হৃদমাঝারে পর্ব -২১ ও শেষ

#হৃদমাঝারে
#নাঈমা_জান্নাত
শেষভাগ

ট্যুর যাওয়া কার না পছন্দের। বিশেষ করে যারা ঘুরতে যেতে পারে না,পারমিশন পায় না,তারা সুযোগ ফেলে কথাই নেই। তাদের জন্য সেটা বিরাট পাওয়া। শুভ্রতার ক্ষেত্রেও সেটাই প্রযোজ্য। সে কোথাও ঘুরতে যেতে পারে নি। গ্রামে থাকতে চার দেয়ালের বাইরে কিছু দেখার সুযোগ হয়ে উঠে নি। মা-বাবাও কোথাও ঘুরতে নিয়ে যায় নি। স্কুল,কলেজ থেকেও ট্যুরে যাওয়ার পারমিশন মেলে নি। কিন্ত বিয়ের পর কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। মেঘ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। কিন্ত সেটা ঢাকার মধ্যে।,ঢাকার বাইরে যেতে পারে নি। এই প্রথম মেঘের সাথে ঢাকার বাইরে যাবে। মেঘের অফিস থেকেই ট্যুরের আয়োজন করা হয়েছে পাহাড়ে। আর মেঘের সাথে শুভ্রতাও যাবে। প্রথমে লোকটাকে বিয়ে করতেই চায় নি,আর এখন তাকে ছাড়া কল্পনা করাও সম্ভব নয়। একসাথে কতোগুলো দিন,মাস পার করে ফেললো। সবকিছু ভেবে শুভ্রতা মুচকি হাসে।

‘শুভ্র। তোমার প্যাকিং কমপ্লিট।’ ফোন স্ক্রল করতে করতে রুমে ডুকে মেঘ।
‘হ্যাঁ শেষ। খেয়ে নিবেন চলুন। সকালে তাড়াতাড়ি বের হতে হবে।’ ব্যাগের চেইন আটকাতে আটকাতে বলে শুভ্রতা। শুভ্রতা রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিতেই মেঘ শুভ্রতার হাত ধরে নিজের কাছে টেনে আনে। ক্লিপ দিয়ে আটকানো কিছু চুল বেরিয়ে এসেছে,মেঘ আলতোভাবে শুভ্রতার কানের পেছনে ঠেলে দিয়ে বলে,,’তুমি খুশি তো শুভ্র?’
‘ভীষণ।’
‘তোমার মুখের এই হাসিটা যেনো সারাজীবন থাকে।’
‘আপনি আমার সাথে থাকলে,সারাজীবন থাকবে।’ শুভ্রতা মেঘের কাঁধের দু’পাশে দু’হাত দিয়ে বলে। মেঘ শুভ্রতার দিকে আরেকটু এগিয়ে যেতে নিলে শুভ্রতা আটকে বলে,,’ক্ষিধে পেয়েছে,খেতে চলুন।’
মেঘ মুখ বাঁকিয়ে বলে,,’আনরোমান্টিক।’ শুভ্রতা ফিক করে হেসে বেরিয়ে যায়।
_____________
ভোরের বাতাসে আলাদা একটা প্রশান্তি আছে। ফজরের নামাজ শেষেই নিজেদের গন্তব্যের দিকে বের হয়ে যায় শুভ্রতা,মেঘ। উদ্দেশ্য অফিসের সামনে যাওয়া। সেখানেই বাস আসবে। সবাই সেখান থেকেই উঠবে। সকাল সকাল তাজা হাওয়ায় বেশ ভালো লাগছে শুভ্রতার কাছে। অদ্ভুত শিরণ জেগে উঠছে শরীরে।
বাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছে দু’জনে। শুভ্রতার সাথে পরিচিত হচ্ছে অনেকে। যারা যারা চিনে না তারা টুকটাক নিজেদের মাঝে কথা বলছে। আর দশমিনিটের মধ্যেই বাস ছেড়ে দেবে। মেঘ ব্যাগ ঠিক মতো রেখে শুভ্রতার পাশে বসে পড়লো। শুভ্রতা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলো। মেঘের উপস্থিতি অনুভব করে মেঘের দিকে তাকায়।
“সব ঠিক ঠাক? কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো?’
‘না আমি ঠিক আছি। আপনি বসুন।’

