#নিরু❤
পর্ব-১৫
writer- #shanta_islam
বাসায় ডুকে দেখি সে কি হোইহুল্লোর কারবার। একেকজন একেক জায়গায় ছরিয়ে ছিটিয়ে সোফায়,ফ্লোরে,টেবিলে লেতিয়ে ফেতিয়ে সুয়ে আছে। পা বাড়িয়ে যে রুমের দিকে যাবো তার কোনো উপায় নেই। সামনে তাসকিন প্যান্ট খুলে নেন্টা হয়ে সুয়ে আছে। শরীরে এক টুকরো কাপড় নেই। আপনারা আবার অন্য কিছু মনে করিয়েন না হেতে মাত্র পাচ বছরের বাচ্চা,, আমার ফুফুর ছোট ছেলে মানে আমার কাজিন। ছোট সয়তানটাকে কতোবার বললাম এখান থেকে সর রুমে যাবো। সে সরবার পাত্র নয়। স্থির বস্তুর মতো সে এক জায়গায় সোজা টানটান হয়ে সুয়ে আছে। আমার সব কাজিনগুলো একটু তেড়া টাইপের আশার মতো। একটা কথা বললেও শুনবে না।
– কিরে সরলি নাকি মারবো এক লাথি!
– সলমু না তোল কি,,,
এতোটুকু পুচকু তেজ কতো। এমনি মন মেজাজ ভালো না তার উপর এই পুচকু সয়তানটা এসব কারবার করলে কেমন্ডা লাগে। দিলাম এক লাথি। লাথি খেয়ে ও অন্য সাইডে গড়িয়ে পরলো ঠিকি কিন্তু সে ওখানেও স্থির বস্তুর মতো ওভাবেই সুয়ে আছে। অলস দেখেছি বাবা রে বাবা কিন্তু এমন টাইপের অলস দেখিনি। আল্লাহই জানে এগুলো কবে বাসা থেকে বিদায় হবে।
তাসকিনকে লাথি মেরেছি সেটা আবার বাবা দেখে ফেলেছে,,,
বাবা- নিরু তাসকিনকে লাথি মারলি কেনো? বাবা সোফায় সুয়ে চোখ বন্ধ করে কথাটা বললো।
– বেশ করেছি লাথি মেরেছি,,এখান থেকে উঠে না কেনো?
তাসকিন- তুতা বাচ্চা!
নিরু- দেখেছো বাবা দেখেছো ও আমাকে গালি দিলো,,,
বাবা- কই দিলো,,আমি কিছু দেখি নি আমার চোখ বন্ধ,
নিরু- তা দেখবে কেনো! আমি যে লাথি দিয়েছি সেটা ঠিকি দেখবে,,
বাবা- সেটা আমার আন্তনিহিত শক্তি। চোখ বন্ধ করেও আমি সব কিছু দেখতে পারি।
চাপা মারার একটা লিমিট থাকা উচিৎ। নিরু আর কিছু না বলে সেখান থেকে রাগে হনহন করতে করতে রুমে চলে আসে।
নাওযুবিল্লাহ রুমে ডুকে দেখি সেই একি অবস্থা। আশাসহ আমার আরো কিছু মেয়ে কাজিনরা রুম দখল করে রেখেছে। নিরু রুমে ডুকেই আশাকে তেরে মারতে যাবে তার আগেই আশা বলে উঠলো,,
– খবরদার আমাকে মারতে আসবি না। মারলে কিন্তু দাদির কানে পিনিক লাগাবো।
আমার ভাই বোন হলো এক একটা ডাকাত। দোষ করবে ঠিকি কিন্তু তা গায়ে মাখবে না। এক কথায় যাকে বলে চোরের মায়ের বড় গলা।
নিরু- আমি গাড়িতে না উঠার আগেই গাড়ি ছেরে দিলো কেনো?
আশা- তা আমি কীভাবে জানবো!
