হৃদপিণ্ড পর্ব ২৩+২৪

#হৃদপিন্ড
#জান্নাতুল নাঈমা
#পর্ব-২৩

তোকে না বলেছিলাম দাদু ভাইকে বেঁধে রাখতে।
নিজের স্বামীকে ধরে রাখতে পারিসনা বলেই তো এতো বড় দূর্ঘটনা ঘটলো বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।
ইয়ানা বললো দাদী চুপ থাকো আমাদের এখুনি হসপিটালে যেতে হবে। দাদাভাইয়ের বন্ধু রা গেছে রিক্তা আপু গাড়িতে ওয়েট করছে তারাতারি চলো।
মুসকান চলো,,,
মুসকানের চোখ দুটো লাল হয়ে এলো।
কানে ঝিঝি ধরে গেলো, বুকের ভিতর কেউ যেনো কামড়ে ধরেছে বহু কষ্টে বললো ওনি কোথায়,,,
ওনি ঠিক আছে তো?
দাদী মুসকান কে জরিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো- ঠিক নাই আমার দাদু ভাই ঠিক নাই।
মুসকান এই প্রথম চিৎকার করে ওঠলো।
না,,,ওনি ঠিক আছে একদম ঠিক আছে। বলেই দাদীকে ছাড়িয়ে দিলো।
ইয়ানা বললো মুসকান আমাদের যেতে হবে চলো?
মুসকান ইয়ানার দিকে চেয়ে বললো কোথায় যাবো, ওনি কোথায়?
–দাদা ভাই হসপিটালে, এক্সিডেন্ট হয়েছে তারাতারি চলো।
মুসকানের চোখ বেয়ে পানি ঝড়তে শুরু করলো।
দাদী, ইয়ানাকে রেখেই সে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো।
ইয়ানাও দাদীকে নিয়ে বেরুলো।
,
কেবিনে ঢুকতেই মুসকান ফুপিয়ে কেঁদে ওঠলো।
ইমনের চোখ দুটো বন্ধ মাথায় ব্যান্ডেজ করা, এক হাতে ব্যান্ডেজ,পায়ের গোড়ালিতে ব্যান্ডেজ।
বিয়ের রাতে এতো বড় দূর্ঘটনা ঘটে যাবে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
একরামুল চৌধুরী সহ সাজিয়া বেগম ও মুসকান কে দোষারোপ করতে শুরু করলো। মুসকানের সেদিকে কোন খেয়াল নেই।
সাজিয়া বেগম মুসকান কে কিছু কথা শুনাতে যেতে নিতেই রিক্তা বললো –আন্টি প্লিজ হসপিটালে কোন সিনক্রিয়েট করবেন না।
–কি আমি সিনক্রিয়েট করছি, কি বলতে চাচ্ছো তুমি।
–আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না জাস্ট আপনাকে মনে করিয়ে দিচ্ছি ইমন চৌধুরী কে আটকে রাখার বা বাধ্য করে রাখার ক্ষমতা তাঁর জন্মদাতারই নেই সেখানে এই পিচ্চি মেয়েটা কি করে ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখবে। আমি মনে করি মুসকানের এখানে কোন দোষ নেই এটুকুই বোঝাতে চাইছি আপনাকে।
–বিয়ে করার সময় মনে ছিলো না এটা কিসের পিচ্চি এসব মেয়েকে হারে হারে চেনা আছে।
–দেখুন ইমন কেনো বেরিয়েছিলো, কি এমন কাজ ছিলো ওর থেকে পড়ে শোনা যাবে। আপনি এমন কিছু করবেন না যাতে এই অবস্থায় ইমন হাইপার হয়ে যায়।
সাজিয়া আর কিছু বললো না সে খুব ভালো করেই ইমনের বন্ধু দের বিষয়ে জানে।
যেমন ছেলে তেমনি তাঁর বন্ধু অসহ্য। এই মেয়েকে তো আমি পড়ে দেখে নেবো। আমার বাড়ির বউ হওয়ার শখ যদি না মিটিয়েছি আমার নাম সাজিয়া না।মনে মনে বেশ বকে সরে গেলো সাজিয়া।
দাদী মোড়ায় বসে আছে মুসকান একপাশে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে আজ তাঁর বড্ড অসহায় লাগছে। বুকের ভিতর প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে।
যেমনটা তাঁর মায়ের মৃত্যুর পর হয়েছিলো আজ যেনো তাঁর থেকেও দ্বিগুন ব্যাথা হচ্ছে বুকে।
মানুষ টাকে এই অবস্থায়,দেখবে তা তাঁর কল্পনার বাহিরে ছিলো। বুক চেপে কান্না আসছে তাঁর ইচ্ছে হচ্ছে ছুটে গিয়ে জরিয়ে ধরে বলতে আপনার কষ্ট হচ্ছে,,,কোথায় কষ্ট হচ্ছে বলুন,,,
আপনার এই অবস্থা কি করে হলো,একটু সাবধান হবেন তো,,,আপনি জানেন না এই পৃথিবীতে আপনি ছাড়া আমার আর কেউ নেই, আপনার কিছু হলে আমার কি হবে একবারো ভেবেছেন।
ডুকরে কেঁদে ওঠলো মুসকান ইয়ানা গিয়ে মুসকানকে জরিয়ে ধরলো।

সায়রী, দিহান,অভ্র এসেছে সবাই কেবিনের বাইরে ভিতরে শুধু সায়রী আর মুসকান।
ইমন ঝাপসা চোখে মুসকান কে একনজর দেখলো।
সায়রী বললো –ইমন কেমন লাগছে এখন। কিছু লাগবে,খারাপ লাগছে??
ইমন খুব কষ্ট করে ভারী নিশ্বাস ফেলতে ফেলতে এক হাত একটু উচিয়ে আঙুল মুসকানের দিকে তাক করে বললো — ওওকে কাঁদতে নিষেধ কর সায়ুরী,,,
আমি মরে যাই নি তো,আমি জীবিত আছি ও কাঁদছে কেনো এইভাবে,আমার এইখানে ব্যাথা লাগছে বলেই বুকের বা পাশে ইশারা করলো।
সায়রী চোখ বড় বড় করে ফেললো।
মুসকান যেনো বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেলো।
বুকের ভিতর যে যন্ত্রনাটা হচ্ছিল তা যেনো নিমিষেই উধাও হয়ে গেলো। স্পন্দন বেড়ে গেলো তীব্র মাএায়।
হাত পা,খানিকটা কাঁপতে শুরু করলো।
ইমন আরো কি সব বললো বির বির করে কিছু বুঝতে পারলো না শুধু এইটুকু বুঝলো।

