ছুয়ে দিলে মন পর্ব ১৬+১৭

#ছুঁয়ে_দিলে_মন
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পার্টঃ১৬
আমি বিভোর আছি উনাতে।চারদিকের খেয়াল নেই।
উনার বাহুডোরে আবদ্ধ থেকে যেন আমি
অন্য রাজ্যে চলে গেছি।সেখানে সুখ আর সুখ।
তবে একটা জিনিসের ওই ভয় এই সুখ আমার কপালে
সইবে তো।হঠাৎ তার কথায় ভ্রম ভাঙ্গে।

-” চারদিকে তাকিয়ে দেখবে না নিঝুম।শুধু কি আমার বুকেই থাকবে।অবশ্য থাকলেও সমস্যা নেই আমি তোমাকে সারাজীবন আমার বুকে নিয়ে থাকতে রাজি আছি।”

লজ্জা পেয়ে উনাকে ছেড়ে দিলাম।
চারদিকে চোখ বুলাতেই আমার চোখ ইয়া বড় বড় হয়ে গেলো।
পুরো ছাদ পার্পেল আর্টিফিসিয়াল ফ্লাওয়ার আর পার্পেল বেলুন দিয়ে সাজানো।সফ্ট লাইটিং হুয়াইট আর পার্পেল এর কম্বিনেশনে।

-” আকাশের উপরে তাকাও নিঝুম।”

উনার কথায় চমকে আমি আকাশ পাণে তাকাতেই বিকট শব্দে আতসবাজি ফুটে উঠলো আর তা দিয়ে ‘ আই লাভ ইউ নিঝুম ‘ লিখা উঠলো।
আমি আনন্দে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছি।উনি আমাকে নিজেই ধরে নিয়ে ছাদের আরেক সাইডে নিয়ে গেলেন সেখানে যেতেই আমার চোখ ছানা বড়া হয়ে গিয়েছে।
অসংখ্য পার্পেল কালার বেলুন তাদেত মধ্যে মনে হয় ছোট লাইট ফিক্স করা আর এই বেলুনের সাথেই আমার একটা ছবি আটকানো।বেলুনগুলো হাওয়ায় ভাসছে আর আমার ছবিটাও।
আমার হাত আপনা-আপনি মুখ চেপে ধরলো।
আনন্দে আমার চোখ ভিজে উঠলো।
এতোটা পাগল কেনো উনি?
আমি কান্নাভেজা গলায় বললাম,

-” এতোটা পাগল কেন আপনি?
এইযে এখন এতো সুখ আর আনন্দ দেখে যে আমার
কান্না পাচ্ছে।”

উনি আমার কাছে আসলেন।আমার কপালে ঠোঁটের ছোয়া দিলেন আমি চোখ বুজে নিলাম।

-” তোমার সুখ আর আনন্দটাই তো আমাকে আনন্দ দেয় নিঝুম।নিভৃতের নিঝুম খুশি তো নিঝুম খুশি।
এখন এইসব কান্না থামাও চলো কেক কাটবে।”

উনার হাত ধরে টেবিলের সামনে নিয়ে আসলেন নিজে বসে আমাকে হেচকা টানে উনার কোলে বসিয়ে দিলেন।
আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম,

-” কি করছেন আপনি?ওইপাশে একটা চেয়ার খালি ওইখানে বসি আমি।”

উনি ভ্রু-কুচকে তাকালেন আমার দিকে বললেন,

-” আমার কোলে বসতে তোমার কোন সমস্যা?”

-” নাহ নাহ তা হবে কেন?মা..মানে আমাকে কোলে নিয়ে বসতে আপনার অসুবিধে হচ্ছে নাহ?”

-” আমার বউকে কোলে নিয়ে ঘুরতেও আমার কোন সমস্যা নেই বুজেছো।আর রইলো কথা বউকে কোলে নেওয়া আমি বউ আর বাচ্চা দুটোকেই একসাথে কোলে নিয়ে ঘুরতে পারবো।জিম করে বডি কি এমনে এমনেই বানিয়েছি?”

