My vampire lover comes again part 11

#My vampire lover comes again

#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স

#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_10

সিরাত অনেকক্ষণ গাড়ির মধ্যে হেলান দিয়ে জিমুতে থাকে। ফোন বের করে এফবি তে লগ ইন করে নিউজ ফিড দেখছে। তখন ইরিন এর আইডি দেখে মনে মনে বলে।

–”ম্যাডাম এতো রাতে না ঘুমিয়ে কি জাগনা আছে? বফ তফ আছে মনে হচ্ছে।

ইরিন এর আইডিতে রিকু পাঠিয়ে ফোন রেখে দিলো।
গাড়িতে নক নক করায় সিরাত ঘাবড়ে যায়। এ সময় কে এলো সে হুট করে গাড়ির গ্লাস নামিয়ে বাইরে দেখে অবাক হয়ে যায়। কেউই বাইরে নেই অথচ কিছুক্ষণ আগে তার গাড়ির গ্লাসে নক নক করা হয়েছিলো।

সিরাত গাড়ি থেকে নেমে আশপাশে তাকাতে লাগে। কিন্তু কাউকে না পেয়ে সে গাড়ির দরজা ওপেন করবে ওমনেই তার চোখ পড়ে পাশে পাহাড়ি জায়গায় এক কালো হুডি পরা লোকের দিকে। সে গাড়ির দরজা অফ করে সে দিকে তাকিয়ে জোরে জোরে ডাক দিতে লাগে।

–“Hey young man! Please help me! My car…..

বাকিটুকু বলার আগেই সে দেখতে পেলো লোকটা পিছিয়ে যাচ্ছে আর জোরে জোরে কান্না করতে লাগে। সিরাত ভাবলো হয়তো সে কোনো বিপদে পড়েছে। সে
হুডি পরা লোকটাকে থামতে বললো আর তার দিকে এগিয়ে যেতে লাগে। কিন্তু সে যতোই লোকটার কাছে যাচ্ছে লোকটা ততোই পিছে যাচ্ছে।

পরক্ষণেই লোকটা উধাও হয়ে যায়। সিরাত এ দেখে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে আশেপাশে ঘুরে দেখে সে জঙ্গলে ডুকে পরেছে।

সে তাজব হয়ে বলতে লাগে।

–“লোকটা হঠাৎ করে কোথায় গেলো? এখনই তো এখানে ছিলো। যাই হোক এখন ড্রাইভার আসবে আমি রিটার্ন দেই।

সে পিছে ফিরে তাকাতেই লোকটা কে দেখতে পাই।
সে লোকটার কিছুটা পাশে এসে বলতে লাগে।

–“ওহ আপনি ঠিক আছেন কিছু হয়েছে কি? ভ্রু কুঁচকে লোকটার দিকে তাকিয়ে বললো।

লোকটা নিজের মাথা থেকে কাপড় সরিয়ে সিরাতের দিকে তাকালো। সিরাত দেখতে পেলো লোকটার চোখজোড়া লালবর্ণ হয়ে আছে। যেনো সে পিপাসার্ত। কোনো শিকারী খুঁজে বেড়াচ্ছে। সে সিরাত এর দিকে তাকিয়ে বললো।

–“আমি ব্লাড চাই।

–“ওয়াইট? কি চান!

–“আমি পিপাসিত খাবার চাইইইইই চিৎকার দিয়ে।

সিরাত স্বাভাবিকভাবেই লোকটার চিৎকার শুনছে আর কথাগুলো শুনলো। সে দুইহাত বুকের উপর গুজে পাশে থাকা গাছের সাথে বা বাহুডোর ঠেসে দাঁড়িয়ে বললো।

–“এখানে ব্লাড পাবেন কোথায়? আর আপনি মানুষ হয়ে ব্লাড খাবেন। তাজব ব্যাপার কোনো শিকারী পেয়েছেন কি?

লোকটা সিরাতের ডোন্ট কেয়ার ভাব এর মতো কথাগুলো শুনে রেগে বললো।

–“হে মানুষজাতি। তুই এই হবি আমার খাদ্য। তোকে দিয়েই আমার পিপাসা মিটাবো।

তার কথাগুলো শুনে সিরাত ডোন্ট কেয়ার ভাব করে তার পাশ কাটিয়ে হাটঁতে শুরু করলো। লোকটা পিছে ফিরে তার কাধেঁ হাত রাখলো। ওমনেই সিরাত চোখ বন্ধ করে ফেলে।

____________________

বক্সটা ইরিন এর রাজি হওয়ার কথা শুনে খুশিতে উড়তে লাগলো। আর জোরে জোরে চিৎকার করে বললো।

–“আপ্পি আমি মুক্ত হবো স্বাধীন হবো এই আকৃতি থেকে ফিরে পাবো নিজের আকৃতি।

বক্সটা মানে বক্সের রুপে মানুষটার খুশি দেখে ইরিন এর চোখে পানি এসে গেলো। বক্সটা খেয়াল করলো ইরিন ফুঁফিয়ে কান্না করছে। বক্সটা থেমে তার কাধেঁর পাশে এসে উড়ানো অবস্থায় বলে।

