#ক্ষণিকের_বসন্ত
#পাট:২
#লেখিকা:Angel Frozen (Ñîşhì)
মীর জাফর : জাবিন তুই ভুলে যাবি না তোর ছেলে খুন করছে??
জাবিন চৌধুরী :আমি বিশ্বাস করি না আমার ছেলে এমন কাজ করতে পারে।
মীর জাফর :তাই তাহলে সারা পৃথিবী যা দেখছে তা বুঝি মিথ্যা ছিলো।
জাবিন চৌধুরী : সার পৃথিবী যা বলুক তাতে আমার কিছু না।
আমি আমার ছেলেকে চিনি,,
বিশ্বাস করি ওহ কোনোদিন এমন কাজ করতে পারে না।
মীর জাফর :তাই যে ছেলে নিজের অফিসের পিএ কে বাড়িতে ডেকে খুন করতে পারে,,,
বাড়িতে ড্রাগস রাখে,,
সব প্রমাণ সহ পুলিশ হাতে নাতে ধরছে তার পর ও এসব কথা বলবি তুই???
জাবিন চৌধুরী :জানি না,,জানি না,,,
তা আপনি কি আমার ছেলেকে ভালবাসেন না,,
তাকে বিশ্বাস করেন না।??
মীর জাফর : তুই ভুলে যাবি না,,,
ওহ আমার নয়নের মণি,,
তোর থেকে বেশি ভাল বাসি,,,
কিন্তু সব প্রমাণ এগুলা তো মিথ্যে নয়।
কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যা জানি না।
জাবিন চৌধুরী :থাক ভাই আমি আমার ছেলের সম্পর্ক্যে আর কোনো কথা শুনতে চায় না।
বলে রুমের বাহিরে এসে দেখি দরজার সামনে এ ত্বায়িহা দাড়িয়ে আছে ওর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
তারপর ওহ নিচে বাড়ির বাহিরে চলে যায়, আমিও ওর পিছনে বাহিরে গিয়ে ওর পাশে দাড়ায়।
‘
‘
‘
‘
ত্বায়িহা :আপনি আপনার খুনি ছেলের সাথে আমার বিয়ে দিয়ে দিলেন এভাবে???
নিজের মেয়ের সাথে এমন করতে পারতেন???
জাবিন চৌধুরী :দেখো তুমি যেমন ভাবছ তেমন কোনো কিছুই না।
আমার ছেলে খুন করে নি,,
ওহ খুনি না।
তোমার জীবন আমি নষ্ট করি নি।
ত্বায়িহা : তাই সারা পৃথিবী জানে সে খুনি,,,
সে ফাঁসির আসামী,,
আর তাকে বিয়ে করে আমি আমার পৃথিবী অন্ধকার করে ফেলছি।
জাবিন চৌধুরী :দেখো মা আমার ছেলে খুব ভাল,,
আর তুমি কিন্তু তোমার পরিবারের জন্য বিয়েটা করছো,,আমি ও আমার পরিবারের জন্য তেমাকে এ বাড়ির বউ করে আনছি।
ত্বায়িহা :আমিও আমার পরিবারের জন্য যে এভাবে নিজের জীবন নষ্ট করে ফেলবো ভাবতে পাড়ি নাই।
থাাক আর কোনো কথা বলতে চায় না। আর এ বিষয়ে কথা বলবো না,,
বলে যে যার মতো চলে যায়।
ছিঃ ছিঃ
শেষ পর্যন্ত কি না আমি একজন খুনির বউ,, আমি তাকে ঘৃণা করি।।।
যে একজন অসহায় মেয়েকে খুন করতে পারে সে আর যায় হোক ভাল মনের মানুষ হতে পারে না,,,
সে মারা গেলেও আমার কিছু না,,,
খুনির শাস্তি হওয়ার দরকার আছে তাতে আফসোস নেয়।
‘
‘
পরেরদিন সকালে খাওয়া দাওয়া করে,,
নিজের রুম গুলা ঘুরছিলাম হঠাৎ একটা রুমের দিকে নজর যায়
সে বাড়ির নিচ তলায়,,
একটা ঘরে দেখে একটা বৃদ্ধা বিছানাই শুয়ে আছে।
ত্বায়িহা : তার কেয়ার টেকার কে জিজ্ঞাস করি ওনার কি হয়ছে??
সে বলে উনি তো জুরাইন বাবার যেদিন অঘটন ঘটে সেদিন থেকে প্যারালাইজড হয়ে এভাবে বিছানায় পড়ে আছেন।।
ত্বায়িহা :জুরাইন কে???
উনি একটু অবাক হয়ে বলেন,,আপনি এ বাড়ির বড় বউ আর জুরাইন কে তাকে চেনেন না??
ত্বায়িহা :আর কিছু না বলে সে রুম থেকে চলে আসে,,,
‘
‘
‘
‘
এরপর আর ত্বায়িহা বেশ অনেকদিন
কারো সাথে তেমন কথা বলে নাই,,
নিজেকে নিজের মাঝে গুটিয়ে নেয়।
এভাবে অন্ধকারে তার দিন গুলা কাটছিল।।
হঠাৎ একদিন রাতে সেই রুমের একটা সো পিস দেখতে গিয়ে তার নিচে একটা ভাজ করা কাগজ পায়।
সে কাগজ টা খুলে দেখে তাতে লেখা আছে
“”জীবন মানে হাজার ঝড়,,
জীবন মানে হাজর কান্না,,,
এখন তুমি ভেবে দেখো??