আমার গাল লজ্জায় গরম হয়ে উঠলো কান গরম হয়ে মনে ধোয়া বের হচ্ছে।এসব কি বলছেন উনি?
বিয়ে হয়নি একমাস ও হয়েছে আর উনি বাচ্চা কোলে নিয়ে ঘুরবে সেই পর্যন্ত চলে গেছেন।
হঠাৎ কানে কামড় এর আভাস পেয়ে হালকা আর্তনাদ করে উঠালাম আমি।
কানে হাত দিয়ে উনার দিকে অসহায় চোখে তাকিয়ে বললাম,

-” এটা কি করলেন আপনি?”

-” আসলে তোমার গাল আর কান লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে তাই কোন্ট্রোল করতে না পেরে কানে কামড়ে দিলাম। ”

আমি হা হয়ে রইলাম বলে কি এই লোক।
আমাকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে উনি চোখের ইশারায় আমাকে কেক কাটতে বললেন।
আমিও উনার হাত ধরে কেক কাটলাম।
একে অপরকে কেক খাইয়ে দিলাম।অবশেষে ডিনার
করে নিলাম দুজনে।
ছাদ থেকে নামার সময় গাউনের সাথে পা আটকে পড়ে যেতে নিলাম।
কিন্তু উনি আমাকে ধরে ফেললেন।
তারপর আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আমাকে
কোলে তুলে নিলেন।
আমি বললাম,

-” কি করছেন এইভাবে কোলে নিলেন কেন?রিসোর্টে অবেকেই আছে কি ভাব্বে?”

উনি আমার কথায় হেসে দিলেন। আশ্চর্য এখানে হাসার কি আছে?
উনি আমার নাকে নিজের নাক ঘেসে দিয়ে বললেন,

-” তোমার এতে টেন্সন করে লাভ নেই।আর ফোর ইউর কাইন্ড ইনফোরমেশন এই পুরো রিসোর্ট টাই আমি বুক করে নিয়েছি।”

আমি চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বললাম,

-” এইসব কেন করলেন? শুধু টাকা নষ্ট করা আমার পছন্দ নাহ।”

উনি আমার কথায় মুখ ফুলালেন।বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টিয়ে বললেন,

-” আমার কিউট বউটাই অভিমান করেছে তাই তো এইসব করলাম।এখন সব আমার দোষ।আমার বউটাহ অভিমান করলে আমি এইভাবেই অভিমান ভাঙ্গাবো।”

আমি উনার এইভাবে বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টিয়ে কথা বলার স্টাইল দেখে খিল খিল করে হেসে দিলাম।
হাসতে হাসতে আমার চোখে পানি চলে এসেছে।
হাসি থামিয়ে উনার দিকে তাকাতেই দেখি।উনি আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
আমি হালকা করে উনার গালটায় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।
উনি মুচকি হেসে আবারো আমার দিকেই তাকালেন।
আমি লজ্জা পেয়ে দু-হাতে মুখ ঢেকে বললাম,

-” উফফ! এইভাবে তাকাবেন না! ”

উনি কেমন নেশা কন্ঠে বলে উঠলেন,

-” কেন? আমার বউ আমি দেখবো।”

-” আ…আমার ল..লজ্জা লাগে।”

-” হাত সরাও। ”

-” নাহ! “,

-” সরাও নিঝুম।”

আমি আস্তে করে নিজের হাত সরিয়ে নিয়ে উনার দিকে তাকালাম।আমি উনার চোখে স্পষ্ট নেশা দেখতে পাচ্ছি।
উনি কাঁপন ধরা গলায় বলেন,

-” তুমি যে এইভাবে হেঁসে আমার হৃদস্পন্দন থামিয়ে দেও।আমার যে নিশ্বাস আটকে যায়।
ইচ্ছে করে তোমাকে আমার বুকের মাজে লুকিয়ে রাখি।
যাতে করে এই হাসির সাক্ষাত আর কেউ না পায়।”

আমি লজ্জায় একেবারে মিইয়ে গেলাম। উনার বুকের লেপটে রইলাম।বললাম,

-” আমিও তো চাই আপনার বুকের মাজে মিশে থাকতে।
এই বুকটাযে শুধুই আমার।এইটাই আমার শান্তির স্থান।
আমার স্বামিই আমার সব।”

