শেষ অধ্যায়ে তুমি পর্ব -০১

আজ একটু আগে তূরের বিয়ে হলো তাও তূরের ভালোবাসার মানুষের সাথে কিন্তু তার ভালোবাসার মানুষটার অমতে। যাকে তূর দীর্ঘ দশ বছর যাবত মনে মনে ভালোবাসে। বলতে গেলে ওয়ান সাইডেড। ওদের বিয়েটা কোনো স্বাভাবিকভাবে হয়নি। হয়েছে অস্বাভাবিকভাবে হাসপাতালের বেডে তূর মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এই অবস্থায়। ক্যানুলা করা হাতে কাঁপাকাঁপা অবস্থায় রেজিস্ট্রি খাতায় সাইন করেছে আর তিন কবুল বলেছে অনেকটা অনুভূতিহীন ভাবে কারণ তার ভালোবাসার মানুষটা তো পুরোটাই অনুভূতিশূন্য হয়ে আছে।
——–
তূরের পুরো নাম ” তূরফা নূর তাথৈ”। সদ্য দেশের এক নামকরা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে বায়োকেমিস্ট্রিতে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে।বাবা-মায়ের তিন মেয়ের বড় মেয়ে। বাবা কলেজ শিক্ষক মা গৃহিনী।মেজ বোন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করে। ছোট বোন নবম শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে।
দেখতে অতটাও খারাপ না তূর। উজ্জল শ্যামবর্ণ গায়ের রং। ন্যাচারাল ওয়েবি ধরনের কোমর ছাড়ানো লম্বা চুল। টানা টানা ঘন পল্লব বিশিষ্ট চোখ। হাসলে ঠোঁটের দুই পাশে টোল পরে। ৫ ফিট ৬ ইঞ্চি উচ্চতা বিশিষ্ট পাতলা গড়নের এক ২২ বছরের হাসিখুশি মেয়ে।

———
বিষয়টা কুৎসিত ও ঘৃণিত হলেও সত্যি যে তূর তার স্বামীর আইনত দ্বিতীয় স্ত্রী। তার স্বামীর আইনত প্রথম স্ত্রী এখনো জীবিত এবং বর্তমান। এর চেয়ে অবাক করার বিষয় হচ্ছে তূরের সদ্য বিয়ে করা স্বামীর আইনত প্রথম স্ত্রী তার ও তার স্বামীর একসময়ের ক্লাসমেট।

সবাই হয়ত এখন তূরকে ঘৃণা করবে। কিন্তু সত্যি বলতে বিয়েটা জরুরি ছিল। দুইটা গুরুত্বপূর্ণ কারণে তূর তাকে জোর করে বিয়ে করেছে।

প্রথম কারণ হচ্ছে তূর তাকে খুব ভালোবাসে এবং মৃত্যুর আগে তার স্ত্রী হয়ে মৃত্যুবরণ করতে চায়। আর দ্বিতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ কারণ সেটা আস্তে আস্তে জানতে পারবেন যা ওদের তিনজনের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
——
তূরের সদ্য বিয়ে করা স্বামীর নাম “মিহাল মুনতাসির”। বাবা মায়ের এক ছেলে বড় একটা বোন আছে তার বিয়ে হয়ে গেছে এবং দুই বছরের একটা মেয়ে আছে। মিহালও সদ্য গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে এক পাবলিক ইউনিভার্সিটি থেকে CSC তে।
মিহাল দেখতে ফর্সা বর্ণের। চুল গুলো সিল্কী আর স্টাইল করে কাটা। ৫ ফিট ৭ ইঞ্চি উচ্চতা বিশিষ্ট পাতলা গড়নের ২৫ বছরের এক সুদর্শন পুরুষ।

