Your_love_is_my_Addiction পর্ব ৬

#Your_love_is_my_Addiction
#Season_2
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_৬
.
বোর্ডে পড়া বুঝাচ্ছে টিচার। কিন্তু সে পড়ার কিছুই ইচ্ছের মাথায় ঢুকছে না। ক্লাসে বসে থেকেও তার মন রয়েছে অন্য জায়গায়। আয়াশকে আজ ভিন্ন লাগছিল। তার ব্যবহারও কেমন যেন অদ্ভুত লাগছিল ইচ্ছের কাছে। সে বুঝে উঠতে পারছে না যে আয়াশের হঠাৎ করে হয়েছেটা কী! তার সাথে এত রোমান্টিক ব্যবহার করার কারণই বা কী! তবে কী কোনোভাবে তাকে ভালোবাসে আয়াশ? কথাটা ভাবতেই তার শরীর শিউরে উঠলো। শেষে কি না একজন গ্যাংস্টার তার প্রেমে পড়লো! না না এটা হতে পারে না। হয়তো এমনি এমনি তাকে চুমু খেয়েছে আয়াশ। কিন্তু এমনি এমনি কে চুমু খায়? আর সে কেন কোনো বাঁধা দিতে পারে নি আয়াশকে? একটা জিনিস ইচ্ছে খুব ভালো ভাবে খেয়াল করেছে। আয়াশ যখনি তার কাছে আসে তখনি সে কেমন যেন হয়ে যায়। কেমন যেন একটা নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে সে। চেয়েও পারে না আয়াশকে বাঁধা দিতে। আর তাই তো সুযোগ পেয়ে যায় আয়াশ।
ইচ্ছে যখন তার দুনিয়ার ভাবনায় মশগুল তখন কে যেন ওর টেবিলে বারি দেয়। চমকে উঠে সামনে তাকিয়ে টিচারকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গেল ইচ্ছে। স্যার তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দাঁড়াতে বললেন ইচ্ছেকে। ইচ্ছে দাঁড়িয়ে গিয়ে এক হাত দিয়ে অপর হাত কচলাতে লাগলো। স্যার বললেন,
-“এতক্ষণ ক্লাসে কী পড়াচ্ছিলাম আমি?”
-“(….)”
-“আমি তোমাকেই প্রশ্নটা করেছি, উত্তর দাও।”
-“আ..আসলে স্যার আমি মানে আমি একটু অন্য চিন্তায় ছিলাম তাই খেয়াল করিনি স্যরি।”
-“তা করবে কেন! আয়াশ খানের গার্লফ্রেন্ড বলে কথা! পরীক্ষা না দিলেও তো ফার্স্ট হবে তুমিই। তাই এসবে মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছো না।”
-“আমি আয়াশের গার্লফ্রেন্ড নই স্যার। আর তাছাড়া এটা কলেজ। আমি এখানে পড়তে এসেছি আর আপনি পড়াতে এসেছেন। তো সেই হিসেবে আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে আমাকে অ্যাটাক করার কোনো অধিকার আপনার নেই স্যার। তাই আশা করব এসবের মাঝে আয়াশকে টানবেন না। নাহলে ও কেমন তা তো নিশ্চয়ই শুনেছেন আপনি! আমার কিছু বলতে হবে না। ওর যা জানার দরকার তা ও এমনিতেই জেনে যায়। তাই বলছি এসব ভেবে বা বলে খামোখা নিজের মৃত্যু ডেকে আনবেন না।”

প্রতিত্তোরে কিছু বললেন না স্যার। তিনি কিছুটা ভয় পেয়েছেন ইচ্ছের কথায়। গতকাল সকলের সামনে যেভাবে চারটা ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেললো তাতে ইচ্ছে ভুল কিছু বলে নি। স্যার এবার বেশ নরমভাবেই বললেন,
-“ক্লাসে মনোযোগ দাও।”
-“ওকে স্যার।”

