#স্বামীর অত্যাচার !!
#Part_6
_নিলয় মুখ থেকে সিগারেটের ধোঁয়া বের করে রহিমাকে বলল এক গ্লাস পানি দিতে……
ফরমাল ড্রেসআপ হুয়াট শার্ট আর ব্ল্যাক প্যান্ট পড়া…চুলগুলো উশকানো চোখে মুখে যেন বিষণ্নতার চাপ……তাহিন এক নজর দেখে যাচ্ছে নিলয়কে……সিগারেটের ধোঁয়া একদম সহ্য করতে পারে না তাহিন…..গন্ধটা বারবার নাকে এসে লাগতেই কেশে উঠে তাহিন…..কাশির শব্দে নিলয় চোখ তুলে তাহিনের দিকে তাকাল….এতক্ষণ যেন খেয়ালিই করেনি….ফুৃ্ঁ মেরে মুখ থেকে আবার সেই ধোঁয়া বের করল….. তাহিন কিছুই না বলেই ঘুড়ে দাঁড়াল….একবার নিলয়কে দেখার ইচ্ছে ছিল সেটা তো পূরণ হয়ে গেল আর কেনই বা দাঁড়িয়ে থাকবে…নিলয়কে দেখার পর মনটা কেমন যেন আনচান আনচান করে যাচ্ছে… কিসের আবেগে নিলয়ের মায়ায় জড়িয়ে গেল সেটা নিজে ও বুঝতে পারছেনা….মায়ার জড়ানোর নিলয় এমন তো কাজ করেনি তবু কেন..?কিন্তু এবার যে সব মায়া কাটাতে হবে……..
ওর কষ্টতে নিলয়ের তো কিছুই আসে যায় না….তাহলে নিজে বা কেন ভাবছে ওর কথা….একটু ও পরিবর্ত আসে নিলয়ের মধ্য….. ব্যর্থ চেষ্টা করে গেল শুধুই…যেখানে ভালবাসে নেই সেখানে ইতি ঘটানোয় প্রয়োজন……….কিন্তু তনিমাকে কি বলবে বুজতেই পারছেনা….এসব জানতে পারলে তো তনিমা তো শেষ হয়ে যাবে…..অনেকদিন পেরিয়ে গেল অথচ ওই বাড়িতে একটি বারের জন্য যাওয়া হয়নি….তনিমা ফোন করলে নিলয়ের বিজনেসের অজুহাত দেখিয়ে দিত…..এভাবে বা আর কদিন……..একদিন তো জানতেই পারবেই তনিমা……তখন কি সামলাবে তনিমাকে…তার জন্য তো আগে নিজেকে স্ট্রং হতে হবে……কিন্তু নিজে বা কি করে স্ট্রং হবে……?
ভাবতে ভাবতে একটা একটা সিড়ি ধাপ অতিক্রম করতেছে……
বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে নিলয় রুমে যেতে চমকে উঠল…….নিলয় এখন যে রুমে থাকে সে রুমে তাহিনকে পায়চারি করতে দেখে……এত কেন নিয়ে আর পারছেনা…..সব কিছু উত্তর এবার ওর প্রয়োজন…..
নিলয় ওকে দেখে ও না দেখার ভান করে মোবাইল বিছানায় ছুড়ে মেরে ওভারড্রপ থেকে জামা নিতে গেলে নিলয়ের পিছনে গিয়ে দাঁড়াল…….নিলয় ঘুড়তেই তাহিনকে এভাবে দেখে বেশ রেগে গেল…রাগি চোখে ধারণ করে ভ্রু কুচকে গম্ভীর গলায় বলল…
;;;কি হল এভাবে দাঁড়িয়ে আছ কেন….?
সামনে থেকে সর বলছি…..
নিলয় ধমক দেওয়ার পর ও তাহিন চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে……নিলয় দাঁতে দাঁতে চেপে…..
;;;কোনো কাজ কি নেই……দুদিন তো জ্বরের বাহানায় পরে পরে অনেক রেষ্ট নিয়েছ… ঘরের কাজগুলো করবে কে?