গাড়ি ছেড়ে দিতেই বাইরের দিকে তাকালো শুভ্রতা। সূর্য প্রায় উঠে গেছে। জানালা ভেদ করে আলো শুভ্রতার শরীরে পড়ছে। যেনো আলোক রশ্মি দিয়ে শুভ্রতাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। শুভ্রতা চোখ বন্ধ করে উপভোগ করতে লাগলো। বাসের হাওয়া সাথে হালকা রোদ,শুভ্রতার কাছে ভীষণ ভালো লাগছে। চোখ খুলে মেঘের দিকে তাকালো। মেঘ তাকিয়ে ছিলো বলে চোখাচোখি হয়ে গেলো।
‘ওভাবেই থাকো। ভালো লাগছিলো।’

‘হুহ ঠিক মতো,প্রশংসা করতেও পারেন না। সাধে আমি রসকষহীন ঘোমড়ামুখো বলি?’
শুভ্রতার কথায় মেঘের মুখ চুপসে গেলো।

শুভ্রতা তা দেখে মেঘের হাত ধরে বলে,,’তাও আমার আপনাকেই পছন্দ। রোমান্টিক হলে ভালো লাগতো না।’
‘এর জন্যই আমার নাম ঘোমড়ামুখো দিয়ে সেইভ করেছো?’ মেঘের কথায় শুভ্রতা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। ‘ইস উনি কি করে জানলেন যে আমি ঘোমড়ামুখো দিয়ে সেইভ করেছে।’ শুভ্রতা মনে মনে কথাটা বলে জিহ্ব কাটলো। তারপর জানালা দিয়ে বাইরে মুখ দিলো। আর কথাই বলবে না।

‘শুভ্র। এই শুভ্র!’ মেঘের ডাকে ফিটফিট করে চোখ খুলে তাকালো শুভ্রতা। বাইরে তাকাতে তাকাতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়ালই নেই। নিজেকে মেঘের বাহুডোরে আবদ্ধ পেতেই লজ্জা ফেলো। ইস বাসের এতো মানুষের সামনে এভাবে ছিলো? শুভ্রতা নিজেকে ঠিক করে উঠে বসে বলে,,’এসে গেছ?’
‘হ্যাঁ প্রায় এসে গেছি।’
____________________
রিসোর্ট এ পৌঁছে যে যার রুমে চলে গেলো। মেঘ ব্যাগপত্র রেখে ফ্রেশ হওয়ার জন্য চলে যায়। শুভ্রতা ঘুরে ঘুরে পুরো রুমটা দেখছে। চোখে বেলকনি পড়তে সেদিকে যায়, বেলকনি থেকে দূরে পাহাড়ের একটা দৃশ্য দেখা যায়। মেঘ ততোক্ষণে ফ্রেশ হয়ে খাটে শুয়ে পড়েছে। শুভ্রতা তড়িঘড়ি করে মেঘের পাশে এসে দাঁড়ায়।
‘চলুন না,আমরা বাইরে থেকে ঘুরে আসি।’

