অপ্রকাশিত_ভালোবাসা শেষ_পর্ব ৪

অপ্রকাশিত_ভালোবাসা শেষ_পর্ব ৪
লেখক :ঐশি

.
তখন ই শুনতে পেলাম,,,
–কত গুলো খুন করেছি জানি না ।তবে সবার শেষ এ তো আমাকে যেতে ই হবে ।আর পাচঁ মিনিট পরে জানতে পারবে আমি কে ,,,,।আমি সব কিছুর সমাধান দিয়েই আমি চলে যাবো ।
এরপর অনেক ডাকলাম কিন্তু কাউকে আর পেলাম না ।কিছুক্ষন পর কেউ একজন এলো ছায়ার মতো ।দেখেছি আমি তবে তা দেয়ালে ।সে যা ই হোক আমার এসব ভাবার সময় নেই ।আমি সোজা প্রশ্ন করলাম ,,
–কি জন্য এখানে আমাকে নিয়ে এসেছেন ?আর আপনি কে ?কেনো এতো গুলো মানুষ এর জীবন নিলেন ?
–একটা গল্প শুনাই ?শোনবেন?
–গল্প শোনার মতো মন মানুসিকতা নেই আমার ।আমি আগে প্রশ্ন করেছি তার উত্তর দিন আগে ,,
এরপর আর কোনো কিছুই বলেনি সেই মানুষটি ।তারপর বুঝতে পারলাম কেউ একজন আমার সামনে এসে বসলো ।তারপর বলতে শুরু করলো,,,
–এই ময়মনসিংহ শহরেই একটা ছেলে বাস করতো নাম ফাহিম ।তাকে তুমি ভালো করে চিনতে এবং জানতে ।দীর্ঘ দুই বছরের প্রেম একদিন এ ভেঙে যায় ।কারন তুমি অন্য কারো কথা বিশ্বাস করে এই সম্পর্ক টা ভেঙে ছিলে .।ছেলেটা দেখতে খুব ভালো ছিলো না ।তবে তুমি যখন যেখানে যেতে চাইতে সব সময় তোমার পাশে থাকতো ।কলেজ লাইফ যখন শেষ এর দিকে তখন ই তুমি পাল্টাতে শুরু করো ।বুঝে ছিলে ফাহিম আর ভালো রিসাল্ট করবে না এটাই ছিলো তোমার মূল পয়েন্ট ।সে যা ই হোক ব্রেকআপ এর পর তোমার বাবা ঢাকায় পোস্টিং হয় ।সেখানেই তুমি চলে যাও ফিরে তাকাওনি আর ছেলেটা মধ্যবিও পরিবারের তুমি জানতে ।তুমি যখন তার কাছ থেকে কোনো গিফট পেতে না তোমার খারাপ লাগতো ।তুমি আরও একটা বুদ্বি করেছিলে ।তুমি জানতে এই সম্পর্ক কখনোই শেষ হবার না কারন তার কোনো ভুল ছিলো না ।তখন তুমি তাকে টাকা দিতে ভালোবাসার খাতিরে ।আর ওর কোনো ভালো বন্ধুও ছিলো না ।এক সময় তুমি এই টাকার জন্য যা তা বলেছিলে তাকে ।পুরো একটা কাহিনী তুমি তৈরি করেছিলে ।এই টাকা গুলো সে জোগাড় করতে পারেনি কারন সে বোকা ।অনেক কষ্টে তোমাকে দিলেও বন্ধুদের সব খারাপ কথা আর ভালো রিসাল্ট করেনি সব কিছু নিয়ে একটা সমীকরন দাড় করালে তা হলো সম্পর্ক টা এখানে শেষ হোক ।ব্যাস এখানেই সম্পর্ক টা শেষ ।এরপর তুমি ঢাকায় বড় হলে ।পিছে আর ফিরে তাকাওনি ,,
আমি একদম চুপ ।আমি ভাবনার সাগরে হারিয়ে গেলাম ।কি বলবো তার আগেই আমি টের পেলাম আমার হাতের সব বাধন খুলে গেছে ।তখন ই বললাম,,
–তাহলে কি তুমি ই সেই,,,
