#প্রাণের_চেয়েও_প্রিয়
#Part_43
#Writer_TanhaTonu
সিদ্রাত মুচকি হেসে আরশির মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।আরশিও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে সিদ্রাতের বুকের ধুকপুকানি অনুভব করতে লাগল,,সেই সাথে অনুভব করতে লাগল একটা রাতকে সুন্দর করতে সবসময় শরীরটাই জরুরী না।লজ্জা লাগলেও সিদ্রাতের খুনশুটিময় ভালোবাসাগুলোই আরশির কাছে এই রাতটা স্মরণীয় করে রাখবে..স্মৃতির পাতায় অমর থাকবে আজকের রাতটা তার..
__________________________________
আরশি ঘুম থেকে উঠে দেখে সিদ্রাত ওর বুকে মুখ গুঁজে শুয়ে আছে।ফেইসটা বাচ্চাদের মতো নিষ্পাপ লাগছে।আরশি লাজুক হাসল।আবার এটা দেখে অবাকও হলো যে ঘুমিয়েছিলো ও সিদ্রাতের বুকে।আর এখন পুরোই উলটো…আরশির হাতটা অটোমেটিক সিদ্রাতের চুলে চলে গেলো।আরশি আপন মনেই সিদ্রাতের মাথায় হাত বুলাতে লাগল।তখনই দূর থেকে আজানের ধ্বনি আরশির কানে এলো।ও রীতিমতো বেশ অবাক হলো এটা ভেবে যে মাত্র তিন ঘন্টার মতো ঘুমিয়েই ঘুম ভেঙে গেলো!হয়ত অভ্যাসের কারণেই টাইম মতো ঘুম ভেঙেছে।আরশি আলসেমি করে আরও কিছুক্ষণ শুয়ে থাকল।একটু পর এলার্ম বাজতেই সিদ্রাত উঠে আরশিকেও ডাকল।আরশি লজ্জা মিশ্রিত নয়নে একবার সিদ্রাতের দিকে তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।সিদ্রাত হালকা হাসল…
ফজর নামাজ শেষ করে সিদ্রাত গেইট দিয়ে ঢুকতেই আড়চোখে ওপরে তাকালো আর মুচকি হাসল।নিজে নিজেই বিড়বিড় করে বলল…
—”পাগলী!এখনো সেই ছেলে-মানসি গেলো না।এখন তো আমি তোমারই।এখনো কি বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে!”
সিদ্রাত নিজে নিজে বলতে বলতেই বাসার ভিতর প্রবেশ করল।আরশিও আগের মতোই লাজুক হেসে বারান্দা থেকে সরে গিয়ে বেডে গিয়ে শুয়ে ঘুমানোর ভান ধরল।সিদ্রাত পাঞ্জাবিটা খুলে আগের শর্টসটা পড়ে আরশির পাশে শুয়ে পড়ল আর আলতো হাতে আরশিকে জড়িয়ে ধরল।ঠান্ডা শরীরের স্পর্শে আরশি কেঁপে উঠল।ওর শিরদাঁড়া বেয়ে শিহরণ বয়ে গেলো এটা ভেবে যে সিদ্রাতের শরীরে শর্টস টা ছাড়া অন্য কোনো শার্ট বা কিছু নেই।চোখ বন্ধ রাখতেও যেনো আরশির কষ্ট হচ্ছে।সিদ্রাত আরশিকে ঝাপটে ধরে আরশির পেটে শাড়ির ভিতর দিয়ে হাত রাখতেই আরশি শিউরে উঠল আর ধপ করে চোখ খুলে ফেলল।সিদ্রাত বাঁকা হেসে ভ্রু নাচিয়ে আরশির পেটে স্লাইড করতে করতেই বলল….
—”ঘুম শেষ?সরি..ঘুমের ভান শেষ?আমিও তো বলি বারান্দায় দাঁড়য়ে থাকা মেয়েটা মূহুর্তেই ঘুমিয়ে পড়ল কিভাবে?”
আরশি ঢোক গিলে বলল..
—”হাতটা আগে সরান প্লিজ..”
সিদ্রাত দুষ্টুমির স্বরে বলল…
—”কাল রাতে কতকিছু হবার প্রিপেরাশন নিলে অথচ আজ এটুকুতেই এই অবস্থা?”