শুভ্রতার কথায় মেঘ হালকা চোখ খুলে বলে,,’শুভ্র,এখন রেস্ট নেই প্লিজ। আর দেখো প্রায় সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। পাহাড়ি এলাকায় অন্ধকার তাড়াতাড়ি হয়,এরপর বের হওয়া খুব রিস্কি।’
মেঘের কথার বিপরীতে শুভ্রতা আর কিছু বললো না। কারণ,মেঘকে অনেক টায়ার্ড দেখাচ্ছে। চুপ’চাপ সেখান থেকে ফিরে আসতে নিলে মেঘের গলা ভেসে উঠে,,’আমার ব্যাগের ডান দিকে কিছু জিনিস আছে। ওগুলো তোমার আপাদত কাজে লাগবে। ওগুলো নাও।’
মেঘের কথায় শুভ্রতা মেঘের দিকে তাকালো। চোখ বন্ধ করে মাথার উপর একটা হাত দিয়ে শুয়ে আছে। মেঘের কথা মতো শুভ্রতা ব্যাগ খুলে দেখে, একটা প্যাকেটে স্কেচ বুক,পেন্সিল,ওয়াটার কালার। শুভ্রতার ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠে। কতো গুলো দিন পর রঙ তুলি ফেলো। শুভ্রতা আগের কথাগুলো ভাবতে লাগলো। যেদিন থেকে সে ছবি আঁকা ছেড়ে দিয়েছিলো।
🥀
প্রতিদিনের মতোই বিকেলবেলা ছবি আঁকতে বসেছে শুভ্রতা। বিকেল বেলা সবাই খেলা,ঘুরা ঘুরি করলেও শুভ্রতার ফ্যামিলি সেটা পছন্দ করতো না। তাই সময় কাটাতে ছবি আঁকা বেস্ট। শুভ্রতা যখন ছবি আঁকছিল তখন তার মা এসে বলে,,’কি শুধু টাকা নষ্ট করে ছবি আঁকিস। এটাতে কি কোনো লাভ হয়? কোনো কিছু পাবি? শুধু শুধু টাকা নষ্ট!’
সেদিন শুভ্রতা নিজের মায়ের কথায় ভীষণ কষ্ট পায়। সবকিছুর মাঝে টাকা কেনো টেনে আনে মা? সেদিনের পর থেকে ঠিক করেছে আর ছবি আঁকবে না।
🥀
শুভ্রতা একটা তপ্তশ্বাস ছেড়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে মৃদ্যু হাসলো। লোকটা তার জীবনে প্রতিদিন নতুন করে জায়গা দখল করে। পুরনো সব খারাপ লাগা মুছিয়ে ভালো লাগা সৃষ্টি করে। শুভ্রতা ছটফট সবকিছু নিয়ে বেলকনিতে গেলো। বেলকনিতে বসার জন্য দু’টো বেতের চেয়ার,একটা ছোট টেবিল আছে। শুভ্রতা সবকিছু সেখানে রেখে রঙ তুলিতে প্রকৃতি ফুটিয়ে তুলতে লাগলো। ছবি শেষ হতে সেটা তুলে সামনে ধরে।
‘বাহ খুব সুন্দর তো।’ হঠ্যাৎ মেঘের কন্ঠে কেঁপে উঠে শুভ্রতা। নিজেকে সামলে পেছন ফিরে মেঘের দিকে তাকায়। কখন এসে পেছনে দাঁড়িয়েছে বুঝতেই পারে নি। মেঘ একটু ঝুঁকে শুভ্রতার কাছে আসতেই ভড়কে যায় শুভ্রতা। মেঘ তা দেখে মৃদ্যু হেসে শুভ্রতার গালে লেগে থাকা রংটা মুছিয়ে দেয়। শুভ্রতা চোখ বন্ধ করে কেঁপে উঠে। এতোদিন পার হয়ে গেছে তাও মেঘের ছোঁয়ায় তার শরীরে এক কম্পন সৃষ্টি হয়। মেঘ শুভ্রতার সারা মুখে ফু দিয়ে মুচকি হেসে তাকিয়ে রয়।

