সুখপাখি পর্ব ৯এবং শেষ

সুখপাখি

৯.
আবির বারান্দায় মনমরা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই তখন থেকে। শিমু রুমে এসে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলো। আবির এরপরেও রুমে না আসায় শিমু মেজাজ চড়ে বসলো। গদগদ করে বারান্দায় গিয়ে পেছন থেকে আবিরকে জড়িয়ে ধরে। রাগের বসে পিঠে কামড় দিয়েই ভোদৌড়। আবির হতভম্ব হয়ে গেলো। মনে মনে বললো,
— “মেয়েটা এলো জড়িয়ে ধরলো কামড় দিয়েই দৌড়। আজিব।”

আবির রুমে এলো। শিমু গাল ফুলিয়ে বসে আছে। শিমুর পাশে বসে বললো,
— “তখন ওইটা কি ছিলো? উড়ে এসে একটু আদর করে আবার ফুড়ুৎ করে উড়ে চলে গেলে।”

— “আপনার সাথে কোনো কথা নেই।”

— “কেনো? আমি কি করলাম?”

শিমু ভেঙচি দিয়ে শুয়ে পরে। আবির বসে থেকেই বললো,
— “তখন তো ঝাল আদর দিলে। এখন একটু মিষ্টি আদর দাও না বউ।”

শিমু উঠে বসে। মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি ঘুরছে। আবিরের কাছে এসে গলা জড়িয়ে ধরে থুতনিতে জোরে কামড় দেয়। আবির “আহ শিমুউউউউউ” চিৎকার করে উঠে। শিমু তাড়াতাড়ি করে কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পরে। কাথার নিচে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আবির কামড় দেয়া জায়গায় ডলতে ডলতে লাইট অফ করে শুয়ে পরে। শিমুকে বললো,
— “তোমার যে কামড়াকামড়ির স্বভাব আছে এটা তোমার বাসায় জানে? দিন দিন ফাজিল হয়ে যাচ্ছো তুমি।”

শিমুর কাথার ভেতর থেকে উত্তর দিলো,
— “আপনি জানলেই হবে। আমার সব কামড় আপনাকেই দিবো। হিহি।”

আবির আর কিছু বললো না। শিমুর পেটে এক হাত রেখে ঘুমিয়ে পরে।

——————————
সকালে গুনগুন শব্দের মধুর কণ্ঠ শুনে ঘুম ভাঙে আবিরের। আধো আধো ঘুম চোখে নিয়ে হালকা চোখ খোলা রেখেই শুয়ে শুয়ে সেই গুনগুন শব্দ শুনছিলো আবির। বেশ ভালোই লাগছে তার। কিছুক্ষণ পর উঠে ওয়াশরুমে যায়। ফ্রেস হয়ে এসে দেখলো শিমু কোর’আন গুছিয়ে রাখছে। আবির ডাকলো,
— “এই মেয়ে।”

— “জ্বী।”

— “গুছিয়ে রাখছো কেনো? পড়ো। আমাকে একটু শুনাও। তোমার কণ্ঠে শুনতে ভালোই লাগছিলো।”

শিমু মুচকি হেসে কোর’আন তেলায়ত করতে বসে যায়। আবির শিমুর সামনে চুপ করে বসে আছে। শিমুর তেলাওয়াতের ধ্বনি অসাধারণ। আবির মুগ্ধ হয়ে শুনলো। শিমু বললো,
— “আপনি পড়তে পারেন না?”

— “না। ভুলে গেছি।”

— “কি বলেন এসব। কোর’আন শিখে ভুলে যাওয়ার অনেক শাস্তি। যে ব্যাক্তি কোর’আন শিখে ভুলে যায় কেয়ামতের দিন নাক এবং দুই কান কাটা থাকবে। তখন অন্যান্যরা সবাই দেখেই বুঝবে সে কোর’আন ভুলে গেছে। নামাজ পড়েন না?”

