Your_love_is_my_Addiction পর্ব ৭

#Your_love_is_my_Addiction
#Season_2
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_৭
.
মুহিব আর গার্ডদের চোখের আড়াল হয়ে লুকিয়ে ক্যানটিনে এসে বসে আছে ইচ্ছে। আজকেও ব্রেকফাস্ট টেবিলে সেই জঘন্য খাবারগুলো তাকে খেতে হয়েছে। আর আজও গাড়িতে বসে আয়াশ তাকে টর্চার করেছে। এসবে ভীষণ বিরক্ত ইচ্ছে। কোন অধিকারে তার এত কাছে আসে আয়াশ! তা বুঝতে পারে না সে। কিছু সময় পর এক ওয়েটার এসে কফি দিয়ে গেল। ইচ্ছে অবাক হয়ে বললো,
-“এক্সকিউজ মি!”
-“জ্বি ম্যাম!”
-“আমি তো কফি অর্ডার করি নি।”
-“কিন্তু ম্যাম এই টেবিল থেকেই অর্ডারটা দেওয়া হয়েছে।”
-“কিন্তু আ….”
থেমে গিয়ে কিছু একটা ভেবে ইচ্ছে বললো,
-“আচ্ছা ঠিক আছে আপনি যান।”
-“ওকে ম্যাম।”

ওয়েটার চলে যেতেই ইচ্ছে কফির দিকে তাকিয়ে আশেপাশে তাকাতে লাগলো। কফি মগের নিচে একটা চিরকুট চোখে পড়লো তার। ভ্রু কুঁচকে চিরকুটটা নিয়ে খুলে পড়তে লাগলো সে। “চিন্তা করো না আমি এখানেই আছি। আমাদের একসাথে বসে কথা বলা উচিৎ হবে না। আয়াশ খানের নজর এড়ানো এত সোজা নয়। তোমার পাশের চেয়ারে দেখো একটা ব্লুটুথ রাখা আছে। সেটা আমার ফোন কলের সাথে কানেক্ট করা। তুমি ওটা তোমার কানে লাগিয়ে নাও।” চিরকুটটা পড়ে তাড়াতাড়ি ইচ্ছে পাশের চেয়ারে হাত দিয়ে ব্লুটুথটা খুঁজে সাবধানে কানে লাগিয়ে চুল দিয়ে ঢেকে নিলো। কিছুক্ষণ চুপ থেকে ইচ্ছেই আগে কথা বললো।
-“হ্যালো!”
-“হ্যালো মিস। এতক্ষণ লাগলো ব্লুটুথটা খুঁজে পেতে!”
-“স্যরি কিন্তু আপনার পরিচয়টা কী আমি জানতে পারি?”
-“তার আগে আপনি বলুন তো আমি কী আপনাকে বিশ্বাস করতে পারি?”
-“আমাকে বিশ্বাস না করলে আপনি আমার সাথে কন্টাক্ট কেন করেছেন?”
-“ওয়েল! আমি তো চাইছি আপনাকে বিশ্বাস করতে কিন্তু আপনি কী আমার বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবেন?”
-“আয়াশকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমি সবকিছু করতে প্রস্তুত।”
-“আর ইউ সিয়্যর!”
-“হান্ড্রেড পার্সেন্ট সিয়্যর। ওই লোকটার জন্য আমার বাবাই কোথায় তা আমি জানি না। ওই লোকটা আমার বেস্টফ্রেন্ডকে খুন করেছে। এরপরেও আমি ওই লোকটাকে কী করে ছেড়ে দিই?”
-“আচ্ছা বুঝলাম।”
-“কিন্তু আপনি কেন আমাকে সাহায্য করতে চাইছেন আর আয়াশ খান আপনার কী ক্ষতি করেছে?”
প্রশ্নটা শোনা মাত্রই যেন রেগে গেল ফোনের অপর পাশে থাকা ব্যক্তিটি। প্রচন্ড ক্ষোভ নিয়ে সে বললো,
-“যার জন্য আমার বোনকে আমি হারিয়েছি তাকে তো অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।”
-“মানে?”
-“আয়াশ খান আমার বোনের খুনি। ওই বাস্টার্ডের জন্য আমার বোন এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছে। ওকে তো আমি ছাড়বো না। তোমার আর আমার লক্ষ্য এক বলেই আমি তোমার সাথে কন্টাক্ট করেছি।”
-“আমি যদি আপনার সাথে কাজ করতে রাজি না হই তখন!”
-“তাহলেও আয়াশকে শাস্তি পেতেই হবে। ওকে আমি ছাড়বো না। যার জন্য আমার বোন এই পৃথিবীতে নেই তারও এই পৃথিবীতে থাকার কোনো অধিকার নেই।”
-“আপনি কিন্তু এখনো আপনার পরিচয়টা বললেন না আমাকে।”
অপর পাশের ব্যক্তিটি মনে হয় হাসলো ইচ্ছের কথা শুনে। বললো,
-“আমার পরিচয় জানার জন্য এত উদগ্রীব হয়ে আছো কেন?”
-“যার সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করব তার পরিচয় জানার অধিকারটুকু নিশ্চয়ই আমার আছে!”
-“তার মানে তোমাকে বিশ্বাস করা যায় তাই তো!”
-“ইচ্ছে কখনো কারও বিশ্বাস ভাঙে না।”
-“আমি শোভন। শোভন জামিল রায়হান। রায়হান গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির সিইও।”