নিরু- দেখ নাটক করবি না।
আশা- এই আশা কখনো নাটক করে না। আমাদের জগ্রা দেখে অন্যসব কাজিনরা আমাদের জগ্রা থামানোর চেস্টা করছে।
– নিরু আপু থামো তো,,যাও ফ্রেস হয়ে নেও।
-আশা নিরু আপু জগ্রা থামাও।
নিরু- তোকে শুধু একবার বাটে পাই আশা তারপর দেখ কি করি। ঘর ভর্তি মানুষজন দেখে কিছু বলছি না।
একথা বলে কোনো মতে আলমারি থেকে জামা বের করে চেঞ্জ করতে ওয়াসরুমে ডুকে গেলাম। পিছন থেকে আশা কটকট করে বলতে লাগলো,,
– আরে যা যা আমার মতো আশাকে বাটে আনতে হলে তোর মতো আবালের রানীকে আরো দশবার জন্মাতে হবে,,,
অবশ্য শেষের লাইনটুকু ভালো করে শুনতে পাইনি তার আগেই দরজা লাগিয়ে দেই।
সাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে গোসল করছি। হঠাৎ কোমরে হাত পরতেই আবির ভাইয়ের কথা মনে পরে গেলো। এই কোমরে যে তার স্পর্শ লেগে আছে। শুধু কোমরে না এই ঠোঁটেও যে তার স্পর্শ লেগে আছে। আচ্ছা মানুষটা শুধু আমার সাথেই এমন কেনো করে। যদি আমাকে ভালোবেসেও থাকে তাহলে প্রকাশ কেনো করে না। আমার জন্য উনার চোখে স্পষ্ট ভালোবাসা দেখতে পাই। উনি যদি আমাকে ভালোই না বাসে তাহলে কেনো বার বার আমার এতো কাছে আসে। কেনো বার বার আমার মনের দরজায় কড়া নারায়। কেনো বার বার আমাকে স্পর্শ করে। একটা ছেলে একটা মেয়ের এতোটা কাছে আসলে স্বাভাবিক সেই মেয়ের অসস্থিকর ফিল করার কথা কিন্তু কেনো জানি না উনি আমার এতোটা কাছে আসলে নিজেকে সেফ মনে হয়। আমাকে স্পর্শ করলেও অসস্থিকর মনে হয় না। এটাই কি ভালোবাসা। যদি ভালোবাসা হয়েও থাকে তাহলে কেনোই বা মূহুর্তের মধ্যে দূরে ঠেলে দেয়। কেনো বলে না নিরু আমি তোকে ভালোবাসি। এ কেমন দোটানায় পরলাম আমি। না আর কিছুই ভাবতে পারছি না। সাওয়ার নিয়ে ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখি ঘরে কেও নেই। পুরো রুম ফাকা। যাক বাবা বাচা গেছে। এই ফাকে একটু ঘুমিয়ে নেই। বাসার যা অবস্থা আজ রাতো ভালো করে ঘুমাতে পারবো কিনা ঠিক নেই। রুমের দরজা লক করে ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুম ভাঙ্গলো আছরের আজান শুনে। ভালোই ঘুম হয়েছে। নামাজ পড়ে ডাইনিং রুমে যেয়ে দেখি বাবা আর চাচাকে নিয়ে বড় সড় হট্টগোল বেঝেছে। সম্ভবত লুডু খেলায় চোরামানি করেছে। সেটা আবার আশা আর আমার কাজিন তিশা ধরে ফেলেছে। বাবা আর চাচা এক টিমে আছে। আর দুজন এক টিমে আছে মানে সয়তান স্বয়ং সেখানে ভর করেছে। চাচা ফাফর ছারছে।
-আরে তোরা কি জানিস এক সময় আমি লুডুর রাজা ছিলাম। লুডু কিং আইন্সটাইনও আমার কাছে হার মেনেছিলো,,
চাচার কথা শুনে বাবা বলে উঠে,,
-আরে ভাই কি বলো,,তুমি তো শুধু আইন্সটাইনের সাথে খেলেছো আমি বিলগেটস,,ওসাইন বোল্ড ওদের সাথে খেলেছিলাম। আহ হা সেই কবের কথা বেচারারা আমার সামনে আব্বা আব্বা বলে কেদে দিয়েছিলো।
চাচা- কি বলিস সত্য নাকি?