শিমু কোর’আন রাখছিলো। আবির বললো,
— “শেষ কবে নামাজ পড়েছি ভুলে গেছি।”

— “সেজন্যই আপনার মনটা এতোটা পাথর হয়ে গেছে। আমাকে এতো মারধর করেছেন। ছেলেরা চার শুক্রবার জু’মার নামাজ না পড়লে মনটা পাথর হয়ে যায়।”

— “আসলে আমি নামাজ পড়াও ভুলে গেছি।”

শিমু অবাক হলো। আবির শিমুর হাত ধরে বললো,
— “তুমি আমাকে দুইটাই শিখাবে?”

শিমু হেসে বললো,
— “ঠিকাছে। আজ থেকে শুরু করবো। আজকে দুপুরে বাসায় আসবেন আযানের আগে। আপনাকে যোহর পড়ানো শিখাবো আর আসার সময় একটা নূরানী কায়দা নিয়ে আসবেন। প্রথম ধাপ শুরু হবে কাল সকাল থেকে।”

— “ঠিকাছে।”

— “আর হ্যাঁ। একটা জালি বেতও আনবেন।”

আবির চমকে বললো,
— “জালি বেত দিয়ে কি হবে?”

শিমু দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো,
— “পড়া না পড়লে মাইর চলবে।”

আবির কাঁদো কাঁদো ফেইস করে বললো,
— “তুমি আমাকে মারবে? আমি না তোমার স্বামী।”

— “হ্যাঁ। কিন্তু পড়ার সময় আপনি আমার স্বামী নন। একজন স্টুডেন্ট। আর আমাকে এতো অত্যাচার করার সুযোগ আমি নিবো না হুম?”

শিমু হাসছে। আবির শিমুকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলল,
— “যত ইচ্ছা শাস্তি দিও। কিছু বলবো না আমার পিচ্চি বউটাকে।”

শিমুর কপালে ভালোবাসার পরশ দিলো। শিমু সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ভ্রু কুচকে বললো,
— “কাল থেকে আপনি বাজারে যাবেন এবং ঘরের সমস্ত বাজার আপনি করবেন।”

— “আমি কেনো? দারোয়ান চাচা আছে না?”

— “না আপনাকেই যেতে হবে। কারণ আপনি দিন দিন অলসের বাবা হচ্ছেন তাই।”

আবির হেসে ফেলে। সোফায় বসে শিমুকে কোলে বসিয়ে দুইহাতে পেট জড়িয়ে ধরে বললো,
— “ইশ্ কি যে বলোনা তুমি। আমি শুধু তোমার বাচ্চার বাবা হবো। আর কারো না। কোনো কিছুর না। বুঝলে?”

— “হুহ ঢং।”

— “আমার এগারোটা মেয়ে হবে।”

শিমু আতংকিত হয়ে বললো,
— “এতোগুলা কেন?”

— “ক্রিকেট টিম বানাবো তাই।”

— “তাহলে আরেকটা বিয়ে করে ওই বউ থেকে বাচ্চা নিয়েন। আমি এতো বাচ্চা দিতে পারবো না।”

শিমুর মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে বললো,
— “কি বললে? আরেকটা বিয়ে? মানে মাথা ঠিক আছে? তোমার কষ্ট হবে। আর তোমার ভালোবাসা আমি কাউকে ভাগ দিতে পারবো না। আমার সব ভালোবাসা শুধু তোমার জন্য। আমার পিচ্চি বউটার জন্য।”

— “তাও আমি এতো বাচ্চা দিতে পারবো না। আর এতোগুলা লাগবে না। দুইটা বাবু হলেই হবে।”

— “না হবে না। দুইটাই হবে না। আমার এগারোটাই লাগবে। তাও সব মেয়ে। আর বাবু তো আমিই দিবো।”

শিমু লজ্জা পেলো। উঠতে নিলেই আবির কোমড় চেপে ধরে আবারো বসিয়ে দিয়ে বললো,
— “শুনো।! যখন আমার এগারোটা মেয়ে হবে সবাই আমাকে দেখিয়ে বলবে ওই দেখ এগারো মেয়ের বাবা যায়। অফিসে গেলে সবাইকে আবির স্যার ডাকতে নিষেধ করে বললো এগারো মেয়ের বাবা ডাকতে। উফ! ফিলিং কিউট।”