অফিসে বসে কাজ করছে আয়াশ। তার সামনেই ল্যাপটপে বাসার এবং ইচ্ছের কলেজের সিসিটিভি ক্যামেরা কানেক্ট করা। এখনো পর্যন্ত ইচ্ছে একবারও ক্লাসরুম থেকে বের হয় নি। তাই আয়াশও তার সম্পূর্ণ মনোযোগ নিজের কাজে দিয়ে রেখেছে। হঠাৎ তার কেবিনে বিনা অনুমতিতে একজন পুলিশ অফিসার প্রবেশ করলো। আয়াশ তা দেখে ভ্রু কুঁচকে নিজের চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলো। অফিসার তার সামনে দাঁড়িয়ে বললেন,
-“গতকাল চারজন ছেলেকে জনসম্মুখে হত্যা করার জন্য আপনাকে আমরা গ্রেফতার করতে এসেছি।”
আয়াশ বাঁকা হেসে বললো,
-“কোনো প্রমাণ আছে যে ছেলেগুলোকে আমিই মেরেছি?”
-“কলেজের টিচার এবং স্টুডেন্টরা নিজেদের চোখে দেখেছে। আপনি কেমন মানুষ তা আপনি নিজেও জানেন ভালো মতো। তাই ওরা কেউ ভয়ে আপনার বিরুদ্ধে স্টেটমেন্ট দিতে রাজি হয় নি।”
-“তার মানে আমিও কিছুই করিনি সিম্পল!”
-“ব্যাঙ্গালোর শহরের কিং দ্যা গ্রেট গ্যাংস্টার আয়াশ খানের মুখে মিথ্যে কথা শোভা পায় না।”
-“ওয়েল! আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি অফিসার। আপনি বোধহয় আমার ব্যাপারে কিছু না জেনেই চলে এসেছেন আমাকে অ্যারেস্ট করতে। বাট ফর ইয়্যর কাইন্ড ইনফরমেশন, এই আয়াশ খানকে টক্কর দিতে পারে এমন কেউ এখনো জন্মায়নি। অর্থাৎ আপনি আমার লেভেলের না।”
-“ইউ ক্রিমিনাল!”
-“শাট আপ! জাস্ট শাট আপ। আপনাকে দেখে ব্যাঙ্গালোর শহরে নতুন মনে হচ্ছে। তাই ছেড়ে দিচ্ছি। কিন্তু! পরবর্তীতে একই ভুল করলে মনে রাখবেন, আয়াশ খান কাউকে দ্বিতীয় সুযোগ দেয় না। শুধুমাত্র আপনি নতুন বলে আপনার জন্য এই বিশেষ ছাড় দেওয়া হলো। ইট’স মাই ফার্স্ট অ্যান্ড লাস্ট ওয়ার্নিং টু ইউ।”

