#সত্যি_তোকে_অনেক_ভালোবাসি💖💖
#Part : 6
#ইসরাত_জাহান_প্রভা
বিকালবেলা ছাদে একা একা বসে আছে মিরা।মালিহাকে সহ্যই করতে পারছে না মিরা।।মালিহার জন্য শুভ কাছে যেতে পারছে না মিরা।।খুব কষ্ট হচ্ছে তার।।শুভ সারা বাড়ি খুঁজে মিরাকে না পেয়ে ছাদে এসে মিরাকে দেখতে পায়।।
শুভ: মন খারাপ?(মিরার পাশে বসে)
মিরা: নাহ!(ভাঙ্গা ভাঙ্গা স্বরে)
শুভ: একা একা বসে আছো যে?আমাকে ডাকলেও তো পারতে।।
মিরা: আপনার কী আমার জন্য সময় আছে?(অভিমানী স্বরে)
শুভ মিরার হাত ধরে বললো,রাগ করেছো সোনা??
মিরা উঠে ধপ করে শুভর কোলে উঠে শুভর বুকে মাথা গুঁজে দেয়।।শুভ বুকে ব্যাথা পেলেও মিরাকে ভালোবাসায় জড়িয়ে নেয়।।অনেক দিন পর মিরা শুভর বুকে শান্তি খুঁজে পেলো।।
মিরা: আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি শুভ।।(মায়াবী স্বরে)
শুভ: আমিও তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি মিরা।।(দু হাত দিয়ে মিরাকে গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরে)
গোধুলী Logno টা শুভর কোলে বসেই উপভোগ করতে লাগলো মিরা।।শুভর হাতের ছোঁয়ার যাদু আর গভীর মমতায় মিরার মাথায় হাত বুলানো মিরার অন্তরে শান্তির বাতা বয়ে আনলো।।দূরের সূযটা অস্তমিত যাওয়ার আগ পযন্ত শুভ আর মিরা খুনসুটি গল্প করতেই থাকলো।
…..
সন্ধ্যার দিকে মেয়েরা সবাই মিলে গল্প করতে লাগলো।।শুধু মালিহা সোফায় বসে ফোন টিপতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।।শুভর সাথে নিশান রয়েছে উপরে।।
অনু:মালিহা আসো এখানে!গল্প করি।(মালিহার দিকে তাকিয়ে)
মালিহা:তোমরা গল্প করো আপু।।আমার একসাথে গল্প করাটা ভালো লাগে না।।(ফোনে মগ্ন হয়ে)
অনুর মুখটা গম্ভীর হয়ে গেলো মালিহার কথা শুনে।
পায়েল: আপু বাদ দাও তো।।(অনুর হাত ধরে)
মিরা: আচ্ছা নিশান ভাইয়ার তো রাতে ট্রিট দেওয়ার কথা ছিলো।।তোমার মনে নেই পায়েল?
পায়েল: হ্যাঁ।।তাই তো।।
অনু: কোন খুশিতে?শুভ ঠিক হয়েছে তাই?(প্রশ্ন করে)
পায়েল: আরে না।।ভাইয়া নাকি আরেকটা মেয়েকে পটাইছে তাই।।(মিরার দিকে আস্তে চোখ টিপে)
অনু: কীহ??কী বলছো এই সব পায়েল?(হতবম্ভ হয়ে)
মিরা: ঠিকি বলেছে রে অনু।।ভাইয়া তো তাকে নাকি বিয়েও করবে কিছুদিনের মধ্যে।।(লম্বা সুরে)
পায়েল: তাই তো ট্রিট দিচ্ছে।।তুমি জানো না আপু?(অনুকে প্রশ্ন করে)
অনু: ওর এত্ত বড় সাহস!!আজ ওর একদিন কী আমার একদিন।।(প্রচন্ড রাগে উঠে গিয়ে)
পায়েল: কৈ যাও আপু?