আরশি সিদ্রাতের হাত খামচে ধরল।সিদ্রাত হাত সরালো না।আরশি আমতা আমতা করে বলল…
—”আপনি কিভাবে জানলেন আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম?আমি তো আপনাকে আমার দিকে তাকাতে দেখিনি”
—”এটাই তো ম্যাজিক। আসো তোমার সাথে একটা কথা শেয়ার করি..ওই যে রাবিয়া আন্টি মানে আমার বর্তমান মামুনি আছে না?উনার একটা পিচ্চি মেয়ে ছিলো..নাক টিপলেই দুধ বের হবে.. সে একদম প্রথম দিন থেকেই ওদের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমায় চোরের মতো দেখত।আমি তো ওর এই চুরি পরের দিনই ধরে ফেলেছিলাম যখন বেচারীর প্রতিবিম্ব গাড়ির সামনের কাচে প্রতিফলিত হলো”
আরশি সিদ্রাতের কথা শুনে নিজের বোকামোয় লজ্জায় জিহ্বায় কামড় দিলো।সিদ্রাত হেসে দিলো।আরশি মুখ ফুলিয়ে মিনমিন করে বলল….
—”আপনি প্রথম থেকেই জানতেন আমি আপনাকে কত্ত ভালোবাসি..তবুও আমার দিকে ফিরেও তাকাতেন না।বেশি ভাবওয়ালা ছেলেদের প্রেমে পড়তে নেই এজন্য।এখনো আপনার ভাব কমেনি হুহ..”
সিদ্রাত মৃদু হেসে বলল…
—”তো কি করলে আপনার মনে হবে আমার ভাব কমেছে ম্যাম?”
আরশি লাজুক হেসে চুপ করে থাকল।একথা কি বলতে পারবে নাকি যে আমাকে আদর করুন!
সিদ্রাত আরশির ভাবনা বুঝে হালকা হাসল।তারপর আরশিকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে বলল…
—”কিছুক্ষণ ঘুমাও।এখনো সাতটা বাজেনি।আরও দুই-তিন ঘন্টা ঘুমাতে পারবে”
সিদ্রাত এটুকু বলে থামল।তারপর ফিসফিস করে আবারও বলল….
—”ওহ হ্যাঁ..এখন মন থেকে সব উদ্ভুট চিন্তা বাদ দাও।পিচ্চি মানুষ পিচ্চি মানুষের মতো থাকো।সময় হলে আমিই তোমাকে একটা ফুটবল টিম উপহার দিবো”
আরশি লজ্জা পেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল।তারপর নিজেও সিদ্রাতকে নরম হাতে আলতো স্পর্শে জড়িয়ে ধরল।কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়েও গেলো..সিদ্রাত আরশির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে কপালে চুমু দিয়ে উঠে গেলো।টাইম দেখে ড্রেস চেইঞ্জ করে জগিং ড্রেস পড়ে নিলো।বাসা থেকে বেরুতে গিয়েও কিছু একটা ভেবে আর বেরুলো না।জগিং ড্রেস চেইঞ্জ করতে করতে বিড়বিড় করে বলল…..
—”বিয়ের পরের দিনই সকাল সকাল জগিংয়ে গেলে বিচ্ছুর দলরা আরও সুযোগ পাবে পঁচানোর জন্য”
সকাল নয়টায় আরশি ফ্রেশ হয়ে শাড়িটা চেইঞ্জ করে অন্য আরেকটা পড়ে লিভিং রুমে গেলো।গিয়ে দেখল একটা সোফা সেটে বসে সিনিয়র সিটিজন মানে সিদ্রাতের আম্মু-খালামনি, মামী আর দুই চাচী একসাথে গল্প করছে।আর অপর পাশের সোফায় বসে জুনিয়র সিটিজেন মানে সব কাজিনরা গল্প করছে।আরশি সিদ্রাতের আম্মুর সামনে গিয়ে সবাইকে সালাম দিলো।সিদ্রাতের আম্মু বলল…
—”কিরে মা উঠে পড়েছিস?আর কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিতি।কত ধকল গেলো বলত”
আরশি মুচকি হেসে বলল…
—”আরে না..ঠিক আছে আন্টি।তুমি এতো বিজি হয়ো না”
আরশির কথা শুনে সিদ্রাতের চাচী বলল…
—”দেখো মেয়ের কাজ..শাশুড়িকে আন্টি বলছে।মা বলবে বুঝলে..”
আরশি জিহবায় কামড় দিলো।খালামনি হেসে বললেন…
—”ঠিকাছে সমস্যা নেই..ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে..কি বলিস আয়িশু”
সিদ্রাতের আম্মুও মুচকি হাসল।তারপর বলল…
—”সিদ্রাত কি ঘুমোয়?ওকে ডেকে দিসনি?আর কত ঘুমাবে?”
