#ভালোবাসাকে_দিলাম_ছুটি
#Ariful_Islam_Akash
#৪থ পর্ব…..
আমি বেশ কয়বার ফোন করলাম কিন্ত কথার ফোন বন্ধ। অজানা একটা ভয় এসে মনে বাসা বাধতে লাগলো। যানি না কথা কি না কি করে বসে। কথার কিছু হয়ে গেলে আমি বাচতে পারবো না। কারন, কথা নামের মেয়েটিকে আমি বড্ড বেশি ভালোবাসি।
ঘুমানোর জন্য বিছানার যেয়ে শুয়ে পড়লাম। আমার মনে হলো তুলি এখনো জেগে আছে, ঘুমায় নি। আমি আস্তে করে ডাক দিলাম,
— তুলি?
— হুমমম।
— ঘুমাও নি এখনো?
— না মানে, আসলে ঘুম আসছে না।
— সরি।
— কেনো?
— তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য। আমার জন্য তুমি কষ্ট পাচ্ছো। আমাদের বিয়ে হয়ে হয়ে গেছে, কিন্ত তুমি তোমার অধীকার থেকে বন্সিত। আমি যানি বিয়ে নিয়ে একটা মেয়ে মনে মনে হাজারো স্বপ্ন সাজিয়ে রাখে। আমি নিজে হাতে তোমার সেই স্বপ্ন গুলো ভেঙে দিলাম। আমি বা কি করবো? আমি যে কথাকে ভালোবাসি। অনেক বেশি ভালোবাসি। তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার মত ভাষা আমার নেই। তবুও বলছি, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও প্লিজ।
আমার কথা শেষ হতেই তুলি আমাকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিলো। হঠাৎ করে যে এমন কিছু হয়ে যাবে আমি কখনো ভাবতেও পারি নি। তুলি কাঁদতে কাঁদতে বললো,
— আমিও তো আপনাকে ভালোবাসি। অনেক বেশি ভালোবাসি। আমি কখনো প্রেম করিনি, কাউকে ভালোবাসি নি। আমি শুধু চেয়ে ছিলাম বিয়ে পর স্বামীকে ভালোবাসতে।যখন যানলাম আপনার সাথে আমার বিয়ে হবে, সেই মূহুত থেকে আপনাকে ভালোবেসেছি। এমন একজন মানুষকে চেয়ে ছিলাম যে কখনো আমাকে কষ্ট দিবে না,ঠকাবে না। আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। আমাকে কখনো ছেড়ে যাবেন না, কথা দিন।
তুলি আবারো কান্না করতে লাগলো। আমি কি করবো বা কি করা উচিৎ কিছুই মাথায় এলো না। মনে মনে বললাম, ” এই কয়দিনের ভালোবাসায়ই যদি আমাকে ছেড়ে থাকতে তোমার কষ্ট হয়। তাহলে আমি যাকে তিনটা বছর ধরে ভালোবাসি তাকে কি করে ছেড়ে থাকবো? কি করে ভুলে যাবো তাকে? তুমি তাও আমাকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে পারছো। কিন্ত আমি কাকে জরিয়ে ধরে কান্না করবো? তোমার কষ্টটা তাও আমার সামনে প্রকাশ করতে পারছো। আমি কার সামনে আমার কষ্ট প্রকাশ করবো? আমার ভিতরের কষ্টটা দেখার যে কেউ নেই তুলি, কেউ নেই। ”
কখন ঘুমিয়ে গেছি যানি না। সকালে ঘুম ভাঙতেই বুকের উপর ভারি কিছু অনুভব করলাম। টিপ টিপ করে চোঁখ মেলে তাকাতেই দেখি তুলি আমার বুকের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে । প্রথম বারের মত তুলিকে একটা কাছ থেকে দেখলাম। ঘুমন্ত মানুষকে না কি সুন্দর লাগে। তুলিকে যেনো একটু বেশিই সুন্দর লাগছে। একদম বাচ্চাদদের মত করে ঘুমিয়ে আছে। চুল গুলো এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে আছে পুরো মুখ। তুলির নিশ্বাস পড়ছিলো আমার বুকে। তুলিকে ডাকতে যেয়েও কেনো যেনো ডাকতে পারলাম না। হয়ত একটু লোভ হচ্ছিলো ওই মায়াবী মুখের দিকে চেয়ে থাকার।
তুলির ডাকে ঘুম ভাংলো। আমি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তারপর সবার সাথে নাস্তা করে ছাদে চলে এলাম। ছাদে এসে অবাক হয়ে গেলাম এটা ছাদ না ফুলের বাগান। পুরো ছাদটাই ফুলের গাছে ভরে।নানা রঙের ফুল ফুটে আছে যেগুলোর নামও যানি না আমি। বাড়ির সীমানাটা বেশ বড় বলেই মনে হচ্ছা। ডানদিকে একটা পুকুর আছে যেখানে সাদা হাঁস গুলো মনের আনন্দে সাঁতার কাটছে। আমি পুকুরের দিকে চেয়ে আছি। হঠাৎ আমার পিছনে কেউ চিৎকার করে উঠলো। আমি ভয় পেয়ে পিছনে ঘুরে দেখি তিশা দাড়িয়ে হাসছে। আমি বললাম,
— তুমি তো আমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে।
— এত অল্পে কি আর ভয় পেলে চলে? যাই হোক কেমন ছিলো?