চমকালো ইচ্ছে। মনে মনে ভাবলো, শোভন জামিল রায়হান! রায়হান গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির সিইও! ব্যাঙ্গালোর শহরের নামকরা কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি এই কোম্পানি। প্রায় প্রায়ই পত্রিকায় উনার ব্যাপারে লেখালেখি হয়। এই বছর তো বেস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট এর অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন উনি। উনার বোনকে আয়াশ মেরেছে? কিন্তু কেন? ইচ্ছেকে চুপ করে থাকতে দেখে শোভন বললো,
-“ম্যাম কী কিছু ভাবছেন?”
-“না মা..মানে আপনি! মানে….”
-“ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি কোনো বাঘ বা ভাল্লুক নই। এখন আপনি কী আমার সাথে হাত মেলাতে প্রস্তুত?”
-“আয়াশ খানকে আমরা ধ্বংস করতে পারবো আপনি নিশ্চিত?”
-“হ্যা। আমার শুধু এমন একজনকে লাগবে যে আয়াশের খুব কাছের। এবং আয়াশ যাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারে। আয়াশের ভাই মুহিব এর মধ্যে পড়ে কিন্তু সে কখনোই রাজি হবে না এসবে। তো সেই ক্ষেত্রে বাকি রইলে তুমি। আয়াশ তোমাকে বিশ্বাস করে, ভরশা করে। মুহিবের পরে তুমিই একমাত্র আয়াশের কাছের লোক।”
-“আমি আয়াশের কাছের লোক!”
অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো ইচ্ছে। শোভন হেসে উঠলো। বললো,
-“তুমি খুবই বোকা। আয়াশের এত কাছে থেকেও ওকে বুঝতে পারলে না!”
-“উনাকে বুঝার বিন্দুমাত্র আগ্রহও আমার নেই। আই জাস্ট হেইট হিম।”
-“আই নোউ।”
-“এবার বলুন তো আপনি কীভাবে বুঝলেন আমি আয়াশের কাছের লোক?”
-“আয়াশের গার্ডদের সাথে আমারও কিছু গার্ড মিশে আছে। তারা সবসময় আমাকে আয়াশের আপডেট দিতে থাকে। সেখান থেকেই পাওয়া খবর। এছাড়াও আমি ওকে চিনি। ও তোমাকে ভালোবাসে।”
-“হোয়াট!”