আরশি কিছু বলতে যাবে তার আগেই মৌরি টোন কেটে বলল…
—”আর চাচী মনি তুমিও না..আজ না ঘুমালে আর কবে ঘুমাবে?আফটারল তোমার ছেলে গতকাল স্টেডিয়াম গিয়ে ক্রিকেট খেলে আসল”
আরশির কান দুটো গরম হয়ে গেলো মৌরির কথায়।এই মেয়ে যে বড়দের সামনেও এভাবে লজ্জা দিবে কে জানত?মৌরির আম্মু ধমক দিয়ে বলল…
—”ফাজিল মেয়ে চুপ কর।মানুষ হবি না আর।কোথায় কি বলতে হয় তাই জানিস না..আরশি মা কিছু মনে করো না”
মৌরি দাঁত কেলিয়ে হাসল।আরশিও সম্মতিসূচক মাথা নাড়ল ছোট চাচীর কথা।পরী বলল…
—”চাচী আম্মু তোমার বউমাকে এবার আমাদের কাছে দাও।আমরা রুমে গিয়ে গল্প করি সবাই..কি বলো আরশি?”
আরশির এখন এমন অবস্থা যে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।ওদের সাথে গেলে যে আজ লজ্জা থেরাপি প্রয়োগ করা হবে ওর উপর তা ভালোই বুঝা যাচ্ছে।আরশি বলল…
—”আপু তোমরা গল্প করো না গিয়ে…আমি আম্মুকে রান্নায় হেল্প করি”
সিদ্রাতের আম্মু বলল…
—”কিসের কি হেল্প?যা ওদের সাথে সময় কাটা গিয়ে।”
আরশি করুণ চোখে সবার দিকে তাকালো।মৌরি আর নূর চোখ মারল আরশিকে।অগত্যা ওদের সবার সাথেই সিদ্রাতের পাশের রুমটায়এলো।বিছানায় সবাই গোল হয়ে বসল।এখানে সব মেয়ে পার্টি..ছেলেরা সব এখনো ঘুমে কাত।মৌরিই প্রথমে কথা বলল।আহ্লাদি গলায় নেকামি করে বলল..
—”ভাবীজ্বিইই..তারপর বলো কেমন কাটল রাত?আমাকেও কিছু টিপস দাও..আমারও তো সিরিয়াল আসছে”
নূর কিটকিটিয়ে হেসে বলল…
—”যদিও আমার এক্সপেরিয়েন্স আছে তাই এসব বলছি না। আরশি তুমি শুধু আমাকে এটুকু বলে আমার
দেবরজ্বি কয়বার ম্যাচ খেলল?”
রাহা হেসে দিলো ওদের দুজনের কথায়।
আরশি খুব লজ্জা পেলো।পরী আর প্রিয়া ওদের তিনজনকে চোখের ইশারায় শাসালো।তারপর আরশির উদ্দেশ্য প্রিয়া বলল…
—”আরশি এই ফাজিল গুলোর কথা কানে নিয়ো না।সবগুলো একেকটা ফাজিল…মৌরির বাচ্চা তোর খুব শখ না টিপস নেয়ার!মেসবাহ ভাইকে বলছি..তু শুধু দেখ।আর নূর..রিয়াদ ভাই পাঁচ ম্যাচ খেলেছিলো তাইনা?”
এবার পরী হেসে দিলো।নূর বেশ লজ্জা পেলো।গাল ফুলিয়ে বলল…
—”প্রিয়ার বাচ্চা তুই আমার সাথে কথা বলবি না..মীর জাফর তুই..বন্ধু নামক মীর জাফর”
আরশি ফিক করে হেসে দিলো।তারপর বলল…
—”তোমরা দুজন ফ্রেন্ড?”
পরী বলল…
—”হুমম..তা আর বলতে!প্রিয়া,নূর, রাহা তিনটাই হলো বেস্টু।রাহা আর প্রিয়ার সূত্র ধরেই তো রিয়াদের সাথে নূরের বিয়ে হলো।মূলত প্রিয়া মেসবাহর সাথে নূরের বিয়ে দিতে চেয়েছিলো।কিন্তু মেসবাহ রাজী না হওয়ায় রাহা ওর মাকে বলে রিয়াদের জন্য নিয়ে নিলো।মূলত প্রিয়াই ঘটকের কাজ করেছে..কারণ তার বেস্টুকে সে দূরে বিয়ে দিবে না”
নূর হাসল।রাহা হেসে বলল…
—”হুমম প্রিয়ার জন্য আমার কপালে ডায়নী ভাবী জুটল”
নূর রাহার মাথায় গাট্টা মেরে বলল..
—”ভাবীকে সম্মান দিতে শিখ গাধী..পারলে মা বলে ডেকে আমায় উদ্ধার কর”
হাসির রোল পড়ে গেলো এবার।আরশির ভালো লাগল ওদের সাথে টাইম পাস করে।বেশি ভালো লাগল এটা দেখে সিদ্রাতের চাচ্চুর ফেইমলির সাথে খালাদের ফেইমলির বেশ ভালো সম্পর্ক।সেক্ষেত্রে ওদের মামার বাসার মানুষের আসা-যাওয়া কম।মামার বাসা মাথায় আসতেই আরশির নুসুর কথা মনে পড়ল।ও রাহাকে জিজ্ঞাসা করল….