— কি কেমন ছিলো?
— আজকের রাতটা?
— ওই তো, রুমে গেলাম, দরজা বন্ধ করলাম, বিছানায় শুলাম।
— তারপর?
— নাক ডাকিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম ।
— ওহ ভাইয়া তুমি না?
— কি?
— একটা যা তা।
— সেটা আবার কি? এর আগে কখনো শুনি নি তো?
— তোমাকে শুনতে হবে না। নিচে চলো? আম্মু ডাকছে।
আমি তিশার সাথে নিচে আসতেই দেখি কয়জন মহিলা ডয়িংরুমে বসে আছে। আমি যেয়ে সবাইকে সালাম দিয়ে একটা সোফায় বসলাম, তিশা আমার পাশে বসলো। সবাই আমাকে একটা একটা করে প্রশ্ন করতে লাগলো। আমি সবার প্রশ্নরই হাসি মুখে জবাব দিলাম। আমি ভেবেছিলাম ঘঠনা এখানেই সমাপ্তি। কিন্ত আমার ধারনা ভুল। একজন একজন করে আসতেই লাগলো। এক সময় আমি বিরাক্ত হয়ে গেলাম। ততক্ষণে তুলিও আমার পাশে এসে বসেছে। আমি আস্তে করে তিশাকে বললাম,
— আমাকে কি চিড়িয়াখানার জন্তু মনে হয়?
— ভাইয়া, তুমি এভাবে বলছো কেনো? নতুন জামাইকে পাড়া প্রতিবেশি একটু দেখতে আসেই।
— এভাবে ভীর করে দেখার কি আছে?
— একটু পরেই তো চলে যাবে সবাই।
— এরা তো যাবেই। তারপর আবার আরেক দল এসে হাজির হবে।
একটু পর ফাকা পেতেই আমি এক দৌড়ে রুমে চলে এলাম। বাবারে বাবা, বড় বাচা বেচে গেছি।
রুমে এসে কথার ফোনে ফোন করলাম। কিন্ত এখনো ফোন বন্ধ। কথার কথা মনে পড়তেই মনের মধ্যে কেমন যেনো অস্থিরতা বেরে গেলো।
সারাদিন বসে থেকে আর খাওয়া দাওয়া করেই সময় কেটে গেলো। বিকালে তিশা বায়না ধরলো ঘুরতে বের হবার জন্য। এমন করে বললো যে না করতে পারলাম নাম। আমি আর তিশা রেডি হয়ে আধ ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছি তুলির জন্য। কিন্ত উনার কোনো খবরই নেই। পাচ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আসছি বলে রুমে গেছে। ৩০ মিনিট হয়ে গেলো তবুও দেখা নেই। অবশেষে দেখা পাওয়া গেলো, আমি আর তিশা বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করছিলাম তখন তুলিকে বাইরে আসতে দেখে আমার চোঁখ আটকে গেলো তুলির উপর। নীল রঙ? সে তো আমার আজিবনের দুর্বালতা। তুলি নীল রঙের একটা শাড়ি পড়েছে, মুখে হালকা মেকাপ, ঠোঁটে হালকা লাল লিপষ্টিক, কপালে ছোট্ট একটা টিপ, চোঁখ কাজল, মুখে পাগল করা সেই হাসি। কোমর সমান চুলগুলো একদম খোলা। তুলির চুলগুলো ছুয়ে দেওয়ার লোভটা বোধহয় দক্ষিণা বাতাসও সামলাতে পারলো না। একটা দমকা হাওয়া এসে ছুয়ে গেলো তুলির লম্বা চুল গুলো। বাতাসের স্পশে চুলগুলো যেনো একদম বেপরোয়া হয়ে উঠলো এলোমেলো ভাবে খেলা করতে লাগলো তারা। এক মুহুতের জন্য তুলিকে মনে হলো হুমায়ূন আহমেদ রচিত চরিত্র, অপরুপ সুন্দরী সেই রুপা নামের মেয়েটি।আমি কবি হলে হয়ত এতক্ষনে কয়েক হাজার কবিতা লিখে ফেলতাম। কিন্ত আমি কবি নয়।