ইচ্ছে কিছুটা চেঁচিয়ে ‘হোয়াট’ বলায় আশেপাশের সকলে ওর দিকে তাকালো। সবার দিকে একবার তাকিয়ে জোর করে হাসার চেষ্টা করে ‘স্যরি’ বলে আবারও নিজের জায়গায় বসে পড়লো ইচ্ছে। শোভন হালকা হেসে বললো,
-“মিস! এত অল্পতেই উত্তেজিত হওয়া উচিৎ নয়। যাই হোক কফিটা খান ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো!”
-“আপনি আগে বলুন আপনি কি আমায় হার্ট অ্যাটাক দিয়ে মারতে চান?”
-“একদমই না।”
-“তাহলে এটা কী বললেন আপনি?”
-“সত্যিটা বললাম। আয়াশ তোমাকে ভালোবাসে।”
-“এটা কীভাবে সম্ভব?”
-“কেন সম্ভব নয়?”
-“মানে ব্যাঙ্গালোর শহরের কিং দ্যা গ্রেট গ্যাংস্টার আয়াশ খান ভালোবাসে আমাকে? এটা কৌতুক বলে মনে হচ্ছে না আপনার?”
কিছুটা তাচ্ছিল্যের সুরে বললো ইচ্ছে। ভ্রু কুঁচকে শোভন বললো,
-“আয়াশ গ্যাংস্টার বলে কী ওর কাউকে ভালোবাসার অধিকার নেই?”
-“নাহ্ নেই। যে লোক অন্যের ভালোবাসার মানুষদের কেঁড়ে নিতে জানে সে কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারে না। সে শুধু ঘৃণা পাওয়ার যোগ্য।”
-“আপনিও দেখি আমার মতোই ক্ষিপ্ত আয়াশের উপরে।”
-“(….)”
-“আয়াশের সাথে যতটা সম্ভব ফ্রি হওয়ার চেষ্টা করো। ওকে নিজের কাছে আসার সুযোগ দাও। ওকে ভাবতে দাও যে ও তোমার মনে নিজের জন্য জায়গা তৈরি করে নিচ্ছে। তুমিও ওকে ভালোবাসতে শুরু করেছো এটা ভাবতে দাও ওকে। তারপর আয়াশকে কীভাবে ভেঙে গুড়িয়ে দিতে হবে তা আমার জানা আছে।”
-“কিন্তু আমি ওকে শেষ করতে চাই একেবারে।”
-“সেটাও হবে। আগেই যদি আয়াশকে শেষ করে দাও তাহলে তো সেভাবে কষ্ট পাবে না সে। ওকে ভেতর থেকে আগে ভাঙতে হবে। তারপর শেষ করতে হবে ওকে।”
-“আমি প্রস্তুত।”
-“কিসের জন্য প্রস্তুত তুমি?”
হঠাৎ মুহিবের গলার আওয়াজ পেয়ে চমকে উঠলো ইচ্ছে। ভয়ে রীতিমতো কাঁপতে লাগলো সে। ওপাশ থেকে মুহিবের গলার আওয়াজ শুনে শোভন বললো,
-“একদম ভয় পাবে না। যথাসম্ভব শান্ত থাকার চেষ্টা করো। নয়তো মুহিব বুঝে যাবে। সো জাস্ট রিল্যাক্স।”

শোভনের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে নিজেকে শান্ত করে নিলো ইচ্ছে। চুল দিয়ে ভালোভাবে নিজের কান ঢেকে নিলো। মুখে একটা মিথ্যে হাসি ঝুলিয়ে পেছনে ঘুরে দেখে চোখ-মুখ কঠিন করে তার দিকে তাকিয়ে আছে মুহিব। শুকনো ঢোক গিলে ইচ্ছে বললো,
-“তুমি এখানে!”
-“এই প্রশ্নটা তো আমার করা উচিৎ। তুমি ক্লাস বাদ দিয়ে এখানে কী করছো? আর কার সাথে কথা বলছিলে? কিসের জন্য প্রস্তুত তুমি?”
-“এত প্রশ্ন একসাথে!”
-“জবাব দিলে খুশি হবো।”
ব্লুটুথের ওপাশ থেকে শোভন বললো,
-“কোনো গন্ডগোল লাগিয়ো না ইচ্ছে। আমি জানি তুমি পরিস্থিতিটাকে হ্যান্ডেল করতে পারবে।”
শোভনের কথায় আশ্বস্ত হয়ে ইচ্ছে বললো,
-“আমি একটু আগে বমি করে এসেছি ওয়াশরুমে যেয়ে। তোমার ভাই আমাকে সাতসকালে ব্রেকফাস্টে যেসব জঘন্য খাবারগুলো খাওয়ায় এসব তার জন্যই হয়েছে। বমি করার পর থেকে মাথাটা ভীষণ ব্যথা করছিল তাই কফি খেতে এসেছি এখানে। আর এখানে আমার সাথে কেউ নেই যে আমি তার সাথে কথা বলবো। আমি নিজের সাথেই কথা বলছিলাম। এক সপ্তাহ পর থেকে আমার এক্সাম শুরু। আর তোমার ভাইয়ের কারণে আমি ঠিকমতো ক্লাস করতে পারিনি। পরীক্ষায় কী দিব কিছুই বুঝতে পারছি না। তাই নিজেকে নিজেই আশ্বস্ত করে বলছিলাম যে কিছুই হবে না। আমি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। কোনোমতে টেনেটুনে পাশ করতে পারলেই হলো।”