নিলয়ের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে আবার ও চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে তাহিন…নিলয় প্রচন্ড রেগে গিয়ে তাহিনকে ধাক্কা দিয়ে সরাতেই তাহিন আচমকা নিলয়ের শর্টের কলার ধরে…
;;;সরে তো আমি ঠিকিই যাব…..চাইলে আপনি আমায় আর পাবেন না……কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর না জানা অবব্দি এক পাঁ সরছি না।।।।
ভালবাসলে তাকে না কখনো শাস্তি দেওয়া যায় না….দেওয়া যায় না যে আবার এমন ও না, যায়….তবে শাস্তিগুলা এমন না…..সেগুলা আপনি আমায় দিয়েছেন……
কেন বিয়েটা করছেন….স্ত্রী মর্যাদা দিতে না পারলে….আমার জীবনটা কি নষ্ট করা খুবিই প্রয়োজন ছিল….?প্রতিনিয়ত আমি আমায় টচার্র করে গিয়েছেন….আমি সব চুপচাপ সহ্য করে গেছি….এত টচার্রে পরেও… আমি ব্যর্থ চেষ্টা করে গেছি সব ঘৃণাকে অতিক্রম করে একটু জায়গা করে নিতে…তাতে আমি ব্যর্থ …….কিসের শাস্তি দিচ্ছেন…. কি অন্যায়টা…..
বলতেই নিলয় তাহিনের মুখ চেপে ধরে….মুহূর্তে নিলয়ের চোখে মুখে ধারণ করছে এক অদ্ভুত রঙ….সে রঙের যেন ব্যাখা নেই……
;;;জানতে চাস না কি অন্যায়….তোর অন্যায় হচ্ছে শুধুমাত্র একটায় তুই তোর বাবার মেয়ে……
উত্তরটা পেয়ে ও যেন আরো ধোয়াসার মধ্যে পড়ে গেল….চোখে মুখে হাজারটা প্রশ্নের ভিড় জমাল …..সেখান থেকে একটা প্রশ্ন ছুড়ে দিতে…..নিলয় তাহিনের চুলের মুঠি ধরে মুখে আঙ্গুল দিয়ে……
;;;ব্যাস একটায় প্রশ্ন ছিল……এর বাইরে আর একটায় ও নই…..
আর হুম এই বাড়ীর বাইরে যেন ভুলে ও পা না পড়ে……মাইন্ড ইট…..
নিলয় তাহিন সোজোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে…..হুঙ্কার দিয়ে রহিমাকে ডাকল….তাহিন টাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে পরে যায়…..কয়েকমিনিটের জন্য যেন থমকে গেল……ওর বাবার কথা শুনে……..
রহিমা নিলয়ের চিৎকার শুনে ছুটে এসে দরজার সামনে দাঁড়াতেই….
;;;;আজ থেকে ঘরের যাবতীয় কাজ ধোয়া মুছা থেকে শুরু যা আছে সব ও করবে……তুমি আর একটা কাজে ও হাত দিবে না…..শুধু ওকে অডার্র করবে বুঝেছ…. অনেক সেবা করেছ..এবার নাহয় তোমার সেবাটুকু করুক……
কথাগুলো বলে নিলয় ফ্লাওয়ার ভাস ছুড়ে ফেলে…..দরজাটা খুব জোরে টান দিয়ে বাইরে থেকে লক করে চলে গেল……ঘটনার আকস্মিকতায় তাহিন চমকে উঠল…….বুঝতেই পারছেনা মি.আহমেদের সাথে নিলয়ের কি সম্পর্ক….কেন বলল ওই লোকটার কথা….কি সম্পর্ক ওই লোকটার সাথে……ওই লোকটা যদি কোনো দোষ করে থাকে তাহলে তার শাস্তি কেন আমাকে কেন দিচ্ছে…..ওই লোকটার সাথে তো আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই……তাহলে?কিছু বুঝতে উঠতে পারছে না তাহিন…..
