শুধু_তোমাকে_প্রয়োজন পর্ব শেষ

#তোমাকে_শুধু_প্রয়োজন
#পর্ব_০৬ (শেষ)
#অধির_রায়

নিয়তি নিঝুমকে তাদের রুমে নিয়ে আসে৷ নিঝুম অধিরকে দেখে অবাক হয়ে যায়৷

— “দি অধিরের সাথে তোর বিয়ে হয়েছে?” চোখ বড় করে বলে উঠে।

— “হুম” তার সাথে বিয়ে হয়েছে বলেই তোকে খোঁজে পেয়েছি৷

— তার মতো খারাপ লোক দুনিয়াতে আর দুইটা দেখিনি৷ সামন থেকে দেখতে যতটা সহজ সরল ভিতর থেকে ততটাই কঠিন। (নিঝুম)

— অধির বলে উঠে ” নিঝুম তুমি আমাকে ভুল ভাবছো? আমি এমন নয়৷ তোমাকে আটক করা হয়েছে সে জন্য তুমি আমাকে খারাপ চোখে দেখবে এটাই স্বাভাবিক।

— থাক আমি দির মতো সরল লোক না যে আপনাকে বিশ্বাস করব৷

— কাকে তুমি সরল লোক বলছো? যে আমার হাত পা বেঁধে রেখেছিল কিছুক্ষণ আগে৷ যার জন্য আজ আমার এই অবস্থা। (অধির)

নিঝুম অধিরের কথা শুনে নিয়তির দিকে তাকায়৷ নিয়তি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়৷ নিঝুম দুই মিনিট কোন কথা না বলে চুপ করে মাথা নিচু করে এক সাইটে দাঁড়িয়ে থাকে৷

— কি হলো? কোন কথা বলছো না কেন? নিঝুম বিশ্বাস কর এই জন্য তোমার বোনকে আমি কোন শাস্তি দিব না৷ এটা আমার প্রাপ্তি ছিল। (অধির)

— নিঝুম মাথা নিচু করে বলে উঠে ” আমি আপনাদের সামনে থাকতে চায় না৷ আপনাদের সমস্যা আপনারা সমাধান করে নেন। ”

নিঝুম আর দাঁড়িয়ে না থেকে চলে যায়৷



অধির তিন মাস পর আজ নিজ থেকে উঠে দাঁড়াতে পারছে৷ অধির পড়ে গিয়ে শুধু মাথা ফাটায়নি। বরং কোমরেও প্রচুর ব্যথা পায়৷ যার জন্য অধির বিছানা বাসী হয়ে ছিল।

অধির ওয়াসরুমে ঢুকেতেই প্রথমে তার চোখ আটকে যায় প্রেগন্যান্সি কীটে৷ অধির কিছু না ভেবে প্রেগন্যান্সির কীট হাতে তুলে নেয়৷ হাতে তুলে নিয়ে অবাক প্রেগন্যান্সি কীটে পজিটিভ। তার মানে নিয়তি প্রেগন্যান্ট। অধির খুশি হয়ে ওয়াসরুম থেকে বের হয়৷

অধির নিয়তি নিয়তি বলে সারা বাসায় তাকে খোঁজে বেড়ায় কিন্তু কোথায় নিয়তিকে খোঁজে পায় না৷ রুমে এসে আলমারি খোলতে নিলেই তার চোখ যায় একটা খামের উপর। অধির খামটা খুলে দেখে নিয়তির লেখা।

“অধির”
আমি কথা দিয়েছিলাম আপনার জীবনে আমি থাকবো না৷ আমি চলে আসছি৷ জানি এই কইদিন আপনাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি৷ কিন্তু কি করব আপনার কাছে আমাকে অনেক বড় মূল্য দিতে হবে৷ আর একটা কথা জানা আপনারও খুব দরকার৷ আপনি সন্তান আমার গর্ভে৷ কোনদিন পিতার অধিকার নিয়ে সামনে আসবো না৷ আপনার ভবিষ্যতে আর বাঁধা হয়ে দাড়াবো না৷ আমার খোঁজ করে লাভ নেই। আমি আমাদের বাড়িতে নেই৷ আমি না জানা এক শহরে আছি যেখানে আপনি আমাকে খোঁজে পাবেন না৷
“নিয়তি”