মিহালের আইনত প্রথম স্ত্রীর নাম “তানজিনা মেহবিন”।তারাও এক ভাই এক বোন। ভাই “তাহমিদ” ডাক্তার এবং ভাইয়ের বউ “সাথি” সেও ডাক্তার। ভাই ও ভাইয়ের বউ দুজনেই ঢাকার “ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ” এ চাকরিরত। ভাই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আর ভাবি গাইনী বিশেষজ্ঞ। তানজিনা নিজেও ” সরোয়ার্দি মেডিকেল কলেজ” এ ইন্টার্নি করছে মানে তানজিনাও সদ্য পাশ করা ডাক্তার।
তানজিনা দেখতে বাদামি বর্ণের। ঘন পল্লব বিশিষ্ট চোখ। চুলগুলো ন্যাচারাল ওয়েবি ধরনের কোমর পর্যন্ত। ৫ ফিট ২ ইঞ্চি উচ্চতা বিশিষ্ট মোটামুটি গড়নের ২৪ বছরের এক অত্যন্ত পড়াকু টাইপের মেয়ে।

——————
দুই মাস আগে মিহাল ও তানজিনার পারিবারিক ভাবে রেজিস্ট্রি হয়।

“ফ্ল্যাশব্যাক————————☆
দুই মাস আগে মিহালের পরিবার তানজিনার পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় মিহালের পছন্দের ভিত্তিতে।

মিহালের কলেজে তানজিনাকে দেখে ভালোলাগে পরে ভালোবেসে ফেলেছিলো কিন্তু বলতে চায়নি কারণ তানজিনা পড়াশোনা নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকতো। বান্ধুবীদের সাথে গল্পটাও খুব কম সনয় করতো।

মিহাল ছয় মাস পরে আমেরিকা যাবে মাস্টার্স কমপ্লিট করতে সাথে তাইজুল, রিজভী আর রিজভীর স্কুল-কলেজ ফ্রেন্ড রাফির কিছু ফ্রেন্ড মানে তূরদের সাথে।
তাইজুল ও রিজভী মিহালের ইউনিভার্সিটির বেস্টফ্রেন্ড। তাই মিহাল তানজিনার পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে বলে যাতে তানজিনাকে যাওয়ার আগে নিজের করে যেতে পারে।
বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পর তানজিনার পরিবার প্রথমে নাকচ করে। তানজিনার ভাই আর ভাবি তো বিয়েতে রাজি না এমনকি তানজিনা নিজেও রাজি না।
তানজিনার ভাবির ভাষ্যমতে, “মেয়ে আমাদের ডাক্তার জামাইও ডাক্তার চাই।” ভাবির কথার সাথে ভাই কিছুটা একমত।
আর তানজিনার ভাষ্যমতে, “সে এত জলদি বিয়ে করবে না তার ক্যারিয়ার এখনো শুরু হয়নি।”

কিন্তু বাধ সাধে তানজিনার বাবা। তানজিনার বাবা একসময় মিহালের বাবার কলিগ ছিলো মিহাল খুব ভালো ছেলে এটা তানজিনার বাবা জানে তাই সে বিয়েতে রাজি এবং পরিবারকেও সে তাই বোঝাচ্ছে বিয়ের জন্য। তানজিনার মাও বিয়েতে রাজি কারণ সে চায় না ডাক্তারের কাছে মেয়েকে দিতে। ছেলে ও ছেলের বউ ডাক্তার হওয়াতে সে বুঝে তারা সারাদিন বাইরে বাইরে থাকে। এই ডাক্তারির জন্য ছেলে ও ছেলের বউ বাচ্চা প্ল্যান করে না।

তানজিনার বাবা-মা মিলে তানজিনার ভাইকে আগে বোঝায়। তানজিনার ভাই কিছুটা স্ত্রীর পক্ষে থাকলেও বাবা-মার কথাটা ফেলে দিতে পারছে না। তাই সে ভাবা শুরু করলো, ” মিহাল তো ছয় মাস পরে আমেরিকা চলে যাবে মাস্টার্স করতে, দুই বছর পরে শেষ করে আসবে। ততোদিনে তানজিনা পুরোপুরিভাবে একজন ডাক্তার হয়ে যাবে। এমনিতেও তানজিনার কারো সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক নেই।”
এটা ভেবে তানজিনার ভাই বিয়েতে রাজি হয়।

বাবা-মা ও ভাই মিলে তানজিনা কে বোঝানোর চেষ্টা করে একপর্যায়ে তানজিনা হতাশ হয়ে শুধু রেজিস্ট্রি করার জন্য সায় দেয়।

