হৃদয়ের প্রতিশ্রুতি পর্ব ২৮

🌸#হৃদয়ের_প্রতিশ্রুতি🌸

#লেখিকাঃআদিলা
#পর্বঃ২৮
_________________________🌸
সময় সময়ের মত প্রবাহমান। কারো জন্য বসে থাকে না। নিজের গতি মত অতিবাহিত হয়৷ সেদিনের পর থেকে ইয়ামিনা আমিরের গভীর ভালোবাটা বুঝতে পেরেছে আমির তাকে কত ভালোবাসে। পরে ইশিতা ফেক ছবিগুলো নিয়ে অনেক জামেলা করেছে কিন্তু ইয়ামিনা সবার সামনে ইশিতাকে উচিত কথা শুনিয়ে দিয়েছে এমনকি থাপ্পড় পর্যন্ত মেরেছে সেদিনের ইয়ামিনার ব্যবহার দেখে আমির যথারিত চমকিয়েছে। ইয়ামিনারও এত রাগ আছে সেটা আমির সেদিন বুঝতে পেরেছিল।

সেদিন আমির খুশি হয়ে ইয়ামিনাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল…বাব্বাহ আমার শেরনির দেখি অনেক তেজ। মজা করে বলেছিল….গার্ডস রেখে লাভ কি আমার শেরন্নি তো যথেষ্ট বলে ইয়ামিনার নাক টেনে দেয়।
ইয়ামিনা লজ্জা পেয়ে আমিরকে থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়।।

ক’ দিন ধরে ইয়ামিনার শরীরটাও ভালো যাচ্ছে না। শরীর সারাদিন কেমন জানি মেচ মেচ করে। বমি মাথা ব্যাথা যেন ইয়ামিনার শরীর আরও দুর্বল হয়ে পড়ে৷ অবশ্য এব্যাপারে আমিরকে কিছু বলেনি ইয়ামিনা শুধু শুধু আমির টেনশন করবে। এমনি সারাদিন অফিস করে বাসায় এসে যদি এসব শুনে তাহলে অফিস যাওয়া ছেড়ে ইয়ামিনার সাথে সারাদিন লেপ্টে থাকবে তাই ইয়ামিনা আমিরকেও বলেনি।।


ভার্সিটি শেষ ইয়ামিনা মাএ ভার্সিটি থেকে বের হয়েছে আমির বলেছে বাহিরেই আছে কিন্তু ইয়ামিনা আমিরকে কোথাও দেখতে না পেয়ে এদিক ওদিক তাকায় হটাৎ শিহাবকে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে থাকতে দেখে ইয়ামিনা একটু ভয় পেয়ে যায়।

ইয়ামিনাকে পুরো পা থেকে মাথা পর্যন্ত এনালাইসিস করছে এই চোখ দিয়ে ইয়ামিনা তা ভালো করে বুঝতে পারচ্ছে। ছি তাকানোর কি দৃষ্টি। শিহাব সোজা হয়ে ইয়ামিনার দিকে আসচ্ছে ইয়ামিনা শিহাবকে কাছে আসতে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। আরুশি বলেছিল শিহাবের চালচলন ঠিক নেই এই ভেবে ইয়ামিমার কপাল থেকে ঘাম জড়চ্ছে হটাৎ চিরচেনা কণ্ঠে ইয়ামিনা পিছন ফিরে তাকায় দেখে আমির হেসে গাড়ি থেকে বের হচ্চে ইয়ামিনা পাশ ফিরে দেখে শিহাব নেই গাড়ি স্টার্ট দিয়ে আমরকে দেখে চলে গেছে।
__কি হয়েছে মিষ্টিপাখি এত ঘামছো কেন। হঠাৎ আমিরের কন্ঠে ইয়ামিনা ঘাবড়ে আমিরের দিকে তাকায়। ইয়ামিনার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম আমতা আমতা করে কিছু বলতে যাবে তার আগে আমির ইয়ামিনার কপালে হাত দিয়ে দেখে… কই জ্বর নেই তো। কি হয়েছে মিষ্টিপাখি বেশি খারাপ লাগচ্ছে।

__না না আমি ঠিক আছি বলে ইয়ামিনা গাড়িতে উঠে বসে।

সন্ধার দিকে আমির রুমে বসে লেপটপে কিছুকাজ করছিলো। ইয়ামিনা আমিরের সামনে এসে দাড়ায়। আমির লেপটপের দিকে চোখ রেখে বলে… কি হয়েছে মিষ্টিপাখি কিছু বলবে।