পাহাড়ে চূড়ায় দাঁড়িয়ে রীতিমতো হাপাচ্ছে শুভ্রতা। পাশেই মেঘ বেশ সাবলীল ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। একটা হাত মেঘের হাতের মুঠোয়। তারা আজকের সূর্যোদয় দেখবে। পাহাড়ে এসে যদি এটা মিস করে তবে পাহাড়ে আসার মানে কি। পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজ,সাথে মৃদ্যু হাওয়া,পরিবেশটা খুব বেশী মনকাড়া ঠেকছে শুভ্রতার কাছে। কিছুক্ষণ পরই কাঙ্ক্ষিত দৃশ্যটা আসলে শুভ্রতার চোখে মুখে মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে। উচ্ছাসিত হয়ে মেঘের হাতটা চেপে ধরে। এর মাঝেই মেঘ শুভ্রতার সামনে একটা ফুলের আংটি তুলে ধরে। ফুলটা কি ফুল শুভ্রতা চেনে না। আশেপাশেই এই রকম অনেক ফুল আছে।

‘হাত বাড়াও।’ মেঘ শুভ্রতার সামনে ফুলটা ধরে বলে।
শুভ্রতা হাত বাড়িয়ে দিতেই মেঘ শুভ্রতার আঙুলে পড়িয়ে দেয়। শুভ্রতা মিষ্টি হাসে। উদীয়মান সূর্যের আলোতে দৃশ্যটা খুব বেশী মানিয়েছে। ছবি তোলার আওয়াজে ধ্যান ভাঙ্গে দু’জনের। পেছন ফিরে দেখে মৃদুল ছবি তুলেছে।
‘পারফেক্ট কাপল।’ মৃদুলের কথায় দু’জনেই কিঞ্চিৎ হাসলো।
___________________
‘উফফ মেঘ কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন। বলবেন তো?’
‘আহ তুমি চুপ থাকতে পারো না? গেলেই তো দেখতে পাবে।’

শুভ্রতার চোখ বেধে হাটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মেঘ। কিছুক্ষণ পর একটা জায়গায় এসে থামলো দু’জনে। মেঘ আলতোভাবে শুভ্রতার চোখ থেকে কাপড়টা সরিয়ে দেয়। শুভ্রতা ফিটফিট চোখে সামনে তাকালো।
কাঠের তৈরি একটা সাজানো রুম,নিশ্চয়ই পাহাড়ের উপরেই হবে। পুরো রুমে বেলুন,ক্যান্ডেল দিয়ে ভর্তি,সাথে দু’জনের অসংখ্য ছবি। কিছু পাহাড়ে তোলা,কিছু বিয়ে,বউভাতে। আভিয়ানের বিয়েতে তোলাও বিভিন্ন ছবি। শুভ্রতার একা অনেকগুলো ছবি যার প্রায় সব গুলোই বিয়ের আগে। এর মাঝে প্রথম লুকিয়ে তোলা ছবিটাও আছে। মাঝখানে সুন্দর একটা চকলেট কেক রাখা। শুভ্রতা পাশ ফিরে মেঘের দিকে তাকায়।

মেঘ এগিয়ে এসে শুভ্রতার কানে ফিসফিস করে বলে,,’হ্যাপি ম্যারেজ এনিভারসারি মাই ডিয়ার ওয়াইফ!’

মেঘের কথায় চমকে উঠে শুভ্রতা। আজ তাদের এনিভারসারি? তার মনে নেই? বিয়ের একটা বছর হয়ে গেলো! যেখানে শুভ্রতার মনে রাখার কথা ছিলো সেখানে মেঘ মনে রেখে সারপ্রাইজ দিচ্ছে? শুভ্রতা ভীষণ খারাপ লাগলো। মুহুর্তেই মুখে অন্ধকার নেমে আসলো। মেঘ শুভ্রতা মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,,

‘তোমার পছন্দ হয় নি শুভ্র? বড় অনুষ্ঠান করা উচিৎ ছিলো? আসলে তোমার বড় অতোটা বড়লোক নয়, আমি যতটুকু সম্ভব করেছি। আমার মনে হয়েছিলো ইভেনটা যেহেতু আমাদের,আমরাই এনজয় করি। বাইরের মানুষকে ডেকে কি হবে। আই এম সরি শুভ্র!’

