শেষ প্রান্তের মায়া পর্ব -০৩

#শেষ_প্রান্তের_মায়া (৩)
#বোরহানা_আক্তার_রেশমী
_____________

মাহিদ আমাকে নিয়ে প্রথমে একটা ফার্মেসী থেকে হাতটা ব্যান্ডেজ করিয়ে নিলো। ব্যান্ডেজ করানোর সময় লোকটা কেমন করে যেনো তাকালেন। হয়তো ভাবছিলেন এমন ক্ষ’ত কেমনে হলো! ব্যান্ডেজ শেষ করে ভাই আমাকে নিয়ে সোজা গাড়িতে করে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আসি। ঢাকা শহর থেকে আমাদের গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৭-৮ ঘন্টা। নিজের জন্য না হলেও ভাইয়ের জন্য খুব খারাপ লাগছে। ছেলেটাা এতোটা জার্নি করে এসেই আবার ফিরে যেতে হচ্ছে। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাসস্ট্যান্ডে বসে রইলাম। সামনে দিয়ে কিছু ছোট ছোট স্কুলের পোশাক পড়া বাচ্চারা যাচ্ছিলো। অজান্তেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে। একটা সময় আমিও তো এভাবেই স্কুল যেতাম। ইশশ সময় গুলো যদি আবার ফিরে পাওয়া যেতো তবে হয়তো আমার থেকে বেশি কেউ খুশি হতো না। দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বাস আসার অপেক্ষায় থাকলাম। ভাই গেছে টিকিট আনতে। কিছুক্ষণ পর মাহিদ ফিরে এসে আমার পাশে বসে। আমি তাকাতেই বলে,

‘বুবু টিকিট তো কাটা শেষ। বাস আসবে আরো আধাঘন্টা পর। তুমি কিছু খাবে?’

আমি মাথা নাড়ালাম। যার অর্থ ‘না’। মাহিদের মাথায় হাত রেখে বললাম, ‘তুই কিছু খেয়ে নে ভাই। তুই তো কিছু খাসনি।’

‘সে তো তুমিও খাওনি। চলো ভাইবোন একসাথে খেয়ে আসি।’

আমি কিছু বললাম না। ভাই হাত টেনে সামনের একটা ছোট্ট রেস্তোরাঁয় নিয়ে যায়। খাওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও একদম অল্প করে খেতেই হলো। নয়তো ভাইটা রাগ করে নিজেও আর খাবে না। খাওয়া শেষ করে বের হওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই গাড়ি আসে। আমার গায়ে তখনও শাড়িই জড়ানো ছিলো। খুব বেশি দামিও না আবার খুব বেশি সস্তাও না। তারপরও লোকজন কেমন করে তাকিয়ে ছিলো। আমি জানি এরা এমনই। আমি কোনো শব্দ না করে নিজেদের সিটে গিয়ে বসলাম। ভাই ব্যস্ত গলায় বলে,

‘বুবু তোমার কি বাসে বমি পায়? কিছু এনে দেবো!’

আমি দুদিকে মাথা নাড়ালাম। ভাই চুপচাপ বসে পড়ে। এমন একটা ভাই সবার কপালে জোটে না। বয়সে সে আমার ৩ বছরের ছোট। আমার যখন বিয়ে হয় তখন ওর বয়স ছিলো ১৩। সে কি কান্না জুড়ে দিয়েছিলো। বাবা মায়ের থেকেও বেশি কেঁদেছিলো আমার বিদায়ের সময়। বার বার বলছিলো, ‘বুবু থেকে যাও না! তুমি যেও না। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।’ কিন্তু সেদিন আমার চলে যেতে হয়েছিলো। প্রথমবার বিয়ের পর যখন বাড়ি গেছিলাম ভাইটা অনেক খুশি হয়েছিলো। ওহ হ্যাঁ আমরা ৩ বোন ১ ভাই। আমিই সবার বড়। তারপর মাহিদ, তারপর মাহমুদা, তারপর মাইশা। সবগুলো ভাই বোনই আমাকে অনেক ভালোবাসে তবে মাহিদ আমার ছোট হয়েও আমাকে অনেকটাই বোঝে। প্রথমবার বাড়ি যাওয়ার পর শুধু এই ছোট্ট ছেলেটিই জিজ্ঞেস করেছিলো,

‘তুমি ভালো আছো তো বুবু? ওরা তোমাকে কষ্ট দেয় না তো? তোমার চোখ মুখ এমন শুকনো কেন?’