জিবনের প্রথম মনে হয় কোনো মেয়ের দিকে এতক্ষন চেয়ে ছিলাম বেহায়ার মত।
— এভাবে হা করে চেয়ে থাকার কিছু নেই। সুন্দরী রমনীটি আপনারই বউ। কেউ এসে নিয়ে যাবে না। তাকে দেখার জন্য আপনার সারা জিবন পড়ে রয়েছে। এবার চলুন।
তিশার কথায় আমার ঘোর ভাংলো। সাথে সাথে আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম। মনে মনে ভাবলাম, ” হয়ত সে আমারই বউ, কিন্ত তাকে দেখার বা ভালোবাসার কোনো অধীকার আমার নেই।”
গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে বয়ে চলছে সুবিশাল একটা নদী নাম। নদীর উপর দিয়ে বানানো হয়েছে একটা ব্রিজ, যা মায়াতলী ব্রিজ নামে পরিচিত। এপার ওপার কে এক করে দিয়েছে এই ব্রিজ টা । ব্রিজের উপর থেকে সৃর্যাস্ত দেখার মানুষের সংখ্যা কম নয়। পশ্চিম আকাশে সৃর্যমামা তখন তার প্রতাপ কমিয়ে এনেছে। লাল আভা ছরিয়ে দিয়ে আজকের মত বিদায় বার্তা যানাচ্ছে পৃথিবি বাসিকে। একটু পরেই লুকিয়ে পড়বে মেঘের আড়ালে।
আমরা ব্রিজের উপর দাড়িয়ে সবার মতই সৃর্যাস্ত দেখছিলাম। তখন তিশা বললো,
— ভাইয়া চলো ফুসকা খাই।
ব্রিজের উপর বেশ কয়টা ফুসকার দোকান, সাথে আছে, বাদাম ওয়ালা,ঝালমুড়ি ওয়ালা। তিশা আমার হাতধরে টেনে নিয়ে একটা ফুসকার দোকানে নিয়ে গেলো। আমরা তিনজন তিনটা চেয়ারে বসলাম। তিশা বললো,
— নিয়ম অনুযায়ী ফুসকার বিলটা ভাইয়ারই দেওয়ার কথা। তবে এখানে একটা গেম হয়ে যাক।
তুলি বললো,
— কিসের গেম?
তিশা বললো,
— গেমটা হলো, যে সবচেয়ে কম ফুসকা খাবে বিলটা সে দিবে। আমি যদি কম খাই তাহলে আমি দিবো, ভাইয়া কম খেলে ভাইয়া দিবে আর আপু কম খেলে আপু দিবে। ঠিক আছে?
— ওকে ডান।
তুলি আর তিশা হয়ত ভেবেছে সব চেয়ে কম আমিই খাবো। কারন, মেয়েদের ধারনা ছেলেরা ফুসকা খুব একটা বেশি পছন্দ করে না। আমি যখন স্কুলে ছিলাম তখন ফুসকা দেখলেই মেজাজ খারাপ হয়ে যেতো। সব সময় বলতাম ফুসকা একটা খাওয়ার জিনিস হলো? কিন্ত কলেজে পর বন্ধুদের সাথে আড্ডা মানেই ফুসকা। সবাই খেতো আর আমি চেয়ে চেয়ে দেখতাম। অথচা, কোনো কোনো সময় না খেয়েও সবার বিল আমাকে দিতে হতো। তেমনি কোনো একদিন বাজি ধরেছিলাম ফুসকা খাওয়ার জিবনের প্রথমবারেই ২৩ প্লেট ফুসকা সাবার করে দিয়েছিলাম। সেই দিনের কথা মনে হলে আমার এখনো হাসি পায়। আমি খেলাম কি করে? এই প্রশ্নোর উত্তর আজও পাই নি।
ফুসকা ওয়ালা মামা তিনজনকে তিন প্লেট ফুসকা দিয়ে গেলো আমরা খাওয়া শুরু করলাম। সময়ের সাথে সাথে চলতে থাকলো আমাদের খাওয়া। তিশা ৫ প্লেট খাওয়ার পর বললো সে আর পারবে না।
আমি বললাম,
— তাহলে তো বিলটা তোমাকেই দিতে হবে?