নিয়তির চিঠি পড়ে অধির চিৎকার করে কান্না শুরু করে দেয়৷ অধিরের চিৎকার শুনে অধিরের মা অধিরের কাছে আসে৷

— কি হয়েছে? (অধিরের মা)

অধির কিছু না বলে তার মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দেয়৷ ছেলে মানুষ কান্না করতে পারে অধিরকে না দেখলে বুঝায় যেত না৷ আধ ঘন্টার পর অধির তার মাকে নিয়তির চিঠি দেয়৷

অধিরের মা নিয়তির চিঠি পড়ে বুঝতে পারে নিয়তি চলে গেছে৷ কেন চলে গেছে তেমন কোন কথা নেই৷ তবে অধিরকে দেখে বুঝা যাচ্ছে অধির নিয়তির সাথে খারাপ কিছু করেছে৷

— অধির চিন্তা করিস না৷ আমরা নিয়তিকে ঠিক খোঁজে বের করব৷

— মা নিয়তি বাচ্চা না যে তাকে খোজে বের করব৷ সে নিজে থেজে চলে গেছে তাকে কিভাবে বের করব? শুধু তাই নয় নিয়তির সাথে আমার সন্তানও আছে৷ প্লিজ মা তুমি নিয়তিকে এনে দাও আমি নিয়তিকে ছাড়া বাচবো না৷ নিয়তিকে আমার শুধু প্রয়োজন। প্লিজ তুমি নিয়তিকে এনে দাও৷

অধির এই তিন মাসে নিয়তিকে মন থেকে ভালোবেসে ফেলে৷ নিয়তি অধিরের কোন অবহেলা করনি৷ আপন মনে সব সময় তার কাছে থেকেছে৷ অনেক রাত না ঘুমিয়ে অধিরের মা পাছাস করে গেছে৷ ডাক্তার যেমনটা বলেছে ঠিক তেমনটাই করেছে৷ অধির মাঝে মাঝে নিয়তির হাত বুকে নিয়ে ঘুমিয়েছে৷ তাকে ধরে ধরে হাটানো সব কিছুই নিয়তি করেছে৷ অধির এটাই ভেবে নিজেকে দোষী ভাবছে সে সোনা চিনতে ভুল করেছে৷



অধির নিয়তির কাছ থেকে যে এসাইনমেন্ট জোর করে কেড়ে নিয়েছিল সেটা এতিমখানার জন্য দান করে দেয়৷ তাছাড়া আরও দুইটা এতিমখানা করে নিয়তির নামে৷ অধির এখন তার মা বাবাকে সময় দেয়৷ নিয়তির মা বাবাকেও সময় দেয়৷ তাদের বুঝতে দেয় না মিয়তি তাদের মাঝে নেই৷ এভাবে চলে যায় আরও পাঁচটি মাস৷ তার মানে নিয়তি প্রেগন্যান্ট আট মাস পূর্ণ হলো।

অধির একটা কাজে দার্জিলিং শহরে আসে। হঠাৎ করেই নিয়তির সাথে দেখা হয়ে যায়৷ নিয়তি আগের মতো নেই৷ সব সময় মুখে গোমটা দিয়ে ঘুরে৷ নিয়তির হাত থেকে বাজারের গোল আলু পড়ে গেলে নিয়তি নিচু হতে কষ্ট হয়৷ অধির দৌড়ে এসে নিয়তিকে দাঁড় করায়। অধির নিজ থেকে সব গোল আলু তুলে দেয় নিয়তিকে৷ নিয়তি চলে যেতে নিলেই নিয়তির হাতে চোখ পড়ে অধিরের৷ নিয়তি হাতে তার মা যে কাঁকন জোড়া দিয়েছে সেগুলো পড়া৷ অধির নিয়তির পথ আটকিয়ে সকলের সামনে নিয়তির গোমরা ফেলে দেয়৷

পাশের লোকজন ইভটিজিং ভেবে অধিরকে মারতে আসলে অধির বলে উঠে ” আমি কোন অন্যায় করেরি৷ নিয়তি আমার স্ত্রী। ” তারা বলে উঠে তার কি প্রমাণ আছে৷

