#এক_জীবনে_অনেক_জীবন(২৬)
**********************************
সীমা’র ফোন আসার পরে ব্যাপারটা কেউ ঠিক মতো বুঝতে পারছিল না । মিনা আবারও ফোন করে সীমা’র কাছ থেকে পুরো বিষয়টা জানলো । এরপর তানভীরকে ফোন করে বিষয়টা পুরোপুরি বুঝতে পেরেছে । মিনা সুফিয়াকে সবকিছু বলতেই তিনি অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করে স্বামীর কাছে যেয়ে বলেছিলেন ছেলেকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করতে । আওলাদ সাহেব স্ত্রীর কোনো কথা গায়েই মাখেননি । সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রফিক যখন নিজের বুদ্ধিতে এতো কিছু করতে পেরেছে তখন নিজেকে ছাড়ানোর ব্যবস্থাও সে নিজেই করে নেবে । তিনি কিচ্ছু করতে পারবেন না, কারো কাছে যেতেও পারবেন না এমন ছেলের জন্য । আওলাদ হোসেনের এমন ভাবলেশহীন উত্তরে সুফিয়া রেগে গিয়ে স্বামীকে কঠিন কঠিন কিছু কথা শুনিয়ে দিয়েছেন । স্বামীর দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণেই যে আজ ছেলেটা এমন কান্ড করেছে তা-ও শোনাতে ছাড়েননি । ছেলেকে যদি সময়মতো টাকাপয়সা দিয়ে একটা ব্যবসা ধরিয়ে দেয়া যেতো তাহলে সে অন্য দিকে মন দিতে পারতো না । আওলাদ হোসেন এসব কথার কোনো উত্তর দেননি । উত্তর দিয়ে আসলে কোনো লাভ হতো না । সুফিয়া যেটা ঠিক মনে করেন, তিনি সেটাই আঁকড়ে ধরে বসে থাকেন । তাই তাকে কিছু বুঝাতে যাওয়া বোকামির নামান্তর ।
স্বামীর কাছ থেকে সাহায্যের আশা ছেড়ে দিয়ে সুফিয়া তাঁর ছোট ভাই হানিফকে ফোন দিয়ে সব ঘটনা বলে যত দ্রুত রফিককে ছাড়ানো যায় সেই ব্যবস্থা করতে বললেন । হানিফ রাজনীতির সাথে জড়িত । থানা পর্যায়ের ছোটোখাটো একটা পদ আছে তাঁর দখলে । থানা-পুলিশের সাথেও যথেষ্ট সংখ্যতা আছে তাঁর । তিনি বোনকে আশ্বস্ত করেছিলেন এই বলে যে, ভাগনেকে ছাড়িয়ে আনা তাঁর বাম হাতের খেল । বোনের কাছে বড় গলায় কথা বললেও হানিফ কোনো ব্যবস্থাই করতে পারলেন না । থানায় যেয়ে একবার মাত্র তিনি রফিকের সাথে দেখা করতে পেরেছিলেন । ভাগনের চেহারা দেখে প্রথমে তিনি চিনতেই পারেননি, এতোটাই পাল্টে গিয়েছে চেহারা ! কনস্টেবলকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন –
আরে মিঞা কার সামনে আনলেন আমাকে ? আমি তো রফিকুল ইসলামের সাথে দেখা করবো ।
কনস্টেবল কিছু বলার আগেই রফিক বলে উঠেছিল –
মামা আমি রফিক ।