প্রায় সাথে সাথেই আয়াশের কেবিনের দরজায় নক পড়লো। অনুমতি পেতেই অনেকটা চিন্তিত হয়ে এক প্রকার হন্তদন্ত হয়েই কেবিনের ভেতরে ঢুকলেন ব্যাঙ্গালোর পুলিশ কমিশনার। আয়াশ তাকে দেখে হেসে হাত বাড়িয়ে দিল হ্যান্ডশেক করার জন্য। কমিশনার আয়াশের সাথে হাত মিলিয়ে তার অফিসারের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,
-“কার অনুমতি নিয়ে আপনি এখানে এসেছেন অফিসার?”
-“স্যার আয়াশ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে তিনি গতকাল দিনে-দুপুরে জনসম্মুখে দাঁড়িয়ে চারজন ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছেন।”
-“অভিযোগটা কে করেছে?”
-“যিনি অভিযোগ করেছেন তিনি নিজের নাম বা অ্যাড্রেস কিচ্ছু জানান নি। যে নম্বর থেকে কল দিয়েছিলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম যে সেটা একটা টেলিফোন বুথের নম্বর।”
-“এছাড়া কোনো প্রমাণ আছে আপনার কাছে?”
-“আপাতত নেই।”
-“তাহলে কিসের ভিত্তিতে আপনি উনাকে অ্যারেস্ট করতে এসেছেন? এমন একজনের অভিযোগ শুনে এসেছেন যার কি না নিজের আসল পরিচয় দেওয়ার সাহস নেই! এভাবে কাউকে হ্যারাস করার কোনো মানে হয় না অফিসার। আপনি উনার ব্যাপারে কিছু না জেনে শুনেই চলে এসেছেন। আমি ওয়ার্ন করলাম আপনাকে নেক্সট টাইম থেকে যেন উনার বিরুদ্ধে কোনো কেস এ আপনাকে না দেখি আমি।”
-“জ্বি স্যার।”
অফিসার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলেন। কমিশনারের উদ্দেশ্যে আয়াশ বললো,
-“আমি অস্বীকার করব না যে গতকাল আমি চারটা খুন করেছি। কিন্তু তারা যার যোগ্য ছিল আমি শুধু তাদেরকে তাদের প্রাপ্যটাই দিয়েছি।”
-“জ্বি। আমি দুঃখিত আমার অফিসারের কর্মের জন্য। আমি উনার হয়ে আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। উনি নতুন এখানে। গত দু’দিন আগেই এসেছেন তাই জানেন না আপনার ব্যাপারে।”
-“ব্যাপার না। আমি আগেই বুঝেছি এটা। যাই হোক আপনার অফিসারকে নিয়ে যান। সে নতুন বলে তাকে ছাড় দিচ্ছি। নয়তো আজ প্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে পারতেন না উনি।”
-জ্বি ধন্যবাদ।”
আয়াশ নিজের চেয়ারে বসতে বসতে অফিসারের উদ্দেশ্যে বললো,
-“ব্যাঙ্গালোর শহরের কিং আমি এমনি এমনি হই নি। দিনে-দুপুরে জনসম্মুখে যখন কাউকে খুন করতে পেরেছি তখন আপনার বুঝা উচিৎ ছিল আমার সাহস ঠিক কতটা আর আমি ঠিক কী কী করতে পারি।”

অফিসার মাথা নিচু করে ‘স্যরি’ বললো। আয়াশের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কমিশনার অফিসারকে নিজের সাথে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। আয়াশের অফিস থেকে বের হওয়ার সময় অফিসার কমিশনারের উদ্দেশ্যে বললেন,
-“স্যার একটা প্রশ্ন করি?”
-“হুম।”
-“আয়াশ খানকে এত ভয় পাওয়ার কী আছে?”
দাঁড়িয়ে গেলেন কমিশনার। বললেন,
-“বনের রাজা কাকে বলা হয়?”
-“সিংহকে।”
-“ঠিক তেমনই এই ব্যাঙ্গালোর শহরের রাজা আয়াশ খান। উনার কথাই এখানে সকলের জন্য শেষ কথা। এখানকার মন্ত্রী-মিনিস্টার, পুলিশ, উকিল সব উনি নিজেই। উনার কথার অমান্য করা মানে নিজের মৃত্যুকে দাওয়াত দেওয়া। আজ যদি আমি ঠিক সময়ে এসে না পৌঁছাতাম তাহলে এতক্ষণে আপনার উপরের টিকিট কনফার্ম ছিল।”