— নিয়তি বলে উঠে ” প্লিজ আপনারা চলে যান৷ উনি যা বলছেন সব সত্যি। ”

লোকজন চলে যাতেই অধির নিয়তির হাত ধরে কান্না শুরু করে দেয়৷

— কি করছেনটা কি? ছাড়েন বলছি৷ আপনাকে তাদের হাত থেকে বাঁচিয়েছি মানবতার জন্য৷

— প্লিজ নিয়তি আমাকে এত বড় শাস্তি দিও না৷ আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না৷

— “আপনার কথায় আমি আর ভুলছি না৷ আপনি আসতে পারেন৷ আমি এখন অনেক সুখে আছি৷ ” নিয়তি চোখে জল নিয়ে বলে উঠে।

— তাহলে তোমার চোখে জল কেন? প্লিজ নিয়তি তুমি আমার সন্তানের কাছ থেকে আলাদা কর না৷ আমি এসব কার জন্য করেছি৷ আমার সন্তানের জন্যই তো করেছি৷ যদি তোমরাই আমার জীবনে না থাকো তাহলে আমার বেঁচে থেকে লাভ কি?

— প্লিজ আমাকে ইমোশনাল করে তুলবে না৷

নিয়তি অধিরকে কিছু বলতে না দিয়ে দ্রুত গতিতে হেঁটে চলে যায়৷ অধির নিয়তির পিছনে পিছনে যায়৷ কিন্তু নিয়তি তার দিকে কোন খেয়াল করে না৷ নিয়তি অধিরের গাড়ির কাছে আসতেই অধির দৌড়ে নিয়তিকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গাড়ি লক করে কলকাতার উদ্দেশ্য রওনা দেয়৷

নিয়তি গাড়ি থামাতে বলছে অধির কিছুতেই গাড়ি থামাচ্ছে না৷

— আপনি গাড়ি থামেন না কেন? আমি যাব না আপনার সাথে৷

— আমি কি এমন দোষ করেছি যার জন্য তুমি আমাকে এত বড় শাস্তি দিচ্ছো।

— চুপ কোন কথা নয়৷ চোখ পাকিয়ে বলে উঠে।

অধির গাড়ি একটা ফার্মেসির দোকানে সামনে দাঁড় করিয়ে ০.৫ মিলি একটা ঘুমের ওষুধ নেয়৷ তার পর সেটা নিয়তিকে খেতে বলে৷

— আমি খাবো না৷ আপনি আমার সন্তানকে মেরে ফেলার জন্য এমন করছেন৷

— আমি এতটাই নিষ্ঠুরতম মানুষ যে নিজের সন্তানকে মেরে ফেলবো।

— নেরে ফেলতেও পারেন। আপনাকে আমার বিশ্বাস নেই৷

অধির কিছু না বলে নিয়তির গাল চেপে ধরে ওষুধ মুখে ঢুকিয়ে দেয়৷ তার পর গাড়ি ছেড়ে দেয়৷ নিয়তি কান্না করতে করতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে৷ অধির নিয়তিকে নিজের কাঁধে নিয়ে এক হাতে গাড়ি ড্রাইভ করে নিয়তিকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে৷

নিয়তিকে কোলে করে বাড়িতে প্রবেশ করতেই অধিরের মা বলে উঠে ” নিয়তিকে কোথায় পেলি?”

— মা সব কথা পরে হবে৷ নিয়তি অনেক ক্লান্ত তার রেস্টের সময়৷ তাকে রুমে নিয়ে যাচ্ছি৷

অধির নিয়তিকে বেড়ে শুইয়ে রেখে ফ্রেশ হয়ে নিয়তিকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। কতকাল ঘুম হয়নি নিয়তিকে ছাড়া৷