আমি সেদিন হেঁসে বলেছিলাম, ‘ভালো আছি।’

ওকে কখনোই কিছু বলিনি। বয়স কতই বা হবে ওর! ওকে শুধু শুধু এসবে জড়াতে চাইনি তবুও ভাইটা আমার জড়িয়ে গেছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখ বুজে নিলাম। অনেক দিন পর আজ মনে হচ্ছে মুক্তি পাখি আমি।

___________
কতদিন পর নিজের গ্রাম দেখলাম। আসতে আসতে রাত ৮ টা পার হয়ে গেছে। গ্রামে এই সময় মানেই অনেক রাত। শুধু ঝিঁঝি পোকার শব্দ। মানুষের টিকিও দেখা যাচ্ছে না। গ্রামে আসার পর যেমন ভালো লাগছে তেমন ভয়ও লাগছে। বাবা-মা, গ্রামের মানুষ যদি জানে সব ছেড়ে একেবারে চলে এসেছি তাহলে কথাতেই আমাকে মে’রে ফেলবে। কিভাবে বাঁচবো এদের থেকে! মাহিদ হয়তো আমার ভাবনা বুঝলো। হঠাৎ করেই আমার হাত শক্ত করে ধরে বললো,

‘ভয় পাবে না বুবু৷ গত ৪ বছর ভী’তু হয়ে থেকেছো এটা ভেবে তোমার পাশে কেউ নেই কিন্তু এখন তোমার পাশে তোমার ভাই আছে। তুমি কারোর অ’ন্যায় আর সহ্য করবে না। কেউ তোমাকে কথা শুনাতে আসলে কষ্ট না পেয়ে, সহ্য না করে কাঠকাঠ উত্তর দিয়ে দিবে। তাতে কি হয় আমি দেখে নিবো! কারোর একটা কথাও মুখ বুজে সহ্য করবে না। তুমি ঘুরে দাঁড়াবে। শক্ত হাতে সবটা সামলাবে৷ পারবে না বুবু?’

এতটুকু একটা ছেলের এমন উৎসাহ মূলক কথা শুনে কে না সাহস পাবে! এমন একটা ভরসার হাত পেলে কবেই তো প্রতিবাদ করতাম সব অ’ন্যায়ের। আপনমনেই ভাইয়ের জন্য গর্ব চলে আসলো। এমন ভাই আমার মতো প্রতিটা মায়ার হোক। তাদের শক্তি হয়ে থাকুক। কথা বলতে বলতেই বাড়ির কাছে চলে এসেছি। কতগুলো দিন পর নিজের ঘর, নিজের জন্মস্থান দেখতেছি। ভাই উঠোনে এসে দাঁড়িয়ে মা’কে ডাকে। মায়ের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে ভাই এগোয় দরজার কাছে। দরজায় ধাক্কা দিয়ে মা’কে ডাকে। একটু পরই মা দরজা খুলে ভাইকে দেখে অবাক হয়ে বলে,

‘ তুই না আজই মায়ার শ্বশুরবাড়ি গেছিলি! আইসা পড়ছিস ক্যান?’

‘আমি একা না মা। বুবুও আসছে।’

মা উকি দিয়ে পিছে তাকায়। চোখ মুখ কিঞ্চিত কুঁচকে বলে, ‘আজই আসলি ক্যান? ২ টা দিন ঘুরে তারপর আসতি।’

মাহিদ কিছু বলে না। আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে দরজার কাছে নিয়ে যায়। মা আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘কতদিন পর তোরে দেখলাম মা!’