—”আপু নুসুকে দেখেছো?ওকে তো আর দেখলামই না”
—”ওর কথা আর কি বলব?আরেকটা বিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করছে ও…সকাল সকালই ঢেং ঢেং করে কোন লেইকে গেলো।নিহান নাকি এসেছে”
—”ওহহ..”
পরী বলল…
—”তবে যাই বলিস না কেন নিহান ছেলেটা ভালো।নুসু সুখীই হবে”
পরীর কথা টেনে মৌরি বলল…
—”ওই কোন নিহানের কথা বলো তোমরা?সিয়ামের ভাই নিহান?”
সবাই বোকার মতো মৌরির দিকে তাকালো।মৌরি বলল…
—”কুল গাইস..আমি একটু উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম।ভাবলাম দুবোন জা হবো কিনা আফটারল সিয়ামেরও নিহান নামক আপন ভাই আছে”
সবাই হেসে দিলো মৌরির কথা শুনে।নূর হাসতে হাসতে বলল….
—”এমনটা হলে তো পিচ্চি নুসু তোমার বড় জা হবে মৌরি”
মৌরিও ফিক করে হাসল।সবার গল্প-গুজবের মধ্য দিয়েই সকালটা কাটল।বারোটার দিকে সিদ্রাত হনহনিয়ে আসল।নূর জিজ্ঞাসা করল…
—”কি দেবর জ্বী এতো তাড়া কিসের?বউকে মিস করছ বুঝি?”
—”আমার বউ যে সকাল থেকে না খাওয়া সে খেয়াল কি আছে তোমাদের?তো আমাকেই তো মিস করতে হবে।আর এই পিচ্চি মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাবো আমি।গল্পের আসরে এসে খাওয়া-দাওয়া ভুলে গিয়েছে”
নূর জিহবায় কামড় দিলো।রাহা বলল…
—”আরশি যাও খেয়ে আসো।আমরা তো জানি না তুমি খাওনি”
আরশি বলল…
—”না আপু এভাবে বলছ কেন?আমারই সকাল সকাল কিছু খেতে মন চাচ্ছিলো না।তোমাদের ভাই একটু বেশিই করে”
সিদ্রাত চোখ গরম করে আরশির দিকে তাকালো।আরশি ঢোক গিলে হাসার চেষ্টা করে বলল…
—”চলুন..খাবো তো”
সিদ্রাত লম্বা একটা শ্বাস ফেলে আরশিকে ডায়নিং রুমে নিয়ে গিয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দেয়।আরশি খেতে খেতে জিজ্ঞাসা করল…
—”স্যার এখন কোন বেলারটা খেলাম?সকাল নাকি দুপুর?”
—”অফকোর্স সকাল।একটু পর আবার খাবে”
আরশির চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো…
—”আমি কি রাক্ষস নাকি?”
—”সেটা তুমিই ভালো জানো”
আরশি নাক ফুলালো।সিদ্রাত মুচকি হেসে আরশির নাকের ডগায় কিস করে প্লেট নিয়ে বেসিনে চলে গেলো।এদিকে আরশি লজ্জায় লাল-নীল-বেগুনি হতে লাগল….
চলবে….
প্রাণের_চেয়েও_প্রিয়
#Part_44
#Writer_TanhaTonu
সিদ্রাত লম্বা একটা শ্বাস ফেলে আরশিকে ডায়নিং রুমে নিয়ে গিয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দেয়।আরশি খেতে খেতে জিজ্ঞাসা করল…
—”স্যার এখন কোন বেলারটা খেলাম?সকাল নাকি দুপুর?”
—”অফকোর্স সকাল।একটু পর আবার খাবে”
আরশির চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেলো…
—”আমি কি রাক্ষস নাকি?”
—”সেটা তুমিই ভালো জানো”
আরশি নাক ফুলালো।সিদ্রাত মুচকি হেসে আরশির নাকের ডগায় কিস করে প্লেট নিয়ে বেসিনে চলে গেলো।এদিকে আরশি লজ্জায় লাল-নীল-বেগুনি হতে লাগল….