–আমি ওর জন্যই বেরিয়েছিলাম। নতুন জীবন শুরু করার আগে সমস্ত তিক্ত অতীতটা মুছে ফেলেছি আমি। ওকে কাঁদতে নিষেধ কর সায়রী,,, ওকে নিষেধ কর।
“ও আমার সবটাতে মিশে গেছে সায়রী”
“ও আমার কল্পনাতে,বাস্তবে সবটাতে বিরাজ করছে”
“ও আমার হৃদপিণ্ডে অবস্থান করছে”
ওকে কাঁদতে নিষেধ কর।
,
পুরো সাতদিন ঘুম,খাওয়া ভুলে গিয়ে হসপিটালে থেকেছে মুসকান। দিন রাত এক করে সেবা করছে রাত হলে তাঁর পাশে বসেই কিছু সময় ঘুমিয়ে নিয়েছে। সাতদিব পর রিলিজ করলেও পুরো ১মাস বেড রেষ্টে থাকতে হবে ইমনকে।
একরামুল চৌধুরী ইমনের বাসায় না পাঠিয়ে তাঁদের বাড়ি নিয়ে গেলো। ইমন ও আপত্তি করলো না।
ইমন, মুসকানের যাবতীয় প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপএ একরামুল চৌধুরী ও বাড়ি থেকে তাঁর বাড়ি শিফট করলো।
,
প্রায় আটদিন হয়ে গেছে গোসল করেনি ইমন।
দাদীর কথা অনুযায়ী ছোট বালতিতে পানি নিয়ে মেঝেতে রেখে তয়ালে ভিজালো মুসকান। ইমন চোখ বুজে শুয়ে ছিলো মুসকান এক হাত ইমনের কাঁধে রেখে বললো”আপনি জেগে আছেন??দাদী বললো ভেজা তয়ালে দিয়ে শরীর মুছে দিতে আমি শার্ট টা খুলে দেই ”
ইমন চোখ খুলে তাকালো, মুসকানের মুখের দিক কিছুক্ষন চেয়ে রইলো শান্ত গলায় বললো “তোমার ওপর বেশ ধকল যাচ্ছে পড়াশোনাও হচ্ছে না,কষ্ট হচ্ছে ভীষণ তাইনা ”
মুসকান মৃদু হেসে বললো “নাহ আপনার সুস্থতার জন্য এইটুকু ধকল কিছুই না তাছাড়া বাবা তো নার্স রেখেছিলো আমিই না করে দিয়েছি বলতে বলতে শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো।
লোমশ ভরা বুকটা দেখে কেমন একটা অনুভূতি হলো তাঁর বড্ড অচেনা বেশ লজ্জাও লাগছিলো, লজ্জাটাকে গুরুত্ব না দিয়ে কাজে মন দিলো।
ইমন শুধু মুগ্ধ হয়েই চেয়ে থাকে মুসকানের দিকে।
মন থেকে চাইলে মনুষ সব পারে মুসকান মন থেকে চায় বলেই ইমনের মতো মানুষ কে সামলাতে পারে।
এই বয়সেই সে যেভাবে সব দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে তা সত্যি অবাক করার বিষয়।
তয়ালে দিয়ে শরীর মুছে এক হাতে ইমনের মাথাটা,তোলার চেষ্টা করলো।
ইমন বাঁকা হেসে নিজেই মাথা তুললো মুসকান এক হাতে মাথায় ধরে আরেক হাতে পিঠে মুছে দিতে লাগলো।
ইমনের মুখটা ঠেকলো মুসকানের কাঁধে।
দুজনের হৃদস্পন্দনই সমান গতিতে স্পন্দিত হচ্ছে।
মুসকানের হাতের কাঁপুনিও অনুভব করছে ইমন।
মুসকান সোজা হয়ে ইমনকে শুইয়িয়ে একটু ঝুঁকে তয়ালেটা ইমনের মুখের কাছে আনতেই ইমন মুসকানের মুখের দিকে গভীর দৃষ্টি তে চেয়ে রইলো।
একটু অস্বস্তি হলেও তাঁকে পাত্তা না দিয়ে চট করে মুখটা মুছে দিয়ে কাবার্ড থেকে টি শার্ট বের করে পড়িয়ে দিতে লাগলো।
ইমন কিছু বলছে না শুধু তাঁর সহধর্মিণীর সেবা,যত্ন টা হৃদয় দিয়ে অনুভব করছে।
নিজের হাতে খাওয়িয়ে দেওয়া, পোশাক পাল্টে দেওয়া বাথরুম নিয়ে যাওয়া সব মুসকান একা হাতেই করছে। কাজের লোকের অভাব নেই তবুও মুসকান তাঁর স্বামীর দায়িত্ব নিজেই নিয়েছে সঠিক ভাবে পালন ও করছে। একটু কষ্ট হচ্ছে যা মুসকান বুঝতে না দিলেও ইমন ঠিক বুঝে নিচ্ছে।
তাঁকে ওঠাতে নামাতে গিয়ে কতোবার যে নিজেই পড়ে গেছে হিসেবের বাইরে। তবুও দুজন মিলেই নিজেদের সমস্যা সমাধান করছে।
বসা থেকে যতোবার ইমনকে শোয়াতে গিয়েছে ততোবারই নিজেই ইমনের নিচে পড়ে গেছে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করাটা মুসকানের জন্য খুবই কষ্টকর হলেও ইমন সাহায্য করেছে এতে তাঁরও কষ্ট হয়েছে এর মাঝে একবার হাতের ব্যান্ডেজ থেকে ব্লিডিংও হয়েছে। রক্ত দেখে মুসকানের সে কি কান্না ডক্টর এসে নতুন করে ব্যন্ডেজ করার পরই মুসকান শান্ত হয়েছে।
প্রায় দুমাস পর ইমন পুরোপুরি সুস্থ হয়। অফিস জয়েন করার আগে মুসকান কে কলেজ ভর্তি করিয়ে নেয়। দাদীর জোরাজোরিতে ও বাড়ি ফিরে যায়নি ইমন৷ এছাড়া সায়রীও এখন শশুর বাড়ি মুসকান একা থাকবে, এ বাড়ি থাকলে দাদী,ইয়ানার সাথে সময় কাটাতে পারবে সেই ভেবে আর ও বাড়ি তে যায়নি।
,
মুসকানের মনটা বড্ড খারাপ।অসুস্থতার জন্য দুমাস ইমন কোথাও যায় নি সারাদিন তাঁর সাথে সাথে থেকেই তাঁর সময়টা দিব্যি ভালো কেটে গেছে।
ইদানীং সময়ই কাটে না, দাদীর সাথে গল্প করতে বসলেই দাদী শুধু স্বামীস্ত্রীর প্রেম ভালোবাসার বিবরন দেয় যা শুনে তাঁর মন দ্বিগুণ খারাপ হয়ে যায়। এছাড়াও দাদী কিসব বলে আগে লজ্জা লাগলেও এখন বড্ড খারাপ লাগে তাঁর। কারন ইমন তো তাকে একটু ছুঁয়েও দেখে না । বিয়ের আগে যতোটুকু কাছে এসেছে বিয়ের পর একেবারেই আসেনা। সারাক্ষন কাজে ব্যাস্ত থাকে। ইয়ানা পড়াশোনা নিয়ে বড্ড ব্যাস্ত বিকেলে একটু সময় কাটায়। বান্ধবী গুলাও বড্ড শয়তান ছলে বলে কৌশলে শুধু ভিতরের খবড় জানতে চায়।