বাবা- আরে আমি কখনো মিথ্যা বলি নাকি।
সব কাজিনরা উনাদের দুই জ্ঞানিদের কথা শুনে হো হো করে হাসছে।
আমার কেনো জানি এখন ছাদে যেতে বঢো ইচ্ছে করছে। সমাবেশ ডেংগিয়ে সবার চোখ ফাকি দিয়ে ছাদে গেলাম। আহ কি সুন্দর বাতাস। খুব সুন্দর লাগছে বিকেলের এই অপরুপ দৃশ্য। কেনো জানি না এই সময় আবির ভাইয়ের কথা খুব মনে পরছে। হঠাৎ কারো চির চেনা কন্ঠ কানে ভেসে এলো,,,
– এতোক্ষণ লাগে ছাদে আসতে!
কন্ঠটা আর কারো না আবির ভাইয়ের।
-আপনি এখানে?
– কেনো আর কারো জন্য অপেক্ষা করছিলি নাকি।
পাচ মিনিট আসতে লেট করেছিস।
আবির ভাই এমনভাবে কথা বলছে জেনো উনি আগে থেকেই জানতো আমি এখানে আসবো।
আবির ভাই আমার কাছে আসতেই আমি চলে যেতে নেই। উনি পিছন থেকে আমার হাত ধরে ফেলে,,,
আবির- আমি এখনো যেতে বলিনি,,,
নিরু- আপনি আমাকে আদেশ দেওয়ার কে?
আবির ভাই টান মেরে আমাকে উনার বুকের সাথে আগলে ধরে।
আবির- সেটা নাহয় সময় বলবে,,
নিরু- আপনি কেনো আমার সাথে এমন করেন। আমি কি ক্ষতি করেছি আপনার। কেনো আমার এতো কাছে আসেন। কেনো বার বার আমাকে স্পর্শ করেন। কেনো বার বার আমাকে জরিয়ে ধরেন। কে আমি আপনার,,কি হই আমি আপনার,,আমি আপনার কাছে কি? অহ মনে হয় আমি আপনার কাছে একটা খেলনা পুতুল তাই না। যখন ইচ্ছে ব্যবহার করবেন। যখন ইচ্ছে ফেলে দিবেন,,যখন ইচ্ছে কাছে টানবেন,,যখন ইচ্ছে দূরে সরিয়ে দিবেন। কথাগুলো বলতে বলতে নিরুর চোখ দিয়ে অঝরো অশ্রু বয়ে পরে।
আবির- তুই জানতে চাস তুই আমার কাছে কি? তুই আমার কে? তুই আমার কি হস? ঠিকাছে তাহলে আজই আমি তোর সকল প্রশ্নের উত্তর দিবো। তুই আমার কাছে কী? সেটা আজ তোকে বুঝিয়ে দিবো!
কথাটা বলেই আবির ভাই হনহন করে ছাদ থেকে চলে গেলো। মানুষটাকে একটুও বুঝতে পারি না। কখন যে কি করে বসে বলা যায় না। তাই আমিও উনার পিছু পিছু ছোটা শুরু করলাম। বাসায় এসে দেখি আবির ভাই গিটার ধরেছে। সবাই গোল করে আবির ভাইয়ের চারদিকে বসে আছে। রীতিমতো গিটারে সুর উঠেছে,,,আবির ভাই জাজালো কন্ঠে গান শুরু করে।
-তুমি আমার কাছে ফুটফুটে ওই রাতের শুকতারা,,
তাই রাত জাগিয়া মনের সুকে দেই যে পাহারা!