অবাক হয়ে ঢোক গিললেন অফিসার। আয়াশ খান এত বেশি পাওয়ারফুল! না জেনে বুঝে কার সাথে পাঙ্গা নিতে গিয়েছিলেন উনি!
ইচ্ছে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেল। চোখে-মুখে পানি দিয়ে কিছুক্ষণ সেভাবেই দাঁড়িয়ে রইলো সে। ক্লাস থেকে বের হওয়ার আগে রোমানের সাথে দেখা হয়েছিল তার। অনেক জোরাজুরি করার পর রোমানের কাছ থেকে রায়ানের ব্যাপারে জানতে পেরেছে সে। রায়ান এখনো হসপিটালে। আয়াশের গার্ডরা রায়ানকে এতটাই জঘন্যভাবে মেরেছিল যে রায়ানের একটা পা ভেঙে গেছে। ডক্টর বলেছে রায়ান আর কখনো স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারবে না। এসব বলে রোমান তাকে যা নয় তা বলে কথা শুনিয়ে চলে গেছে। ইচ্ছে ভাবতেই পারছে না যে তার জন্য একজনের এত বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। রায়ান কী কখনো তাকে এর জন্য ক্ষমা করবে? সেখানে দাঁড়িয়ে কিছু সময় কেঁদে নিজেকে হালকা করে আবারও চোখে-মুখে পানি দিয়ে বের হলো।
নিচে এসে মুহিবকে না দেখতে পেয়ে গার্ডদের জিজ্ঞেস করলেই তারা হাত দিয়ে ইশারা করে মাঠের দিকে দেখিয়ে দেয়। মাঠের মাঝখানে পায়ের উপর পা তুলে শুয়ে কানে ইয়ারফোন গুঁজে গান শুনছে আর গেমস খেলছে। ইচ্ছে একটু হেসে সেদিকে চলে গেল। ইচ্ছেকে দেখে উঠে বসলো মুহিব। ইয়ারফোন খুলে গেমস খেলতে খেলতে বললো,
-“ক্লাস শেষ?”
-“হ্যা। কী করছো তুমি?”
-“পাবজি খেলছি।”
-“তুমি আর তোমার পাবজি! সারাদিন এই পাবজি নিয়ে থাকো কীভাবে?”
-“ফোন আমার ভালোবাসা। বাইক আর পাবজি আমার বউ। তাই এই তিনটাকে নিয়ে কিছু বলবে না।”
-“তোমার আসল বউ আসলে তোমার যে কী হাল করবে আমি শুধু সেটা ভাবছি।”
-“বিয়ে কে করবে! আমি? অসম্ভব! জেনে শুনে কোনো আফাতকে ঘাড়ে ঝুলাবো না আমি। বউ মানেই আফাত।”
ইচ্ছে ভ্রু কুঁচকে মুহিবের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“কী বললে?”
থতমত খেয়ে গেল মুহিব। আমতা আমতা করে সে বললো,
-“না মানে আমি তোমাকে বলিনি কিছু। যে মেয়ে আমার বউ হতে চাইবে আমি তার কথা বলেছি।”
-“বউ মানেই আফাত এর মানে কী?”
-“আর ভাই আমি তোমাকে বলিনি তো!”
-“কথাবার্তা বলার আগে ভেবে চিন্তে বলবে।”
-“হ্যা, আচ্ছা, ঠিক আছে, ওকে।”
-“চলো বাসায় যাই।”
-“চলো নয়তো ভাই আমাকে বের করে দিবে বাসা থেকে।”

নিমিষেই মনটা খারাপ হয়ে গেল ইচ্ছের। আবার সেই আয়াশের মুখোমুখি হতে হবে ওকে। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো ওর ভেতর থেকে। বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে বেডে বসতেই ফোনের ম্যাসেজ টিউন বেজে উঠলো। ইচ্ছে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে একটা অপরিচিত নম্বর থেকে এসেছে ম্যাসেজটা। প্রথমে ভাবলো দেখবে না, পরে আবার কী যেন ভেবে ম্যাসেজটা অন করলো। সেখানে লেখা ছিল, ‘যদি আয়াশ খানকে ধ্বংস করতে চাও, তাকে শেষ করতে চাও তবে আমার সাথে যোগাযোগ করো। আগামীকাল তোমার কলেজের ক্যান্টিনে থাকবো আমি। সেখানে চলে এসো। আয়াশের গার্ড বা মুহিব যেন তোমাকে না দেখে সেভাবেই এসো।’ ইচ্ছে বুঝতে পারলো না কিছু। কে এই লোক? আর তার নম্বরই বা কোথায় পেলো এই লোক? সে তো আয়াশের ম্যাসেজ ভেবেই ওপেন করেছিল ম্যাসেজটা। এখন তো দেখা যাচ্ছে অন্যকিছু। তবে যাই হোক এটাই সুযোগ আয়াশকে ধ্বংস করে দেওয়ার। লোকটা যেই হোক না কেন তার সাহায্য করতে চাইছে এই অনেক। ইচ্ছে সেই অপরিচিত নম্বরে রিপ্লাই করে দাঁড়িয়ে রইলো।
-“কী করছো তুমি?”