— “ঘোড়ার ডিম।”

কথাটা বলেই শিমু রান্নাঘরে চলে গেলো। আবির অফিসের জন্য রেডি হতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর আবির চিৎকার দিয়ে শিমুকে ডাকলো। চেচিয়ে চেচিয়ে বলছে, “শিমু আমার ওই রঙের শার্টটা কই? আমার টাই কই? আমার ঘড়ি কই? আমার ওয়ালেট কই? ফোন কই? চিরুনি কই? চুল আচড়াতে পারি না। তুমি আচড়ে দাও। শিমু আমার টাই বেধে দাও। শিমু আমার শার্টের বোতাম লাগিয়ে দাও। শিমু আমাকে নাস্তা খাইয়ে দাও।” এসব আবিরের নিত্যদিনের অভ্যস। সবকিছু শিমু গুছিয়ে বেডের উপর রেখে যায়। সব সামনে রেখেই শিমুকে ডেকে বলবে এটা দাও, ওটা দাও। শিমু রেগে বললো,
— “সব তো সামনেই রেখে যাই তাও এভাবে আমাকে ডাকেন কেনো?”

আবির শিমুকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললো,
— “তোমাকে এক নজর দেখার জন্য। আম্মু যখন ছিলো তখনও এমন করতাম। কারণ আম্মুকে খুব ভালোবাসতাম। আমি চাইতাম আম্মু সবসময় এটা সেটা করুক আর আমার সামনে থাকুক। কিন্তু…। ”

আবির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। শিমু এরপর থেকে আর কিছুই বলে না আবিরকে। ইচ্ছে করে রুম থেকে বেরিয়ে যাবে। আবিরের ডাক শুনেই রুমে এসে সব গুছিয়ে দেবে।

দুপুরে আবির কায়দা, জালি বেত এবং কিছু ফলমূল নিয়ে বাসায় এলো। আবির ওজু করে এলে দুজনে একসাথে নামাজ পড়ে নেয়। খাবার খেয়ে শিমু এটো প্লেট গোছাতে শুরু করে। আবির ফোনে চুপিচুপি কারো সাথে কথা বললো। শিমুর কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুয়ে দিয়ে অফিসের জন্য বেরিয়ে যায়।

——————————
রাতে শিমু ঘুমিয়ে যাওয়ার পর আবির উঠে চুপিচুপি রুম থেকে বেরিয়ে যায়। তিন ঘন্টা পর ঘেমে-নেয়ে রুমে আসে। হাত মুখ ধুয়ে শিমুকে ধরেই ঘুনিয়ে যায়। সকালে শিমুর ডাকে ঘুম ভাঙে আবিরের। বাহিরে পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনতে পায়। মাথার পাশের জানালা দিয়ে হিম বাতাস রুমে ঢুকছে। রুমের লাইট বন্ধ। বাহিরের আধার চিড়ে ধীরে ধীরে আলো ফুটতে শুরু করছে মাত্র। দুইজনে একসাথে নামাজ পড়ে নেয়। আবিরকে কিছুক্ষণ কায়দা পড়ায় শিমু। জালি বেত হাতে নিয়ে বসেছে। আবির কিছুক্ষণ পড়ে আবার কিছুক্ষণ দুষ্টামি করে শিমুর মাথা খারাপ করে দেয়। শিমু রেগে গিয়ে আবিরকে জালি বেত দিয়ে মারে। আবির মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে আবার পড়া শুরু করে।