তুলি বললো,
— জি না, এখনো তিশার বোন আছে। তাকে হারান তারপর দেখা যাবে কে বিল দিবে।
কথাটি বলেই তুলি আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলো যার অর্থ, ” পারলে আমাকে হারান দেখি। ”
আমিও তুলির দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলাম যার অর্থ, ” শালীর বোন, দেখা যাক তাহলে। ”
আবারো আমাদের খাওয়া শুরু হলো। তুলি একটুও তাড়াহুড়া করছে না। একদম ধীরে ধীরে খাচ্ছে। আমি মামাকে বললাম ঝালটা বাড়িয়ে দিতে। বেশি ঝাল দেওয়া ২ প্লেট ফুসকা খেতেই তুলির মুখ একদম লাল হয়ে গেলো। তুলির দিকে তাকিয়ে আমার বেশ হাসি পাচ্ছি। বেচারি, আমাকে চিনে না। কলেজ জিবনের সেই খাদক বন্ধুদের হারিয়ে ফুসকা চাম্পিয়ন হয়েছিলাম কি আর এমনি এমনি। আমার সাথে লাগতে আসা না? বুঝবে এবার।
নয় প্লেট খাওয়ার পর তুলি শেষ। ঝালের জন্য মুখটা একদম টমেটোর কালার হয়ে গেছে। চোঁখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমি তুলির দিকে তাকিয়ে হাসছি আর খাচ্ছি। তখন আমার ১১ প্লেট চলছে। তিশা বললো,
— ভাইয়া, আর খাবেন না প্লিজ। এতটাকা আমার কাছে নেই। পরে বিল না দিতে পারলে প্লেট পরিষ্কার করাবে। আমি কখনো প্লেট পরিষ্কার করি নাই।
তিশার অসহায় মার্কা চেহারা দেখে মায়া হলো। আমি খাওয়া স্থগিত করে উঠে পরলাম। তারপর পাশের একটা দোকান থেকে দুটো আইসক্রিম এনে দুজনকে দিলাম। আমি ফুসকার বিল দিতেই তিশা রাগী কন্ঠে বললো,
— এটা ঠিক হলো না ভাইয়া। তুমি খেলার নিয়ম ভেঙেছো।
— সমস্যা নেই পরের বার ভাঙবো না। তাছাড়া বাচ্চাদের সাথে বাজী ধরার কোনো মানেই হয় না।
তুলি বললো,
— আমরা মোটেও বাচ্চা নয়। আজ শনিবার বলে হেরে গেলাম। কারন, শনিবারে আমরা ফুসকা খেতে পারি না।
আমি একটা হিটলারি হাসি দিয়ে বললাম,
— যে পারে, সে পারে।
“” কার যেনো চোখ,নাক দিয়ে বৃষ্টি হচ্ছিলো। আমি কিন্ত দেখি নি। “” কথাটি বললেই তুলি রেগে যায়। আমিও পুরো রাস্তা একই কথা জপতে জপতে এলাম।
তিনটা দিন তুলিদের বাসায় বেশ আনন্দের সাথেই কেটে গেলো। আজ ফেরার পালা। তুলি আবারো আগের মত বাবা,মা, চাচ্চু,চাচিআম্মু কে জরিয়ে ধরে কান্না শুরু করলো। আমি আজও বুঝতে পারলাম না কান্না করার মানে কি। অবশেষে আমি আর তুলি সবাইকে সালাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম। গাড়ি ছাড়ার সময় তিশা বললো,
— ভাইয়া এক মিনিট কথা ছিলো। একটু নামুন।
আমি গাড়ি থেকে নেমে তিশার কাছে গিয়ে বললাম,
— কিছু বলবে?