হয়ে যায় ওই দিন তানজিনা ও মিহালের রেজিস্ট্রি বিয়ে মানে আইনত তারা স্বামী-স্ত্রী।

তানজিনা ও মিহালের বিয়ের খবরটা পরের দিন সকালে তূর ও মিহালের স্কুল ফ্রেন্ড ইতি তূরকে দেয়। তূর তখন ভার্সিটিতে বসে বসে পড়ছে আর দেড় ঘন্টা পরে তূরের অনার্সের শেষ পরীক্ষা।
তূরের সাথে তখন লিরা, ফাইজা, অর্ক, রাফি, আসফি, রণক, জারিন, তাওহীদ এরা সবাই পড়ছে।

ইতির কাছ থেকে তূর খবরটা পাওয়ার পর হাতের সাথে ফোনটা হাত থেকে পড়ে যায় আর সে সেন্সলেস হয়ে যায়। তূরের সেন্সলেস হওয়া দেখে বন্ধুরা সবাই ভেবাচেকা খেয়ে যায়। ওই মুহূর্তে কি ঘটলো তারা কেউ কিছু বুঝতে পারছেনা।

সবাই মিলে তূরকে ভার্সিটির মেডিকেল ক্যাম্পে নিয়ে আসে। জ্ঞান ফেরার পর তূর চোখের সামনে সবকিছু শূণ্য দেখতে পাচ্ছে।

সবার জোড়াজোড়িতে তূর সবকিছু খুলে বলে কাঁদতে থাকে ফুঁপিয়ে। সবটা শোনার পর অর্ক রেগে যায়।

অর্ক: এত বড় সাহস ওই মিহালের বাচ্চার! আমার বইনরে কষ্ট দিয়া সে আরেক মাইয়ারে বিয়া করে। এটা বলছে আর রাগে ফুঁসছে।

ফাইজা: ঠিক বলছিস তুই অর্ক। হারামিটা আমাদের সাথে এসে প্লেন করে সে আমাদের সাথে আমেরিকা যাবে মাস্টার্স করতে কিন্তু এখন দেখো সে তানজিনারে বিয়ে করছে একদম চুপিসারে। আমাদের তূরের ফিলিংস সে কখনোই বুঝতে পারে নাই।

রাফি: এই তোরা একটু চুপ কর। এই আসফি যা তো তূরে জন্য কিছু নিয়ে আয় ক্যান্টিন থেকে। এখন ওরে কিছু খাওয়াইতে হবে। মিহাল সবসময় তূরকে ইগনোর করেই গেলো আর এখন চুপচাপ বিয়ে করে ফেললো। সবাই এবার চুপ কর এগুলা বলে আর কি হবে? তূরকে এখন শান্ত করতে হবে তাই আগে তোরা শান্ত হো।

ফাইজা: রাফি বাই এনি চান্স তুই কি বলতেছিস আমরা মিহাল কে ছেড়ে দেবো? আর কিসের শান্ত হবো? কিসের চুপ করবো হ্যাঁ? একবার তূরের দিকে তাকায় দেখতো কিছুক্ষণের মধ্যে মাইয়াটার কি অবস্থা হইছে।

আসফি: আমরা মিহালকে ছাইড়া দিবো না কিন্তু এখনকার জন্য ওরে একটু শান্ত করতে হবে। একটু পরে আমাদের সবার পরীক্ষা ওর পরীক্ষাটা কিন্তু নাহলে খারাপ হবে অনেক।

লিরা: ছাইরা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

ফাইজা: আমরা চার বছর ধরে তূরকে দেখতেছি এই মেয়েটা মিহাল কে কতটা ভালোবাসে। এই মিহালের জন্য তূর রণক ও সিনিয়র কিছু ভাইয়ের প্রপোজাল রিজেক্ট করছে।