-তুমি আমার কাছে শিশির ভেজা সোনালী সকাল,,
তোমায় এক নজর দেখিয়া আমি হয়ে যাই মাতাল!
– তুমি আমার কাছে যুদ্ধে জয়ী সাত রাজার ধন,,,
শত বাধা ডিঙ্গায় পাইছি তোমার মনের মতো মন।
– আমার মনের জোছনা,,আমি কাওকে দিবো না!
তোমায় গাইথা রাখছি মনের মাঝে নিজেও জানো না।
– যতই করো বাহানা,,তোমায় যেতে দিবো না,,,
আমি পাগল হয়ে ঘুরবো,,তবু পিছু ছারবো না!
#নিরু❤
পর্ব-১৬
writer- #shanta_islam
চুরমার হয়ে যাচ্ছি আমি। আবির ভাইয়ের গাওয়া প্রতিটা শব্দ তীরের মতো আঘাত হানছে আমার বুকে। ভালোবাসি আবির ভাই আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। হ্যাঁ আমি আপনার রাতের শুকতারা হতে চাই,,আমি আপনার শিশির ভেজা সোনালী সকাল হতে চাই,,আমি আপনার যুদ্ধে জয়ী সাত রাজার ধন হতে চাই,,আমি আপনার মনের জোছনা হতে চাই। আমি শুধু আপনার হতে চাই আবির ভাই শুধু আপনার,,আজ বঢো জানতে ইচ্ছে করছে আপনিও কি তা চান? আপনিও কি আমাকে ভালোবাসেন। বঢো ইচ্ছে করছে আপনার মুখ থেকে শুনতে নিরু আমি তোকে ভালোবাসি। তুই কি আমার হবি।
সেদিন গিটার রেখে মানুষটা যে কোথায় গায়েব হয়ে গেলো প্রায় এক মাস হয়ে এলো তার কোনো খবর নেই। এমন একটা মূহুর্ত নেই যেখানে আবির ভাইয়ের কথা মনে পড়েনি। প্রতিটা দিন প্রতিটা সকাল প্রতিটা রাত শুধু এই একটা মানুষের জন্য কতো যে অঝড়ো অশ্রু ফেলেছি তা নাহয় অজানা থাক। অনেকবার চেস্টা করেছি শুধু একটিবার উনার দেখা পাওয়ার জন্য কিন্তু কোনো না কোনো ভাবে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি। অনেকবার নীলা খালাদের বাসায় গিয়েছি কিন্তু আবির ভাইকে দেখতে পাইনি। খালাকে অনেকবার প্রশ্নও করেছিলাম আবির ভাই কোথায়? খালা এ কথার উত্তর আমাকে দেয়নি। হয়তো দিতে চাইনি। আমিও আর বেহায়ার মতো জিজ্ঞেস করিনি। এভাবে আর বেশি দিন চলতে পারছিলাম না। দমটা বন্ধ হয়ে আসছিলো। বার বার শুধু ওই একটা মানুষকে দেখার জন্য মনটা বেসামাল হয়ে পড়েছিলো। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম এখান থেকে দূরে কোথাও চলে যাবো। যেখানে আবির ভাইয়ের কোনো সৃতি থাকবে না উনার কথাও মনে পড়বে না। এই বাসা,এই ছাদ,এই সিড়ি, প্রতিটি ইটের দেয়ালের মধ্যে আবির ভাইয়ের সৃতি জড়িয়ে আছে। এখানে যত থাকবো ততো আবির ভাইয়ের কথা মনে পড়বে। মানুষটা যদি সত্যি আমাকে ভালোবাসতো তাহলে এভাবে লুকিয়ে থেকে আমাকে এতোটা কস্ট দিতো না। ভাইয়াকে বললাম,,,এখানে আর ভালো লাগে না। বাকী পড়াশুনা ফুফুদের ওখান থেকেই কমপ্লিট করতে চাই।