–“আপ্পি কান্না করছো কেনো আমি কি কোনো ভুল করেছি? যদি করে থাকি আইম রিয়েলি সরি।

–“আরে না না তুমি কিছু করো নি। আজ পর্যন্ত লাইফে কেউ বোন বা আপ্পি বলে সম্বন্ধ করে নি। তুমিই প্রথম যে আমাকে আপ্পি বলে বোন বানিয়েছো।

বক্সটা নাড়াচাড়া করে টেডি স্মাইল করে বলে–“তুমি আমার আপ্পিই। তোমাকে রক্ষা করার জন্যেই তো সে আমাকে পাঠিয়েছে।

ইরিন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে–“কে পাঠিয়েছে?

বক্সটা এদিক ওদিক তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলে–“এই কথাটা এখন না পরে বলবো। আগে ধাধাঁ অনুযায়ী কাজটা করো সেই কাজেই হয়তো তুমি তার নাম খুঁজে পাবে।

ইরিন উদাস ফেস করে বক্সটার দিকে তাকিয়ে বলে–“এটাও না বললে ওইটাও না বললে ধাঁধাটাই বলো।

বক্সটা মুচকি হেসে বলে–“সাত সাগর ঘিরে এক পাহাড় রহিবে,,তুমি যাবে সেখানে আগুনের লাভা পাড় করে,,ফুটন্ত গরম পানি হবে যাহার পানাহার,,মিটাবে তৃপ্তি তোমারই ঠান্ডা আবাশ,,হবে এক গহীন গুপ্তধন,, খুলা হবে দরজাটা যাবে,, সেখানে নিয়ে এক ধারালো কাঁচের ছুরি যার আঘাতে বিক্ষত হবে হাজারো রক্তশূচি প্রাণী,,দরজা বেধ করিয়া পাবে এক অদ্ভুত বীরযোদ্ধা যাহা হবে তোমারই মনের খোড়াঁক।

শেষ এটাই তোমার ধাঁধা।

ইরিন হা করে বক্সটার পুরো কথা শুনে ব্যবলাকান্তের মতো হয়ে বললো।

–“আমি টপার তবে নিউটন আইনস্টাইন নাহ। এদের মতো বিখ্যাত টপার হয় নি যে, তুমি আমাকে এতো বড় ধাঁধা শুনালে। মাথায় একহাত দিয়ে ধপাস করে বেডে বসে গেলো।
আমি যদি এদের মতো হতাম তাহলে এখনই তোমার ধাঁধা অনুযায়ী কাজ করে ফেলতে পারতাম। তবে আমি খুব সামান্য টপার।

বক্সটা বিরবির করে বলে–” এখন হয়তো আপনার থেকে শুনে জটিল লাগছে। কিন্তু পরে এই ধাঁধার মানেটা আপনি ঠিকই বের করে ফেলবেন সাহেবা। আপনি নিজেও জানেন না আপনি কে ! তাই তো অদৃশ্য মায়ারাণী যে কিনা আপনার রক্ষার্থে সবক্ষণ প্রস্তুত থাকে উনার কথামতো চলে এলাম আপনার আঙ্গিনায় আমাদের সাহেবা। মুচকি হেসে।

ইরিন বক্সটা কে কি যেনো বিরবির করতে দেখে জট করে বললো।

–“আমাকে এতো বড় বিভান্তে ফেলে তুমি নিজেই বির বির করে যাচ্ছো। কিছু তো করো? না হলে তোমার থেকে সারাজীবন এভাবে বক্স হয়ে থাকতে হবে আর আমি জানতেই পারবো না আমার সাথে এসব অলৌকিক কান্ড হওয়ার কারণ কি?
বসা থেকে উঠে জানালার কাছে এসে চিন্তিত হয়ে।

বক্সটা চোখ ঘুরিয়ে টেডি স্মাইল দিয়ে বলে–“আপনি কি গাধী?

ইরিন ভ্রু কুঁচকে রাগী লুকে তাকিয়ে বলে–“কি বললে?

–“আব না মানে বলছিলাম কি আপনি কি একা এই ধাঁধা সমাধান করবেন? নাহ আমিও প্রতিটা মুহুর্ত আপনার সাথে থাকবো। আপনাকে হেল্প করবো। কিন্তু হেল্পটা হবে সীমিত পুরোপুরি হেল্প নয়।

–“পুরোপুরি নাহ তার মানে ক্লু দিবে এক এক রাস্তায়?