অনু উঠে গিয়ে নিশানকে ডাকতে লাগলো,এই নিশান!নিশান??(চিৎকার করে করে)
উপর থেকে হুড়মুড় করে নিচে নেমে আসলো নিশান।।মিরা আর পায়েল মিটমিট করে হাসতে লাগলো।।শিলা অবাক হয়ে কাহিনী দেখছে।।মালিহা ফোন অফ করে দাঁড়িয়ে আছে।।শুভ আস্তে আস্তে নিচে নেমে এলো।।
নিশান: কী হয়েছে বাবু?(চিন্তিত স্বরে)
অনু নিশানের কাছে গিয়ে নিশানের কলার চেপে কাছে টেনে নিয়ে বলে,কাকে তুমি পটাইছো?কাকে বিয়ে করবে তুমি??
নিশান: কী বলছো এগুলা?(বিশ্মিত স্বরে)
অনু: নাটক করছো কেনো?আমাকে যদি ভালোই না বাসো তাহলে আমাকে ভালোবাসি ,ভালোবাসি বলো কেনো??
নিশান: আরে অনু আমি তোমাকেই পটিয়েছি আর তোমাকেই বিয়ে করবো INSHALLAH..কিন্তু তুমি এভাবে রেগে আছো কেনো?
অনু: পায়েল আর রিয়া বললো তুমি নাকি ওদের ট্রিট দিবা।।এই জন্য দিবা যে তুমি নাকি নতুন কাউকে বিয়ে করবে??
নিশান: আরে ওরা আমাদের রিলেশন ট্রিট চেয়েছে।।তাই আমি ওদের ট্রিট দিতে চেয়েছে।।
অনু: কিন্তু ওরা যে…
পায়েল: একটু দুষ্টুমি করেছি আপু।।
অনু নিশানকে জড়িয়ে ধরে বললো,I LOVE YOU NISHAN..
নিশান অনুকে আগলে নিয়ে বললো,আমিও তোমাকে অনেক ভালোবাসি অনু।।
বাকি সবাই হাত তালি দিতে লাগলো।।মিরাও শুভকে জড়িয়ে ধরার জন্য যেতে লাগলো ঠিক তখনি মালিহা শুভর বুকে জড়িয়ে পড়লো।।সকলে অবাক হয়ে তা দেখতে লাগলো।।মিরার বুকে যেনো কেউ বিষাক্ত তীর ছুঁড়ে মারলো।।
শুভ এবারও বুকে ব্যাথা পেলো কিন্তু কিছু বললো না।।হাত দুটো পিছিয়ে নিলো।।
পায়েল: কী রে আপু ভাইকে জড়িয়ে ধরলি কেনো?(রাগী ও আশ্চয সুরে)
মালিহা শুভকে ছেড়ে বললো,আরে আমিও অনু আপু আর ভাইয়ার মতো করতে চাইছিলাম।।তাই ভুলে তোকে না ধরে শুভকে জড়িয়ে ধরেছি।।সরি শুভ(মনে মনে হেসে)
শুভ: ঠিক আছে।।আর আমরা যেহেতু বন্ধু তো একে অপরকে তো জড়িয়ে ধরতেই পারি।।তাই না?(মালিহার দিকে মুচকি হেসে)
মালিহা: ঠিক বলেছে।।
মালিহা আবার শুভর বুকে নিজেকে জড়িয়ে নিলো আর শুভর দুহাত দিয়ে নিজেকে শক্ত করে জড়িয়ে নিলো।।মিরা আর সহ্য করতে পারছে না।।সবাই চুপ করে কান্ড দেখছে।।
মিরা: মালিহা তোমার কী হয়েছে?(মালিহার কাছে গিয়ে)
মালিহা: মানে?(শুভকে ছেড়ে দিয়ে)
মিরা ধুপ করে শুভর কোলে উঠে পড়লো।।সবাই দেখে চমকে যেতে লাগলো।।মালিহা জ্বলে পুড়ে যেতে লাগলো।।
মিরা শুভর কোলে উঠে শুভর ঠোঁট দুটো নিজের আয়ত্তে করে নিলো।।সবাই হাত দিয়ে চোখ ঢেকে নিলো।।শুভ নিজেকে ছাড়তে পারছে না।।মিরা ছাড়তেই চাইছে না।
পায়েল: আপু,ভাইয়া এখানে ছোট বড় সবাই আছে।।কী করছো তুমরা?(চোখ ঢেকে)
মিরা শুভকে ছেড়ে দিয়ে নিচে নেমে গেলো।শুভ প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে লাগলো।
নিশান: অনেক রোমান্টিকতা হয়েছে।।চলো সবাই এখন রেডি হয়ে নাও আমরা বাইরে যাবো।।
সবাই যে যার রুমে গেলো রেডি হতে।।
….
