাবি, এই বিছানায় তোর জায়গা হবে না বুঝতে পেরেছিস।

সরি ডিয়ার আমি অন্য মেয়েদের মত নয়। বিছানায় তুমিও ঘুমাবে আমিও ঘুমাব। কোন কথা হবে না। আসো শুয়ে পড় বলে এক টান দিল। ইত্তেহাদ সোজা ফারহার উপর পড়ল। এরকম করায় ফারহা ও ইত্তেহাদ দু’জনে মিলে হতভম্ব হয়ে গেছে।

ইত্তেহাদ ফারহাকে পাশ কাটিয়ে ফিরে অন্যপাশে শুয়ে পড়ল। ফারহা তব্দা ছুটে নি এখনো। অগ্যতা নিজে অন্যপাশে শুয়ে পড়ল।

আচ্ছা ফারহা বেদনার রং কেমন, সেটা কি জানিস তুই।

পড়েছি কোন এক লেখকের বই থেকে নীল। তবে বাস্তবের সাথে মিলেনা।

ফারহা এই রুমের বাইরে আমরা হ্যাপি কাপল। অন্যরা যেন মোটেও জানতে না পারে। পরে সময় মত আমি ডিভোর্স দিয়ে দেব তোকে।

ফারহা ঠিক আছে বলে নিশ্চুপ হয়ে গেল। কি বলবে অন্য কেউ না জানলেও ফারহা তো জানত সব।

কিছুক্ষণ পরে দু’জনে ঘুমিয়ে গেল। ফজরের আযানের সময় ঘুম ভেঙে গেল ইত্তেহাদের । সে দেখল ফারহা ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে রয়েছে। ইত্তেহাদ হালকা নিচু হয়ে ফারহার কপালে ছুঁয়ে দিল ঠোঁট দুটো।

ফারহা এই ফারহা উঠে পড়। নামাজের সময় হয়ে গেছে। ফারহা উঠে দেখে ও ইত্তেহাদ কে জড়িয়ে ধরেছে। সরি বলে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।

বিপত্তি ঘটে গেছে শাওয়ার নেওয়ার পর। লজ্জা পেয়ে যখন পোশাক নিয়ে আসেনি।
দরজা খুলে দেখে ইত্তেহাদ বসে আছে বিছানায়।

এই যে মশাই, একটু কষ্ট করে আমার পোশাক গুলো দিতে পারবেন । আমি কাপড় আনিনি।

ইত্তেহাদ কাপড় গুলো এগিয়ে দিল। ফারহা বেরিয়ে আসছে, চুল থেকে টপটপ করে পানি ঝড়ছে। ইত্তেহাদ তা দেখে দাঁড়ালো না। সোজা শাওয়ার ছেড়ে দিল। যাতে ওর কান্নার আওয়াজ বাহিরে না আসে।

ফারহা দেখে ইত্তেহাদ শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এসেছে। শরীরে পানি গুলো গড়িয়ে বুক দিয়ে পড়ছে। যা মোহনীয় করছে ফারহাকে। ইত্তেহাদ ফারহাকে পাশ কাটিয়ে মসজিদে রওনা হল।

ফারহা নামাজ পড়ে অতীতে ডুব দিল।

তুই আমার ইত্তেহাদ কে বেঁধে রাখিস এটা আমার শেষ ইচ্ছা। এটা আমার আদেশ মনে করতে পারিস।

ফারহার এই কথাটা ভাবতেই কান্না চলে এসেছে। কিন্তু সে কান্না করবে না। তাকে যে একজন মানুষকে দেওয়া শেষ কথা রাখতে হবে।

নাহলে বয়সের থেকে বার বছরের অধিক বড় একজন মানুষ কে কেন বিয়ে করবে।

ফারহা ব্যালকনি তে দাঁড়িয়ে দেখছে বাগান টা আগে হলে না হয় দৌড়ে চলে যেত। এখন নতুন বৌ। তাই যেতেও পারছে না।

#শুধু_তুই
#পর্ব_১
#মাসুদ_রানা_তাসিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here