মুসকান ওদের বোঝাতেই পারে না তাঁর আর তাঁর স্বামীর মাঝে ওরকম কোন সম্পর্কই গড়ে ওঠেনি।
তাঁরা আগেও যেমন ছিলো এখনো তেমনই আছে পার্থক্য এটাই আগে তাঁরা একঘরে থাকতো না এখন একি ঘরে রাত কাটায়।
সেদিনের কথা ভাবতেই চোখে পানি চলে এলো মুসকানের।
তাঁর বান্ধবী পপির বিয়ে হওয়ার চারদিনের মাথায় কলেজে এসেছে। বাবা সে কি লজ্জা সব বান্ধবী রা চেপে ধরায় বিয়ের আগের দিন থেকে শুরু করে চারদিনে ঘটে যাওয়া সব বললো। তাঁর স্বামী তাঁকে ছাড়া কিচ্ছু বুঝেনা তাঁকে এতো আদর করে এই সেই শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেলো।
তাঁর থেকে সব শুনে মুসকান মনটা ভীষণ খারাপ করে বসে ছিলো তখনি আরেকজন এসে বললো কিরে মুসকান তুই তো এসবের কিছুই বললি না।
তখনি আর একটা মেয়ে বলে ওঠলো ও বলবে কি রে ও তো বিয়ে করেছে এক বুড়ো কে বলেই মুখ চিপে হাসলো। তাঁদের মধ্যে একজন বললো এই বুড়ো বলছিস কেনো ইমন ভাইয়া তো সেই হ্যান্ডসাম জানিস ওনি আমার বড় আপুর ক্রাশ ছিলো।
এখনো কতো মেয়ে ওনার জন্য পাগল।
–ওও তাই বুঝি মুসকানের দিকে তাঁর নজর নেই তাই তো মুসকান স্বামীর ব্যাপারে সেভাবে কিছুই বলতেই পারে না।
সকলেই হোহো করে হেসে ওঠলো।
ইমন কে বুড়ো বলায় মুসকানের এত্তো রাগ হলো যে কিছু বলতে যাবে অমনি তন্নি এসে মুসকান কে টানতে টানতে নিয়ে গেলো।
চোখের কোনে বিন্দু জল আসতেই তারাতারি মুছে ফেললো।
,
তন্নি এসেছে কিছু নোটস দিতে।
মুসকান তন্নি কে বসিয়ে হালকা নাস্তা করতে নিচে গেছে। তন্নি একা একা বসে ছিলো এমন সময় অভ্রু হনহন করে রুমে ঢুকেই তন্নির গলা চেপে ধরলো।
এই ফোন ধরসিস না কেনো, তুই আমাকে ব্লক করেছিস সাহস দেখে অবাক হয়ে যাই আমি।
তন্নি জোর খাটিয়ে হাতটা ছাড়িয়ে ভয়ে এক ঢোক গিলে বললো অভ্র ভাইয়া আমাকে তুমি মেরে ফেলবে নাকি,,,
অভ্র তন্নির অনেকটা কাছে গিয়ে দুকাধে শক্ত করে চেপে বললো দেখ তন্নি আমার মাথা খারাপ করবি না। তোকে আমি ভালোবাসি তুই সেটা জানার পর থেকেই আমাকে ইগনোর করে যাচ্ছিস। তুই কি ভেবেছিস আমি তোকে এমনি এমনি ছেড়ে দেবো।
তন্নি অভ্রর এই সিরিয়াস মুডটা দেখে বেশ ঘাবড়ে গেলো। সে তো জানতো অভ্র তাঁর শত্রু যে কিনা কোনদিন তাঁকে স্বস্তি দেয়নি কোন না কোন ভাবে অপমান, জ্বালাতন করেই গেছে এছাড়াও তাঁর গার্লফ্রেন্ডেরও অভাব নেই। তাহলে হঠাৎ তাঁর জন্য ভালোবাসা উদয় হওয়ার মানে কি??
–অভ্র ভাইয়া ছাড়ো কেউ দেখে নেবে।
–দেখুক তাতে আমার জায় আসেনা। তুই আমাকে কেনো ব্লক করলি আর ব্লক করে আমারি বাড়িতে ধেই ধেই করে আসবি আর আমি হাতগুটিয়ে বসে থাকবো৷ দেখ তোকে আমি ভালোবাসি, হ্যাঁ ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি। বুঝেসিস এ ব্যাপারে দিহান ভাইয়ের সাথে কথাও বলবো শুধু তুই ছোট বলে অপেক্ষা করছি। নয়তো তোর বাউন্ডোলেপানা আমি অনেক আগেই বের করতাম।
তন্নি হা হয়ে গেলো এ সে কাকে দেখছে,এ সে কি শুনছে এই বাঁদর টা তাহলে সত্যি তাঁকে ভালোবাসে।
–তাহলে তোমার গার্লফ্রেন্ড গুলোকে ভালোবাসোনা?
–হুম বাসি কিন্তু তুই আর ওরা আলাদা।
–তন্নি নিচের ঠোঁট টা ফুলিয়ে বললো কিভাবে আলাদা।
অভ্র এক সেকেন্ড ও সময় নিলো না নিজের ঠোঁট জোরা দিয়ে তন্নির ঠোঁট জোরা আঁকড়ে ধরলো।
তন্নি মৃদু আওয়াজ করে হাত দিয়ে মারতে শুরু করলো।
এক পা এক পা করে পিছুতে যেতে যেতে দেয়ালে ঠেকে গেলো।
অভ্র তন্নিকে এবার তাঁর ভালোবাসা বুঝানোর জন্য নিজের সাথে গভীরভাবে জরিয়ে চুমু খেতে লাগলো।
এই দৃশ্য মুসকানের চোখে পড়তেই তাঁর হাতে থাকা খাবাড়গুলো সমানে কাঁপতে শুরু করলো। ভয়ে এক ঢোক গিলে চলো গেলো সে।
,
ইমন ফিরলো রাত এগারোটার দিকে মুসকান ড্রয়িং রুমে বসেই পড়ছিলো। অভ্র সাথেই ছিলো ইমন ফিরতেই অভ্রকে মুসকানের পাশে দেখে এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
মুসকান খাবাড় বেড়ে ইমনকে ডাকতে গেলো ইমন গম্ভীর গলায় বললো সে খাবে না। তবুও মুসকান খাবাড় নিয়ে উপরে চলে এলো খাবাড় বেড়ে টেবিলে রেখে ইমনকে যেই ডাকলো অমনি এতো জোরে এক ধমক দিলো যে ভিতরের আওয়াজ বাইরে অবধি পৌঁছে গেলো।
এই আওয়াজে
প্রত্যেকটা লোক ভয়ে কেঁপে ওঠলো শুধু সাজিয়া ছাড়া। কারন যে বিষ সে ঢেলেছে তাঁর কার্যকারিতা অলরেডি শুরু হয়ে গেছে।
প্রতিদিন রাতে মুসকান পড়াশোনা করে ড্রয়িং রুমে।
সেই সাথে ইমনের জন্য অপেক্ষায়ও থাকে।
মাঝে মাঝে অভ্রও এসে সময় দেয়,তন্নির সাথে ফোনে কথা বলে। আর এই সুযোগ টাই সাজিয়া বেগম নিয়েছে।
সে খুব ভালো করেই জানে ইমনের দূর্বলতার জায়গাটা, ভয়ের জায়গাটা।
সেদিন শপিংয়ে গিয়েছিলো সাজিয়া সেখান থেকেই ফেরার সময় অফিস যায়।