পায়েলের রুমে,,
মালিহা: ওদের কী লজ্জা বলে কিছু নেই পায়েল?(রাগী সুরে)
পায়েল: কাদের কথা বলছিস?(হালকা কাজল দিতে দিতে)
মালিহা: শুভ আর ঐ মেয়েটার।।
পায়েল: ওরা তো একে অপরকে খুব ভালোবাসে।।তাই এমটা করেছে।।(ওড়নাটা ঠিক করে)
মালিহা: তুই ভালো করেই জানিস যে আমি শুভকে কতটা ভালোবাসি(অভিমানী স্বরে)
পায়েল: আপু একপাক্ষিক ভালোবাসা তোর।।ভাইয়া তো মিরা আপুকে খুব ভালোবাসে।।তুই বুঝতেছিস না কেনো??
পায়েল: আপু তুই একটু বুজার চেষ্টা কর ওরা তো একে অপরের জন্যই সৃষ্টি।।
শিলা রুমে ঢুকে পড়লো।।
শিলা: চলো সবাই।।
পায়েল শিলার সাথে যেতে লাগলো।।মালিহা প্রচন্ড রেগে তৈরী হয়ে নিলো।।
মালিহা: (শুভ শুধু আমার।।কাউকে হতে দেবে না।।আমার কাছেই রেখে দিবো)
…..
বড় একটা রেস্টুরেন্টে আসলো সবাই।।নিশানের পাশে বসে আছে অনু।।মিরা আগে ভাগেই শুভর পাশে বসে পড়েছে।।মালিহা আর পায়েল তাদের সামনের সারিতে বসে পড়লো।।
নিশান: কী খাবে সবাই?অডার করো।।
শিলা: ভাইয়া আপনি আমাদের সকলের জন্য অডার দিন।
নিশান:আমি দিবো?
সবাই মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো।খাবার আসার আগে সবাই হালকা গল্পে মেতে উঠলো।।মালিহা শুভকে মিরার পাশে দেখতে পারছে না।।
মিরা মনে মনে রাজ্য জয়ের হাসি দিয়ে বলছে,আমার অধিকার আমি ঠিক নিয়ে নেবো।।কাউকে ভাগ দেবো না আমার শুভকে।।
খাবার এসে গেলো।।সকলে খেতে লাগলো।।মালিহা একটু একটু করে খেতে লাগলো।।
মিরা শুভর দিকে তাকিয়ে বললো,বাবু আমাকে খাওয়ায় দেবে??
শুভ: আচ্ছা দিচ্ছি সোনা।।(মৃদু হেসে)
শুভ মিরাকে খাওয়ায় দিতে শুরু করলো।।আশেপাশের সকলে তাদের মধুর ভালোবাসা দেখে সত্যি বিমোহিত হয়ে গেলো।।একটু পর মিরা পরম যত্নে শুভকে খাওয়ায় দিতে লাগলো।।মালিহা মাথা নিচু করে রাগে ফুলতে লাগলো।।।
…..
ঘড়িতে প্রায় ১২ টা বাজতে চললো।।শুভ মিরার কোলে ঘুমাচ্ছে।।মিরা শুভর মাথায় ভালোবাসার ছোঁয়ায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।।শুভ পুরোপুরি ঘুমিয়ে গেলে মিরা শুভর কপালে একটা মিষ্টি পরশ এঁকে বেরিয়ে নিজের রুমে গেলো।।
রুমে গিয়েই দেখলো মালিহা চুপ করে বসে আছে।।
মালিহা: এসো মিরা।। তোমার জন্যই তো অপেক্ষা করছি আমি।।(সুরে সুরে তাল মিলিয়ে)..
চলবে,,,,,