তুই হৃদহরণী পর্ব ৬

#তুই_হৃদহরণী
#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ৬

অফিস টাইম চলছে, তুরফা ফাইল শেষ করে লম্বা একটা ক্লান্তির নিশ্বাস ফেলল। সেগুলি হাতে নিয়ে চলল ফিরাতের রুমে। কেবিনে যাওয়ার আগেই ফিরাত কে পেয়ে গেল তুরফা। সে একজন কে কাজ দেখিয়ে দিচ্ছে। তুরফা বলল,
“ভাইয়া ফাইল গুলি।”
ফিরাত তাকাল তুরফার দিকে। বলল,
“তুমি এগুলি আহরারের রুমে রেখে এসো। ওর সাইন পেয়ে গেলে আমি ও গুলি ব্যাংকে পাঠিয়ে দিব।”
“কিন্তু…”
“তুরফা বোন আমার আমি তো ব্যস্ত তুমি দিয়ে এসো প্লিজ।”
“হুম।”
তুরফা উপায় না পেয়ে আহরারের রুমের দিকে এগিয়ে গেল। গা তার ঘিনঘিন করছে সহ্যই করতে পারে না লোক টা কে। দরজার কাছে গিয়ে,
“আসব?”
আহরার তখন ল্যাপটপে কাজ করছিল। না তাকিয়েই জবাব দিল “ইয়েস। কামিং।” সুরেলা কণ্ঠস্বর টা তার খুবই চেনা ঠেকল। ল্যাপটপ থেকে চোখ নিয়ে সামনে তাকাল। তারপর দরজার দিকে। তার হৃদহরণী এসেছে। ল্যাপটপ টা হাত দিয়ে সরিয়ে দিল। চেয়ার থেকে উঠে বলল,
“মিস তুরফা আহরারের কেবিনে!”
“ফাইল গুলি দেখে নিবেন।”
“ওখানে রাখেন।”
তুরফা চুপ করে ফাইল রেখে দিয়ে চলল।
“আরে আমি কি আপনাকে যেতে বলেছি?”
“বলুন।”
“বসুন ওখানে।”
তুরফা কথা বাড়াল না। মুখ বন্ধ করে চেয়ারে বসল। আহরারও গিয়ে নিজের চেয়ারে বসল। পলক হীন ভাবে তার হৃদহরণী কে দেখল কয়েক মিনিট। তুরফা রাগে উঠে দাঁড়াল।
“আরে আরে। চুপ করে বসো বলছি।”
তুরফা দাঁত কিড়িমিড়ি করে বসল। আহরার ফাইল গুলি হাতে নিয়ে দেখার ফাঁকেফাঁকে তুরফা দেখল। একটা ফাইল তুরফার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
“জাস্ট সী। আপনার এই একটা ভুল কোম্পানির অনেক ক্ষতি করে দিতে পারে। কাজ করার সময় আমার কথা না ভেবে মন দিয়ে কাজ করবেন।”

এই কথা শুনে তুরফার রাগে কটমট করছে। “দুনিয়াতে আর কোনো পুরুষ মানুষ নেই যে এমন অভদ্র লোকের কথা আমি ভাবব।” কথা টা মনে মনে আওয়াতে লাগল সে। কিন্তু মুখে বলল অন্য কথা।
“আমি কম্পিউটার বা রোবট নই যে নির্ভুল কাজ করব। মিস্টেক হতেই পারে। যেখানে কম্পিউটার বা রোবটও মাঝে মাঝে ভুল করে বসে ”
কথা শেষ করে সে ফাইল নিয়ে উঠে দাঁড়াল। পা বাড়ানোর আগেই আহরার বলল,
“কোথায় যাচ্ছেন আপনি?”
“ভুল সংশোধন করতে।”
“এখানে বসে করুন।”
“আমার ডেস্ক আছে।”
“আমি এখানে করতে বলেছি।”
“….
তুরফা চুপ করে চলে যেতে চাইলে আহরার উঠে তার কাছে গেল।
“আমি এখানে বসে কাজ করতে বলেছি তোমায় তার মানে এখানেই করবে তুমি।”
“আমার ডেস্ক এটা নয়।”
“সো হোয়াট? আমি বলেছি এখানে কাজ করবে মানে এখানেই করবে। আন্ডারস্ট্যান্ড? যাও।”

আহরারের লাল বড়বড় চোখ দেখে তুরফাও একটু ধমে গেল। চুপ করে চেয়ারে গিয়ে বসল। আহরারের কাছ থেকে কলম টা কেড়ে নিয়ে ফাইল দেখা শুরু করল তুরফা। আহরার ল্যাপটপ নিয়ে বসলেও আড়চোখে তুরফার দিকেই তাকিয়ে আছে। কি চোখ যেন এক সাগর অতল। কি মায়াবী সেই চাওনি। চোখ ধাঁধালো সৌন্দর্য। যেন এক রাশ মোহ। আহরার চুপ করে বসে দেখছে।
“এই নিন শেষ।”
“…
“শুনছেন?”
“হ্যাঁ?”
“কমপ্লিট।”
“ও।”
“বসো দেখছি।”
আহরার ফাইল দেখে বলল,
“হুম সব ঠিক আছে। বসো কফির অর্ডার দেই।”
“লাগবে না।”
“লাগবে।”
তুরফা বরাবরের মতো চুপ করে চলে গেল। আহরার হতবাক হয়ে চেয়ে রইল।
“আমার কথার অবাধ্য হওয়া? দেখে নিব হৃদহরণী।”

তুরফা ফিরাতের কাছ থেকে কিছু ফাইল নিয়ে নিজের ডেস্কের দিকে যাচ্ছিল হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খায়। ফাইল নিজে পরে। সামনের ব্যক্তি টি ব্যস্ত হয়ে পরে ফাইল তুলতে। তুরফা না তাকিয়ে ফাইল তুলছে।
“আমি দুঃখিত। আসলে তেমন খেয়াল করি নি। দুঃখিত।”
সামনে তাকিয়ে তুরফা দেখল একজন পুরুষ। দেখতে মন্দ নয় খুব সুন্দর। মুখে একটা মিষ্টি হাসি। তুরফা এক পলক তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিল। ফাইল তুলতে ব্যস্ত হলো। লোক টা কয়েক টা ফাইল তুরফার দিকে এগিয়ে দিয়ে হেসে হেসে বলল,
“আমি মিহির। আপনার নাম জানি না তবে আপনি আর আমি একি দিনে এখানে জয়েন্ট হয়েছি। আমি আপনাকে দেখলেও হয়তো আপনি আমায় দেখেন নি।”
“হতে পারে।”
বলেই তুরফা হনহন করে চলে গেল মিহির কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই। একটুও দাঁড়াল না বা পিছন ফিরে তাকাল না। এহেন ব্যবহারে মিহির খুব অবাক হলো। মুগ্ধ দৃষ্টি তে তাকিয়ে ছিল সেই যুবতীর দিকে।

চলবে….
(ইডিট করার সময় পাই নি। ভুল গুলি নিজ দায়িত্বে পড়ে নিয়েন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here