–” তোর সাহস তো কম না আমার সাথে ফাজলামি করিস? মেয়েটার গালে জোরে থাপ্পর মেরে ঠাসসসসসসসসস।
জানিস আমি কে?(রাগে দাতঁ কটমট করে) এই সিরাত হোসেনের সাথে এমন বিহেব করার সাহস কই পাইছিস? ইটস মি দ্যা বিগেস্ট বিজনেজম্যান অফ লন্ডন। মাই প্লেস রাগী চোখে ইরিনের দিকে তাকিয়ে। মনে মনে সিরাত ইরিনের বেহাল অবস্থা দেখে বাঁকা হাসি দেয়।
সিরাতের সামনে ফ্লোরে বসে পড়ে আছে ইরিন। ফ্লোরের মধ্যে সিরাতের হাতে চড় খেয়ে নিচে টেবিলের কোণায় লেগে ইরিনের ঠোঁটের কোণা ফেটে ব্লাড বের হয়। সে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাদঁতে লাগলেও সিরাতের সামনে তা দেখালো না। সে নিজের স্কাফ দিয়ে চোখ মুছে কষ্ট করে টেবিলের হেন্ডেলে হাত দিয়ে চেপে দাড়িয়ে মাথা নিচু করে বলে।
–“স….সরি স্যার। আইম এক্সটেমলি সরি। আ….আমি খেয়াল করি নি। কান্নার ভাব এসে চোখজোড়া ভিজে যায়। আ…আমি যেতে গিয়ে আ….আপনার সাথে পা লেগে যায়। তা…তাই আপনি পড়তে লাগছিলেন।
সিরাত বাঁকা হেসে ইরিনের দিকে তাকাতেই তার মধ্যে আলাদা অনুভূতির সৃষ্টি হতে লাগে। সে ইরিনের ভেজা চোখজোড়া দেখতে পাই যা ইরিনের অজানা,,, তার ঠোঁটের মধ্যে ব্লাডিং দেখে সিরাতের ঠোঁটজোড়া কাঁপতে লাগে। সে এপাশ ওপাশ তাকাতাকি করার চেষ্টা করে। কিন্তু তার ব্রেন হৃদয় যেন এখন স্তব্ধ হয়ে গেলো। সে পিছে ফিরে জানালার দিকে দৃষ্টি দিয়ে মনে মনে বলতে লাগলো।
–“এই কি হচ্ছে আমার এমন ত হওয়ার কথা না। তার হাত পা ঠোঁট যেনো একসাথে কাঁপাকাঁপি করতে লাগে। এসব কেন হচ্ছে না! নিজেকে সামলাতে হবে কি হচ্ছে কি? (ভয়ে চিন্তি হয়ে কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে যায়)
ইরিন?? (আচমকা ভাবনা থেকে বের হয়ে) না একে রুম থেকে যেতে বলতে হবে।
ইরিন সিরাতকে কিছু বলতে না দেখে তার কিছুটা কাছে এসে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলে–” স….স্যার আ….আপনার কা…কাছ থেকে ফাইলটা সাইন করানোর ছিলো। (কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে)
সিরাত পিছে না তাকিয়েই তার হাত থেকে হিচড়ে ফাইলটা হাতে নিয়ে দেখে ফাইলে সাইন দিয়ে টেবিলের উপর রেখে ইরিনের পাশ কেটে অফিস থেকে বের হয়ে নিজের গাড়ির কাছে এসে রিমুট কন্ট্রোলার দিয়ে গাড়ি স্টাট দিয়ে বসে গাড়ির হেন্ডেল ধরে জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকে।
ইরিন সিরাতের করা বিহেবে খুব কষ্ট পেলেও নিজের চোখজোড়া মুছে বিড়বিড় করে বলে:::: আপনি যতোই এভাবে করেন না কেনো? আমিও ইরিন আপনাকে আমার লাইফে ফিরে আসার মোহ আমি ছাড়বো না। কোজ এটাই একমাএ রাস্তা। তুমি আমার ছিলে আছো আর থাকবেই(ডান হাত দিয়ে নিজের ঠোঁটের কোণা থেকে ব্লাড মুছে বাঁকা হাসি দেয় )।সে ফাইলটা হাতে নিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বলে।
–” জান খেলা ত সবে মাএ শুরু। আগে আগে দেখো হতা হে কিয়া। লজ্জামাখা ফেস করে সিরাতের কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।
এখন আসেন আপনাদের বলি প্রথম থেকে হলোটা কি?