______________________________________
বিকালে আরশিকে দেখতে বেশ কয়েকজন পাড়াপড়শি এলো।আরশি একটা জর্জেটের মিষ্টি কালার শাড়ি পড়ল যার পাড়টা গোল্ডেন কালারের উপর ভারী স্টোন দিয়ে কাজ করা।শাড়িটায়ও ছোট ছোট মিষ্টি কালার পার্ল বসানো ছিলো।অনেকেই নতুন বউ দেখে অবাক হলো।একজন বলল…
—”আরে এতো আমাদের আরশি..বাবাহ একেই বলে কপাল..শ্বশুর বাড়ি,বাপের বাড়ি এক জায়গায়ই”
আরেকজন মহিলা বলল…
—”যাই হোক বউ বেশে মাশাল্লাহ ভালো লাগছে মেয়েটাকে।এটাই তো মেয়েদের আসল পরিচয়”
বেশিরভাগ মহিলারাই প্রশংসা করল আরশির।যতই হোক পাড়া-পড়শীদের কাছে টপ রেজাল্ট করা,ভদ্র মেয়েদের একটা আলাদা সম্মান থাকে…
সন্ধ্যার দিকে সবাই চলে গেলো।আরশি হাফ ছেড়ে বাঁচল।সিদ্রাতের আম্মু বলল…
—”আরশি এখন গিয়ে শাড়িটা চেইঞ্জ করে নে।দুদিন ধরে এসব শাড়ি-টাড়ির ধকলে একদম হাপিয়ে গিয়েছিস”
আরশি মুচকি হেসে বলল…
—”কিছু হবে না..তুমি এতো চিন্তা করো না তো মা”
আয়িশা আজওয়াদের চোখে পানি চলে আসল
আরশির কাছ থেকে মা ডাক শুনে।ডাকটা খুবই মধুর ছিলো যেনো আরশি সত্যিই তার নাড়ি ছেড়া ধন।আরশি থতমত খেয়ে গেলো আয়িশা আজওয়াদকে কাঁদতে দেখে।উদ্বিগ্ন হয়ে বলল…
—”আম্মু কি হয়েছে তোমার?কাঁদছ কেন?আমি কি ভুল কিছু বললাম?”
সিদ্রাতের আম্মু চোখ মুছে হাসার চেষ্টা করে বলল…
—”নারে সোনা..কোনো ভুল বলিসনি।আমি তো তোর মা-ই।শুধু মুনটার কথা মনে পড়ছে খুব।কে জানে মেয়েটা আমার কেমন আছে?”
আরশি বলল…
—”ভালো কথা মনে করেছো।আমি সকাল থেকেই ভাবছিলাম জিজ্ঞাস করব।মুন আপুকে বিয়েতে কোথাও দেখলাম না,,আবার আজও সারাদিন দেখলাম না।কি ব্যাপার বলো তো?”
সিদ্রাতের আম্মু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন…
—”দেখবি কি করে?সে কি এখন আর মেয়ে আছে?নিজেই তো মা হয়ে গিয়েছে।কত দায়িত্ব তার!”
আরশির চোখগুলো চক্ষু কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম।ও জোরেই বলল…
—”কিইহহ?আল্লাহ আমার কান নষ্ট হয়ে গেলো নাকি মাথা?এগুলো কি বলছ তুমি আম্মু?”
—”হ্যাঁ রে মা..ঘটনাটা আরও ছয় মাস আগের।সিদ্রাতের বন্ধু আরহামের সাথে ছয়মাস বারো দিন আগে ঘরোয়াভাবে বিয়ে হলো ওর।বিয়েতে কেউ ছিলো না।তোর আব্বু-আম্মু,আরহামের আব্বু-আম্মু আর আমি,সিদ্রাত আর ওর বাবা..”
আরশির মাথায় এবার আরও জোরে বাজ বলল।অবাকের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেলো আরশি..বলল…
—”আরহাম!উনি না ম্যারিড ছিলেন।পরে একবার শুনেছিলাম তার বউয়ের পরকীয়া ছিলো।সে তো আরও তিন বছর আগের কথা।কিন্তু উনার সাথে কিভাবে বিয়ে হলো আম্মু?”
সিদ্রাতের আম্মু কিছু বলতে যাবে তখনই মাগরিবের আজান শোনা গেলো।সিদ্রাতের আম্মু বলল…
—”পরে এসব গল্প করা যাবে নে।গিয়ে নামাজ পড়ে নে যা।আর শোন নামাজের পরপরই তোর চাচীরা,খালামনিরা সবাই চলে যাবে।ওরা যাওয়ার পর তুই রেডি হয়ে থাকিস।নিয়ম অনুসারে তো আজ সিদ্রাতকে নিয়ে তুই ও বাসায় থাকবি”.