উনি আমার গালে উষ্ণ স্পর্শ দিলেন।আমি উনার গলা জড়িয়ে ধরে উনার বুকে মুখ লুকিয়ে রইলাম।
এইভাবে রুমের সামনে আস্তে উনি আমাকে নামিয়ে দিলেন।
তারপর রুমের দরজা খুলে দেখি সব অন্ধকার।
উনি আমাকে এখানে দারাতে বলে।নিজে আগে গিয়ে
রুমের লাইট জ্বালাতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম।
পুরো রুম পার্পেল বেলুন আর আর্টিফিসিয়াল ফুল দিয়ে
সাজানো।
নিভৃত আমার থেকে দ্বিগুন অবাক হওয়া গলায় বললেন,

-” আমি এইসব করিনি?”

আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলাম স্রেফ।
হঠাৎ ড্রেসিংটেবিলের আয়নায় চোখ যায়।
আমি গাউনটা ধরে আস্তে করে সেদিকে হেটে গেলাম।
আয়নায় একটা কাগজ আটকে রাখা।
আমি কাগজটা তুলে নিলাম।
সেখানে লিখা,

‘ বান্ধবী হ্যাপি সেকেন্ড বাসর রাত। এইগুলা আমিই করেছি।ইঞ্জয় ইউর ফার্স্ট নাইট এগেইন।’

যা বুজলাম এইগুলা আমার পাগল বান্ধবী রিধি’র কাজ।
নিভৃতের কথায় আমি উনার দিকে তাকালাম।

– কে দেখছো ওখানে?”

আমি চোখ নামিয়ে জবাব দিলাম।

-” রিধি’র কাজ এইগুলা।”

উনি ছোট্ট একটা শ্বাস ফেললেন।

-” ওকে তুমি ফ্রেস হয়ে আসো।আমি সার্ভেন্ট ডেকে
এইগুলা পরিষ্কার করে দিচ্ছি।”

আমি উনার দিকে বিষ্ফোরিত নয়নে তাকালাম।
আমাদের মাজে তো সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।
তবুও উনি আমাকে ফ্রেস হতে যেতে বলছেন।
আমি ভালোভাবেই বুজতে পারছি উনি সেদিনের জন্যেই আজ আমার সাথে এরকম করছেন।
উনার মনের জড়তা কাজ করছে।
কিন্তু আমি তো আর উনাকে উনার অধিকার থেকে
বঞ্চিত করতে চাইনা।
আমি উনাকে ভালোবাসি,উনি আমাকে ভালোবাসেন।
তাহলে আর কোন জড়তা না।
আমিও চাই আমার স্বামির সেই স্বর্গীয় স্পর্শ।
নিজেকে নিজের স্বামির কাছে বিলীন করে দিতে চাই।
আমি একপা দুপা করে এগুলাম উনার কাছে।
উনি সার্ভেন্ট’স কে কল লাগাচ্ছেন বোধহয়।
আমি গিয়ে উনার হাত থেকে ফোনটা কেরে নিলাম।
উনি তাকালেন আমার দিকে অবাক হয়ে।
আমি উনাকে আরো অবাক করে দিয়ে
উনাকে জড়িয়ে ধরলাম।উনার বুকের কাছের শার্টের দুটো বোতাম খুলে দিয়ে সেখানে চুমু খেলাম।
উনি আমার কোমড় জড়িয়ে ধরলেন।
বললেন,

-“নিঝুম আর ইউ ওকে?”

আমি তাকালাম উনার চোখের দিকে।লজ্জা সরম এক সাইডে রেখে অনেক সাহস জুগিয়ে বললাম,

-” আমি ঠিক আছি।আর আমাদের মাজেও সব ঠিক আছে।আর আপনার মনে যে জড়তা আছে তাও দূর করে দিন।আজ আমি নিজেকে আপনার মাজে বিলীন করে দিতে চাই।আপনি আমার আমি আপনার।
নিজের স্বামিকে আমি পুরোপুরি আমি নিজের করে চাই নিভৃত।”