–আস্তে আস্তে ,,,পরে শুনো কি হয়েছে ,,,।তুমি চলেগেলে এমন খারাপ রিসাল্ট করলো ছেলেটা যে বাসা থেকে বের হতে পারছিলো না ।একটা বেসরকারি কলেজ থেকে অনার্স পড়ে সে ।তুমি একটা সরকারি কলেজ এ ।ছেলেটা একটা ভালো চাকরি ও পেয়ে গেলো তাও আবার সরকারি চাকরি ।দিনকাল এভাবেই চলছিলো কিন্তু তোমার চিন্তা তখনো মাথা থেকে যায় নি ।এতোটাই বিভোর ছিলো যে শেষে চাকরি থেকে চলে আসে ।তারপর নতুন নেশা শুরু হয়। তুমি যেখানে যেতে সেখানেই সে ।খুজে পাওয়াটা খুব কঠিন ছিলো না তার কাছে ।শুরু হলো খন ।তুমি যাকে পছন্দ করতে না তাকই মেরে ফেলতো ।
এবার আমার সব রহস্য বের হয়ে আসলো ।কিছু ই আর অজানা থাকলো না ।ঠিক তখন ই লাইট জ্বলে উঠলো ।আমি অন্ধকার থেকে আলোতে আসতেই চোখটা একটু কচকে নিলাম সামনে তাকাতেই দেখলাম ,ফাহিম ।আমি আমার কন্ঠ ই জেনো হারিয়ে ফেলেছি ।এমন সময় সে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলতে শুরু করলো,,,
–এতো চাপ নেওয়ার কিছু নেই ।আমি কি কি করেছি তার সব সমাধান দিয়েই যাবো ।

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন



–এসব কেনো করেছো তুমি পাগল নাকি ?
–এমন মানুষকে তো পাগল ই বলে তাই না ?শুনো তোমাকে চারটা পাত্র পক্ষ দেখতে আসা সবাইকে এক ধরনের মেডিসিন দিয়ে মেরেছি ।সেটা কোথায় পেয়েছি তা জানার বিষয় তোমার না ।সেটা নাক দিয়ে ঘ্রান নিলেই রক্তের চার স্বাভবিক এর চেয়ে দশ গুন বেরে যায় ।ফলে ব্রেইন এ স্ট্রোক হয় ।এরপর সেটা আমি ডোম এর কাছে নিয়ে যাই তিনি ই তার চোখ খুলে রাখেন আর আমি তারপর ফেলে দেই এটাই ।তবে ওই ডোম এর লোক কে আমি একটা লাশ এর জন্য ১ লক্ষ টাকা করে দিয়েছি ।
–তুমি একটা নরপিশাচ ।মানুষ না তুমি ।এমন কাজ করতে পারলে খারাপ লাগলো না ?
–আরে না না ,,,তারপর তুমি এইখানে আসলে।তা বিপদে যে প্রিয় মানুষ ও পর হয় তার প্রমান ই তোমার পরিবার ।অন্য সকল কে যেভাবে মেরেছি ঠিক সেভাবেই পুলিশ কে মেরেছি ।এরপর যত খুন হয়েছে সব গুলো তে এক ই কৌশল ব্যবহার করেছি ।তাসফিয়ার মা কে মেরে ফেলতাম কিন্তু ছোট একটা বাচ্চা কি করে থাকবে ।তাই তার মা কে বুঝাতে চেষ্টা করেছি ।আর সব শেষে তাকে ফিরিয়ে দিলাম ।
–আর ছায়া হওয়ার ব্যাপার টা ?
–আমার কাছে এক ধরনের গ্লাস আছে সেটা দিয়ে প্রায় ৫০ হাত দূরে প্রতিবিম্ব তৈরি হয় ।আর আমি তোমার বাসা থেকে প্রায় বিশ হাত দূরে ছিলাম ।এজন্য ঐ প্রতিবিম্ব তোমার দেয়ালে মানে বারান্দায় অনায়েশে পড়েছে ।আর তোমার রুম এ ঢুকলাম কিভাবে ?এতো পুলিশ এর মাঝেও ?
–কিভাবে ?
–পুলিশ কে টাকা দিয়েছি ব্যাস ,,।আর হোটেল বয় খুন তো আমি ই করেছি ঐ যে কলম এর পাইপ দিয়ে পয়জন ভরে তীর মারি ব্যাস খেল খতম ।অনেক কিছু ই করে ফেলেছি ।
–কেনো এসব করলে ?তুমি একটা পাগল ,,মানুষ না,,
–হ্যা তা ই ,,সেই বান্ধুবি দুটি তানহা আর ঐশি অদেরও মেরে ফেলেছি ঠিক এক ই ভাবে ,,
—এখন কি আমাকে মারবে ?