রাত তিনটা দিকে নিয়তির ঘুম ভেঙে যায়৷ দেখে অধির তাকে দুই বাহু দিয়ে আগলে রেখে খুব যত্ন করে ঘুমিয়ে আছে। অধিরকে দেখে বুঝা যাচ্ছে অনেক রাত না ঘুমিয়ে পার করে দিয়েছে৷ চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে৷ যে ছেলে নিজের গায়ে কোন আঁচ লাগতে দেয়নি৷ সে আজ নিজের হাত কেটে নিয়তি লিখে রেখেছে যা দেখে নিয়তির চোখে দুই ফোঁটা জল এসে পড়ে৷

অধিরের কপোলে জল পড়তেই অধির জেগে উঠে। নিয়তিকে কান্না করতে দেখে ঠিক আগের মতো চোখের জল ঠোঁট দিয়ে চুষে নেয়। অধিরের স্পর্শ পেয়ে নিয়তি কেঁপে উঠে।

— নিজেকে শক্ত করে বলে উঠে ” ছাড়েন আমাকে? ” আপনি একটা অমানুষ৷ আমি কিছুতেই আমার সন্তানের গায়ে অমানুষের ছাড়া পড়তে দিব না৷

— নিয়তি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও৷ আমি সত্যি বলছি আমি তোমার কোন ক্ষতি করব না৷

— আমার ক্ষতি করার আপনি কে? আমি এখান থেকে চলে যাব৷

–আর একবার চলে যেতে চাইলে এই ঘরের মাঝে বন্ধি করে রাখবো৷ অনেকক্ষণ থেকে কিছু খাওয়া হয়নি তুমি বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি৷

অধির নিয়তির জন্য নিয়তির প্রিয় খাবার বিরিয়ানি নিয়ে আসে৷ নিজ হাতে নিয়তির মুখে বিরিয়ানি তুলে ধরলে নিয়তি মুখ ফিরিয়ে নেয়৷

— ধমক দিয়ে বলে উঠে ” খাবার খেতে বলছি ”

অধিরের ধমক শুনে নিয়তি চোখ বুঝে খাবার খেয়ে নেয়৷ অধির খেয়েছে কিনা একবারও জিজ্ঞাসা করে না৷ খাবার খাওয়ার পর অধির আবার নিয়তিকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে৷

______

সকাল বেলা নিয়তি ঘুম থেকে উঠে দেখে নিয়তি মা বাবা নিঝুম নিয়তির সামনে বসে আছে৷

তাদের এক সাথে দেখে নিয়তি তারাতাড়ি উঠে বলে উঠে “প্লিজ তোমরা চলে যাও! আমি চাইনা আমার জন্য তোমাদের কোন ক্ষতি হক৷ ”

নিয়তির মা নিয়তিকে জড়িয়ে ধরে ” আমরা কোথায় যাব না৷ আর আমাদের কেউ কোন কষ্ট বা ক্ষতি করবে না৷ অধির আমাদের কখনো তোর অভাব বুঝতে দেয়নি৷ সব সময় আমাদের খেয়াল রেখেছে৷ আমাদের অনেক সময় দিয়েছে৷ সে আগের মতো নেই। অনেক পরিশ্রমী৷ আর হ্যাঁ সে এখন তিনটা এতিম খানা চালায় তাও সব গুলো তোর নামে৷

–নিয়তি তার মাকে ছেড়ে দিয়ে ” কি সব আমার নামে!”

— হ্যাঁ দি সব কিছু তোর নামে৷ অধির দা তোকে খুব ভালোবেসে। আমরা আসছি তুই থাক এখানে৷

অধির রুমে আসায় তারা বেরিয়ে যায়৷ নিয়তি কিছু না বলে ওয়াসরুমের দিকে পা বাড়াতেই অধির নিয়তিকে কোলে তুলে নেয়৷

— কি করছেন ছাড়েন আমাকে?