— একটা কথা বলতে চাইছি।
— বলো।
— ভাইয়া আপু খুব ভালো। আমি আপুকে অনেক বেশি ভালোবাসি। এর আগে আপুকে ছাড়া কখনো একা থাকি নি। আজ আপু আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে যানি না আবার কবে দেখা হবে।
তিশা কেদে ফেললো। আমি তিশার মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম,
— আরে পাগলি কান্না করছো কেনো? আমরা তো আবারো আসবো। তোমাকে কথা দিচ্ছি প্রতি মাসে একবার করে বেড়াতে আসবো আমরা। আর খুব শীঘ্রই তোমাকেও আমাদের সাথে নিয়ে যাবো। তোমার পরিক্ষাটা আগে শেষ হোক। তারপর আবারো দুই বোন এক সাথে থেকে।
তিশা বললো,
— ভাইয়া আমি সব সময় আপুকে হাসি খুশি দেখতে চাই। তুমি কখনো আপুকে কষ্ট দিওনা।
আমি কিছু বললাম না, তিশা বললো
— আমাকে ছুয়ে কথা দাও কখনো আপুকে কষ্ট দিবে না।
আমি তিশাকে ছুয়ে বললাম,
— ঠিক আছে, কথা দিলাম। তোমার আপুকে কখনো কষ্ট দিবো না।
গাড়িতে উঠে বসলাম। গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে। তিশার কথা মনে হচ্ছে বার বার। তিনদিনের পরিচয় অথচ মনে হয় কত দিনের চেনা। তিশাকে পেয়ে ছোট বোনের অভাব ভুলে গিয়েছিলাম। তিনটা দিন, কত হাসি, ঠাট্টার মধ্য দিয়ে কেটে গেলো।
বাড়িতে আসার চারদিন পর আব্বু আম্মুর সাথে ঢাকায় ফিরে এলাম। ঢাকায় এসেই কথার কথার সাথে যোগাযোগ করা চেষ্টা করেছি। কিন্ত কথা আমাকে এড়িয়ে চলছে। রিমির কাছ থেকে যানতে পেরেছি কথা রিমির সাথে মার্কেটে যাবে শপিং করতে। তাই আমিও রিমির সাথে শপিংমলে চলে এসেছি। একটু পর কথা এসে আমাকে দেখেই ঘুরে অন্য দিকে হাটতে লাগলো। আমি যেয়ে কথার সামনে দাড়িয়ে বললাম,
— কথা দাড়াও, একবার আমার কথা শুনো।
— আমি তোমার কোনো কথা শুনতে চাই না।
— তুমি আমাকে একবার কথা বলার সুযোগ দাও। আমার কথাটা শুনো।
— কোনো কথা নেই তোমার সাথে আমার। পথ ছাড়ো না হলে ভালো হবে না।
— খারপ কি হয় সেটাই দেখবো আমি। কথা আমি তোমাকে ভালোবাসি।
— কিসের ভালোবাসা? আমি তোমাকে আর ভালোবাসি না। অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করার সময় কোথায় ছিলো এই ভালোবাসা?
— কথা আমার কিছু করার ছিলো না, পরিস্থিতিটা এমন ছিলো যে আমি নিরুপায় ছিলাম। বিশ্বাস করো আমার বিয়েটা হয়েছে ঠিক। কিন্ত আমি এখনো তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া কখনো অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারবো না।
— তুমি আমাকে ভালোবাসো?
— কোনো সন্দেহ আছে?
— ঠিক আছে চলো। আজ,এক্ষুনি আমরা বিয়ে করবো?
— মানে?
— কোনো মানে নেই আকাশ। তুমি যদি সত্যই আমাকে ভালোবেসে থাকো তাহলে চলো। আজকেই আমাদের বিয়ে হবে। আর তা না হলো, তুমি চলে যাও আমার সামনে থেকে আর কখনো আমার সামনে আসবে না। তোমাকে পাচ মিনিট সময় দিলাম ভেবে দেখো কি করবে? আমাকে বিয়ে করবো? না সারা জিবনের জন্য আমাকে ছেড়ে যাবে?
আমি কথাকে ভালোবাসি, তাই ভাবর জন্য কোনো সময় দরকার নেই আমার। যকে ভালোবাসি তাকে বিয়ে করার জন্য ভাবতে হবে কেনো? যা হবার হবে, আমি কথাকে নিয়ে রওনা দিলাম কাজি অফিসের দিকে। আধ ঘন্টার মধ্যেই আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো।
চলবে…..?
(বিঃদ্রঃ ভুল তুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। )