আরশির মন খারাপ হয়ে গেলো সবার যাওয়ার কথা শুনে।কত মজা করল সবাই অথচ আজই চলে যাবে।আরশি সম্মতিসূচক মাথা নেড়ে নামাজ পড়তে চলে গেলো।মাগরিবের কিছুক্ষণ পরই সিদ্রাতের চাচ্চুরা,খালামনিরা,মামারা সবাই বেরিয়ে পড়ল।যাওয়ার আগে নুসাইফা আরশিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো।আরশিও কেঁদে দিলো এতে।নুসাইফা বলল…
—”তোকে খুব মিস করব আরশি..খুব বেশি।ভাইয়ার উপর ভীষণ রাগ হচ্ছে।তোর বিয়ে নাহলেই ভালো হতো।আমি এখন কিভাবে তোকে ছাড়া থাকব বলনা”
আরশিও হেচকি তুলে কেঁদেই চলেছে।অবস্থা বেগতিক দেখে সিদ্রাত বলল…
—”দুই ছিচকাঁদুনে এবার চুপ কর তোরা।এতো কান্নার কি আছে।আরশির সাথে তো তোর প্রতিদিনই ক্লাসে দেখা হবে।দুজন তো দিনের বেশিরভাগ সময় এক সাথেই থাকবি। কাঁদিস না বোন আমার আর আমার পিচ্চিটাকেও কাঁদাস না”
নুসাইফা মুখ ফুলিয়ে সরে এলো আরশির কাছ থেকে।নাক টানতে টানতে সিদ্রাতের উদ্দেশ্য বলল…
—”তোমার সব চুল পড়ে যাবে ভাইয়া..এটা একটা বান্ধবীর অভিশাপ”
সিদ্রাত হেসে দিলো।নুসাইফা আরশিকে জড়িয়ে ধরে বিদায় নিলো।সবাই চলে গেলে আরশি রুমে এসে মন খারাপ করে শুয়ে রইল।ভাবতে লাগল আপন মানুষগুলোর কথা..এটাই বুঝি নিয়ম.. পরকে আপন করতে হলে আপনকে পর করতে হয়।অদ্ভুদ মেয়েদের জীবনটা!
বিশ মিনিট পর সিদ্রাতও রুমে এসে আরশির পাশে বেডের উপর শরীরটা ছেড়ে দিলো।বিয়ে উপলক্ষে কম ধকল তো আর যায়নি।একা আর কত নেয়া যায়?আরশি হুড়মুড়িয়ে উঠল শুয়া থেকে।সিদ্রাত ভ্রু কুচকে তাকালো।আরশি জিজ্ঞাসা করল…
—”আপনার কি শরীর খারাপ লাগছে?কিছু খাবেন?”
সিদ্রাত মুচকি হেসে আরশিকে ইশারায় কাছে ডাকল।আরশি বুঝতে না পেরে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো সিদ্রাতের দিকে।সিদ্রাত মৃদু হেসে বলল…
—”কাছে আসো..”
আরশির গাল দুটো লাল হয়ে গেলো।ও সিদ্রাতের পাশে গিয়ে বসতেই সিদ্রাত আরশিকে টেনে নিজের বুকের উপর নিয়ে নিলো।আরশি লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেলল।সব অনুভূতিগুলোই কেমন যেনো নতুন,,অন্যরকম,,আবেশ মেশানো।সিদ্রাত আরশিকে একহাত দিয়ে নিজের উপর জড়িয়ে ধরে রেখে আরেকহাত দিয়ে আরশির কপালের সামনের চুলগুলো সরিয়ে দিলো।সিদ্রাতের স্পর্শগুলো আরশির শরীরে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছে।মেয়েটা কিছু বলতেও পারছে না।সিদ্রাতই বলল…
—”পুরুষ মানুষ হয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করা কত কষ্টের তা হারে হারে টের পাচ্ছি বুঝলে”
সিদ্রাতের এমন কথায় আরশির কান আর গাল দুটো গরম হয়ে গেলো।শরীরটা কেঁপে উঠল..পিঠ বেয়ে যেনো শিহরণ বয়ে গেলো।আরশি লজ্জায় মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নিয়ে লাজুক কন্ঠে বলল…
—”টিচার হয়ে ছাত্রীর সামনে এভাবে কথা বলতে লজ্জা লাগেনা বুঝি আপনার?”
সিদ্রাত শব্দ করে হেসে উঠল।আরশি এক পলক সে হাসির দিকে তাকালো।মনটাই ভালো হয়ে গেলো।সিদ্রাত বলল…
—”লাইক সিরিয়াসলি?কে স্যার আর কে ছাত্রী?ফর ইউর কাইন্ড ইনফর্মেশন আমি এখন টিচার না রেদার এমডি অফ আজোয়াদ’স ফ্যাশন এন্ড তুমিও আমার ছাত্রী না।তার থেকেও বড় কথা হলো তুমি আমার ফিউচার বাবুদের আম্মু..তোমার সাথে লজ্জা দেখালে লোকে আমাকে কাপুরুষ বলবে”
আরশি ভেঙচি কেটে বলল…
—”ইশ কি পুরুষটা?আসছে আমার বীরপুরুষ!”