রান্নাঘরে শিমু রুটি বানাচ্ছিলো। এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠে। আজ গোসল করে শিমু একটা বেগুনি রঙের সূতির শাড়ি পরেছে। দরজা খুলে দেখলো আবির বাজার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বেচারার নাজেহাল অবস্থা। আবিরের অবস্থা দেখে শিমু হেসে দেয়। আবির সোফায় বসলে শিমু আঁচল দিয়ে আবিরের মুখের ঘাম মুছে দেয়। এক গ্লাস পানি এনে দেয়। শিমু বাজার নিয়ে রান্নাঘরে চলে যায়। আবির ভাবছে শিমু তার জীবনে না এলে জীবনটা কেমন অপরিপূর্ণ থেকে যেতো। আজ যখন শিমু তার মুখের ঘাম মুছে দিলো তখন নিজেকে খুব পরিপূর্ণ মনে হলো আবিরের। মনের মাঝে ভালোলাগা ছেয়ে গেলো। নিজেকে একজন সুখী মানুষ মনে হলো। নিজেকে শিমুর স্বামী মনে হলো আজ প্রথম। আবির এসব ভেবে মুচকি হাসলো। শিমু ডেকে বললো,
— “কই আপনি? খেতে আসুন নাস্তা দিয়েছি টেবিলে।”

এই ডাকটা শুনে আবিরের মনে আরেকটা প্রশান্তির হাওয়া বয়ে গেলো। এতোটা সুখী এর আগে নিজেকে কোনোদিন মনে হয়নি। নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা খাচ্ছে। শিমুর হাত ধরে টেনে পাশে বসিয়ে শিমুকেও নিজের হাতে খাইয়ে দেয়। হঠাৎ একটা কথা মনে হতেই আবির মুচকি হাসে। শিমু তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে বললো,
— “কার কথা ভেবে মুচকি হাসছেন?”

আবির ঠোঁটের হাসি আরো প্রশস্ত করে বললো,
— “ফিলিং জেলাস?”

ভ্রু দুইটা নাচায়। শিমু মুখ ঘুরিয়ে বললো,
— “মোটেও না।”

আবির শব্দ করে হেসে দেয়। শিনুর গাল টেনে বললো,
— “আমাদের রাসূল (সাঃ) এর একটা কথা ভেবে মুচকি হাসলাম।”

শিমু অবাক চোখে তাকায় আবিরের দিকে। আবির বললো,
— “আরফান সেদিন একটা কথা বলেছিলো, রাসূল (সাঃ) বলেছেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো নেককার স্ত্রী। আজ কথাটা সত্যিই মনে হচ্ছে। দারুণ লাগছে আজ।”

শিমুও মুচকি হাসলো। আবির পলকহীন চোখে শিমুর হাসি দেখে নিলো। শিমুর নাকে নাক ঘষে বললো,
— “মুচকি হাসিও সুন্নাহ। তোমার মুচকি হাসি অনেক সুন্দর। বারবার দেখতে ইচ্ছে করে।”

শিমু লজ্জা পেলো। উঠে চলে গেলো রান্নাঘরে। আবির অফিসে চলে গেলো। বারোটার দিকে একটা কলেজে গেলো। সবশেষে কলেজের মাঠের এক কোণে দাঁড়ালো আবির। মেয়েরা গোল হয়ে কথা বলছিলো। যা আবিরের কান পর্যন্ত এসেছে। আবির মনে মনে ভাবলো,
— “শিমুকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছে। নিজের জন্য মেয়েটাকে ঘরে বেধে রেখেছি। অথচ তার বয়সি মেয়েরা মেকাপ, ঘুরাফিরা, সিরিয়াল, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ব্যস্ত।”

আবির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে। টেইলার্সের দোকানে গাড়ি থামায়। দোকান থেকে কাপড় গুলো নিয়ে সে শিমুর বাসায় যায়। দরজা খুললো শিমুর চাচি রাবেয়া। আবিরকে দেখে এক চিলতে হেসে তিনি আবিরকে সোফায় বসতে দিলেন। সৈয়দা খাতুনকে ডেকে আনলেন রাবেয়া। তাথই আবিরকে দেখে দৌড়ে এসে কোলে উঠে বসলো। আবিরের গলা জড়িয়ে ধরে বললো,
— “শিমুপু কই? ভালো আছে? তুমি ভালো আছো? আমার চকলেট এনেছো? না আনলে কিন্তু আমি রাগ করবো।”