রণক মনে মনে ভাবে, ” কেন তূর, এই মিহালের জন্য আমার ভালোবাসাটাকে তুই নিজে রিজেক্ট করে দিয়েছিলি? যে তোরে আজ এতটা কষ্ট দিলো। তোর একটা দিক ভালো ছিল রে তূর! তুই আমাদের ফ্রেন্ডশিপটা নষ্ট করিসনি। আমার সাথে জারিনরে মিলিয়ে দিয়েছিস জারিনের ফিলংস জানার পর। আল্লাহ কেন তোর সাথে এমন করল।” এগুলো মনে মনে বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল রনক তাকিয়ে আছে সে তূরের দিকে।
আর জারিন সেও রণকের দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে। জারিন জানে রণক এখনো তূরকে ভালোবাসে কিছুটা হলেও। এমনটা কিন্তু না যে রণক জারিনকে কষ্ট দেয়। রণক এখন জারিন কে ভালোবাসে কিন্তু মনের মাঝে এখনও কিছুটা হলেও তূর আছে যা বন্ধুত্ব থেকে কিছুটা বেশি।

সবাই মিলে তূরকে আস্তে আস্তে ক্লাস রুমের দিকে নিয়ে আসে আর এক ঘণ্টার কিছু কম সময় আছে পরীক্ষা শুরু হওয়ার। এমন সময় নাদিয়া দৌড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলে,

নাদিয়া: দোস্তওও, আমার আর শাফকাতের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। ইয়েয়ে😁।
কথাগুলো বলে নাদিয়া সামনে তাকাতে দেখে সবাই তার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে আর তূর খুব অসুস্থ। সবার তাকানোর মানে নাদিয়া বুঝতে পারল না সে তূরকে অসুস্থ দেখে তাড়াতাড়ি তূরের কাছে গিয়ে কিছুটা উৎকণ্ঠতার সাথে বলে,

নাদিয়া: তূর বেবি, তোমার কি হইছে তোমারে এমন লাগতাছে কেনো?
লিরা সামনে এগিয়ে এসে নাদিয়াকে সবটা বলে। সব কথা শুনে নাদিয়া বলে,

নাদিয়া: শয়তানডার সাহস তো কম না আমার বান্ধবীরে কষ্ট দিয়া সে বিয়ে করছে! সাহস কত বড়! আমার তূর বেবির ভালোবাসার কোন মূল্য নাই?
নাদিয়াএগুলো বলছে আর হাত কচলাচ্ছে মনে হচ্ছে মিহালকে হাতের কাছে পেলে একদম টিপে মেরে ফেলতো।

নাদিয়ার কথা শুনে জারিন মলিন হেসে বলে,
জারিন: পৃথিবীটাই এরকম রে দোস্ত তুই কজনকে বলবি? “আমরা যাকে ভালোবাসি সে আমাদের ভালোবাসে না, আর সে যাকে ভালোবাসে ওই মানুষটাও তাকে ভালোবাসে না।”
জারিন কথাটা বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রণকের দিকে তাকায়। জারিনের তাকানো দেখে রণক মাথা নিচু করে ফেলে।

এতক্ষণ ধরে তাওহীদ সবার কথা শুনছিল এবার সে মুখ খুলে,
তাওহিদ: তোরা সবাই মিহালকে দোষ কেন দিচ্ছিস? দোষ কিন্তু সব মিহালের না! তূর কোনো দিনও মিহালকে নিজের ভালোবাসার কথা বলেনি। তবে সে জানতো মিহাল তানজিনাকে ভালোবাসে কিন্তু তানজিনা না। একবার বলেই দেখতো মিহালকে যেমনটা রণক বলেছিল তূরকে।

আসফি: প্লিজ ভাই তুই চুপ থাক। তুই না জেনে কথা বলবি না।
লিরা: হ্যাঁ তাওহীদ। তুই তো জানিস তূর দশ বছর যাবত মিহাল কে ভালোবাসে একতরফা। ওই স্কুল থেকেই মিহাল তূরকে কিছুটা হলেও ইগনোর করে।
রণকে তূর মানা করে দিলেও কিন্তু কথা বলা একেবারে বন্ধ করে নি। জারিনের সাথে রণককে মিলানোর জন্য কিন্তু তূর সবকিছু করেছে। আর মিহাল তো তূরের সাথে কথা মনে হয় মেপে বলে। তখন যদি মিহাল কে প্রোপোজ করত তাহলে মিহাল রিজেক্ট তো করতেই সাথে ওর সাথে যে অল্প যোগাযোগ আছে তাও রাখত না। মেয়েটা এইটুকু আশ্বাস নিয়ে এতদিন ভালোবেসে গেছে নীরবে।

তাওহিদ: হ্যাঁ আমি বুঝতে পারছি কিন্তু মিহালের জন্য আমাদের তূরকে মরে যেতে তো দিতে পারি না!!