সিদ্রাত চোখ সরু করে আরশির দিকে তাকালো।তারপর দুষ্টু হেসে আরশির কানের কাছে মুখ নিয়ে স্লো ভয়েসে বলল…
—”মনে হচ্ছে তুমি আমার পুরুষত্ব দেখার জন্য একটু বেশিই ব্যস্ত?প্রোটেকশনের ব্যবস্থা করব নাকি?”
সিদ্রাতের এমন লাগাম ছাড়া কথায় লজ্জা পেয়ে আরশি চোখ-মুখ খিচে বন্ধ করে ফেলল।ওর মনে হচ্ছে একটা বিট মিস হয়ে গেলো।হার্ট যেনো দুইশ গুণ স্পিডে লাফাচ্ছে।এর মাঝেই সিদ্রাত এমন একটা কাজ করে ফেলে যে আরশির দম বন্ধ হবার মতো অবস্থা।বেচারী পারলে এক ছুটে পালিয়ে যায়…
সিদ্রাত একদম আরশির বুকের বামপাশে নাক ঘষা দেয় আর ক্রমাগত তা কন্টিনিউ করে।আরশির হাত পা যেনো থরথর করে কাঁপছে।ও সিদ্রাতের মাথাটা বুকের মাঝে চেপে ধরে।সিদ্রাত একটা বাইট বসিয়ে দিয়ে মাথাটা তুলে ফেলে।আরশির ঠোঁটগুলো কাঁপছে এখনো।চোখ দুটো বন্ধ।সিদ্রাত আরশির ঠোঁটে বুড়ো আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে বলল…
—”আশা করি বুঝতে পেরেছো আমি কাপুরুষ নাকি বীরপুরুষ?আরও প্রুফ লাগলে বলো”
আরশি লজ্জায় সিদ্রাতের বুকে মুখ গুঁজল।সিদ্রাতও মুচকি হেসে আরশিকে বাহুডোরে আবদ্ধ করে কিছুক্ষণ শুয়ে রইল।একটু পর দরজায় নক হলে আরশি সিদ্রাতের বুক থেকে সরে বসে।সিদ্রাত উঠে দরজাটা খুলে দিলেই দেখে ওর মা।সিদ্রাত বলল….
—”আম্মু ভেতরে আসো”
সিদ্রাতের আম্মু মুচকি হেসে ভেতরে যায়।আরশি দাঁড়িয়ে যায় বসা থেকে।সিদ্রাতের আম্মু বলে…
—”আহ মা বস তো..এতো ফর্মালিটির কি আছে?আর সিদ্রাত শোন তোরা দুজনই রেডি হয়ে নে।একটু পরই ওই বাসায় যাবি।আরশির আম্মু অপেক্ষা করছে”
—”আচ্ছা আম্মু তুমি চিন্তা করো না”
আরশি বলল…
—”আম্মু তুমি আর বাবাও আমাদের সাথে আসো”
সিদ্রাতের আম্মু মৃদু হেসে আরশির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল…
—”সে আর বলতে?তোর আম্মু আমায় থ্রেট দিয়ে গিয়েছে ডিনার যেনো সেখানে করি।আর তোরা তো আজ থাকবিই”
আরশি হাসল।সিদ্রাতের আম্মু চলে গেলো।সিদ্রাত আরশির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওয়াশরুমে চলে গেলো।সিদ্রাতের হাসিটা যেনো আরশির বুকে লাগল।ও ব্লাশিং হলো…
এক ঘন্টা পর সবাই রেডি হয়ে আরশিদের রুমে গেলো।আরশির আম্মু তো পুরো দমে জামাই আদর করতে লাগল।চব্বিশ পদের আইটেম রেখেছে খাবারের জন্য।সিদ্রাতের আম্মু বলল…
—”রাবিয়া তুই কি পাগল?এতো আয়োজন কোন আক্কেলে করতে গেলি”
আরশির আম্মু প্লেটে সালাদটা ডেকোরেট করতে করতে বলল…
—”আপা চুপ থাকো তুমি।আমার একটা মাত্র মেয়ে জামাই।তাকে না খাওয়ালে আর কাকে খাওয়াবো?যাও তো টেবিলে গিয়ে বসো”
সিদ্রাতের আম্মু হাসলেন।সবাই ডিনার করতে বসল।সিদ্রাতকে তো খাইয়ে খাইয়ে আরশির আম্মু একদম গোলগাপ্পা বানিয়ে ফেলছে।বেচারা আর না পেরে করুণ কন্ঠে বলল…
—”মামনী আর কত?তোমার কি মনে হচ্ছে তুমি মেয়েকে কোনো রাক্ষসের কাছে বিয়ে দিয়েছো?”