উনি অবাক হয়ে রইলেন। পরক্ষনে বাকা হেসে তাকালেন আমার দিকে।
এতোক্ষন যাও সাহস জুগিয়ে এইসব বললাম।
এখন উনার এই বাকা হাসি আমার সব এলোমেলো করে দিয়েছে।
লজ্জা যেন আমার সারা অঙ্গকে আলিঙ্গন করে নিলো।
উনি আমার কানের কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলে উঠলেন,

-” আমি তোমার অনুমতি ছাড়া তোমাকে স্পর্শ করতে চাইনি।সেদিনের পর থেকে নিজের মাজে জড়তা কাজ করছিলো।
তবে হৃদয়হরণী তুমি নিজেই আজ আমার কাছে ধরা দিয়েছো।আমি তোমার অপেক্ষাতেই ছিলাম।আজ তা অবশান হলো।আজ ভালোবাসবো খুব করে ভালোবাসবো।
সুখের এক রাজ্যে পারি দিবো দুজনাই।।
সেখানে থাকবো তুমি আর আমি। ভালোবাসাবাসিতে
নিজেদের হারাবো।”

উনার ফিস্ফিসানো কন্ঠ আমাকে কাঁপিয়ে তুললো।
সারা শরীরে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেলো।
উনি আমাকে এক ঝটকায় কোলে তুলে নিলেন।
আমাকে বিছানায় এনে নামিয়ে দিলেন।
আমি চোখ বন্ধ করে আছি।
চোখ তুলে তাকাবার সাহস নেই আমার।
উনি আমার গালে স্পর্শ করলেন।আমি নিজের জামা খামছে ধরলাম।অনেক্ষন এইভাবে থাকার পর চোখ মেলে তাকালাম।সাথে সাথে একজোড়া ঠোঁট তীব্রভাবে
আমার ঠোঁটের মাজে স্পর্শ করলো।
মাত্র সাহস করে খোলা চোখ দুটো আবারো বন্ধ করে নিলাম।
দুহাতে উনার পিঠ জড়িয়ে ধরে।উনার শার্ট খামছে ধরলাম।
হারিয়ে গেলাম এক অজানা রাজ্যে।
ভালোবাসা নামক উত্তাল সমুদ্রে ভেসে গেলাম
দুজনেই।স্বামি স্ত্রীর পবিত্র বন্ধনে পুরোপুরি আবদ্ধ হলাম দুজনে।
#ছুঁয়ে_দিলে_মন
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পার্টঃ১৭
রুম জুরে পাইচারি করছে আহান।
আহানকে এরকম করতে দেখে এলিনা বেশ বিরক্ত হয়ে বললো,

-“কি সমস্যা ভাই তুই এরকম করছিস কেন?”

আহান চিন্তিত স্বরে বলে,

-” মিষ্টার আরাফাত আমাকে কাল থেকে ফোন দিয়ে নিঝুমের খবর জানতে চাইছে।বলছে আর কতো সময় লাগবে?জানিস ওই তো তিনি কতো ভয়ানক। আমি কিভাবে নিঝুমকে উনার কাছে দিবো আমার মাথায় কিছু আসছে নাহ।”

এলিনা মাথায় চিন্তার ভাজ ফেলে খানিক কিছু ভাবলো।
তারপর বাকা হাসলো।বললো,

-” ইউ ডোন্ট হেভ টু ওয়ারি ভাইয়া।এইবার কাজ খুব সহজ হবে।”

আহান ভ্রু-কুচকালো।

-” তোর মাথায় কি চলছে বলবি?”

আরো কিছু বলতে নিবে।তার আগেই আহানের ফোন বেজে উঠলো।যার নাম ভেসে উঠলো তা দেখেই ভয়ে কাপাকাপা হাতে ফোন রিসিভ করে আহান।

-” জ্বি স্যার।”

-” হুয়াট ইজ স্যার?তুমি নিঝুমকে কবে আমার কাছে পাঠাবে?” বেশ রেগে বললো মি.আরাফাত।

-” স্যার নিভৃত নিঝুমকে কড়া গার্ড দিয়ে রেখেছে।আমাকে অন্য কিছু প্লান করতে হবে।প্লিজ একটু সময় দিন।”