মেঘের কথায় শুভ্রতা মেঘকে জড়িয়ে ধরে বলে,,
‘আই এম সরি। বিশ্বাস করুন আমার মনে ছিলো না। আসলে আমি কিভাবে ভুলে গেছি বুঝতেই পারছি না। প্লিজ আমায় ভূল বুঝবেন না। আমার খুব খারাপ লাগছে। আর সাজানো অসম্ভব সুন্দর হয়েছে। আমার বরের যা আছে আমি তাতেই সন্তুষ্ট। আই এম সরি।’

মেঘ শুভ্রতাকে জড়িয়ে ধরে বলে,,’হুশ,চুপ করো শুভ্র। ভূলে যাওয়া মানুষের একটা বৈশিষ্ট্য,তুমি ভূলে যেতেই পারো। তোমার জায়গায় আমিও তো ভুলে যেতে পারতাম। তাই এটা নিয়ে ভাবার কিছু নেই। আমরা বরং সময়টা উপভোগ করি।’

মেঘের কথায় শুভ্রতা খানিকটা শান্ত হয়। মেঘের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকায়। মেঘ তার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। হয়তো লোকটার অতোটা বিলাসিতা নেই,কিন্ত শুভ্রতার প্রতি সম্মান,ভালোবাসার কোনো কমতি নেই। একটা সম্পর্ক তখনই সুন্দর হয়,যখন সেটাতে সম্মান,শ্রদ্ধা থাকে একে অপরের প্রতি।
‘আসো কেকটা কাটো।’ মেঘ শুভ্রতার হাত ধরে নিয়ে যায়। তারপর দু’জন মিলে কেক কেটে একে অপরকে খাইয়্ব দেয়। মেঘ শুভ্রতার গলায় ছোট্ট একটা লকেট পরিয়ে দেয়,ভেতরে তাদের দু’জনের নাম লেখা।
‘আমি তো আপনার জন্য কিছুই আনি নি।’ শুভ্রতার কথায় মেঘ মুচকি হেসে বলে,,’আমার জন্য তুমি তো আছো। তুমিই আমার বড় প্রাপ্তি।’ মেঘ শুভ্রতাকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেয়।
______________
বারান্দার এককোণায় চাদর গায়ে দিয়ে বসে আছে মেঘ। ডিসেম্বরের ঠান্ডা বেশ ঝেকেই ধরেছে। তার উপর বারান্দায় বসে আছে। বাইরে থেকে বাতাস বইছে। ধোয়া উঠা দু’কাপ কফি হাতে বারান্দায় এসে দাঁড়ায় শুভ্রতা।
তারপর মেঘের পাশে বসে পড়ে। একটা কাপ এগিয়ে দিয়ে বলে,,’নিন আপনার কফি।’ মেঘ শুভ্রতার হাত থেকে কফি নিয়ে চাদরের এক’পাশ খুলে দেয়। শুভ্রতা গুটিশুটি মেরে নিজেকেও চাদর দ্বারা আবৃত করে নেয়। মেঘের শরীরে উষ্মতায় বেশ ভালোই লাগছে। শুভ্রতা হাত বের করে মেঘের দিকে একটা প্যাকেট এগিয়ে দেয়।
‘কি এটা?’
‘খুলেই দেখুন।’
শুভ্রতার কথায় মেঘ প্যাকেটটা খুলে। একটা সাদা পাঞ্জাবী। হ্যান্ড ফ্রিন্টের কাজ করা।
‘এটা?’
‘আপনার এনিভারসারি গিফট। বাজার থেকে কিনে দেওয়ার চেয়েও,নিজের হাতে বানানো বেশী মজাদার।
‘ক্রিয়েটিভ ওয়াইফ।’ মেঘ শুভ্রতার নাক টেনে বলে।
‘জ্বি।’ কথাটা বলে দু’জনেই হেসে দেয়। মেঘ শুভ্রতার কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে বসে রয়। পাশেই ধোয়া ওঠা কফি।
কোথাও থেকে কিছু গানের লাইন ভেসে আসে-

‘তোমায় হৃদমাঝারে রাখবো,ছেড়ে দেবো না..’

_____________সমাপ্ত_________

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here