শুধু তুই শেষ পর্ব

#শুধু_তুই
#পর্ব_৫_শেষ
#মাসুদ_রানা_তাসিন।

হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো। কলি দরজা খুলে দিল। একজন কে দেখে সালাম দিল । কলি এই লোকটিকে দেখে অবাক।

খালু, আসুন ভিতরে আসুন। খালাম্মা ভিতরে আসো। আদি বাবু তুমি আমার সাথে চল উপরে।

এই আপু আমাকে তুমি বাবু বল কেন আমি ক্লাস এইটে পড়ি।

ওহ তুমি তো বুড়ো হয়ে গেছো চল উপরে চল।

ইত্তেহাদের মা ও ফারহার বাবা মা বসে গল্প করছে।

ফারহার ঘুম ভেঙে যায়। ফারহা দেখে ইত্তেহাদ ওকে জড়িয়ে ধরে আছে। ফারহা আনমনে হেসে উঠে।

ফারহার নড়াচড়া তে ঘুম ভেঙে যায় ইত্তেহাদের। ইত্তেহাদ আরো জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠে। ফারহা হতভম্ব হয়ে যায়।

— ফারহা তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না। তাহলে আমি বাঁচতে পারব না।
> আমাকে বুঝি মার দেওয়ার জন্য রাখবেন।
— তোমাকে আর মারব না। প্রমিস করছি কোনদিন মারব না।
> সত্যিই তো তাহলে কোন ভরসায় থাকব আমি।
— আমি ভালবাসি তোমায় সেই ভরসায় থাকবে।
> তাহলে আমাকে একটা বাবু দিতে হবে।

তাহলে তো কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আজকে থেকে মিশন শুরু করতে হবে।

কলি ও আদি বাহির থেকে নক করে আসতে পারি ।

হ্যা আসুন, ফারহা ইত্তেহাদের বুকের উপর শুয়ে আছে। তা দেখে আদি ও কলি দু’জনে মিলে বলে আমরা কিছু দেখিনি।

— ভাই কখন আসছিস।
> আসছি একঘন্টা হয়েছে আপুর ঘরে আড্ডা দিচ্ছিলাম। মা বাবা খালামনির সাথে গল্প করছে।
— তুই নাকি অসুস্থ খালা ফোন করে বলেছে। তাই সোজা চলে এসেছি।

ফারহা ইত্তেহাদ নিচে নেমে আসে। ফারহাকে ধরে নামাচ্ছে ইত্তেহাদ। তা দেখে ইত্তেহাদের বাবা স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়।

সবাই খুব মজা করে। সেদিনের পর থেকে ইত্তেহাদ দের বাড়ি আবার আগের মত হয়ে যায়। পাল্টে গেছে শুধু কুহুলের জীবন। টাকার জন্য স্বামী বেচারা বেঁচে দিয়েছিল অন্য লোকের কাছে। সেখানে থেকে কোনমতে বেঁচে ফিরে এখন বদ্ধ পাগল।

দেখতে দেখতে ইত্তেহাদ ও ফারহার বিয়ের এক বছর পূর্ণ হয়। ফারহা চার মাসের প্রেগন্যান্ট। তাই বিবাহ বার্ষিকী ঘরোয়া ভাবে পালন করেছে।

ইত্তেহাদ ফারহাকে গান শোনাচ্ছে,

== যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়। যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়।

এসো ছলছল বৃষ্টিতে, জলভরা দৃষ্টিতে, এসো কোমল শ্যামল ছায়ে, তুমি চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়। যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো এক বরষায়।

যদিও তখন আকাশ থাকবে বৈরি, কদম গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরি। যদিও তখন আকাশ থাকবে বৈরি, কদম গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরি। উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো, ঝলকে ঝলকে নাচিবে বিজলী আলো তুমি চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়। যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো এক বরষায়।

নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার ক্ষণে মেঘ মল্লার বৃষ্টির মনে মনে। নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার ক্ষণে মেঘ মল্লার বৃষ্টির মনে মনে। কদম গুচ্ছ খোঁপায় জড়ায়ে দিয়ে জলভরা মাঠে নাচিব তোমায় নিয়ে। চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়।

যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো এক বরষায়।

ফারহা যেন গানের মধ্যে ডুবে ছিল। ইত্তেহাদ বাড়িতে বসে অফিসের কাজ সম্পন্ন করে। মায়ের কড়া আদেশ কোন মতে ফারহাকে একা রাখা যাবে না।

ছয় মাস পর হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারের বাইরে পায়চারী করছে। ইত্তেহাদ কোন মতে শান্তি পাচ্ছে না। তার অর্ধেক অংশ যে ভিতরে। অনেক চেষ্টা করেছে ভিতরে যাওয়ার। অ্যালাও করেনি ডাক্তার, খুব কান্না করছে ইত্তেহাদ দুঘন্টার উপরে ভিতরে নিয়ে গেছে।

কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার বাইরে বেরিয়ে আসে। কংগ্রাচুলেশন মিঃ ইত্তেহাদ। দুই সন্তানের জনক হয়েছেন।

ডাক্তার আমার ওয়াইফ কেমন আছে।

সি ইজ আউট অফ ডেঞ্জার। সেইফ আছে কেবিনে দেওয়া হয়েছে। জ্ঞান ফিরলে দেখা করবেন।

ইত্তেহাদ এখনো এক সন্তানের মুখ দেখেনি। কারণ ফারহা আর ও যে একসাথে দেখবে। মুহুর্তের মধ্যেই ফারহার বাবা হাসপাতালে সবাইকে মিষ্টি খাইয়েছে।

ফারহার জ্ঞান ফিরলে একসাথে বাবুদের মুখ দেখে। সাত দিনের দিন আকিকার মাধ্যমে নাম রাখে ফুয়াদ ও ইকরা।

খুব সুন্দর ভাবে দিন কাটছে ফারহা ও ইত্তেহাদের। পরিবারের সাথে হাসি খুশিতে ভরে আছে।

সমাপ্ত,,,,,,

ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন পরিবার কেও সুস্থ রাখুন!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here