–ভেবছিলাম তোমার কাছে ফিরে আসবো কিন্তু তা আর হবে না ।আর আমি যাদের মেরেছি তারা কেউ ই ভালো না ।তোমাকে চারটি পাত্র পক্ষ দেখতে এসেছে তারা সবাই খারাপ ।জানি তুমি কখনোই আমাকে ক্ষমা করবে না ।
–ক্ষমার মতো কাজ তুমি করোনি ।তুমি বলতে সব আমি তোমাকে ঠিক ই বিশ্বাস করতাম ।
–অনেক বলেও তো সম্পর্ক টা রাখতে পারিনি এখন কি করে রাখবো বলো ?তোমাকে ছেড়ে দিবো চলে যেতে পারো এখন ই ,,,
–তুমি ফারদিন কে মারোনি কেনো ও তো আমাকে ভালোবাসে ?
–ও যে সত্যি ই তোমাকে ভালোবাসে তাই কিছু ই করিনি ,,।আর কখনই ক্ষতি করবো না ।তোমরা সুখে থাকো এটাই চাই ,,
আমি বেরিয়ে আসছি পিছনে মনে হচ্ছিলো ফাহিম কান্না করছে কিন্তু এমন খারাপ এর সাথে থাকার মতো অবস্থা নেই ।ঠিক তখন ই পিছন থেকে বলে উঠলো ,,,
–কখনো তো তোমাকে জড়িয়ে ধরতে পারিনি একবার জড়িয়ে ধরতে দিবে ?শেষ বারের মতো,,
–শেষ বার মানে ?
–তুমি যে মাত্র চেয়ার টাতে বসে ছিলে তার উপরে একটা বাতি কিন্তু পিছনে অন্ধকার ।তাই না ?
–হ্যা কি হয়েছে,,,
সারা ঘুর আলোকিত হয়ে উঠলো ,,,সারা ঘর এ পুলিশ ।আমি একদম অবাক ।তার চেয়ে বেশি অবাক যখন দেখলাম ফারদিন ও পুলিশ ।এবার সব ই স্পশ্ট হয়ে উঠলো ।তখন ই ফারদিন বলতে শুরু করলো,,
–ফাহিম যখন তোমার ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে আসে তখন তাসফিয়া রুম থেকে বারান্দায় আসে এসে একটা চুইংগাম পায় ভেবেছিলো কেউ হয়তো এটা খেয়ে ফেলেছে ।কিন্তু সে সেটা নিচে ফেলে দেয় এটা একদম আমার সামনেই পড়ে ।আর এই চুংগাম চাবানোর ডিএনএ টেষ্ট করি আর আশে পাশের সব জায়গায় তদন্ত করি আর ফাহিম কে ধরে ফেলি ।
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
এতো কষ্ট করেও যদি না ধরতে পারি তাহলে তো এটা একটা ব্যার্থতা।তবে সে কোনো কিছু ই মুখে বলতে চাইছিলো না তাই তোমাকে এখানে নিয়ে আসা যাতে সকল ঘটনা টা জানতে পারি ।আর তাকে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়াও হয়েছিলো সে মানসিক ভাবে অসুস্থ তবে পাগল না ।সে তোমার নেশায় পাগল ।
–ফারদিন তুমি কি বলছো এসব ?
–যা বলছি সব ই সত্যি ,,,
আমি জানি এখন ফাহিম কে তারা ধরে নিয়ে যাবে ।আর কখোনই দেখা হবে না ।আমি বললাম,,,
–ফারদিন তুমি কি তাহলে আমাকে ভালোবাসো না ?নাকি এসব আমাকে দিয়ে করিয়েছো কোনটা ?
–ভালোবাসা টা পরের হিসাব এর আগে আমার দায়িত্ব ।
ফাহিম এক ধ্যান এ চেয়ার এ বসে আছে ।আমি এতো গুলো দিন নিজের মতো করে চলেছি কেউ যে এতো ভালোবাসে তা আমি বুঝিনি ।আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি তাকে ।অন্য মানুষের কথায় আর নিজের স্বার্থে এই মানুষটাকে এতো টা খারাপ তো আমি ই বানিয়েছি ।অথচ আমার ভালো খারাপ এর সময় এই মানুষটা ই ছায়ার মতো পাশে ছিলো ।আমি এক পা দুইপা করে সামনে যাচ্ছি ফাহিম এর ।এরপর ও একটু মাথা তুলে তাকাতলো ।আমি বুঝতে পারি মানুষকে পাওয়ার মাঝেই সফলতা অন্য কিছু ই না ।ফাহিম কে দেখছি সে আবার মাথা নিচু করে রেখেছে ।এখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়লাম ।আর বলতে শুরু করলাম ,,.