হঠাৎ করে রিং টোনের শব্দ হতে…..তাহিন তড়িগরি করে চারিদিকে তাকাতে…….চোখ পরল বিছানার উপর মোবাইলটার দিকে…রিং হতে হতে কেটে গেল….তাহিন মোবাইল হাতে নিয়ে লক খোলার চেষ্টা করতেছে….কিন্তু ফিঙ্গার ফ্রিন্ট দেওয়া…….ইচ্ছে করতেছে ভেঙে ফেলতে…তবু ও ব্যর্থ চেষ্টা করে গেল নিজের সব অাঙ্গুলের চাপ দিয়ে……এর মধ্যে আবার বেজে উঠতে তাহিন ভাবতে ভাবতে রিসিভ করল….রিসিভ করার মাত্র…ওপাশ থেকে কেউ বলল উঠল;;
আমার মেয়ের গায়ে আরেকটা যদি আছড় লাগে তাহলে তুকে জানে মেরে দিব……
কথাটা শুনে তাহিন থমকে গেল.. হাত পা কাঁপছে…অপর পাশের লোকটার কথা শুনে…..গলটা খুব পরিচিত মনে হল তাহিনের……..কাঁপা কাঁপা গলায় বা…….বা…..ও পাশ থেকে খুশি তে আফ্লুত হয়ে মি.আহমেদ……..;;মা..মামুনি….
কথাটা তাহিনের কানে বাজতেই খুব জোড়ে মোবাইলটা ছুড়ে মারল……..আবেগপ্রবন হয়ে কি করে ও লোকটাকে বাবা ডেকে ফেলল ভাবতেই পারছেনা……..প্রচন্ড ঘৃণা হচ্ছে এখন নিজের উপর….যে লোকটা কোনোদিন আমাদের কথা ভাবেনি….একবার খবর নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি….সে কি করে এখন আমার খবর নিচ্ছে….কিন্তু ওই লোকটা কি করে জানে নিলয় আমার সাথে খারাফ ব্যবহার করে করে….. সবকিছু যেন এলোমেলে লাগছে তাহিনের….কিছুই ভাবতে পারছে না আর….
হঠাৎ করে তনিমার কথা মনে পরল…দৌড়ে দরজার পাশে গেল….কারণ একমাত্র তনিমায় পারবে ওর প্রশ্নের উত্তর দিতে…….. দরজা ধাক্কাতে লাগল কিন্তু কিছুতেই খুলছে না…..তাহিনে রাগে ফুসছে একটু আগেই বলল বাড়ীর সব কাজ করতে আর এখন এই রুমেই বন্দী করে চলে গেল………..
[Page_”Update কাহিনী”]
বারান্দায় দাঁড়িয়ে চারিদিকে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে তাহিন………যদি কোনোভাবে নিচে নামতে পারে তাহলে পিছনের গেইট দিয়ে সহজে বের হয়ে যেতে পারবে…..এই রুমের বারান্দাটার একটা সুবিধা হচ্চে চারিদিকে খোলা….শুধু অর্ধেক কাচ দ্বারা বেষ্টিত…কিন্তু কি করে নামবে সেটা উপায়টা খুঁজে পাচ্ছে না…এই রুমে না আছে একটা দড়ি না শাড়ী….এছাড়া তো আর কোনো উপায় ও খুঁজে পাচ্ছে না… ভাবতে অনেক্ষণ সময় লাগল….কিন্তু নিলয়ে এসে পিছন থেকে হাত মুড়ে ধরতেই এক মিনিট ও সময় লাগল না…নিলয়কে দেখে স্তব্ধ হয়ে যায় তাহিন……নির্ঘাত এই বেলকোনো থেকে ফেলে দিবে এখন…গায়ের ওড়নাটা গ্লীলের সাথে পেছানো দেখে….বলা তো যায় না এই নিলয়ের তো দয়া মায়া বলতেই কিছু নেই…….তাহিন নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে নিলয়ের হাত থেকে….তাহিনের জোরাজোরিতে নিলয় আরো জোরে চেপে ধরে…..
;;এত সহজ না আমার সিমানা থেকে বের হওয়া………..বাড়ীর চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে…..সো যত সহজ ভেবেছ অতটা সহজ হবে না কিন্তু পালিয়ে যাচ্ছি….আর চারিদিকে গার্ডরা তো আছেই…….