–দেখো বাবা এখন আমার আর কোন রাগ নেই ঐ মেয়ের ওপর কিন্তু বাবা মনে রেখো আমি একজন মেয়ে। মেয়ে হয়ে আরেকজন মেয়ের মনে কি চলছে তা খুব ভালো করেই বুঝতে পারি। বাবা তুমি ভুলে যেওনা তোমার মা কিন্তু এক ছেলে সহ তাঁর স্বামী কে ঠকিয়েছে। পরকিয়া করেছে পঁচিশ, ছাব্বিশ বছর বয়সি একটা মেয়ে যদি এমন কাজ করতে পারে।
তাহলে ওর মতো বাচ্চা মেয়ের মনেও তো কুচিন্তা আসতে পারে।

ইমন কঠোর চোখে তাকাতেই সাজিয়া আবারো নিচু স্বরে বললো।

–কি আর বলবো মেয়েটা সবসময় আফসোসে থাকে মন মরা থাকে। সেদিন তোমার দাদীকে তো বললো তুমি নাকি এক বিছানায় ঘুমালেও অনেক দূরত্ব বজায় রাখো। মেয়েটাকে দেখেই বোঝা যায় মনে কি চলছে। আসলে দোষ তো ওর না দোষ টা বয়সের বুঝলা। কম বয়সি মেয়ে বিয়ে করলে এই এক সমস্যা। মতের মিল হয় না, বোঝাপড়ার অভাব।
কদিন ধরেই দেখি অভ্রর সাথে বেশ ঘেষে থাকে।
তুমিই বলো অভ্র কোনদিন কফি খেতো?? আজ সেই অভ্র কিনা প্রতিদিন রাতে মুসকানের সাথে কফি আড্ডা দেয়। ছেলেটারই বা কি দোষ বলো ছেলেটা না গেলেও মুসকান নিজেই ওর রুমে যায় ডেকে আনে। কি একটা অবস্থা বলো তোমার বাবাও তো বড় টেনশনে আছে তোমার মায়ের মতো যদি এই মেয়েও একি পথে চলে তাহলে পরিবারের মান সম্মান তো ধূলোয় মিশে যাবে।
বড় টেনশনে আছি গো আমি বলি কি তুমি মেয়েটাকে একটু বুঝিও কম বয়স, অবুঝ মন বুঝালেই হয়তো বুঝবে উঠতি যৌবন বুঝোই তো।
ইমনের প্রচন্ড রাগ হচ্ছিল মনে হচ্ছিল মহিলাটাকে ঘার ধরে বের করে দিতে। নিজেকে সংযত রেখে শুধু বললো –বেড়িয়ে যান, জাষ্ট লিভ মি।
,
বলছিতো খাবো না কথা কানে যায় না। কি মনে করো তুমি নিজেকে তোমার কথায় ওঠতে হবে, তোমার কথায় বসতে হবে খাবো না আমি।
দুকাধে চেপে ধরে কথা গুলো বলেই ছুঁড়ে ফেললো।
মুসকান গিয়ে মেঝেতে পড়ে গেলো।
ভয়ে একদম গুটিশুটি মেরে গেলো। কাঁপতে থাকলো সে চোখ দিয়ে অঝড়ে পানি ঝড়তে লাগলো।
দরজা খোলা ছিলো বিধায় অভ্র রুমে ঢুকতেই মুসকান কে নিচে দেখে দৌড়ে গিয়ে ওঠিয়ে বললো –একি মুসকান নিচে পড়লে কি করে।

ইমনের যেনো পায়ের রক্ত মাথায় ওঠে গেলো এবার।
রক্তচক্ষু তে অভ্রর দিকে চাইলো, ভয়ে মুসকানের হেচকি ওঠে গেলো।
চিৎকার করে বললো–এই মুসকান কি, নাম ধরে কেনো ডাকিস, ভাবী বলতে পারিস না??

অভ্র হকচকিয়ে গেলো ইমনের এমন রাগ দেখে।
আজ নতুন দেখছেনা তাই খুব একটা ঘাবরালো না।
–সরি ব্রো,,,
মুসকানের দিকে একবার ইমনের দিকে একবার চেয়ে বেরিয়ে গেলো অভ্র।
মুসকান ভয়ে কেঁপেই চলেছে। অভ্র বেরুতেই ইমন গিয়ে ঠাশ করে দরজাটা লাগিয়ে দিলো।
ভয়ংকর দৃষ্টি তে মুসকানের দিকে চেয়ে চিৎকার করে বললো দাদীর কাছে কি বলেছো তুমি।
মুসকান আবারো কেঁপে ওঠলো। এমন নীরব কান্নায় যেনো তাঁর রাগ তরতর করে বেড়েই চলেছে কয়েকপা এগিয়ে আবারো দুকাধে চেপে ধরলো।
–তোমায় আমি বলেছিলাম সময় নিতে, বলিনি?
তোমায় আমি বলেছিলাম নিজেকে মানসিক ভাবে, শারিরিক ভাবে প্রিপেয়ার করতে আর তুমি ছিঃ,,,
এই তোমরা মেয়েরা কি সবাই এক।
যেই তোমাকে এতোগুলো দিন ধরে সবার থেকে আলাদা ভেবে আসলাম সেই তুমিও ছিঃ।
বয়স কতো তোমার?? ইমন চৌধুরী অমানুষ নয়।
ইমন চৌধুরী মানুষ। আমি তোমাকে এই শরীরের জন্য বিয়ে করিনি,আমি তোমাকে নিজের শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য বিয়ে করিনি। তোমাকে সুন্দর, সুগঠিত জীবন দিতে চেয়েছি নিজেও একটা সুন্দর সুগঠিত জবন উপভোগ করতে চেয়েছি।
যেই তোমাকে এতোটা ধৈর্যশীল ভাবতাম সেই তুমি আজ এতোটা অধৈর্য হয়ে পড়লে ছিঃ।