— না ছাড়বো না৷ তোমার কোন কাজ নেই৷ আমি সব করে দিব। জানি তুমি ওয়াসরুমে যাবে। আমি নিয়ে যাচ্ছি।

— এএএইইইইইই

কে শুনে কার কথা অধির নিয়তিকে নিয়ে যায়।


দেখতে দেখতে দিন এসে যায়৷ নিয়তিকে কিছু করতে দেয়নি অধির৷ অধির নিজ হাতে নিয়তিকে খাইয়ে দেয়৷ প্রতিরাতে অনেক গল্প শুনায়৷ ভালোবাসা দিয়ে ভরে দেয় নিয়তির পেট৷ সব সময় তার মুখে একই কথা তার জীবনে আসবে নিয়তির মতো একটা রাজকন্যা।

নিয়তির করুন অবস্থা। নিয়তিকে হসপিটালে নিয়ে আনা হয়৷

— রোগীর অবস্থা খুব খারাপ৷ আমরা যেকোন একজন কে বাঁচাতে পারব। আপনারা কাকে বাঁচাতে চান। (ডাক্তার)

— আমি মা সন্তান দুই জনকেই বাঁচিয়ে দেন৷ (অধির)

— আর হ্যাঁ নিয়তি এর পর মা হবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে৷ আপনারা ভেবে নেন কি করবেন।

— নিয়তি অধিরের মুখে শুধু রাজকন্যার গল্প শুনে এসেছে৷ নিয়তি বলে উঠে ‘” আমার সন্তানকে বাঁচিয়ে দেন৷ ”

–অধির নিয়তির কথা শুনে নিয়তি জড়িয়ে ধরে ” না আমি তোমাকে হারাতে পারব না৷ তোমাকে আমার প্রয়োজন। ডাক্তার আমার সন্তান লাগবে না৷ আপনি নিয়তিকে বাঁচান।

— না আমি কিছুতেই আপনার স্বপ্ন অপূর্ণ রাখবো না৷ আপনি একটা সন্তান চান৷ ডাক্তার আমার সন্তানকে বাঁচিয়ে দেন।

— আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না৷ প্রয়োজনে আমর সন্তান এডপ্ট নিবো৷ তাছাড়া এতিম খানায় সবাই তো আমাদের সন্তান। ডাক্তার তাড়াতাড়ি করেন যদি নিয়তির কিছু হয়ে যায় আপনাকে ছাড়বো না৷

সকলের চোখে জল। সকলেই কান্না করছে। অধিরকে চেনা যাচ্ছে না। চুলগুলো উসকো খুসকো হয়ে আছে৷ দেখে মনে হচ্ছে কোন পাগল দাঁড়িয়ে আছে৷
এক ঘন্টার পর বাচ্চার কান্নাও আওয়াজ আসে৷ বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনে অধিরের বুক মোচড় দিয়ে উঠে৷ অধিরের মুখে শুধু নিয়তির কথা৷ ডাক্তার বের হতেই অধির কিছু না মেনে দৌড়ে নিয়তিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে৷

— তুই আসলেই খারাপ৷ তোর মতো মেয়ের বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই৷ তুই মরে গেছিস ভালো হয়েছে৷ তাতে তোর কি? তুই তো আমায় আর ভালোবাসিস নি৷ “কান্না করতে করতে অধির বলে যাচ্ছে।”

— অধিরের কাঁধে নিয়তি জোর করে হাত তুলে বলে উঠে ” আপনাকে ছেড়ে আমি কোথাও যায়নি৷ ”

নিয়তির কথা শুনতে পেয়ে অধির নিয়তিকে আরও জোরে জড়িয়ে ধরে, নিয়তি ব্যথা পেয়ে “আউচ”

— সরি সরি,,

— আমাদের সন্তান কেমন আছে?

অধির মাথা নিচু করে ফেলে। তার মানে অধির সন্তানকে দেখে নি৷ তার কাছে নিয়তি সব চেয়ে বড়৷

— বুঝেছি আপনি আমাদের সন্তানকে দেখেননি৷ কেন?

— আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারতাম না৷ তোমাকে ছাড়া প্রতিটি শ্বাস নিতে আমার খুব কষ্ট হয়৷

একটা নার্স এসে একটা মেয়েকে অধিরের কোলে দিয়ে ” আপনার মেয়ে৷ অনেক কিউট”

অধির পকেটে হাত দিয়ে পকেটে যা টাকা ছিল সব নার্সকে দিয়ে দেয়৷ নার্স খুশি হয়ে তাদের সন্তানকে আশীর্বাদ করে যায়৷

তাদের ভালোবাসা কোণায় কোণায় ভরে উঠে৷

__________________ সমাপ্ত ____________________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here