আমার এ কথা শুনে দাদি তেড়ে বলে উঠলো,,
-দেখেছো মেয়ের ডং দেখেছো,,এখন অন্য জায়গায় যেয়ে পড়বে। আমি বলিকি বাপু ওরও একটা হিলে দিয়ে দে না।
অয়ন ভাইয়া দাদিকে ধমক দেওয়ায় সেদিন দাদি দমে যায়। কিন্তু আমি যে #নিরু❤। নিজের ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সেই সুখও যে আমার কপালে নেই। যেদিন ভাইয়াকে জানালাম এখানে আর থাকতে ইচ্ছে করছে না। সেদিন রাতে ঝুম বৃষ্টি নেমেছিলো। কোনো এক অদৃশ্য টানে সেদিন ছাদে যেয়ে খুব কাকভেজা হতে ইচ্ছে করছিলো। বৃষ্টি হওয়ায় বাসার কারেন্টও চলে যায়। ঘন অন্ধকারে সবার চোখ ফাকি দিয়ে ছাদে চলে যাই। ছাদের এক কোনায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টির সাথে পাল্লা দিয়ে চোখের অশ্রু ঝড়াচ্ছি। বৃষ্টিতে কান্না করলে এই একটা সুবিধা নিজের চোখের অশ্রু অন্তত নিজে দেখতে পারি না। খুব ঠান্ডা লাগছিলো,,কুজো কুজো হয়ে দাঁড়িয়ে চাদের দিকে তাকিয়ে আছি হঠাৎ ঘাড়ে কারো ঠান্ডা ঠোঁটের স্পর্শ পেলাম। এ যে সেই চির চেনা স্পর্শ। কারো দুহাত আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। সম্ভবত এ সময় আমার ভয় পাওয়ার কথা। কিন্তু কেনো জানি না আমার ভিতরে কোনো ভয় কাজ করছে না। হয়তো আমার মন আগে থেকেই জানতো এই শীতল স্পর্শের মানুষটাকে। উনার দিকে একবারো ভালো করে না তাকিয়ে সামনে ফিরে সাথে সাথে উনাকে জড়িয়ে ধরলাম। বেইমান চোখ দুটো তো বেহায়ার মতো ঝড়েই যাচ্ছে। তার সাথে নিজের আবেকটাকেও আর আটকে রাখতে পারলাম না। চিৎকার করে জোরে জোরে কান্না করে দিলাম।
সকালে চোখ মেলে দেখি আমি বিছানায় সুয়ে আছি।
মাথার পাশে দাদি আর মা। দাদি বসে বসে চোখ বন্ধ করে ঝিমাচ্ছে। মা হাতের তালুতে তেল মালিশ করছে। পায়ের কাছে আশা আর ভাবি। সামনে ঝাড়ু আর শুকনো মরিচের থালা নিয়ে চাচি দাড়িয়ে আছে। এই দৃশ্য দেখে আমার আর বুঝার বাকি রইলো না যে একটু পরে আমার সাথে কি ঘটতে চলেছে আর কাল রাতে কি ঘটেছে। হাতে আম্মা তেল মালিশ করছিলো,,আমার চোখ মেলতে দেখে দাদিকে ইঙ্গিত করে চিৎকার দিয়ে বলে উঠে,,,আম্মা আমার নিরু চোখ খুলেছে,,,
মায়ের চিৎকার শুনে দাদি হুমড়ি খেয়ে তাড়াহুড়ো করে উঠে।
দাদি- কই কই ঝাড়ু দেও আমারে,,শুকনো মরিচগুলোও দেও।
চাচি দাদির হাতে ঝাটা ধরাতেই দাদি সেকি ঝাটার বাড়ি শুরু করে মা গো মা।
দাদি- বল কোন গাছের থেকে এসেছিস বল।
নিরু- ও মা গো,,দাদি মেরো না এটা আমি নিরু!
