সংশয় 1
লেখিকা :ঐশি
.
.
“আম্মু ওই লোকটা আংটি পড়ালো কেনো তোমাকে ?”
.
আজকে নিজের গার্লফ্রেন্ড কে আংটি পড়াতে এসেছি ।কিছু দিন এর মাঝেই আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি ।আংটি পড়ানোও শেষ ।আমার হবু বউ এর পাশে একটা মেয়ে বসা ছিলো ।ভেবে ছিলাম কোনো আত্নীয় হয়তো ।কিন্তু এই মাত্র যে কথা বললো তা একটু ভাবিয়ে তুললো ।তবুও আমি কিছু না বলে মেয়েটাকে ইশারায় ডাকলাম ।সে পাশে এসে বসলো ।আমি তাকে সুন্দর করে বললাম,,,
–তোমার নাম কি মামনি ?
–তাসফিয়া,,
–কোন ক্লাসে পড়ো তুমি ?
–ওয়ান এ ,,
–তা তোমার আম্মু কোথায় ?
–ওই যে তুমি যাকে আংটি পড়ালে সে ই তো আমার আম্মু ,,
এইটা কি বললো ?রীতি মতো আমার মাথায় বাজ পড়লো ।এটা কি বলে ?তবুও কান দিলাম না ।ভাবলাম আমার হবু বউ এর সাথে কথা বললেই হয়তো জানা যাবে ।আর হয়তো ওর মা কোথাও শপিং করতে গিয়েছে তাই হয়তো ওকেই আম্মু ডাকছে ।তারপর খেয়াল করলাম আমার পরিবারের সবাই ই আমার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে আছে ।তাই বললাম ,আমাদের একটু আলাদা ভাবে কথা বলতে দেওয়া হোক ।দুজন এক ঘরে বসে আছি করো মুখে কোনো কথা নেই ।নিরবতা ভেঙে বলে ফেললাম,,
–এই মেয়ে কে ?তোমাকে কেনো আম্মু ডাকছে ?
–আসলে ওকে আমি কুড়িয়ে পেয়েছি ।
–এই সময় মজা টা না করলে হয় না ?
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
–সত্যি বলছি ,,ওকে আমি পার্কে পেয়েছি কিন্তু সে আমাকে ই আম্মু বলে ডাকে ,,
–এটা কেমন কথা বলো তো ?আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না ,,
–সত্যি বলছি বিশ্বাস করো একবার ।তা না হয় আমি কেনো মিথ্যা বলবো ?
–আমার পরিবার তো বিশ্বাস করবে না আর আত্নীয়স্বজন রা ই বা কি বলবে বলো ?
–তুমি একটু মেনেজ করো প্লিজ,,
–দেখি কি করা যায়,,
এই বলে চলে আসলাম ।বের হযে বাসায় আসলাম ।সবাই কে কোনো রকম মেনেজ করেছি ।সামনের মাসের শুরুতে বিয়ে আমাদের ।কিন্তু আমার মনে সন্দেহ কেনো যেনো পিছু ই ছাড়ছে না ।কিন্তু ঘটনা ঘটলো এরপর দিন রাতে ।আমি ঘুমাচ্ছিলাম তখন ই এক বন্ধু ফোন করে বললো,
–দোস্ত,তোর বউ দেখি বিয়ের আগেই বাচ্চা নিছে ,,তুই এইসব কাম করছোস আগেই ,,শালা লুচ্চা তো তুই,,
কিছু ই বলিনি শুধু চুপ করেছিলাম ।ভোর সকাল এ উঠে ফোন হাতে নিতেই দেখি একটা মেসেজ সেখানে লিখা ,”কি অবস্থা ?মেয়েটা তোমার বউ এর ই ” ।