হুম অনেক কিছু বলার আছে আপনি তাকান এদিকে। তাকান বলছি।
আমির দৃষ্টি লেপটপে রেখে বলে… বলো আমি শুনচ্ছি।
না এদিকে তাকান। ধুররর!! বলে ইয়ামিনা আমিরের সামনে যেয়ে লেপটপটা দারাম করে বন্ধ করে দেয়। একটানে লেপটপটা নিয়ে পাশে রাখে।
আমিরের কোলে বসে আমিরের বুকে মাথা রাখে ইয়ামিনা।
আমির কিছুটা হেসে ইয়ামিনার চুলে ঠোট ছুয়ে বলে বলে… আদর চায় মিষ্টিপাখি।।
__ধুর আপনার আজেবাজে কথা। আমার ভালো লাগচ্ছে না আমি আপনার কোলে ঘুমাবো৷ আর আপনাকে সেটা কেন বলতে হবে আপনার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য সবসময় মরিয়া হয়ে থাকে।
__আমির হাল্কা হাসি দেয়…তাই
__হুম।
আমির দুহাতে ইয়ামিনার মুখ আজলে মুখের সামনে নিয়ে আসে।আমির চোখ বন্ধ করে ইয়ামিনার ঠোটে ঠোঁট ছোয়াতে নিলে হটাৎ ইয়ামিনা আমিরকে জোরে একটা ধাক্কা দিয়ে ওয়াশরুমে দিকে দৌড়ে যায়।
চকিতে আমির হতভাগ হয় নিজেকে ঠিক করে ইয়ামিনার পিছু যায়।
ওয়াশরুমের দরজা জোরে ধাক্কা দিয়ে বলে… মিষ্টিপাখি কি হয়েছে । দরজা অফ করেছো কেন দরজা খোলো। ঠিক আছো ডাক্তার ডাকবো।

বেশ কিছুক্ষন পর ইয়ামিনা দরজা খুলে বেড়িয়ে আসে। শাড়ির আচল দিয়ে মুখ মুছে লম্বা শ্বাস ছেড়ে বলে.. কিছু হয়নি ঠিক আছি আসলে দুর্বলতার কারনে এমন হচ্ছে আপনি টেনশন করেন না একটু ঘুমালে ঠিক হয়ে যাবো।

__সত্যি তো মিষ্টিপাখি আমার কাছে কিছু লুকোচ্ছো না তো। কালই তোমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো আমি তোমাকে নিয়ে কোনো রিক্স নিতে চায় না। ইয়ামিনা কিছু বলতে নিবে তার আগে আমির ইয়ামিনানে থামিয়ে দেয়…আমি বলেছিনা এর ওপর কোনো কথা হবে না কাল আমার সাথে যাবে ব্যস বলে পাজা কলে তুলে নেয়। বিছানা শুয়ে দিয়ে চাদর টেনে দেয়৷।

–আজ বরাবরের মত ইয়ামিনা ভার্সিটিতে দাড়িয়ে আছে ক্লাস সবে মাএ শেষ হয়েছে ইয়ামিনার। আমির ইয়ামিনাকে ভার্সিটিতে আসতে দিতে চায় নি কিন্তু ইয়ামিনা জিদ ধরে ছিল ক্লাস করবে বাসায় থাকতে দম বন্ধ বন্ধ লাগে তাই ইয়ামিনার জেদের কাছে আমিরকে হারতে হলো।

এদিকে আমির অনেকক্ষন হলো গাড়িতে বসে আছে। সামনে লম্বা জেম তার মধ্যে ভেপ্সা গরম ওপর দিয়ে ইয়ামিনার শরীরটাও ভালো না আমির এ কদিন খেয়াল করেছে ইয়ামিনা বুঝতে না দিলে আমির ঠিকই বুঝে। কিন্ত ইয়ামিনাকে কিছু বললে ইয়ামিনা খিচ খিচ শুরু করে দেয়। একদিনে ইয়ামিনার মেজাঝ টা কেমন জানি খিটখিটে হয়ে গেছে অল্পতে রাগ করে বসে… সব রাগ নিজের শরীরের ওপর ঝারে নয়তো খাবার খাবে না হয়তো রাতে ঘুমাবে না তাই আমির যথাসম্ভব ইয়ামিনাকে নিজের কাছে আগলে রাখে।

ইয়ামিনা দাড়িয়ে আছে আমির ফোন দিচ্ছে বার বার কিন্তু নেটওয়ার্কের কারনে ফোনটাও ঠিকভাবে ঢুকচ্ছে না।।হটাৎ আননোং নাম্বার থেকে কল আসে ইয়ামিনা প্রথমে ভেবেছে কার না কার নাম্বার তাই ধরেনি কিন্তু দ্বিতীয়বার আবার বেজে ওঠলে ইয়ামিনা আর না পেরে ফোনটা রিসিভ করে।।

ওপাশ থেকে কথা… শুনে ইয়ামিনার হাত থেকে ফোন পড়ে যাওয়ার অবস্থা। কোনো রকম নিজেকে ঠিক রেখে ইয়ামিনা কাপা কাপা গলায় বলে… কোন হহসপিটালে…
ফোনের ওপাশ থেকে অপরিচিত কন্ঠে কেউ বলে…আরুশি এক্সিডেন্ট করেছে অবস্থা খুবই গুরতর কাছের কেউ ফরমালেটিস পুরোন না করলে চিকিৎসা শুরু করা যাবে না।

এদিকে ইয়ামিনার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে এমনিতে শরীর দুর্বল। আমিরকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু কেন জানি ফোনটা বার বার কেটে যাচ্ছে।
লাস্ট পর্যন্ত না পেরে ইয়ামিনা আমিরকে একটা টেক্সট করে।
আর সেএঞ্জি করে নিজে ওই হসপিটালের উদ্দেশ্য উঠে বসে।।।
.
.
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here