আবির হাসলো। পিচ্চি তাথই এর কথা আবিরের শুনতে খুবই ভালো লাগছে। সে ভাবছে তার যখন মেয়ে হবে সেও তাথই এর মতো এভাবে সুন্দর সুন্দর করে কথা বলবে। অফিস থেকে এসে বসলেই দৌড়ে এসে বলবে,
— “বাবাই আমার চকলেট কই? মাম্মাম এর ফুল কই? এনেছো? আনোনি? তুমি অনেক পচা বাবাই। কথা নেই।”

আবির যখন পকেট থেকে চকলেট বের করে মেয়েকে দিবে মেয়েটা গলা জড়িয়ে ধরে গালে আদর দিয়ে বলবে,
— “বাবাই তুমি অনেক ভালো।”

ফুলটা বের করে যখন শিমুকে দিবে মা, মেয়ে দুইজনেই হেসে দিবে। এইসব ভেবেই বুকটা শান্তিতে ছেয়ে গেলো। আবির তাথই এর নাক টেনে বললো,
— “তোমার শিমুপু অনেক ভালো আছে। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আর তোমার জন্য তিনটা চকলেট এনেছি।”

তাথইকে চকলেট গুলো দিতেই তাথই আবিরকে আবারো জড়িয়ে ধরে গালে আদর দেয়। আবির শব্দ করে হেসে দেয়। সৈয়দা খাতুনকে সালাম দিলো আবির। তিনি বললেন,
— “শিমু আসেনি বাবা?”

— “না দাদি। আমি একাই এসেছি। আসলে আমি শিমুর বই নিতে এসেছি। এগুলো নিয়ে গিয়ে ওকে সারপ্রাইজ দিবো ভাবছি। তাই চুপিচুপি চলে এলাম।”

সৈয়দা খাতুন বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে হাসলেন। রাবেয়ারও খুশিতে চোখে পানি চলে এলো। তিনি নাস্তা আনতে গেলেন। আবিরকে শিমুর রুমে নিয়ে যাওয়া হলো। আবির আর তাথই মিলে সব বই গুছিয়ে দড়ি দিয়ে বেধে নিলো। রান্নাঘরে সৈয়দা খাতুন এলেই রাবেয়া বললো,
— “মা দেখেছেন আমার মেয়েটা অনেক ভাগ্যবতী যার কারণে এমন একটা জামাই পেয়েছে। আজ খুব খুশি লাগছে। অন্তত মাহিনের শিকার থেকে বেঁচে গেছে আমার মেয়েটা।”

— “হ্যাঁ বউ। ঠিক বলেছো। শুধু চিন্তা এখন তাথই এর। মেয়েটা বড় হলে মাহিন যে কি করবে আল্লাহই জানে।”

দুইজনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে নাস্তা নিয়ে যায়। সবাই মিলে গল্প করে নাস্তা শেষ করে নেয়। রাবেয়া বললো,
— “বাবা তুমি দুপুরে খেয়ে যেও।”

— “আমি এখানে খেলে আপনার মেয়ে ঘরে না খেয়ে বসে থাকবে।”

তিনজনে হেসে দিলো। আবির তাথইকে আদর করে বইগুলো নিয়ে বাসায় এলো। শিমু দরজা খুলে দিলে আবির রুমে চলে যায়। ফ্রেস হয়ে খাবার খেয়ে নেয় দুজনে। শিমু রুমে গেলেই আবির চোরের মতো দরজা খুলে বাহিরে যায়। গাড়ি থেকে সব জিনিস নিয়ে আবার চোরের মতো চুপিচুপি ঘরে চলে আসে। আজও রাতে সেদিনের মতো করলো। রুমে আসলেই শিমুর হাতে ধরা খেলো আবির।
পরবর্তী পর্ব পড়তে পেইজটি তে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন
চলবে,,
® নাহার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here