আমি কিছু বললাম না। এর মধ্যে আব্বাও উঠে আসছে। কিছু বলতে গিয়ে আমাকে দেখে খুশি হয়ে বলে, ‘মায়া মা আইছোস! কহন আইলি মা? তুই আইবি কবি না! জামাই আইছে মা?’

‘নাহ।’

আব্বা আর মা কিছু বললো না। মাহিদ এখনই আমার বিষয়ে কিছুই বলেনি। কিন্তু আব্বা আর মা যে কিছুটা ধারণা করতে পেরেছে তা আমি ঠিকই বুঝে গেছি। তবুও তারা এই মুহুর্তে কিছু বললো না। দুই ভাই বোনকে হাত মুখ ধুয়ে এসে খেতে বসতে বললো। মা এই রাতের বেলাতেই আবার হাড়িতে অল্প করে ভাত বসিয়ে ডিম ভেজে দিলো। দুজনে খেয়ে চুপচাপ ঘরে গেলাম। ঝড় শুরু হবে কাল সকাল থেকে তা আমার ভালো করেই জানা আছে। আমার বাড়িতে ৩ টা ঘর। একটাতে আব্বা-মা, অন্যটাতে আমরা ৩ বোন, আর একটাতে মাহিদ একাই থাকে৷ বরাবর মতোই নিজের ঘরে ঢুকে দেখি দুবোন হাত পা ছড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। আমি হেঁসে ওদেরকে ঠিক করে দিয়ে কাথা টেনে দিলাম। বিছানাটা বড় সড় হওয়ায় আমি এক পাশ চুপচাপ শুয়ে পড়লাম। আজ অনেকদিন পর শান্তিতে ঘুমাবো। কোনো ভয় নাই।

_________
সকাল বেলা কারো জাপ্টে ধরায় আর চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায়। তাকিয়ে দেখি দুবোন দুপাশ থেকে জাপ্টে ধরে আছে আর বার বার বলতেছে,

‘বুবু তাড়াতাড়ি ওঠো।’

আমি ভয় পেয়ে গেছি। ওদেরকে কোনোরকমে টেনে সরিয়ে দিয়ে বললাাম, ‘এমন করছিস কেন? কি হয়ছে?’

মাহমুদা শক্ত করে জড়িয়ে ধরো একপ্রকার কান্নাই করে দিলো৷ আমি ওর মাথায় দ্রুত হাত বুলিয়ে বললাাম, ‘কি হয়ছে বলবি তো!’

‘তোমাকে কতদিন পর দেখতেছি বুবু। আমরা তোমাকে অনেক মিস করেছি৷ তুমি এতোদিন আসোনি কেন বুবু?’

‘আচ্ছা বাবা আমার ভুল হয়ে গেছে। কান্না থামা। আর কখনো এমন করবো না।’

মাহমুদা আমাকে ছাড়তেই মাইশা হাত বগলদাবা করে গাল ফুলিয়ে বলে, ‘আমাকে তো কেউ ভালোবাসেই না।’

আমি হেঁসে ওকে জড়িয়ে ধরলাম৷ পিচ্চিটা চুপচাপ হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে। হুট করেই মাহমুদা ব্যান্ডেজ করা হাত ধরে বলে,

‘তোমার হাতে কি হয়ছে বুবু?’

আমি হাত ছাড়িয়ে নিয়ে আমতা আমতাা করে বললাম, ‘পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাইছি রে। তোরা উঠ!’

মাহমুদার হয়তো আমার কথাটা বিশ্বাস হয়নি৷ তাই সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে। তারপর কিছু না বলেই উঠে চলে যায়। ওর পিছু পিছু মাইশাও যায়। আমি চুপচাপ ঘর গুছিয়ে চুল খোপা করে নেই। তারপর ঘর থেকে বের হয়ে কলপাড়ে যাই। মা আমার কাছে এসে বলে,

‘তোর হাতে কি হয়ছে?’