-” আর কতো সময় হ্যা কতো সময়? আমি আর দু-মাস পর দেশে আসছি।এর মধ্যে তোমাকে যে করেই হোক নিঝুমকে ওই নিভৃত থেকে ছিনিয়ে আনতে হবে!আন্ডারস্ট্যান্ড। ”

-” ই..ইয়েস স্যার।”

মি.আরাফাত ফোন কেটে দিলেন।এদিকে আহান চিন্তায় পড়ে গেলো কিভাবে সে নিঝুমকে আনবে?কিন্তু এলিনার মুখে শয়তানি হাসি।

______

নিভৃত একধ্যানে তাকিয়ে ঘুমুন্ত নিঝুমের দিকে।এলোমেলো চুল।মুখে স্নিগ্ধ হাসি লেগে আছে।
চোখে মুখে যেন মায়া উপচে পড়ছে।
ইসস! কতোটা মায়াময়ী লাগছে তার নিঝুমকে।
নিঝুমের হাতের মাজে নিজের হাত গুজে দিলো নিভৃত
তারপর টা টেনে নিয়ে নিঝুমের হাতের উলটো পিসে চুমু খেলো।

-” তুমি জানোনা কাল রাত আমার কাছে কি ছিলো।
তুমি আমার জীবনে কি তা বলে বুজাতে পারবো নাহ নিঝুম।কাল তোমাকে নিজের করতে পেরে আমি পূর্ণতা পেয়েছি। তুমি আমার শুধু আমার।ওই আহান কখনো ওর কাজে সফল হবে নাহ।আরাফাত কে আমি কখনো তোমাকে নিয়ে যেতে দিবো নাহ।”

কথাগুলো বলে নিঝুমের মুখের কাছে ঝুকে আসলো নিভৃত নিঝুমের ঠোঁটে হালকা ঠোঁট ছুইয়ে দিলো।তারপর
নিঝুমের গলার খাজে গভীর চুম্বন করলো।
কেপে উঠলো নিঝুম।পাশ ফিরে নিভৃতকে জড়িয়ে ধরলো।
নিভৃত ও নিজের বাহু বন্ধনে নিজের ভালোবাসাকে
জড়িয়ে নিলো।
কপালে বার বার ঠোঁটের ছোয়া দিতে লাগলো।
——-
মুখের উপর কারো গরম নিশ্বাস অনুভব করে চোখ পিটপিট করে খুললাম আমি।
আধো আধো চোখে তাকাতেই নিভৃতের হাসিমাখা মুখটা ভেসে উঠলো।
আমাকে এইভাবে তাকাতে দেখে ভ্রু-নাচালো নিভৃত।
আমি চোখ নামিয়ে নিলাম।কাল রাতের কথা মনে পড়তে লজ্জায় মন চাচ্ছে মাটি ফাক করে ডুকে যাই।
আমি যখন লজ্জা পেতে ব্যস্ত নিভৃত হুট করে আমার গালের চুমু খেলেন অনেক সময় নিয়ে।
আমি চোখ বন্ধ করে উনার হাত খামছে ধরলাম।
কাপা গলায় বললাম,

-” ক..কি ক..করছেন?উ..উঠতে হ..হবে তো?”

নিভৃত তার ঠোঁট দিয়ে স্লাইড করে আমার গলায় মুখ ডুবালেন।আমি ভুমিকম্পের মতো কাপছি।
উনি আমার গলায় মুখ গুজেই লম্বা নিশ্বাস টেনে নিলেন।
আমি এইবার দু-হাতে উনাকে নিজের সাথে চেপে ধরলাম।
আস্তে করে বললাম,

-” প্লিজ থা..থামুন। আ…আমার নিশ্বাস ব..বন্ধ হয়ে যাবে!”

উনি চোখ তুলে তাকালেন।উনার চোখে নেশা;তীব্র নেশা।
উনি নেশা জড়ানো কন্ঠ বললেন,

-” কি করবো বলো?তোমার ওই লজ্জারাঙ্গা মুখ দেখলে
আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারি নাহ।
আবারো ডুব দিতে ইচ্ছে করে তোমাতে।”

আমি উনার মুখ চেপে ধরলাম।

-” প্লিজ এসব বলবেন নাহ।আমার লজ্জা করে।”

উনি হাসলেন আমার কথায়।মুখ থেকে হাত সরিয়ে বললেন,

-” কালরাতে সব দেখে ফেলেছি।লজ্জা দিয়েছিও আবার লজ্জা ভেঙ্গেও দিয়েছি।তাহলে আমার লজ্জা আসে কোথা থেকে?”