এক নিঃশ্বাস কথাগুলো বলে থামলো ইচ্ছে। মুহিব ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে আছে। মুহিবের চেহারা দেখে বুঝা যাচ্ছে না যে সে কী ভাবছে। আদৌও ইচ্ছের কথা তার বিশ্বাস হয়েছে কি-না তাও বুঝতে পারছে না ইচ্ছে। ওপাশ থেকে শোভন বললো,
-“রেলগাড়ির গতিতে এতগুলো কথা একসাথে বলেছো বলে এখনো মনে হয় কথাগুলো মাথায় ঢুকেনি মুহিবের। বাই দ্যা ওয়ে, তুমি কিন্তু ভালোই গুছিয়ে মিথ্যে কথা বলতে পারো। এর জন্য আমার তরফ থেকে একটা ট্রিট পাওনা রইলো তোমার।”

ইচ্ছে চুপ করে রইলো। নিজেকে ভীষণ অসহায় লাগছে তার। এদিকে মুহিবও কিছু না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। ইচ্ছের প্রাণপাখিটা মনে হচ্ছে উড়ে যাবে এবার। হঠাৎ মুহিব তার হাত ধরে চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে চিন্তিত হয়ে বললো,
-“তুমি এখন ঠিক আছো তো! না মানে বমি করেছো বললে। এখনো অসুস্থ লাগছে! চলো তাহলে ডক্টরের কাছে যাই। নয়তো ভাই আমাকে জানে মেরে ফেলবে। আমি এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না ইচ্ছে।”

ইচ্ছে হা হয়ে গেল মুহিবের কথায়। এতক্ষণ তাকে টেনশনে ফেলে এই মুহিবের বাচ্চা এসব ভাবছিল! ভীষণ রাগ হলো ইচ্ছের। কষিয়ে একটা লাথি দিতে মন চাইছে মুহিবকে। কিন্তু যাই হোক ছেলেটা ওর থেকে বছর দুয়েক বড় হবে ভেবে নিজের ইচ্ছেটাকে ইচ্ছে দমিয়ে নিলো। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
-“আমি এখন ঠিক আছি। ইনফ্যাক্ট অনেক স্বস্তিতে আছি। তুমি প্লিজ আমার জন্য একটু পানি নিয়ে আসো। তৃষ্ণা পেয়েছে আমার।”
-“তুমি এখানেই বসো আমি পানি আনছি তোমার জন্য।”
মুহিব যেতেই ইচ্ছে ওপাশ থেকে শোভনের হাসির শব্দ শুনতে পেলো। কঠোর গলায় ইচ্ছে প্রশ্ন করলো,
-“হাসছেন কেন? এদিকে আমি মর মর অবস্থায় ছিলাম আর আপনি মজা নিচ্ছেন?”
-“কুল! এখন তো সব ঠিক আছে তাই না! সো জাস্ট চিল। আর শোনো! তোমার সাথে আমি মাঝে মাঝে কন্টাক্ট করব কিন্তু তোমার ফোন দিয়ে নয়। আয়াশের জেনে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাতে। তোমার ক্লাসরুমে গিয়ে তোমার সিটের ডেস্কে দেখবে একটা মোবাইল ফোন রাখা আছে। সিম লাগানো আছে ওই ফোনে। আর আমার নম্বরও সেভ করা আছে। ফোনটা লুকিয়ে রাখবে। কেউ যেন জানতে না পারে। আর আমার সাথে কন্টাক্ট করতে থাকবে। যে কোনো জরুরি ইনফরমেশন জানতে পারলে, আমাকে জানাবে। যে কোনো প্রয়োজনে আমাকে কল করবে। এখন আমি রাখছি। তুমি ওয়াশরুমে গিয়ে ব্লুটুথটা খুলে ভেঙে ফেলে দাও। ওটার হদিস যেন কেউ না পায়। ওকে!”
-“ঠিক আছে। এখন তাহলে রাখুন। আমি পরে কন্টাক্ট করব আপনার সাথে।”