এবার মুসকান চুপ করে থাকতে পারলো না। কি করে পারবে সে তাঁর জীবনের আদর্শবান মহাপুরুষ টা যে তাঁকে ভুল বুঝছে।
কাঁপা গলায় বললো –কি করেছি আমি?
ইমন চমকে গেলো কন্ঠটা শুনতেই মুখের দিকে তাকালো অঝস্র পানিতে ভরে আছে মুখটা।
তাঁর মুগ্ধময়ী কাঁদছে প্রচন্ড কাঁদছে শুধু তাঁর চোখ কাঁদছে না তাঁর বুকটাও চিৎকার করে কাঁদতে চাইছে।
আর কিছু না ভেবে ইমন শক্ত করে জাবটে ধরলো মুসকান কে।
মুসকান ও ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো।
ইমন সবটা আবারো ভাবতে লাগলো। সাজিয়ার কথা গুলো শুনে সিসি ক্যামেরায় অভ্রর সাথে একসাথে রোজ রোজ দেখে জিয়েলাস ফিল থেকে মাথায় কিসব ঢুকে গিয়েছিলো।
পাগল পাগল লাগছিলো তাঁর কিন্তু এখন তো তেমটা লাগছে না। খানিকটা শান্ত হলো ইমন বেশ কিছুক্ষন পর মুসকান কে ছেড়ে দিয়ে বললো দাদীকে কি বলেছো, কদিন যাবৎ তুমি কেনো মন খারাপ করে থাকো। কি সমস্যা তোমার খুলে বলো আমায়।
মুসকান ডুঁকরে কেঁদে ওঠলো।
কাঁপা গলায় বললো আমি দাদীকে কিছু বলিনি।
আপনি কেনো এমন করছেন??
–দাদীকে বলোনি আমি তোমার থেকে দূরত্বে থাকি।
মুসকান চমকে ওঠলো।
এই কথার জন্য এমন করলো ওনি ভাবতেই বুক ফেটে কান্না এলো।
ডান হাতের পিঠ দিয়ে চোখের পানি মুছে হেচকি তুলতে তুলতেই বলতে লাগলো।
–দাদী শুধু আমাকে প্রশ্ন করে আপনি আমাকে ছুঁয়েছেন কিনা, আদর করেছেন কিনা তাই তো আমি বলেছি আপনি তো দূরে দূরেই থাকেন।
ইমন তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছুঁড়ে দিয়ে বললো আর মন খারাপ থাকার কারন??
এবার যেনো কান্না আর বাঁধ মানলো না কাঁদতে কাঁদতেই বলতে লাগলো আমার বান্ধবী রা তাঁদের বরকে নিয়ে কতো গল্প করে, ওদের বর ওদের অনেক আদর করে, খুশির সময় জরিয়ে ধরে। চুমো খায় সকাল বিকাল।আরো কতোশতো গল্প আর আমাকে এসবে কিছু জিগ্যাস করলে আমি কিছুই বলতে পারিনা। বাসর ঘরে কি হয়েছে তাও বলতে পারিনা।
অভ্র ভাইয়া তন্নি কে সেদিন কতো আদর করলো চুমো খেলো। ওরা তো বিয়েও করেনি আর আমার বিয়ে হয়েছে তাও সেসব কিছুই পাইনা আপনার থেকে।
আমার সেসবেও কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু যখন সবাই বলে আপনার ওপর অনেক মেয়ে ক্রাশ খেয়েছে। আমার থেকে সুন্দরী, সুন্দরী মেয়েরা আপনার জন্য পাগল তখন আমার খুব কষ্ট হয়।
জানেন ওরা বলে আপনি নাকি সুন্দরী মেয়েদের থেকে ভালোবাসা পেয়ে আমাকে একসময় ভুলেই যাবেন। ওদের বর ওদের নিয়ে ঘুরতে যায়,ফুসকা খেতে যায়,কলেজ শেষে নিতে যায় আপনি এসব কিছুই করেন না কারন আপনি নাকি আমাকে ভালোইবাসেন না।আর জানেন কি বলে আমি কাজের লোক কাজের লোক ই আছি।
বউ শুধু দেখানোর জন্য, আর জানেন কি বলে এতোদিন অবৈধ রক্ষিতা ছিলাম এখন বৈধ রক্ষিতা হয়ে আছি আপনার। কথা গুলো বলতে বলতে মেঝেতে দম করে বসে পড়লো। হাঁটু তে মুখ গুঁজে কাঁদতে কাঁদতে বললো-
“আচ্ছা আমি কি এতোটাই বাজে দেখতে যে আমাকে একটু ছুঁয়া যায় না ”
আমি কি এতোটাই অযোগ্য যে আমাকে বউ হিসেবে কোথাও নিয়ে যেতে,আমার স্বামী হয়ে আমাকে কলেজ থেকে নিয়ে আসতে আপনার সম্মানে লাগে।
ওওও লাগেই তো সত্যি তো আমি ব্রাহ্মণ হয়ে চাঁদে হাত দিতে এসেছি, তাইতো চাঁদ আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে লোকে ঠিকি বলে।
সত্যি ওরাই ঠিক ওরাই ঠিক বলেই অস্বাভাবিক আওয়াজে কাঁদতে লাগলো।

–কতোটা যন্ত্রণা, কতোটা আঘাত পেলে একটা মেয়ে এইভাবে এসব কথা বলে কাঁদতে পারে।
সত্যি মেয়েটা বড় সহজসরল। যদি সহজসরলই না হতো এসব ভেবে বাইরের লোকের কথায় গুরুত্ব দিয়ে নিজে এতোটা কষ্ট পেতো না।
এতো বোকা কেনো তুমি মুসকান?
আর আমি ঐ মহিলার কথাটা মাথা এভাবে বিগরে ফেললাম কেনো। আমি তো জানি ওনি ঠিক কি স্বভাবের মানুষ।
মুসকানের প্রতি এতটাই দূর্বল হয়ে পড়েছি যে ওসব শুনে হিতাহিতজ্ঞান শূন্য হয়ে গিয়েছিলো।
একিভাবে মুসকান ও তো দূর্বল ও তো আরো অনেক বেশী কথা শুনেছে। আমি যদি এই বয়সে এসে এতোটা অবুঝ হয়ে এমন আচরন করতে পারি ওর এইটুকু আচরণ তো তাহলে স্বাভাবিক।
আমার মনে শুধু একজন বিষ ঢেলেছে।
আর মুসকানের মনে একজন নয়, বন্ধু, বান্ধব সহ আরো অনেকেই কেউ কেউ অজান্তেই ওর মনে নেগেটিভ ভাবনা ঢুকিয়ে ফেলেছে।
ওহ গড,,, ওকে আমি কি করে বোঝাবো।
সব রাগ ঝেড়ে ফেলে নিজেকে শান্ত রেখে মুসকানের পাশে বসলো ইমন।
জানালার বাইরের চাঁদটার দিকে চেয়ে বললো–
“কারো মুগ্ধতায় আটকে গেলে অন্য কাউকে আর ভালো লাগে না। আমি যে আমার মুগ্ধময়ীর মুগ্ধতায় আটকে গেছি সেই কবেই”
তা কি আমার মুগ্ধময়ী জানে???
#হৃদপিন্ড
#জান্নাতুল নাঈমা
#পর্ব-২৪