হঠাৎ আয়াশের গলা শুনে চমকে উঠলো ইচ্ছে। হাত কাঁপতে লাগলো তার। এই সময়ে আয়াশ বাসায়! তার মানে কি আয়াশ সব জেনে গেছে? ইচ্ছে ভয় পেয়ে জবাব দিল,
-“কিক..কিছু না কিছু না। কিছুই করছি না।”
ইচ্ছের অবস্থা দেখে আয়াশ সন্দিহান হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
-“ভয় পাচ্ছ কেন?”
-“কোথায়? আ..আমি ভয় পাচ্ছি না।”

আয়াশ খেয়াল করলো ইচ্ছের যে হাতে ফোন রয়েছে সেই হাতটা হালকা কাঁপছে। ওর সন্দেহ আরও বেড়ে গেল। ও ইচ্ছের দিকে এগিয়ে গিয়ে হাত থেকে ফোনটা নিয়ে দেখে হরর মুভি চলছে ফোনের স্ক্রিনে। সেখানে একটা ভূত একটা মানুষের মাথা চিবিয়ে খাচ্ছে। আয়াশ ভ্রু কুঁচকে ইচ্ছের দিকে একবার তাকিয়ে দেখে ইচ্ছে চুপসে আছে। হেসে ফেললো আয়াশ।
-“সিরিয়াসলি! তুমি হরর মুভি দেখে ভয় পাচ্ছ? যদি ভয়ই পাবে তাহলে এসব দেখার কী দরকার?”
-“(….)”
-“ভীতু একটা। আচ্ছা চলো একসাথে লাঞ্চ করব।”
-“বাসায় না বাইরে!”
-“বাইরে যাবো চলো।”
-“আচ্ছা আমি তৈরি হয়ে নিই।”
-“ঠিক আছে। আমি নিচে অপেক্ষা করছি।”

ইচ্ছে ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। আয়াশ রুম থেকে বের হতে গিয়েও ফিরে এলো। ইচ্ছে ঘাবড়ে গেল। আয়াশ বাঁকা হেসে ইচ্ছেকে কোমড় জড়িয়ে কাছে টেনে নিয়ে ওর ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলো। হঠাৎ আক্রমণে হকচকিয়ে গেল ইচ্ছে। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে সে আয়াশের দিকে। আয়াশ চোখ বন্ধ করে তাকে চেপে ধরে চুমু খাচ্ছে। কিছু সময় পার হতেই ইচ্ছেকে ছেড়ে দিল আয়াশ। আঙুল দিয়ে ইচ্ছের ঠোঁট স্পর্শ করে মুছে দিয়ে চলে গেল।
ইচ্ছে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে তখনো। আয়াশের চলে যাওয়া দেখে স্বস্তি পেলো সে। তখন আয়াশের গলা শুনেই তাড়াহুড়ো করে ম্যাসেজ ডিলিট করে ইউটিউবের ডাউনলোড ফাইলে থাকা প্রথম মুভিটা চালু করে একটু টেনে দিয়েছিল সে। ভাগ্যিস আয়াশ খেয়াল করে নি সেগুলো। নাহলে এতক্ষণে তাকে চুমু না খেয়ে মাথায় তুলে আছাড় মারতো আয়াশ। তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিচে নেমে গেল সে। সিঁড়ি বেয়ে নামতে গিয়েও থেমে গেল। আয়াশের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ইচ্ছে। কালো স্যুট পড়ে অতি মনোযোগ দিয়ে ফোনে কী যেন করছে আয়াশ। আয়াশের ব্যবহার হঠাৎ পরিবর্তন হওয়ার কারণ ইচ্ছে বুঝতে পারছে না। আয়াশ আজ তাকে যেভাবে চুমু খাচ্ছে মনে হচ্ছে আর কিছুদিন এমনভাবে চলতে থাকলে তার ঠোঁট আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। ‘একটা ছেলে এত নিবিড়ভাবে চুমু তাকেই খায় যাকে সে ভালোবাসে। তবে কি আয়াশ আমাকে….’ নিজ মনে এতটুকু ভেবেই শিউরে উঠলো ইচ্ছে। যাকে সে ঘৃণা করে তার ভালোবাসার মানুষ হওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছেও তার নেই।

চলবে….

“ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here