এবার সবার কথা শুনে তূর বলে,
তূর: প্লিজ তোরা একটু চুপ কর না। প্লিজ আমার আর ভাল লাগছে না এই বিষয়ে কোন কথা বলতে ও শুনতে একটু পরে পরীক্ষা তোরা পড়। আমি এখন চাচ্ছি না আমার এই বিষয়টা নিয়ে কেউ কোনো কথা বলুক।
রাফি কিছু বলতে চাচ্ছিল কিন্তু তূরের কথা শুনে থেমে গেল। একটু অস্থিরতার সাথে লিরা বলে,

লিরা: তূর, তুই কি এখন একটু পড়তে পারবি একটু পরতো পরীক্ষা।
লিরার সাথে তাল মিলিয়ে সবাই সায় দেয়।

———–
পরীক্ষা শেষ হবার পরে লিরা বলে,
লিরা: আচ্ছা ইনু কই?
লিরার কথা শুনে ফাইজার টনক নড়ে আসলেই তো ইনু কই?
ফাইজা: এই ইনু না তানজিনার বেস্ট ফ্রেন্ড!! দেখছিস এ মাইয়াও বিয়ের আগে আমাদের কিছু জানায় নাই।

☆☆☆
ইনায়া তানজিনার স্কুল থেকে বেস্টফ্রেন্ড। তূরের সাথে ইনায়ার পরিচয় কলেজ থেকে। তাই একই ভার্সিটির অন্য ডিপার্টমেন্টের হয়েও সবার সাথে ইনায়ার বন্ধুত্ব অনেক ভালো।

ফাইজার কথা শুনে জারিন বলে উঠে,
জারিন: ওদের মাইক্রোবায়োলজির তো কালকে শেষ পরীক্ষা হয়ে গেছে তাই আজকে আর ভার্সিটিতে আসে নাই। অবশ্য আজকে যে আমরা সবাই মিলে একটু টাইমপাস করতাম সেখানেও ইনায়া আসতো না। আসবেই বা কিভাবে? সে তো এখন নিজের বেস্টফ্রেন্ড এর বিয়ের খুশিতে পাগল হবার অবস্থা।
জারিনের কথা শুনে রণক বলে,
রণক: ইনায়া আমাদেরকে একবার জানাতে পারতো।
অর্ক: জানালে কি আর ওর বান্ধবীর বিয়ে হতে দিতাম আমরা? এটা বলে আবার রাগে ফুঁসছে।

সবার কথা শুনে রাফি মনে মনে বলে,
রাফি: কেনো ইনু কেনো এমনটা করলে? এমনতো না যে তানজিনা মিহালকে ভালোবাসতো! তানজিনা তো মিহালকে ভালোবাসে না।
এগুলো ভেবে হতাশ নিঃশ্বাস ছাড়ে রাফি।

সবার কথার মাঝে তূর উঠে দাঁড়ায়। ওর উঠা দেখে আসফি বলে,
আসফি: তূর তুই কই যাস?
তূর: বাসায় যাব রে ভালো লাগছে না।

মলিন কন্ঠে কথাটা বলে কারো উত্তরের অপেক্ষা না করে তূর চলে যায়। সবাই ওর যাওয়ার দিকে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।

————-
পরীক্ষা শেষ হয়েছে একমাস হলো। এই একমাস তূর নিজেকে ঘর বন্দি করে রেখেছে। বন্ধু-বান্ধব ফোন করলে অল্প একটু কথা বলেই ফোন রেখে দেয়। জানালা ও বারান্দার দরজা দিয়ে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকে। খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম হয়েছে অনেক। রাতে ঘুম না হওয়ার কারণে চোখের নিচে হালকা কালি পড়ে গেছে। দিনদিন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে তূর।

হঠাৎ একদিন তূর বাড়ির মধ্যেই মাথা ঘুরে পড়ে যায়। ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলে,…

চলবে,

#শেষ_অধ্যায়ে_তুমি
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথি
#সূচনা_পর্ব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here