ইরিন সে হলো এক মধ্যবিও পরিবারের মেয়ে। তার বাবা মা কেউ নেই। সে এতিমদের সাথে বড় হয়। তাদের সাথেই হাসাহাসি খেলাধুলা করে বড় হয়েছে। যখন ক্লাস সেভেনে উঠলো। তখন তার এক বেস্ট ফ্রেন্ড হয়। (যার ব্যাপারে সামনের পার্টে জানবেন)
ইরিন এর এইচএসসি কমপ্লিট করে স্টাডি করতে লন্ডন যাবার আশা ছিলো ছোটবেলা থেকেই। সে র্জসের কাছে লন্ডনের সব জায়গার কথা শুনতো। সেখান কার অনেক জায়গার মধ্যে একটা জায়গা তার সব চেয়ে প্রিয় ছিলো। সেটি হলো উড গ্রীন। সেখানে থাকা রহস্যজনক মিউজিয়াম এ ঘুরে পর্যবেক্ষণ করা তার সবচেয়ে বড় শখ।
তাই বাকি স্টাডি কমপ্লিট করার জন্যে সে দিন রাত বাংলাদেশে রাজশাহীর গামেন্টস এ কাজ করে পোশাক সেলাই এর কাজে সে এমন দক্ষতা অর্জন করে যা সে সেলাই করার সময় কার কাপড় কেমন ছুঁয়ে ভেবে নিতে পারে। সেখানকার মালিক ইরিনের দক্ষতায় তাকে উপহার স্বরুপ এক লাখ টাকা দেন । যা লন্ডনে যাওয়ার জন্যেই তার লাগবে। সে মুচকি হেসে সবার থেকে বিদায় নিয়ে লন্ডনের যাএায় বের হয়।
টাকা প্রয়োজনীয় সব কিছু জোগাড় দিয়ে লন্ডনে থাকা তার বেস্টুর সাহায্যে সেখানে চলে আসে।
এসেই “Happy Mid Night” নামের এক হোটেলে রুম বুক করে নিজের জন্যে। র্জানি হওয়ার কারণে কয়েকদিন রেস্ট নে । তাই এই কয়েকদিন কোনো কাজ না হওয়ায় প্রাপ্ত টাকার মধ্যে থেকে অর্ধেক টাকা খরচ হয়ে যায়। সে রাতে আর বেশি না জেগে ঘুমিয়ে যায়। সকালে কাজের সন্ধান দেওয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিবে।
ইরিন ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে জগিং করতে বের হয়। কেননা মনিং এ ফ্রেশ জগিং এর অনুভূতি টা শরীরের হের্লথ ভালো রাখে। শরীরের ব্লাড চলাচল দ্বীর্ঘ করে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।
জগিং করতে করতে সে বাসা থেকে প্রায় অনেক দূরে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। সে হালকা দৌড় থামিয়ে পাশে থাকা একটা গাছে হাত রেখে হাফাঁতে থাকে। সে নিজের চোখ উঠিয়ে দেখে আশে পাশে নির্জন সব স্থীর গাছপালা। কোনো জনবসতি নেই। এতে সে ভয় পেয়ে যায়। জোরে জোরে হেল্প! হেল্প! চিৎকার করতে লাগে।
কিন্তু তার সাউন্ড কেউ শুনতে পাচ্ছে না। সে আস্তে আস্তে হাঁটতে লাগে পিছের দিকে যেখান দিয়ে সে আসছিলো। আর ভাবতে লাগলো।
–“ইয়া আল্লাহ প্লিজজ সেভ মি! কেন যে নামাজটা পড়ে আসলাম না। দেরি করে উঠায় একদম আলসিমী ধরে মাথায় বসছিলো। কপালে এক বারি মেরে হাঁটতে থাকে। এখন এই সুনসান জায়গায় কেউ আছে কিনা ও সন্দেহ (বিড়বিড় করে)। যাই হোক আ…আমি ভয় পাই না। I will let it go..
সে হেঁটে হেঁটে সামনে যাচ্ছে আর মনে মনে–” ইয়া রাহমান পড়ে পড়ে মগ্ন হচ্ছে। হঠাৎ ইরিন দাঁড়িয়ে ঘামতে থাকে। তার নাকে যেনো এক অদ্ভুত স্মেল আসতে লাগে। যা তার মনের মাঝে নেশার সৃষ্টি করছে। সে নিজের মাথা ঝাকুনি দিয়ে পিছ ফিরতেই এক ভয়ানক রক্তাক্ত ধারালো বড় বড় দাঁতজোড়ার শেয়াল তাকে দিকে হিংস্র ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখতে পাই। যেনো শেয়াল এতোক্ষণ থাকে পর্যবেক্ষণ করছিলো।
ইরিন শেয়াল কে দেখে ভয় পেলেও তার নাকে এক অজানা মানুষের কাপড় এর স্মেল পেতে থাকে। ইরিন অন্যকিছু ভাবতে গিয়েও পারলো না তার আগেই কেউ একজন আচমকা তার হাত টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নে। ইরিন এমন কিছু হবে ভাবে নি। সে ঐ মানুষটার বুক থেকে নিজের মাথা তোলার আগেই সে মানুষটা তার পিঠে ইনজেকশন পুশ করে। ইরিনের মাথা জ্যাম হয়ে যায় সাথে সাথে বেহুশ হয়ে মানুষটার কোলে ঢলে পড়ে।
মানুষটা শেয়ালের দিকে নিজের নীল মণি চোখ দিয়ে শেয়ালের চোখের দিকে তাকাতে নীল মণি উজ্জ্বল হয়ে উঠে। সাথে সাথে শেয়াল নেতিয়ে পড়ে।
প্রায় ছয় ঘণ্টা পর ইরিন চোখ খুলে নিজেকে বেডের মধ্যে পাই। সে আস্তে আস্তে উঠে মনে করার ট্রাই করতে চাচ্ছিলো তবে পারলো না। তার আগেই এক ফোন কলে ভাবনার ছেদ ঘটে। সে কল কানে ধরতেই এক লাফে বেড থেকে উঠে লাফাতে থাকে। তার প্রচুর খুশি লাগছে।
…………চলবে……….
#My vampire lover comes again
#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স
#লেখিকা_তামান্না
#সূচনা_পর্ব
[