My vampire lover comes again part 12+13

#My#My vampire lover comes again

#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স

#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_13

সিরাত এর প্রশ্নে থতমত খেয়ে যায় তফাজ্জল আর ইয়াসমিন। তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে সিরাত এর দিকে তাকায়।

সে তার আব্বু আম্মুর ফেসের রিয়েকশন দেখে মনে মনে বললো।

–“পিশাচ কি তা নিয়ে ইনারা এতো ভয় পাচ্ছেন কেনো? দেখি উওরে কি বলে।

–“আসলে বাবা পিশাচ মানে এক ধরনের প্রাণী। তফাজ্জল কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে বলছেন।

–“ড্যাড এরা প্রাণী তা ত আমিও জানি তবে পিশাচ দেখতে কেমন? এদের আকার-আকৃতি,,বংশ সব কিছু কি ধরনের? তা জানতে চেয়েছি?

তফাজ্জল চুপ মেরে দাঁড়িয়ে রইলেন তিনি দুই হাত দিয়ে নিজের পাঞ্জাবির হাতা চেপে ধরছেন। ইয়াসমিন তফাজ্জলকে চুপ থাকতে দেখে সিরাত এর দিকে তাকিয়ে সোজাসাপ্টা উওর দিয়ে দেই যেনো সে অন্য কিছু জিগ্গেস না করে।

–“দেখ সিরাত এসব নিয়ে তোর মাথা না ঘামালেও চলবে। তুই তোর ক্যারিয়ার,,তোর জীবনে ফোকার্স কর। পিশাচ প্রাণী এসব শুধু কল্পনা। বাস্তবে এ পিশাচ বলতে কিছুই নেই। কাল্পনিক বইয়ের লেখা গল্পের মতো বুঝছিস?

একনাগাড়ে তিনি কথাগুলো বলে তফাজ্জল কে নিয়ে সিরাত এর রুম থেকে বেরিয়ে যান।

সিরাত সময় নষ্ট না করে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে গেলো।




রেনা নিজের রুমে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। তখন তার আম্মুর বকা শুনে তার মাথার তাপমাএা 100C অতিক্রম করে। তবুও কিছু না করে নিজের রাগ দমাতে রুমে এসে বেডের উপর বসে লেপটপে ভূতের মুভি দেখতে থাকে।

পুরু রুমের লাইটস অফ করে দিয়ে একলা রুমে বসে মুভি দেখছে। জানালা লক করে নি। হালকা খোলা রেখেছে যেনো ঠান্ডা বাতাস ভেতরে আসে। এমনেই শীতের সময় সেখানে রেনার একটাই বদঅভ্যাস শীত আসুক বা গ্রীষ্ম আসুক তার শরীর কখনো গরম বা উচ্চমাএা অনুভব করে না।

রেনা একের পর এক ভূতের মুভি দেখছে। হঠাৎ তার ফোনে কল আসে। সে মুভি দেখা স্টপ করে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে আননোন নাম্বার থেকে কল আসছে।
ফাস্টে ভাবে ধরবে কি ধরবে না? না ধরলেও পরে যদি কিছু করে? না না অপরিচিত কারো ফোন ধরবো না।
ভেবে সে ফোনটা রেখে দে।

কিছুক্ষণের মধ্যে ফোনে এক মেসেজ আসে। সে মেসেজটা ক্লিক করে দেখে।

–“এখনিই কল ধরো নইতো সোজা বাসায় চলে আসবো।

রেনা মেসেজটা দেখে হুট করে শুয়া থেকে বসে পড়ে। তখনিই কলও চলে আসে। সেও সাথে সাথে কল কানে ধরতেই অপর পাশ থেকে বলতে লাগে।

–“কি রে বাবুটা? কল ধরতে এতো সময় লাগে? নাকি আমার থেকে পিছে ছুটার বাহানা খুঁজছো হুমম? দুষ্টুমি হেসে লোকটা কথাগুলো বললো।

রেনার থেকে লোকটার কথাগুলো শুনে রাগ আরো বেড়ে যায়। সে উচ্চ গলায় বললো।

–“ঐ কুকুর একটা কে তুই হুমম? আমাকে ধমকি দেওয়ার সাহস কতো বড়? তুই একবার সামনে আস এই রেনা কি জিনিস সব বুঝিয়ে দেবো। শালা বদমাইশ কোথাকার ! সাহস থাকলে সামনে এসে দেখা ভিতুর মতো পিছ থেকে কল করে কি ধমকি দিস?

রেনা কথাগুলো বলা শেষ করতেই তার কাশি এসে যায়। লোকটা তার কাশির শব্দ শুনে বলে।

–“আরে তুমি ত দেখি হাঁফিয়ে গেলে যাও বাবু পানি খেয়ে নাও। আরো গালিগালাজ বকাবকি করতে হবে ত তাই না? মুচকি হেসে সে চেয়ারের বসে পড়ে।

রেনা নিজের চোখজোড়া ঘুরিয়ে নিজেকে শান্ত করে সুন্দর সুরীল কণ্ঠে বললো–“শুনেন কে আপনি? আর হঠাৎ এতো ভোরবেলায় কল দেওয়ার কারণ কি অনুরোধ করে বলবেন?

লোকটা নিজের বুকের বাঁ পাশে হাত রেখে বলে–“ইসস তোমার মুখে আপনি শুনে কেমন যেনো তোমার জামাই জামাই লাগছে ! মুচকি হেসে রেনাকে লজ্জা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

রেনা শুনে চোখজোড়া গোল করে ভাবে–“কি মানুষ রে ভাভাগো? বলছি কি আর বুঝছে কি? আবাল কাকে বলে?

এবার রেনা সোজাসুজি বলে–“দেখেন কে আপনি জানি না? “গুড নেক্সট……..লোকটা হেসে বললো।
ত আমি কল কেটে(রেনা)……আ আ না না এটা করো না। করলে কিন্তু তোমার ভাইয়ের আসল রুপের কথা সবাইকে জানিয়ে দিবো। লোকটা বাঁকা হেসে নিজের পেন্টের পকেটে হাত রেখে বললো।

রেনা লোকটার কথায় ঘাবড়ে যায় সে ভাবতে লাগে–“এ আবার কোন দুশমন এসে টপকালো? আর এইবা কিভাবে ভাইয়ার ব্যাপারে জানে?

–“কি চান?………..এতো এখন এসেছো আসল কথায়। শুনো বেশি কিছু করতে হবে না শুধু আমার সাথে প্রেম করতে হবে। এই কথা বলেই লোকটা কল কেটে দিলো।

রেনা প্রেম করতে হবে শুনে ভেবাচ্যাকা খেয়ে যায়। সে আনমনে বলতে লাগে।

–“প্রেম করতে হবে কি আজব মানুষ রে? প্রেঙ্ক করার জন্যে আমার নাম্বারিই পেয়েছিলো। হুদায় মুডটা নষ্ট করে দিলো গাধা ফকিরজা কোথাকার উহ !

রেনা লোকটার চৌদ্দ গোষ্ঠী উজার করে ফোনটা চার্জে দিয়ে ফ্রেশ হতে যায়।

____________________________

ইরিন লামিয়া দুইজনে নাস্তা করে অফিসে চলে আসে। দুইজন দুইজনের কেবিনের দিকে যেতে লাগে। ইরিন নিজের কেবিনে যাওয়ার আগে সিরাত এর কেবিনের দিকে আড়চোখে উকিঁ মেরে দেখে কেবিন খালি তালাবদ্ধ। সে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সাড়ে আটটা বাজছে।

ইরিন মনে মনে বলে–“আজ ত চমৎকার হয়ে গেলো। স্যার নিজেই দেখি আসে নি। আগে তো নিজেই কতো সুন্দর করে ফাউল বক্তব্য দিতো…..তোমরা সময়মতো চলে আসবা না আসলে বিনা কারণে ব্যান করে দিবো উহহ। আজাইরা কাহিনি করে শুধু। আসছে আমাকে ব্যান করতে। কথাগুলো সে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে হিরোইন এর মতো করে বলতে থাকে।

ইরিন পিছে ঘুরতেই কার বুকে ডুক করে মাথায় বারি খেয়ে পড়ে যেতে লাগলেই সামনের জন্যে শক্ত করে তার হাত চেপে ধরে টান মেরে দাঁড় করিয়ে দে।

ইরিন এর কলিজায় পানি শুকিয়ে তছনছ হয়ে গেলো। সে পড়ে যাওয়ার ভয়ে সামনের মানুষটার দিকে তাকিয়ে দ্বিগুণ ভয় পেয়ে যায়। সামনের মানুষটা তার দিকে লাল বর্ণ চোখজোড়া করে তাকিয়ে তার হাত ছেড়ে দে। ইরিন সাথে সাথে দূরে সরে আসে। সে কোনোভাবে
এক ঢোক গিলে বলে।

–“স…সরি সিরাত স্যার আ…আমি আপনাকে দেখি নি তাই! মাথা নিচু করে বললো।

–“বেশি বক্তব্য দেই তাই না? আজাইরা কাহিনি করে তাই না?

সিরাত ইরিন এর দিকে তাকিয়ে একপা দুই পা করে তার কাছে যেতে থাকে।

ইরিন সিরাতের কাছে আসা দেখে সেও একপা দুইপা করে পিছে যেতে থাকে। যেতে যেতেই সে দেওয়ালের সাথে লেগে যায়। ঐ সময় সব স্টাফ নিজেদের কেবিনে বসে কাজ করছিলো। কেউ দেখছে না সিরাত ইরিন এর প্রেমলিলা।

প্রেমলিলা বললে ভুল হবে দুইজন তো শেয়াল আর নেকড়ের মতো একে অপরকে মেরে ফেলার ফান্দা আটকায়। তবে এরিই মধ্য দিয়ে আগমন হবে নতুন এক ভালোবাসার কাহিনি।

……………চলবে………….. vampire lover comes again

#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স

#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_12

–“আব আহ আসলে বেবি বলছিলাম কি? তুমি তো সব পারো আর সব বুঝেও যাও। কিন্তু এখন আমরা কিছুই করি নাই বউ। ভয়ে ভয়ে অনর্ব মায়াবিনীকে নিজের কথার জালে ফাসাঁছিল।

কিন্তু তার মুখ ফুসকে ‘বউ’ শব্দটা বের হয়ে আসায় মায়াবিনী চোখজোড়া গোল গোল করে অনর্ব এর দিকে তাকায়।

অনর্ব জিহ্বে কামড় দিয়ে মাথা ডানে বামে নাড়িয়ে না জানায়। মায়াবিনী কোমরে হাত রেখে তার কাছে আসতে থাকে। অনর্ব সেভাবেই ঠাই মেরে দাঁড়িয়ে রইলো।

মায়াবিনী তার কাছে ঠোঁট উল্টিয়ে বলে–“কি বউ কাকে বললে? শান্ত কণ্ঠে অনর্ব এর চোখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে খুশি হতে থাকে।

অনর্ব এক ঢোক গিলে ভয়ার্ত কণ্ঠে বলে–“আব আসলে তোমাকে বলি নি,, আ….আমি ত বলেছি অন্য মেয়ের কথা ভেবে।

মায়াবিনী অনর্ব এর মুখে কথাটা শুনে রেগে ফুসতে ফুসতে বলে–“তুই…..তুই এক নম্বরের গাধা গরু পিশাচ। অনর্ব এর মুখের কাছে এসে বলতে থাকে।
এর প্রতিটা গরম নিশ্বাস মায়াবিনীর মুখের উপর পড়ছে।

সে এই সময় টা খুবই উপভোগ করছে। “তো বলো তোর মতো গাধা পিশাচ কি আর আছে? তোর সামনে আছি তাও তুই আরেক মেয়ের কথা ভাবিস। তুই আবাল পিশাচ মন পড়তে পারে না কিছু না পুরো আবুইল্লাহ একটা। ” মায়াবিনী বাচ্চাদের মতো ফেস করে অনর্ব এর চোখের দিকে তাকায়।

সে খেয়াল করলো অনর্ব কিছু বলছে না শুধু দেখে যাচ্ছে তবে তার চোখজোড়ায় আলাদা এক নেশা দেখতে পাই।

–“কি ব্যাপার এভাবে কি দেখছো? মায়াবিনীর প্রশ্নে অনর্ব ধ্যান থেকে ফিরে আসলেও তার প্রিয়সীর ঠোঁট জোড়ার প্রতি আর্কষিত হয়ে পড়ে।

সে নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে একবার এপাশ আরেকবার ওপাশ তাকাছে। মায়াবিনী শক্ত গলায় বলে।

–“এই গাধা পিশাচ তোরে বলতেছি এদিক ওদিক কি তাকাস? কানে কি কথা যায় না হুমম?

–“দেখ মায়ু বেশি উচ্চ গলায় আমার সাথে কথা বলবি না। আমি কিছু বলি না বলে এই না যে আমি কিছুই পারি না। ভাব মেরে কথাগুলো বলে সে নিকেল এর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে।

–“ভাই আমি কিন্তু মায়ুর সাথে একটু বেশি জোর গলায় কথা বলা শুরু করে দিলাম। ঠিক করতেছি কি? উদাস ফেস করে নিকেল এর সাথে ইশারা-ইঙ্গিত করছে।

–“এই তুই আমার সাথে উচ্চগলায় কথা বলবি? তুই জানিস আমি কতো কিছু করতে পারি। মনে মনে মুচকি হেসে বললো।

–“আমার পাগলা প্রেমিক তিনটা শব্দ বলতে আর কতো বছর মাস সপ্তাহ দিন সময় লাগাবে কি জানে! এতো কিছু করলাম কখনো মুখ ফুসকে হলেও বলে নি। তাও আজকে সময় ও আছে সুযোগও আছে। চারে মে ছক্কা মেরে দেই।

–“আরে দোস্ত কন্টিনিউ কর পিশাচিনী রাজি আছে। আজ বলেই দে। পরে পার্টি দিমো নে।

দুষ্টুমির পান্দা এটেঁ মনের সাহায্যে অনর্বকে জানালো।

–“ওকে মায়ু শুন………সে মায়াবিনীর দিকে ফিরতেই তার হাতের সাথে মায়ুর উরনা লেগে ধাক্কা খেয়ে হুমড়ি খেয়ে অনর্ব এর উপর এসে পড়ে।

নিকেল দৃশ্যটা গভীরে যাবে বুঝতে পেরে সেখানে আর দাঁড়ালো না। তাদের অজান্তেই সে শ্রেয়কে কুলে করে নিয়ে গাড়ির কাছে চলে আসে। শ্রেয়কে ঠিকভাবে বসিয়ে দিয়ে তার মাথায় হাত বুলিয়ে কাধেঁ হাত রেখে বলে।

–“দোস্ত কবে তুই তোর এই কলিজার ফ্রেন্ডকে নিকং বলে জড়িয়ে নিবি। জানিস সবার সামনে যতই আমি হাসি না কেন? কিন্তু সবসময় তোর কথায় মনে পড়ে। কলিজার বেস্টুদের কখনো ভুলা যায় না রে। ঐবার যা করেছি তার জন্যে আমি খুবই লজ্জিত। যদি তখন আমি তোকে আর সাহেবা কে আলাদা করার জন্যে প্রিন্স কেনেল এর সাথে হাত না মিলাতাম তাহলে আজ তুই সাহেবা পিশাচবংশ সব সুরক্ষিত থাকতো।

বলতে বলতে নিকেলের চোখ দিয়ে অশ্রু ঝড়ে পড়লো। সে নিজের চোখ মুছে স্থীর হয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে।

–“কিন্তু এখন আর নাহ তুই ফিরে এসেছিস। এবার সব আগের মতো হয়ে যাবে। আমি এবার আমার দোস্ত এর সাথে সাথে আছি। কিছুই হবে না তোর।

সে শ্রেয়কে ঠিকভাবে রেখে নিজের পকেট থেকে একটা সুগন্ধময় আতর বের করে শ্রেয় এর নাকের কাছে এনে সুখিয়ে দেয়।

সে তার কাজ শেষ করে ফিরে এসে যা দেখলো হুট করে পিছে ফিরে জোরে জোরে বললো।

–“আহেম জনাব জনাবা আমরা কিন্তু মিশনে আছি আপনাদের রোমান্স শেষ হলে যেতে পারি কি? দুষ্টুমি হেসে পিছে ফিরেই বললো।

মায়াবিনী লজ্জায় অনর্ব থেকে দূরে সরে আসে। আর মনে মনে বললো।

–“শালা বদমাইশ কোথাকার যদি তুই মানুষ হতি তোরে এখানেই খেয়ে ফেলতাম। পিশাচ বলে কিছু করতে পারছি না। তাই বলে আমিও কম না উহহ!

নিজেই রেগে ফুসতে থাকে। অনর্ব নিকেল এর কাছে যাওয়ার আগে মায়াবিনীর কাছে এসে তার কানে ফিসফিসিয়ে বলে–“কি গো বউ এতো লজ্জা পেতে হয় নাকি? সবে মাএ ঠোঁটে চুমু দিলাম এখনো তো আরো…..বাকিটুকু বললো না। মায়াবিনী বাকি কথা বুঝতে পেরে লজ্জা মাখা ফেস করে থাকে।

অনর্ব মুচকি হেসে আবারো বললো–“যত যাই হোক আজ তোমাকে আমার পাওয়ার দেখিয়ে দিলাম। পরবর্তীতে আবারো নিতে চাইলে বলবে কেমন! আজকের মতো তখনো সময় বুঝে চুমু দিয়ে দেবো। উফফ আমি তো মিষ্টি পেয়ে গেছি। এখন চলো মহারাণী।

মায়াবিনী কথা না বাড়িয়ে নিকেল আর অনর্ব এর সাথে নিজেদের গোপন বাসায় চলে গেলো।

_______________________

ইরিন ফজরের নামাজ শেষ করে রেডি হতে লাগে। তার বেডের উপর বক্সটা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সে মুচকি হেসে বক্সটাকে উঠিয়ে সুন্দর ভাবে শুয়িয়ে দিলো।

কিচেনে এসে নিজের জন্যে খাবার রেডি করে তা ড্রাইনিং টেবিলে আনতে গিয়েই —“”আল্লাহ গোওওওও” এক বড়জোর শকড খেলো।

–“কি রে বেপ্পি? দোস্ত রে দেখে এভাবে কেউ ভয় পাই। চোখজোড়া সরু করে লামিয়া বললো। সে ড্রাইনিং টেবিলের চেয়ারে বসে টেবিলের উপর থেকে আপেল নিয়ে খাচ্ছে।

ইরিন তড়িঘড়ি টেবিলের এখানে এসে খাবারগুলো রেখে কোমরে হাত রেখে লামিয়ার দিকে রাগি দৃষ্টি বর্ষণ করে বললো।

–“তুই আমার বাসায় ডুকলি কি করে? আমি ত দরজা লক মেরে দিছিলাম এমনকি চাবিও আমার বালিশের নিচে রেখে দিছিলাম।

–“ত আসছি তোর কি যাচ্ছে? কিছু কি যাচ্ছে! গেলে বল ফিরিয়ে আনবো? ওওও আচ্ছা আপেল আমার পেটে যাচ্ছে তাই ত? ওয়েট!

লামিয়া অর্ধেক আপেলের টুকরা ছুড়ি দিয়ে কেটে টেবিলের উপর রেখে বাকি অর্ধেক টুকরো খেয়ে নে। সে ইরিনকে ইশারা করে আপেলের দিকে তাকাতে বলে।

ইরিন লামিয়ার কথামতো আপেলের দিকে তাকায়।

লামিয়া আপেল এর টুকরাকে দুইহাত দিয়ে চেপে ধরে মুখের উপর বললো।

–“হে মেরে ইয়ার চলে আস আবারো নিজের পূর্ণ রুপে। যাতে সকলের বর্জনে হয় সুবিধা।

ক্ষানিককণের মধ্যে আপেলটা নিজের আগের রুপে চলে আসে। লামিয়া আপেলটা হাতে নিয়ে ইরিনের হাতে দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে ড্রয়িং রুমে এসে সোফায় বসে পড়ে।

–“যাহ বেশি কথা না বাড়িয়ে রেডি হয়ে নে একসাথে অফিসে যাবো আর কিভাবে আসলাম তা নিয়ে এতো গবেষণা করতে হবে না। কারণ তুই জানিস ! গট ইট নাউ গো আর গেট রেডি।

ইরিন নিজের মাথায় এক থাপ্পর মেরে বিরবির করে বলে–“ধ্যাত ভুলে গেলাম কেমনে? লামিয়ার কাছে ত অলৌকিক শক্তি আছে। হুদায় জিগ্গেস করে টাইম লস করতেছি। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নেই নইতো ঐ খারুজ বস আমার মাথা খাবে।

ইরিন রেডি হতে চলে গেলো লামিয়া টিভি অন করে খবরাখবর দেখতে থাকে।

_________________________

সিরাত ধীরে ধীরে চোখজোড়া খুলে দেখে সে বেডের উপর শুয়ে আছে। সে গায়ে ভর দিয়ে উঠে বসে। তখনই মিসেস ইয়াসমিন এসে সিরাতের পাশে বসে বলতে লাগে।

–“বাবা কি হয়েছিল? তুই অজ্ঞান কিভাবে হলি? চিন্তিত হয়ে উদাস ফেস করে সিরাত এর দিকে তাকিয়ে থেকে।

–“ওয়াইট রিয়েলি আমি অজ্ঞান হয়েছি? আমি ত অজ্ঞান হয় নি।

মিস্টার তফাজ্জল মিসেস ইয়াসমিন একে অপরের দিকে ভয়ার্ত চিন্তিত হয়ে তাকায়।

মিস্টার তফাজ্জল সিরাত এর কাঁধে হাত রেখে বলে–“কিছু কি মনে আছে?

সিরাত ভাবতে লাগে কিন্তু কিছুই মনে পড়ছে না। তার মনে জাপসা কিছু সিন ভেসে আসতেছে। সে মিসেস ইয়াসমিন এর দিকে তাকিয়ে বলে–“আব….আহ হ্যাঁ না মানে। আমি কি দেখেছি ঠিক মনে পড়ছে না তবে একজন ব্লাক সুট হাইড ফেস উইড মাস্ক এমন কাকে যেনো দেখেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ তার রুপটা কি….কি যেনো হয়েছিলো??

মিস্টার তফাজ্জল সিরাতের মুখে “রুপ” শব্দটা শুনে মিসেস ইয়াসমিনকে ইশারা করে বলে–“রুপ মানে পিশাচ এমন কিছু বলতে চাচ্ছে। ওকে স্টপ করো।

সিরাত চোখ বন্ধ করে ভাবার চেষ্টা করে বাকি সিন দেখার চেষ্টা করতে চাচ্ছিলো কিন্তু তখনই মিসেস ইয়াসমিন তার মাথায় এক থাপ্পর দিয়ে বলে–“আরে বাবা পরেও ভাবতে পারবি এখন রেডি হয়ে নে। তারপর একসাথে নাস্তা করবো।

সে তার আম্মুর কথামতো আর ভাবলো না। সে রেডি হওয়ার জন্যে ফ্রেশ হতেওয়াশরুমের দিকে যেতেই থেমে পিছে ঘুরে তার আব্বু আম্মুকে বলে–“আচ্ছা আব্বু পিশাচ কি??

সিরাত এর মুখে হুট করে এমন প্রশ্ন শুনে……….
#My vampire lover comes again

#এসেছি ফিরে তোমারই ডার্ক প্রিন্স

#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_13

সিরাত এর প্রশ্নে থতমত খেয়ে যায় তফাজ্জল আর ইয়াসমিন। তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে সিরাত এর দিকে তাকায়।

সে তার আব্বু আম্মুর ফেসের রিয়েকশন দেখে মনে মনে বললো।

–“পিশাচ কি তা নিয়ে ইনারা এতো ভয় পাচ্ছেন কেনো? দেখি উওরে কি বলে।

–“আসলে বাবা পিশাচ মানে এক ধরনের প্রাণী। তফাজ্জল কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে বলছেন।

–“ড্যাড এরা প্রাণী তা ত আমিও জানি তবে পিশাচ দেখতে কেমন? এদের আকার-আকৃতি,,বংশ সব কিছু কি ধরনের? তা জানতে চেয়েছি?

তফাজ্জল চুপ মেরে দাঁড়িয়ে রইলেন তিনি দুই হাত দিয়ে নিজের পাঞ্জাবির হাতা চেপে ধরছেন। ইয়াসমিন তফাজ্জলকে চুপ থাকতে দেখে সিরাত এর দিকে তাকিয়ে সোজাসাপ্টা উওর দিয়ে দেই যেনো সে অন্য কিছু জিগ্গেস না করে।

–“দেখ সিরাত এসব নিয়ে তোর মাথা না ঘামালেও চলবে। তুই তোর ক্যারিয়ার,,তোর জীবনে ফোকার্স কর। পিশাচ প্রাণী এসব শুধু কল্পনা। বাস্তবে এ পিশাচ বলতে কিছুই নেই। কাল্পনিক বইয়ের লেখা গল্পের মতো বুঝছিস?

একনাগাড়ে তিনি কথাগুলো বলে তফাজ্জল কে নিয়ে সিরাত এর রুম থেকে বেরিয়ে যান।

সিরাত সময় নষ্ট না করে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে গেলো।




রেনা নিজের রুমে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। তখন তার আম্মুর বকা শুনে তার মাথার তাপমাএা 100C অতিক্রম করে। তবুও কিছু না করে নিজের রাগ দমাতে রুমে এসে বেডের উপর বসে লেপটপে ভূতের মুভি দেখতে থাকে।

পুরু রুমের লাইটস অফ করে দিয়ে একলা রুমে বসে মুভি দেখছে। জানালা লক করে নি। হালকা খোলা রেখেছে যেনো ঠান্ডা বাতাস ভেতরে আসে। এমনেই শীতের সময় সেখানে রেনার একটাই বদঅভ্যাস শীত আসুক বা গ্রীষ্ম আসুক তার শরীর কখনো গরম বা উচ্চমাএা অনুভব করে না।

রেনা একের পর এক ভূতের মুভি দেখছে। হঠাৎ তার ফোনে কল আসে। সে মুভি দেখা স্টপ করে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে আননোন নাম্বার থেকে কল আসছে।
ফাস্টে ভাবে ধরবে কি ধরবে না? না ধরলেও পরে যদি কিছু করে? না না অপরিচিত কারো ফোন ধরবো না।
ভেবে সে ফোনটা রেখে দে।

কিছুক্ষণের মধ্যে ফোনে এক মেসেজ আসে। সে মেসেজটা ক্লিক করে দেখে।

–“এখনিই কল ধরো নইতো সোজা বাসায় চলে আসবো।

রেনা মেসেজটা দেখে হুট করে শুয়া থেকে বসে পড়ে। তখনিই কলও চলে আসে। সেও সাথে সাথে কল কানে ধরতেই অপর পাশ থেকে বলতে লাগে।

–“কি রে বাবুটা? কল ধরতে এতো সময় লাগে? নাকি আমার থেকে পিছে ছুটার বাহানা খুঁজছো হুমম? দুষ্টুমি হেসে লোকটা কথাগুলো বললো।

রেনার থেকে লোকটার কথাগুলো শুনে রাগ আরো বেড়ে যায়। সে উচ্চ গলায় বললো।

–“ঐ কুকুর একটা কে তুই হুমম? আমাকে ধমকি দেওয়ার সাহস কতো বড়? তুই একবার সামনে আস এই রেনা কি জিনিস সব বুঝিয়ে দেবো। শালা বদমাইশ কোথাকার ! সাহস থাকলে সামনে এসে দেখা ভিতুর মতো পিছ থেকে কল করে কি ধমকি দিস?

রেনা কথাগুলো বলা শেষ করতেই তার কাশি এসে যায়। লোকটা তার কাশির শব্দ শুনে বলে।

–“আরে তুমি ত দেখি হাঁফিয়ে গেলে যাও বাবু পানি খেয়ে নাও। আরো গালিগালাজ বকাবকি করতে হবে ত তাই না? মুচকি হেসে সে চেয়ারের বসে পড়ে।

রেনা নিজের চোখজোড়া ঘুরিয়ে নিজেকে শান্ত করে সুন্দর সুরীল কণ্ঠে বললো–“শুনেন কে আপনি? আর হঠাৎ এতো ভোরবেলায় কল দেওয়ার কারণ কি অনুরোধ করে বলবেন?

লোকটা নিজের বুকের বাঁ পাশে হাত রেখে বলে–“ইসস তোমার মুখে আপনি শুনে কেমন যেনো তোমার জামাই জামাই লাগছে ! মুচকি হেসে রেনাকে লজ্জা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

রেনা শুনে চোখজোড়া গোল করে ভাবে–“কি মানুষ রে ভাভাগো? বলছি কি আর বুঝছে কি? আবাল কাকে বলে?

এবার রেনা সোজাসুজি বলে–“দেখেন কে আপনি জানি না? “গুড নেক্সট……..লোকটা হেসে বললো।
ত আমি কল কেটে(রেনা)……আ আ না না এটা করো না। করলে কিন্তু তোমার ভাইয়ের আসল রুপের কথা সবাইকে জানিয়ে দিবো। লোকটা বাঁকা হেসে নিজের পেন্টের পকেটে হাত রেখে বললো।

রেনা লোকটার কথায় ঘাবড়ে যায় সে ভাবতে লাগে–“এ আবার কোন দুশমন এসে টপকালো? আর এইবা কিভাবে ভাইয়ার ব্যাপারে জানে?

–“কি চান?………..এতো এখন এসেছো আসল কথায়। শুনো বেশি কিছু করতে হবে না শুধু আমার সাথে প্রেম করতে হবে। এই কথা বলেই লোকটা কল কেটে দিলো।

রেনা প্রেম করতে হবে শুনে ভেবাচ্যাকা খেয়ে যায়। সে আনমনে বলতে লাগে।

–“প্রেম করতে হবে কি আজব মানুষ রে? প্রেঙ্ক করার জন্যে আমার নাম্বারিই পেয়েছিলো। হুদায় মুডটা নষ্ট করে দিলো গাধা ফকিরজা কোথাকার উহ !

রেনা লোকটার চৌদ্দ গোষ্ঠী উজার করে ফোনটা চার্জে দিয়ে ফ্রেশ হতে যায়।

____________________________

ইরিন লামিয়া দুইজনে নাস্তা করে অফিসে চলে আসে। দুইজন দুইজনের কেবিনের দিকে যেতে লাগে। ইরিন নিজের কেবিনে যাওয়ার আগে সিরাত এর কেবিনের দিকে আড়চোখে উকিঁ মেরে দেখে কেবিন খালি তালাবদ্ধ। সে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সাড়ে আটটা বাজছে।

ইরিন মনে মনে বলে–“আজ ত চমৎকার হয়ে গেলো। স্যার নিজেই দেখি আসে নি। আগে তো নিজেই কতো সুন্দর করে ফাউল বক্তব্য দিতো…..তোমরা সময়মতো চলে আসবা না আসলে বিনা কারণে ব্যান করে দিবো উহহ। আজাইরা কাহিনি করে শুধু। আসছে আমাকে ব্যান করতে। কথাগুলো সে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে হিরোইন এর মতো করে বলতে থাকে।

ইরিন পিছে ঘুরতেই কার বুকে ডুক করে মাথায় বারি খেয়ে পড়ে যেতে লাগলেই সামনের জন্যে শক্ত করে তার হাত চেপে ধরে টান মেরে দাঁড় করিয়ে দে।

ইরিন এর কলিজায় পানি শুকিয়ে তছনছ হয়ে গেলো। সে পড়ে যাওয়ার ভয়ে সামনের মানুষটার দিকে তাকিয়ে দ্বিগুণ ভয় পেয়ে যায়। সামনের মানুষটা তার দিকে লাল বর্ণ চোখজোড়া করে তাকিয়ে তার হাত ছেড়ে দে। ইরিন সাথে সাথে দূরে সরে আসে। সে কোনোভাবে
এক ঢোক গিলে বলে।

–“স…সরি সিরাত স্যার আ…আমি আপনাকে দেখি নি তাই! মাথা নিচু করে বললো।

–“বেশি বক্তব্য দেই তাই না? আজাইরা কাহিনি করে তাই না?

সিরাত ইরিন এর দিকে তাকিয়ে একপা দুই পা করে তার কাছে যেতে থাকে।

ইরিন সিরাতের কাছে আসা দেখে সেও একপা দুইপা করে পিছে যেতে থাকে। যেতে যেতেই সে দেওয়ালের সাথে লেগে যায়। ঐ সময় সব স্টাফ নিজেদের কেবিনে বসে কাজ করছিলো। কেউ দেখছে না সিরাত ইরিন এর প্রেমলিলা।

প্রেমলিলা বললে ভুল হবে দুইজন তো শেয়াল আর নেকড়ের মতো একে অপরকে মেরে ফেলার ফান্দা আটকায়। তবে এরিই মধ্য দিয়ে আগমন হবে নতুন এক ভালোবাসার কাহিনি।

……………চলবে…………..
……………….চলবে……………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here