মুসকান ফুঁপিয়ে কেঁদেই চলেছে ইমনের কথা তাঁর কানে পৌঁছিয়েও পৌঁছায় নি বা অভিমানের পাল্লা বেশীই ভারী হয়ে গেছে।
ইমন এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। সাতপাঁচ ভাবার আর সময় নিলো না সে। আর যাই হোক তাঁর মুগ্ধময়ীকে ভালোবাসা, আদরের অভাবে ভুগতে দেবে না সে।
এছাড়া মুসকান তো টাকা -পয়সা ভালো কাপড় ভালো খাবাড়ের পাগল নয়। সে শুধু আদর ভালোবাসার জন্য পাগলামি করছে। পরপুরুষের কাছেও নয় তাঁর স্বামীর কাছে এটাতো তাঁর অপরাধ নয়। আমি একটু বেশীই চিন্তা করছি বোধহয় ওর ভালো করতে গিয়ে ওর ক্ষতিই করে ফেলছি যা মানসিকভাবে ভীষণ আঘাত করছে ওকে।
মাথাটা কেমন করে ওঠলো তাঁর। শরীর জুরে উষ্ণ হাওয়া বয়ে গেলো। মুসকানের ফুঁপানির শব্দ কানে ভাসতেই মোহময় দৃষ্টি তে চেয়ে রইলো কতোক্ষন।
ঘোর লাগা গলায় বললো “যার জন্য তুমি এভাবে ভেঙে পড়ছো তাঁর থেকেও হাজার গুন দিতে প্রস্তুত আমি”
আজকের পর থেকে তোমার চাওয়ার মাএার ওপর আমার ভালোবাসা নির্ভর করবে না। আমার ভালোবাসা নির্ভর করবে আমার আমার দেওয়ার ওপর।
একহাতে মুসকানকে জাগালো ইমন একদম নিজের কোলের ওপর বসাতেই মুসকান চমকে ওঠলো।
কান্না থেমে গেছে তাঁর আচমকাই এমন কিছু হয়ে যাবে ভাবতে পারেনি। অবাক নয়নে চেয়ে রইলো সে।
ইমনও তাঁর মোহময় দৃষ্টি তে চেয়ে আছে।
হঠাৎ ই কোমড়টাকে একহাতে শক্ত করে চেপে নিজের খুব কাছে নিয়ে এলো। মুসকানের বুকের ভিতর হঠাৎই শীতলতায় ভরে গেলো। হৃদস্পন্দন বেড়ে গেলো দ্বিগুণ ভাবে। একহাতে চুলের মুঠোয় শক্ত করে চেপে কপালে কপাল ঠেকিয়ে ঘোর লাগা গলায় বললো যেখানে সবার কাছে তোমার প্রাউড ফিল করার কথা সেখানে তুমি মাথা নিচু করে কেনো থাকো মুসকান,,,
কেনো বুঝোনা কিছু মানুষ তোমার মতো হতে পারেনা, তোমার জায়গায় আসতে পারেনা বলেই হিংসে থেকে অনেক রকমের কথা বলে।
“ইমন চৌধুরীর মতো সুপুরুষের অর্ধাঙ্গিনী হওয়ার ভাগ্য নিয়ে সবাই জন্মায় না কিন্তু অধিকাংশ মেয়েই তাঁর অর্ধাঙ্গিনী হওয়ার স্বপ্ন দেখে”
তোমায় ওদের বলতে হবে না তোমার স্বামী কেমন।তোমার স্বামীর ভালোবাসার গভীরতা কেমন।
কিন্তু আজকের পর তুমি নিজেই অনুভব করতে পারবে তোমার বন্ধুদের ভাষায় বুড়ো জামাই তাই তো। এই বুড়ো জামাই তোমায় যা দিতে পারে আর পারবে ওদের কম বয়সি, যুবক জামাই ও তা দিতে পারবেনা।
ইমনের ভারী নিশ্বাস মুসকানের মুখে পড়তেই তাঁর শ্বাস ভারী হয়ে এলো। শরীর টা অবশ হয়ে আসছে কেমন, অতিরিক্ত কান্নার ফলে চোখ দুটোও বুজে আসছে। মুখ দিয়ে একটা আওয়াজ ও বেরুলো না তাঁর। ভয় হতে লাগলো কথা না বলাতে বোধ হয় ইমন রেগে যায় কিন্তু ইমন তো আজ রাগবে না। সে তাঁর গভীর ভালোবাসায় মত্ত করে রাখবে তাকে।
সুখের ডুব ডাগরে ডুবিয়ে মারবে তাঁকে। তা কি সে টের পাচ্ছে,,,
ঘাড়ে ঠোঁট ছুয়াতেই কেঁপে ওঠলো মুসকান।
ইমন আরো গভীর ভাবে নিজের সাথে জরিয়ে নিলো। মুসকান আধো চোখে এক পলক ইমনকে দেখেই চোখ বুজে ফেললো।
ইমনের এই অস্থিরতার রূপ, দেখার সাহস তাঁর হলো না।
আগুনে ঘি ঢেলে দিলে যেমন আগুন হুট করে ফুঁসে ওঠে ইমনেরও সেই অবস্থা। আজ মুসকান শত বাঁধা দিলেও ইমনকে আটকাতে পারবে না।
গলায় অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে ইমন। প্রত্যেকটা স্পর্শেই কেঁপে কেঁপে ওঠছে মুসকান।গলা থেকে মুখ ওঠিয়ে ঠোঁট জোরা আঁকড়ে ধরলো।