ইসস! আমি দুহাতে মুখ ঢেকে ফেললাম।এতোটা বেহায়া কেন উনি?
এইভাবে লজ্জা দেয় কেন উনি?এমনিতেই আমি লজ্জায় মরে যাচ্ছি তার উপর আবার উনার এইসব অসভ্য কথাবার্তা।

উনি আমার হাত সরিয়ে দিলেন।
আমার দিকে গভীর চোখে তাকালেন।
উনার দৃষ্টিতে আকুলতা।উনি সেই আকুলতা ভরা কন্ঠে বলে উঠেন,

-” নিঝুম! আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না তো?তুমি ছাড়া আমি নিস্ব হয়ে যাবো।”

আমি আৎকে উঠলাম।হঠাৎ এমন কেন বললেন উনি?

– কি হয়েছে আপনার? হঠাৎ এই কথা কেন?”

তিনি গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে,

-” কখনো যদি আমার বিষয়ে কোন এমন কিছু জানতে পারো। আর সেই জন্যে আমাকে খারাপ ভেবে আমাকে ছেড়ে চলে যেও নাহ।আগে এসে আমার থেকে জিজ্ঞেস করবে তবুও না জেনে আমাকে ভুল বুজে চলে যাবে নাহ।”

আমি দুহাতে উনাকে জড়িয়ে টেনে নিলাম।বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।

-” কেন যাবো আপনাকে ছেড়ে?আপনি আমার স্বামি। আপনার ভালো মন্দ সব যেমন আপনার ঠিক তেমনি ভাগীদার আমিও তার। কারন আমি আপনার অর্ধাঙ্গানি আপনার অর্ধেক আমি।তাই আপনার দোষ গুনেরও অর্ধেক আমি।”

-আই লাভ ইউ নিঝুম।”

উনার এটা বলার এই ছোট্ট কথাটাই আমার হৃদয়ে ভালোলাগার চরম শীর্ষে নিয়ে গেলো।
আমি বললাম,,

-” ভালোবাসি।”

অনেকক্ষণ এইভাবে থাকার পর আমি বললাম,

-” উঠবেন না।ফ্রেস হয়ে নিন।কাজে যাবেন না আপনি?”

উনি আমাকে নিজের সাথে আর একটু চেপে ধরলেন।

-” উম্মম্ম!! উঠতে ইচ্ছে করছে নাহ!”

বলে কি এই লোক।আমি উনাকে ঠেলে সরিয়ে।জলদি উঠতে নিলাম।
কিন্তু তার আগেই উনি আমার গায়ের চাদর টেনে ধরলেন।যার ফলে চাদর টা বুক থেকে সরে গেলো।
আমি তড়িগড়ি করে তা আবার টনে জড়িয়ে নিলাম।
উনি হাসছেন! আমি রাগী চোখে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,

-” এইসব কি? আপনি একটা অসভ্য। লুচু কোথাকার।”

উনি ভ্রু-কুচলানেন।

-” আমি অসভ্য।তাহলে অসভ্যদের মতো কিছু করতেই হয়।আবার লুচুও বলেছো।”

উনি আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি একদৌড়ে ওয়াসরুমে ডুকে গেলাম।উনার হাসি শব্দ পাচ্ছি আমি।
ইসস!! পুরাই নির্লজ্জ! লজ্জা সরম একটুও নেই উনার।
আমি সাত পাচ না ভেবে শাউয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসলাম।
কাপড় নিতে ভুলে গিয়েছিলাম।তাই বাথ রাব পড়ে বের হয়েছি।
আমি আড়চোখে উনার দিকে তাকালাম।উনি দুষ্টু হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

– কি যাচ্ছেন না কেন ফ্রেস হতে?”