–ফারদিন এই মানুষটা ই আমার প্রথম ভালোবাসা ।আমি অনেক ভুল করেছি যার ফল আমি ভোগ করেছি ।ও তো মানসিক রোগী ওকে তো ছেড়ে দিবে তাই না ?আমি নিয়ে যাবো কেউ কিছু বলো না প্লিজ যদি ভালোবেসে থাকো ,,,
ফাহিম মাথা তুলে মুচকি হাসে ।
আমি সেদিকে খেয়াল না করে ফাহিম কে বললাম,,,
–তুমি যাবেনা আমার সাথে ?
–হ্যা যাবো ,,একটা কাজ করো ।
–কি কাজ ,,,??
–তুমি আর আমি চলে যাবো কেউ কিছু বলবে না ।তোমার হাসি টা অনেক সুন্দর ,তুমি ওই যে দরজা ওখান থেকে একটু হেটে আসো তো দেখি ।তোমাকে অনেক সুন্দর লাগবে ,,,
আমি বিশ্বাস করলাম না ।তখন ফারদিন কে বললাম ,,,
–ছেড়ে দিবে তো ?
–অবশ্যই ,,,
তখন ই আমি একটু সামনে যেয়ে একটু হাসতে হাসতে সামনে যাচ্ছি ফাহিম এর দিকে ।ফাহিম এক ধ্যান এ আমাকে দেখছে ।আমি কাছে যেয়ে হাসছি তার কোনো আকর্ষন নেই ।আমার এতো কিছু ভেবে লাভ কি ?আমি আর এখন আগের মতো নেই ভালো হয়ে গেছি!সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন। কে যেই না হাত ধরে টান দিয়ে তুলতে যাবো তার আগেই দেখলাম ফাহিম এর গাল মানে ঠোট এর কিনার দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে ।আমি ঠোট টা একটু ছোয়ার সাথে সাথে ই রক্তে আমার হাত ভরে গেলো ।বুঝতে আর বাকি নেই যে ফাহিম আর নেই ।ফাহিম এর চেয়ার এর পিছনেই ছিলো RAB ।তাদের কেউ একজন আমাকে না জানিয়ে ই এমন কাজ করলো তবে ফাহিম জানতো কিন্তু বলেনি ।পিঠে হাত দিতেই বুঝলাম সেই কলম এর অস্র ।আমি এখন কান্নায় ভেঙে পড়লাম ।কারন এখন আমার কেউ নেই ।কিন্তু পুলিশ রা আমাকে নিয়ে গেলো বাইরে নিয়েই কোনো এক ডাক্তার এর মাধ্যমে ঘুম এর ইন্জেকশন দেওয়া হয় ।এরপর দুদিন পর যখন স্বাভাবিক হই তখন ফাহিম কে খুজি অনেক কিন্তু খুজে পাইনি ।আমি বুঝতে পারি ফাহিম কত টা ভালোবাসতো আমাকে ।এরপর দীর্ঘ দুই বছর একা একা থকতাম ।ফাক্হিম কে ভালোবাসি বলা হয়ে উঠেনি কখনো ই ।মানুষটা কে একে বারেই শেষ করে দিয়েছি আমি ।এর মাঝেই ফারদিন বিয়ের কথা বলতে শুরু করে ।হ্যা বিয়েও হয় আমাদের ।কিন্তু একটা মূর্তির কাছে ।বাসর রাতে যখন ফারদিন বললো,,
–ফাহিম কে আমাদের টিক বা RAB এর কেউ ই মারেনি তবে কোথা থেকে যে এই অস্র টা এলো জানি না ।এখনো ধরতেই পারিনি ।
তখন ই বারান্দায় একটা শব্দ শুনলাম ।আমি আর ফারদিন তারাতারি গেলাম ।বারান্দার দেয়ালে খেয়াল করতেই দেখলাম একটা কাগজ ঝুলছে তাতে লিখা ,,,
–ভালোবাসো তো বলেছো ই ।ভালো থাকো ফারদিন কে নিয়ে ।আমি তোমার প্রথম ভালোবাসা ।আজীবন থাকুক “অপ্রকাশিত ভালোবাসা ” ।আমি এই ছায়া হয়ে ই পাশে থাকবো ।ভালো থেকো ।
….সমাপ্ত….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here