দাদি- মিথ্যা বলবি না। সত্তর বছরের অভিজ্ঞতা আছে আমার।
নিরু- অহ মা অহ আল্লাহ সত্যি বলছি দাদি এটা আমি নিরু,,
দাদি- সত্যি করে বল তুই এতো রাতে আমার নাতনীকে ছাদে নিয়ে গেছিলি কেনো বল সয়তান।
আশা- দাদি ও এভাবে মানবে না। শুকনো মরিচ নাকের কাছে ধরো।
ইস কতো যে অত্যাচার,,আর সহ্য হচ্ছে না। গায়ে একের পর এক ঝাটার বাড়ি পিঠে পড়ছে। অবশ্য ঝাটার বাড়ি খেয়ে লাফা লাফি করতে করতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করতে থাকায় আশা আমাকে ধরে রাখে। আর ধরতে যেয়েই আশার গায়েও কয়েকটা বাড়ি লাগে। আশার গায়ে বাড়ি লাগার সাথে সাথে আশা কই মাছের মতো ছটফট করতে থাকে। আমাদের দুই বোনের লাফা লাফি দেখে কে। অয়ন ভাইয়া দৌড়ে এসে এসব কান্ড দেখে একটা ধমক দিয়ে সব থামিয়ে দেয়। সেদিনের জন্য দাদির ওঝাগিরি সেখানেই স্টপ হয়ে যায়। কিন্তু সবার প্রশ্নের ঝুরি আর থামে না।
মা- নিরু এতো রাতে ছাদে কেনো গেছিলি?
চাচিও আবার তার সেই পুরোনো কমন প্রশ্ন করে,,
চাচি- হে রে নিরু তুই বেহুস হলি কি করে?
কেমন্ডা লাগে আমি কীভাবে বলবো,,আমি বেহুশ হলাম কি করে!
আশা- আচ্ছা জ্বীন কি তোকে কিস করেছিলো?
উনাদের এমন আলতু ফালতু প্রশ্ন শুনে মেজাজটাই চটকে যায়। বড়দের তো কিছু বলতে পারবো না। তাই আশার উপর সব রাগ ঝাড়লাম। আশাকে সেই ঝাটা দিয়ে আবারো কয়েকটা ঘা বসালাম। আশা কান্না করতে করতে বললো,,,
– কুত্তার বাচ্চা মারসোস না। দেইখা নিস আমি কি করি।
কথাটা বলেই আশা ভ্যা ভ্যা করে কান্না করতে করতে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। আশাকে এভাবে মারাটা ঠিক হয়নি তাই ভেবেছিলাম রাতে আশা বাসায় আসলে সরি বলে দিবো। কিন্তু আশা যে সয়তানের ডিব্বা তা আমি ভুলে গিয়েছিলাম। আশাকে যে মেরেছি তার বদলা ও নিবে না তা কি হয়। বিকেলের মধ্যে পুরো এলাকা ছড়িয়ে গেলো আমাকে নাকি জ্বীনে কিস করেছে। বাসায় এই নিয়ে অনেক ঝগড়া ঝাটি হয়।
দাদি রেগে তার ফাইনাল ডিসিশন জানিয়ে দিলো আমাকে বিয়ে দেওয়া হবে।
অয়ন ভাইয়া অনেক না করা সত্যও দাদি দমে যায়নি। তাই অয়ন ভাইয়াও দাদির কাছে হার মেনে জানায় আমাকে বিয়ে দেওয়া হবে পড়াশুনার জন্য ফুফুর বাড়ি পাঠানো হবে না। এটাই ফাইনাল ডিসিশন।
ভাবির কাছে জানতে পারলাম আর কারো সাথে না বিয়েটা পলাশ ভাইয়ের সাথেই ঠিক হয়েছে।
চলবে,,,