উনি চোখ টিপে দিয়ে বলেন।,

-” ইসস তোমাকে অনেক হট লাগছে এই ড্রেসে। ”

আমি সোফা হতে একটা বালিশ ছুড়ে মেরে উনাকে বললাম,

-” অসভ্যের মতো কথা না বলে ফ্রেস হতে যান।”

উনি হাসতে হাসতে উঠে গিয়ে ফ্রেস হতে চলে গেলেন।
আমি এই সু্যোগে কালকের ড্রেসটা পরে নিলাম।আর গাউনটা ভাজ করে প্যাকেটে ভরে নিলাম।
উনি ফ্রেস হয়ে আসতেই দুজনে নিচে নেমে নাস্তা করে নিলাম।
তারপর উনি আমাকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে।নিজে কাজে চলে গেলেন।
যাওয়ার আগে আমার ঠোঁটে আর কপালে চুমু খেয়ে গিয়েছেন।
———
ভার্সিটির এক অন্ধকার রুমে চোখ বেধে রাখা অবস্থায় দাড়ানো রিধিরা।
আর তার দুটোহাত একটা হাতে শক্ত করে চেপে ধরে আছে রাজ।
রাজ রিধিকে নিজের সাথে আর একটু চেপে ধরলো।
তারপর রিধির ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
এদিকে আকস্মিক কি হয়ে গেলো কিছুই বুজতে পারলো না রিধিরা।
যে বরফের ন্যায় জমে গেছে।হাত-পা কাপতে লাগলো।
খানিক বাদের সরে এলো রাজ।
তারপর রিধির ঘাড়ে জোড়ে সোড়ে একটা কামড় বসিয়ে দিলো।।ব্যাথায় আতকে উঠে চিৎকার করতে নিয়ে
আবারো রিধির ঠোঁটে ঠোঁট ছুইয়ে দেয় রাজ।
তারপর রিধিকে ছেড়ে দিয়ে।ওর হাতে একটা কাগজের টুকড়ো গুজে দিয়ে দ্রুত চলে গেলো।

রিধিরা হতভম্ব হয়ে চোখের বাধন খুল্লো।
তার মাথা ভন ভন করে ঘুরছে।
হাতের কাগজের দিকে নজর যেতে সেটা খুললো
রিধিরা।
সেখানে গোটা গোটা অক্ষরে লিখা।

‘ ভুলেও আর কখনো যেন তোমাকে এইভাবে ছেলেদের সাথে কথা বলতে না দেখি।।তাহলে ফলাফল এর থেকে ভয়ানক হবে।আজ তো শুধু ট্রেইলার দেখালাম।সেদিন নাহয় পুরু ফিল্ম দেখাবো। তোমার সাথে কথা বলা,তোমাকে দেখা,
হাসি ঠাট্টা করা,রোমান্স করা সব কিছুর অধিকার আমার তাই ভুলেও আমার অধিকার যেন অন্য কেউ দখল করতে না পারে।’

রিধিরা পুরো চিরকুট টা পড়ে থম মেরে রইলো।
কে এই লোক, তার সাথে এমন কেন করলো?
রিধিরা রোবটের মতো ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে আসলো।
মাঠের ওপাশে তাকিয়ে দেখে নিঝুম তাকে ডাকছে।
গুটিগুটি পায়ে রিধি নিঝুমের কাছে এগিয়ে গেলো।
ওর সারা শরীর এখনো কাপছে।
সেই স্পর্শ মনে হয় এখনো সতেজ আছে।

চলবে,,,

জানি ভালো হয়নি।আমি গুছাতে পারছি না।
সাজিয়ে লিখতে পারছি নাহ।
কি জন্যে এমন হচ্ছে বুজতে পারছি নাহ।
প্লিজ আপনারা সুন্দর সুন্দর মতামত দিবেন।
লিখার আকাঙ্খা হারিয়ে ফেলছি একদম।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
চলবে,,,,,,,

ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
কেমন হয়েছে জানাবেন।আমি আশাহত
নাইস নেক্সট ছাড়া দুএকজন শুধু ভালো মন্তব্য করে।
লিখার উৎসাহ হারিয়ে ফেলছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here