আরশির আম্মু-আব্বু হাসল।আরশিও ঠোঁট চেপে হাসল।আবার অবাক হয়ে মনে মনে আওড়ালো…
—”মামনী!!বাব্বাহ..কি মধুর ডাক যেনো মা-টা তারই..হুহ”
ডিনার শেষ হলে সিদ্রাতের আব্বু-আম্মু আরশির আম্মু-আব্বুর সাথে বেশকিছুক্ষণ গল্প-গুজব করে চলে গেলো।সিদ্রাতকেও আরশির রুমে পাঠিয়ে দেয়া হলো।গতকাল শাড়ি পড়ে ঘুমালেও আজ আরশি একট সাদা কুর্তি পড়ে শুলো।সিদ্রাতও লাইট অফ করে আরশির পাশে গিয়ে শুলো।আরশি সিদ্রাতের দিকে কাত হয়ে বলল…
—”ক’টা বাজে?”
—”এগারোটা দশ দেখে এলাম”
—”মাত্র এগারোটা..এখনি কি ঘুমিয়ে পড়বেন?”
সিদ্রাত সরু চোখে আরশির দিকে তাকালো।ডিম লাইটের আলোয় সিদ্রাতের এমন চাহনীও যেনো আরশির কাছে ভালো লাগল।সিদ্রাত বলল…
—”মাথায় আবার কি ঘুরে?”
আরশি ভেঙচি কেটে বলল…
—”আমার মাথা পরিষ্কার..উল্টা-পাল্টা কিছুই ঘুরে না।বলছিলাম যদি না ঘুমান তো একটা কথা জিজ্ঞাস করব”
সিদ্রাত প্রশ্নবোধক চাহনীতে তাকালো।আরশি একটু সরে এসে সিদ্রাতের বুকে মাথা রেখে লাজুক হাসল।সিদ্রাতও মৃদু হেসে আরশিকে জড়িয়ে ধরল।তারপর জিজ্ঞাস করল…
—”কি বলবে বলো”
—”না মানে..আম্মুর কাছ থেকে শুনলাম মুন আপুর নাকি আরহাম ভাইয়ার সাথে বিয়ে হয়েছে।কিন্তু কিভাবে কি?”
—”ওহ এই ব্যাপার!আসলে মুন নাকি আরহামকে ওর বিয়ের আগে থেকেই মানে আরও পাঁচ বছর আগে থেকেই পছন্দ করত।কিন্তু বলার সুযোগ হয়নি।তার আগেই আরহামের বিয়ে হয়ে যায়।পরে তো শুনেছিলে ওদের বিয়ের ছয়মাসের মাথায়ই আরহাম জানতে পারে ইভা পরকীয়ায় লিপ্ত।তাও ও মানিয়ে নিতে চেয়েছিলো স্পেশালি বাচ্চাটার কথা ভেবে।কিন্তু তাও হলো না।বিয়ের এক বছর আটমাসের মাথায় মানে তুমি চলে যাওয়ার সাত/আট মাস পরই ওদের ডিভোর্সও হয়ে যায়।এই আড়াই বছর আরহাম একাই ছিলো।পরে মুনই ওর আম্মুকে পটিয়ে স্পেশালি বাচ্চাটার কথা ভেবে আরহামের সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হলো”
আরশি টেনে বলল…
—”ওহহ..তা ভাইয়া কি মুন আপুকে মেনে নিয়েছে?”
—”হুম মেনেছে..তাছাড়া ইভার প্রতিও ওর তেমন দুর্বলতা ছিলো না।এজন্য ব্যাপারটা সহজ হয়েছে”
—”ওহ ভালো..আলহামদুলিল্লাহ। তার মানে আমি তো কিছুদিনের মধ্যেই সংবাদ পাবো যে আমি মামী হতে যাচ্ছি..উফফ কি আনন্দ..আমি সারাদিন মুন আপুর বেবিকে নিয়ে থাকব কিন্তু।আপনি কিন্তু আপুকে বলে দিবেন।আমার বাচ্চা অনেক পছন্দের..উফফ”
আরশির এক্সাইটমেন্ট দেখে সিদ্রার হাসল।তারপর কানে কানে বলল…
—”মন দিয়ে পড়াশুনা করো।আমিই না হয় তোমায় একটা পার্মানেন্ট বেবি এনে দিবো”
আরশি লজ্জায় দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলল।সিদ্রাত হেসে দিলো…
চলবে…