আমি চোখ মুখে পানি দিতে দিতে বললাম, ‘যা হওয়ার তাই হয়েছে। তোমরা বাদ দাও।’

মা আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে চলে যায়। এর মধ্যেই মাহিদ একটা ছোট্ট ব্যাগ হাতে বাড়িতে ঢোকে। আমাকে দেখে হেঁসে ব্যাগটা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,

‘দেখো তো বুবু ঠিক আছে কি না!’

‘কি এগুলো?’

‘কথা কম বলে খুলে দেখো!’

আমি আর কিছু না বলে ব্যাগটা খুলে দেখি সেখানে ব্রাশ, পেষ্ট, সাবান, ক্ষ’তে লাগানো মলম আর ছোট্ট একটা ব্যান্ডেজ।

‘এগুলো আনতি গেলি কেন? টাকা কই পেলি?’

‘কথা কম বলে ব্রাশ করে নাও। আর একটু পর ব্যান্ডেজটা খুলে মলম লাগিয়ে নিও।’

আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে চলে যায়। মাহমুদা আমাার কাছে এসে বলে, ‘তুমি ব্রাশ করে নাও। আমি কল চেপে দিচ্ছি তুমি মুখ ধুয়ে নাও।’

আমি হাসলাম। এরপর চুপচাপ ব্রাশ করে নিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নিলাম। এর মধ্যেই খেয়াল করলাম বাড়ির সবাই-ই আমার দিকে কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে। কোনো কথা না বলে চুপচাপ মায়ের হাতে হাতে কাজ করে দিতে থাকলাম। মা জিজ্ঞেস করলেন,

‘জামাই কবে আসবে? তুই কতদিন থাকবি?’

আমি বটি দিয়ে সবজি কাটাতে মন দিয়েই বললাম, ‘এখনও একদিনও হয়নি এসেছি এখনই বুঝি বোঝা মনে হচ্ছে মা!’

‘তুই কি পা’গল হয়ে গেছিস মায়া? বোঝা মনে করবো কেন?’

‘তাহলে সবটা বুঝেও কেনো জিজ্ঞেস করছো!’

মা চুপ করে গেলেন। মাহমুদা আমার পাশে বসে আমাকে সাহায্য করতে থাকে৷ আজ আর সে স্কুল যাবে না৷ কতদিন পর বোন এসেছে যদি আবার চলে যায়! কিন্তু সে তো জানে না এটা আমার মেহমান হয়ে আসা না একেবারে সারাজীবনের মতো চলে আসা।

সকাল বেলা সবাই খাওয়া শেষ করে গ্রাম ঘুরতে বের হলাম। আমি, মাহমুদা আর মাইশা। মাহিদ যাবে না। তবে বের হওয়ার আগে বারবার করে বলে দিয়েছে, ‘কেউ কিছু বললে কানে তুলবে না।’ আমি বিনিময়ে শুধু হেঁসেছি। আর কিছুই বলিনি। গ্রামে বের হতেই পুরোনো সবার সাথে দেখা হলো। কেউ কেউ কথাা বলছে, ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করছে আবার কেউ কেউ ঠিকই কা’না ঘুষো করছে। এতে আমার যায় আসে না। আমি চুপচাপ বোনদের নিয়ে ঘুরতে শুরু করলাম। সেই পুরোনো খাল বিল, জমি, পুকুর সবটাই আছে। সবুজে সবুজে ভরে আছে চারপাশ। পুকুর পাড়ে এসে ৩ বোনই শান বাঁধানো সিড়িতে বসলাম। একবার পা ভিজাচ্ছি আবার তুলে নিচ্ছি। মাহমুদা বলে,

‘একটা সত্যি কথা বলবে বুবু?’