তাহিন কাঁদো কাঁদো গলায়…..আমার লাগছে ছাড়ুন বলছি…..
;:লাগার জন্য তো ধরেছি ছেড়ে দেওয়ার জন্য নই….
তাহিন নিজেকে ছাড়াতে হাতের কনু দিয়ে নিলের পেটে একটা ঘুষি মারতে নিলয় আহহহ করে চিৎকার করে তাহিনকে ছেড়ে দেই…..
;;;আমি পালিয়ে যাওয়ার মেয়ে নই….যাওয়ার থাকত অনেক আগেই চলে যেতাম….তবে এমন না যে যাব না…যাব,একদিন ঠিকিই চলে যাব…..কারন এই ধোঁয়াশার মধ্যে আমি থাকততে চাই না…..আর আপনার মত মানুষের সাথে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছটুকু ও আমার নেই…….
নিলয়ের চোখে চোখে মুখে প্রচন্ড রাগ ভেসো উঠেছে….রাগে তাহিনকে টানতে টানতে রুমে নিয়ে বিছানার উপর ছুড়ে ফেলে…… জিনিসপত্র ভাংচুর শুরু করল…তাহিন প্রতিবারের ন্যায় রীতিমত অবাক হয়ে চেয়ে আছে……..ইচ্ছেমত ভাংচুর করে ওভারড্রব থেকে এক গাদা কাপড় বের করে তাহিনের হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল…….
এমন না যে কাপড় ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল….যেতে যেতে অবশ্য এটা বলে গেল সব কাজ যেন আধঘন্টার মধ্যে শেষ করে…নিচে গিয়ে রান্না বসায়……
স্তব্ধ তাহিন বোকার মত দাঁড়িয়ে আছে……নিলয়ের রাগ দেখে কিছুই বলতে পারল না……
নিলয়ের চোখ বড় বড় হয়ে গেল…রাগে দাঁত কটমট করছে…….. মোবাইলটা ফ্লোরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে…….তাহিনের সেদিকে খেয়াল নেই…নিলয় আবার কখন আসল…..কাপড়গুলো হাত নিয়ে এখনো বিছানার মধ্যে থ মেরে বসে আছে…….নিলয় চিৎকার করে উঠতে তাহিনের ধ্যান ভাঙে চোখ পড়ল নিলয়ের হাতের মোবাইলটার দিকে……তখন রাগে এত জোড়ে ছুড়ে মেরেছিলে যে দেওয়ালের সাথে লেগে মোবাইল নাজেহাল অবস্থা হয়ে গেছে…..নিলয়ের তাকানো দেখে তাহিনেরর মনে হচ্ছে এখন ওর অবস্থাটা ও এই মোবাইলটার মত করেই ছাড়বে….নিলয় কিছু বলার আগে তাহিন উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল……..
রহিমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে তাহিন……এমনিতে শরীরলটা অনেক দুর্বল তার উপর কাজগুলো করে আরো বেশি ক্লান্ত লাগছে…রহিমা কোলে মাথা রাখে যেন একটু শান্তি পাচ্ছে…পরম যত্নে মাথায় হাত বুলিয়ে যাচ্ছে রহিমা……আর চোখ বন্ধ করার চেষ্টাতে তাহিন…..
হঠাৎ করে নিলয়ের আওয়াজ শুনে তড়িগড়ি করে উঠে দাঁড়ায় তাহিন….একটু যেন শান্তিতে থাকতে দেবে না………
নিলয় রহিমার সামনে থেকে তাহিনের হাত ধরে টানতে টানতে নিচে নিয়ে যাচ্ছে……..তাহিন বুজে উঠতে পারছেনা কি করছে ও…….কিছু না করলে নিলয় তো এমন ভাবে নিয়ে যেত না…..নাকি তখনের শাস্তি টা দেওয়ার জন্য…..নিচে নিয়ে এসে তাহিনকে ড্রানিং টেবিলে একটা চেয়ার টেনে বসাতেই তাহিনের চোখ বড় বড় হয়ে গেল……..
[[[Page_”Update কাহিনী”]]]
(ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন>
Wait for the next one…….