মুসকানকে ওভাবেই কোলে তুলে ঘাড়ে মুখ ডুবিয়েই বিছানার দিকে এগোতে লাগলো। অজান্তেই হাত দুটো শক্ত ভাবে আঁকড়ে ধরে আছে ইমনের পিঠে।
দুজনের হৃদস্পন্দনই আজ একসাথে স্পন্দিত হচ্ছে।
মুসকানকে বিছানায় শুইয়িয়ে ইমন ওঠে গিয়ে লাইট অফ করে দিলো ড্রিম লাইটের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে সব কিছু। সেই সাথে মুসকানের শরীরের হালকা কাঁপুনি খুব করে টের পাচ্ছে।
নিজের শার্টটা খুলে ফেললো ইমন বিছানায় যেতেই মুসকান ইমনের দিকে চেয়ে নিচু স্বরে বললো আপনি রাতে খাবেন না??
ইমন সেদিকে পাত্তা না দিয়ে ধীরে ধীরে এগুতে লাগলো। মুসকানের গলা শুকিয়ে এসেছে, ইমনকে তাঁর বড্ড অচেনা লাগছে, এই অস্বাভাবিক রূপ আগে কখনো দেখেনি সে। কেমন অচেনা ভয় এসে আঁকড়ে ধরেছে তাঁকে।
সফটলিভাবে স্পর্শ করলো ইমন কোমড় চেপে ধরে কাঁধে মাথা রেখে একহাতে জামার চেইনে এক টান দিলো মূহুর্তেই আঁতকে ওঠলো মুসকান ভয়, লজ্জা দু’টোই গভীর ভাবে আঘাত করলো তাকে। শক্ত ভাবে জরিয়ে ধরলো ইমনকে। যেনো আর ছাড়বেই না ছাড়লেই লজ্জায় মরন হবে তাঁর ।
ইমন যতো তাঁর স্পর্শ দিচ্ছে মুসকান ততো শক্ত করে জরিয়ে নিচ্ছে। পুরো শরীর প্রবলভাবে কাঁপছে, তাঁর এই কাঁপুনি ইমনকে যেনো দ্বিগুণ পাগল করে দিচ্ছে।
পাগলের মতো চুমু খাচ্ছে গলায়,ঘাড়ে, পিঠে।
পুরো শরীরে হাত বিচরন করছে মুসকানের চোখ দিয়ে সমানে পানি ঝড়ছে। অতি সুখে মরে যেতে ইচ্ছে করছে তাঁর ।
ইমন যেনো আজ তাঁকে সুখে মেরেই ফেলবে।
পিছন দিক ঘুরিয়ে পিঠে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে।
একহাতে পেট চেপে কখনো ঘাড়ে, কখনো পিঠে ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছে। সুখ, ভালো লাগার অসহ্য সীমানায় পৌঁছে গেছে মুসকান। ইমন এবার মুসকানকে ঘুরিয়ে নিলো গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। মুসকানের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে ইমনের কপালে ঠেকলো। ইমন এক নজর মুসকানকে দেখে ধীরে ধীরে নিচের দিকে নেমে গেলো নাভীতে ঠোঁট ছোঁয়াতেই মুসকান খামচে ধরলো তাঁর চুল।
মসৃন পেটটায় খুব সফটলি চুমু খেতে লাগলো।
কাঁপতে কাঁপতে এবার বেহুশ হবার অবস্থা তাঁর।
সাপের মতো মোড়ামুড়ি করতে শুরু করলো সে।
যার ফলশ্রুতিতে ইমন গভীর ভাবে মুখ ডুবিয়ে দিলো। এবার সত্যি সত্যিই অতি সুখে সে বেহুশ হয়ে গেলো।
হঠাৎ করে মুসকানের ছটফটানি থেমে যাওয়া। কোন রেসপন্স বা আনাড়িপনা না পেতেই ইমন চোখ তুলে তাকালো। অনুভূতি শূন্য বুঝতেই ওঠে গিয়ে গাল দুটো স্পর্শ করলো। কোন রেসপন্স পেলো না। চোখ দুটো পরখ করতে গিয়েই বুঝলো সে জ্ঞান হারিয়েছে।
যা বুঝে তাজ্জব বনে গেলো সে। মনে মনে বেশ বকলো মুসকান কে। রাগ ও হলো ভীষণ ইচ্ছে হলো মেয়েটাকে চিবিয়ে খেতে এমন একটা মূহুর্তে এসে এমনটা না করলেও পারতো। কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়ে পড়লো। অশান্ত মনকে শান্ত করার তীব্র চেষ্টা করতে লাগলো। পুরো শরীর ঘেমে একাকার অবস্থা শীতের মৌসুমে এমন ঘেমে যাওয়া মানেই প্রচন্ড অস্থিরতার ফল।

“অভিযোগ করার বেলায় ষোল আনা।
অথচ আমার আদর সহ্য করার ক্ষমতাই নেই”
“সবেতো সুখের সমুদ্রে পা ডুবিয়েছি মিসেস এখুনি এই অবস্থা যখন সাঁতার কাটবো তখন কি অবস্থা হবে ”
বাঁকা হাসলো ইমন।
কপালে আলতো করে চুমু একে দিয়ে একটু উঁচিয়ে জামার চেইন টা লাগিয়ে দিলো।
রাগের মাথায় খিদে না পেলেও এখন বেশ খিদে পাচ্ছে। মুসকান কে জাগাতে হবে ভেবেই গ্লাস টা নিয়ে কিছুটা পানি চোখে মুখে ছিটিয়ে দিলো।
হালকা আওয়াজ করে ওঠলো মুসকান। ইমন একটু ঝুকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো কি হয়েছে,,,
চোখ খুলতেই ইমনকে খুব কাছে পেলো সে। কিছুক্ষন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে পড়তেই শিউরে ওঠলো সে লজ্জায় মিইয়ে গেলো একদম।
বুকটা ধড়ফড় ধড়ফড় করতে লাগলো।
কি করে বোঝাবে সে তাঁর অনুভূতি গুলো। এতো গভীর স্পর্শ যে সে সইতে পারছে না। তাঁর কেমন পাগল পাগল লাগছে লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে যে মৃত্যুর নাম হবে সুখ মৃত্যু, অতি সুখে যে তাঁর মরন হবে।
তাঁর শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ইমনের প্রত্যেকটা স্পর্শ ছেয়ে গেছে প্রথম কোন পুরুষের গভীর ছোঁয়া অনুভব করছে সে। যে ছোঁয়া তে রয়েছে পবিএতা।
এই ছোঁয়ার জন্য কি বেহায়ার মতোই না কাঁদছিলো সে ইশ লজ্জায় চোখ দুটো বুঝে ফেললো।
ইমন মুসকানের মনের অবস্থা বুঝতে পারলো।
প্রথম ফিলিং গুলো বোধ হয় এমনি হওয়া উচিত।
যা প্রত্যেকটা পুরুষের মনেই বড্ড আনন্দ দেয়।
মুসকান বড্ড বেশীই লাজুক, অন্যসব মেয়ের মতো সে স্মার্টলি বিহেইভ করে না। সে যা করে মন থেকে ন্যাচারালি আর এই জিনিসটাই বড্ড ভালো লাগে তাঁর ।
কানের কাছে মুখ নিয়ে মৃদু স্বরে বললো
–“অমন একটা কঠিন সময় এভাবে সেন্সলেস হওয়াটা বড্ড বেমানান” খুব তো অভিযোগ করছিলে,, আমাকে উন্মাদ বানিয়ে নিজে জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়লে কেনো? এটুকু সহ্য করতে পারলে না? এখনোতো কিছুই করিনি।
মুসকান চোখ দুটো মেললো ভয়, লজ্জা দুটোই আকড়ে ধরেছে তাঁকে,কান দুটো দিয়ে যেনো গরম হাওয়া বেরুচ্ছে।মুসকানের মুখ ভঙ্গিতে ইমন রহস্যময় হাসি হেসে মুখে গম্ভীর্য ভাব নিয়ে বললো খিদে পেয়েছে খাবাড়ের ব্যবস্থা করো ঠান্ডা খাবাড় খেতে পারিনা সো কাজে লেগে পড়ে অনেক বোঝা হয়েছে আমার, কতোটা কি পারবে বলেই ওঠে পড়লো।