শোভন কল কেটে দিতেই ইচ্ছে ব্লুটুথটা খুলে নিজের ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলো। মুহিব পানির বোতল এনে ইচ্ছের দিকে এগিয়ে দিতেই ইচ্ছে হালকা হেসে পানি খেয়ে নিলো। আজ অনেক জোর বাঁচা বেঁচে গিয়েছে সে।
-“ভাই ফোন করে বললো তুমি না-কি অনেক্ক্ষণ আগে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়েছো। কিন্তু এখনো ক্লাসে ফিরে যাও নি। তাই তোমাকে হন্য হয়ে খুঁজছিলাম আমি। গার্ডদের জিজ্ঞেস করলে তারা বললো তারাও না-কি তোমায় দেখেনি। তো চিন্তা করা স্বাভাবিক না বলো! আমিও অনেক চিন্তায় ছিলাম। যাই হোক তোমায় পেয়ে গেছি এখন আমার শান্তি।”
-“আয়াশ কি করে জানলো আমি ক্লাসরুম থেকে বেরিয়েছি?”

কিছুটা সন্দিহান হয়ে প্রশ্ন করলো ইচ্ছে। হকচকিয়ে গেল মুহিব। ও কথায় কথায় বলে ফেলেছে এই কথাটা। আয়াশ যে ওর ক্লাসরুমের সামনে হিডেন সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে রেখেছে এটা তো আর ইচ্ছে জানে না। এখন কী বলবে সে ইচ্ছেকে? গলা ঝেরে পরিষ্কার করে নিয়ে বললো,
-“ওই তোমার কোন টিচারকে যেন দরকারে ফোন দিয়েছিল ভাই। তো তোমার কথাও জিজ্ঞেস করেছে সে টিচারকে। তাই টিচার ক্লাসে গিয়ে তোমার খোঁজ করে পায়নি তোমাকে। অন্যান্য স্টুডেন্টরা বলেছে তুমি না-কি অনেক আগে বেরিয়েছো। তাই আর কী….”
-“ওহ্ আচ্ছা।”

ইচ্ছের কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো মুহিব। এই মুহূর্তে সে মনে মনে নিজেকে হাজারটা গালি দিচ্ছে। আর একটু হলে সত্যিটা জেনে যেতো ইচ্ছে। নিজের মাথায় নিজেই চাটি মারলো মুহিব। ইচ্ছে ব্যাগ নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,
-“আমি গেলাম। একটা ক্লাস তো ইতোমধ্যে মিস করে ফেলেছি। বাকি ক্লাস দু’টো মিস করতে চাইছি না।”
-“চলো আমি তোমায় ক্লাসরুম পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসি।”
-“চলো কিন্তু আমি আগে ওয়াশরুমে যাবো। চোখে-মুখে একটু পানি দেওয়া দরকার আমার। তারপর ক্লাসে যাবো।”
-“আচ্ছা সমস্যা নেই। আমি নাহয় তোমার ক্লাসের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকবো তুমি ওয়াশরুম থেকে না আসা পর্যন্ত।”
-“তোমার ইচ্ছা।”

মুহিব ইচ্ছের ক্লাসরুমের সামনে দাঁড়ালো। ক্লাসরুম থেকে কিছুটা এগিয়ে যেতেই ওয়াশরুম। ইচ্ছে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। শোভনের কথা মতো ব্লুটুথটা পা দিয়ে জুতার নিচে ফেলে পিষে ভেঙে ফেললো। তারপর ব্লুটুথের টুকরোগুলো ডাস্টবিনে ফেলে চোখে-মুখে পানি দিয়ে আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বর দিকে তাকিয়ে বললো,
-“গেট রেডি মিস্টার আয়াশ খান। আই উইল ডিস্ট্রয় ইউ।”

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here