তুমি নিজের জীবন কে কি ভাবে সাজাতে চাও!!
সুন্দর ফুলের বাগান করবা না কি দুখের অনলে জ্বলবা,,
জীবন টা তোমার এখানে হাজার দুঃখ কষ্ট থাকবে।
তবুও সব কিছু হাসি মুখে মেনে নতুন করে শুরু করার নাম টাই জীবন,,এ জীবনে সুখ গুলো
পাবে তুমি #ক্ষণিকের_বসন্তের মতো।
সামনে কি করবা তুমি ঠিক জানো।”””
এই কথা গুলা পড়ার পর ত্বায়িহার মুখে একটা সুন্দর মিষ্টি হাসি আসে।
তারপর ঘুমিয়ে পড়ে।
‘
‘
‘
সকালে ফজরের নামাজ পড়ে সে বাড়ির বাহিরে হাটতে শুরু করে,,,
সে আনমনে হাটতে হাটতে বাড়ি থেকে অনেক দূরে এসে যায়,,
বুঝতে পাড়ে সে অনেক দূর চলে আসছে।
এসব দেখতে গিয়ে সে যে কখন মাঝ রাস্তার মাঝে এসে পড়ে নিজেও জানে না।
হঠাৎ পেছনে তাকিয়ে দেখে একটা ট্রাক আসছে।
ত্বায়িহা বুঝতে পারে সে আর বাঁচবে না তাই চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে নিজের মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে।
হঠাৎ করে মনে হয় কেউ তাকে হাত ধরে মাঝ থেকে টেনে রাস্তার পাশে পড়ে যায়।
রাস্তার পাশে পড়ার জন্য দুজনে খুব ব্যাথা পায়।
ত্বায়িহ :ওখানে বসে সামনে তাকিয়ে দেখে একজন খুব সুঠাম দেহের অধিকারি সুপুরুষ দেখতে সেই সুন্দর মানুষ বসে আছে যে কোনো মেয়ে এক নজর দেখলেই ক্রাশ খাবে।মনে মনে বলে।
ত্বায়িহা :এবার দেখে সেই ছেলেটির হাত কেটে রক্ত পড়ছে,, তারাতারি নিজের ওড়না ছিঁড়ে ওর হাত বেধে দেয়।
হাত বাধার শেষে ছেলেটি ওখান থেকে সোজা চলে যাচ্ছে।তা দেখে।
ত্বায়িহা :ছেলেটির পিছনে যেতে থাকে আর বলে ঐ যে হিরো,,
এভাবে বাঁচিয়ে ধন্যবাদ না নিয়ে চলে যাচ্ছেন কেনো,,
আমি কেনো আপনার কাছে ধন্যবাদ না বলার জন্য ঋণগ্রস্থ থাকবো শুনি??
ছেলেটি:….. কোনো কথা বলে না,,কোনো রিয়াকশন নেই,,মনে হচ্ছে না যে কেউ তার সাথে এতো কথা বলছে।
ত্বায়িহা :আরে এতো কথা বলি উওর দেন না,, বয়ড়া না কি,, বলতে বলতে আশে পাশে তাকিয়ে দেখে সে একটা খামার বাড়িতে চলে আসছে।
ছেলেটি :কোনো কথা না বলে সেখানে থাকা একটা উঁচু মাচার উপর উঠে গিয়ে শুয়ে থাকে।
ত্বায়িহা :এতো সুন্দর ছেলে কিনা এই খামার বাড়ির রাখাল,,,
আহারে ভাবা যায়,,
আল্লাহ এতো সুন্দর ছেলেকে বোবা বানিয়ে পৃথিবীতো পাঠিয়েছে।
যাক তাতে কি ছেলেটা তো খারাপ না ভালই মনে হয়।আমার মনের হাজার কথা এর কাছে বললেও কিছু বুঝবেনা,,
কিন্তু একে তো বলতে পারবো।
থাক আজ অনেক দেড়ি হয়ে গেছে বাড়িতে যাই পড়ে কাল আবার আসা যাবে।
যাবার সময় দেখে একটা বড় প্রাচীলের দেয়াল,,
তারপাশে কিছু কয়লা পড়ে আছে।
ত্বায়িহা :একটা কয়লা তুলে দেয়ালে লেখে
“”সেই জীবন টা বৃথা যে জীবনে ভাল বন্ধু নেই
সেই জীবটা সুখের যে জীবনে উপকারীকে মন থেকে ধন্যবাদ না দেওয়া যায়”””
তারপর সেখান থেকে চলে আসে,,
বাড়িতে এসে কেউ ওরে জিজ্ঞস করে না,,
এতো সময় কোথায় ছিলো,,
হাতে কি ভাবে ব্যাথা পায়ছে।।।
তাতে কি ওর তো ছেলেটিকে ভাল বন্ধু তো পাইছে এতেই হবে।।
সে আবার পরেরদিন সকালে সেই বন্ধু ঠিকানায় চলে যায়…
‘
‘
‘
চলবে…..