–“ইয়েস এই তো বুঝে গেলেন সাহেবা। বক্স এই কথাটা কিছুটা জোরে বলে উঠলো।

ইরিন সাহেবা শব্দটা শুনে বলে–“এটা কে? সাহেবা ওয়ার্ডটা তো কোনো বইয়ে পড়েছি মনে হচ্ছে।

বক্সটা ইরিনের ধ্যান ফেরানোর জন্যে জট করে কথাটা ঘুরিয়ে বলে–“নাহ আপ্পি আপনি মেয়ে তো তাই হুট করে সাহেবা বললাম। আসলে এই নামের কিছুই নেই।

ইরিন তাও অন্যকিছু বলতে যাবে তার আগেই বক্সটা বলে–“আরে আরে অনেক টাইম হলো ঘুমিয়ে যাও। চলো চলো।

বলতে বলতে বক্সটা ঘুমিয়ে পড়ে সাথে উড়া থেকে জট করে নিচে বেডের উপর নেতিয়ে পড়লো। ইরিন বক্সটা হাতে নিয়ে ড্রয়ায়ের উপর রেখে ফোনটা চার্জ এ দিয়ে শুয়ে পড়ে।

_______________

মিসেস ইয়ামিত নিজের রুমটা ঠিকভাবে গুছিয়ে রাখছিল। তখন তার চোখ পড়ে ড্রয়ারে থাকা চিঠিটার উপর। সে ঐরাতে চিঠিটার মধ্যে কোনো লেখা দেখিনি। কিন্তু আজ হঠাৎ সেই চিঠির মধ্যে লেখা দেখতে পেয়ে সে কাপড়গুলো বেডে রেখে তেড়ে এসে চিঠিটা হাতে নিয়ে বেডের উপর বসে পড়তে শুরু করে।

সেখানে লেখাগুলো ছিল এমন–“আমার ছেলে পিশাচরাজ সে যেকোনো দিন বা রাত এ পিশাচে পরিণত হয়ে যেতে পারে। সে পুর্নজন্ম নিয়েছে। আপনাদের অবশ্যই বলেছি শ্রেয় -র খেয়াল রাখতে। তবে তার পিশাচে পরিণত হলেই আমাদের রাজ প্রজা পুনরায় প্রাণপণ হয়ে উঠবে। কিন্তু এখন আপনাদের করণীয় সাহেবা কে খুঁজা। যে পারবে শ্রেয়কে পিশাচে পরিণত হলেও এক বীর পিশাচরাজ বানাতে যে নিরীহ মানুষকে নই পশুকে আক্রমণ করে নিজের পিপাসা মিটায়। যদি সাহেবা কে পাওয়া না যায় তাহলে পিশাচরাজ নরপিশাচে পরিপূর্ণ হবে। যতো শীঘ্রই সম্ভব সাহেবা খুঁজোন। আর সাহেবাকে চেনার একমাএ উপায় তার বা হাতের মধ্যে এক তারার নকশা আকৃতি তিল হবে। সেই তারা কোনো সামান্য তারা নই। সেটা হলো সাত আসমানের এক অবিশেষ রেখা যেটা খুব বিশুদ্ধ পবিএ। দুই দিন সময় । আমি আবারো ফিরে আসবো তবে সেটা পরে। এখন খুঁজেন সাহেবা কে খুঁজেন।

হঠাৎ চিঠিটা উধাও হয়ে গেলো। মিসেস ইয়ামিত চিন্তিত হয়ে দুই হাত মোনাজাতের মতো করে বিরবির করে বলে–“ইয়া আল্লাহ সহায় হন সাহেবা কে কোথায় আছে তাকে আমাদের মাঝে এনে দেন। তাকে খুব প্রয়োজন নিজের ছেলেকে বাঁচানোর উপায়টা পাওয়ায় দেন আল্লাহ পাওয়ায় দেন। দুইদিন সময় আল্লাহ এই সময় এর মাঝে চোখের সামনে রাস্তা দেখান ইয়া আল্লাহ আমিন।

উনার চোখ থেকে টপ টপ করে অশ্রু ঝড়তে লাগলো। উনি দুইহাত দিয়ে দোয়া পড়ে নিজের ফুঁ দিয়ে মোনাজাত শেষ করলো।

মিসেস ইয়ামিত বের হতেই রেনা উনার সামনে আসে। সে তার আম্মুকে এভাবে গোমড়া মুখ দেখে জিগ্গেস করে।

–“আম্মু কিছু হয়েছে??

–“না মা কিছু হয় নি তুই কি কিছু বলতে এসেছিলি?

–“হ্যা আসলে পিশাচরাজ…..

বাকিটুকু বলার আগেই মিসেস ইয়ামিত রাগী সুরে বলে–“আগেও বলেছি আজও বলছি পরে যাতে এই পিশাচরাজ এর কথা মুখে না আসে। গট ইট?

–“ওকে মম।

রেনা জিদ করে নিজের রুমে চলে গেলো। মিসেস ইয়ামিত হাফ ছেড়ে কিচেনের দিকে যান।

এদিকে সিরাত……….

……………চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here