‘কি সত্যি রে!’

‘তোমার গায়ে এতো দাগ কিসের! কেউ কাউকে খুব নি’র্দয় ভাবে মা’রলে যেমন হয় ঠিক তেমন দাগ। তোমাকে কি দুলাভাই মা’রে?’

আমি চমকে উঠলাম। মেয়েটা এসবও খেয়াল করেছে! পাশে তাকিয়ে দেখলাম মাইশা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। আমি কিছু বলতে যাবো এর আগেই মেয়েলি কন্ঠে একজন ডেকে ওঠে, ‘মায়া!’

আমি তাকালাম সেদিকে। অবাক হই। এতোগুলো দিন পর পুরোনো সইকে দেখে আবেগে ছুটে যাই তার কাছে। জাপ্টে ধরি। সেও ধরে। হেঁসে বলে,

‘আমি তো ভেবেছিলাম এ জীবনে বুঝি আর তোর দেখা পাবো না।’

আমি হাসলাম। কিছু বলতে নিলেই কানে আসে কেউ পেছন থেকে বলছে, ‘রুপা সাবধানে!’

রুপা মানে আমার সই! সে অদ্ভুত ভাবে হেঁসে পেছনে তাকায়। আমিও তার দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকাই। রাফিন ভাই! আমি একবার রুপা আর একবার রাফিন ভাইয়ের দিকে তাকালাম। রুপা হেঁসে আমাকে গুতো দিয়ে বলে,

‘দেখেছিস! লোকটা কত ভালোবাসে!’

যা বুঝার বুঝে গেলাম। খুশিই হলাম। শুনেছিলাম রুপার বিয়ে হয়েছে কিন্তু কার সাথে হয়েছে তা জানতাম না। ৪ বছর আগে যখন আমি ষোড়শী ছিলাম তখন এই রাফিন ভাই পাগলের মতো পড়ে ছিলো আমার পেছনে। আমি অতো শতো না বুঝলেও এটা ভাবতাম আমরা নিম্নবিত্ত পরিবারের আমাদের এসব ভালোবাসা মানায় না। তাই তো যতবার উনি এসেছে ততবার আমি ফিরিয়ে দিয়েছি। বিয়ের দিন উনি সবার অলক্ষে এসে আমার হাত ধরে হাউমাউ করে কেঁদেছিলো। আমার কাছে সেদিন কিছুই করার ছিলো না৷ প্রথমবার তার জন্য অনেক বেশি খারাপ লেগেছিলো কিন্তু আমি সেদিনও উনাকে ফিরিয়ে দিয়েছি। হয়তো উনার চোখের জলের অ’ভিশাপ গুলোর জন্যই আজ আমার এমন বেহাল দশা। হয়তো এই মানুষটার ভালোবাসাকে গুরুত্ব দিলে আজ আমি এই পরিস্থিতিতে থাকতাম না। রুপার ডাকে ধ্যান ভাঙে। কথাায় কথায় জানতে পারি সে প্রেগন্যান্ট। তাকে অভিনন্দন জানালাম। কিছুক্ষণ কথা বলে দুজনে বিদায় নিলো। আমি একবার তাদের যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে হাসলাম। রাফিন ভাই রুপাকে ভালোবেসে কি সুন্দর আগলে রেখেছে। শুনেছি ওর শ্বশুরবাড়ির সবাইও ওকে অনেক ভালোবাসে। একদিকে আমার শ্বশুরবাড়ি যেখানে অ’ত্যা’চা’র ছাাড়া কিছু পাইনি আরেকদিকে রুপা! কি সুন্দর একটা পরিবার পেয়েছে। আসলেই পৃথিবীতে এতো এতো মানুষের ভিন্ন ভিন্ন চরিত্র, ভিন্ন ভিন্ন সুখের ধরণ, ভিন্ন ভিন্ন সংসার..জীবন সুন্দর!

চলবে..
(আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here