আমি এই মেসেজ পড়ে দুই তিন মিনিট একদম চুপ ছিলাম ।ভাবলাম না এই সন্দেহের একটা সমাধান আমাকে করতে ই হবে ।তাই সকাল এ উঠে প্রীতিদের বাসায় গেলাম ।তাকে কোনো কিছু না বলেই সেই মেয়েকে নিয়ে হাসপাতাল আসলাম ।এসে তাদের দুইজন কে সারা শরীর পরিক্ষা নিরিক্ষা করালাম ।এটা আসলে কার মেয়ে আসলে আমাকে জানতে ই হবে ।প্রীতি বার বার বলছিলো কি জন্য নিয়ে এসেছি তাদের ,আমি শুধু একটা কথা ই বললাম শরীর চেকাপ করা ভালো ভাবলাম তুমি আমি আর তাসফিয়া চেকআপ করি ।রিপোর্ট এখনো দেই নি ।আজ সন্ধায় এর রিপোর্ট দিবে ।যতো রকম এর পরিক্ষা সব কিছু ই করিয়েছি তাদের ।রাতে চিন্তা করছি ,রিপোর্ট টা কি আসবে ? হঠাৎ একটা কল আসলো ।ফোন রিসিভ করতেই ,,,
–ভাই রিপোর্ট নিয়ে আসুন যান ,,এতো চিন্তা করলে হবে নাকি ,,
এরপর কথার আর উওর দিতে পারিনি ।ঢাকা শহরের জ্যাম এর মাঝে দুই ঘন্টা লেট করে যখন হাসপাতাল এ ডাক্তার এর সামনে রিপোর্ট গুলো দিলাম ।আর মনে মনে ভাবছি যেনো এই মেয়ে আমার ভালোবাসার মানুষটির না হয় ।ডাক্তার আমার দিকে তাকিয়ে বললো,,,
–আপনার বাসা কোথায় ?
–মিরপুর-১৪ তে,,
–তা রিপোর্ট ভালো ই এসেছে ।তা আপনি পরিক্ষা করলেন না কেনো নিজের ?
–এমনি তে ই করিনি,,,,
রিপোর্ট নিয়ে বাসায় আসছি আর ভাবছি যাই হোক এটা তো আর আমার হবু বউ এর বাচ্চা না ।হঠাৎ দেখি সামনে বন্ধু সাজিদ ।পুরোনো বন্ধু আমার তাই জোড় করেই নিয়ে গেলো তার চেম্বার এ ।এমবিবিএস ডাক্তার সে ।হাসা হাসি করছি এমন সময় সাজিদ বলে উঠলো,,
–কিরে কিসের ফাইল এটা ?আন্টির কি শরীর খারাপ ?
–আরে না না,,তোর ভাবির চেকআপ এ গিয়েছিলাম একটু ।
–দে তো দেখি ,,,
আমি কাগজ গুলো দিলাম ।সে মনযোগ দিয়ে পড়লো ।কিছুক্ষন পড় বললো,,
–আরে তোর মেয়ে এটা পরিক্ষা করতে হয় নাকি ?এসব পরিক্ষার মানে ই বা কি ?তোর বউ এর ই এই বাচ্চা ,,
–কি ?
–হ্যা ,,বিয়ে করলি না তার আগেই বাচ্চার বাপ হয়ে গেলি বন্ধু ,,
রাগে সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম ।সাজিদ পিছু ডাকছিলো আসিনি ।তাহলে কি প্রীতির আগে কোথাও বিয়ে হয়ে ছিলো ?হ্যা,তা ই ঠিক ।হয়তো বাচ্চা তার ওই স্বামীর কাছে ছিলো এখন এসে পড়েছে আর ও শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছে ।আমি চিন্তায় কোনো কিছু ই নিতে পারছি না ।এসব তাহলে সব সত্যি ।এই রাতে ব্রীজ এর উপর দাড়িয়ে ফোন করলাম প্রীতিকে বললাম,,
–আমি এই বিয়ে টা করতে পারবো না আমাকে মাফ করে দিয়ো ,,,
চলবে,,,
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন