#হৃদপিন্ড
#জান্নাতুল নাঈমা
#পর্ব-২২
প্রচন্ড মাথা ব্যাথা ধরেছে বালিশে পিঠ ঠেকিয়ে কেবলি চোখটা বুজেছে সায়রী।
দিহান সুপ্তিকে ঘুম পাড়িয়ে রুমেই নিয়ে আসছিলো তন্নি জোর করেই তাঁর কাছে রেখে দিলো।
দিহান মনে মনে ভাবছিলো সায়রী হয়তো ভাববে দিহান ইচ্ছে করেই সুপ্তিকে অন্য ঘরে রেখে এলো খানিকটা চিন্তা নিয়েই রুমে প্রবেশ করলো সে।
রুমে ঢুকতেই সায়রীকে চোখ বুজা অবস্থায় দেখতে পেলো বেশ বুঝলো ক্লান্ত অনেক তাই কিছু না বলে বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরুলো।
সায়রী পোশাক পাল্টায়নি ঘুমে পড়ে যাবে যাবে ভাব তাই মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চাপালো এতে ঘুম টাও ভেঙে যাবে রন মূর্তির রূপটাও দেখতে পারবে অনেক বছর পর মুচকি হেসে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে সায়রীর দিকে চেয়ে গলা ছেড়ে গান ধরলো।
“প্রেমেরই দুম জ্বরে দুচোখের ঘুম কাড়ে
কেনো প্রেম গুম করে রেখে দিস হিমঘরে?
হলো যখন চেনা, জানা বারো আনা,,,
জানিয়ে প্রেম জমে যাবে ষোল আনা,,,
পাগলুওওও,,,থোরাছা কারলে রোমান্স,,,
পাগলুওওও থোরাছা কারলে রোমান্স”
এতো জোরে গাইছে যে আওয়াজটা কানে বার বার বাড়ি খাচ্ছিলো ঘুম ছেড়ে গেলো মাথাটা কেমন যেনো করে ওঠলো। এরওপর সেই বিরক্তকর গান যার জন্য কলেজে রোজ ঝগরা হতো দুজনের।
আর দিহান ইচ্ছে করেই কানের কাছে এসে গলা ছাড়তো। সায়রী একসময় কেঁদেই বলেছিলো প্লিজ দিহান এই বিরক্তকর হিরোর গান তুই গাবি না। গাইলেও আমার সামনে না। তাঁর পর থেকেই শুরু হলো দিহানের জ্বালানো সুযোগ পেলেই দেবের ডায়লগ,দেবের গান,দেবের স্টাইল দেখিয়ে রাগিয়ে দিতো সায়রীকে।
সায়রী তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তে চেয়ে আছে দিহান এক গাল হাসি নিয়ে গান গাইছে আর ঘার ঘোরাচ্ছে।
এবার সায়রী যেনো তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠলো বাসরঘর লন্ডভন্ড করে বালিশ ছুঁড়ে মারলো দিহানের দিকে।
দিহান চোখ বড় বড় করে বালিশটা কেচ ধরে বিছানায় ছুঁড়ে দিয়ে একটু এগিয়ে সায়রীর দিকে আগা গোড়া চোখ বুলিয়ে আবার গান ধরলো –
ওওসুন্দরী ফুরি তুমি মন করিলা চুড়ি,,,
যদি ডাকি তোমারে মায়ার টানে আইবানি ফিরি বলেই চোখ মেরে বিছানায় দুহাত দুদিকে দিয়ে গাঁ এলিয়ে দিলো।
মজার মুডে সায়রী একেবারেই নেই বুকের ভিতর চাপা আর্তনাদ গুলো খুব করে ওকি দিচ্ছে এর ওপর দিহানের এমন তামাশায় মেজাজটা প্রচন্ড বিগরে গেলো। ভিতরের রাগটা বাইরে প্রকাশ করলো এবার।
দুহাতে দিহানের কলার চেপে দিহানের দিকে ঝুঁকে রাগান্বিত বুলি ছাড়লো।
–কেনো করলি এটা তুই৷ কেনো করলি,,, কেনো বিয়ে করলি আমায়। কিসের মোহে বল কিসের মোহে?
আজ বিয়ে করেছিস এক বাচ্চার মা কে কতোদিন ভালো লাগবে তোর। তোরা পুরুষ রা তো গিরগিটির মতো রঙ বদলাশ আজ সায়রীকে ভালো লাগছে,সুপ্তিকে ভলো লাগছে কাল আর এই সায়রীকে ভালো লাগবে না। কাল ঠিকি অন্য নারীতে আসক্ত হয়ে পড়বি।আজ চোখ ভরা স্বপ্ন দেখিয়ে বুকে টেনে নিয়ে কাল মাটিতে ছুঁড়ে ফেলতেও দুবার ভাববি না। কি শান্তি পাশ তোরা বলবি কি শান্তি পাশ বলেই হুহু করে কেঁদে ওঠলো।
দিহান হতবাক হয়ে রইলো। বুকের ভীতর চীনচীনে ব্যাথা অনুভব হলো। সেই সাথে রাগ হলো ভীষণ সায়রী শিশিরের সাথে তাঁর তুলনা করছে বলে।
এই মেয়ে কেনো বুঝেনা” সব পুরুষ কাপুরুষ হয় না”
এই মেয়ে কেনো বুঝতে পারছে না “সব পুরুষ ভেঙে চুরমার করে দিতে আসে না ”
কিছু পুরুষ কারো ভেঙে চুরমার হয়ে যাওয়া হৃদয়ে ভালোবাসার পরশ ছুয়িয়ে নতুন করে বাঁচতে শেখাতেও আসে। ভালোবাসার অন্য এক রূপ অনুভব করাতেও আসে।
“সব পুরুষ একা করে দিয়ে যায় না।
কিছু পুরুষের আগমন ঘটে শূন্য হৃদয় ভরাট করার জন্য।
কিছু পুরুষ সকল একাকিত্ব দূর করে সারাজীবনের সঙ্গী হওয়ার জন্যও জীবনে চলে আসে”
এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে দিহান। সায়রী চিৎকার চেচামেচি চারদেয়াল ভেদ করে বাইরেও চলে গেছে।
বাড়িতে মেহমান ভরপুর দিহান সায়রীকে থামানোর চেষ্টা করতেও কাজ হলোনা। উপায় না পেয়ে সায়রীর দুহাতে চেপে ধরে নিজের ওপর থেকে সরিয়ে বিছানায় চেপে ধরলো। দুহাত সায়রীর দুহাতের উপর শক্ত করে চেপে রাখলো।
সায়রী ছুটতে নিলে দিহান সমস্ত শক্তি দিয়ে তাঁকে চেপে মুখোমুখি মুখ করে বললো সায়ু পাগলামি কেনো করছিস। প্লিজ চুপ কর।
–যে ভয়টা পাচ্ছিস সেটা কখনোই সম্ভব না।
সবাই এক হয় না সায়রী, বেঈমানী টা সবার রক্তে থাকে না এটা মাথায় রাখিস। আর রইলো অন্য নারীতে আসক্ত হওয়া এটা এতোদিন বলেছিস মানিয়েছে এখন আর বলিস না দোস্ত,,,
সায়রী কান্নাভেজা চোখে তাকালো।
দিহান মুচকি হেসে বললো নিজের ঘরে এতো সুন্দরী বউ রেখে বাইরে নজর দিবো কেনো?
“কাপুরষদের চোখে নিজের বউ ভালো লাগে না তাই তাঁরা পরনারীতে আসক্ত হয়”
তোর কি এতো বছরে এটা মনে হয় আমি কাপুরুষ??
আমি হচ্ছি আসল পুরুষ বুঝলি তাই আমার কাছে আমার বউই সেরা,, বলেই ভূবন ভুলানো এক হাসি দিলো।
সায়রী কিছুটা শান্ত হলো। মৃদু স্বরে বললো ছাড় আমায় হাতে লাগছে,,
দিহান চমকে গেলো। কখন যে সায়রীর এতো কাছে চলে এসেছে খেয়ালই করেনি। পুরো শরীরে এক মৃদু অনুভূতি বয়ে গেলো। হাজারটা,ইচ্ছে রা ওকি দিলেও সবগুলোকেই ধামাচাপা দিয়ে বললো বন্ধুত্বের খাতিরে তোর কপালে একটা কিস করি ডোন্ট মাইন্ড বলেই চট করে কিস করে সরে গেলো।
সায়রী আবারো কেঁদে ফেললো যেটা ছিলো সুখের কান্না।
,
ইমন হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না।
বাসর ঘরের নিয়ম গুলো তাঁর সদ্য বিবাহ করা ষোল বছর বয়সী কিশোরী বউ কিনা তাঁকে শেখাচ্ছে ভাবা যায়।
হালকা কেশে ওঠলো ইমন।
মুসকান ঘোমটা খুলে দ্রুত টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে ইমনের সামনে দিলো।
ইমন পানিটা খেয়ে গ্লাস টা নিজেই রেখে গম্ভীর ভাবে বললো যাও শাড়ী পাল্টে নাও।
–নিয়মগুলো পালন না করলে অমঙ্গল হবে তো বলেই মুখ ভাড় করলো।
ইমন তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছুঁড়ে দিলো।
মুসকান মাথাটা নিচু করে ফেললো। মুখটাও ভাড় হলো ভীষণ তাঁর জামাকাপড় গুলো ইয়ানা রেখে গেছিলো সেখান থেকেই হালকা গোলাপি রঙের সেলোয়ারটা নিয়ে বাথরুম চলে গেলো।
ইমন স্বস্তির এক শ্বাস নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেবে অমনি বাথরুম থেকে হালকা আর্তনাদ এলো।
ইমন খানিকটা ভয় পেয়েই ওঠে বসলো।
কি হলো না হলো কিছু না ভেবেই দ্রুত বাথরুমের সামনে গিয়ে নক করলো।
মুসকান দরজা না খোলায় কঠিন স্বরে খুলতে বলতেই দরজা খুলে যায়।
মুসকান অপরাধীর মতো মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে।
ইমন ভ্রু কুঁচকে বললো কি হয়েছে।
মুসকান আমতা আমতা করে বললো ইয়ানা আপুকে একটু দরকার।
–কি দরকার আমায় বলো রাত কটা বাজে খেয়াল আছে ওদের ডাকাটা এখন বেমানান।
মুসকান ভয়ে চুপ করে রইলো।
ইমনের ব্যাপারটা স্বাভাবিক লাগলো না।
–স্টুপিডের মতো এখানে হা করে দাঁড়িয়ে না থেকে কিছু লাগলে বলো নয়তো কাপড় পাল্টে ঘুমাতে আসো।
বলেই নিচের দিকে চোখ পড়তেই দেখলো কয়েকটা সেপ্টিপিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সাদা টাইসের ওপর পানির সাথে তরল কিছু মিশ্রিত হচ্ছে লাল রঙের।
ইমন ভ্রু কুঁচকে মুসকানের দিকে তাকালো।
চোখ দুটো টলমল, মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে সে ঠিক নেই।
ইমনের ভীষণ রাগ হলো। মুসকানের মতো মুগ্ধতা, স্নিগ্ধতা, নির্মলতা,নমনীয়তা ভরা মেয়ে, মানবী যেমন দুনিয়া তে আর দুটো দেখেনি তেমনি তাঁর মতো বোকা,গাধীও আর দুটো দেখেনি।
–নিশ্চয়ই কিছু ঘটিয়েছে মুখ ফুটে বলবে এই সেন্সটুকু আল্লাহ একে দেয় নি।
দাঁতে দাঁত চেপে বললো কি হয়েছে, কি ঘটিয়েছো আমাকে বলো নয়তো তোমাকে কি করবো আজকে ভেবেও পাবেনা বলো।
ধমক খেয়ে গড় গড় করে বললো আঁচল টা আটকে আছে খুলছে না।
ইমন এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বাথরুমে ঢুকে পড়লো।
কাঁধে ধরে পিছন ঘুরাতেই চমকে গেলো ইমন।
রিক্তা কয় ধমক খাবে কাল তা ঠিক করাই ছিলো কিন্তু এই মেয়েকে আজ শায়েস্তা করেই ছাড়বো বিরবির করতে করতে পিনটা একটান দিতেই মুসকান আহ করে ওঠলো।
আরো কয়েকফোঁটা রক্ত ছিটকে পড়লো কিছুটা ইমনের হাতে।
চোখ দিয়ে কয়েকফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো।
ইমন হাতটা পানিতে ধুয়ে কিছুটা পানি মুসকানের পিঠে দিলো। মুসকান ঠান্ডায় শিউরে গেলো হালকা কাঁপছে সে।
পিনটা যে জায়গায় ঢুকেছিলো ইমন সেখানে আঙুল ছুয়াতেই মুসকান সরে গেলো।
ইমন রক্তচক্ষু তে চেয়ে দুকাধে বেশ শক্ত করে চেপে ধরলো।
–অনুভূতি নেই? এই শরীর কি দিয়ে তৈরী? হাত কেটে গেছে,শরীরে পিন ঢুকে গেছে। এতে কিচ্ছু জায় আসেনা?বলতে অবদি পারো না এই বোবা তুমি??
ইমনের চিৎকারে চারদেয়াল যেনো কেঁপে ওঠলো সেইসাথে মুসকানের হাত পা কাঁপতে শুরু করলো।
কি হলো কথা বলতে পারো না? কাজের বেলায় হাত চলে এমনিতে কথা বলার বেলায় মুখ চলে নিজের দরকারে কেনো এই মুখ চলে না? কোথাও আঘাত পেলে কেনো মুখ ফুটে বলো না সমস্যা কি?
আমি কোন রোবট নিয়ন্ত্রণ করছি না, আর না কোন পুতুলের সাথে বসবাস করছি যার নিজের শরীরে আঘাত হলে বিন্দু মাএ জায় আসবে না।
এই কথা বলো??
মুসকান এবার প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলো ইমনের হুংকারে। কি বলবে সে তাও বুঝতে পারছে না।
সে তো এমনি ছোটবেলা থেকে অনেক দুঃখ, কষ্ট সয়েছে কোথাও ব্যাথা পেলে কাউকে বলতে পারেনি। বাবা বাড়ি থাকতো না সৎ মা কে বললে সে এসবে গুরুত্ব দিতো না। ব্যাথা পেলে সয়ে নিতো নীরবে কাঁদতো এটুকুই। সেই অভ্যাসেই যে অভ্যস্ত সে। এখন হয়তো অনেকেই তাঁর ব্যাথার দাম দেবে।
কিন্তু বলতে ইচ্ছে করে না তাঁর নিজের ব্যাথা একান্তই নিজের করে রাখতে চায় সে।
ইমন আজকের দিনে এমন বিহেইভ করতে না চাইলেও নিজের রাগটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।
আরো কিছু বলতে যাবে তখনি থেমে গেলো।
আর কিছু বললো না। মুসকানের ভয়ে কাপুনি, চোখের পানি দেখার বিন্দু ইচ্ছে এখন তাঁর নেই।
আর না তাঁকে বকতে ইচ্ছে করছে।
নিজের মতো আর যে কয়টা পিন ছিলো খুজে বের করে করে খুলে শাড়িটা খুলে ফেললো।
মুসকান এবার লজ্জায় শেষ,ভয় টা তাঁর মূহুর্তেই হাওয়া হয়ে গেলো। বুকের ভিতর যেনো তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো। হৃদস্পন্দন বেড়ে গেলো তীব্র মাএায়।
ইমনের সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই সে শাড়িটা নিচে ফেলে মুসকানকে পিছন ঘুরিয়ে ব্লাউজের ফিতায় টান দিলো। মূহুর্তেই মুসকান শিউরে উঠলো।
মুসকানের উন্মুক্ত পিঠের তীলটা ইমন দেখেও না দেখার ভান করে বুঝেও না বুঝার ভান করে গম্ভীর গলায় বললো এবার কাপড়টা পাল্টে নাও নেক্সট কখনো শাড়ি পড়বেনা। যেদিনে শাড়ি পড়া শিখবে,যেদিনে শাড়ি খুলতে গিয়ে পিন নিজের শরীরে না ঢোকাবে সেদিন শাড়ি পড়বে তাঁর আগে না বলেই বেরিয়ে গেলো।
কাপড় পাল্টে বেরুতেই দেখলো ইমন রেডি হচ্ছে।
মুসকান কে দেখেই বললো তুমি ঘুমাও আমার খুব জরুরি কাজ পড়ে গেছে এখুনি বেরুতে হবে।
মুসকান অবাক হয়ে বললো এতো রাতে কোথায় যাচ্ছেন আপনি??
ইমন মুসকানের মুখের দিকে তাকাতেই মুসকান মাথা নিচু করে ফেললো।
–না মানে এতো রাতে তো কোথায়ও বের হন না তাই আর কি।
–তুমি ঘুমাও একঘন্টার মধ্যেই এসে পড়বো নো টেনশন।
ইমন বেরুতেই মুসকান পিছন পিছন বের হলো ইমন থেমে গিয়ে বললো রাত অনেক হয়েছে রুম ছেড়ে এক পা নড়বে না মুসকান বাড়িতে আজ অনেক মানুষ। আমি বের হওয়ার পর একা রুমে আসতে হবে সো না বের হওয়াটাই ব্যাটার যাও রুমে যাও ভিতর থেকে আটকে দাও।
ইমন কল্পনাও করতে পারেনি আজকে তাঁর বের হতে হবে। এমন একটা নিউজ তাঁর কানে আসবে বেশ তারাহুরোয় ড্রাইভ করে থানায় এলো ইমন।
পুলিশের সাথে কথা বলে সব ঠিকঠাক করে নিয়ে কয়েকজনকে ফোন করেই আবার বেরিয়ে পড়লো।
রাত চারটা বাজে দ্রুত বাড়ি ফিরতে হবে।
মুসকান হয়তো ঘুমিয়ে গেছে বা আমার টেনশনে ঘুমাতেই পারেনি সারাদিনের ক্লান্তিটা কারোই দূর করা হলো না।
নানারকম চিন্তা মাথায় নিয়ে ড্রাইভ করছে ইমন।
এমন সময় তাঁর ফোন বেজে ওঠলো ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে ওঠলো নো টেনশন বস।
আপনার কাজ হয়ে গেছে।
ইমন মুচকি হেসে বললো ওয়েল ডান।
খুশির মাএা এতোটাই বেশী ছিলো যে গাড়ি মেইন রাস্তা ছেড়ে সাইট রাস্তায় চলতে শুরু করেছে।
এক পর্যায়ে বিরাট বড় গাছের সাথে গাড়ি বাজতেই বিকট এক শব্দ হলো।
সবে চোখ বুজেছে পাঁচটা অবদি অপেক্ষা করার পর আর জেগে থাকতে পারলো না মুসকান।
ঘুমের রাজ্যে পারি দিতে না দিতেই বেশ আওয়াজ ভেসে এলো কানে। সেই সাথে অস্বাভাবিক ভাবে দরজায় শব্দ হতে লাগলো।
মুসকান ভয়ে ধড়ফড়িয়ে ওঠে বসলো।
প্রথমে ভাবলো সে ঘুমিয়ে যাওয়ায় ইমন রেগে দরজা ধাক্কাচ্ছে।
ইশ কি ভুল টাই না হলো। এখন ওনার ধমক কয়টা খাবি কল্পনাও করতে পারবিনা মনে মনে নিজেকে ভয় দেখিয়ে বিছানা ছেড়ে নামতেই বুঝতে পারলো ইমন নয় দাদী আর ইয়ানা ডাকছে।
দাদীর অস্বাভাবিক আওয়াজ বোধ হয় কাঁদছে।
কিন্তু কাঁদছে কেনো??
বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠলো মুসকানের।
ছুটে গিয়ে দরজা খুলতেই দাদী মুসকানকে জরিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।
পরক্ষনেই বেশ ধমকাতে শুরু করলো।
কেনো যেতে দিলি, কেনো দাদু ভাইকে যেতে দিলি।
বাসর ঘরে কেউ বরকে ছাড়ে। কতোবড় অঘটন টাই না ঘটালি তোরা মিলে।
তোকে না বলেছিলাম দাদু ভাইকে বেঁধে রাখতে।
নিজের স্বামীকে ধরে রাখতে পারিসনা বলেই তো এতো বড় দূর্ঘটনা ঘটলো বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো।
চলবে…..ই