মুসকান কয়েকদফা শ্বাস নিয়ে জগ থেকে গ্লাসে পানি ভরে ঢকঢক করে খেয়ে নিলো।
ইমন শার্ট টা গায়ে চেপে বাথরুম চলে গেলো।
,
খাবাড় গরম করছে আর ভারী শ্বাস ফেলছে কিছুতেই নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে পারছে না।
ইমনের সামনে পড়তেও প্রচন্ড লজ্জা লাগছে কিন্তু তাঁর সামনে না গিয়েও তো উপায় নেই।
,
ইমন খাচ্ছে মুসকান সামনে বসে আছে। তাঁর আজ খিদে নেই সে খাবে না।
কিন্তু ইমন অর্ধেক খাওয়া শেষ করে বাকিটা মুসকান কে খেতে বলে চলে গেলো।
মুসকানের খেতে ইচ্ছে না করলেও জোর করেই খাবাড়টা শেষ করলো। একটু স্বাভাবিকতায় এসে গেছে সে। স্বস্থি লাগছে এখন ঘুমটাও পেয়ে বসেছে কেমন।
বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো ইমনের জন্য কিন্তু এলো না। তাই একপাশে চুপটি করে শুয়ে পড়লো।
খানিকবাদে ইমন রুমে ঢুকে সিটকেরী লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় এলো তাঁর ও ঘুম ধরেছে কিন্তু আজ সে বালিশে ঘুমাবে না। কারো ছোট্ট হৃদয়ে কান পেতে সারারাত তাঁর হৃদয়ের কথা হৃদস্পন্দন শুনতে শুনতে ঘুমাতে ইচ্ছে হলো। যেই ভাবা সেই কাজ ইমন চৌধুরীর ইচ্ছে পূরন হবে না তাই কখনো হয়।
বিছানায় গা এলিয়ে আলতো করে মুসকান কে টেনে নিলো অনেকটা কাছে। মুসকানের হাত পা আবারো কাঁপতে শুরু করলো।
কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারছে না গলাটা যেনো কেউ চেপে ধরেছে।
ইমন ওর মতো মুসকানকে গুছিয়ে তাঁর বুকে মাথা রাখতেই মুসকান শিউরে গেলো একটু সরতে নিতেই ইমন বললো”উহুম ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।
দুকোমড় পেঁচিয়ে বুকে মাথা রেখে চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো। দাঁড়ির খোঁচায় হালকা ব্যাথা লাগছিলো তবুও চুপ করে রইলো।এই চুপ করাটায় বরাবর ইমনের রাগের কারন হলেও এবার বেশ মজা পেলো। ঘুমানোর আগে তাঁর মুগ্ধময়ী কে একটু জ্বালানোটা মন্দ নয় ভেবেই খানিকটা দাঁড়ির ঘষা দিলো ইচ্ছে করেই মুসকান আহ করতেই ইমন মুচকি হেসে গভীরভাবে জরিয়ে মুখ গুঁজে রইলো।
পুরো শরীরের ভাড় না দিলেও আর্ধেক ভাড়েই মুসকান অস্থির হয়ে গেছে কিন্তু কিছু করার নেই সারারাত এভাবেই কাটাতে হবে তাঁকে।
,
সাজিয়া বেগমের প্ল্যানটা কার্যকর হলো না।
তাই সে তাঁর দ্বিতীয় পদক্ষেপটা নিবে এবার।
ইভান লন্ডনে গিয়েছে একমাসের বেশী হলো আর তিনদিনপরই ফিরবে আর সাথে আসবে রিতিশা।
তারপর এই মেয়ের ব্যাবস্থা নেওয়া যাবে ভেবেই শয়তানি হাসি হাসলো।

–ছেলের বউ থাকতে কাজের লোকের কাছে চা,কফি খেতে হয় আমার এর থেকে বড় দুঃখ আর কি হতে পারে।

মুসকান দাদীকে পান বানিয়ে দিচ্ছিলো এমন সময় সাজিয়া গলা বাজিয়ে কথাগুলো বললো।
দাদী বললো– যা তো কফি বানিয়ে খাওয়িয়ে আয়।
মুসকান খুব খুশি হলো যাক তাঁর শাশুড়ী মা তাকে ছেলের বউ হিসেবে স্বীকার তো করেছে।
কফি বানিয়ে খুব উৎফুল্ল হয়ে শাশুড়ী কে দিলো মুসকান। সাজিয়া পেপার পড়ছিলো কফিটা হাতে নিয়ে পেপার টা পাশে রাখলো।
মুসকান চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।
সাজিয়া কফিতে চুমুক দিয়ে আবারো পেপার দেখায় মনোযোগ দিলো।
মুসকান বোঝার চেষ্টা করছে কফিটা সাজিয়ার কাছে কেমন লেগেছে সে তো ইমনের জন্য যেভাবে বানায় সেভাবেই বানিয়েছে। অভ্র এই কফি খেয়ে তো খুব প্রশংসা করেছে তাই শাশুড়ীর কাছেও প্রশংসা পাওয়ার জন্য মনটা উৎসুক করতে লাগলো।

–মা কফিটা ঠিক হয়েছে??
সাজিয়া মুসকানের মুখে মা ডাক শুনে প্রচন্ড রেগে গেলো। তাঁর জন্য ইভানের খাওয়া মার গুলোর কথা মনে পড়তেই মনের ভিতর কেমন হিংস্রতা কড়া নাড়লো। কফির মগটা সোজা মুসকানের গায়ে ছুঁড়ে বললো খুবই বিশ্রি হয়েছে একটা কফিই বানাতে পারিস না। ছোটলোকের বাচ্চা।
গরম কফি শরীরে পড়তে মুসকান চাপা আর্তনাদ করে ওঠলো সাজিয়া সেই আর্তনাদে তোয়াক্কা না করে হনহন করে চলে গেলো।

–দাদী বললো কিরে কি হলো।
মুসকান একহাতে নিজের মুখটা চেপে নিঃশব্দে কাঁদতে লাগলো।
দাদী যদি জানতে পারে খুব অশান্তি করবে। আর ইমনের কানে গেলে আর রক্ষে থাকবে না। তাই সে কাঁপা আওয়াজে বললো কিছু না দাদী পায়ে একটু হোচট খেয়েছি তুমি পান খাও আমি পড়তে বসবো এখন।
তাঁর জন্য আর কোন অশান্তি হোক এ বাড়িতে সেটা সে চায় না।নিজের যন্ত্রণা গুলো একান্তই নিজের করে নিয়ে উপরে চলে গেলো সে।

বাথরুমে ঢুকে পাগলের মতো পানি দিতে লাগলো শরীরে। বুকের অনেকটুকুই পুরে গেছে মূহুর্তেই ফোস্কা পড়ে গেছে পানি দেওয়ায় ভালো লাগছে না দিলেই যন্ত্রণা হচ্ছে।
প্রচন্ড কাঁদছে সে, খুব কষ্ট হচ্ছে চাপা আর্তনাদ গুলো বাথরুমে গিয়ে যে গলা ফেটে বেরিয়ে আসতে চাইছে।

মনের ভিতর ভয় জমলো ইমন দেখে ফেলবে না তো বুঝে ফেলবে না তো??
–নাহ কিছুতেই বুঝতে দেওয়া যাবে না। ওনার সামনে স্বাভাবিক থাকলেই চলবে। কিন্তু যদি,,,আমার কাছে আসে। নাহ আসবে না।
মনে মনে আল্লাহ কে ডাকতে লাগলো। যাতে ইমন কোনভাবেই বুঝতে না পারে।
,

“সবার থেকে আড়াল করতে পারলেও সে কি ইমন চৌধুরীর থেকে আড়াল করতে পারবে তাঁর ব্যাথা তাঁর যন্ত্রণা”???

চলবে……
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here